This is a temporary post for collecting data. Not for posting and not for publishing. Saved only as readable for the editors. Not clickable and not downloadable.
অবরুদ্ধ বাংলাদেশ পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ও তার দোসরদের তৎপরতা
সুকুমার বিশ্বাস
প্রথম অধ্যায়।
শান্তি কমিটি গঠন ও তৎপরতা
অবরুদ্ধ বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা দেশে স্বাভাবিক অবস্থা। ফিরিয়ে আনা, জনমনে আস্থা ও বিশ্বাস সৃষ্টি এবং জনগণের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যোগাযোগ ও সেতুবন্ধনে গঠিত হয় ‘শান্তি কমিটি’। বস্তুত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সকল কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ সহযােগিতা ও সাহায্যের জন্যই এই কমিটি গঠন করা হয়।
৪ এপ্রিল বিকালে পিডিপি প্রধান নুরুল আমীনের নেতৃত্বে ১২ জন দক্ষিণপন্থী নেতা সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধি দল ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লে: জেনারেল। টিক্কা খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন মৌলভী ফরিদ। আহমদ, অধ্যাপক গােলাম আজম, খাজা খয়ের উদ্দীন, এ. কিউ. এম. শফিকুল ইসলাম, মাওলানা নূরুজ্জামান প্রমুখ। এ সম্পর্কে ৫ এপ্রিলের ‘পূর্বদেশ’-এ বলা হলাে : “অবিলম্বে সমগ্র প্রদেশে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে প্রতিনিধি দল সামরিক আইন প্রশাসককে পূর্ণ সহযােগিতার আশ্বাস এবং জনগণের মন থেকে ভিত্তিহীন ভয় দূর করার উদ্দেশ্যে তারা ঢাকায় নাগরিক কমিটি গঠন করারও প্রস্তাব দেন।… জেনারেল টিক্কা খান দুষ্কৃতিকারী রাষ্ট্রদ্রোহী ও সমাজ বিরােধীদের আশ্রয় না দেয়ার এবং সামরিক আইন। কর্তৃপক্ষের কাছে এদের সম্পর্কে সংবাদ পৌছে দেয়ার জন্য জনগণকে উপদেশ দেন।”
কিন্তু কাউন্সিল মুসলিম লীগ কাইয়ুমপন্থী মুসলিম লীগ, কনভেনশন মুসলিম লীগের সকল গ্রুপ, নেজামে ইসলাম, পিডিপি ও ইসলামিক রিপাবলিক পার্টির সঙ্গে জামাতে ইসলামের মতবিরােধের কারণে শান্তি কমিটি গঠনে সমস্যা দেখা দিল। জামাত নেতা অধ্যাপক গােলাম আজম একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে ৬ এপ্রিল পুনরায় টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করলেন। এই প্রতিনিধি দলের অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী । বস্তুত হামিদুল হক চৌধুরীর মধ্যস্থতায় এই ললির মধ্যে আপাত অন্তর্কলহের অবসান ঘটে এবং সম্মিলিতভাবে নাগরিক শান্তি কমিটি গঠনে এক মত হয় । টিক্কা খান গভর্নর হিসাবে ঢাকা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বি,এ, সিদ্দিকীর কাছে শপথ গ্রহণ করেন ৯ এপ্রিল। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর পরই ঠিক হলাে ‘শান্তি কমিটি’। ঢাকায় ১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল গঠিত এ কমিটি সম্পর্কে পত্রিকায় বলা হলাে :
________________________________________
| ‘শহরের নাগরিকদের প্রাত্যহিক জীবনে সত্বর স্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশে। গতকাল এথানে বাজা খয়ের উদ্দীনকে আহবায়ক করিয়া ১৪০ সদস্য বিশিষ্ট একটি নাগরিক শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে। উল্লেখযােগ্য যে, কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালনাধীনে বৃহত্তর ঢাকায় ইউনিয়ন ও মহল্লা পর্যায়ে অনুজপ কমিটি গঠন করা হইবে। কমিটি আগামী ১৩ই এপ্রিল জোহর নামাজের পর বায়তুল মােকাররম হইতে একটি মিছিল বাহিরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে।…সতায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হিন্দুস্থানের হীন
সংবাদে কমিটি সদস্যদের মধ্যে প্রখ্যাত কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়। অপরদিকে নাগরিক শান্তি কমিটি গঠন বিষয়ে দৈনিক পাকিস্তান’ পত্রিকাতেও খবর প্রকাশিত হলাে। সংবাদে বলা হলাে:
“নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত শুক্রবার ঢাকায় খাজা খায়ের উদ্দিনকে আহবায়ক করে ১৮০ সদস্য বিশিষ্ট একটি নাগরিক শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এপিপি’র খবরে প্রকাশ, কমিটি মঙ্গলবার জোহর নামাজের পর বায়তুল মােকাররম থেকে চকবাজার মসজিদ পর্যন্ত এক মিছিল বের করেন। কমিটি এক কেন্দ্রীয় কমিটির অধীনে কাজ করার পরিকল্পনা করছে। গত ৯ই এপ্রিল ঢাকায় প্রতিনিধিত্বশীল নাগরিকদের এক সায় এক শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি খাজা খয়ের উদ্দিনকে আহবায়ক মনােনীত
কমিটিতে মােট ১৪০ জন সদস্য রয়েছেন। এই কমিটির বৃহওর ঢাকায় ইউনিয়ন ও মহল্লা পর্যায়ে অনুজপ কমিটি গঠনের ক্ষমতা রয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালনায় এগুলাে কাজ করবে। নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কমিটি সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কমিটি প্রথম দফায় এই মাসের ১৩ই এপ্রিল মঙ্গলবার জোহর নামাজের পর বায়তুল মােকাররম থেকে চকবাজার মসজিদের কাছে পর্যন্ত একটি মিছিল বের করার সিদ্ধান্ত করেন।
কমিটিতে অন্যান্য বিশিষ্ট সামাদের মধ্যে রয়েছেন এ, কিউ, এম, শফিউল ইসলাম, অধ্যাপক গােলাম আজম, মওলানা সৈয়দ মােহাম্মদ মাসুম, আবদুল জব্বার অন্দর, মাহমুদ আলী, এম. এ. কে. রফিকুল হােসেন, ইউসুফ আলী চৌধুরী, আবুল কাশেম, এম, ফরিদ আহমদ, অধ্যাপক গোলাম সারওয়ার, সৈয়ল আজিজুল হক, এ. এস. এম, সােলায়মান, পীর মােহসেনউদ্দিন, এডভোকেট শফিকুর রহমান, মেজর আফসার উদ্দিন, সৈয়দ মােহসিন আলী, এডভােকেট ফজলুল হক চৌধুরী, আলহাজ সিরাজউদ্দিন, এডভোকেট এ. টি, সাদী, এডভােকেট আতাউল হক খান, মকবুলুর রহমান, আলহাজ মােহাম্মদ আকিল, অধ্যক্ষ রুহুল কুদুস, ইয়ং পাকিস্তান সম্পাদক নূরুজ্জামান, মওলানা মিয়া মফিজুল হক, এডভােকেট আবু সালেক, এডভোকেট
________________________________________
এই সভা ভারতীয় নেতাদের ঘনি ভাষায় হুঁশিয়ার করে দিয়ে। এই সভা মনে করে। যে, পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী পাঠিয়ে হিন্দুস্থান বস্তুতঃপক্ষে পূর্ব পাকিস্তানীদের দেশপ্রেমে চ্যালেঞ্জ করছে। এই সভা আমাদের প্রিয় দেশের সংহতি ও মর্যাদা রক্ষার উদ্দেশ্যে এই চ্যালেঞ্জু সাহসিকতার সঙ্গে মােকাবিলার জন্য দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতি আকুল আহ্বান জানাচ্ছে।
মূলত মত বিরােধের কারণে একই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মেীলভী ফরিদ আহমদ-এর নেতৃত্বে আরাে একটি কমিটি গঠিত হয়। এ সম্পর্কে সংবাদে বলা হলাে :
প্রদেশের জনমনে আস্থা সৃষ্টি ও ভারতীয় প্রচার প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে সদস্যের টয়ারিং কমিটি পঠন।
| ঢাকা, ১২ই এপ্রিল শাস্তির ও পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণের মনে আস্থার জান ফিরাইয়া আনা এবং দেশের এই অংশের পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতীয় মিথ্যা প্রচারণা প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে গত শনিবার মৌলভী ফরিদ আহমসের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়। এলামিক রিপাবলিক পার্টির সভাপতি মওলানা নুরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তাঁহাকেই ষ্টিয়ারিং কমিটির সেক্রেটারী জেনারেল নির্বাচিত করা হয়। জনাব কোরবান আলী (বার-এট-ল), জনাব ওয়াঞ্জী উল্লাহ খান, জনাব আজিজুর রহমান, জনাব মােস্তাফিজুর রহমান, কাজী ফিরোজা সিদ্দিকী, চট্টগ্রামের এডভােকেট জনাৰ এ, কে, এম, নূরুল কত্ৰিম নির্বাচিত এমপিএ (স্বতন্ত্র) জনাব মাহমুদ আলী সরকার কমিটির কার্যনির্বাহক সদস্য থাকিবেন। বিস্তারিত কর্মসূচী #ণয়নের জন্য আগামী ১৪ই এপ্রিল কমিটি এক বৈঠকে মিলিত হইবে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যে, সর্বত্র আস্থার ভাব ও শাস্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় বেতারে মিথ্যা প্রচারণা প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে প্রতি জেলায় শান্তি ও জনকল্যাণ কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার জন্য কমিটি পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও জনকল্যাণ কাউন্সিল গেঠন করিবে।
কার্যকরীভাবে ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের মােকাবেলা এবং ভারতীয় প্রচারণায়। কর্ণপাত না করিয়া কৃষি, শিল্প, বাণিজ্যসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে অংশগ্রহণে জনসাধারণকে উত্সাহিত করাই হইবে কাউন্সিল সমূহের অন্যতম লক্ষ্য।”
এইদিন শান্তি কমিটি সংক্রান্ত আরাে একটি সংবাদ পাওয়া যায়। এপিপি পরিবেশিত আকাদে বলা হলাে :
ঢাকা, ১২ই এপ্রিল ঢাকা নাগরিক শাস্তি কমিটি কর্তৃক আহত শােভাযাত্রা আগামীকাল বেলা ৩ টায় বায়তুল মােকাররম হইতে বাহির হইবে বলিয়া আজ এখানে
না হইয়াছে। বিভিন্ন মহল হইতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শােভাযাত্রা জাতীয় পাকাকা ও ব্যানারসহ অতি অবশ্য বলা আড়াই ঘটিকার মধ্যে বায়তুল মােকাররমে হাজির হওয়ার জন্য বলা হইয়াছে।
এখনি শােভাযাত্রাটি নওয়াবপুর রােড, সদরঘাট ও ইসলামপুর হইয়া চকবাজারে Wর পর তথা হইতে পোতা ই লালনগি জােড় ঘুরিমা নিউমার্কেটের সম্মুখে আসিয়া WNখ হইনে। ঢাকার শান্তিপ্রিয়া ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের সঙ্গে এই শোভাযাত্রায় (গ”পানের জন্য অনুরােধ জানান হইয়াছে ।।
________________________________________
শান্তি কমিটির পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৩ এপ্রিল ঢাকায় আয়ােজন করা হয় বিক্ষোভ মিছিলের। মিছিলকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ফেটুন বহন করে বিভিন্ন শ্লোগানে ঢাকার বিভিন্ন পথ পরিক্রম করে। এই বিক্ষোভ সমাবেশ সম্পর্কে এপিপি পরিবেশিত সংবাদে কলা হয় :
‘ঢাকা শহর শান্তি কমিটির আহবানে ঢাকার শান্তিপ্রিয় নাগরিকগণ গতকাল (মঙ্গলবার) বিকাল পৌনে তিনটায় বায়তুল মোকাররম জাগান হইতে এক বিরাট মিছিল বাহির হয়। পূর্ব পাকিস্তানের পবিত্রভূমিতে ভারতীয় সশস্ত্র অনুপ্রবেশের প্রতিবাদে
বা এই মিছিল বাহির করা হয়।
খাজ খয়ের উদ্দিন, আব্দুস সবুর খান, গোলাম আজম ও শফিকুল ইসলাম প্রমুখ। রাজনৈতিক নেতাসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের নাগরিক মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। মিছিলটি নবাবপুর রােড, সদরঘাট, পাটুয়াটুলী, ইসলামপুর, মিটফোর্ড, চকবাজার ও আজিমপুরে হইয়া নিউমার্কেটে গমন করে।
প্রবল ঝড় বৃষ্টিকে উপেক্ষা করিয়া মিছিলকারীরা বিভিন্ন শ্লোগান খচিত শতশত ব্যানার ও ফেস্টুন বহন করে। বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুনে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ কাংস হউক”, “পূর্ব পাকিস্তানে ভারতীয় অনুপ্রবেশ বন্ধ কর”, ভারত ভারত হুশিয়ার হুশিয়ার’, ‘ভারতীয় এজেন্টরা সাবধান সাবধান” প্রভৃতি শ্লোগান লিখিত মিছিলে জাতির পিতা কায়েদে আজম, মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ, কায়েদে মিল্লাত, লিয়াকত আলী খান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের বিরাট প্রতিকৃতি বহন করা হয়।
পথিলাখে ও বিভিন্ন ভবনের উপরে অপেক্ষমান হাজার হাজার আবাল বৃদ্ধ বনিতা “পাকিস্তান জিন্দাবাদ”, “কায়েদে আজম হিশাবাল” প্রভৃতি শ্লোগানের মাধ্যমে নিছিলকারীদের আন্তরিক অভিনন্দন জ্ঞাপন করে।
| মিছিলকারীরা পাকিস্তান শবণ, কায়েদে আজম জিপাম, ইয়াহিয়া খান দিবাল, টিকা খান জিন্দাবাদ, ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক, ভারতীয় এজেন্টরা শিয়ায়
শিয়ার, ভারতীয় অনুপ্রবেশ বরদাস্ত করি না, পাকিস্তানা মতলৰ কিয়া লাইলাহা ইয়াল্লাহু”, “আমার নেতা তোমার নেতা হজরত মােহাম্মদ মােস্তফা”, “মুসলিম মুসলিম জেগেছে প্রতি শ্লোগান ঢাকার রাজপথ প্রকম্পিত করিয়া তােলে।
| মিছিল শেষে খাজা আয়ের উদ্দিন এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আন্তরিত নাবাল জ্ঞাপন করেন। পরিশেষে অধ্যাপক গােলাম আজম পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতি কামনা করিয়া মােনাজাত করেন।
এদিকে মােছলেম লীগ নেতৃবৃন্দ সর্বত্র শান্তি কমিটি গঠনের আহবান জানালেন। সংবাদে বলা হলাে : | ‘া , ১২ই এপ্রিল।পূর্ব পাকিস্তান মােছলেম লীগের (ফলুল কাদের এল) প্রেসিডেন্ট জনাব শামসুল হুদা ও সাধারণ সম্পাদক জুৰ , এন, এম ইউসুফ দেশে স্বাভাবিক অস্ত্র পুনরুদ্ধার, মকার সন্দেহ প্রবণতা দূরীকরণ, মিথ্যা গুজব ও ওজনা সূতিকর অলীক কাহিনী প্রচারে বিরত করার উদ্দেশে দেশে সকল পাটির ইউনিটকে শান্তিপ্রিয় জনসাধারণকে লইয়া কমিটি গঠনের জন্য স্ব-স্ব অঞ্চলে সক্রিয়ভাবে আরো চালানাের আহবান জানাইয়াছেন।
সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে মােছলেম লীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, এই মুহুর্তে সর্বাগ্রে প্রNেIশ দেশে পরিপূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা পুনরুদ্ধার ও জীবনের সর্বক্ষেত্রে অর্থনৈতিক
________________________________________
অবস্থার উন্নয়ন সাধন করা। এমতাবস্থায় তাহারা দলীয় ইউনিটগুলিকে স্থানীয় কাশনে
বিবৃতিতে তাহাৱা বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণকে মিথ্যা প্রচারণা ও উত্তেজনাপূর্ণ কাহিনী শােনাইয়া সমস্ত করা সম্ভব হইবে না। ভারত পূর্ব পাকিস্তাবে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী রেশ রায় দেশের জনগণ একবাক্যে উহার নিন্দা করিয়াছে। তাহাৱা বলেন, এই অঞ্চলের অৰিবাসীরা পূর্ব পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও অথত রক্ষার জন্য ভারতের যে কোন কলেঞ্জ মােকাবেলা করিতে সঙ্কল্পবদ্ধ রহিয়াছে।
অপরদিকে মণ্ডলৰী ফরিদ আহমদ-এর নেতৃস্বাধীন প্রাদেশিক শক্তি ও জনকল্যাণমূলক স্টিয়ারিং কমিটির সভা ১৪ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এছলাম ও পাকিস্তানের দুশমনদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সঙ্কল্প গ্রহণ করা হয়। এপিপি-কে উস্কৃত করে আল পারা এ সভা সম্পর্কে জানালাে;
ঢাকা, ১৪ই এপ্রিল।অওলবী ফরিদ আহমদের সভাপতিত্বে আজ সেশিক শক্তি ও জনকল্যাণমূলক ষ্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ক্লিয়ারিং কমিটির মেশিক ও
‘নট পর্যায়ে গৃহীত আদর্শ, নীতি ও কর্মসূচী সম্পর্কে মওলবী ফরিদ আহমদ সভায় কৃতা করেন।
সতায় মরুল নূরুজামান ষ্টিয়ারিং কমিটির মূল লক্ষ্য সূর্কে বক্তৃতা করেন। তিনি এলেন, কমিটি সারা দেশব্যাপী তাহার তৎপরতা অব্যাহত ৰাখিৰে এবং কমিটির মূল * হইতেছে জমিনে আস্থাৱ ভাবি পুনরুদ্ধার করা এবং জীবনের সর্ব পর্যায়ে স্বাভাবিক বন ব্যবস্থা ফিরাইয়া আনা। জনাব নূরুজ্জামান কমিটির লক্ষ্য সম্পর্কে আরও বলেন যে, জাম ও পাকিস্তানের দুশমনের সহিত সংগ্রাম করার জন্য জনগণকে প্রস্তুত রাখার পারেও আমাদের তৎপরতা অব্যাহত থাকিবে।’
১৩ এপ্রিল ঢাকা নাগরিক শান্তি কমিটির উদ্যোগে ঢাকায় আয়ােজিত বিক্ষোভ আবেশ সম্পর্কে ও মিছিল’ শিরােনামে সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়। ১৫ এপ্রিল আশিত এ সম্পাদকীয়তে বলা হলাে : | নাগরিক শান্তি কমিটির উদ্যোগে গত মঙ্গলবার একটি মিছিল বাহির করা হয়। কাধিক লােকের এই মিছিলটি বায়তুল মােকাররম হইতে বাহির হইয়া সদরঘাট,
লামপুর এবং লালবাগ প্রদক্ষিণ করে এবং নিউমার্কেটে গিয়া সমাপ্ত হয়। মিছিল আলনা করেন নাগরিক শান্তি কমিটির প্রেসিভেন্ট খওয়াজ খয়রুন। শহরের বিভিন্ন
লাখ ও মহৱা হইতে অগণিত লােকের ধারা আসিয়া বায়তুল মােকাররমে মিলিত জতে থাকে। তাহাদের হাতে হাতে সবুজ-সাদায় চাঁদ খচিত জাতীয় পতাকায়
অসমূহ সুশােভিত হইয়া উহ, এবং লাখাে মানুষের কষ্ঠে নারায়ে তকবীর আর কার”, “পাকিস্তান জিন্দাবাদ”, “কায়েদে আজম জিশাবাদ”, ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ * কৰ” প্রভৃতি নিতে ঢাকার আকাশ-বাতাস মুখরিত হইয়া উঠে। ভারতের পূর্ব আন বিরােধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং স্থানীয় অধিবাসীদের মনে স্বস্থি ফিরাইয়া এ জন্য আয়ােজিত এই মিছিলে ঢাকার নাগরিকবৃন্দ যে বিপুল আগ্রহ ও উৎসাহ
বা ফোলন করেন, তাহাতে তাহাদের নরম স্বদেশপ্রেম, জাতীয় পতাকা
________________________________________
ও আদর্শের প্রতি সুগভীর অনুরাগ এবং জাতীয় শত্রুর মােকাবিলার জন্য সুলঃ সংকল্প প্রকাশ পাইয়াছে। সুদূরপ্রসারী দুরভিসন্ধি প্রণােদিত ভারতীয় অন্য মিথ্যা প্রচারণার মােড় না ঘুরিলেও ইহা বিশ্ববাসীকে এখনকার যথার্থ অবস্থা বুকাইয়া দিতে সমর্থ হইবে।।
ভারতীয় মিথ্যার পসরা লইয়া ভারতীয় প্রচার সমূহ দিনের পর দিন অলীক কাহিনী জড়াইয়া চলিয়াছে যে, ঢাণ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হইয়াছে এই ছাই-ভস্থ ছাড়া এখানে অবশিষ্ট কিছুই নাই। লক্ষ মানুষ ঢাকার রাজপথে ৰাহির হইয়া আসিয়া ভারতীয় বেঈমানদের মিথ্যার বেসাতির বিরুদ্ধে জীবন্ত প্রতিবানের তরঙ্গ ভুলিয়াছেন এবং ভারতীয় দুরভিসন্ধি খতম করার কঠিন শপথ গ্রহণ করিয়াছেন। কিন্তু নিজৰুে লজ্জা দেওয়ার উপায় নাই। ভারতীয় প্রচারবিশারদদের বেহায়াপনা এমন চরমে উঠিয়াছে যে, গােটা বিশ্বে তাহাৱাই তাহাদের একমাত্র নাজিরে পরিণ হইয়াছে। চাণক্যের দেশ ভাৱত চাণকা। নীতিতে বিশ্বাসী। নিজেদের মালিয় ও অকৃত্রিম ঐতিহ্য অনুসারে তাহাৱা যে মিথ্যার। বেসাতি শুরু করিয়াছে তাহাতে গােয়াবলসের অপকীর্তিও ন হইয়া গিয়াছে। সম্প্রতি কুমিল্লার নাগরিকবৃন্দ শান্তি মিছিল বাহির করিয়াছিলেন। ভারতীয় অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ভাহাৱা কঠোর প্রতিবাদ জানাইয়াছেন এবং পাকিস্তানের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য দৃঢ়সংকল্প ঘােষণা করিয়াছেন। অথচ সেই শান্তি মিছিল বাহির হওয়ার পরও ভারত কুমিল্পায় “প্রচণ্ড যুদ্ধ” চলা, কুমিল্লা জনশূন্য হওয়া প্রভৃফি অলীক কাহিনী প্রচার করিয়াছে। পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গা সম্পর্কে নানারূপ অপপ্রচার চালাইয়া চরম বিভ্রান্তি সৃষ্ঠিীর যে চেষ্টা সে করিয়াছিল তাহা সফল না হইলেও তাহার অপপ্রচারের বিরাম ঘটিতেছে না। তাহার অপপ্রচারের ফলে সশস্ত্র ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীরা সুবিধা আদায় করিতে সমর্থ হইবে, এই মিথ্যা আশা লইয়া ভারত আত্মপ্রতারণা করিয়া চলিয়াছে এবং বিশ্বকে তাৱিত করার চেষ্টায় মাতিয়া রহিয়াছে। তবে ভারতীয়। ধােকাবাঙী ব্যর্থ করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ সতর্ক রহিয়াছে ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী এবং তাদের সহযােগী দুষ্কৃতিকারীদিগকে চূর্ণবিচূর্ণ করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর পার্শে তাহারা দৃঢ়পদে দাঁড়াইয়াছেন। পূর্ব পাকিস্তানে যে সব অনুপ্রবেশকাৰী পূর্ব পাকিস্তানের সীমানা লজান করার দুঃসাহস দেখাইয়াছিল তাহাদিগকে নিশ্চিহ্ন করা হইয়াছে।
তবে পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণের পক্ষে নিশ্চিত বােধ করার উপায় নাই। ভারতীয় খড় একদিনের নয়, বছরের পর বছর এই ষড়যায় তাহার পাকাইয়া তুলিয়াছে। ভারতীয় কুমতলব নিছক আজকের নহে, দিনের পর দিন ধরিয়া তাহারা কুমতলব পােষণ করিয়া আসিতেছে। তাই সহজে তাহারা নিবৃত্ত হইবে এই আশা আদৌ পােষণ করা উচিত নহে। ভারতের চিরপােষিত শকতার মােকাবিলা করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণকে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত হইতে হইবে। পূর্ব পাকিস্তানের সীমানা লংঘন করার জন্য ভারত যাহাদিগকে লেলাইয়া দিবে তাহাদিগকে সমূলে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে সাহায্য করার কাজে আরও বেশি উদ্যোগী হইতে হইবে। পূর্ব পাকিস্তানকে গােলাম করার সকল ভারতীয় মহলৰ ৰাৰ্থ করিতে হইবে। এইসঙ্গে অর্থনৈতিক দিক হইতে পূর্ব পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্য ভারত যে কান্ত জাল বিস্তার করিয়াছে তাহাও ব্যর্থ করিতে হইবে। গুজব সৃষ্টি ও মিথ্যা সংবাদ বটনার পশ্চাতে ভারতের অন্যতম দানবীয় উদ্দেশ্য হইতেছে পূর্ব পাকিস্তানে স্বাভাবিক অবস্থা বিখ। আসার পথে বাধা সৃষ্টি করা, অর্থনৈতিক কাজকর্মে বিঘ্ন সৃষ্টি করা, শিল্প উৎপাদন
________________________________________
ব্যাহত করিয়া রাখা এবং আর্থিক দিক হইতে পূর্ব পাকিস্তানকে ধ্বংস করিয়া এখানকার জনসাধারণকে মৃত্যুর মুখে ঠেলিয়া দেওয়া। স্যারতের এই দানৰীয় দুরভিসন্ধি ব্যর্থ করিতে হইৰে। কাৰাতীয় চক্রান্ত নাথ মরিয়া প্রদেশময় কর্মোদ্যম ও কর্মচাঞ্চল্য ফিরাইয়া আমার ব্যাপারে ঢাকার শান্তি মিছিলের প্রভাব প্রদেশব্যাপী অনুভূত হইবে বলিয়া আমরা আশা করিতেছি। ভারতীয় কুচীদিগকে সমুচিত শিক্ষা দিতে হইলে অনুরূপঞ্জাবে সংহতি ও সঙ্কল্পের বলিষ্ঠ অভিব্যক্তি সর্বত্র একান্ত আবশ্যক ||
এদিকে ‘নাগৱিক শান্তি কমিটির নতুন নামলণ’ রা হলাে। সংবাদে বলা হয় ;
গত বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ যাবত নাগরিক শান্তি কমিটি” নামে। পরিচিত শাস্তি কমিটির নাম “পূর্ব পাকিস্থান কেয় শান্তি কমিটি রাখা হয়েছে বলে। গতকাল বৃহস্পতিবার এপিণি পরিবেশিত খবরে প্রকাশ।
প্রয়ােজনবােধে নতুন সদস্য গ্রহণের ক্ষমতা এই কমিটির থাকবে। যতশীয় সম্ভব। দেশের অর্থনীতি পুনঠিনের উদ্দেশ্যে জনগণ যাতে তাদের বিনমাত্রার পেশা শুরু। করতে পারে সে+I্য প্রদেশে অবিলম্বে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কমিটির উদ্দেশ্য ও ক্ষা বাস্তবায়নে কানা জেলা ও মহকুমা পর্যায়ে ইউনিট গঠনে ব্যাপারেও কমিটি সিদ্ধান্ত। নিয়েছেন।
দ্রুত নিষ্ঠার সঙ্গে শাকি তৎপরতা ফালানাে এবং সঠিক ও সহৰে নীতির বাস্তবায়নের জন্য কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি ২১ সদস্যদের একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করেছে। নীচে কার্যকরী কমিটির সদস্যদের নাম দেয়া হল :
জনাব সৈয়দ থাঙ্গা খয়োররুমিন, জনাব এ, কিউ, এম, শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক গােলাম আজম, নাৰ মাহমুদ আলী, জনাব আবদুল জব্বার অক্ষর, মাওলানা সিদ্দিক আহমদ, জনাব আবুল কাসেম, জনাব মােহন মিয়া, মওলানা সৈয়ল মােহ] মাসুম, ইক। আব্দুল মতিন, অধ্যাপক গোলাম সারোয়ার, ব্যারিষ্টা আফতাব উপন, পৰি মােহসেন। উমিন, জনাব এ. এস. এম. সােলায়মান, আনাৰ এ, কে, রফিকুল হোসেন, জিলাৰ। সূরুজামান, নাৰ আতাউল হক খান, জানাল তায়াহা বিন হাবিব, মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) আফসার উদ্দিন, দেওয়ান এয়ারাত আলী এবং ইয়াকম ইতেরি হমান।
অপরদিকে ঢাকার পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও কল্যাণ কাউন্সিল’-এর স্টিয়ারিং কাডির প্রথম বঠক অনুষ্ঠিক হয় ১৪ এপ্রিল। বৈঠকে ইউনিয়ন পর্যায় এই সংগঠনের শখী গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সাপতিত্ব করেন মৌলনী ফরিদ আহমদ। এ সভা সম্পর্কে শায় বলা হলাে :
| “চাকা, ১৫ই এপ্রিল। পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও কল্যাণ ইয়ার্নিং বডির agথম বৈঠক গতকাল এখানে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক হিন্দুস্থান ও
