বাংলার বাণী
ঢাকা: ১৮ই অক্টোবর, বৃহস্পতিবার, ১লা কার্তিক, ১৩৮০
নোবেল শান্তি পুরস্কার না প্রহসন!
এবারের নোবেল শান্তি পুরস্কার যেন ইচ্ছে করেই প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। আবার সেই প্রহসনটির ব্যালেন্স রক্ষার জন্যেও যেন একটা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, এবার নোবেল শান্তি পুরস্কার টিকে দ্বিখন্ডিত করে একভাগ দেয়া হয়েছে বিশ্ব শান্তির পয়লা নম্বরের শত্রু এবং বিশ্বের যেকোনো শান্ত এলাকায় অশান্ত পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য তৎপর সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ হেনরি কিসিঙ্গারকে এবং বাকি অংশটি দেয়া হয়েছে বিগত বিশটি বছর যাবত ফরাসি ঔপনিবেশ ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে শান্তি, স্বাধীনতা ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সংগ্রামের নিয়োজিত উত্তর ভিয়েতনামের প্রথম কাতারের মুক্তি সৈনিক লীডাক থোকে।
অবশ্য শান্তি পুরস্কারটিকে এহেন অসামঞ্জস্য পূর্ণ দ্বিখন্ডিত করণ কালে নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটি ঘোষণা করেছেন যে, ভিয়েতনামের শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারিস চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে ডঃ কিসিঙ্গার ও লীডাক থোর ভূমিকার জন্য এটা করা হয়েছে। এখানেও প্রশ্ন আসে মার্কিন প্রেসিডেন্টের তৎকালীন উপদেষ্টার ডঃ কিসিঙ্গার তো শান্তির জন্য পারিস চুক্তি সম্পাদনে যাননি। তিনি গিয়েছিলেন ভিয়েতনাম যুদ্ধের পাকে তার প্রভুর নিক্সন সাহেব ও তাঁর পূর্ববর্তীরা যেভাবে আটকে গেছিলেন এবং ডুবতে বসে ছিলেন, তাঁদের উদ্ধার করতে-শেষ রক্ষা করতে। তাইতো শান্তি চুক্তি সম্পাদনের পূর্বমুহূর্তে ইতিহাসের জঘন্যতম বোমা বর্ষণ করে ভিয়েৎনামের জনপদগুলোর নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল মার্কিনিরা। আর মুক্তিকামী ভিয়েতনামীরা যেহেতু শান্তিপ্রিয় সেহেতু তারা আলোচনার টেবিলে গেছিলেন। এমতবস্থায় নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটি কিসিঙ্গার আর লীডাক থোকে একই পর্যায়ে ফেলে শান্তি পুরস্কারটি কে দ্বিখন্ডিত করে বন্টনের ব্যবস্থার মাধ্যমে একদিকে যেমন নোবেল শান্তি পুরস্কার কে অসম্মান, করেছেন তেমনি অপমান করেছেন লীডাক থোকেও।
স্যার আলফ্রেড নোবেল যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্ব শান্তির জন্য এবং বিশ্বশান্তির দূতদের সম্মানিত করার জন্য এই নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রবর্তন করেছেন, অসুস্থ নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটি এবার সেই মহৎ উদ্দেশ্যকে প্রহসনে পরিণত করে ছেড়েছেন। হেনরি কিসিঙ্গার তাদের দৃষ্টিতে হয়তো বা শান্তি পুরস্কারের অংশ পেতে পারেন, কিন্তু বিশ্ব মানবতা ও বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষের দৃষ্টিতে তিনি এক অশান্তি সৃষ্টিরই নায়ক। আর তারই প্রমাণ হচ্ছে কিসিঙ্গারের মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর পদগ্রহণের দু’সপ্তাহের মধ্যে চিলিতে রক্তপাত ও গৃহযুদ্ধ এবং মাসখানেকের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্বাধীনতাপ্রিয় আরবদের উপর ইসরাইলের মাধ্যমে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নয় হামলা অন্যদিকে ভিয়েতনাম শান্তি চুক্তি সম্পাদনের পর এখনো থিউ বাহিনীকে দিয়ে যুদ্ধ টিকিয়ে রেখে কিসিঙ্গার সাহেব যেন যথার্থ শান্তির কাজই করছেন। এরপরও কি নোবেল শান্তি কমিটি তাকে শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করবেন?
