শরণার্থী সমস্যার মােকাবিলায় রাজ্য সরকারের কর্মসূচী গ্রহণ
(স্টাফ রিপাের্টার)
কলকাতা, ২৮ এপ্রিল বাঙলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীদের থাকা খাওয়ার প্রভৃতির জন্য টাকা দরকার তা কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে দেবেন। অন্যদিকে মন্ত্রিসভা আজ শরণার্থীদের অবস্থা মােকাবিলার জন্য কয়েক দফা কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন।
জনৈক সরকারী মূখপাত্র উপরােক্ত তথ্য জানান।
রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী শ্রীবিজয় সিং নাহার আজ সাংবাদিকদের বলেন যে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিটি বর্ডার জেলায় সাবডিবিশনে ৯ জন অতিরিক্ত জেলা শাসক নিয়ােগ করা হবে। এরা প্রত্যেকে প্রতিদিন হাজিরার ভিত্তিতে ১০০ জন কর্মী পাবেন। এইসব কর্মীরা শরণার্থীদের সংখ্যাদি লিখবেন। পানীয় জল সরবরাহর জন্য জেলা শাসক বা এস ডিওরা যেখানে প্রয়ােজন সেখানেই নলকূপ ইত্যাদি বসাবেন।
মন্ত্রিসভা আরও স্থির করেছেন শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষে শরণার্থীদর প্রত্যেককে দৈনিক ডােল বাবদ এক টাকার বদলে এক টাকা চার আনা করার জন্য কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করেছেন। শ্রীনাহার সাংবাদিকদের জানান ৮ লক্ষেরও বেশী শরণার্থী পশ্চিমবাংলায় ইতিমধ্যে এসে পৌঁছেছেন। শ্রীজয়নাল আবেদীনের মতে এই সংখ্যা পনের লক্ষকে ছাড়িয়ে গেছে। কেন্দ্রের জনৈক উচ্চপদস্থ অফিসার আজ মুখ্যমন্ত্রী এবং উপমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সমগ্র বিষয় জানান এবং কেন্দ্রের সাহায্য করার বিষয়ে কথাবার্তা বলেন।
শ্রী নাহার জানান শরণার্থীদের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি বিশেষ সেল গঠিত হয়েছে। এই সেলের ডিরেক্টর জেনারেল শীঘ্রই যুক্ত হবে।
সীমান্তবর্তী এলাকায় মলমূত্রাদি পরিস্কার করা, জল সরবরাহের বন্দোবস্ত করার জন্য দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে তিন মাসের জন্য লােক নিয়ােগ করা হবে।
জয়নাল আবেদীনের বক্তব্য।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী শ্রীজয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের জানান যে, একমাত্র দিনাজপুর জেলাতেই সরকারী হিসাব অনুযায়ী ৫ লক্ষাধিক শরণার্থী এসেছেন। এর মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবের বাড়ীতে শতকরা ৫০ ভাগ নিজেদের ব্যবস্থা করছেন, বাকীদের বন্দবস্থ সরকার করছেন।
সূত্র: কালান্তর, ২৯.৪.১৯৭১