লামের অন্যান্য দুশমনদেয় নিজকে সময়ােচিত বা উপযুক্ত বঙ্গ গ্রহণের জন্য তার মধ্যে প্রকাশ করা হয় এবং পাকিস্তানের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে সীদিনের ব্রাহ্মণ্য পুশমনীর পুনরাবৃত্তির তীব্র নিন্দা করা হয়। বৈঠকে পাকিস্তানকে ধ্বংস করার উদ্দেশে পাক
A||ন্তেণী অ্যাওনো হিন্দুস্থানী সশর অনুগলেঙ্কারী প্রেরণের তীব্র নিন্দা করা হয়। মালনী ®দ আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত বৈঠকে জেলা হইতে ২৬নিয়ন পর্যায়ে শান্তি ও
________________________________________
কল্যাণ ইউনিট গঠনকল্পে সময় পূর্ব পাকিস্তানের কাজ চালাইয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বক্তিকে “পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও কল্যাণ কাউন্সিল” হিসাবে পুনঃনামকরণ করা হয়।
প্রদেশের সর্বত্র পূর্ণ আস্থা ফিরাইয়া আনা, জীবনধাত্রার সর্বক্ষেত্রে শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আনা এবং দেশের সমৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজ ত্বরান্ধিতি করিয়া তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালাইয়া যাইবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বৈঠকে গৃহীত অপর এক প্রস্তাবে সকল প্রকার সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের প্রতি কাজে। যােগদানের আশেপন জানান হয় এবং যারা এখনও কাজে যােগ দেন নাই তাহাদের। অবিলম্বে কালে গােদামের গুন আবেদন জানান হয়। অপর এক প্রস্তাবে বলা হয়, পরিষলে সদস্যলের সংস্থার কর্মসূ5া বাস্তবায়নের জন্য জেলাসমূহে পুমান করা উচিত। প্রয়োজন হইলে হেরে সুন্য প্রস্তুত এবং পাখিস্তান ও এছলামের দুশমনদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে থাকার উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরান ও সুন্নী মতাবেক শাখাকে শিক্ষিত কবি তোলার জন্য তার সদস্য, মসজিদের ইমাম, মদ্রোসা শিক্ষকসহ সকল দেশপ্রেমিক নাগরিকে প্রতি উদাত্ত আহবান জানাইয়া অপর একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হষ।
জেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিষদের সংগঠন সম্পর্কে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সাৱণ সম্পালক, পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও কল্যাণ পরিষদ, ১২, ধানমণ্ডি (রোঞ্চ নম্বর ৫} ঠিকানায় বিস্তারিত বিবরণ দানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ডলের প্রতি অনুধে জানা হইয়াছে।”৯০
১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির একটি প্রতিনিধি দল পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর লে: জেনারেল টিক্কা খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন নূরুল আমিন। এ সম্পর্কে এ পি লি পরিবেশিত সংবাদে বলা হলাে : | ‘ঢাকা, ১৬ই এপ্রিল।—অদ্য সন্ধ্যায় জনাব নূরুল আমিনের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় শাস্তি কমিটির কার্যনির্বাহক কমিটির পক্ষ হইতে একটি প্রতিনিধি দল গতর ভবনে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর লে: জেনারেল টিক্কা খানের সহিত সাক্ষাৎ কবেন।
শহুরে স্বাভাবিক অবস্থা ও শহরবাসীদের মানে আত্মবিশ্বাসৱ ভাৰ ফিজা আনার ক্যাম্পারে তাহলের প্রচেষ্টার অগ্রি সম্পর্কে শান্তি কমিটির সদসা গরকে অবগত করেন । তাহারা নগরবাসীদের কতিপয় অসুবিধার বিষয়ও গভরিকে জানান।
আলাপ আলােচনার প্রসঙ্গে কমিটির সদস্যবৃন্দ গভর্নরকে জানান যে, জনগণ ভারতের শয়তান মকপে অনুধাবন করতে সক্ষম হইয়াছে এবং হরি পাকিস্তানের এক ঐ সংহতি রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর পশ্চাতে রহিয়াছে।
জনগণের প্রকত সমস্যাবলী সম্পর্কে তদন্ত করিয়া অবিলম্বে প্রতিকারের ব্যবস্থা করা হইবে বলিয়া গণ্ডর কমিটির সদস্যবৃন্দকে নিশ্চয়তা পান করেন।
| যে সমাপ্ত ব্যক্তি গালের সহিত সাক্ষাৰ নরেন, তাহাদের মধ্যে নিয়লিখিত ব্যক্তিত্ব রহিয়াছেন –
৯. জনাব এস, কে, খয়ের দিন, আহবায়হ, ২, আনান , কিউ, এম শফিকুল ইসলাম, ৩, অধ্যাপক গোলাম আঞ্জাম, ৪, জনাব মাহমুদ আলী, ৫. জনাব আবদুল জব্বার। গর৬. কামাল মােহন মিয়া, ৭ মওলানা সৈয়দ মোহাম মাসুম, ৮, জনাব আবদুল মানি, ৯, অাপক গোলাম সরওয়ার, ১০, এ, এস, এম সোলেমান, ১১. জনাব এ, কে, রসিকুল হোসেন, ১৯. জনাব নূরুজ্জামান, ১৩. জনাব আতাউল হক খান, ১৪, জনাব
________________________________________
তােয়াহ-বিন-হাবিব, ১৫, মেজর আফসারী , ১৬, হকিম ইরতেজুর রাহমান খান আকন্দ জাদ।”১১ | শান্তি কমিটির কার্যক্রম জোরদার ও কার্যকর করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি সারাদেশ ন্যাপী শান্তি কমিটির ইউনিট গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসাবে ঢাকায় ইউনিয়ন ও মহল্লায় শান্তি কমিটি গঠনের জন্য কনছার মনােনয়ন দেয়া হয়। এ সম্পর্কে এপিপি পরিবেশিত সংবাদে জানা যায় ; | ঢাকা, ১৯শে এপ্রিল।শহরেন। ইউনিয়ন ও মহল্লায় শান্তি কমিটি গঠনের জন্য। কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি কনভেনীর মনােনয়ন করিয়াছেন। বহু স্থানে ইতিপূর্বেই ইশট কমিটি গঠন করা হইয়াছে। ইউনিট কমিটিসমূহের কার্যকলাপ সম্পর্কে যাবতীয় খবর, ৫, এলিফ্যান্ট লেন, মগবাজার, ঢাকা ঠিকানায় কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির অফিসে প্রেরণ করিতে হইবে । সর্বসাধারণের সুবিধার জন্য কেন্দ্রীয় অফিস ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকিবে এবং অফিস সেক্রেটারী এডভােকেট জনাব নূরুল হক মজুমদার সর্বসাধারণের সমস্যাবলী সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অফিসে অবস্থান করিবেন। | প্রদেশের সর্বত্র শান্তি কমিটি গড়িয়া তোলার উদ্দেশে। পরিকল্পনা ও সুর্মসূচী প্রণয়নের জন্য প্রতিদিন শান্তি কমিটির বৈঠক হইয়া থাকে । জনসাধারণকে স্বাভাবিকভাবে অবিন যাত্রার নির্বাহে উদ্বুদ্ধ করিয়া তােলার জন্য এবং বিভিন্ন স্থানে ইউনিট শান্তি কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি বিভিন্ন জেলায় ও মহকুমায় নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের পাঠাইবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছেন। | রুমি |টা হরফ হইতে উহরি সদস্যদের মধ্য হইতে লিয়াজো অফিসার নিয়োগ করা। হইয়াছে। তাহার জনসাধারণের অসুবিধাদি সম্পর্কে তথ্যাদি গ্রহণ করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আর্মি সেক্টরের সাহায্য গ্রহণ করিয়া এগুলির প্রতিকারের ব্যবস্থা করিবেন।
হাৱা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করিয়াছেন। | প্রতিদিন কেন্দ্রীয় অফিসে রিপাের্ট দাখেলের জন্য লিয়াজো অফিসারদের নাম ও ঠকানা নিম্নে প্রদত্ত হইল :
কোতােয়ালী থানা ; ১. জনাব আজিয়া অাহমেল শাহ, আহসান মঞ্জিল, ৯৭, আহসানুল্লাহ রোড, ঢাকা,
ফোন- ২৪৬৩৪০। ২, জনাব মােহাম্মদ সার্কা সুলতান, ১২, কশাইটার, ঢাকা, ফোন-২৫১৩৫১। লালবাগ থানা : ১. আলহাজ্ব নাজির হোসেন চেয়ারম্যান, লিনা ইউনিয়ন কমিটি, ৫৩, জগন্নাথ
সাহা রােড, ঢাকা, ফোন নং ২৫৩৬৮১। ২, জনাব এস, এম, হাবিবুল হক, হাউস নং ৩১২, রােড নং ১৮, ধানমন্ডি, bক | ফোন নং অফিস ২৫০৮০৬, বাসা- ২৫Ha৫৮। ৩. জনাৰ নােয়াব আলী, এভােকেট, মেটাল নােড, ঢাকা, ফোন- ২০২৫১।
শ্রীপুর থানা : ১, আলহাজ্ব সিরাজুদ্দীন প্রাক্তন এম, পি এ, ৯১, হৃষিকেশ দাস রােড, ঢাকা, ফোন ঃ
অফিল ২৮১৩৪২, বাসা ২৮২৫৪০।
________________________________________
২. ইনার হাবুদন খান ৫৪, আর, কে, মিশন রােদ্র, ঢাকা, ফোন- ২,৪৫৩৫৪। ৩, জনাৰ অসুল হক, ১২, ফরাশগঞ্জ, সাকা, ফোল- ৯৫ ৭৫৯৬। ৪. জনাব তমিদ্দিন, ৩১, রিমতি আলী লেন, ফোন- ২৫ ৭২০-৪। ৫. জনাব আবপূর্ণ ৭, ১৬ হাটখোলা কৌত, ফোন- ৯৫০৯০৯। তেজগাঁও থানা : ১, জনাব ইকবাল ইদরিস, ৭৫, ইন্দিরা রােড, তেজগাঁও, ঢাকা, ফোন : অফিস
২৫১১০৭, বাসা- ৩১০৯৮৩! ২. জনাব মাহবুবুর রহমান, গুহা, ফোন- ৩১১৯৭১। ৩. এম, এস, এস, হাবিবুল হক, হাষ্ট্রস নং ৬১২ ৱোত্র নং ১৮, ধানমণ্ডি, ফোন
অফিস- ২০৬০৩, বস- ২৫৪০৬৪ | ৪. জনাব মােয়াব আলী, হে মাষ্টার আই, পি, এইত, স্কুল মহাখালী (অয়্যারলেস
কলােনলির নিকট)। মীরপুর থানা : ১. জনাব পাইক আমহেদ সিদ্দিকী, ২৬, এ/সি মীরপুর ফাষ্ট কলােনী, ঢাক্স। মােহাম্মদপুর থানা : ১. জনাব এম, এ, বারেক, ৩০/৬, মােহাপুর কলােনা, ফোন- ৩১১৫৩৮। ২. আঃ ওসমান (‘এ’ ব্লকের মসজিদের নিকট’) মােহাম্মদপুর, ঢাকা, ফোন : ‘কিল
৩১১২৬৮, বাসা- ৩১৬৬৯৫। ৩, ইমাণ সৈয়দ মােহাম্মদ ফারুক, কাবাদে আজম রেজি, বাঞ্চাকা খানের বাড়ির
নিকট) মােহাম্মদপুর, ঢাকা, ফোন : ২৫৪৮০৮। চ, জনাব শফিকুর রহমান, এডভােকেট, ৪৮, কিকাটেল, , ফোন :
২৪ 98 9 || ৫. জনাব আবদুর রাহমা চৌধুরী, হাউম নং ৭৯০, লেজ নয়, ৯, নিমন্ডি আর, এ
ঢাকা, ফোন নং ৩১১০৩৩। রমনা থানা : ১. আতাউল হক খান এডভোকেট, ১৯৭, বড় মগবা, মাঞ্চ। ২ জনাব জি, এ, আন, ভােকেট ২৪, 1লু রোড়, স্কাটন ঢাকা-২, ফোন
২৫৪ ০৩৫। ৩, প্রফেসর এ, হাশেম। 8. জনাব মত আলী খান, এ89াকেট, ১, পুরানা পল্টন, ঢাকা, ফোন
| ২৫ ৪৮৫৫। ৫. জনাব মােহ*আয়ুব আলা, সি-৫৮ ৭/এ, চৌধুরীপাড়া, খিলগাঁও, ফোন
২৫ ০৮। ৬. এডভোকেট এ, ওয়াদুদ মিয়া, শাম্ভিনগন্য, ঢাকা।১২ _ এপ্রিল মাই ডানার মালিবাগ ও শাস্তিরাগে গঠন করা হয় শান্তি ও কল্যাণ স্টিয়ারিং ইউনিট। এই ইউনিট গঠন সম্পর্কে সংবাদে বলা হলাে :
| ঢাজা, ২১শে এপ্রিল।-মালিবাগ ও শাস্তিখাঙ্গেয় অধিবাসীদের এক সভায় না। শামসুদ্দিন বেগের সভাপতিত্বে শান্তিবাগ ও মালিবাগ শান্তি ও কলা িিরং ইউনিট
________________________________________
মওলানা নূরুজ্জামান খান (সভাপতি), মলভী শামসুদ্দীন বেগ, মওলভী নুরুল ইসলাম (ভাইস প্রেসিডেন্ট) এবং সাধারণ সম্পাদক মওলভী মােহাম্মদ ইদ্রিস।
কার্যনির্বাহক কমিটিতে রহিয়াছেন মেসার্স কে, এম, শাহাবুদ্দীন, ওয়াহিরুর রহমান, আখলাক আহমদ, আবদুল করিম, সুলতান মিয়া, মােঃ আলী সিকদার, হাজী আমার উদ্দিন, আবদুল জলিল ও আবদুল গফুর।১৩ |
কেন্দ্রীয় শাড়ি কিমিটি ১৯ এপ্রিল এক সভায় মিলিত হয়ে শান্তি কমিটি গঠনে নানা সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত আলােচনা করে বেশকিছু সিন্ধান্ত গ্রহণ করে। এপিপি পরিবেশিত খবরে এ সম্পর্কে বলা হয়।
টাকা, ২০শে এলি।-কোয় শান্তি কমিটির কার্যনির্বাহক কমিটি গতকাল এক বৈঠকে মিলিত হইয়া পশের সর্বত্র শান্তি কমিটি গঠনের বিভিন্ন সমস্যা লইয়া আলোচনা করেন। বৈঠকে সম্ভাপতিত্ব করেন এস, কে খায়রুদ্দিন। কমিটির লালবাগ এলাকায়
নাব এস, হাবিবুল হকের স্থলে জনাব মাহবুবুজ্জামানকে একজন লিয়াজো অফিসার হিসাবে নিয়ােগ করা হইয়াছে। রমনা থানায় লিয়াজো অফিসার হিসাবে ৩৭৫, উত্তর শাজাহানপুরের জনাব ফজলুল হক চৌধুরী, ১৫১, দক্ষিণ কমলাপুরের শাহ মফিজুদ্দিন, ২২, মালিবাগের জৰি আৰুল হাইকে নিযুক্ত করা হইয়াছে। | কেন্দ্রীয় কমিটির দৈনন্দিন কাজ কাল্পনার পরিচালনার জন্য নিয় বর্ণিত সদস্যদের কাইয়া কার্যনির্বাহক কমিটি গঠিত হয় :
১. জনাব এ, এম, শফিকুল ইসলাম, ২, অধ্যাপক গোলাম আজম, ৩, জনাব আনলুল আকবার ফর, ৪, শ্রানাই এ, কে, এম, সােলায়মান, ৫, জনাব আবদুল মতিন, ৬. এম, কে, খীৰোৱ**ন।
কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির আহবায়ক জনাব এস, কে, খায়েরুদ্দিনের অনুপস্থিতিতে নাৰ কিউ এম, শফিকুল ইসলাম, জনাব আবদুল জব্বর অন্দর এবং মনসুর আলী আরামবাগ এলাকা সফর করিয়া শান্তি কমিটি গঠনের প্রয়ােজনীয়তা সম্পর্কে জনসাধারণকে অনুপ্রাণিত করেন। স্থানীয় জনসাধারণ অবিলম্বে শান্তি কমিটি গঠনের কাজ। হতে ইয়ছেন।১০
২২ এপ্রিল কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির পক্ষ থেকে জারিকৃত এক প্রেম কিমপ্তিতে “রাষ্ট্রপ্রাইপের কংসাত্মক তৎপরতা প্রতিহত করার আহবান জানানাে হয় । এপিিপ পরিবেশিত সংবাগে বলা হলাে :
| “ঢাকা, ২২শে এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি সকল দেশপ্রেমিক পর্ব। পাকিস্থানীয় প্রক্সি রাষ্ট্রদ্রোহীদের সর্বপ্রকার
________________________________________
| কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির অপর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় শান্তি কমিটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে জেলা ও মহকুমাতে প্রতিনিধি প্রেরণ করা হবে। সংবাদে জানা যায় :
ঢাকা, ২৫শে এপ্রিল।—কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির মিশন পূরণের জন্য জেলা ও মহকুমা সদর দফতরে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির প্রতিনিধিদের পাঠান হইতেছে। স্বাভাবিক উদীবনযাত্রা ৮৩ পুনঃপ্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রবিন্ধেী ও সমাজ বিরােধী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জনগণকে সজাগ রাখা ও গুজব রটনাকারীদের দুরভিসন্ধি প্রতিরােধের উদ্দেশ্যে এই কমিটি গঠিত
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল রবিবার জামান হইয়াছে যে, ইতিমধ্যেই যদি এই ধরনের কোন কমিটি গঠিত হইয়া থাকে, তাহা হইলে এই সব কমিটিকে স্বীকৃতির জন্য কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির কেয়ি অফিসে তাহাদের নাম পাঠাইতে না হইয়াছে। কেন্দ্রীয় কমিটি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের নিকট স্বীকত শান্তি কমিটি রিপাের্ট প্রদান করিবে।
তাহা ছাড়া ঢাকা শহরে পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা পুনপ্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টিতে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন এলাকায় শান্তি স্কোয়াড
শহর ও শহরতলীতে আরও ১৬টি শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে। ১. পূর্ব তেজগাঁও ইউনিয়ন শান্তি কমিটি—মােঃ ফজলুর রহমান। ২, ধানমণ্ডি ইউনিয়ন শান্তি কমিটিস এম হাবিবুল হক। ৩. নারায়ণগঞ্জ শহর শান্তি কমিটি—আবলুল আজিজ সরলার। 6. দিলকুশা ইউনিয়ন শান্তি কমিটি মােহাম্মদ মনসুর আলী। ৫. জোয়ার শাহাৱা ইউনিয়ন শান্তি কমিটিলােয়ার আলী আহসান। ৬. শরাফঞ্চত্রগঞ্জ ইউনিয়ন শাস্ত্র কমিটি গিয়াস উদ্দীন আহমদ। ৭. খিলগাও ইউনিয়ন শান্তি কমিটিঃ মােহাম্মদ আইয়ুব আলী। ৮, নবীনগর থানা শান্তি কমিিটমিয়া জেলা) মণ্ডলৰ সেকান্দর আলী। ৯, জয়দেবপুর থানা শান্তি কমিটি-আনল মাজিল সরকার। ১০, জয়দেবপুর থানা শান্তি কমিটমােহস্থল মােস্তন আনা। ১১, রেকাবী বাজার ইউনিয়ন শান্তি কমিটিস বেপাৰী। ১২, মোহামপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটি দেওয়ানি ওয়ারেসাত আলী। ১৩, দিলু রেডি মহল্লা -জ, এ খান। ১৪, নিউ ইস্কাটন শান্তি কমিটিঅজিবর রহমান। ১৫, পূর্ব ধানমন্তি শান্তি কমিটি এম এ খালেক। ১৬, মহাখালী মহল্পী শান্তি কমিটি-এ, কে, এম আবদুল্লাহ খান। এদিকে গফরগাও-এ শান্তি কমিটি গঠন করা হলাে। সংবাদে বলা হলাে :
“মােমেনশাহীর গফরগীও থানায় ডাঃ আবদুল হাকিম মঞ্চলকে প্রেসিডেন্ট ও ভাঃ খন্দার আবু সাদ শামসুল হুগাকে সেক্রেটারী করিয়া ১৩৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি শান্তি ও জনকল্যাণ কাউন্সিল ইউনিয়ন গঠন করা হইয়াছে।
________________________________________
গত শনিবার শান্তি কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে মীরপুর এক নম্বর সেকশন ও পুরান কলােনীর প্রতিনিধিদের এক সভা দেওয়ান ওয়ারেসাত হােসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এক প্রেস বিজ্ঞক্তিতে বলা হয় যে, মােহাম্মদ সামউদ্দীন খানকে আহবায়ক নির্বাচিত করিয়া ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট এক শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে।
সভায় কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্য জনাব আবুল কাশেম মাহমুদ আলী, আবদুল জদার বন্দর ও মেজর আফসর উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।১৮
ইসলামপুরেও ইসলামপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদে জানা
| গত শনিবার মেীলভী ওবায়দুল্লাহর সভাপতিত্বে ইসলামপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির এক সঙ্গ অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিয়নের শান্তি বজায় রাখার জন্য শ ক্তি কমিটির নির্দেশ মােতাবেক কাজ করার উদেশে শান্তি কমিটির সকল সশস্য ও স্বেচ্ছাসেবকলে প্রতি অনুরোধ জানান হইয়াছে।”৯।
১ মে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির কার্যকরী পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির কার্যালয়ে সকাল ১১টায়। কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির আহবায়ক খালা স্বয়ের উদ্দিন সভা সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে কমিটি পূর্ব পাকিস্তানে বিদ্যমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। এবং ইউনিট শান্তি কমিটিগুলিন্ন কার্যক্রম বিবেচনা করেন ।২০।
এ দিকে ৩০ এপ্রিল রংপুরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সমর্থনে এক মিছিলের আয়ােজন করা হয়। মিছিলের আয়ােজক রংপুর ‘শাস্তি ও আস্থা পুনরুদ্ধার কমিটি” । জুমা নামাজের পর আয়ােজিত এই মিছিলের পুরােভাগে ছিলেন জাতীয় পরিষদের সাবেক সদস্য সিরাজুল ইসলাম ও মােহাম্মদ আমিন, নেতৃস্থানীয় নাগরিকবৃন্দ এবং শান্তি কমিটির সদস্যগণ। এই মিথিল ও সমাবেশ সম্পর্কে এপিপি বিশেষ সংবাদদাতা শওকত কামালের প্রতিবেদন :
_ ‘রংপুর, ১লা মে-গতকল্য রংপুৱেৱ জনগণ এক বিরাট মিছিল ৰাহির করিয়া পাকিস্তানের সশস্ত বাহিনীর সহিত সংহতি প্রকাশ করিয়া দেশের অখণ্ডতা ও ঐক্যের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।
এপিলি’র বিশেষ সংবাদদাতা জনাব শওকত কামাল উপরোক্ত মনে সংবলি প্রদান করেন। পূর্ব পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ৩ দিন ব্যাপী ব্যাপক সফর শেষে সংবাদল জানান যে, গংপুরে শাস্তি ও আস্থা পুনরুদ্ধার কমিটি কর্তৃক আয়ােজিত এই মিছিলটি জুমা নামাজ আস্তে বাহির করা হয়। পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের গ্রামগুলি হতে বহু মানুষ এই মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। গত দশদিনের মধ্যে
________________________________________
মিছিলে আল্লাহু আকবার, পাকিস্তান জিন্দাবাদ, কায়েদে আজম জিবান, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জিন্দাবাদ প্রভৃতি শ্লোগান উচ্চারণ করা হয়। সংবাদদাতা তাহার বিবরণে জানান যে, খারাপ আবহাওয়া সত্ত্বেও মিছিলে বহু লােকের সমাগম হয়। ২১
ঢাকার মুন্সীগঞ্জে ২৭ এপ্রিল রিকাবী বাজার ইউনিয়ন শান্তি কমিটির উদ্যোগে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিক্সিতাবাদীদের সমূলে উৎখাতের সংকল্প ঘােষণা করা হয়। সংবাদে জানা যায় :
মুন্সীগঞ্জ (ঢাকা), ২৮শে এপ্রিল—তকলা মিরকাদিমে অনুষ্ঠিত শক্তি কমিটির সভায় বিচ্ছিন্নতাবানীদিশকে সমূলে উৎখাত করার সংকল্প ঘােষণা করা হয়। বিকাৰীবাজার ইউনিয়ন শান্তি কমিটির উদ্যোগে আয়ােজিত এবং পাকিস্তান আন্দোলনের প্রধান কর্মী জনাব আবদুল হাকিম বিক্রমপুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় শান্তি কমিটির সদস্যগণসহ আশে পাশের কয়েকটি ইউনিয়নের বহু সংখ্যক শিক্ষিত ও গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিচ্ছিন্নতাবাদিদের দমন কয়ে বর্তমান সরকারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। সভায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রতি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না। করার আহবান ও বর্তমান সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাইয়া প্রস্তাব গৃহীত হয়। এক প্রস্তাবে রিকাবী বাজার ইউনিয়নের রাস্তার বাতিগুলি স্বালানাের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানানাে হয়।
সভায় মুন্সীগঞ্জ মহকুমার প্রতিটি নাগরিককে দেশের শান্তি ও শখলা রক্ষার জন্য সীগ থাকার আহবান জানানাে হয়। অপর এক প্রস্তুৰে ক্ষেত-খামার ও কলকারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য কৃথক ও মিল মালিকপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানানাে হয়।সর শুরুতে মরহুম এ, কে, কলুল হক ছাহেবের রুহের মাগফেরাত এক পাকিস্তানের অখন্ডতা ও সংহতির জন্য মোনাজাত করা হয়।
৩ মে ঢাকার তেজশাও ইউনিয়ন তেহরী বাজার শান্তি কমিটির উদ্যোগে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তাগণ বাষ্ট্রেদ্রোহীদের খতম করার সংকল্প ঘােষণা করেন। এপিপি পরিবেশিত সংবাদে বলা হয় :
“চাল ৪ঠা মে গতকাল বিকালে তেজগাও ইউনিয়ন তেহরী বাজার এলাকার শান্তি কমিটির সভা তেজগাঁও পলিটেকনিক স্কুল ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। জনাৰ ফকির আবদুল মান্নান, জনাব এস, এম, জহুরুদ্দীন এডভোকেট, ডঃ এ, এম, স, খান এবং শান্তি কমিটির আহবায়ক জনাব মাহাবুবুর রহমানসহ স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
শান্তি কমিটির আরেক সভা গত ১লা মে অনুষ্ঠিত হয়। জে এই মিটিংয়ে উপস্থিত হলেন। শান্তি কমিটির এই উভয় সতেই পাকিস্তানের আশ
একাৰ বহুলােক তুলিয়া ধরিতে এবং যে কোন মূল্যে দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সর্বাত্মক জ্ঞষ্টা হহি করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
জাতীয় সংহতি উন্নয়নের জন্য এবং সমাদ্রাহী এবং ছত্রাই অনুচরদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য কোন চেষ্টারই কাট করা হইবে না বলিয়া আরেকটি প্রকারে উল্লেখ করা হয়। শান্তি কমিটির সভায় যােগশনকারী শ্রাতময় পরিস্থিতি মােকাবেলা করার দৃঢ় সংকল্প সেবা করেন এবং ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের চিরতরে নিমূল করার জন্য সশস্ত্র আরকে সমর্থন করতে এ সংকঃ প্রকাশ করেন।
________________________________________
মােহাম্মদপুরেও শান্তি কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদে বলা হয় :
ঢাকা, ২ মে।গতকাল সন্ধ্যায় সাবেক এম, এন, এ জনাব আবুল কাসেমের শাসকলনে মােহম্মলপুর ও লালমাটিয়ারি শান্তি কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শর্তমান পরিস্থিতি পর্যালােচনা করিয়া এই মর্মে সন্তোষ প্রকাশ করা হয় যে,
তাদের স্থা উস্কানী সত্ত্বেও এই এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণাধীন রহিয়াছে।
উক্ত এলাকায় আইন-শখলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পলে অবাজর রাখার জন্য সেনাবাহিনীকে সম্ভাব্য সকল প্রকার সাহায্য দেওয়ার জন্য কমিটি আরও সাহাপনার সহিত প্রচেষ্টা চালাইৰে। কমিটির এই প্রচেষ্টার প্রতি সহযােগিতা করার জন্য নানারী “নবিশেষে সকলের প্রতি আবেদন জানানাে হয়।”
এ সময় সুলনাতেও শান্তি কমিটির তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। খুলনা কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সহযােগিতায় স্থানীয় শান্তি কমিটি মহেশপাড়া বাজারে এক সমাবেশের আয়ােজন করে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। সভায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খান এ, সবুর ও সাবেক প্রাদেশিক মন্ত্রী আমজাদ হােসেন বক্তৃতা করেন। সংবাদে বলা হলো :