ভুট্টোর রহস্যজনক মধ্যপ্রাচ্য সফর
ভুট্টো এবার মধ্যপ্রাচ্য সফরে বেরিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের আগুন জ্বলছে, তখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে পর্যবেক্ষণ মহলে নানা রকম সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে। কেউ বলছেন, জনাব ভুট্টো মধ্যপ্রাচ্য সফর রহস্যজনক, আবার কেউ বলছেন, আরব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভুট্টোকে দিয়ে ষড়যন্ত্র হাসিল করতে চাইছে। মধ্যপ্রাচ্য সফরকালে জনাব ভুট্টো ইরান, তুরস্ক, সৌদি আরব-এই তিনটি দেশ সফর করবেন। বেশ ভালো কথা। কিন্তু জনাব ভুট্টো এই সফরের নেপথ্যে কারণটা কি? ভুট্টোর এই সফরকে ঘিরে সন্দেহের জন্ম হচ্ছে এজন্য যে, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের যে তিনটি দেশ সফর করছেন সে তিনটি দেশের সঙ্গেই আরবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ইসরাইল এবং ইসরাইলের মুরব্বি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দারুণ দহরম মহরম বিদ্যমান। আরব-ইসরাইল সংঘর্ষকালে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ আরবদের সঙ্গে সংহতি ঘোষণা করেছে, কিন্তু মুসলিম দেশ হওয়া সত্ত্বেও ইরান ও তুরস্কের আরব জাহানের শত্রু ইসরাইলকে দিয়েছে স্বীকৃতি। শুধু তাই নয়, কূটনৈতিক মাখামাখি এবং বাণিজ্যিক লেনদেনও রয়েছে। ইসরাইলি আগ্রাসী হামলার বিরুদ্ধে মিশর ও সিরিয়াতে ধনে জনে সর্বতোভাবে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলো সাহায্যের হাত সম্প্রসারণ করা সত্ত্বেও ইরান কিন্তু আরবদের স্বপক্ষে ‘টু’ শব্দটিও উচ্চারণ করেনি। খবর পাওয়া গেছে, তেহেরানে পৌঁছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জনাব ভুট্টো ইরানের শাহের সঙ্গে সালপরামর্শক শুরু করে দিয়েছেন। আরব-ইসরাইলের বর্তমান যুদ্ধের প্রেক্ষিতে জনাব ভুট্টো মৌখিকভাবে আরবদের প্রতি সমর্থন দিয়েছিলেন কারণ, মুসলিম দেশ হিসেবে পাকিস্তান বরাবর আরবদের বড়ো দরদি বলে নিজেকে জাহির করতে। কিন্তু ভুট্টো যখন আরবদের প্রতি বৈরী দেশগুলোতে সফর করতে গেলেন, তখনই আরবদের প্রকৃত বন্ধু ভাবাপন্ন দেশগুলোতে সন্দেহের বীজ অঙ্কুরিত হল। এ সন্দেহের যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ রয়েছে। আরব-ইসরাইল যুদ্ধের ইসরাইলে এখন ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা। ইসরাইলের এই সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জনাব ভুট্টো একটি বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ইসরাইলের মিত্র দেশগুলো সফর করেছেন, তাতে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক।
এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে ইসরাইলের অভিভাবক আমেরিকার অঙ্গুলি সংকেতই জনাব ভুট্টো সেণ্টোর সদস্যভূক্ত ইরান এবং তুরস্ক সফরে বেরিয়েছেন। ভুট্টোর এই সফরের ফলে একথা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, জনাব ভুট্টো মধ্যপ্রাচ্য সংক্রান্ত কার্যকলাপ রীতিমতো রহসকৃত। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জনাব ভুট্টোর সব কিছুতেই রহস্যের চিহ্ন প্রকট। কাজেই তিনি যে কেবল মুখে মুখে আরব জাহানের প্রতি সমর্থন দান করেছেন এবারের সফরে ফলে সে মুখোশ খসে গেছে। ভুট্টো আসলে তার প্রভু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তুষ্ট করার জন্যই ইসরাইলের মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে হম্বি-তম্বি করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। আরব-ইসরাইল যুদ্ধের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা সুস্পষ্ট। জানা গেছে, প্রতি পনেরো মিনিট অন্তর অন্তর মার্কিন বিমান অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইসরাইলে যাচ্ছে। আরবদের পর্যুদস্ত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইসরাইলকে সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে। ভুট্টো মধ্যপ্রাচ্য সফর করতে গিয়ে ইহুদীদের বিরুদ্ধে আরবদের পাশে থেকে যেসব দেশ যুদ্ধে জড়িত সেসব দেশে না গিয়ে আরব বৈরী দেশগুলোতে সফল করতে যাওয়াতে রহস্যটা আরো দানা বেঁধে উঠেছে। ভুট্টো লোকটির যে মতলব শুভ নয়, তাও আজ আর ধামাচাপা পড়ে নেই। আরবদের বিরুদ্ধে হাওয়াই হামলা সুগম করার জন্য তুরস্ক নাকি তার বিমানঘাঁটি ব্যবহার করতে দিচ্ছে-এ অভিযোগ মিশরের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ইসরাইলকে সার্বিক সাহায্যদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই উপরন্ত আরবরা ইসরাইলের যেসব অস্ত্র ধ্বংস করেছে সেসব এর ক্ষতি পুষিয়ে দেবার জন্য যত অস্ত্র লাগে আমেরিকা-ইসরাইল তা দেবে বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে। ইসরাইল তার মুরব্বি আমেরিকার জোরে যা আস্ফালন করার তা তো করেছেই, কিন্তু যুদ্ধের ফলাফল জানা যাচ্ছে, তাতে ইসরাইলের অবস্থা হয়েছে ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’র মতো। ভুট্টো কি তাহলে ইসরাইলকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য সফরে বেরিয়েছেন? নাকি এতে করে তিনি আরব জাহানের প্রতি তার