২৪-৭-৭২ দৈনিক পূর্বদেশ টাঙ্গাইলের এক দালালের সশ্রম কারাদণ্ড
টাঙ্গাইলের সরকারি দায়রা জজ এবং ২নং বিশেষ ট্রাইব্যুনালের জনাব এ এইচ চৌধুরী মধুপুরের জনাব দুদু মিয়াকে দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরাে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ দালাল আইনের (৬) অনুচ্ছেদের অধীনে এ বিচার কার্য সম্পাদিত হয়েছে। মামলার বিবরণে প্রকাশ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যখন বেআইনী বাংলাদেশ দখল করে লুটতরাজ, অগ্নিসংযােগ, নারী ধর্ষণ ও গণহত্যা চালাচ্ছিল তখন মধুপুরের ময়েজ সরকারের পুত্র দুদু মিয়া দালালীর আশ্রয় করিয়া দখলদার বাহিনীর লুঠ, অগ্নিসংযােগ ও নিমর্ম ধ্বংসযজ্ঞে সক্রিয়ভাবে সহযােগিতা করে। ২৪-১০-৭১ তারিখে আসামী দুদু মিয়া পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনীর হাবিলদার মুশতাককে নিয়ে নবপুর থানাধীন আশুরা গ্রামের অধিবাসী বাদী নিশিকাণ্ড চন্দ্রের বাড়ীতে গিয়া তার বাবা সতীশ চন্দ্রকে মধুপুরে অবস্থিত রাজাকার শিবিরে পাঠাতে নির্দেশ দেয়। একই দিন কয়েকজন রাকাজার বাদীর বাড়ীতে হানা দিয়া তার বাবাসহ বশির, বেলায়েত, ওমর, উপেন্দ্র, হরেন্দ্র, নগেন্দ্র ও খগেনকে ধরে নিয়ে যায় এবং গুলি করে হত্যা করে। জনৈক করিম তালুকদার, একথা বাদীকে জানান।
কারণ একই সময় তিনিও করিম রাজাকার শিবিরে। নীত ছিলাে। বহু কষ্টে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে নিজেকে মুক্ত করতে সক্ষম হন। আসামী দুদু মিয়া দখলদার বাহিনীর হাবিলদার মুস্তাকের সাথে নিয়মিত ঘুরে বেড়াতেন এবং তাদের পথ প্রদর্শক হিসাবে কাজ করিত। এছাড়া হানাদার সৈন্যদের লােকজনের বাড়ীঘর চিনিয়ে দিত ও ঘরে ঘরে লুঠ ও আগুন লাগাতাে। থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার ১লা জানুয়ারী প্রাথমিক এজাহার গ্রহণ এবং তদন্তকার্য পরিচালনা করে। চার্জশীট দেন। বাদীপক্ষ পাঁচজন সাক্ষী দেন। কিন্তু আসামী পক্ষে কেউ ছিল না। বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর এড. নুরুল ইসলাম এবং জনাব আব্দুল আলী সিদ্দিক। মােক্তার আসামীর পক্ষে সমর্থন করেন।
সূত্রঃ সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ -প্রত্যয় জসীম