| “খুলনায়, ৪ঠা মে খুলনা হইতে ৭ মাইল দূরে মহেশপাড়া বাজারে গত শনিবার অনুষ্ঠিত এক বিরাট জনসভায়া পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতি রক্ষার প্রশ্নে দৃছু মনােভাব প্রকাশ করা হয়। সভার পাকিস্তানী জনগণের ঐক্য বিনষ্টকাৰী ভারতীয় চক্রান্তের বিরুদ্ধে খিয়া দাড়াইবার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহবান জানান হয়।
খুলনা কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সহযােগিতায় স্থানীয় শান্তি কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত উক্ত সভায় স্থানীয় বক্তা wড়াও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জনাব খান এ, সবুর ও সাবেক প্রাদেশিক মন্ত্রী আমজাদ হােসেন বক্তৃতা করেন।
সভায় পাকিস্তান জিন্দাবাদ, কায়েদে আজম জিন্দল, তারতীয় চক্রান্ত ধ্বংস কর |’ শ্লোগান পান করা হয়। সভায় জনাব আবদুস সবুর খান নালেন যে, বেআইনী মােথিত আওয়ামী লীগের সহযােগিতায় পাকিস্তানের সংহতি নিনঃ আর ভারতীয় চঞপ্তি সম্পূর্ণ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হইয়াছে। ভারতের কতিপয় দালাল ব্যতীত পূর্ব-পাকিস্তানের প্রতিটি মানুষ বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের আদর্শকে প্রত্যাখ্যান করিয়া পাকিস্তানী জাতীয়তাবাদের গৌরবজনক আদর্শে বিশ্বাস স্থাপন করিয়াছে।
সস্তায় বাঙ্গালী, বিহাবী, পাঞ্জাবী, সিন্ধী, বেলুচি, পাঠান ইত্যাদি সম্প্রদায়িক হেলালে তুল পিয়া, ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদকে পরাস্ত করার জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান হয়।২৫
অপরদিকে ২ মে খুলনা কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির উদ্যোগে ইষ্ট জুট মিল ও খুলনা টকটাইল মিল প্রাঙ্গণে দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আন এ, সবুর বলেন যে, “আমাদের অর্থনৈতিকে ধ্বংস করার ভারতীয় দূরসিদ্ধিকে কোন প্রকারেই বাস্তবায়িত হইতে দেওয়া হইবে না।’ এ সম্পর্কে দৈনিক আজান” জানালাে :
…খুলনা কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির উদ্যোগে ইষ্টার্ন জুট মিল প্রাঙ্গণে ও খুলনা টেকসটাইল মিল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত দুইটি শ্রমিক সমাবেশ বক্তৃতা পানকালে জনাব সবুর বলেন যে, ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী ও তাহাদের সহযােগীদের নির্মূল করার জন্য আমাদের
________________________________________
সাহসী সেনাবাহিনী নিয়ােজিত রহিয়াছে। এই অভিযানে আমাদের সেনাবাহিনী যেখানেই গমন করিতেছে সেখানেই জনসাধারণ তাহাদের সাদর অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করিতেছে।
আর সবুর বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বস্তুতঃ কোন প্রকার প্রতিরােধের সম্মুখীন হইতেছে না। এর ফলে ইহাই প্রতীয়মান হয় যে, ভারত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন ও খান্দান টের মাধ্যমে তাহাদের দূরভিসন্ধি বাস্তবায়িত করতে চায়। তিনি জনসাধারণকে স্মরণ করাইরা দেন যে, কৃষি উৎপাদন সর্বাধিক পর্যায়ে বৃদ্ধি এবং কলকারখানা চালু করার ব্যাপারে প্রত্যেকের স্ব-স্ব ভূমি পলিন করিতে হইলে ।।
খান সবুর বলেন, জীবনযাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক হইয়া আসিতেছে। পাক সেনাবাহিনী সাফল্য জনকভানে ভারতের সম্প্রসারণবালী চক্রান্তকে ব্যর্থ করিয়া দিতে সক্ষম হইবে বলিয়া তিনি গভীর আস্থা প্রকাশ করেন।”২৪। | এ দিকে ঢাকাতে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন উপলক্ষে বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে আসে। শ্যামপুর ইউনিয়ন কাউন্সিল শান্তি কমিটি ৮ মে কদমতলী জামে মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করবে বলে জানায়। বাংলা একাডেমীও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। অধ্যক্ষ শেখ শরফুদ্দিন মাহানবীর জীবনের বিভিন্ন দিক ও তাহার শিক্ষা সম্পর্কে আলােকপাও করবেন বলে জানানাে হয়। কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বাের্ড ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। মাওলানা আলাউদ্দিন আল আজাহাৱী মাহফিল পরিচালনা করবেন বলে জানা যায়। ‘আরমানীটোলা ও মােহাম্মদপুর তথ্যকে আবদুল গনি রােডের জাতীয় পুনর্গঠন সংস্থা প্রাঙ্গগে, পাকিস্তান ভমন মজলিসের উদ্যোগে ‘এলামিক একাণ্ডেমীর মিলনায়তনে” এবং পাকিস্তান ছিলামিক পুনাগরণ সংস্থার উদ্যোগে খাজা দেওয়ান ফাষ্ট লেনে মিলল মাহফিলের আয়ােজন করা হয়। বলা প্রয়ােজন যে, দেশে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজমান-এমন আবহাওয়া সৃষ্টির প্রয়াসেই এসব উদ্যোগ নেয়া হয়।
এ সময় শান্তি কমিটি বিভিন্ন এলাকার পাহারাদানে শ্রমিকদের কাজে লাগানাের সংবা জানা যায়। খুলনা কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি স্থানীয় ইউনিটগুলিকে শ্রমিক সরবরাহের কথা জানায়। সংবাদে বলা হয়, সুতিকারীদের হাত হইতে শ্রমিকদের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান করিতে সংস্থাটি টহলদারী ব্যবস্থা করিয়াছেন।
শান্তি কমিটির পাশাপাশি ‘পাকিস্তান শান্তি ও কল্যাণ কাউন্সিল’- এর কার্যক্রম অব্যাহত ছিলাে বলে জানা যায়। পাকিস্তান – ৪ ও কল্যাণ কাপলের ধামরাই থানা ইউনিট গঠন করা হয়। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। ধামরাই থানা ইউনিটের ১০৮ শস্য বিশিষ্ট কমিটিনা মােজাম্মেল হক সভাপতি এবং শমসের আলী সম্পাদক নির্বাচিত হন।
________________________________________
“লাল” ও “নসিব আপনা” নামে দুটি ছবি নিয়মিত দেখানাে হইতেছে। দোকান পাট খােলা হইয়াছে। শহরে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক তৎপরতার পরিচয় পাওয়া যাইতেছে। আমি কালেক্টরেট, পৌরসভা ও জেলা কাউন্সিলসহ বহু সংখ্যক অফিস পরিদর্শন করি এবং লােকজনদের নিয়মিত কাজকর্মে ব্যস্ত থাকিতে দেখিতে পাই। এই সকল অফিসে আমাকে বলা হয় যে, শতকরা ৯০ জনের বেশি কর্মচারী কাজে যোগদান করিয়াছেন। ইহা কি দাৰী নহে। আমি নিজেই দেখিয়াছি যে, প্রায় সকল টেবিলে কর্মচারীতে পূর্ণ। | শহরে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও নাগরিকদের মধ্যে আস্থা ফিরাইয়া আনার জন্য ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের পরই দ্রুত স্বাভাবিক জীবনযালা ফিরিয়া আসিয়াছে। কমিটির Wস্যরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ওয়ার্ড কমিটিও গঠন করিয়াছেন এবং তাহাদের শান্তি প্রতিষ্ঠার তৎপন্ন নিকটবর্তী এলাকা পর্যন্তও সম্প্রসারিত করিয়াছেন। মিউনিসিপ্যাল কমিটি অঞ্চলে মহকুমা অফিসার জনাব খন্দকার শফিকুল এছলাম জানান যে কমিটি এপ্রিল মাসেই ৩০ হাজার টাকা কর আদায় করিয়াছে। কমিটির বাজেট হইতেছে মাত্র ৯ লক্ষ টাকা।
জেলা কাউন্সিলের সেক্রেটারী জন্তুৰ মনজুর আহমেদ জানান যে, তাহার সাড়ে ৪ শত কর্মচারীর প্রায় সকলে কাজে যােদান করিয়াছে। এ বছর উন্নয়ন বায়োটের অর্ধেকেরও বেশি পরিমাণ অর্থের সদ্বব্যবহার করা হইয়াছে। জেলার যােগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি মাপ্তি হইতেছে। রংপুর হইতে সৈয়দপুর, বগুড়া, গাইবান্ধা, পীযুগাহ ও উহার পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ পর্যন্ত বাস, ট্যাক্সী ও এয়াগণ যাতায়াত করিতেছে। লালমনিরহাট ও রংপুর, পার্বতীপুর ও দিনাজপুর এবং পার্বতাপুর ও সৈয়দপুরের মধ্যে ইতিমধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু এই ।
রংপুরে শান্তি কমিটির সদস্যরা তাহাদের একটি নিয়মিত বৈঠকে আমাকে যােগদানের আমন্ত্রণ জানায়। উক্ত বৈঠকে তাহাৱা শান্তি রক্ষা এবং ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী ও রাষ্ট্র বিরােধীদের ষড়যন্ত্র বানচাল করিয়া দেয়ার উপায় উদ্ভাবন সম্পর্কে আলােচনা করেন । তাহারা সাধারণকে গুজব রটনাকারীদের কথায় কর্ণপাত না করার উপদেশ দিতেছেন। বৈঠকে আমাকে বলা হয় যে, রাষ্ট্রবিরােধীদের শহরে প্রবেশ এবং নিরীহ মানুষের জীবন ও বিষয় সম্পত্তি লইয়া ছিনিমিনি খেলার সুযােগ না দেয়ার জন্য। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী বিভিন্ন তল্লাশী ফঁাড়িতে সেনাবাহিনীর সহিত সহযােগিতা করিতেছে। একটি উৎসাহব্যঞ্জক বিষয় এই যে, সংযােগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কাজে জনসাধারণ সেনাবাহিনীর সহিত সহযােগিতা করিতেছে।
ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী ও রাষ্ট্রবিরােধীরা গােবিন্দগঞ্জ থানার নিকট ঢাকা-রংপুর ট্রাঙ্ক রোডের উপর অবস্থিত কাটাখালি সেতুর ক্ষতি সাধন করিয়াছে । কিন্তু হাজার হাজার লােক কাটাখালি নদীর উপর সেতু নির্মাণের কাজে সেনাবাহিনীর সহিত সহযােপিতা করেন। শান্তি কমিটির নৈক সদস্য জানান যে, রংপুরের জনগণ পাকিস্তানের আদর্শ ও সংহতি শক্ষা এবং কোন উপায়ে ভারতের দূরভিসন্ধি বানচাল করিয়া দেয়ার জন্য বদ্ধপরিকর। ৩০
| ব্রাহ্মণবাড়িয়া শান্তি কমিটির উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাবলিক স্কোয়ারে এক জনসভা অণুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তাগণ ‘পাব্বিানের আতঃক্তরীণ ব্যাপারে ভারতীয় হস্তক্ষেপের নিন্দা’। করেন। এ সম্পর্কে এপিপি-কে উদ্ধৃত করে দৈনিক আজাদ জানালো :
“ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ৫ই মে সম্প্রতি স্থানীয় পাবলিক স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতীয় হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া আজ বাংলাদেশ ৩
________________________________________
শান্তি কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক হাবিবুর রহমান ভূইয়া উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্যদের মধ্যে জনাব এ,টি,এম, ওবায়া, জনাৰ আজিজুর রহমান মো, জনাব কেরামত আলী, তাৰি জিলুর রহমান এবং আমার কাকুল ইসলাম সৰু ৰক্ত দান করেন। সভায় পাকিস্তান এলাকায় সন্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ এবং সুতিকারীদের সাহায্য করার জন্য তার সরকারের 3 নিন্দা করা হয়।
সশস্ত্র ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীরা কি তবে স্থানীয় লােকজনদের হত্যা করে এবং পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া পেীছার পূর্ব পর্যন্ত তথায় কি ধরনের সস্ত্রাসের রাজত্ব চলিতেছিল বিন্নি বক্তা তাহার বিবরণ দেন।
সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে দুস্কৃতিকারদের সহায়তায় ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীরা বিভিন্ন সেতু, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি গৃহ নষ্ট করিয়া যে ক্ষতিসাধন করে তাহার তীব্র নিন্দারা হয়। ভারতীয় অংবেশকারীরা স্বর্ণ, টাকা-পয়সা, খাদ্যশস্য এবং যানবাহন লইয়া যায় বলিয়া সভায় অভিযােগ করা হয়। সভায় গৃহীত অপর এক প্রস্তাবে হয়তীয় হামলাকারীরা মােকাবেলার জন্য যে কোন মূল্য দেশের সংহতি ও অখণ্ডতা রক্ষার জন্য। জলাধারণের প্রতি আহ্বান জানানাে হয়।
এ সময় পিরােজপুর মহকুমা শান্তি কমিটি গঠনেরও সংবাদ পাওয়া যায়। সংবাদে
বরিশাল, ৭ই মেনিখিল পাকিস্তান মােছলেম লীগের সাবেক প্রেসিজেস্ট ও পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক উজির খান বাহাদুৰ সৈয়ল মােহাম্মদ আফজলকে সভাপতি করিয়া পিরােজপুর মহকুমা শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে। নৱশঠিত মহকুমা শান্তি কমিটি সর্বোতভাবে কাজ করিয়া যাইতেছে। মহকুমায় ইতিমধ্যে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়া আসিয়াছে। শহরের সবকটি বাজার ও দােকানপাট খুলিয়া গিয়াছে। বধিত সংখ্যায় লােকজন অফিসে যোগদান করিতেছে এবং বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে চালু হইয়াছে। নিরপরাধ জনসাধারণের দুঃখ-কষ্টের একমাত্র হেতু দুস্কৃতিকারীদের সকল নেতা নিমূল হইয়া গিয়াছে। এক্ষণে এখানকার জীবন-ব্যবস্থা স্বাভাবিক হইয়া উঠিয়াছে এবং আনসাধারণ সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-যাপন করিতেছে।
খুলনার কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির প্রশংসনীয় কর্মতৎপরতা” শিরােনামের সংবাদ প্রকাশিত হয় আজাদ পত্রিকার ১০ মে সংখ্যায়। এপিসি-কে উহ করে পত্রিকা জানালাে :
‘খুলনা, ৯ই মে – খুলনার কেীয় শান্তি কমিটি পাকিস্তানের সংহতি এবং অখন্ডতার প্রতি আস্থা প্রকাশের উদ্দেশ্যে শহর এবং পংতী এলাকায় জনসভা অনুষ্ঠানের ন্যবস্থা করিতেছে। কৃষি এবং শ ওরাও এই সকল সত্তার উদ্দেশ্য। সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য মাওলানা এ, কে, এম,
লাপন বৃদ্ধি ব্যাপারে জনসাধারণকে উৎসাহিত ইউসুফের নেতৃত্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার প্রতিনিধিদের লইয়া খুলনা কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি গঠিত হইয়াছে। উক্ত কমিটি বর্তমানে জেলার তিনটি মহকুমার তন্ন শহর এবং গ্রামাঞ্চলে শান্তি কমিটি গঠনের কাজে ব্যাগত রহিয়াছেন। সাতক্ষীরায় ইতিমধ্যেই শান্তি কমিটি গঠিত হইয়াছে। স্থানীয় সামরিক আইন কর্তৃপক্ষ শান্তি কমিটির কাজের সুবিধার্থে অফিস পরিবহন, টেলিযােগাযােগ এবং অন্যান্য সুযােগ
________________________________________
শান্তি কমিটির সহিত সহযােগিতা করিতেছে। তাহারা জনসাধারণের বিভিন্ন অভাবঅভিযােগ সম্পর্কে বেসামরিক এবং সামরিক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতেছেন। এবং উহাদের প্রতিবিধানের ব্যবস্থা করিতেছেন। তাহারা শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের জানমাল রক্ষার জন্য এবং সুতিকারী ও রাষ্ট্রবিরােধী ব্যক্তিদের ধরার জন্য স্বেচ্ছাসেবী দলও গঠন
স্থানীয় সামরিক আইন কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন শান্তি কমিটির অফিস পরিদর্শনের জন্য এবং খটনাস্থলেই জনসাধারণের বিভিন্ন অভাব-অভিযােগের ব্যাপারে করণীয় কাজ সম্পাদনের জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন সামরিক অফিসার নিয়ােগ করিয়াছেন। খুলনা কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি দৌলতপুর, খালিশপুর এবং খুলনা শীপইয়ার্ডসহ বিভিন্ন শিল্প এলাকার জন্য বিশেষ শক্তি কমিটি গঠন করিয়াছেন। এই এলাকাগুলি প্রধান গােলযােগের এলাকা ছিল। গত কয়েক মাসের উৎপাদন ঘাটতি পূরণের জন্য শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম সহকারে এবং অভিনিবেশ সহকারে কাজ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করাই এই সকল কমিটির প্রধান
এ পর্যায়ে জেলা ও মহকুমা পর্যায়ে শান্তি কমিটি গঠন অব্যাহত থাকে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জেলা ও মহকুমাগুলাে সফর করে শান্তি কমিটির তৎপরতা বৃদ্ধির প্রয়াস নেয়া খবরে এ সম্পর্কে বলা হয় :
কুমি, খুলনা, যশাের ও রংপুর জেলা শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে। প্রাক্তন এম, এন, 4 NRনাৰ আজিজুর রহমান, প্রাক্তন এম, এন, এ ইনাব এ, কে, এম, ইউছুফ, প্রাক্তন এম, সি, এ জনাব সৈয়দ শামছুর রহমান এবং প্রাক্তন এম, এল, এ যানি সিরাজুল ইসলাম যথাক্রমে এই শান্তি কমিটিগুলির আহবায়ক নির্বাচিত হইয়াছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা শাস্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে। অধ্যাপক হাবিশ্ব রহমান এই শান্তি কমিটির আহবায়ক নিযুক্ত হইয়াছেন। প্রাক্তন এম. এল. এ. আলহাজ্ব এম আবদুস সালামকে আহবায়ক কফি চাদপুর মহকুমা শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে। নাটোর মহকুমা শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে। মওলবী কাভূকিন ও প্রাক্তন এম, পি, এ মণী আবদুল আবার খান চৌধুরী যথাক্রমে এই কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক নিযুক্ত হইয়াছেন। ডাঃ সদ্দিন আহমদ এম বি বি এস কে আহবায়ক করিয়া নওয়াবগঞ্জ থানা শান্তি কমিটি আইন করা হইয়াছে। | তাকে জনাব নুরুল হক মমদার এবং এভোটে কে লুল হক
ধুরী বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা সফরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করিয়াছেন। তাহাৱা কথায় শক্তি কমিিট গঠন করলেন। একই উদ্দেশে এককোকেট ফুলমত আ খান এবং অনাৰ মুজিবুল হক টাংগাইল ও মােমেনশাহী জেলা সফর করিতেছেন। আড়াই হাজার
। শাও কমিটি গঠনের জন্য কৰি বেনজির আহমদকে আহবায়ক করা হইয়াছে। কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি অফিসের দুইটি ফোন ২৫৭৭৮৫ ও
বিভিন্ন এলাকায় আরও ২৫টি শক্ত কমিটি গঠনের সংবাদ
আজাদ পত্রিকার ১৯ মে সংখ্যায়। পরিকায় বলা হয় : ঢাকা, ১১ই মে। বিভিন্ন এলাকায় আরও
________________________________________
২৫টি শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে বলিয়া কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান হইয়াছে। নবগঠিত কমিটিগুলির নাম নিয়ে দেওয়া হইল ।
১. পুরানা মোগলটুলি ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহবায়ক জনাব আবদুর রাজ্জাক। ২. কোড়া ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহ্বায়ক জনাব আবুল হোসেন। ৩, অভা ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহায়ক : হাজি আবদুস সামাদ বেপারী। ৪, কালিশি ইউনিয়ন শপ্তি কমিটি, আহক : আবদুল ওয়াদুদ। ৫, তাবাড়ী ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহায়ক : আব্বাস উদ্দিন আহমদ। ৬, দেওয়ান বাজার ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহবায়ক : চাদ মিয়া। ৭. সিদ্দিক বাজার ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহ্বায়ক : মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী। ৮, মওৰী ৰাজার ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহ্নায়ক : মোহাম্মদ ইউসুফ। ৯, মারিশা ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহবায়ক হাফিজ উদ্দিন আহমদ। ১০. পানাহার ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আঙ্গায়ক : জনাব মােহাম্মদ সােথী। ১১. ফরিদাবাদ ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহ্বায়ক জনাব খন্দকার হাবিকুর রহমান। ১২, আজিমপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহবায়ক : জনাব হাফিজ আবদুল কাশেম। ১৩, কাউনিয়া ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহবায়ক : জনাৰ আজিজুর রহমান। ১৪, সাভার থানা শান্তি কমিটি, আহ্বায়ক : জনাব আবদুল হালিম। ১৫. শ্যামপুর হডানয়ন শান্তি কমিটি, আহনাঙ্ক: জনাব ফজলুল করিম। ১৬. ওয়ারি ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহবায়ক জনাৰ এ রহিম। ১৭. টঙ্গীবাড়ী ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, অহিবায়ক : অনাৰ মবির রহমান মল্লিক। ১৮, আবদুল্লাহপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহবায়ক আলহাজু তাহের আহমদ। ১৯, টঙ্গীবাড়ী থানা শান্তি কমিটি, ‘অাহবায়ক ; জনীৰ সিরাজুল ইসলাম মল্লিক। ২০. নওয়াবপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহবায়ক : জনাব সৈয়দ মহসীন আলি ২১, ইসলামপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহ্বায়ক : জনাব মোহাম্মদ মােবারক
হোসেন। ২২. টঙ্গা ইউনিয়ন শান্তি কমিটি, আহবায়ক জনাব আবদুল মজিন সরকার। ২৩, জিঞ্জিরা ইউনিয়ন ওয়ার্ড শান্তি কমিট, আহবায়ক জনাব মােহাম্মদ হোসেন। ২৪. চকবাজার ইউনিয়ন শাস্তি মিট, আহবায়ক : জনাব মহি-জামান।
২৫. চুরিহাৱা মহল্লা শান্তি কমিটি, আহ্বায়ক : হাজি সলিমুল্লাহ মিয়া। সাবেক এম এন এ জনাব আবদুল হাকিম বিক্রমপুরীকে ঢাকা জেলার মুন্সীগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটি সংগঠনের আহবায়ক নিয়োগ করা হইয়াছে।’
নারায়ণগঞ্জ শহরেও শান্তি কমিটি গঠিত হয়। এপিপি পরিবেশিত সংবাদে এ সম্পর্কে বলা হয়; নারায়ণগঞ্জ ১১ই মে। সম্প্রতি এক প্রতিনিধিত্বমূলক সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ শহর শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। জনাব এ, আজিজ সরদারকে উক্ত কমিটির আহবায়ক নির্বাচন করা হইয়াছে। নারায়ণগঞ্জ পৌর এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির সদস্য সংখ্যা হইতেছে ১২৪ জন এবং ১৪ জনকে এই কমিটি সমূহের আহবায়ক নিয়ােগ বা হইয়াছে। নিম্ন ১৪ জুন আহবাৰুকে নাম দেওয়া হইল :
১. গােদনাইল ইউশি-জনাব আলতাফ হোসেন। ২, হাজিগঞ্জ ইউসি-জনাব এম, এ, বাসেত ৩, খানপুর (পশ্চিম) জনাব লতিফ সরদার
________________________________________
৪, খানপুর ইউসি – জনাৰ সুলতান খান ৫. চাষাড়া ইউসি- অনাৰ গোলাম রানা খান। ৬, দেওভােগ ইউসি জনাব জহির হােসেন। ৭. নারায়ণগঞ্জ ইউসি- জনাব এস, এ হালিম। ৮. শীতলক্ষ্যা ইউসি- নাৰ লাল মিয়া। ৯, পাইকপাড়া ইউসি জনাব আবদুল জলিল ১০. সােনাকান্দা ইউসি-জনাব ইসাক মিয়া। ১১. বন্দর ইউসি-জনাব মােহাম্মদ আলী। ১২. কদমরসুল ইউসি-আলহাজ্ব এ, লতিফ ১৩, নবীগঞ্জ ইউসি- জনাব মহিউদ্দিন আহমদ ১৪. ধামগড় ইউসি-(ইন্ডাষ্ট্রিয়াল)-আলহাজ আবদুর রফিক
গত রবিবার শান্তি কমিটির উদ্যোগে নান্মায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবভবনে ঈদে মিলাদুন্নবী যথাযােগ্য মর্যাদার সহিত উদ্যাপিত হয়। ৩৬
সিলেট জেলার বিভিন্ন স্থানেও শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। সংবাদে বলা হয় :
‘ঢাকা ১২ই মে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় শান্তি ও শৃংখলা রক্ষার জন্য এবং সমাজা হইতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উৎখাত করার উদ্দেশ্যে নিমোক ইনিসমূহে শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে।
সিলেট জেলা সিলেট জেলা মােছলেম লীগের আহবায়ক জিনাব নজুল হােসেনকে আহবায়ক করি লা®ন্ন সংস্থার ৫৫ জন প্রতিনিধিত্বকারী সশস্য সমবায়ে লাঞ্জি কমিটি গঠিত হয়। খৌলভীবাজার গত ৮ই মে মৌলবীবাজার মহকুমা শান্তি কমিটি গঠিত হয় । সাবেক এম পি এ আলহাজ্ব জনাব এনাম উল্লাহ ও জনাৰ মিসির উল্লাহ যথাক্রমে এই কমিটির চেয়ারম্যান ও আহবায়ক #ক্ত হন। কুলাউরা থানা গত ৮ই মে প্রায় দশহাজার লােকের একটি শান্তি মিছিল বাহির হয়। মিছিলকারীরা “কায়েদে আজম জিন্দাবাদ” সহ বিভিন্ন ধ্বনি প্রদান করে। পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক মাছলেম লীগের কােনালের সেক্রেটারী জনাব এ, এস, এম, ইউসুফ মিছিলকারীদের আদ্দেশ্যে বক্তৃতা করেন। তিনি জনগণকে সমাজ হইতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উৎখাতের দেশে প্রয়োজনীয় সবকিছু করার এবং পূর্ণ স্বাভাবিকতা ফিরাইয়া আনার পরামর্শ দেন।
|| বদরুদ্দিন আহমদ ও জনাব বাতির মিয়াকে যথাক্রমে আহবায়ক ও সেক্রেটারী কৰা কুলাউরা থানা শান্তি কমিটি গঠিত হয়। আলেখা থানা
৮ই মে আলহাজ্ব আফতাব উদ্দিন আহমালকে এক ও জনাব আকাস সালীকে (W.Gণী কয়া বড়লেখা থানা শান্তি কমিটি গঠিত হয়।
রাজনগর থানা। সম্প্রতি রাধানগর থানা শান্তি কমিটি গঠিত হয় । জনাব আবদুল গফুর, হাজী আজমল খান ও জানান আবিদুল করিম যথাশ্রমে এই কমিটির চেয়ারম্যান, আহবায়ক ও সেক্রেটারী
কমলগঞ্জ থানা। আলহাজ্ব মুন্সী মোহালি আরিফকে আহবায়ক কলির কমলগঞ্জ শান্তি কমিটি গঠিত হয়।
