বাঙলাদেশের জনগণের প্রত্যয় “আমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত”
কলকাতা, ৩ এপ্রিল (এপি) বর্ষা ঋতু যতই নিকটতম হয়ে আসবে ততই পাকসেনাবাহিনীকে পূর্ববাঙলায় সাড়ে সাত কোটি মানুষের এক দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রামের মুখােমুখি দাঁড়াতে হবে। লিখেছেন বাঙলাদেশের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ প্রসঙ্গে এ-পির সংবাদদাতা শ্রী মর্ট রােজেন রাম। [রােজেন বউম] ।
বাঙলাদেশের ৫৫ হাজার ১২৬ স্কোয়ার মাইল ব্যাপী এলাকা জুড়ে পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস পাকিস্তান সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেছে। সেই সঙ্গে শত শত গ্রামের মানুষ দা, বর্শা হাতে মুক্তিফৌজ অংশ গ্রহণের জন্য শহরের দিকে ছুটছে।
জনতার সর্বাত্মক বিরােধিতার সামনে পাকসেনাবাহিনী সংঘবদ্ধ হলেও দিশেহারা।
ট্রেন চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়েছে এবং এদেশের প্রধানতঃ কৃষি অর্থনীতি আজ এক কঠিন আবর্তের সম্মুখীন।
বর্ষা আসন্ন এবং পাক সামরিক অভিযান অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।
অপর পক্ষে, আঘাত কর এবং সরে পড়’ কৌশলের ভিত্তিতে প্রতিরােধ অব্যাহত রাখা সম্পর্কে বাঙলাদেশের জনতা ইতিমধ্যে প্রভৃতি শক্তি সঞ্চয় করেছে।
ভারতের সমর্থন দাবি করে দৌলতগঞ্জ গ্রাম থেকে পায়ে হেঁটে এসেছেন এপারে একদল বাঙালী তরুণ তাদের মুখপাত্র প্রত্যয়ের সঙ্গে বলল— “আমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।”
সংবাদদাতা লিখেছেন : বাঙালীদের যারা জানে তারা এই সিদ্ধান্তেই পৌঁচেছেন যে বাংলাদেশ চিরদিনের মত পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।
১৬০০ মাইল দূর থেকে সৈন্য চলাচল ও সরবরাহের ক্ষেত্রে পাকিস্তান সৈন্য বাহিনীর সামনে এক বিষম সমস্যা। ভারতের উপর দিনে পাকিস্তানী বিমান চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ায় বাংলা দেশ ও পশ্চিম পাকিস্তানের ‘মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি হয়ে সাড়ে পাঁচ হাজার কিঃ মিটার দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশীরা-স্থানত্যাগ করতে শুরু করেছে।
সূত্র: কালান্তর, ৪.৪.১৯৭১