You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.11.26 | দৈনিক ইত্তেফাক দালাল আইনে অভিযুক্ত দখলদার আমলের মন্ত্রী জসিম উদ্দিনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড - সংগ্রামের নোটবুক
২৬-১১-৭২ দৈনিক ইত্তেফাক দালাল আইনে অভিযুক্ত দখলদার আমলের মন্ত্রী জসিম উদ্দিনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
গতকাল (শনিবার) ঢাকায় দুই নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল বিচারক সৈয়দ সিরাজুদ্দিন আহমেদ, ডা. মালেক মন্ত্রিসভার আইন ও পার্লামেন্ট দফতরের মন্ত্রী জনাব জসিম উদ্দিন আহমদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করিয়াছেন। বিচারক তাহার রায়ে বলেন, অভিযুক্ত জনাব জসিমউদ্দিন আহমদ মনে-প্রাণে আওয়ামীলীগকে সমর্থন করিতেন। তিনি বহুকাল সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন। তাছাড়া তিনি সিলেট বারের একজন সিনিয়র আইনজীবী। তাহার অতীত রাজনৈতিক কার্যকলাপের দিকে লক্ষ্য রাখিয়া তাহার জীবন রক্ষা করা প্রয়ােজন বিধায় আমি তাহাকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করিলাম। প্রকাশ, পাকিস্তানের স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার। বরুদ্ধে এক সর্বাত্মক যুদ্ধ চালনার সময় তাহারা এই দেশের কিছু সংখ্যক লােকের সহায়তা চায়। আসামী এই দেশকে পাকিস্তানের শাসনাধীনে রাখার জন্য বর্বর। পাকিস্তানী বাহিনীকে সাহায্য ও সহায়তা প্রদান করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধে বাঙ্গালীদের ক্ষেপাইয়া তুলিবার ও সেই সংগ্রামকে নস্যাৎ করিবার জন্য বিভিন্ন স্থানে সভা সমিতি করিয়াছেন এবং বক্তৃতা দিয়া বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ ও ঘৃণার সঞ্চার করেন। আসামী মন্ত্রিসভার বৈঠক করিয়া বাংলাদেশ। সমর্থক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার জানা। পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং রাজাকারদের সংখ্যা ১০ লক্ষে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি নিহত রাজাকারদের পরিবার বর্গের মধ্যে খাস জমি বিতরণের ব্যবস্থা করেন।
বিচারক তার রায়ে উল্লেখ করেন, সাক্ষী প্রমণ দষ্টে ইহাই প্রমাণ করে আসামী ইচ্ছাকৃতভাবে মালিক মন্ত্রিপরিষদের যােগদান করিয়া দখলদার বাহিনীকে সাহায্য করেন ও নানা স্থানে সভা সমিতি করিয়া বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ ও ঘৃণার সঞ্চার করেন। বিচারক সরকার পক্ষের কৌসুলির সাথে একমত হইয়া বলেন, আসামী এই দেশে পাক সামরিক শাসক প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্য তথাকথিত উপ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিয়াছিলেন। বিচারক আসামীকে জেলখানায় প্রথম শ্রেণীর মর্যদা প্রদান করেন। সরকার পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন স্পেশাল পিপি জনাব এম. এ. সােবহান। তাহাকে সাহায্য করেন স্পেশাল পি পি মেসার্স ফয়জদ্দিন ভূইয়া ও এ. বি. এম, রফিকুল্লা। আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মেসার্স খান বাহাদুর নাজির উদ্দিন ও আহাম্মদ আলী মণ্ডল এডভােকেট।

সূত্রঃ সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ -প্রত্যয় জসীম