You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.16 | গেরিলা যােদ্ধাদের আক্রমণে অসংখ্য পাকসেনা নিহত | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ
গেরিলা যােদ্ধাদের আক্রমণে অসংখ্য পাকসেনা নিহত

মুজিবনগর, ১৫ নভেম্বর (ইউএনআই) বিগত সাতদিন সমগ্র বাঙলাদেশ জুড়েই মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যযাদ্ধাদের অতর্কিত আক্রমণে পাকিস্তানী সৈন্যরা বেশ কিছু সংখ্যায় হতাহত হয়েছে।
গত ১০ নভেম্বর কুষ্টিয়া যশাের খুলনা রণাঙ্গনে আরমডাঙ্গায় গেরিলারা পাকিস্তান ন্যাশনাল ব্যাংক ঘেরাও করে ৮ হাজার ৩০ টাকা মূল্যের সােনার পাত হস্তগত করে।
গেরিলারা ময়মনসিংহ ও যশাের এলাকার সরকারী গুদামে আগুন লাগিয়ে দেয়। ফলে প্রায় ৮ হাজার মন পাট ভস্মীভূত হয়।
ময়মনসিংহ রণাঙ্গনে মুক্তিবাহিনীর ক্রমাগত আক্রমণের মুখে পাকসেনারা সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। আরও বেশি সৈন্য সরবরাহের জন্য বেতার যােগে পাকসেনা বাহিনীর কেন্দ্র থেকে যে বার্তা পাঠান হয় মুক্তিযোেদ্ধারা তা মাঝপথ থেকে সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে।
ময়মনসিংহের একটি এলাকাতে গেরিলাদের প্রচণ্ড আক্রমণে ৬৮ জন পাকসেনা নিহত ও ৮০ জন আহত হয়। এই আক্রমণে পাকসেনাদের ৪টি অতিকায় মােট গান বােট ও বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গােলাবারুদ গেরিলারা দখল করে।
ময়মনসিংহ যশাের মৌলভীবাজার সেক্টরে গেরিলারা তাদের গােপন অবস্থান থেকে সােনামুড়ী, সমানভাগ, জাভীয়াপুর, গােয়ালবাড়ি ও শ্রীবর্দিতে পাকসেনাদের ঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে গােলাবর্ষণ করে। ফলে বহু পাকসেনা হতাহত হয়। রক্ষীচরে গেরিলার ৩১ জন পাকসেনা খতম করে। সিলেটের সুনামগঞ্জ সেক্টরে গতকাল মুক্তিবাহিনীর গেরিলাযযাদ্ধারা ৪৬ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু উড়িয়ে দেয় এবং এই সময় পাকসেনাসহ অগ্রগামী একটি জীপের উপর আক্রমণ চালায়। ফলে একজন ক্যাপ্টেন সহ ৫ জন পাকসেনা খতম হয়। আজ সীমান্তের ওপর থেকে প্রাপ্ত এক খবরে জানা যায় যে সিলেটের কোন এক এলাকায় পাকসেনাদের বিপর্যয়ের মুখে হতাশগ্রস্ত ৮০ জন দালাল রাজাকার অনেক অস্ত্র-শস্ত্রসহ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
কুমিল্লা সেক্টর থেকে প্রাপ্ত এক খবরে জানা যায় যে, সালদণ্ডি এলাকায় গত বৃহস্পতিবার মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকসেনাদের সারাদিনব্যাপী গুলি বিনিময় চলে। মুক্তিবাহিনীর এই অভিযানে ৩০টি পাকসেনা নিহত হয়।
মুক্তাঞ্চলে অবস্থিত বাঙলাদেশ সৈন্যবাহিনীর সদর দপ্তর থেকে বলা হয় যে, উপরােক্ত অভিযানে পাকিস্তানী আমি রেঞ্জার ধরা পড়ে। এই ধৃত রেঞ্জারটি এই অভিযানে পাকসেনাদের বিপুল ক্ষয় ক্ষতির কথা স্বীকার করে।

সূত্র: কালান্তর, ১৬.১১.১৯৭১