শ্রীমঙ্গল থানা। হাজী মােহাম্মদ আবদুর রশীদকে আহবাৰাক নিযুক্ত করিয়া শ্রীমঙ্গল থানা শান্তি কমিটি গঠন লা হয়।*৩৭ শান্তি কমিটি বরিশালেও শান্তি কমিটি গঠিত হয়। এর ফলে জীবন যাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসছে বলে সংবাদপত্রে উল্লেখ করা হয়। আজাদ পত্রিকা জানালাে : | বরিশাল, ১৩ই মে। গতকাল বরিশাল শহরের বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি টাউনহলে সমবেত হইয়া জেলা শান্তি কমিটি গঠন করেন। দুইজন সাবেক এম, এন, এ অনাৰ আবদুর রৰ এবিং, খান চৌধুরী ফজলে ৰৰ মাধ্যমে এই শান্তি কমিটি প্রসিট এবং সেক্রেটারী নির্বাচিত হইয়াছেন। এই কমিটিতে ১০১ জন সদস্য রহিয়াছেন।
শহরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসায় দোকান-পাট খুলিয়ায়ে ও হাট-বাজার চালু হইয়াছে । অফিস-আদালত নিয়মিতভাৰে চলিতেছে এবং, বেসামরিক প্রশাসন বিভাগ কাজ করিতে শুরু করিয়াছে। যাহাৰঃ শহর ছাড়িয়া চলিয়া গিয়াছিল তাহাদরা আবার ফিরি আসিতেছে।
কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্যগণের বিভিন্ন জেলা সফরের অংশ হিসাবে কেীয় নেতা কাউন্সিল মুসলিম লীগের এ, কে, এম, মুজিবল হক, পিডিপি-র জুলমত আলী খান এবং কাইয়ুম পই মুসলিম লীগের ফিরােজ আহমদ তিনদিন ব্যাপী ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল সফর শেষে ঢাকা ফিরে পত্রিকায় এক বিবৃতি দেন। ‘সেনাবাহিনীর উপস্থিতির ফলে লেশ্ৰমিক নাগরিকদের প্রাণ রক্ষা পায় বলে প্রেস রিলিস্ত্রেী উল্লেখ করা হয়। সংবাদপত্রে বলা হয় :
কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির ৩ জন সলস্য মােমেনশাহ ও টাঙ্গাইল জেলায় ৩পিন ব্যাপী এক সফর শেষে ঢাকা প্রত্যাবর্তন করিয়া এক বিবৃতি দান করিয়াছেন। শান্তি কমিটির এই সদস্য ৩ দিন হইতেছেন কাউন্সিল মােছলেম ঋীগের জনাব এ, কে, এম মুজিবুল হক, পিডিপির আমাৰ জুলমত আলী খান এবং কাইম পন্থা মুসলিম লীগের জনাব ফিরােজ আহমদ।
গত বৃহস্পতিবার এক প্রেস রিলিজে ‘তাহৰাি বলেন যে, মােমেনশাহ শহরে পূর্ণ শাস্তি বিরাজ করিতেছে। শতকরা ৯০ জন কর্মচারী অফিস আদালতে যােগান করিয়াছেন। মোমেনশাহী সফর কালে তাহারা তথায় শাপ্তি কমিটি গুলির কাৰ্যাৰ পর্যালােচনা করেন। মহকুমা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি কমিটি গঠনের ব্যাপারেও তাহার প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ইহা ছাড়া ঢাকা হইতে মােমেনশাহী যাওয়ার পথেও তাহার সর্বত্র
________________________________________
জনসাধারণকে স্বাভাবিকভাবে দৈনন্দিন কাজ নির্বাহ করিত্রে দেখেন ৰলিয়া প্রেস রিলিজ উল্লেখ করা হয়। মােমেনশাহী শহরের অধিবাসীরা তাহাদের জানাইয়াছেন যে,
নিতাবাদীরা পলায়ন করার সময় জনসাধারণের নিকট হইতে খাদ্যশস্য ও অন্যান্য আবশ্যকীয় জিনিসপত্র লুট নিষা লইয়া যায়। জনসাধারণ তাহাসের আসসালামু আলাইকুম বলিলে তাহারা রাম রাম কালিতে বলে। সুতিকায় অরিও বলে- “হমিলেগি পানচ মাস পর এক লেনেকা। মওকা পাইস।” এই সকল দুক্ষ ওকারা মসজিদের ভিতর মুয়াদের হত্যা করিতেই জাবােধ করে নাই। ইহা ছাড়া হয়। শান্তিপ্রিয় ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের হত্যার জন্য। আশকা প্রস্তুত করে। পাকিস্থান সেনাবাহিনীর সময় ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে প্রাইলের প্রাণ। রক্ষা পায়।
জনসাধারণ কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্যদের নিকট মােমেনশাহ’র ডি.সি এসি’র ভূমিকার প্রশংসা করিয়া বলেন যে, দুতিকারারে হাত হইঞ্চে জাৰী, ব্যায় ৪ অন্যান্য সরকারী-বেসরকারী সম্পত্তি রক্ষায় তাহারা অত্যন্ত সাহসিকতা প্রদর্শন করেন।
ফরিদপুর ও বরিশালের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তান শান্তি ও কল্যাণ পরিষদের পক্ষ কে শান্তি কমিটি গঠনের সংলাল পাওয়া যায়। মে মাসের মধ্যাগে গঠিত এসৰ কমিটি সম্পর্কে অন্য আয় আজাদ পত্রিকার ১৮ মে সংখ্যায়। পক্ষায় বলা হয় :
“ঢাকা, ১৫ই মে পাকিস্তান শাস্তি ও কল্যাণ পরিষদের পক্ষ হইতে ফরিদপুর ও শালের নি িছবিধান ও থানায় শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে বলিয়| এক প্রেস ‘ল জানা গিয়াছে। নিম্নে ন গঠিত্র শান্তি কমিটির তালিকা প্রদত্ত হইল ।।
ফরিদপুর জেলার গোসাইর হাট থানার সাবেক এম, এ, এ এবং দাসের ফল Fয়নের চেয়ারম্যান জনাব এরা Gন আহমেদকে প্রেসিGে এবং ইউনিয়ন * ফরম্যানদের ভাইস প্রেসিডেন্য করিয়া থানা শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে।
কলা খানা ইউনিট আরাে জেলার হিজলা থানায়। জনাব কাজী আলতাফ হোসেনকে সভাপতি এবং অ| | পটি ইনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যানদের ভাইস প্রেসিড়ে করিয়া থানা শাস্তি কমিটি গঠিত হইয়াছে।। আৱগঞ্জ মহকুমা ইউনিট
| fাজী আলতাফ হােসেক আহবায়ক করিয়| বাকেরগঞ্জ সদর মহকুমা শান্তি Tট গঠিত হইয়াছে। হিলা থানার ৭টি ইঐনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে এখন করিয়া পটি শান্তি কমিটি গঠন কন্যা হয়। খুগী থানা ইউনিট Wল আবদু!হি হারুন এবং মওলানা আব্দুল মজিংশকে যুগ্ম সম্পাদক করিয়া পাকিস্তান
কল্যাণ পঘিদের মুলালী ই9Aট গঠন করা হইয়াছে। উপরােক্ত শাস্তি ইউনিটগুলি রাষ্ট্রবিরোধী গুজব, হিন্দুস্থানী ভিত্তিহীন
________________________________________
৪০
অবরুদ্ধ বাংলাদেশে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ও তার দোসরদের তৎপরতা
মৌসুমী শস্য উৎপাদন দ্বিগুণ করিয়া রফতানী বৃদ্ধিকল্পে ব্যবসায়ীদের লইয়া স্থানীয় বাণিজ্য কমিটি গঠন করা হইবে। উক্ত ইউনিটগুলি স্থানীয় বাজার সমূহে নিরাপদে পণ্যদ্রব্য সরবরাহ এবং চাউল, কেরােসিন তৈল ও অন্যান্য দ্রব্য সামগ্রীর কৃত্রিম অভাব নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশী সংখ্যক লঞ্চ ও নৌকা যাতায়াতের ব্যবস্থা করিবে। | শান্তি ইউনিটগুলি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকল্পে সামরিক কর্তপক্ষের সহিত পূর্ণ সহযােগিতা প্রদান করিয়া যাইবে।”80
মুন্সীগঞ্জের আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নেও আবদুল্লাহপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। এ সম্পর্কে সংবাদপত্রে বলা হয় :
“মুন্সীগঞ্জ (ঢাকা), ১২ই মে- গতকল্য আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের শান্তিপ্রিয় জনগণ এক সভায় মিলিত হইয়া বর্তমান সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের কথা ঘােষণা করেন। উক্ত সভায় জনগণ সাম্রাজ্যবাদী ভারতের পাকিস্তান বিরােধী প্রচারণার তীব্র নিন্দা করেন।
| উক্ত ইউনিয়নের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণকে কর্মকর্তা নির্ধারিত করিয়া ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি কমিটি গঠন করেন। সভায় জনাব আঃ ছামাদ বেপারী সভাপতি মুন্সী আঃ রব সম্পাদক নির্বাচিত হইয়াছেন। এছাড়া আরও ১৯ জনকে আবদুল্লাহপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির সদস্য নির্বাচিত করা হইয়াছে বলিয়া জানা গিয়াছে।”৪১
ঢাকা সদর দক্ষিণ মহকুমা শান্তি কমিটি গঠনের সংবাদ জানা যায় দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার ১৭ মে সংখ্যায়। সংবাদে বলা হয় : | ‘ঢাকা সদর দক্ষিণ মহকুমা শান্তি কমিটি গঠিত হয়েছে। সুষ্ঠু প্রশাসনিক কার্যক্রমে সরকারকে সহযােগিতা প্রদান এবং এলাকার জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে এই শান্তি কমিটি গঠন করা হয় বলে গতকাল রােববার পিপিআই পরিবেশিত খবরে প্রকাশ।
নবগঠিত কমিটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই এলাকার সাধারণ জনমানুষ সরল প্রকৃতির। কিন্তু বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের তথাকথিত নেতারা এদেরকে বিভ্রান্ত করে ভুল পথে পরিচালিত করেছিল। জনগণ এখন বাস্তবতাকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। তারা ভারতের অসদুদ্দেশ্য এবং আমাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে প্রিয় মাতৃভূমিকে ধ্বংসের ঘােষিত মনােবাঞ্ছাকে কঠোর ভাষায় নিন্দে করেছে। এই সফল জনগণ কখনাে ভাবতে পারেনি যে, তথাকথিত নেতারা আমাদের জঘন্য দুশমন ভারতের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে আমাদেরই প্রিয় মাতৃভূমিকে খন্ড-বিখন্ড করতে পারে। তারা বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে প্রিয় দেশের অস্তিত্ব রক্ষা পাওয়ায় আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেছে। এই প্রেক্ষিতে তারা সশস্ত্র সেনাবাহিনীকেও ধন্যবাদ জানিয়েছে। জনগণ পাকিস্তানের সম্মান, আদর্শ এবং অখন্ডতা। বজায় রাখার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ঢাক বিভাগীয় কাউন্সিলের সদস্য জনাব মােহাম্মদ মাহতাবউদ্দীন খানকে আহবায়ক নির্বাচিত করে এই শান্তি কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির সদস্য সংখ্যা হচ্ছে মােট ৫৩ জন। ৪২ |
এদিকে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির বৈঠকে ওমরাও খান ‘পাকিস্তানের দুশমনদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। পত্রিকায় বলা হলাে :
________________________________________
‘কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্যগণ পাকিস্তানের দুশমনদের মােকাবেলার উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য পাকিস্তানের আদর্শে বিশ্বাসী জনগণের প্রতি আহবান জানাইয়াছেন। শান্তি কমিটির সদস্যরা গতকাল সােমবার মিরপুর, লালবাগ ও চকবাজারে ঘরােয়া বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ওমরাও খান, মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) আফসার উদ্দিন, দেওয়ান ওয়ারাসাত আলী ও জনাব আবুল কাশেমসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত
ওমরাও খান বৈঠকে ভাষণদান কালে ওমরাও খান বলেন যে, দেশ বর্তমানে অত্যন্ত সঙ্কটজনক অবস্থার মধ্য দিয়া অতিবাহিত হইতেছে। সশস্ত্র বাহিনী সময়মত ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া পাকিস্তান রক্ষা করিয়াছে। সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করিয়া তিনি বলেন যে, মনে হয় আল্লাহ তায়ালা হইতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইয়াছে। তিনি বলেন যে, বর্ষণ মওসুম অথবা যে কোন সময় হউক না কেন পাকিস্তানের দুশমনদের একই ভাবে শায়েস্তা করা হইবে। মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ওমরাও খান পাকিস্তানের দুশমনদের অনুসন্ধান কাজে সামরিক বাহিনীর সহিত সহযােগিতা করার জন্য পাকিস্তানের আদর্শে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের প্রতি আবেদন জানান।
পাকিস্তানের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন ব্যক্তিদের সনাক্ত করার কাজেও সশস্ত্র বাহিনীর সহিত সহযােগিতা করার জন্য তিনি জনগণের প্রতি আবেদন জানান।
তিনি বলেন যে, সাময়িকভাবে রাজনীতির সমাধি রচনা করুন। পাকিস্তান নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত রাজনীতি সৌখীনতা মাত্র। তিনি বলেন যে, পাকিস্তানে মাত্র দুইটি দল রহিয়াছে— পাকিস্তান দল ও পাকিস্তান দুশমন দল। পাকিস্তান দুশমন দলটিকে নিশ্চিহ্ন করিতে হইবে। তিনি আরও বলেন যে, পাকিস্তান স্থায়ী হইলে আপনারা রাজনীতি করার যথেষ্ট সময় পাইবেন। মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জনগণকে উদ্দেশ্য করিয়া বলেন যে, ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের নিশ্চিহ্ন করা না পর্যন্ত তাহারা শান্তিতে বাস করিতে পারিবেন না। তিনি জনগণকে উপদেশ দেন যে, তাহারা যদি অনুপ্রবেশকারীদের সরাসরি মােকাবেলা করিতে ব্যর্থ হন তবে পিছন দিক হইতে তাহাদের আঘাত করিতে হইবে।’৪৩
| ধামরাই থানা শান্তি কমিটি গঠনের সংবাদ জানা যায় ‘আজাদ’ পত্রিকার ২০ মে সংখ্যায়। পত্রিকা জানালাে :
‘ঢাকা, ১৯শে মে- ধামরাইয়ের সার্কেল অফিসার ২৪ সদস্য বিশিষ্ট ধামরাই থানা শান্তি কমিটি গঠন করিয়াছেন। পূর্ব পাকিস্তান পরিষদের সাবেক ডেপুটি স্পীকার এডভােকেট জনাব আসগর হোেসনকে উক্ত কমিটির আহবায়ক মনােনীত করা হইয়াছে।’৪৪।
মুন্সিগঞ্জে শান্তি কমিটির উদ্যোগে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। জন সভায় পাক সেনাবাহিনীর সহিত সহযােগিতা করার আহবান জানানাে হয়। সংবাদে বলা হয় :
মুন্সীগঞ্জ, (ঢাকা), ১৯শে মে সম্প্রতি স্থানীয় মােখতার বার লাইব্রেরী হলে স্থানীয় শান্তি কমিটির উদ্যোগে এক সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব আব্দুল হাকিম। 10.কমপুরী।
সভায় বিভিন্ন বক্তা পাকিস্তানের ভ্রাদশ ও অখন্ডত্তা রক্ষা করার উপর গুরুত্ব আরােপ করিয়া বক্তৃতা করেন। সভাপতি তঁাহার ভাষণে জনসাধারণের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিশ্লেষণ করেন। তিনি পাকিস্তানের নিৱাপত্তা ও দুস্কৃতিকারীদের নির্মল সাধনে পাক সেনাবাহিনীকে সর্বপ্রকার সহযােগিতা কনার আহবান জানান। তিনি কনসাধারণকে দেশের অর্থনৈতিক সার্বিক উন্নয়নের জন্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সর্বশক্তি নিয়ােজিত করার উপদেশ দেন। যথাসময়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পাকিস্তানের দুশমন দুষ্কৃতিকারীদের নস্যাৎ করার জনা সভায় পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর জোয়ানদের মােৰাৱকবাদ জ্ঞাপন করা হয়। অতঃপর পাকিস্তানের সংহতি ৪ঃ৩ ও সমৃদ্ধি কামনা করিয়া মােনাজাত করা হয়। ‘৮৫
এ সময় বিভিন্ন থানা ও ইউনিয়নে আয়ে শাস্তি নমিটি গঠিত হওয়ার সংবাদ জানা। যায়। এসব কমিটির উদ্যোগে সন্ধা অব্যাহত ছিলাে। সংবাদে বলা হয়।
_ ‘১৯মে, গতকল্য শ্রীনগর থানা মুসলিম লীগ কত পক্ষীর শান্তি কমিটির অর্গানাইজারদের উদ্যোগে থানা কম্পাউন্ডে মুন্সীগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির আহবায়ক জনাব আব্দুল হাকিম বিক্রমপুরীর সভাপতিত্বে এক বিরাট জনসভা হয়। সভাপতির ভাষণে জনৰ বিক্রমপুরী ছাহেনা পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার খাবশকতা, পূৰুতিকারীদের সহায়তা কষ্টে হিন্দুস্থানের উস্কানীমূলক কার্যের তীব্র নিন্দা করেন এবং পান সেনাবাহিনীর বীরত্বপূর্ণ। তৎপরতার প্রশংসা করেন। উপস্থিত জনসাধারণ সকলেই একবাক্যে পাকিস্তানের অত্যা রক্ষার ব্যাপারে সেনাবাহিনীর জেনদের সন্তাৱ সহ্য করার চালান করেন। অতঃপর আলহাজ্ব জনাব সৈয়দ আবদুল মনকে আহবায়ক করিয়া এবং ২৯ জন সদস্য নিয়া থানা শান্তি কমিটি গঠন করা হয়।
শ্রীনগর (ঢাকা), ১৮ই মে গতকল্য শ্রীনগর থানা মােছলেম লীগ অফিসে স্থানীয় মােছলেম লীগ কর্মী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এক সন্ধা হয়। জনাব আব্দুল ছামাদ লস্কর সভায় সত|পতিত্ব করেন। সভায় সর্বসমওক্রমে আলহাজ #ব সৈয়দ এ, মানিকে আহবায়ক ও জনাৰ নরুল ইসলাম ও জনাব এ, কে, কালকে সেটারী ও সহ-সেক্রেটারী রুবিয়া শ্রীনগর থানা শক্তি কমিটি গঠন করা হয়। | গত রবিবার রাতুষাল| মাঠে প্রাক্তন ইউঃ বিঃ প্রেসি৯েন্ট ও বিশিষ্ট মােসলেম লীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির অর্থানাইজার জনাব এ জলিল খানের উদ্যোগে বাড়ৈখালী মাঠে এক জনসভা হয়। জানান এ, বি, এম সিদ্দিক সম্পতিত্ব করেন। নাৰ , জলি খান পাকিস্তানের মা | ক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবিং, স্যার অপচোৱ সমাচন করেন। অতঃপর জনাব এ, জলিল খানকে আহবায়ক ও জনাব এ, বি, এম সিলিককে প্রায় সেক্রেটারী এবং কনাৰ ৱোম মিয়াকে সহকারী করিয়া অশর ২০ জন সদস্য সহ বাড়ৈখালী ইউনিয়ন শান্তি কমিটি গঠন করা হয়।
কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির প্রলও ক্ষমতাবলে অর্গানাইজার জনাব এ, জলিল ও আলহাজ্ব সৈল , মান্নানের প্রচেষ্টায় শ্রীনগর থানা এলাকানা আরও বারটি ইউনিয়নে শক্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে।
হষাড়া ইউনিয়ন শান্তি কমিটির আহবায়ক জনাব রিয়াজদ্দিন মিয়া, মােলঘর: আহবায়ক কানাৰ দেলওয়ার হোসেন, রাবা; জনাব তোফাজ্জল হােসেন, আটপাড়া; জনাব মাহবুবুর রহমান অন্তর; জনাব আবদুল করীম, কুকুটিয়া; জনাব আমানুল হক মৃধা, কোলাপাড়া; ডাঃ ফজলুল হক, শামসিদ্ধি; জনাব আঃ বার মিয়া, শ্রীনগর; জনাব মালামান খান, রাঢ়খাল; জনাব আব্দুল মান্না পাটাঙ্গোল; জনাব সৈয়দ শাহ আলম।
________________________________________
কক্সবাজারে নাগরিকদের এক সভায় গঠিত হয় “শান্তি ও কল্যাণ কমিটি। নাগরিক তা সম্পর্কে শিক্ষায় বলা হয় :
কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত জীবনের সর্বস্তরের প্রতিনিধি সম্বলিত ৭৯ জন নেতস্থানীয় মাগরিকদের এক সভায় কক্সবাজার মহকুমার সকল দেশপ্রেমিক ও শান্তিপ্রিয় নাগরিকদে কাছে দুস্কৃতিকারী ও সমাজবিরােধী ব্যক্তিদের বন্দী ও উচ্ছেদ করার এবং আহাসেরকে নিকটবর্তী পুলিশ স্টেশন কিংবা সেনাবাহিনীর হেড কোয়ার্টার সােপর্দ করার আহ্বান জানান
উক্ত সভায় শাওন রাষ্ট্রবিরােধী বক্তকে বশ ও উদ্দেলের জন্য এবং কক্সবাজার এরী ও সাৰ জেলকে রক্ষা করার ব্যাপারে বাহারিয়া এলাকার আনসার, মুজাহিদ ও আশাণ পুলিশকে যে বীরােচিত সাহায্য প্রদান করিয়াছেন সেই জন্য তাহাদের সকলের প্রতি সশ্রদ্ধ কতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। উক্ত দুষ্কৃতিকারী উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব করেন আমাৰ মকবুল আহম, জনাব নাজির, নাৰ এম, এ, জলিল সওদাগর, জনাৰ তানহা মিয়া, আনাৰ শিৱায় আহমদ এবং আরও কয়েকজন।
উক্ত সভায় এডভােকেট জনাব মইলুর রহমান চৌধুরীকে আহবায়ক নির্বাচিত করিয়া আপশিক পরিষদের প্রাক্তন সদস্য জনাব জাফর আলম চৌধুরীসহ আরও দশজন সদস্য সম্বলিত একটি শান্তি ও কল্যাণ কমিটি গঠিত হয়।’
অপরদিকে চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম কােলা শান্তি কমিটির সাধারণ সভায় সেনাবাহিনীকে সূর্ণ সহযােগিতা প্রদানের বিষয়টি পুনরায় আলােচিত হয়। পত্রিকায় বলা হয় :
চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম জেলা শান্তি কমিটির এক সাধারণ সভায় চট্টগ্রাম শহর ও লার সর্বত্র পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আনবির ব্যাপারে উক্ত মাৰি কমি সামরিক আইন কর্তৃপক্ষের সহিত সহযােগিতার জন্য যেসৰ পস্থা গ্রহণ করিয়াছে তাহা
নীয় বিশ শুনে আলােচনা করা হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন খাম জেলা পিডিপি’র সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা শান্তি কমিটির আহবায়ক জুনাব মাহমুন্নবী চৌধুরী। ৪৮
| ঢাকা-ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলে আৰও শান্তি কমিটি গঠিত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেল। “আঞ্জস’ পত্রিকায় বলা হলাে :
‘কা, ২১শে মে-শান্তি ও শৃংখলা রক্ষা এবং সমাজ হতে সূৰুতিকারীদের দেকল্পে সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল পার ভিন্ন স্থানে আরও বহু শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে বলিয়া খবরে প্রকাশ।
পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক মােছলেম লীগের (কনভেনশন) সাধারণ সম্পাদক জনাব এ, ©, এম ইউসুফ ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের সমস্ত মহকুমা হেড কোয়াটার ও গুরুত্বপূর্ণ Tস সমূহ পরিভ্রমণ করেন। এবং তাহার উপস্থিতিতেই ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলার অধিকাংশ শান্তি কমিটিগুলি গঠিত হয়। শান্তি কমিটিগুলি হইতেছে ; ১, ময়মনসিংহ জেলা শান্তি কমিটি আহবায়ক ময়মনসিংহ সদর জামে মসজিদের
পেশ ইমাম। প্রাক্তন উজির জনাৰ ফখরুদ্দিন আহমেদ এবং প্রাদেশিক পরিষদের প্রাক্তন সদস্য জনাব এম, এ, মান্নান উক্ত শান্তি কমিটির প্রধান দু’জন সদস্য
________________________________________
২. নেত্রকোনা শান্তি কমিটির আহবায়কনাব ফজলুল হক এভভােকেট
(কনভেনশন)। ৩. কিশােরগঞ্জ শান্তি কমিটি। আহৰাক-মওলানা মােসলেহ উদ্দীন (নেজামে
ইসলামী), সম্পাদক জনাব আব্দুল আউয়াল খান (কনভেনশন), সদস্য- নীৰ
আবদুল আলী, উনার শরিফউদ্দিন ও মওলানা আলাহর আলী। 18, জামালপুর শান্তি কমিটি । সভাপতি : জনাব কাজী মহিউদ্দীন আহমদ
(কনভেনশন)। ৫. টাঙ্গাইল জেলা শক্তি কমিটি । আহবায়ক ; হাকিম হাবিবুর রহমান (কনভেনশন) ৬, হালুয়াঘাট থানা শান্তি কমিটি। সভাপতি : প্রাদেশিক পরিষদের প্রাক্তন সদস্য
জনাব আবদুল জলিল। সম্পাদক : জনাব আবদুল মান্নান ওরফে সামিয়া । ইহান্না দুইজনেই কনভেনশন মুসলিম লীগের সদস্য। ৭, ঢাকার ফতুয়া থানায় নেতৃস্থানীয় নাগরিকদের এক সভায় আরও একটি শান্তি ও
কল্যাণ কমিটি গঠিত হইয়াছে। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন কুতুবপুর ইউনিয়ন কাউন্সিলের সভাপতি জনাৰ ননদে আলী মিয়া । ৬০ জন সদস্য বিশিষ্ট উক্ত শান্তি ও কল্যাণ কমিটির আহবায়ক ও সম্পাদক নির্বাচিত হইয়াছেন যথাক্রমে জনাৰ পান্দে আলী মিয়া ও জনাব এম, এ, খালেক। ৮, ঢাকা সদর (উঃ) মহকুমা শান্তি কমিটি। ১৬ই মে গঠিত ৩৬ জন সদস্য বিশিষ্ট
এই শান্তি কমিটির আহবায়ক নির্বাচিত হইয়াছেন জাঙীয় পরিষদের প্রাক্তন সদস্য
ও প্রাক্তন পালামেন্টারী সেক্রেটারী মৌলৰী আবদুল আওয়াল এডভোকেট। ৯, সিঙ্গাইর থানা শান্তি কমিটি। ৮০ জন সদস্য বিশিষ্ট এই শান্তি কমিটির আহবায়ক
নির্বাচিত হইয়াছেন জনাব আবদুল আলী দেওয়ান ।Bis শান্তি কমিটির উদ্যোগে এগিণবাড়িয়ায় সভা ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভারতীয় চক্রান্ত ও অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। পএিকাৰ কলা হয় :
ব্রাহ্মণন্যাড়ীয়া, ১৮ই মে সম্প্রতি এখানে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে শান্তি কমিটির উদ্যোগে এক টি শান্তি মিছিল বাহির করা হয়। প্রায় দেড় মাইল লম্বা এই মিছিলে শহণ ও শহরতলীর হাজার হাজার লােক যােগদান করে। শােভা যাত্রা আল্লাহ আকবর, পাকিস্তান জিন্দাবাদ এবং ভারতীয় ষড়যন্ত্র ধ্বংস হােক প্রভৃতি সিহ শহরের বড় বড় রাস্তা প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে রিপাবলিক স্কোয়ারে এক বিরাট জনসভা হয়। উক্ত সভায় বিভিন্ন বক্তন পাকিস্তান ছেলের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য এবং আদর্শ ব্যাখ্যা করিয়া বক্তৃতা
বক্তাগণ একার্থীদের যারা পাকিস্তানের অনিষ্ট সাধনের অপচেষ্টা, ভারতীয় চক্রান্ত ও অপপ্রচারেনা তীব্র নিন্দা করেন। সভায় নগণকে পাকিস্তানের অখণ্ডতা এবং সংহতি এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষয়ে জামা কোরবানী করার জন্য আহবান আনো হয়। অবশেষে পাঙ্কিানী সকল প্রকার মাসলের জন্য মােনাজাত করা হয়।”ইড
এদিকে খুলনায় শান্তি কমিটির সভায় আন এ, সবুর খান দেশের সংহতি রক্ষাকল্পে সেনাছি•ার সহিত সহযােগিতার আহবান জানালেন। পত্রিকা জানিনালাে
________________________________________
‘খুলনা, ২০ শে মে- সাবেক কেন্দ্রীয় উজির এবং জাতীয় পরিষদে নেতা আন আবদুস গলু খান আজ দেশের ঐক্য ও সংহতি রক্ষার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর সহিত সহযােগিতা। করার জন্য দেশপ্রেমিক জনসাধারণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাইয়াছেন।