দরদী মনোভঙ্গি প্রকাশ ঘটাচ্ছেন? জনাব ভুট্টোর এই মধ্যপ্রাচ্য সফরকে আমরা সন্দেহের চোখেই দেখছি কারণ ভুট্টোর এ সফর একবারে উদ্দেশ্যহীন নয়। ভুট্টো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়ানক হিসেবেই এ সফরে বেরিয়েছেন। এ সফর আরবদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। তাই বলি ভুট্টো সাহেব-আপনি মুখে মুখে আরব জাহানের প্রতি যত মরা-কান্নাই কাঁদুন না কেন আপনার মজ্জাগত অভ্যাস তো আমাদের বুঝতে বাকী নেই। আমরা আপনাকে হাড়ে হাড়ে চিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচশালা পরিকল্পনা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী পাঁচশালা পরিকল্পনা প্রায় একুশ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে খবরে প্রকাশ। উল্লিখিত অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প গুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ও আধুনিক ভাষার তিনটি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, বর্তমান বিজ্ঞান ভবন এলাকায় কলাভবন স্থানান্তরিত করে বর্তমান কলাভবন টিকে একটি ছাত্রীনিবাসে পরিণত করা, সার্জেন্ট জহুরুল হক হল এর সাথে বারো তলা আর একটি ছাত্রবাস নির্মাণ এবং শতকরা পঁচিশ জন অধ্যাপক ও কর্মচারীর বাসস্থানের ব্যবস্থা করা।
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে এককালে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাঁচশালা উন্নয়ন প্রকল্প এটাই প্রথম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর আগে আর কখনও এমন দীর্ঘ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল বলে আমাদের জানা নেই। বিশেষ করে তথাকথিত স্বাধীন পাকিস্তানে সুদীর্ঘ চব্বিশ পঁচিশ বছরের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতে ব্যয় বরাদ্দ সময় হয়েছিল তা নিতান্তই অনুল্লেখযোগ্য। শুধু তাই নয়, বাঙালি জাতীয়তার স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল পাদপীঠ এই শিক্ষাঙ্গনটির প্রতি তদানীন্তন পাক-শাসক চক্রের বিসদৃশ ও দৃষ্টিপাতই ছিল অধিক। কিন্তু প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে পরিচিত এই বিদ্যাপীঠ আপন ঐতিহ্যই এর অস্তিত্ব ও উন্নত শির দৃপ্ত দন্তে ঘোষণা করেছে।
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিধ্বস্ত দেশের হাজারো সমস্যা ও সংকটের মধ্যেও মাত্র দু বছর অতিক্রম না হতেই জাতির জনক ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রত্যেকটি সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের প্রশাসনিক কাঠামোর আমূল পরিবর্তন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স নামে যে কালাকানুন সাবেক পাক আমলে এদেশের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক শিক্ষাঙ্গনকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করে রেখেছিল তা বাতিল করে স্বাধীন বাংলার সমাজতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার আলোকে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছে। এই অর্ডিন্যান্সের ফলে সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন মূল্যায়নে মূল্যায়িত হয়েছে। এবং সেই অর্ডিন্যান্স জারি বাস্তব রূপায়নে ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন’ বিশ্ববিদ্যালয় আগামী পাঁচশালা পরিকল্পনা প্রণয়নে ও মঞ্জুরি দানে যেমন সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্নমুখী সংকট ও সমস্যা নিরসনে কার্যকর প্রকল্প গ্রহণের প্রয়াস পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিন থেকে ক্রমান্বয়ে যেসকল সমস্যা ও সংকট সৃষ্টি হয়ে রয়েছে তা একটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বা প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা তে সমাধান সম্ভব নয়। উপরন্ত বিধ্বস্ত দেশের মৌলিক অধিকার আহার, বাসস্থান, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদির ব্যাপক নিম্নতম পর্যায়ে মিটিয়ে নেবার লক্ষ রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার উন্নয়ন কল্পে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা নেহাৎ কম বলা যায় না। তাছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া দেশে আরো ক’টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে সে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভাব-অভিযোগ মেটানোরও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সুতরাং সেই আলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পাঁচশালা উন্নয়ন পরিকল্পনা বিচার করতে হবে বলে আমরা মনে করি।
আগেই বলেছি অভাব-অভিযোগ বা সমস্যা বহু কিন্তু একসাথে সেগুলোর সব ক’টির সমাধান সম্ভব নয়। একথা স্বীকার করে নিয়ে আমরা বলতে চাই, দেশের বর্তমান অবস্থা এবং অভাব ও সংকট সমস্যা বিবেচনা করে তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উন্নয়ন সাধন করতে হবে। নচেৎ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের আসল তাৎপর্য ভেস্তে যাবে।
কালেক্টেড অ্যান্ড ইউনিকোডেড বাই- সংগ্রামের নোটবুক