১-৭-৭২ দৈনিক পূর্বদেশ দালালীর দায়ে কুষ্টিয়ায় ৫ ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে
কুষ্টিয়া, ৩০শে জুন কুষ্টিয়ার বিশেষ ট্রাইব্যুনালের সদস্য মি. আর, কে, বিশ্বাস পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর দালাল বলে দোষী সাব্যস্ত করে অভিযুক্ত আকামুদ্দিন বিশ্বাসসহ অন্য চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। এই দণ্ডাদেশ বাংলাদেশ দালাল (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশ ১৯৭২ এর (ক) ধারার অধীনে দেয়া হয়েছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে ৩৯৬১/৩৪ বিপিসি, (বাংলাদেশ দালাল বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদেশ ১৯৭২ এর প্রথম অংশে বর্ণিত) ধারার অধীনে আনীত অভিযােগে তাদেরকে দোষী বলে সাব্যস্ত করা যায়নি এবং এই ধারায় আনীত অভিযােগ থেকে তাদেরকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।মামলার কার্যবিবরণী বাদী আর, সি, সাহা খােকসা থানার অধীনে জানিপুর গ্রামের অধিবাসী। বিগত স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় খােকসা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান অভিযুক্ত আকিমুদ্দিন কুষ্টিয়া শহর থেকে ৩৮ জন পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর লােককে নিয়ে আসে এবং জানিপুর ইউনিয়ন কাউন্সিলে অবস্থান করায় তাদেরকে চেয়ারম্যান ও অন্য চারজন অভিযুক্ত খাদ্য সরবরাহ করে। অন্য চারজন অভিযুক্ত হচ্ছে জব্বার মল, এম. করম আলী, মমতাজ পারামানিক এবং ফজলুর রহমান। এ সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পাকিস্তানী সেনাদের সহায়তায় ১৯৭১ সালের ২৪শে মে’র রাত থেকে গণহত্যা শুরু করে এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাকবাহিনীর বেআইনী দখলকে সমর্থন দেয়। তারা সক্রিয়ভাবে দখলদার পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তি সংগ্রামের সকল প্রকার কার্যকে প্রতিরােধ করে। এ সব কজন অভিযুক্ত ব্যক্তি বিবাদীর বাড়ীতে ডাকাতি করে এবং ডাকাতি করার সময় অমি কুমার সাহা নামক এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। সব কজন অভিযুক্ত ব্যক্তিই নিজেদেরকে নির্দোষ বলে দাবি করে এবং বলে যে তাদের বিরােধী দলীয় রাজনৈতিক মতাদর্শের কতিপয় ব্যক্তির প্ররােচনায় তাদেরকে মিথ্যা মামলায় জড়ানাে হয়েছে। বিচারক অবশ্য তাদের এই নির্দোষ বলে দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। সিনিয়র এডভােকেট জনাব আজিজুর রহমান আক্কাস বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটার হিসাবে সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন। মামলা পরিচালনায় তাকে সাহায্য করেন সৈয়দ মাসুদ রুমী। বিবাদী পক্ষে ছিলেন জনাব সিরাজুল ইসলাম।
সূত্র : সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ প্রত্যয় জসীমজাপ্রাপ্ত১৯৭১