বিমান হামলার বিরতি নেই বাঙলাদেশের লড়াই গেরিলা যুদ্ধের রূপ নিচ্ছে
শুক্রবার স্থলপথে পাক-সৈন্যদের আক্রমণে ঢিলে পড়লেও মুক্তিবাহিনীকে বিভিন্ন অবস্থান থেকে স্থানচ্যুত করার জন্য বিমানগুলি বােমাবর্ষণ করে গেছে।
ইউএনআই-এর খবর হলাে, কুষ্টিয়া, পাবনা, বগুড়া এবং দিনাজপুরে এদিন বােমাবর্ষণ করা হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামের নাম উল্লেখ নেই। কারণ, গত কয়েকদিন ধরে জাহাজ ও বিমান থেকে এই শহরটি কামান ও বােমার ঘায়ে বিধ্বস্ত হচ্ছে।
মুক্তিবাহিনী ক্রমে ক্রমে গেরিলা কায়দায় সংগ্রামের দিকে ঝুঁকছে। ইসলামাবাদও তদনুযায়ী তাদের সুশিক্ষিত গেরিলা বাহিনীকে এই কাজে নিযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। এদের প্রধানত কাশ্মীরে লড়াই করার জন্য শিক্ষিত করা হয়েছিল।
এই উদ্দেশ্যে ইসলামবাদ সরকার আধা সামরিক সৈন্যদের বিমানে করে বাঙলাদেশের সীমান্তে এবং শহরের আশেপাশে পাঠানাের ব্যবস্থা করছে। এদের মধ্যে রেঞ্জার ও বর্ডার স্কাউট আছে।
দিনাজপুর মুক্ত
পশ্চিম দিনাজপুর সীমান্ত থেকে আমাদের রিপাের্টার জানাচ্ছেন যে ন্যাপ এর উভয় দলের সেচ্ছাসেবক ও ইপিআরের কর্মীগণ একযােগে তুমুল লড়াই করে দিনাজপুর থেকে ইয়াহিয়া সৈন্যদের হটিয়ে দিয়েছে। দিনাজপুর এখন মুক্তিবাহিনীর সম্পূর্ণ দখলে।
রাজশাহীতে লড়াই
মালদহ সীমান্ত থেকে আমাদের রিপাের্টার জানাচ্ছেন যে রাজশাহীতে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ইয়াহিয়া সৈন্যদের তুমুল লড়াই হয়েছে। মুক্তিবাহিনীর পক্ষে লড়াই-এ রাজশাহীর এস,পি এবং ডি আই জি মারা গিয়েছেন।
সৈন্য বাহিনী ইপিআর দপ্তর নষ্ট করে দিয়েছে। ইয়াহিয়া সৈন্যবাহিনী হেলিকপ্টারে করে তাদের লােকজনকে সরিয়ে নেয় এবং পরে বােমাবর্ষণ শুরু করে। তুমুল লড়াই-এর পরও ইয়াহিয়া বাহিনীকে সরে যেতে হয়েছে। ইউএনআই জানাচ্ছে এই লড়াই-এ ইয়াহিয়া সৈন্যদের একজন অফিসারসহ একশত জন মারা গিয়েছে। মুক্তিবাহিনী প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
সূত্র: কালান্তর, ৩.৪.১৯৭১