খান সবুর স্থানীয় কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির এক ঘরােয়া সভায় ভাষণদানকালে আরও বলেন যে, বেআইনী ঘােন্বিত আওয়ামী লীগ দেশের সংহতি বিনষ্ট করার চক্রান্ত। করিয়াছিল । কিন্তু আমাদের সদা জাগ্রত সশস্ত্র বাহিনী উহাকে ব্যর্থ করিয়া দিয়াছে। আওয়ামী লীগের অসহযোগ আন্দোলনের ফলে পেশের যে ক্ষতি হইয়াছে উহা পূরণের জন্য এবং শিল্প ও কৃষি উৎপাদন এবং অর্থনৈতিক তৎপরতা পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায়। ফিরাইয়া আনার জন্য প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের উচিত একযােগে কাজ করিয়া যাওয়া । অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শিল্প ও কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরাইয়া আনার জন্য আমাদের কঠোর পরিশ্রম করিতে হইবে এবং এই উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা অক্ষুন্ন রাখা অপরিহার্য বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন।
খুলনা কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সভাপতি এবং সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য মওলবী এ, কে, এম ইউসুফ সভায় ভাষণদানকালে ভারতায় অনুপ্রবেশকারী এবং রাষ্ট্র বিরােধীদের উৎখাতকষ্টে সেনাবাহিনীর সহিত সহযােগিতা করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। সভায় সাবেক প্রাদেশিক উজির জনাব এস, এম আমজাদ হোসেন =ণ দান করেন।
বরিশালে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বরিশাল উত্তর মহকুমা শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। কমিশনারের উদ্যোগ এই কমিটি গঠনেও উৎসাহ ছিলাে লক্ষণীয়। পত্রিকা আশিলি:
বরিশাল, ২০ শে মে সম্প্রতি ডেপুটি কমিশনারের কনফারেন্স রুমে ইউনিয়ন কাউন্সিল সমূহের চেয়ারম্যান, সার্কেল অফিসার এবং উত্তর মহকুমার অন্যান্য প্রতিনিধিদের এক সভায় উত্তর মহকুমা শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে।”৫২
২১মে বরিশালে মূলত শান্তি কমিটির উদ্যোপেই জনসভার আয়ােজন করা হলাে। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান বক্তাগণ পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। আজাদ এ সভা সম্পর্কে জানালাে :
বরিশাল, ২২শে মে গতকাল অপরাহ্নে স্থানীয় টাউন হল ময়দানে অনুষ্ঠিত এক বিৰাট জনসভায় রাষ্ট্রের দুশমনদের উৎখাত করিয়া দেশের সংহতি রক্ষাকল্পে বীরত্বপূর্ণ ও সমােচিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
স্থানীয় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান জনাব আবদুর রবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত লতায় মেসার্স শামসের আলী, নুরুল ইসলাম শিকদার, আবুল হােসেন ও গােলাম কুদুস ভাষণ দান করেন। বক্তাগণ পাকিস্তানের স্বার্থের পরিপন্থী জঘন্য কার্যকলাপ চালাইয়া খাওয়ার অভিযােগে ভারতের তীব্র নিন্দা করিয়া বলেন যে, পাকিস্তানের জন্মের পর হইতে উহাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করাই হইতেছে ভারতের একমাত্র লক্ষ্য। মিঃ গান্ধী, পণ্ডিত নেহেরু এবং মিঃ প্যাটেল তাহাদের নােংরা উদ্দেশ্যে চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই হঠাৎ কজি। উপমহাদেশ বিভক্তকল্পে লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনের প্রস্তাবে সম্মত হন।
বক্তাগণ আরও বলেন যে, পাকিস্তান সৃষ্টির পর হইতেই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বযুদ্ধ চালায়। ভারত একই সংগে এই দেশকে ধ্বংস করার জন্য বিভিন্ন সূক্ষ্ম উপায়ে
________________________________________
পূর্ব পাকিস্তানী তরুণদের সাংস্কৃতিক দিক নিয়া প্রভাবিত করে। তাঁহার বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগ নেতলার কঠোর সমালােচনা করিয়া বলেন য়ে, পাকিস্তানকে দুর্বল করাই তাহানের একমাত্র পক্ষণ ছিল।’
85ামের শান্তি কমিটির সভায় মাহমুদ আলী জানালেন আমাদের সেনাবাহিনী ভারতীয় চক্রান্ত ব্যর্থ করিয়া দিয়াছে। এ সম্পর্কে এপিপি পরিবেশিত সংবাদে জানা যায় :
চট্টগ্রাম ২০শে মে, পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক পাটির ভাইস প্রেসিগ্রেট জনাব মাহমুদ আলী এখানে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের কতিপয় রাষ্ট্র বিরোধীর সাহায্যের মাধ্যমে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন কার ভারতীয় চক্রান্তকে ‘আমাদের সেনাবাহিনী সম্পূর্ণরূপে নস্যাৎ করিয়া দিয়াছে যাহার জন্য পূর্ব পাকিস্তানীগণ সেনাবাহিনীর নিকট কৃতজ্ঞ।
চট্টগ্রাম জেলা শান্তি কমিটির সদস্য ও কর্মীদের এক সমাবেশে ভাষণদানকালে তিনি আরও বলেন যে, ইতিপূর্বেই জনসাধারণ পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতি রক্ষা করা এবং পাকিস্তানের জনগণের ঐক্যকে ধ্বংস করার নি। ভারতীয় চুমন্ত নস্যাৎ করিতে দৃঢ় সংকল্প প্রকাশ করিয়াছে।
তিনি পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্য কতিপয় বিদেশী শক্তির চক্রান্ত সম্পর্কে জনসাধারণকে স্মরণ করাইয়া দেন এবং জাতীয় জীবনের বর্তমান সংকটজনক মুহূর্তে প্রকৃত থাকা এবং সাহসিকতার সহিত বর্তমান চ্যালেঞ্জ মােকাবেলা করার জন্য জনসাধারণের প্রতি উদা আবান জানান।
পিডিপি নেতা শ্রেণীগত মনােভাব পরিত্যাগ এবং জাতীয় জীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আমার উদ্দেশ্যে আইন প্রয়ােগকারী সংস্থাগুলির সহিত পূর্ণ সহযােগিতা দানের জন্য জনসাধারণের প্রতি আবেদন জানান। জনাব মাহমুদ আলী পাকিন্তান অর্জনে পূর্ব পাকিস্তানীদের ত্যাগের কথা স্মরণ কইয়া নিয়া বলেন যে, তাহারা কাহাকেও এই ত্যাগ অর্থহীন করিয়া তুলিতে দিবে না। জনগণ বর্তমানে এ সকল লােককে উৎখাতকল্পে সেনাবাহিনীকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা দান করিতেছেন বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন। তিনি প্রসঙ্গতঃ বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে সকল পর্যায়ে শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে এবং উক্ত কমিটিগুলি জনগণের মনে আস্থার অব ফিরাইয়া আনার জন্য কাজ করিয়া যাইতেছে।
মিটিগুলি স্বাভাবিক অবস্থা ফিন্যাইয়া আনার ব্যাপারে প্রশাসনিক যন্ত্রের সহিত সহযােগিতা করিবে। উক্ত সভায় জনাব আবদুল
________________________________________
“টাঙ্গাইল, ২২শে মে গতকাল টাঙ্গাইল জেলা শান্তি কমিটির এক বিশেষ সভা। অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্য জানান , এম শফিকুল ইসলাম উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন। জেলা শান্তি কমিটির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৮৮ জনে উন্নীত হইয়াছে এবং, জেলা শান্তি কমিটি নীতি পৰিচাষনার জন্য ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কার্যনির্বাহক কমিটি গঠন করিয়াছে বলিয়া এক প্রেস রিলিজে আনা গিয়াছে।
জনাব শফিকুল ইসলাম সভায় ভাষণ দানকালে বলেন যে, পাকিস্তান বর্তমানে ঠাণপক্ষা সংকটক মুহুর্ত অতিক্রম রিতেছে।”
পিরােঞ্জপুরে শান্তি-কর্মীদের সমাবেশে কৃষক শ্রমিক পার্টির প্রেসিডেন্ট এ, এস, এম সোলায়মান রাষ্ট্রদ্রোহীদের প্রতিরােধ করার আহ্বান জানালেন। পপি পরিবেশিত খবরে
| ‘ষক শ্রমিক পার্টির প্রেসিডেন্ট জনান , এম সােলায়মান পিরোজপুরে শান্তি কমিটির কর্মী সমাবেশে বক্তৃতাকালে বলেন যে, ভারতীয় প্রচারযন্ত্র পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণকে বিভ্রান্ত করিতে চরমভাবে ব্যর্থ হইয়াছে।।
তিনি প্রসঙ্গত বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের পাঁট ফসল ধ্বংস কণার ভারতীয় প্রচারণা সত্ত্বেও পূর্ব পাকিস্তানের সর্বাঞ্চলের পাট উৎপাদকলা পূর্ববর্তী বত্সলের চাইতে অধিকতর পাট উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা করিয়াছে। তিনি শান্তি কমিটির সদস্যদেরকে জাতীয় সম্পত্তি শক্ষা করার এবং ওর বংসাত্মক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার কাজে নিয়োজিত সমাজাহ শু বাদাইলে প্রতিরোধ করার জন্য শান্তি কমাদের প্রতি আহ্নান জানান। জনাব সোলায়মান প্রসঙ্গ বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ শর্কর হামলা হইতে পাকিস্তানকে রক্ষার প্রয়োজনে যথাসর্বস্ব ত্যাগ করিবেন।’
এদিকে ঢাকায় ইসলামপুর শান্তি কমিটির অফিস উদ্বোধন করা হলাে। সংবাদে বলা হলী :
“পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির আহবায়ক সৈয়ল খাজ| আন্তরুমিন গত তলােয় ইসলামপুর রোডে মঞ্জনি হোটেল বিলিং এ ইসলামপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির অফিস উদ্বোধন করেন। কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির প্রায় সকল সদস্য, বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির আহবায়ক, ইউনিট আহবায়ক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ীগণ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ইসলামপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির আহবায়ক জনাব মােবারক হোসেন, সৈয়দ খাজা আয়েরুদ্দিনকে মালাভূষিত করেন।৫৮
এদিকে ৫ মে শান্তি কমিটির কর্ম তৎপরতা বৃদ্ধির সংশি পাওয়া গেল। সংবাদে
| ‘চইএম, ২৪ শে মে- চট্টগ্রাম জেলা শান্তি কমিটির কর্মতৎপরতা বিপুলতাৰে বৃদ্ধি পাইয়াছে এবং জেলায় স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠান উপায় উদ্ভাবনের জন্য জেলার বিভিন্ন আন হইতে অসংখ্য লােক স্থানীয় শান্তি কমিটির অফিমে সমাগম হইতেছে। জনগণের নিকট হইতে বিভিন্ন অভিযােগ গ্রহণ করা হইতেছে এবং শান্তি কমিটির উদ্যোগে উহাৰ
এনিধান করা হইতেছে। সর্বশ্রেণীর লােকেরা বহু অভাব অভিযােগ উপশমের অন্য লামরিক আইন কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করিয়াছেন।
________________________________________
শান্তি কমিটির বহু শাখা গঠন করা হইয়াছে। ইতিমধ্যে শান্তি কমিটির শাখা ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারিত হইয়াছে। ডাক্তার আমানুল্লাহকে আহবায়ক নির্বাচিত করিয়া মিৱেশ্বরাই থানায় হাইতকান্দি ইউনিয়নে একটি শান্তি কমিটি গঠিত হইয়াছে। শান্তি কমিটির সদস্য ও কৃমি রেল পিডিপি’র সাধারণ সম্পাদক জনাব নুরনাহ, প্রধান অতিথি হিসাবে উক্ত সভায় যোগদান করেন। গত ২৩শে মে বাগমনিরাম হাই স্কুলে বাগমনিরাম ইউনিয়নের উদ্যোগে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টuাম জেলা শান্তি কমিটির জনাৰ নওয়াব আলী চৌধুরী উক্ত সায় প্রধান অতিথি হিসাবে যােগদান করেন। কবলমুরিং থানা এবং রামান কাদালপুর ইউনিয়নে দুইটি শাস্তি কমিটি গঠিত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ। | কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্যবৃন্দ চামের বিভিন্ন এলাকা সফর করে ঢাকায় ফিরে এক বিবৃতিতে বলেন,
রাষ্ট্রবিরােধীদের চক্রান্ত নস্যাৎ করিয়ে কা+গণ বদ্ধপরিকর।’ সংবাদে বলা হয়;
‘ঢাণ, ২৬শে মে-কে শান্তি কমিটির সদস্য এতােকেট আবু সালে এক বিবৃতিতে বলেন যে, জনসাধারণ গুটিকতক বিরোধী এবং উজৰ সৃষ্টিকারীদের অশুভ জুকান্ত ব্যর্থ করিয়া দিতে গাঢ় প্রতিজ্ঞ। জনাব লেক আরও ২জন নেতার সহিত মাম। সফরের পর বলেন, “মগ্র চট্টগ্রাম জেলা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রহিয়াছে এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসিতেছে।”
তিনি উক্ত বিবৃতিতে আরও বলেন যে, তিনি জনাব মােহাম্মদ আলী এবং, জনাব আবদুল জব্বার বন্দরের সহিত বিভিন্ন এলাকা সফর করেন এবং বিভিন্ন স্তরের লােকদের সহিত আলোচনা কৱেন। সর্বত্রই অসাধারণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আনার জন্য ও শান্তি রক্ষার জন্য সশস্য শাহিনী ঐ কর্তৃপক্ষের সহিত সহযোগিতা করিতে আগ্রহী। জনসাধারণ গুটিকতক রাষ্ট্রবিরােধী ও গুজব রটনাকারীদের অশুভ চক্রান্ত ব্যর্থ করিয়া দিতে বন্ধপরিকর। বিভিন্ন থানা ও ইউনিয়ন সমূহে শান্তি কমিটি গঠন করা হইয়াছে এবং জেলা। শান্তি কমিটি বিভিন্ন শ্রেণী জনসাধারণের মধ্যে শান্তি রক্ষা ও পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আনা এবং পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতি রক্ষার জন্য কঠোর পরিশ্রম করিয়া যাইতেছে।
তিনি আরও প্রকাশ করেন যে, তিনি লালদীঘি ময়দানে এক জনসায় ভাষণ দান। কনুন। তিনি বলেন যে, কারখানা সমূহ উহাদের ক্ষমতা অনুযায়ী কার করিয়া যাইতেছে এবং বিভিন্ন থানায় পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। চট্টগ্রাম বন্দরে স্বাভাবিক কাজকারবার চলিতেছে এবং অফিসে হাজিরাও সন্তোষজনক ভাবে বৃদ্ধি পাইতেছে।”
ব্রাক্ষণবাঞ্চীয়া মহকুমা শান্তি কমিটি গঠনের সংবাদ জানা যায় ‘আজাদ’ পত্রিকার ২৯ মে সংখ্যায় । পত্রিকা জানালাে :
| ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, ২৭শে মে- মিউনিসিপ্যাল এলাকায় ভাট ওয়ার্ভে জনাব হারুন-উরশিদ, জনাব ছৈয়ল মোহাম্মদ আহম্মদ, জনাব কেরামত আলী, জনাৰ আঙুল গফুর এবং জনাৰ আবেগ আলীকে যথাক্রমে আহবায়ক করিয়া সম্প্রতি কতিপয় শান্তি কমিটি গঠিত হইয়াছে। এছাড়া অধ্যাপক হাবিবুর রহমানকে আহবায়ক করিয়া ব্রাহ্মণবাড়ীয়া মহকুমা। শান্তি কমিটিও গঠিত হইয়াছে।
মে মাসের শেষের দিক থেকে অবরুদ্ধ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তি কমিটি গঠন ও তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। কমিটিগুলি সা-সমাবেশে এগিয়ে আসে। এ সম্পর্কে আজাদ পত্রিকার প্রতিবেদন :
________________________________________
রােজপুর, ২৯শে ন আজ এখানে মিনিসিপ্যাল হলে মহকুমা শান্তি কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান খান বাহাদুর সৈয়দ মােহাম্মদ আফজাল আফশ পনে কালে ভারতীয়দের প্রচারণায় বিচ্ছিন্নতার চক্রান্ত এবং বিশ্বাসঘাতকতা করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের কঠোর সমালােচনা করেন। তিনি আরও বলেন যে, আওয়ামী লীগের উক্ত চক্রান্ত সম্পর্কে শতকরা ৯০ জন পূর্ব পাকিস্তানী কোনরূপ চিয়াও করিতে পারে নাই।
খান বাহাদুর আরও বলেন যে, মুছলমানদের স্বার্থরক্ষার জনাই পাকিস্তান অর্জিত হইয়াছিল। মুছলমান ও হিন্দু শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া একসঙ্গে বসবাস করা সত্ত্বেও ধর্মীয় ও তামুসুনিক পার্থক্যের দরুন তাহারা একে অপরের সহিত মিশিয়া যাইতে পারে। নই। সৈয়দ মােহাম্মদ আমজাল সভায় এই মর্মে অভিযোগ করেন যে, নির্বাচনকাল আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা সম্পর্কে একটি রাজ্য উচ্চারণ না করিলেও জাতীয় সংহতির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ সৃষ্টির কুমতলৰে দেত্রে উভজা ভাংশের জনগণের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টিকষ্টে বৈষম্যের বুলি কপচাইতে থাকে।
দেশে শান্তি রক্ষা ও আওয়ামী লীগের প্রদত্ত ওয়াদা পূরণ করা হউক ইহাই সাধারণ মানুষ কামনা করিয়াছিল । মিল কারখানা বন্ধ, মােগাযােগ ব্যবস্থা নানচাল এবং ব্যাঙ্ক, বদর লুটপাটের ফলে সৃষ্টি সামাজিক ও অনৈতিক অচলাবস্থা দূরীকরণই ছিল বনগণের
পরিশেষে আমাদের বীর সশস্ত্র বাহিনী বাহির হইয়া জনগণের জানমাল রক্ষা করেন এবং দেশে আইন-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন। | সৈয়দ মােহাম্মদ আফজাল সভায় আরও বলেন যে, ভারত-পাকিস্তানের সহিত সরাসরি সংঘর্ষের উস্কানী দান করিয়া ব্যর্থ হইয়া বর্তমানে নয়া কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে মিথ্যা ও অতিৰঞ্জিত প্রচারণা চালাইয়া পাকিস্তানী জনগণকে বিপথগামী করার চেষ্টা করিতেছে, কভু মহান আল্লাহ তায়ালা মুছলমানদের রক্ষা করিয়েছে। বর্তমানে আমাদের উচিত চক্রান্তকারীদের উৎখাতের কাজে সরকারের সহিত পূর্ণ সহযােগিতা কনা। ভারতীয় চক্রান্ত নস্যাৎ করিয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জমা সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ফেনী শান্তি কমিটি ৫৭ সদস্য বিশিষ্ট ফেনী মহকুমা শান্তি কমিটি গঠিত হইয়াছে এবং মহকুমার দেশপ্রেমিক নাগরিকদের লইয়া ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়। জনাব খায়েজ আহমেলকে কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হইয়াছে।
শান্তি কমিটি গঠনের পর একটি বিরাট শােভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান রাস্তা প্রদক্ষিণ করে। মিছিলকাৰীগণ আল্লাহ আকবর” “পাকিস্তান
________________________________________
অসংখ্য মুছলমানের কোরবানীর বিনিময়ে অর্জিত পাকিস্তানের সংহতি, ও সার্বভৌম রাকায়ে সময়োচিত উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বক্তাগণ সশস্ত্র বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন।
হামিদ জানাৰ খায়েজ আহমেদ এক বিবৃতিতে খালেন যে, ভারতীয় অনুপ্রবেশকাৱী ও তাদের পালাপের ঝংসাত্মক এবং রাষ্ট্রবিরােধী কার্যকলাপের মুখে আমাদের সশস্ত্র মাহিনী ফেনী শহরে প্রবেশ করেন এবং তথাকার দেশপ্রেমিক জনগণকে রক্ষা করেন। জনগণ সেনাবাহিনীকে বিপুলতবি সম্বর্ধনা জানায় এবং তাহারা শনাক্সাহিনী ও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সহিত পূর্ণ সহযােগিতা দান করিতেছে।
জনগণ ভারী প্রচারণার প্রতি কোনরূপ কর্ণপাত না করিয়া তাহাদের আকানিক কাজ-কারবার না করিয়াছে। তাহটি বিরােধীদের দ্বারা শাবিত জাতীয় ক্ষতি পূরণের জন্য উৎসাহ-উদ্দীপনার সহিও কাজ করিয়া যাইতেছে বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন। নােয়াথালী গত সােমবার এখানে এক বিরাট উনসঙা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় যােগদানকারী সমাজের বিল্মি স্বৱেৰ জনগণ পাকিস্তানের সংহতির প্রতি গভীর আস্থা প্রকাশ করিয়া ভিকারীদে ইশি চক্রান্তের বিরুদ্ধে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার আইন ও গলা রক্ষায় তাহাৱা কর্তৃপক্ষের সহিক সর্বাত্মক সমর্থন পাশ করেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্য জনাব এ, জব্বার খন্দর, নােয়াখালী জেলা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান এডভোকেট সাইদুল হক, জেলা শান্তি কমিটির সদস্য এভোকেট শামসুল হক সহ আরো অনেক সভায় বক্তৃতা করেন। মাইজদী কোর্ট ও চৌমুহনীতেও শান্তি কমিটির অনুঞ্জণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জনাব এ, শম্পার ঘর এলাক| হইতে রাষ্ট্রবিরােধী ব্যক্তিদের নিশ্চিহ্ন করার কাজে কর্তপক্ষের সহিত পূর্ণ সহযােগিতা এবং শক্তিশালী ও গৌরবময়, পাকিস্তান গাওয়া তোলার জন্য জমণের প্রতি আহবান জানান।
মাইজদী কোর্ট ও চৌমুহনীতে শাস্তি মিছিল বাহির করা হয় । নাৱারে। তকবির আল্লাহু অকির, কায়েদে আজম জিন্দাবাদ, পাকিস্তান জিন্দাবাদ ইত্যালি শ্লোগান সহকারে মিছিল শহরের বিনুি হাইপথ প্রদক্ষিণ করে।
টিকাটুলীতে শান্তি মিটির অফিস উদ্বােধন করা হলাে ২৮ মে। এপিপি পরিবেশিত সংবাদে বলা হলাে :
| ‘কা, ২৯শে মে-এনাল এখানে পারল ইসলাম মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত এক অনুWনে খাজা কোনান দেওয়ানগঞ্জ ইউনিয়ন শান্তি কমিটি টিকাটুলী ইউনিটের অফিস উদ্ধোধন করেন। উক্ত অফিস উদ্বোধনকালে খাজা খয়েছি, পাকিস্তানের ধ্বংস করার কাজে লিপ্ত অনুপ্রবেশকাণী ও স্থানীয় অস্থাতাদের সম্পর্কে জনসাধারণকে সতর্ক করিয়া সেন। উকি শহর কালি মােস্থলেম লীগের সভাপতি ও প্রাদেশিক পরিষদের প্রাক্তন সপশ জনাব সিরাজউন হন এবং আনা ফয়েজী বখশি উক্ত সভায় ভাষণ দেন। | ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেওঁ শান্তি কমিটির তৎপরতা লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। পাকা বলা। না ।
‘টাকা, ২১শে মেগণবাড়িয়া মহকুমার নিভিন্ন অঞ্চলের শান্তি কমিটির সদস্যগণ হলথলে শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে প্রশাসনিক কর্তপক্ষের সহিত, পূর্ণ সহযােগিতা এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সম্ভাব্য সকল প্রান্ত সাহায্য করছেন।
________________________________________
এখানে স্মর্তব্য যে, পাকিস্তান মােছলেম লীগের কাউন্সিল) জনৈক কাউন্সিলার জনাব আবু নাসের এক গােপন তথ্য লাভ করিয়া স্থানীয় দেশপ্রেমিক জনসাধারণ ও পুলিশ
bার্থীদের সহযােগিতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় হানা দিয়া গােপনভাবে এক্ষিত ৬টি রাইফেল উদ্ধার করিয়াছেন। এই রাইফেলগুলি দুতিকারিগণ ফেলিয়া গিছিল। উদ্ধারকৃত রাইফেলগুলি স্থানীয় প্রশাসকের নিকট জমা দেওয়া হইয়াছে।
জনাব আবু নাসেরে এ ধরনের দেশপ্রেমমূলক কার্যকলাপে স্থানীয় শান্ত্রিগামী জনগণ। ও স্থানীয় প্রশাসক প্রশংসা করিয়াছেন । তিনি রাষ্ট্রবিরােধী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিতেছেন।
জনাৰ আৰু নাসের ইতিমধ্যে সংবাদ পত্র প্রদত্ত এক বিবৃতিতে সামরিক আইন কর্তৃপক্ষকে সাহায্য দানের জন্য দেশপ্রেমিক পাকিস্তানীদের প্রপ্তি আবেদন জানান। বিবৃতিতে তিনি আমাদের বিরাট কষ্টার্জিত পাকিস্তানের আদর্শ ও নিরাপত্তা বিধানের উদ্দেশ্যে সরকার যে প্রচেষ্টা চালাইতেছেন তপ্রতি সহায়তা প্রদানের জনাও তিনি জনসাধারণের প্রতি উপার্জ জাহান জানাইয়াছেন। মহকুমার সর্বত্র দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া ক্লাসিতেছে বলিয়া তিনি জানান।
দিলকুশা ইউনিয়নেও শান্তি কমিটি গঠন করা হলাে : পাকিস্তান শান্তি এবং কল্যাণ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মওলানা নুরুজ্জামান ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট দিলকুশা শান্তি এবং কল্যাণ কাউন্সিল’ গঠন করেন। জনাব আলীকে সভাপতি, জনাব আব্দুল মালিক এম, ইউ, সি এবিং, জনাব আব্দুল মজি এম, ইউ, সি-কে সহ, সভাপতি এবং অনাথ আমার বক্স মি, ইউ, সি কে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই সঙ্গী থেকে ইসলাম এবং পাকিস্তানের = ভানরতীয়দের বিরুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে জনগণকে যুদ্ধে সামিল হওয়ার আহবান আনানাে হয়। ভাৱতী আগ্রাসনের নিন্দা কন্ত্রে সভা থেকে বলা হয় যে, ভারত যেন বি অচিরণ প্রদর্শনের মাধ্যমে তার নিজের স্বার্থ এবং বিশ্ব শান্তি রক্ষা করে।’
এদিকে জনগণের প্রতি রংপুর শান্তি কমিটির নেতা নাসিম আহমদ উসমানী “সেনাবাহিনীর সহিত সহযােগিতার আহবান জানান। সংবাদে বলা হয় :
“ঢাকা, ৩০শে মে-বংপুর কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সেক্রেটারী ও জেলা মােছলেম আগে (কাউন্সিল) কোষাধ্যক্ষ প্রমাণ নাসিম আহমদ উসমানী এক বিবৃতিতে বুদ্ধংদেহী শীতৰ নিশা করিয়া বলেন যে, ভারত মতই মিথ্যা কাহিনী প্রচার করুক না কেন, পূর্ব আনের সেশপ্রেমিক জনগণ তাহাতে বিস্ত হইবে না। তাহারা আমাদের দেশের
ক) ও সংহতি রক্ষার জন্য আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর পশ্চাতে শরিক হওয়ার ন্য দৃঢ়প্রক্রিয়া। | বিকৃতিতে তিনি প্রসঙ্গত: বলেন যে, আমাদের সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শিখণে আনয়নের সাথে সাথে সমগ্র জেলায় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আশিয়ে এবং ভারত কর্তৃক যে প দাবী করা হইয়াছে, সেরূপ কোথাও কোনরূপ
তথেষক চিহ্নই নাই। বস্তুতঃ বেলায় সাধারণ অনুপ্রবেশকা ও তাহানের সহযোগীদের কোনরূপ স্থান দেয় নাই এবং এই ভাবে দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে তখনণাহিনীর অভিযান শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই জেলার স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ( সহায়তা করিয়াছে।
________________________________________
তিনি প্রসঙ্গত: বলেন, ভারতীয় সহযোগীরা ‘তাহাদের ইনি অসিথি হাসিলের ব্যাপারে জনসমর্থন না পাওয়ায় বেতারযােগে মিথ্যা প্রচারণায় জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করিতেছে। তিনি ভারতের এই জাতীয় মিথ্যা প্রচারণা সম্পর্কে জনগণকে সজাগ থাকার জন্য এবং আমাদের প্রিয় দেশ হইতে বাঞ্ছিত লােকদের উৎখাতকরণে জোয়ানদের পশ্চাতে ঢ়তার সহিত সহমানের জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানান।
রাজশাহীতে সেনাবাহিনী ও শান্তি কমিটির সদস্যদের যৌথ প্রচেষ্টায় জেলায় পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে বলে দাবি করা হয়। সংবাদে বলা হয় :
৩১শে মে = পাক সেনাবাহিনীর নওজোয়ানগণ যে শুধু যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী তাহাই নহে উপরন্তু সমাজকল্যাণে তাহারা একটি সেবলো দৃষ্টান্ত স্থাপন করিয়াছেন। রাহ শহরের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের রাজশাহী প্রতিনিধির সহিত আলােচনা করিতে গিয়া রাজশাহী মিউনিসিপ্যালিটির খওজা জিয়াউল আলম মােহাম্মদ ইউসুফ উপরোক্ত মন্তব্য করেন ।
অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের চরম দুষ্টতায় যথন পাকিস্তানের সংহতি বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হইয়াছিল ঠিক সেই সময়ে পাক সেনাবাহিনী যে দৃঢ়তার সহিত শত্রুর মােকাবিলা। করিয়াছেন তাহাই নহে উপবস্তু সমাজকল্যাণে আত্মনিয়ােগ করিয়া শহর ও পল্লীতে শান্তি ও শৃঙ্খলা অক্ষুণ রাখার জন্য দেশপ্রেমিক নাগরিকদের সহিত কাঁধে কাঁধ মিলাইয়া কাজ করিয়াছেন। পাক সেনাবাহিনীর নওজোয়ানদের অসীম ধৈর্য্যের ভূয়সী প্রশংসা করিয়া খগুৱাজা ইউসুফ বলেন, পাকসেনা ও শান্তি কমিটির সদস্যদের যুক্ত প্রচেষ্টায় রাজশাহী শহরের জীবনযাত্রায় পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসিয়াছে। সড়ক ও রেলপথে যােগাযােগ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হওয়ায় শতকরা ৮০ জুন তাহলের পরিবারের লােকজনসহ শহরে ফিরিয়া আসিয়াছেন। অফিল আদালতের কার্যক্রম যথারীতি চলিতেছে। ক্ষতিগ্রস্ত শহরবাসীকে সকল প্রকার সাহায্য সহযােগিতা প্রদান করা হইতেছে। রাজশাহী শহর শহরতলীর উন্নয়নের জন্য বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হইয়াছে বলিয়া তিনি জানান।
| ওয়াজা মােহাম্মদ ইউসুফ ভারতের অপপ্রচার সম্পর্কে তন্ত্র মন্তব্য করিয়া বলেন, ভাররে সকল উকানীর জবাব দিবার জন্য ব্রাঞ্জশাহীবাসী সর্বদা প্রস্তুত রহিয়াছে। তিনি বলেন, ভারতে কুকীৰ্ত্তির জবাৰ ইতিপূর্বে বহুবার দেওয়া হইয়াছে । পুনরায় যদি তাহাদে খায়েশ হইয়া থাকে তবে পাকিস্তানীরা তাহাদের খায়েশ মিটাইবার যথাবিহিত ব্যবস্থা। জরিৰে।৯৭
এ দিকে সিরাজগঞ্জে সিরাজগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির উদ্যোগে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। মাহেনশন মুসলিম লীগ নেতা এ. এন, এম, ইউসুফ এ সূ! ভণি দেন। এ সম্পর্কে দৈনিক পাকিস্তান জানালাে :
| ‘এপিপি পরিবেশিত খবরে বলা হয় যে, পূর্ব-পাকিস্তান কনভেনশন মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব এ. এন. এম. ইউসুফ পাবনা জেলার উল্লাপাড়া, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ ও বেলকুচি থানা সফর করেছেন। এই সফরকালে তিনি সেখানকান্ত শান্ত্রি কমিটির সদস্য, সরকারি অফিসার ও বিশিষ্ট শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের সাথে বৈঠকে মিলিত
মহকুমা শান্তি কমিটির উদ্যোগে সিরাজগঞ্জে আয়ােজিত এক জনসভায় তিনি ভাষণ দিয়েছেন। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান মওলানা আসাদুল্লাহ সিরাজী জনসভায় সভাপতিত্ব
________________________________________
জনাব ইউসুফ তার ভাষণে বলেন যে, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের হত্যা, লুটতরাজ ও সরকারি সম্পত্তি বিনষ্টসহ ফ্যাসিস্ট কার্যক্রমের উদ্দেশ্যই ছিল পাকিস্তানকে দুর্বল করা। তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জে তাদের ফ্যাসিস্ট কার্যক্রমের সকল রকমের চিহ্ন রয়েছে। এখন জনসাধারণ গত সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগের গৃহীত কৌশলের আসল উদ্দেশ্য অনুধাবন করতে পেরেছেন। ইসলামের পতাকাতলে সবাইকে
বন্ধ হয়ার জন্য তিনি আহবান জানান।
এ শিকে পটুয়াখালীতে শান্তি কমিটির স্যগণের তৎপরতা ও সেবার জন্য কমিটি সদস্যগণ সহজেই সেনা ও স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পটুয়াখালীতে বিপুল সংখ্যক অস্ত্রসহ দুষ্কৃতিকারী ও অনুপ্রবেশকারীদের আটক করার জন্য শান্তি কমিটির ক্লয়ারম্যান আলহাজ্ব শামসুদ্দিন শিকদার শান্তি কমিটির সদস্যদের অভিনন্দিত করেন।
বলা প্রয়ােজন যে, পাকিস্তানী সেনা শাসক ও তাদের দােসররা “মুক্তিবাহিনী তথা বাংলাদেশের স্বপক্ষীয় ব্যক্তিদেৱ দুষ্কৃতিকারী’, ‘অনুপ্রবেশকারী’, ‘ভারতীয় এজেন্ট ইত্যাদি অভিধায় অভিহিত করতাে।
এ সময় কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্যগণ বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করেন। ঢাকা ফিরে এসে এক বিবৃতিতে কুমিল্লায় দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসিতেছে’ বলে মত প্রকাশ করােন। সংবাদে বলা হলাে : | ‘ঢাকা, ৪ঠা জুন।-পাকিস্তান কাউন্সিল মােছলেম লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পূর্ণ। পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির কার্যকরী সংস্থার সিনিয়র সদস্য জনাব এ. কিউ. এম, শফিকুল ইসলাম কুমিল্লা সফর শেষে এখানে প্রত্যাবর্তন করিয়া তথায় বিরাজমান। শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক অবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করিয়াছেন।
পাঞ্জাব মােছলেম লীগের (কাউন্সিল) সাধারণ সম্পাদক খাজ্ঞা মােহাম্মদ সফদর ও পূর্ব শাকিস্থান পরিষদের সাবেক চীফ হুইপ এৱং কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সিনিয়র সদস্য জনাৰ 4. কিউ, এম, শফিকুল ইসলাম কুমিল্লা সফর শেষে এখানে প্রত্যাবর্তন করিয়া তথায় বিরাজমান শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক অবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করিয়াছেন।
পাঞ্জাব মােছলেম লীগের (কাউন্সিল) সাধারণ সম্পাদক আল মােহাম্মদ সফর ও পূর্ব পাকিস্তান পরিষদের সাবেক চীফ হুইপ এবং কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সিনিয়র সপস্য জনাব আবদুল জৰুৰ অৰণর সমভিব্যাহাৱে জনাব শফিকুল ইসলাম মিয়া ও কুমিল্লা শহরের | স্থান সফর করেন।
কুমিল্লায় অবস্থানকালে তাহারা সেখানকার জেলা শান্তি কমিটির সলম) ও অন্যান্য ww৭ণর সহিত সাক্ষাথ করিয়াছেন। রাজশাহীর পুটিয়া থানার শান্তি কমিটির তৎপরতা ও
কীয়তাৰে বুদ্ধি পায়। থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমাজউন সরকার এক বিবৃতিতে এ বিষয়টি স্পষ্ট করেন। এ সম্পর্কে পত্রিকা জানালাে।
২রা জুন।-রাজশাহী জেলার সদর মহকুমার অন্তর্গত পূটিয়া থানা শান্তি কমিটির আধারণ সম্পাদক এবং পুটিয়া ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জনাব এমাজউদ্দিন
কৰা এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় চক্রান্ত নস্যাৎ করার এবং একারীদের দমনের জন্য কাবাসী দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলিয়া উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পল্লীর সরলপ্রাণ কৃষক সমাজ পাকিস্তানের সংহতিকে মজবুত করার জন্য ভোট দিয়ছে। ভারতের কুপরামর্শে আওয়ামী
________________________________________
লীগ দেশের সংহতি বিনষ্ট কৰিৰে তাহা পূর্বে জানিতে পারিলে পরীর লক্ষ লক্ষ মানুষ কােন মতেই আওয়ামী লীগকে ভােট দিত না। জনাব সরকার আরও বলেন, পল্লীবাসীরা ভারত ও আওয়ামী লীগের দুরভিসন্ধি বুঝিতে পারিয়া ধিক্কার দিতেছে এবং ভারতীয় অপপ্রজাত্রে তত্র নিন্দা করিতেছে। | তিনি বলেন, পীর জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়া আসিতেছে। রাজশাহী জেলার বিল্যাক হটি, পুটি, বানেশ্বর, তোয়া, ঝলমলিয়া, তাহেরপুরে পূর্ব ব্যবসা-বাণিজ্য যথারীতি চলিতেছে। রাজশাহী নগরবাড়ি সড়ক পথে ই, পি, আর, টি, সির কোচ সার্ভিস ছাড়াও অসংখ্য পাবলিক, যাত্রীবাহী এবং মালবাহী বাস চলাচল করিতেছে। পীর কৃষক সমাজ কৃষি উৎপাদনে গুরুত্ব আরােপ করিয়াছে । যথারীতি চাষাবাদের কাজ চলিতেছে । পাট, আখ ও ধানের ফলন অত্যন্ত সন্তোষজনক বলিয়া জনাব সরকার জানান। তিনি আরো বলেন যে, রাজশাহীর অর্থকরী সুশল আমের ফলন যথেষ্ট পত্রিমাণে বৃদ্ধি পাইয়াছে এবং প্রচুর পরিমাণে আম, লিচু, কাঠাল হইয়াছে। চাউল নতুন ৩৫ টাকা হইতে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত প্রতিমণ ক্রয়-
বিল হইতেছে। জনাৰ সৱকাৱ পাক সেনাবাহিনীর সমবেচিত হস্তক্ষেপকে মােবারকবাদ জানান। জনাব এমাজউদ্দিন সরকার আরও বলেন যে, পল্লীর সাবৱিণ মানুষ চায় শাস্তি। সেনাবাহিনীর তৎপরতায় এবং শান্তি কমিটির প্রচেষ্টায় পল্লী অঞ্চলে পূর্ণ শান্তি ফিরিয়া আসিয়াছে। পল্লীবামীৱা পল্লী অঞ্চল হইতে দুষ্কৃতিকারীগণকে ধৃত করিয়া সামরিক বাহিনীর হস্তে সােপর্দ করিতেছে। পুটিয়া শান্তি কমিটির পক্ষ হইতে ঐ ঈন দুষ্কৃতিকারীকে স্রেফতার এবং গভীর পানির ভিতর হইতে বাক্স বােঝাই গুলী, রাইফেল, রিলহর ও বহু অগ্রশগ্ৰ উছার করিয়া সেনাবাহিনীর হস্তে সােপর্দ করিয়াছেন বলিয়া জনাৰ সরকার। জানান।
শান্তি ও স্বাভালিক অবস্থা সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করেন। সাধারণ তাহাদের জানায় যে, দেশপ্রেমিক জনগণ পাক সেনাবাহিনীৱ সময়ােচিত ব্যবস্থা গ্রহণকে অনিন্দিত করিয়াছে এবং দুতিকারীদের নিশ্চিহ্ন করার ব্যাপারে তাহারী সেনাবাহিনীকে সর্বাহাক সহযােগিতা প্রদান করিয়াছে। স্থানীয় জনসাধারণ ভারতের দূরভিসন্ধি সম্পর্কে পূর্ণ সজাগ রহিয়াছে এবং ভারতীয় বেতারের মিথ্যা প্রচারণার প্রতি কর্ণপাত না করিয়া তাহারা স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করিয়াছে। পাকিস্তানের সংহতি ও আদর্শের জন্য আহ্যয়া জান কোৱন কন্নিতে প্রস্তুত।
কুমিল্লায় শাস্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা দ্রুত ফিরিয়া আসিতেছে এবং অফিস-আদালতে নিরামিত কাজ চলিতেছে। জেলা শান্তি কমিটি কর্তৃক স্থানীয় টাউন হলে আয়ােজিত এক সভায় বক্তৃতাকালে নেতৃৰ্গ দেশপ্রেমিক জনসাধারণকে দেশের আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষা এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে কোন ভারতীয় হামলা ব্যর্থ করিয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে বীর সেনাবাহিনীর সহিত সহযােগিতা করার আহ্বান জানান।
জনাব শফিকুল ইসলাম তাহার বক্তৃতায় বলেন যে, ভারত আমাদের ঘাের শত্রু। পাকিস্তানকে হল কার না ভারত পুনঃপুনঃ চেষ্টা চালাইয়াছে। ১৯৬৫ সালে আমাদের। বই সেনাবাহিনীর হাতে পরাজিত হইয়া সম্রাজ্যবাদী ভারত প্রকাশ্যে পূর্ব পাকিস্তানের
________________________________________
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র সরবরাহ করিয়া এবং পূর্ব পাকিস্তানের পবিত্র মাটিতে অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ করিয়া পাকিস্তানের বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনগণের সহযােগিতায় আমাদের সাহসী সেনাবাহিনী ভারতের হীন উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করিয়া দিয়াছে।’৭১
এদিকে রাজশাহীতে দেশপ্রেমিক জনতা, পুলিশ এবং সিভিল প্রশাসনের সাহায্যে এবং শান্তি কমিটির সদস্যদের পূর্ণ সহযােগিতা নিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গােলা বারুদ উদ্ধার করা হয় বলে জানা যায়। রাজশাহীতে সকল ইউনিয়নে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কাজ করছি, বলে সংবাদে বলা হয়।
শান্তি কমিটির সদস্যগণ গ্রাম পরিদর্শনে যান এবং সেখানে পাকিস্তানে বিশ্বাসী। লােকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ কােেন। সংবাদে জানা যায়, শান্তি কমিটি স্বেচ্ছাবক দল তৈরি করছে, জনগণের জীবন এবং সম্পত্তি রক্ষা করছে এবং তারা দুস্কৃতিকারীদেরও আটক করছে। এর ফল হিসেবে জনগণ পুনরায় আত্মবিশ্বাস ফিরে পানে ।
পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক এ, এস, এম, ইউসুফ; পানা, শাহজাদপুর, উল্লাপাঞ্চা, বগুড়া, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, বেলকুচি, রাজশাহী, ভেড়ামারা, মিরপুর, ঝিনাইদহ, যশাের, খুলনা, মাগুরা এবং ফরিদপুর সফর করেন। তার এ সফরকালে বিভিন্ন স্থানে শান্তি কমিটি গঠিত হয়। কমিটি কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে এ, এ, এম, ইউসুফ জনগণকে সেনাবাহিনীকে পূর্ণ সহযােগিতা প্রদানের আহ্বান। আনন। গঠিত বিবরণ নিম্নরূপঃ
পাবনা জেলা শান্তি কমিটি। ক্যাপ্টেন-এস, এ, এম জায়েদী (আহবায়ক) চেয়ারম্যান সিরাজগঞ্জ থানা শান্তি কমিটি মাওলানা শফিউদ্দিন মিয়া (কনভেনশন) আহ্বায়ক। উল্লাপাড়া থানা শান্তি কমিটি : আহমদ হােসাইন (জামাত) : আহব্বায়ক হাবিবুর রহমান খান (কতেনশন) : সাধারণ সম্পাদক। কামারপন্স পলা শান্তি কমিটি : তানুমুল হোসাইন খান (কনভেনশন); আহবায়ক সিরাজগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটি। মাওলানা আসা শুন্দেলা সিরাজী (কনভেনশন); চেয়ারম্যান। গােলাম আযম (কিউ, এম, এল,); সেক্রেটারী তোফাজ্জল হােসাইন সােজার কনভেনশন): আহবায়ক। বেলকুচি থানা শান্তি কমিটি। এম. এ. জলি (কনভেনশন) : আহবায়ক। বগুড়া সদর থানা শান্তি কমিটি : ডাঃ হাবিবুর রহমান খান (কনভেনশন) ঃ আহ্বায়ক।
________________________________________
জয়পুর হাট মহকুমা শান্তি কমিটি। মাওলানা এস, এ আজি (মিষ্টি); আহবায়ক । রংপুর জেলা শান্তি কমিটি : মোঃ আমিন (কিঞ্চ, এম, এল) ; আহ্বায়ক রংপুর সদর থানা শান্তি কমিটি ; মিঃ আকমল হােসেন (কনভেনশন): আহবায়ক। ভেড়ামারা থানা শান্তি কমিটি মাওলানা এ হােসাইন | জামাত) : চেয়ারম্যান। আব্দুল মান্নান (কনভেনশন) : সাধারণ সম্পাদক। মিরপুর থানা শান্তি কমিটি : মােজাম্মেল হোসাইন খান চৌধুরী (কনভেনশন) : আহবায়ক। মাগুরা মহকুমা শান্তি কমিটি : জামিউল আলম খান (কনভেনশন) : আহায়ক। চুয়াভাঙ্গা শান্তি কমিটি : আসন্ন আলী মােল্লা (কনভেনশন) : আদায়ক। মেহেরপুর শান্তি কমিটি : সরদার আলী (কনভেনশন) : আহ্বায়ক। যশাের জেলা শাস্তি কমিটি : সৈয়দ শামসুর রহমান (ভিলিল) : আহবায়ক । সৈয়দ বদরুল আলম (কনভেনশন) সাধারণ সম্পাদক। খুলনা ভোলা শান্তি কমিটি : মাওলানা এ. কে. এম ইউসুফ, সাবেক মন্ত্রী (জামাত) : আহবায়ক। আবুল হােসাইন, সাবেক মন্ত্রী (কনভেনশন) অন্যতম সদস্য। সাতক্ষীরা মহকুমা শান্তি কমিটি : এ. গফুর (কলমেশন) : আহবায়ক। বাগেরহাট শান্তি কমিটি : ডাঃ মােজাম্মেল হক (কন,জশন) :আহ্বায়ক। খুলনা সদর থানা শান্তি কমিটি ; আইয়ুব হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক।
নারায়ণগঞ্জ বন্দর ইউনিয়ন শান্তি কমিটি ও বগুড়া জেলা শান্তি কমিটির সভা অনুষ্ঠানের সংবাদ পায়া মাৰু ‘আজাদ পত্রিকার ১১ জুন সংখ্যাষ। সভায় বক্তাগণ। ভারকের যে কোনাে স্বভূষস নস্যাৎ করার দৃঢ়সংকল্প ঘােষণা করেন। পত্রিকায় বলা
নারায়ণগঞ্জ, ৯ই জুন।গতকল্য সন্ধ্যা সাত ঘটিকায় নারায়ণগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বপাড়স্থ নালুপাড়ায় জনাব মােহাম্মদ আলী বাসভবনে বন্দর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির এক কর্মী সভা অনুষ্টিত হয়। সভায় বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটির ৫০ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন । সুন্দর ইনিয়ন শান্তি কমিটির আহবায়ক এবং নারায়ণগঞ্জ শহর মোছলেন লাখের সেক্রেটারী জনাব মােহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বক্তৃতা নককেন বিশিষ্ট
________________________________________
সমাজকর্মী জনাব মােঃ ফইজুল হক, জনাব হাবিবুর রহমান, জনাব ফজলুল হক এবং সভাপতি হয়।
তাহারা বলেন, ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুস্থানের মুখ্য কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পাক সেনাবাহিনীর সময়ােচিত হস্তক্ষেপ ও পাকিস্তানের শত্রুদের দেশ হইতে চিরতরে বিতাড়ন করায় পূর্ণ। পাকিস্তানে জনসাধারণ হিন্দুস্থানের দাসত্ব Jংখলের অভিশাপ হইতে রক্ষা পাইয়াছে। সভায় বিশ্বের বৃহত্তম মোছলেম দেশ পাকিস্তানের ঐক্য, সংহতি ও অখন্ডতা রক্ষা ও হিশুহানের সর্বপ্রকার সড়যন্ত্র নস্যাৎ করার দৃঢ়সংকল্প ঘােষণা করা হয়। সভাপতি দেশে। শান্তি ও শংখল অখুন্ন রাখার জন্য সামরিক পক্ষের সহযােগিতার আহবান জানান। তিনি শান্তি কমিটির বাণী প্রতিটি মহল্লায় ও গ্রামে পৌছাইয়া দেওয়ার এবং জনসাধারণকে অতন্দ্র প্রহার ন্যায় সজাগ থাকিতে আহ্বান জানান, যাহাকে পা-দুশমনরা জনসাধাৱণের মধ্যে কোন প্রকার বিভ্রান্তি ঔ মাটন দুটাইতে না পারে। বগুড়ায় শান্তি কমিটি সভা। বগুড়া, ৭ই জুন।-সম্প্রতি বগুড়া সেন্ট্রাল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে বগুড়া ঝোলা শান্তি কমিটির সভাপতি জনাৰ ডারী হাবিবুর রহমান ছাহেবের সভাপতিত্বে এক নিসঙ্গ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় হিন্দুস্থানের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের এবং হিন্দুস্থানের জনক অধুনালুপ্ত আওযামী লীগের দেশ বংলাক কলাপৰী এর নিন্দা ওরা হয় এবং হিন্দু হারে যে কোন আড়যন্ত্রকে
স্যা করার কঠিন সংকল্প গ্রহণ করা হয়। সভায় কমিটির সহ-সভাপতি প্রিন্সিপ্যাল মওলানা নজিলুল্লা ছাহেব ও বগুড়া জেলা জামায়াতের হলামীর আমীর ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য মওলানা আবদুর রহমান দুষ্কৃতিকারী ও বিচ্ছিতাবালীপের গণ-বিরোধী কার্যকলাপের ফিরিস্তি বর্ণনা করেন এবং পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ সহযােগিতা HTনের জন্য জনসাধারণের নিকট অনুরোধ করেন। গত ৩০শে মে অনুরূপ একটি সঙ্গী। স্থানীয় চকরিল কলােনীতে অ’ত হয়।’
কিশােরগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটি আয়ােজিত জনসভায় মােঙ্গলেহ উদ্দিনের ঘোষণা
হনণ দেশের সংহতি রক্ষাঙ্কে শেয়, রক্তবিন্দু দিতে প্রস্তুত’। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
“মহকুমা শান্তি কমিটির সভাপতি জনাব মােছলেহ উদ্দিন বলেন যে, জনগণ পাকিস্তানের সংহতি ও কল্যাণের জন্য শেষ রক্তবিন্দু দান করিয়া সগ্রাম করিতে প্রস্তুত।
এখানে মহকুমা শান্তি কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় ভাষণদান কালে তিনি উপৰােক্ত মন্তব্য করেন। তিনি পাকিস্তান বিরােধী লোকদের গুজবে কোনরূপ কর্ণপাত না করিয়া সতর্কতার সহিত দৈনন্দিন কাজ চালাইয়া যাওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানান। অধ্যাপক মাহছান উদ্দিন আহমদ, জনাব শফিকুল হােসেন, জাৰ বদিউজ্জামান প্রমুখ বক্তা বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ভাষণ দান করেন। সভায় গৃহীত এক সন্তাৰে পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি মােবারকবাদ ৮ন করা।
“রাজশাহী ও পাবনায় স্বাভাবিক অবস্থা মিবিয়া আসিতেছে” বলে মত প্রকাশ করেন। কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির অফিস সেক্রেটারী নূরুল হক মজুমদার। এপিপি পরিবেশিত সংলাপে ঠাণী :
________________________________________
‘ঢাকা, ১১ই জুন।-কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির অফিস সেক্রেটারী জনাব নূরুল হক মজুমদার ও পাবনা ও রাজশাহী জেলা সফরান্তে স্থানে প্রত্যাবর্তনের পর এক বিবৃতিতে জানান যে, সেখানে কত শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসিতেছে।
জনাব হক গতকল্য এক বিবৃতিতে বলেন যে, সরেজমিনে পরিস্থিতি অনুধাবনের উদ্দেশ্যে আমি সম্প্রতি পাবনা ও রাজশাহী সফর করি। সফরকালে তথায় আমি স্থানীয় শান্তি কমিটির সদস্য, সামরিক আইন প্রশাসক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহিত সাক্ষাৎ করি। আমি সেখানে দ্রুত শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসিতে দেখিয়াছি। অফিসঅলিলিতে নিয়মিত কাজ চলিতেছে এবং জনসাধারণ স্বাভাবিক কর্মতৎপরতা শুরু
আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক ও কর্তৃপক্ষ স্থানীয় ব্যক্তিদের সহি সাক্ষাৎ করিয়াছি। তাহা আমার স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করিয়াছেন। বিভিন্ন শ্রেণীর লােকের এক সমাবেশে আমি বক্তৃতা করিয়াছি। আমি তাহাদের বলিয়াছি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শতা আমাদের দেশে যে বিপর্যয় ঘটাইয়াছে, তাহার পুরস্কারের জন্য সকলকে আত্মনিয়ােগ কৱিত হইৰে। বহু ত্যাগের ভিত্তিতে অর্জিত পাকিস্তানকে বানচাল করার জন্য ভারতীয় কারসাজি নস্যাৎ করিয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে আমি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় মাবেলন নািইয়াছি।”
বরিশালেও শান্তি কমিটির সওা অনুষ্ঠিত হলাে বক্তাগণ ‘প্রেসিডেন্টের সময়োঠিত ন্যবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করলেন। সংবাগে বলা হলাে :
‘সম্প্রতি সদর উফর মহকুমা শান্তি কমিটির প্রেসিডেন্ট জনাব আবু হোসেনের সভাপতিত্বে গোরাংশতে এক বিরাট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাবেক পৰিষদ সদস্য মওলানা মােহাম্মন্দ কাশেম, বরিশাল শহর শান্তি কমিটির সাংগঠনিক সম্পাপ নাৰ মতিয়ুর রহমান তালুকদার প্রমুখ সভায় বক্তৃতা করেন। সভায় বক্তাগণ পূর্ব পাকিস্তানকে স্কংসের আনা আনহতীয় ম্যবাদের যুণ্য কার্যকলাপের নিন্দা করেন। | পাকিস্তানকে হুসেন হাত হইতে রক্ষার জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যে সময়োচিও ব্যবস্থা অবলম্বন করেন, সভায় তাহার স্বসিত প্রশংসা করা হয়। ৭৭
| সিলেট, পিরোজপুর এবং মুন্সীগয়ে শান্তি কমিটির ওপর ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। শান্তি কমিটি আয়ােজিত প্রতিটি সমাবেশ থেকে ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি!” উচ্চারণ করা হয়। এপিপিকে কাত করে আজাদ জানালাে :
| সিলেট, ১৫ই জুন-গতকল্য এখানে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি কর্তৃক আয়োজিত এক বিরাট সমাবেশে ভারত এ হd H৫মকদের বদ
________________________________________
ভারত ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করিয়া, আমাদের সড়ক, সেতু ধ্বংস করিয়া এবং ব্যায্য ও খাদ্য ও ওম পুণ্ঠন করিয়াছে। এই ধরনের শক ও সমাজ বিরােধী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যে বীরত্বপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়াছেন তজ্জন্য তিনি তাহাদের ককলিয়া জাপন করেন। সভার অন্যতম বা এডভােকেট জনাব জালালুদ্দীন বলেন, ভারত আমাদের আজন্ম শত্রু এবং প্রতিটি পদক্ষেপে আমাদের কাাংস করিতে উলাখ প্রহিয়াছে। তিনি প্রতিটি ইউনিয়নে শান্তি কমিটি গঠনের এবং দুস্কৃতিকারীদের উচ্ছেদের
পিৰােজপুরে শান্তি কমিটির সভা পিরােজপুর মহকুমা শান্তি কমিটির প্রেসিডেন্ট খান বাহাদুর সৈয়দ মােহাম্মদ আফজাল বিশেষ গুরুত্ব সহকারে বলেন যে, বিশেষভাবে স্কুল সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে কায়েদে আলমের আদর্শ সমান, ইক ও শংকালবােধ অনুসরণ করা আজ অত | জরুরী। গত শনিবার বানারীপাড়া অনুষ্ঠিত এক বিরাট সমাবেশে বকতালন কালে জল খান বাহর আফজল। ছাত্রসমাজকে দেশপ্রেমে উদ্ভুদ্ধ হওয়ার এবং নিজস্ব তমস্থান ও ঐতিহ্যের জন্য গর্ববােধ করার আহবান জানান। তার ও তাহার ট্রেনের দুরভিসন্ধিচালক প্রচারণার শিকার না। হওয়ার জন্য তিনি তাহাদের হুশিয়ার করিয়া দেন।
| ছাত্র-ছাত্রীদের এছলামী আদর্শ ও তমন ভিত্তিক শিক্ষা প্রদানের ব্যাপারে তিনি শিক্ষক সমাজ ও অভিভাবকদের আহ্বান জানান। জানাব আফজাল বক্তৃতাকালে আরও বলেন যে, পাকিস্তানের জনগণ আজ শক দের বিরুদ্ধে এক হই এবং এক সমৃদ্ধিশালী পাকিস্তান গঠনে সুদ্ধ হইয়াছে। তালীয় হস্তক্ষেপের নিন্দা মুন্সীগঞ্জ মহকুমার টুটপাড়া হইতে প্রাপ্ত এক খবরে প্রকাশ মতি ৰেহাক কামার খান ইউJশ শান্তি কমিটির এক সভায় পাকিস্তানের আভাস্তরীণ ব্যাপারে ভারতীয় হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন এবং দেশের সংহতি রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার উচ্ছসিত প্রশংসা
| গঙ্গায় ইতি এক প্রস্থানে দেশের অভ্যস্তুর কিংবা বাহিলের যে কোন ইন চলন্ত ধার্থ। করিয়া দেওয়ার ব্যাপারে কোন পাকিস্তানীই তাহার শেষ রক্তবিন্দু প্রদানে ইতস্ততঃ করিবে
বলিয়া দৃঢ় সংকল্পের কথা পুনরুল্লেখ করা হয়। ইউনিয়ন শান্তি কমিটির আহবায়ক জনাব রুস্তম আলী হালদার সভায় সভাপতিত্ব করেন।
এ দিকে বরিশাল থানা শান্তি কমিটির উদ্যোগে ১৫ জুন জিরপুরে অনুষ্ঠিও এক জনসভায় ভারতের জন্য কার্যকলাল ও বেআইনী আওয়ামী লীগের ভূমিকায় তার সমালােচনা করা হয়। সন্ধায় ইসলাম ও পাকিস্তানের আদর্শের ভিত্তিতে শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের দাবি জানানাে হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব আবুল হোসেন। বক্ততা দেন মতিউর রহমান তালুকদার ৭৯
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জেও শান্তি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তাগণ শক্তি বজায় রাখার আহবান জানান। এ সম্পর্কে একটি দৈনিক জানালে;
বরি, ১৯শে জুন।গত বুধবার মেহেন্দীগঞ্জ হাইস্কুল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এক বিরাট জনসভায় পাকিস্তান সেনাবাহি কর্তৃক উদ্ধারকৃত শান্তি বজায় রাখার জন্য এবং
________________________________________
অনুপ্রবেশকারী ঔ দুস্কৃতিকারীদের অহম করার জন্য উন্মসাধারণের প্রতি আহবান জানান। হয়। সভায় বিন্নি বক্তা ভারতের জন্য মিথ্যা প্রচারণার উব্র নিন্দা করেন। তাহারা বলেন যে, পাকিস্তান টিকিয়া থাকিতে আসিয়াছে এবং তাহা টিকিয়া থাকিবে। তাহারা ঘােষণা করেন যে, ভারত কোনদিনই উহার চক্রান্তে সাফল্য লাভ করিতে পারিবে না। বিভিন্ন বক্তা জবাদের প্রতি যথঃখ দৃষ্টি রাখার জন্য এবং তাহার হাতে পড়াশোনায় অভিনিবেশ করে তাহার প্রতি নজর রাখার জন্য অভিভাবকদের প্রতি কোন জমিন। ছাত্ররা আহত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যােগদান করে তাহার প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার জন্য তাহারা অভিভাবকদের প্রতি আনেন মানান। শান্তি কমিটি উদ্যোগে আয়ােজিত উক্ত সভায় সদর উওর মহকুমা প্তি কমি সব জনাব আবুল হােসেন সভাপতিত্ব করেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে জনাব এস, এম ডলিট লকিতুল্লাহ, ডক্টর মােশাররফ হোসেন, মওলানা আবদুল মান্নান, জনাব তােফাজ্জল হোসেন মিয়াজী এবং জনাৰ জলিলুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
শান্তি কমিটি আয়ােজিত ফরিদপুরের জনসভায় আওয়ামী লীগের -দফা কর্মসূচীর সমালােচনা করা হলো। সংবাদে বলা হলাে :
ফরিদপুর, ২১শে জুন।-ফরিদপুর জেলা শান্তি কমিটি এবং বালিয়াকান্দি থানা শাস্তি কমিটির উদ্যোগে বালিয়া জামালপুরে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বালিয়াকানি আনা শান্তি কমিটির আহ্বায়ক জনাব এম, এ. গফুর। সভায় ভাষণদানকারীদের মধ্যে ছিলেন জনাব কাবিলুদ্দিন, জনাব আফজাল হােসেন, মওলবী হাতিমুদ্দিন, জনাব এ, আর বকাউল।
জনাব এ, আর বাকাটল দেশের উভয় অংশের মধ্যকার বৈষম্যের কারণ এবং ভারতের সহিত যোগসঙ্গক্রমে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলিকে জোরদারকয়ে পাকিস্তানের ২ অংশের জনগণের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টির জন্য বেআইনী যােযিত্র আওয়ামী লীগের অস, উদ্দেশ্য প্রণােলিঃ প্রচেষ্টাকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দান করেন। তিনি ভারতের সম্প্রসারণবালী ভূমিম ও মিথ্যা প্রচারণা এবং সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ কৰাইয়া পাকিস্তানে আস্তরীণ ব্যাপারে উহার থানা হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেন।
জেলা শান্তি কমিটি আয়ক জনাব আফজাল হােসেন আজাদী আন্দোলনের পটভূমিকা ব্যাখ্যা করেন এবং কি পরিস্থিতির মধ্যে মুছলমানগণ পাকিস্থানের জন্য সংগ্রাম করিয়াছিলেন উহারও ব্যাখ্যা দান করেন। পাকিস্তান কায়েমের পর হইতেই ভারত উহার প্রতি শত্রতা করিয়া আসিতেছে এবং পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার যে কোন সুযােগের সন্ধ্যবহার করিতে সচেষ্ট রহিয়াছে। ভারতের যুদ্ধক্ষেত্র পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্য আদাপানি খাইয়া মাঠে নামিয়াছে বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের তথাকথিত ৬-দফার নিন্দা করিয়া বলেন যে, উক্ত দফার উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব পাকিস্থানকে বিচ্ছিন্ন করিয়া উহাকে ভারতের সামধের নিগড়ে আবদ্ধ করা।
দেশের অর্থনীতিকে সবল ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আনার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র বাহিনী ও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সহিত সহযােগিতা করার জন্য তিনি অসাধারণ উপাত্ত আহবান জানান।
গত ১৪ই জুন জেলা শান্তি কমিটির জেনারেল বডির এক বৈঠকে জেলার মানিক পারস্বতি লইয়া আলোচনা করা হয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ছাএ-হীদের প্রেরণ করার
________________________________________
জন্য অভিভাবকদের প্রতি অনুরােধ জানান হয়। ফরিদপুর জেলায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসার সঙ্গে সঙ্গে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিগণ তাহাদের স্ব-স্ব কাজে যােগদান করিয়াছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা শান্তি কমিটির উদ্যোগে ইমাম ও ওলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৬ জুন। সম্মেলনে বক্তাগণ সমাজবিরােধী কার্যকলাপ প্রতিরােধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। সংবাদপত্রে এ সম্পর্কে বলা হয় :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ১৭ই জুন-গতকল্য বিকালে স্থানীয় শহর মিলনায়তনে মহকুমা শান্তি কমিটির উদ্যোগে এক ইমাম ও উলেমা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতির আসন এহণ করেন মওলানা বজলুর রহমান। বিভিন্ন বক্তা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ইমাম ও উলেমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিশ্লেষণ কৰিয়া বলেন, বর্তমানে আমরা এক সংকটম। অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন কাটাইতেছি। এই সময়ে পাকিস্তান ও এছলামী তাহজীব ও “তমন বজায় রাখিতে হইলে ইমাম ও আলেম সমাজকে স্ব-স্ব দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হওয়া অপরিহার্য। এ প্রসঙ্গে তাহারা আরও বলেন, দেশের ঐক্য, সংহতি, শান্তি ও শৃঙ্গলা ৰাখিবার জন্য শান্তি কমিটি ও রক্ষালল গঠন করিয়া দুস্কৃতিকারীদের সমাজ ও রাবিরােধী কার্যকলাপ বন্ধ করা সকলের কণা। তাই তাহার জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। সস্তায় আলহাজ জাবি শহরাহ ও অধ্যাপক হলিলুর রহমান প্রমুখ বক্রতা করেন।
| ৰিকাৰী বাজার শান্তি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় ১০ জুন। সভাস্থ বক্তাগণ পাকিস্তানের অথত্ব রক্ষার সংকল্প ঘােথণা করেন। পত্রিকায় বলা হয় :
| মুন্সীগঞ্জ, ২৩শে জুন।গত ২০শে জুন রিকাবী বাজার ইউনিয়ন শান্তি কমিটির উদ্যোগে এক জনসভা হয়। সভায় জনাব আবদুল হাকিম বিক্রমপুরী সভাপতিত্ব করেন। সারা ইউনিয়ন শা’ কমিটির কনভেনর জনাব আবপুল আজিজ মাষ্টার যে কোন গল্প বিনিময়ে পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষার সংকল্প ঘােষণা করেন এবং জনগণকে হিন্দুস্থানী মিথ্যা প্রচারণায় কান না দিতে অনুরােধ জানান। তিনি জনগণের প্রতি অনুপ্রবেশকারী ও দুস্কৃতিকারিপথকে নির্মূল করার জন্য শান্তি কমিটির সঙ্গে পূর্ণ সহযােগিতা করার আহ্বান জানান। সভায় বক্তৃতা করেন জনাব দুদু মিয়া, জনাব নুরুল হক বেপারী, জনাব মােহাম্মদ মোছলেম মিয়া প্রমুখ। সভাপতি তাহার ভাষণে বর্তমান পরিস্থিতিতে পাক নাগরিকগণের কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করিয়া দেন। তিনি ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদীদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের। প্রতি লুব্ধ দৃষ্টিক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেন । তিনি আজাদী পূর্ব আমলে মুছলমানদের প্রতি হিন্দু আচরণের ইতিহাস তুলিয়া ধরেন এবং এখানকার অধিবাসীদের প্রতি ভারতীয় রেলের স্বরূপ উদঘাটন কলেন। বক্তাগণ অভিভাবকদের প্রতি তাহাদের ছেলেমেয়েলিশকে নিয়মিতভাবে স্কুলে পাঠানাের আহ্বান জানান। মিরকাদিম মহাজন সমিতির সম্পাদক জনাব মােছলেম মিয়া বলেন, আমরা পাকিস্তান পাইয়াছি বলিয়াই এই বন্দরে আজ মুহ্যমান ব্যবসায়ী হইতে পারিয়াছি নতুবা এই বন্দরে একজন মুছলমান ব্যবসায়ী থাকিতে রিত না।
চাঁদপুরেও শান্তি কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠক সম্পর্কে পত্রিকার বলা হয় :
“ঢাকা, ২৬শে জুন।-সম্প্রতি চাঁদপুর মহকুমা শান্তি কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এম এ সালামের সভাপতিত্বে চাঁদপুৱ সালাম মঞ্জিলে ১৫০ জন বিশিষ্ট অধ্যাপক,
________________________________________
শিক্ষক, ইমাম, ব্যবসায়ী এবং শান্তি কমিটির সদস্যবৃন্দের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সঙ|পতি শান্তি কমিটির তৎপরতা সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করেন বলিয়া কমিটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ । তিনি এই প্রসঙ্গে সরকারের প্রতি সহযোগিতা এবং থেদ্ধাসেবক বাহিনীকে সাহায্যের প্রয়ােজনীয়তা ৰাখ্যিা করেন। তিনি তীব্র ভাষায় ভারতের মিথ্যা ও অষ্টিকর প্রচারণার নিন্দা করিয়া জনগণের প্রতি সমাজ-বিরােধী ব্যক্তিদের। বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। | নালিতাবাড়িতে শান্তি কমিটির সম্রা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তাগণ ‘ক্যবদ্ধ শক্তিশালী পাকিস্তান গড়িয়া তোলার আহ্বান জানান। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
নালিতাবাড়ি, ২৬শে জুন।-সম্প্রতি নালিতাবাড়ি অভ্যর্থনা কেন্দ্র প্রাঙ্গণে এক বিরাট জনসভা হয়। উক্ত সভায় বক্তৃতা করেন স্থানীয় মহকুমা হাকিম ও নালিতাবাড়ি থানা অফিসার।
থানা অফিসার মােঃ সেরাজুল ইসলাম পাকিস্তান অঞ্জনের পটভূমি বিস্তাৱিত্ত ব্যাখ্যা করেন এবং বলেন যে, পাকিস্তান সৃষ্টির গোড়ী হইতেই ভারত তাহা মানিয়া লইতে পারে নাই। ফলে তাহাৱা নানা রকম কলা-কৌশল ও ড়যন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে। ১৯৭৫ সালে বিনা উস্কানী ও বিনা ঘােষণায় ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করে। কিন্তু সে আক্রমণের পাল্টা জবাবে হিন্দুস্থান পর্তুলপ্ত হইয়া পড়ে। অতঃপর হিন্দুস্থান নীরবে বসিয়া না থাকিয়া কিছু সংখ্যক পূর্ব পাকিস্তানী কুইসলিং লইয়া পাকিস্তানকে খণ্ড বিখণ্ড করার জন্য নূতন ঘড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী পাঠাইয়া এবং আকাশবাণীর মিথ্যা প্রচারণার সাহায্যে পাকিস্তানের ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে। তিনি বলেন কিন্তু তৎসত্ত্বেও দেশপ্রেমিক পূর্ব পাকিস্তানীদের পাকিস্তানের অখণ্ডতা ও সংহতির প্রতি বিশ্বাস অটুট রহিয়াছে । তথাকথিত বিচ্ছিন্নতাবাদী ও দুষ্কৃতিকারীদের নির্মূল করার জন্য বীর পাক সেনাবাহিনী ভারতীয় দূরভিসন্ধিকে নস্যাৎ করিয়া দেয়। দুষ্কৃতিকারীদের উদ্দেশ্য ছিল লুটতরাজ, নরহত্যা ও
ংসাত্মাক কার্যঘারা ভারতকে লাভবান করা। জনগণের আশা-আকাকার সহি তাহাদের কোন সম্পর্ক ছিল না। তিনি আরও বলেন, পাক সেনাবাহিনীর পাকিস্তানের সংহতি, সার্বভৌমত্ব, উন্না ও শান্তির জন্য কাজ করিয়া আসিতেছেন। তিনি আরও অধিকতর শক্তিশালী পাকিস্তান গড়িয়া তােলার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
| তিনি জনগণকে ভিতরকার এবং বহিরাগত সমাজবিরোধীদের সমুক্তি শিক্ষা দেওয়ার জন্য সদাসওর্ক থাকার এবং আত্মত্যাগের আহ্বান জানান।
থানা অফিসার সমাজ বিরােধ সম্পর্কে সদা সতর্ক থাকার আহ্বান জানান এবং লুটের মাল আসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
ময়মনসিংহের মাইজবাগ ইউনিয়ন শান্তি কমিটি ও জমিয়াতুল মােদাৱেছিন-এর যৌথ উদ্যোগে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভারতীয় মিথ্যা প্রচারণার তীব্র নিন্দা জানানাে হয়। পত্রিকায় বলা হয় :
মাইজবাগ (মােমেনশাহী) ২৫শে জুন সম্প্রতি আউলিয়ার চর সিনিয়র মাদ্রাহ প্রাঙ্গলে ১৭ নং মাইজবাগ ইউনিয়ন শাখা কমিটি ও জমিয়াতুল মােদাররেথিনের বুক উদ্যোগে এক বিরাট জনসভা হয়। সভায় ছাত্র-শিক্ষক সহ বই গ[AIFI্য ব্যক্তি ও বিপুলসংখ্যক লােক উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন মাওলানা আবদুল হালীম খান। বক্তৃতা করেন ইউমিান শাও কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুল গণী ও মাওলানা তাহের উশীন
________________________________________
প্রমুখ। সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে মাছ শিক্ষার উন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক নমিটি আগঠন করায় মাৰিাৱকৰালি জ্ঞাপন করা হয়। অপর প্রস্তাবে সাম্রাজানালা তার ও তালীয় প্রজ্ঞার বাহনের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নির্লজ মিথ্যা প্রচারণার তত্র নিশা করা হয় এবং সময়োপযোগী ব্যবস্থা অবলম্বনের আরা সানিজ্যিবাদী ভারতের হনি ৮৪-খের দায়ভাঙ্গা। জবাব দানের জন্য পাকিস্তানের জওয়ানদের জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট আগা মােহাম্মদ ইয়াহিয়া ও গভীর পেজে টিকা খানকে আন্তরিক মােবারকবাদ জানানাে হয়। সভায় পাকিস্তানের। সংহতি ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার কাজে আত্মনিয়ােগ করার জন্য সকলের প্রতি উদাত্র আহবান জানান হয়। অপর এক প্রস্তাণে ১৭ নং মাইজবাগ ইউনিয়নের বিভিন্ন অনৈসলামিক নামের গ্রামগুলির নতুন ইছলামী নামকরণ করা হয় এবং শান্তি কমিটির সেক্রেটারী সাহেবকে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট উহার কপি পাঠাইয়া অনুমােদনের বাবস্থা। করিতে অনুরােধ করা হয়। | এ দিকে নারায়ণগঞ্জ শহর শান্তি কমিটির সভায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-ছাত্রদেয় উপস্থিতি নিশ্চিত করে সরকারকে সহায়তা প্রদানের আহবান জানানো হয়। সংবাদে বলা। হক : নারায়নগঞ্জ, ২৭শে জুন,গত ৩ এবার এখানে নারায়ণগঞ্জ শহর শান্তি কমিটির সদস্যদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কমিটির আহবায়ক জনাব এম এ আজিজ সরদারের সভাপতিত্বে উক্ত সভায় বক্তৃতা করেন জনাৰ শহীদুল্লাহ, সাবেক এম, এল, এ জনার নঞ্জিরান আহমদ, জনাব আমির আলী ও সাবেক এম, লি. / জনাব জাহের।’
সভায় বক্তৃতাকালে বক্তাগণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আমার ব্যাপারে বিশেষত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ও শিক্ষকদের উপস্থিতির মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে সহায়তার ক্ষেত্রেও শক্তি কমিটি দায়িত্ব পালনের প্রতি গুরুত্ব আরােপ করেন।
জুলাই মাসেও অবরুদ্ধ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তি কমিটির উদ্যোগে সভা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ১১ জুলাই শান্তি কমিটির উদ্যোগে নােয়াখালীতে অনুষ্ঠিত জনসভা সুশপ্রেমিকা বলা হলো :
| নােয়াখালী, ১৭ই জুলাই (এপিপি)। – নােয়াখালী সদর মহকুমা শান্তি কমিটির উদ্যোগে গত ১১ই জুলাই চৌমুহনী হাইস্কুল মাঠে এক বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানান হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ আবদুল ওনি। অন্যান্যদের মধ্যে সভায় বক্তৃতা। ওরেন প্রধান অতিথি এবং কাউন্সিল মুসলিম লীগের ভাইস প্রেসিজে জনাব এ, কিউ, এম, শফিকুল ইসলাম। কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্য এবং প্রাক্তন চীফ হুইপ জনাব আবদুল জপার খন্দরঅধ্যাপক বন্দকার আতাউর, সদর মহকুমা শান্তি কমিটির আহবায়ক জনাব গোলাম মােস্তফা এবং এ্যাডভোকেট সৈয়দ শামসুল আলম।
পাকিস্তান সৃষ্টির অতীত ইতিহাস বর্ণনা প্রসঙ্গে জনাব শফিকুল ইসলাম বলেন যে, ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য ভারতের দশ কোটি মুসলমান ভোট দিয়েছিল, ভাষাভিত্তিক কোন রাষ্ট্র গঠনে জন্য জনগণ ভােট দেয়নি।
জনাব ইসলাম বলেন যে, পাকিস্তান সৃষ্টির গােড়া হতেই ভারত পাকিস্তানকে স্বীকার করে নিতে পারেনি। তাই সব সময়েই ভারত পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্য সচেষ্ট ছিল। কিন্তু অতীতের সকল একান্ত ব্যর্থ হয়েছে।
“
“
“
।
তিনি আরাে বলেন যে, ভাৰত অতীতের সেই উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই বেআইনী ঘােমিও আওয়ামী লীগের জন্য বাংলা’ শ্লোগানের পক্ষে সমর্থন দিয়েছিলা; যার শেষ পরিণতি হতো পূর্ব পাকিস্তানকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা। কিন্তু দেশপ্রেমিক ঔষণ এবং আমাদের নীর সেনাবাহিনীর সময়ােচিত ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে অরিত ও আওয়ামী লীগের সে চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। | জনাব ইসলাম আরাে বলেন, লাখ লাখ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে যে পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়েছিল তার অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই সেনাবাহিনীকে এরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়েছিল। তিনি আরাে বলেন যে, আমালের আভাস্তা ব্যাপারে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে লেশ্রেমিক নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়াজ তুলেছে। আজ শাজি কমিটির মাধ্যমে ভারতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য জনগণকে সংগঠিত করা হচ্ছে। পাকিস্তান সৃষ্টির ব্যাপারে নােয়াখালীর জনগণের অতি গৌরবের কথা স্মরণ করিয়ে শিরো জ+ব আবদুল জব্বার ঋদ্দিন বলেন যে, আগামীতেও নোয়াখালীর লােকদের সেইরূপ গৌরবময় ভূমিকা পালন করতে হবে।”
কুমিল্লাতেও কোতোয়ালী অ্যানাি শান্তি কমিটির উদ্যোগে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সঙ্গ সম্পর্ক দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় লেখা হলো :
| কৃমি হতে এপিপি পরিবেশিত খবরে জানা গেছে যে, কোতয়ালী থানা শান্তি কমিটির উদ্যোগে বালুতােবায় গত ১৪ই জুলাইয়ে এক বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। লনায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে থাকা শান্তি কমিটির আহবায়ক ও জেলা খালি সদস্য এনাৰ আনুল বাশার তার তী। সড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য উনিগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান। তিনি শ্রোতালের লক্ষ্য করে বলেন যে আপনাদের কোন আত্মীয়স্বজন ভারতে চলে গিয়ে থাকলে বিনা সংকোচে তাদেরকে ফিরে আসতে বলেন। কারণ তাদের পূর্ণ পুনর্বাসনের জন্য সরকার এবং শান্তি কমিটির পক্ষ হয়ে মন রকম সহযােগিতা দেওয়া হবে। এছাড়া সভায় বক্রতা করেন জনাব আলী আকবর এ00%ভাকেট, হাসমতুল্লাহ খান ও শামসুল আলম।
জুলাই মাসের শেষের দিকে শান্তি কমিটির উদ্যোগে বরিশালেও মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদে বলা হলাে : | বরিশাল (এপিপি) জেলা ও শহর শাঞ্জি কমিটির উদ্যোগে গত বার টাউন হল থেকে এক মাইল দীর্ঘ মিছিল শুরু হয়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন পেশা ও স্তরের জনগণ এই মিছিলে অংশগ্রহণ করে। মিzিলকারীরা জাতীয় পতাকা, ব্যানার, প্ল্যাকার্ভ বহন করে এবং সমন্বয়ে লা-ইলাহা ইল্লালাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুলাহ ফানি দেয়। | মিছিলকারীরা সমন্বয়ে পাকিস্তান জিন্দধাপ, কায়েদে আজম জিন্দাবাদ প্রভৃতি শ্লোগান দেয়। মিছিলের অগ্রভাগে জাতির পিতা কায়েদে আযমের ছবি টাঙিয়ে রাখা হয়। মিছিলের নেতৃত্ব দেন জেলা শান্তি কমিটির সভাপতি আননুর , মাথাবর সম্পাদক খান চৌধুরী ফজলে রৰ, শমসের আলী এJয়তােকেট, আলহাজ্ব আদম আলী এবং মতিউর রহমান। তালুকদার (সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শহর শান্তি কমিটি), জেলা শান্তি কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হােসাইন, পূর্ব পাকিস্তান নেজামে ইসলামীর যুগ। সাদক মাওলানা আব্দুল মতিন বরিশাল আইন কলেজের অধক্ষ উপনাথ দত্ত, প্রখ্যাত
________________________________________
আইন ব্যবসায়ী জিতেন্দ্রনাথ দত্ত, জেলা শান্তি কমিটির সহ-সভাপতি মাওলানা ফজলুর অহমান, এস, কে লকিত উল্যাহ, নূরুল ইসলাম শিকদার, জেলা শান্তি কমিটির সহসভাপতি শাহ নাজিবুল হক, সৈয়দ হাতেম আলী, শহর শান্তি কমিটির সহ-সভাপতি মাওলানা নাসির উদ্দিন এবং আব্দুল ওয়াহেল এ্যাডভোকেট মিজল বরিশাল টাউন হলে গিয়ে শেষ হয়।
বিকেলে শাহ মজিবুল হকের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিপুল জন সমাগম ঘটে। নাৰ শমসের আলী তার বক্তৃতায় ইন্দিরা গান্ধীকে সৰু রে পিয়ে বলেন, দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডের প্রতি দুরভিসন্ধিমূলক সমর্থন পান তার দেশের জন্যই। বুমেরাং হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ভারত কখনও পূর্ব পাকিস্তানের বন্ধু ছিলাে না। এর প্রকাশ ঘটেছে ৰিলে , কুমিরাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিরীহ লােকদের হত্যাসহ সেল। নিক্ষেপ করে।
জনাব আলী বলেন, পাকিস্তান টিকে থাকবে, পৃথিবীর কোন ক্ষমতাই পাকিস্তানঞ্চে ধ্বংস করতে পারবেনা। একশত তিরিশ মিলিয়ন মানুষের প্রতিরােধে ভারতে ৮০ান্তের বিনাশ ঘটলে। সমাবেশে আবদুর রব, মতিয়ুর রহমান তালুকদার, আজিজুল হােসাইন, গোলাম কুদুস এবং ডাঃ মােশারফ হােসেনও বক্তৃতা করেন।”৯০
অবশেষে ঢাকা শহর শান্তি কমিটি গঠিত হলাে। গত রোববার অনেক বাধার মধ্য দিয়ে ঢাকা জেলা শান্তি কমিটি ও ইউনিয়ন শান্তি কমিটির আহবায়কদের নিয়ে এক জরুরি। সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির আহবায়ক সৈয়দ খাঞ্জা খয়ের উদ্দিনের। সদ্ধাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ঢাকা শহর শান্তি কমিটির সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচিত ছন যথাক্রমে সিরাজউদ্দিন আহমেদ এবং জনাব মাহবুবুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক। নির্বাচিত হন জনাব মােঃ মনসুর আলী।
