You dont have javascript enabled! Please enable it! বাহাদুরাবাদ যুদ্ধ - সংগ্রামের নোটবুক
বাহাদুরাবাদ যুদ্ধ
বাহাদুরাবাদ ঘাটে ৩১শে জুলাই পাকবাহিনী সাথে তৃতীয় ইষ্টবেঙ্গল এক দুধর্ষ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। বাহাদুরাবাদ ঘাট আক্রমণের জন্য তৃতীয় ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রায় ৩৫০ জন সৈন্য যাত্রা শুরু করে। মুক্তিবাহিনী সবার অলক্ষ্যে বড় তিনটি নদী অতিক্রম করে এবং পাকসেনাদের গানবােটকে পাশ কাটিয়ে প্রায় পনের মাইল নদী অতিক্রম করে রাত তিনটার আগেই এফইউপি (Forming up place)-এ সমবেত হয়। ক্যাপ্টেন আনােয়ারের অধীনে ‘এ’ কোম্পানী নৌকাঘাটে অবস্থান নেয়। বিডিআর-এর নায়েব সুবেদার আলী আকবর এক প্লাটুন সৈন্য নিয়ে কাট অফ পার্টির দায়িত্ব গ্রহণ করে। লেঃ নুরুন্নবীর অধীনে ‘ডি’ কোম্পানী বাহাদুরাবাদ ঘাট আক্রমণের জন্য অগ্রসর হয়। সুবেদার করম আলী এক প্লাটুন সৈন্য নিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের দিকে অগ্রসর হয়। নায়েব সুবেদার ভুলু মিয়া এক প্লাটুন সৈন্য নিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের দিকে অগ্রসর হয়। তখন প্রায় ভাের হয়ে এসেছে। পাকসেনারা রাতের পাহারা শেষে বিশ্রাম নিতে যাচ্ছিল। রেল লাইনে ট্রেন শাণ্টিং করা হচ্ছিল। ট্রেন শাণ্টিং করে পিছনে চলে যাওয়ার পর পরই সুবেদার করম আলী রকেট লাঞ্চার থেকে রেলগাড়িতে অবস্থিত জেনারেটর ও শাণ্টিংরত ট্রেনের ইঞ্জিন লক্ষ্য করে গােলাবর্ষন করে। নায়েব সুবেদার ভুলু মিয়া সঙ্গে সঙ্গে গুলিবর্ষণ শুরু করে। ট্রেনের প্রতিটি কামরায় পাকসেনারা শুয়ে ছিল। মুক্তিবাহিনীর তিন ইঞ্চির মর্টারের গােলার আঘাতে দু’টি ফাষ্ট ক্লাশ কামরা, রেলওয়ে বগীষ্টীমার ও শত্রুর বাংকার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এসময় মায়ের সুবেদার ভুলু মিয়ার বাম হাতে গুলি লেগে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরদিন সুবেদার করম আলী পাশ্ববর্তী ব্রীজ ধ্বংস করার জন্য যান। ব্রীজ ধ্বংস হওয়ার শব্দে দেওয়ানগঞ্জের অবস্থানরত পাকসেনারা বাহদুরাবাদ ঘাটের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। প্রথম ইষ্টবেঙ্গলের ‘এ’ ও ‘ডি’ কোম্পানী অতি দ্রুত দেওয়ানগঞ্জ রাজার চিনিকল ও রাজাকার সদর দপ্তর আক্রমণ করে। তিনদিন তৃতীয় ইষ্টবেঙ্গলের সৈন্যরা সেখানে অবস্থান করে মূল অবস্থানে ফিরে আসে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বাহাদুরাবাদ ঘাট আক্রমণ ছিল মুক্তিবাহিনীর একটি সফল অভিযান।

সূত্র : মুক্তিযুদ্ধের দু’শো রণাঙ্গন – মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি সম্পাদিত