১১-৬-৭২ বাংলার বাণী দালাল বিচারের প্রথম রায় রাজাকার চিকন আলীর ফাঁসির নির্দেশ
কুষ্টিয়ার দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালের সদস্য মি, আর কে বিশ্বাস গত বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত রাজাকার চিকন আলীকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। আসামী চিকন আলীকে ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ দালাল আদেশের ১১(ক) ধারার সাথে গঠিত ফৌজদারী আইনের ৩০২ ধারা মতে দণ্ড দান করা হয়। দালাল নির্দেশের অধীনে এটা দেশের প্রথম দণ্ড। মামলার বিবরণে প্রকাশ মিরপুর গ্রামের অধিবাসী আসামী চিকন আলী বাংলাদেশ দখলদার আমলে রাজাকারে ভর্তি হয় এবং হত্যা লুঠ অগ্নি সংযােগ ও মহিলাদের শ্লীলতাহানি কাজে অংশগ্রহণ করে। গণহত্যা ও অন্যান্য ধরনের অপরাধমূলক কাজে সে সক্রিয় ভাবে পাকবাহিনীর দালালী করে। আসামী ১৯৭১ সালে তার গ্রারে জনৈক কামাল উদ্দিন মণ্ডলকে ডেকে নিয়ে বলে যে সে (চিকন আলী) ইয়াজুদ্দিনের বাড়ী থেকে দুলালী বেগমকে অপহরণ করতে চায়। উল্লেখযােগ্য যে আবদুল গফুরের কন্যা দুলালী বেগমকে দখলদার বাহিনী ও রাজাকারদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ইয়াজুউদ্দিনের গৃহে রাখা হয়েছিল। তারপর চিকন আলী ইয়াজুদ্দিনের গৃহে গিয়া দুলালী বেগমকে তার কাছে দিবার জন্য দাবী করে। কিন্তু ইয়াজউদ্দিন অস্বীকার করলে তাকে রাইফেল দিয়া গুলি করে হত্যা করে। আসামী পক্ষের উকিল বলেন চিকন আলী কখনও রাজাকার ছিল না। মাননীয় জজ উক্ত যুক্তি গ্রহণ না করে আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং তাকে ফাঁসির হুকুম দেন। তবে আদালতে তাকে আপিলের হুকুম দিয়েছেন। উক্ত জজ আসামী একই মামলায় দালাল নির্দেশে ১১(খ) ধারার সাথে ফৌজদারী আইনের ১২১ ধারা মতে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। তবে ইতিমধ্যে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেবার ফলে পৃথক কোন দণ্ড দেওয়া হয়নি। সরকার পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন বিশেষ সরকারি কৌসুলি জনাব আমজাদ হােসেন আসামী পক্ষে কৌসুলি ছিলেন এড, মীর আতাউর রহমান।
সূত্র : সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী ১৯৭১ -প্রত্যয় জসীম