পাংশা থানার মচপাড়া অপারেশন
এপ্রিল মাসে রাজবাড়ি হেড কোয়ার্টারে পাকসেনারা এসে ঘাটি করার পর প্রথম তারা পাংশা থানার মাচপাড়া গ্রামে অপারেশন করে। তৎকালীন পাংশা থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক খােন্দকার নূরুল ইসলামের বাহাদুরপুর গ্রামের বাড়ি পাকসেনা ও বিহারীরা মিলিতভাবে অপারেশনে যায়। সম্ভবত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ের ঘটনা। খােন্দকার নূরুল ইসলামকে না পেয়ে তার চাচা আবুল হােসেনকে গুলি করে হত্যা করে। অতঃপর বিহারীরা লুটপাট করে সেখানে থেকে রওয়ানা হয়। আসার পথে তারা রামকোল ও মথুরাপুর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। কিন্তু গ্রামের লােকজন পূর্বাহ্নেই পালিয়ে গিয়েছিল বলে বেশি পায়নি। নয়জন হিন্দু যারা পালাতে পারেনি, তাদের পাকসেনারা ধরে নিয়ে যায়। এই নরপশুরা ঐ নয়জন হিন্দুকে জবাই করে পাংশা মাচপাড়া রাস্তার ব্রীজের নিচে ফেলে দেয়। মাচপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সেক্রেটারী হরেন্দ্রনাথ সরকারও খানসেনাদের হাতে ধরা পড়ে। তাকেও একইভাবে জবাই করে রাস্তার খাদে ফেলে দিয়ে চলে যায়। এই ঘটনার পর অত্র এলাকার লােকজন খুব আতংকগ্রস্ত হয়ে থাকত। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ কর্মী ও হিন্দুরা যারা পাকসেনাদের আক্রমণের সাধারণ লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছিল তারাই বেশি আতংকিত অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াত। (সূত্র : মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর ফরিদপুর, মােঃ সােলায়মান আলী।)
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধের দু’শো রণাঙ্গন – মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত