বটিয়াঘাটার যুদ্ধ
ইংরেজি ১৭ই মে, বাটিয়াঘাটা থানার ৩ কিলােমিটার দক্ষিণ পশ্চিম দিকে বাদামতলা গ্রাম। গ্রামের বাজার বসেছে সকাল বেলা, হঠাৎ করে পাকসেনাবাহিনীর গানবােট এল। সাথে সাথে নামল হাবিবুর রহমান জোয়ারদার, খােরশেদ জাফর, কামাল প্রমুখ রাজাকার। এল বাদামতলা বাজারে, সাথে সাথে সেনাবাহিনীর লােক। তারা ব্যাপক ত্রাস সৃষ্টির উদ্দেশ্যে শুরু করল এলােপাথাড়ী গােলাগুলি। নিহত হল ।
১। গীতারাণী বিশ্বাস-স্বামী সুশীল বিশ্বাস। ফুলতলা বাটিয়াঘাটা থানা
২। দীনেশ বিশ্বাস-পিতা সুশীল বিশ্বাস
ফুলতলা
৩। অমূল্য কুমার রায়
ফুলতলা
৪। অমূল্য বাবুর স্ত্রী।
ফুলতলা।
৫। ব্রজেন্দ্রনাথ বিশ্বাস
ফুলতলা।
মােট ৯জন নিহত এবং প্রাণকৃষ্ণ হালদার, সুশিল বাবু, ডাঃ শরৎচন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ আহত হয়। বীরেন তরফদার নামে ৮/৯ বছরের একটি ছেলে দৌড়ে পালানাের চেষ্টা করলে তাকেও নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। অমূল্য রায় ও তার স্ত্রীও এখানে মারা যায়। কিন্তু কোলে ছিল একটি মেয়ে, মারা যাওয়ার পরও মেয়েটি বুকের দুধ খাচ্ছিল। সে কখনও জানে না তার স্নেহময়ী জননী আর ইহলােকে নেই। আর কোনদিনও সে তার মায়ের দুধ খেতে পারবে না। এ করুণ দৃশ্য একজন রাজাকারেরও প্রাণেও মায়ার উদ্রেক করে এবং সে মেয়েটিকে বাড়ি নিয়ে লালন পালন করে ও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সে তার আত্মীয়-স্বজনদের নিকট ফেরত দেয়।
২৬শে মার্চের পর পরই চেয়ারম্যান পঞ্চানন বাবুর নেতৃত্বে বটিয়াঘাটা থানা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।
বটিয়াটা থানা সগ্রাম কমিটি ছিল নিম্নরূপ বাবু পঞ্চানন বিশ্বাস আহ্বায়ক
১। বাবু ইন্দ্রজি জোয়ারদার
সদস্য
২। ” অধীর কুমার মন্ডল
৩। ” মনােরঞ্জন
৪। ” বিদ্যাধর বিশ্বাস
৫। ” শ্যামল কুমার
৬।” রহিদাস মন্ডল
৭। জনাব মােখতার হােসেন
৮। বাবু শান্তরাম দত্ত।
খুলনা শহর পুনঃ পাকসেনাবাহিনী দখল করে নেয়ায় মুক্তিবাহিনী ও ইপিআর বাহিনীর সদস্যরা জলমা চক্রাখালি হাইস্কুলে আশ্রয় গ্রহণ করে। শান্তি বাহিনী ও পাকসেনাবাহিনীর এদেশীয় দালালদের সহায়তায় নৌবাহিনীর গানবােট এনে গ্রাম আক্রমণ করে স্কুলে শেলিং করে। ফলে ৩জন লােক মারা যায় এবং পরবর্তীকালে গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় ও বাড়িঘর লুট করে। শেলিং-এর ফলে স্কুল ভবনের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
(সূত্র : স্বাধীনতার দুর্জয় অভিযান, স ম বাবর আলী)
সূত্র : মুক্তিযুদ্ধের দু’শো রণাঙ্গন – মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত