৬ জন রাজাকার ও দুইজন শান্তি কমিটির সদস্যের প্রত্যেককে দালালীর দায়ে আট বছর সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হইয়াছে। বিভিন্ন ধারার সাজা সমূহ অবশ্যই এক সঙ্গেই চলবে। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ ইসহাক মজুমদার একজন বাংলাদেশ সমর্থক। ১৯৭১ সালের ৩০শে জুলাই রাজাকার সিদ্দিকুর রহমান, টুকু মিয়া, জয়নাল, আবদুল মালেক, শামছুল হক, মফিজুর রহমান এবং শান্তি কমিটির সদস্য সিরাজুল হক ও নুরুল ইসলাম তাকে তার বাড়ীর সামনে থেকে ধরে স্থানীয় চেয়ারম্যান আলী আহমেদের বাড়ীতে। নিয়ে মারপিট করে ও শেষ পর্যন্ত তাকে লাকসাম ক্যাম্পে অবস্থানকারী পাক দখলদার বাহিনীর হাতে সােপর্দ করে। সেখানে তার উপর দুই/তিন দিন যাবদ অকথ্য অত্যাচারের পর রাজাকার বাহিনীতে যােগদানের ওয়াদায় তাকে মুক্তি দেয়া হয়। কিন্তু অভিযােগকারী কৌশলে সীমান্তের ওপারে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। দেশ স্বাধীন হবার পর ইসহাক মজুমদার লাকসাম থানায় লিখিত অভিযােগ দায়ের করলে পুলিশ। তদন্তক্রমে বিবাদীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। সাক্ষ্যাদির পর কুমিল্লার মাননীয় সহকারী সাবজজ ও দালাল বিচার ট্রাইব্যুনাল নং-৪ কুমিল্লা জনাব এম. এ. হুদা বিবাদী সিরাজুল হক, নুরুল ইসলাম সিদ্দিকুর রহমান, টুকু মিয়া (অনু) জয়নাল, মালেক শামসুল হক ও মফিজুর রহমান (অনু) কে বাংলাদেশ দণ্ড বিধির ৩৪২ ও ৩৬৫ ধারার সাথে দালাল বিচার আইনের ১১ (বি) ও (ডি) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন ও বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৪২ ধারায় প্রত্যেককে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ৩৬৫ ধারায় প্রত্যেককে তিন বছরের কারাদণ্ড ও দালাল আইনের ১১বি ও (ডি) ধারায় প্রত্যেককে চার বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। উপরােক্ত প্রত্যেককে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন অনাদায়ে আরাে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড ভােগ করার আদেশ দেন। বিবাদী আলী আহমেদকে খালাস দেন। সরকার পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন সহকারী পিপি জনাব গােলাম হামজা এড. বিবাদী পক্ষে ছিলেন জনাব কাজী হাবিবুর রহমান, রফিকুল হক ও মােঃ সিরাজ মিয়া এ্যাড।
সূত্রঃ সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ -প্রত্যয় জসীম