| দেশে খারাপ আবহাওয়া বিরাজ কলালে আহবায়ক ও সাধারণ সম্পাদনাথ কি নয়নের পাখি পালন করবেন সে বিষয় ব্যাখ্যা করেন কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির আহবায়ক আজা। আয়ের ডাক। মেশের অখণ্ডতা এবং সংহতি রক্ষা করার জন্য প্রত্যেক সদস্য তাদের। সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের অঙ্গীকার করেন। সভা থেকে পাকিস্তানের অখণ্ডতা ও সংহতি রক্ষার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা হয়। ঢাকা শহর শান্তি কমিটির সভা। ৩ অগাস্ট বিকেল ৪টায় আহসানউল্লাহ রােডে অনুষ্ঠিত হয় ১৯১
এদিকে কুমিল্লায় গত শুক্রবার হবিগঞ্জের নওয়াব আলী ময়দানে থানা শান্তি কমিটির উদ্যোগ এক কনসভা অনুষ্ঠিত হয়। জনসভায় শান্তি কমিটির আহবায়ক মােঃ আনওয়ার হােসেন সভাপতিত্ব করেন। দূর দূরান্ত থেকে বিভিন্ন স্তরের জনগণ পাকিস্তানের জাতির পিতার মৰি বহন করে আগে এবং মুম্ব গ্রেগান দেয় পাকিস্তান জিন্দাবাদ, কামেলে। আম জিন্দাবাদ, আলাহু আকবর বলে।
সভায় অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক এম, এন, এ জেলা শান্তি কমিটির আহবায়ক সিরাজুল হক, সাবেক এম. এন. এ সলিলুর রহমান এ্যাডভােকেট, নূরুল ইসলাম, সাবেক এম, পি, এ আব্দুস সামাদ, সাবেক এম, লি, এ চান্দপুর মহকুমা শান্তি কমিটির আহবায়ক আলী এম, এ, সালাম এবং হাজীগঞ্জ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম।
________________________________________
| আমাৰ আজিজুর রহমান তার বক্তৃতায় পাকিস্তানের উপর বিনা উস্কানীতে ভারতে আক্রমণের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, এই আক্রমণের ফলে কুমিল্লা শহরের বহু লােকের জীবন এবং ব্যক্তিগত ও নাগরিক সম্পত্তি নষ্ট হচ্ছে। তিনি পাকিস্তানের অখতা এবং সাতমৈত্ব রক্ষার জন্য এক কাতারে সবাইকে পড়াতে আহ্বান জানান এবং যে কোন মূল্যে মাতৃভূমিকা প্রতি ইঞ্চি জায়গা রক্ষার অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, যদি আমরা আলাদাভাবে দাড়াই তাহলে আমরা ব্যর্থ হলাে ।।
জনাৰ দলিলুর রহমান তার ভাষণে জনগণকে ভারতের মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হবার আহ্বান জানান। সাবেক এম, এন, এ মােঃ সিরাজুল হক তার ভাষণে বলেন,
অতি বিপুল সংখ্যক দেশমিক জনশ্রণ রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করেছে। তিনি জাতির কল্যাণের জন্য রাজাকারদের সততা ও আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করার আহবান জানান। সভাপরি বক্তব্যে আনােয়ার হোসেন দেশকে রক্ষার জন্য প্রেসিডেন্টের সময় উপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের প্রশংসা করেন।
কক্সবাজারে কক্সবাজার থানা শান্তি কমিটি কক্সবাজার শহর শান্তি কমিটি গঠিত হয়। কমিটি দুটির আহবায়ক নির্বাচিত হন যথাক্রমে মােঃ মমতাজুল হক এ্যাডভােকেট এবং নাজির আহমেদ ।।
| ‘ঢাকাতে ঢাকা শহর শান্তি কমিটির উদ্যোগে আয়ােজিত কর্মী সম্মেলনে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির আহবায়ক খাম্রা আয়ের উদ্দীন বলেন, “পাকিস্তানের সংহতি ও অখও তার জন্য কাজ করতে হবে। সভায় অধ্যাপক গোলাম সারওয়ার, সিরাজউদ্দীনসহ অন্যান্যরাও বস্থা করেন। এ সভা সম্পর্কে সংবাদপত্রে বলা হয়; | ‘গতকাল রােববার ঢাকা শহর শান্তি কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত শান্তি কমিটির কর্মী ও বিভিন্ন শাখা নেতৃবৃন্দের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির আবষক জনাব খাজা খযেৰ উদ্দীন বলেন, কিছুসংঙ্ক দুতিকারীর দুর্মের ফলে প্রকৃতপক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণেরই জান-মাল ও সম্পদের বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। তিনি এসব দু একারীর উপদ্রব চিরতরে বন্ধ করে দেয়ার জন্য জনসাধারণের প্রতি
তিনি আরাে বলেন, বাঙ্গালী মুসলমান এবং নারী মােহাজির তাদের ভোট ছাড়া পাকিস্তান অজন কমানাে সম্ভব ছিল না। বাঙলা অবস্থালী প্রশ্ন তুলে প্রত্যেক মুসলমান ভাই ভাই একথা সামনে রেখেই পাকিস্তানের সংহতি ও অশ্বগুণ্ডার ইন প্রত্যেকের কাজ করে যাওয়া উচিত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
| শান্তি কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে তিনি প্রত্যেক মহয়ায় মহল্লায় শাস্তি কমিটির কর্মীদেরকে প্রান্ত পথে পরিচালিত ও বিপথগামী লােকদের বুঝিয়ে সঠিক পথে প্রত্যাবর্তন করানাের ওপর গুরুত্ব আরােপ করেন। এবারের আজাদী শিবস পালনের শুরু সম্পর্কেও নি তা করেন। অধ্যাপক গােলাম সরওয়ার ঢাকা শহর শান্তি কমিটির সভাপতি জনাব সিরাংক্ষীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ঢাকা শহরে জামায়াতে ইসলামীর সাধাণ সম্পাদক অধ্যাপক গোলাম সরওয়ার তার
________________________________________
অকৃতায় বলেন, আজ থেকে ২৪ বছর আগে ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগষ্ট বহু ত্যাগ ও কারবানীর বিনিময়ে আমরা পাকিস্তান হাসিল করেছি। অাজাদী উত্তর ২৪ বছরে পাকিস্তান পথ সংকটের সবুখীন হয়েছে। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি যে, সাম্প্রতিককালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের সময়ােচিত পদক্ষেপে পাকিস্তান তার ইতিহাসের সহ এ সংকট কাটিয়ে উঠেছে। তিনি আরাে বলেন, পাকিস্তান টিকে থাকার জন্য জলাত করেছে এবং ইনশাআল্লাহ, চিরদিন টিকে থাকবে। দুনিয়ার কোন শক্তি একে পরাভূত কতে পারবে না।
জনাব সরওয়ার আরাে বলেন যে, পাকিস্তানকে আল্লাহ বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন । এখন এর মজবুতি ও আসল মকসুদের পথে এগিয়ে নেয়া আমাদের দায়িত্ব। পাকিস্তানকে অEW উদ্দেশ্যের পথে এগিয়ে নেয়া সম্ভব না হলে মৌখিক ঐক্য ও সংহতির বুলি নিরর্থক এলে তিনি উফেথ করেন। অধ্যাপক সৱওয়ার তার বক্তৃতায় আরাে নলেন, অন্যান্য বারের (য়ে এবার আঞ্জানী দিবস পালনের তাৎপর্য অনেক বেশি। এবার অত্যধিক গুরুত্ব সহকারে আজাদী দিবস পালনের জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। জনাব সিরাজুদ্দীন। লতাপতির ভাষণে জনাব সিরাজুদ্দীন বলেন, ভেতরের ও বাইরের উভয় প্রকার শক্রর প্রতি গত নজর রাখতে হবে। তিনি বলেন যে, বিভিন্ন এলাকার দু’চারঞ্জন দুষ্কৃতিকায়। শালিয় নাগরিকদের উত্ত্যক্ত করছে। তাদেরকে সমূলে উৎখাত করলে সকল অশাস্তির অবশান্ত হবে। তিনি আরাে বলেন যে, সেনাবাহিনী দেশের সীমান্ত রক্ষা করবে আর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্য রক্ষা করার দায়িত্ব দেশপ্রেমিক নাগরিকদের ওপরই বর্তায়।
শান্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক জনাব মনসুর আলী কতিপয় প্রস্তাব পাঠ করেন ও হল্যাপী কর্মসূচী ঘোষণা করেন। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন জনাব হাবীব করি ও জনৰ ফজলুল হক।
পাকিস্তান শান্তি এবং কল্যাণ কাউন্সিল’ পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আগামী ১৪ আগষ্ট বিকাল দুটায় পাকিস্তানের আদর্শ, অবতী এবং সার্ধেমত্ব রক্ষা এবং শাকিনের শ-দের আক্রমণ কিভাবে প্রতিহত করা যায় তা আলোচনার জন্য পল্টন Wদানে এক অনন্যা অনুষ্ঠিত হবে মহলে মােমণা করা হয়।
মতায় মৌলভী ফরিদ আহমেদ, মওলানা মোঃ নুরুজ্জামান, পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক wwপুটি স্পীকার মােহাম্মদ হামিদ, ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আলহাজ আবু নাসের আহমেদ, লামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সাবেক চেম্বার অব-কমার্সের প্রেসিডেন্ট শাহ ইমাম চিশতী এবং মওলানা হাবীবুল্লাহ বক্তৃতা করবেন বলে জানানাে হয়।
এ দিকে পাকিস্তানের ২৫তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কার্জন হলে কেন্দ্রীয় শাস্তি * আখেরিত সিম্পােজিয়ামে নক্তাগণ সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানের শুরুর মােকাবেলার Twখ আহবান জানান। সংবাদে বলা হলাে :
||কিস্তানকে যাহাৱা ‘ফংস করিতে চায় তাদের মােকাবেলা অবশ্যই করা হইবে। পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চি জমি রক্ষা করার জন্য জনগণ ও সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত রহিয়াছে। পu আজাদী দিবস উপলক্ষে গত শনিবার বিকালে কানি হলে “আজাদী বার্ষিকী
________________________________________
সম্পর্কে অনুষ্ঠিত এক সিলেঞ্জিয়ামে এই দৃঢ় মনােভাব প্রকাশ করা হয়। কেীয়ায় শান্তি কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলকৃত করেন পাকিস্তান ডেমােক্রেটিক পার্টির সভাপতি দেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ জনাব নুরুল আমীন। নূরুল আমীন পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক উজিরে আলা জনাব নুরুল আমীন কার্জন হল পরিপূর্ণ শ্রোতাদের উদ্দেশে ভাষণদানের শুরুতেই বলেন যে, আজ আজাদীর দিন, খুশীর দিন ও আনন্দের দিন। কিন্তু দেখা যাইতেছে অনেকের মন আর চিন্তায় ভারাক্রান্ত। কেননা পাকিস্তানকে বর্তমানে ইহার ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা চরম সঙ্কটের মােকাবেলা করিতে হইতেছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, পাকিস্তানকে যাহারা ভালবাসেন ও পাকিস্তানের স্থায়িত্ব কামনা করেন। তাহলে মনের ব্যথা-বেদনায় তিনি উপলব্ধি করিতে পারেন। তিনি দৃঢ়তার সহিত বলেন যে, নিরাশ হওঘার কাপণ নাই পাকিস্তানকে যাহারা হস করতে চায় তাহসের মােকাবেলা অবশ্যই করা হইবে।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন যে, জাতির এই দুর্যোগের দিনে সবাইকে অতীতের ভুলপ্রাপ্তি বিস্মৃত হইয়া একতাবদ্ধ হইতে হইবে। সবার ঈমানকে দৃঢ়তর করিতে হইবে। পাকিস্তান আন্দোলনের ইতিহাসের ব্যাখ্যা দান প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, একদিকে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ, অপর দিকে হিন্দু ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করায় আমরা জয়ী হইয়াছিলাম । উপমহাদেশের মুসলমানদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আমরা পাকিস্তান আনে সক্ষম হইয়াছিলাম।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরও বলেন যে, একটি জাতির ইতিহাসে ২৪ বৎসর কিছুই নহে। যে উদ্দেশ্যে পাকিস্তান হাসেল করা হইয়াছিল ইনশাআল্লাহ, আমরা সেই লক্ষ্যে কামিয়াব হইল। জনাব নূরুল আমীন বলেন যে, বৃহৎ শক্তি পাকিস্তানকে তাহাদের লীলাভূমিতে পরিণত করিতে চায়। কিন্তু পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের যে শক্তি রহিয়াছে, সেই শক্তির বলে খাৈলার রহমতে তাহালের মােকাবেলা করা যাইবে। গােলাম আজম। পূর্ব পাকিস্তান জামাতে এলামীর আমীর অধ্যাপক গােলাম আজম বলেন যে, পাকিস্তান টিকিয়া থাকিলে বাঙালী মুছলমানদের হক একদিন আমায় হইবে। আর যপি পাকিস্তান না। থাকে তবে বাঙালী মুছলমানদের অস্তিত্বই থাকিবে না। যাহারা এই কথাটি বুঝিতে চায় , পাকিস্তানের মাটি হইতে তাহাদের উৎখাত করিতে হইবে।
তিনি বলেন যে, আজ আজানী বার্ষিকীর গুরুত্ব যতটা উপলব্ধি করিতেছি ইতিপূর্বে। কখনও এ রকম করি নাই। মনে হইতেছে পাকিস্তান নূতন করিয়া জনুপাত করিয়াছে। পাকিস্তানকে যাহারা ভালবাসিতে চায় না তাহারা আজ ভীত ও সন্ত্রস্ত হইয়াছে বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন যে, পাকিস্তান একটি অণবাচক শব্দ। পাকিস্তান শব্দের অর্থ হইতেছে একটি পবিত্র দেশ। ২৮ বৎসর আগে এই দেশ ছিল না। বিশ্বের অনেক দেশ স্বাধীন হইয়াছে। এক সময় তাহারা পরাধীন ছিল। তখনও সেই দেশগুলি ছিল। আবার যদি
________________________________________
পৰাধীন হয় তবুও সেই দেশসমূহ থাকিবে। খোদা না করুক পাকিস্তান পরাধীন হইলে পাকিস্তান থাকিবে না। উহার অস্তিত্বই বিলীন হইয়া যাইবে।
অধ্যাপক গােলাম আজম আরও বলেন যে, যে আদর্শকে সম্মুখে রাখিয়া পাকিস্তান অন করা হইয়াছিল, উহার প্রতি আস্থা ছাড়া পাকিস্তান টিকতে পারে না। শফিকুল ইসলাম পাকিস্তান কাউন্সিল মােছলেম লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব এ, কিউ, এম, শফিকুল ইসলাম বলেন যে, হিন্দু ও মুছলমান সভ্যতার মধ্যে কোনদিন মিলন হইতে পারে না। কাজেই লক্ষ লক্ষ মুছলমানের জীবন কোরবান ও হিজরতের বিনিময়ে মুছলমানের পৃথক আবাসভূমি পাকিস্তান অর্জন করা হইয়াছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করিয়া বলেন যে, কুচক্রীমহলের ষড়যন্ত্রের ফলে গত ২৪ বৎসরে পাকিস্তানে এছলাম কায়েম করা সম্ভব হয় নাই। তিনি বলেন যে, অতীতের অভিজ্ঞতার আলােকে নূতন প্রতিশ্রুতি নিকা আমাদের অগ্রসর হইতে হইবে।
পাকিস্তানকে শক্তিশালী করিয়া তােলার জন্য তিনি এক কেন্দ্রীক সরকার গঠন, পৃথক নির্বাচন, ঢাকা ও এছলামাবলি-এই দুইটি জায়গায় দুইটি রাজধানী নির্মাণ এবং ঢাকার ৰাজধানীর নাম সলিমাবাদ রাখার দাবি জানান। ডাঃ কামাল উশীন, পিডিপি’র জনাব রফিকুল হােসেন ও জনাব আবদুল জব্বার অন্দরও এই সিম্পােজিয়ামে বক্তৃতা করেন। “চল পরিবেশন করেন জনাব আবদুল আলিম ও জনাব লুৎফর রহমান।”
_ অপরদিকে দিনাজপুর জেলা শান্তি কমিটি গঠিত হলাে আগস্ট মাসে। এপিপি পরিবেশিত খবরে বলা হয় ; দিনাজপুর মিউনিসিপ্যাল হলে এ্যাডভোকেট জনাব হাসান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার মধ্য দিয়ে দিনাজপুর জেলা শান্তি কমিটি গঠিত হয়েছে। যারা সা নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন- জেলা শান্তি কমিটির সভাপতি জনাব এম, এ, কাসেম এ্যাডভােকেট, সহসভাপতি জনাব মজিবুর রহমান ও জনাব এম, এ, ইউ, এস এ্যাডভােকেট, সাধারণ সম্পাদক মােঃ ফজলুল হক, অফিস সেক্রেটারী সদর মহকুমা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আদনাৰ এ. এস. নিয়াজুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান। আt কে জিলানী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু তাহের বর্ধমানী এবং দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হন মতিউর রহমান খান। দিনাজপুর জেলার সকল থানায় শান্তি কমিটির চেম্যান এবং অন্য দশজন করে সদস্য নির্বাচিত হয়েছে, ১৯৭
অন্যদিকে ঢাকার নাজিরা বাজার শান্তি কমিটি আয়ােজিত সভায় কেন্দ্রীয় নেতা রতীয় এজেন্টদের ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে চোখ ঘোলা রাখার আহবান জানালেন। পিপিআই লোশত সংবাদে বলা হয় ।
তাৱতীয় এজেন্টদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রতি চোখ খােলা রাখার জন্য আবেদন জাগিয়েছেন কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির আহবায়ক আজা আয়ের উদ্দিন (সংবাদ, পি, পি, আই )
গতকাল শান্তি কমিটির প্রেস কমিটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানাে হয়, নাজিরা ww :নিং সেন্টারে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নাজিরা বাজার শান্তি কমিটির উদ্যোগে আফজিত সভায় খাজা খয়ের উদ্দিন বক্তৃতা করছিলেন। রবিবার অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শান্তি কমিটির নেতা আব্দুল মতিন, মােঃ সিরাজউদ্দিন
________________________________________
এবং মােঃ আতাউল হক। আজ সাহেব বলেন, পাকিস্তানের জনগণের দৈনন্দিন জীবন যাপনের মধ্য দিয়ে দেশের মুক্তি এবং স্বাধীনতা রক্ষা করা হবে।
তিনি বলেন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ আওয়ামী লীগকে বাস্তব অবস্থা বােঝার সুযােগ দিয়েছে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারী এ বিলুপ্ত আওয়ামী লীগের নেতারা সে সুযােগ গ্রহণ করেন নি, যার ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ প্রাদেশিক স্বায়ত্ত শাসনের সুযোগ গ্রহণ করতে পারেনি। ইনাৰ আব্দুল মতিন তাৱ সভাপতির ভাষণে বলেন আজ জাতির স্বাধীনতা রক্ষার প্রশ্ন বড় হয়ে দাড়িয়েছে। তিনি বলেন, শক্রদের নিশ্চিহ্ন করতে পাকিস্তানের জনগণ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে। তিনি আরাে বলেন, কাল্পনিক ‘বাংলাদেশ’-কে ভাৱত বেশিদিন স্থায়ী করতে পারবে না। কারণ সে এটিকে গিলতে পারবে না আবার গলাতেও পারবে
নোয়াখালীর পল্লী অঞ্চলে এখলাসপুরে এ নােম্ৰাখালী সদর শান্তি কমিটির উদ্যোগে এক জনসভার আয়োজন করা হয়। সংলাপে বলা হলাে :
নােয়াখালী, ২৮শে আগস্ট। সম্প্রতি এখলাসপুরে সদর মহকুমা শান্তি কমিটি উদ্যোগে এক বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আপিলু জামান এবং ভাষণ দান করেন নােয়াখালী মােছলেম জ্যাগ শান্তি কমিটির সেক্রেটারী জনাব আবুল সুফিবান এবং অন্যান্য নেতা।
জনাব সুফিয়ান ভাষণ দানকালে পাকিস্তানের অখন্তা ও সংহতি রক্ষারে কঠোর পরিশ্রম করার জন্য রাজাকারদের প্রতি উদও আসন জানান। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চিরপুশমন ভারতের জঘন্য কার্যকলাপের তত্র নিন্দা করেন। আঃ আলিলুজ্জামান মিথ্যাবাদী দুশমনদের বেতার প্রচারণা শ্ৰণ না করিয়া নিমিতভাবে পাকিস্তান রেডিও অনুষ্ঠান শুর জন্য জনসাধারণের প্রতি আহবান জানান।
এ দিকে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানা শান্তি কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় বক্তারা বলেন, সেনাবাহিনীর সময় মতাে পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে।
জনসভায় সাবেক এম, এন, এ. এবং কুমিল্লা জেলা শান্তি কমিটির সম্পাদক আজিজুর রহমান, সাবেক এম, এন, এ, সাজেদুল হক, সামাদ, সাবেক এম, সি, ই, নুরুল ইসলাম খান, সাবেক এম, পি, এ কাজী আবুল বাসার এবং অন্যানার এক
| বক্তরা বলেন, ভারত কখনাে আমার বন্ধু ছিলাে না এবং কখনাে হবে না। প্রাক স্বাধীনতা সময়ের কথা স্বরণ করে বক্তারা বলেন, হিন্দু মহাজন এবং মিলারদের দ্বারা শােষিত মুসলমান মুসলমানদের জন্য আলাদা মাতৃভূমি পাকিস্তান সৃষ্টি করেছে। ভারত পাকিস্তান সৃষ্টি কখনাে সহ্য করেনি এবং এর জন্ম থেকেই একে নিশ্চিহ্ন করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। পাকিস্তানের অখণ্ডতা এবং সংহতি রক্ষা করার জন্য, ভারতের অসৎ কৌশল নস্যাৎ করার জন্য পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী যথাসময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।১০০।
দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ) ; থানা শান্তি কমিটির উদ্যোগে বিপুল সংখ্যক লােকের সমাগমে অনুষ্ঠিত জনসভায় যে কোন মূল্যে অখণ্ডতা, সংহতি ও পাকিস্তানি আদর্শ রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। দৌলতপুর শান্তি কমিটির আহ্যায় শাহাদাৎ হােসাইন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উনসভায় স্থানীয় নেতারা এ মত প্রকাশ করেন।১০
________________________________________
কুমিল্লা জেলার মিচন্দ্রপুন্যেও শান্তি কমিটির উদ্যোপে জলসভায় আমোজন না হয়। আয়ােজিত জনসভায় বক্তারা একত্রী ও সংহতি রক্ষার প্রশ্নে তাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা পূনর্যক্ত করে। জেলা শান্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাসার এবং এভভােকেট মােঃ শরাফত উল্লাহ, দেশকে দ্বিখণ্ডিত ক্ষয় হতে থেকে মুক্ষা করার জন্য সময় উপযােগী সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া থাকে অনিন্দন জানান। তারা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব, একতা ও সংহতি রক্ষায় জনগণকে পর্বতের মতাে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের আহবান জানান।
তারা ব্লাক্সান্যান্যদের কার্যক্রমের উচ্চ প্রশংসা করে গ্রাজাকার বাহিনীতে যােগদানের মাধ্যমে দুস্কৃতিকারী এবং ভারতীয় এজেন্টলের পাকিস্তানের পবিত্র অঙ্গন থেকে সমূলে উৎপাটন করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
মুন্সীগঞ্জের শান্তি কমিটির সভায় একতা রক্ষায় আবারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলাে। সংবাদে বলা হয় : ‘সাম্প্রতিক সময়ে দেশের একত, সংহতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়টি জনগণ পুনর্বার উচ্চারণ কন্নেছে। রিকাবীবাজার ইউনিয়ন শান্তি কমিটির উদ্যোণে অনুষ্ঠিত জনসভায় জাতীয় পরিষদের সাবেক সদস্য এবং মুন্সীগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির আহবায়ক আব্দুল হামিদ জনগণকে সকল শক্তি দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করার আহবান জানান। রিকাবীবাজার শান্তি কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল আজি মাস্টার উক্ত সভায় বক্তৃতা করেন।’
সাবেক মন্ত্রী মাে এস. এম আফজাল পিরােজপুৱের কাউখালীতে এক জনসভায় আনন্দের কাছে সহযােগিতার আর্জি পেশ করলেন। এপিপি পরিবেশিত সংবাদে বলা হয় ;
সাবেক প্রাদেশিক মন্ত্রী এবং পিরােজপুর মহকুমা শান্তি কমিটির সভাপতি মােঃ এস, এম, আফজাল শাস্তি এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করার জন্য জনগণের প্রতি আবেদন জানান।
কাউখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় তিনি বলেন, পাকিস্তান অগণিত মানুষের আত্মাৎসর্গের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে। ভারতের হিন্দু এবং বিশ্বাসঘাতকলের
সত্ত্বেও পাকিস্তান বিশ্বের মানচিত্রে ঠাই করে নিয়েছে। কিনি বলেন, ভারত ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে পাজিত হয়েছে। পাকিস্তানের অর্থনীতিকে থাংস করার জন্য তারা তাদের কৌশলের পরিবর্তন করেছে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের যুব সমায় বুঝতে পারছে না যে, নেলগুয়ে লাইন, গ্রীক, কারখানা ধ্বংস করা তাদের মঙ্গল অর্জনের পথ নয়। ভারতের কূট কৌশলের বিরুদ্ধে জনগণের অবস্থান দেয়া উচিত। তিনি বলেন মহামান্য দয়ালু রাষ্ট্রপতি সকল শ্রেণীর লােকদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘােষণা করেছেন। যে কোন ধরনের অনাচার সৃষ্টিকারী লােকদের ফিরে এসে এই সুযােগ গ্রহণ করা উচিত। তিনি বলেন, মুসলমানদের ৮ত্র ইসলামে বিশ্বাস রাখা এবং পবিত্র মাতৃভূমি রক্ষা করা।
সতায় দেশের স্বার্থে সন্তানদের স্কুল কলেজে পাঠানাের জুনা তিনি অভিভাবকদের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন ছাত্রাই দেশের ভবিষ্যত। ভারতে রেডিও থেকে মিথ্যে তা শুনতে তিনি জনগণকে নিষেধ করেন। এর আগে জনসভায় মহকুমা শাস্তি
________________________________________
কমিটির সহ-সভাপতি জিন্নাত আলী মিয়া, থানা শান্তি কমিটির সভাপতি জনাব এ. আউয়াল এবং সাধারণ সম্পাদক মােঃ রফিক বক্তৃতা করেন।১০৩
ময়মনসিংহ জেলা ও থানা শান্তি কমিটির সভায় বক্তাগণ পাকিস্তানকে রক্ষা করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিলাে । এপিপি পরিবেশিত সংবাদে বলা হলাে :
ময়মনসিংহ, গতকাল জেলা কাউন্সিল অডিটরিয়ামে ময়মনসিংহ জেলা এবং থানা শান্তি কমিটির উদ্যোগে একটি যৌথসভা অনুঞ্চিত হয়। সভায় বক্তাগণ ভারতীয় এজেন্ট ও দুতিকারীদের দ্বারা সংগঠিত আইনশশলার অবনতি ও দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলােচনা করেন। বলা ভারতীয় আসিন হতে মাতৃভূমি পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্য। বন দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেন।১০৫
কুমিল্লা এবং লাকসামে মিছিল-জনসভায় মাধ্যমে ভারতীয় আসনের বিরুদ্ধে তীব্র নিশা জাপন করা হলাে। সংবাদে বলা হলাে :
গতকাল কুমিরায় জেলা শা%ি কমিটির উদ্যোগে পাকিস্তানের পবিত্র মাটির উপর ভারতীয় আগ্রাসনের নিন্দা আপন স্বল একটি মিছিল বের করা হয়। এরপর সাবেক এম, এন, এ এবং কুমিল্লা জেলা শান্তি কমিটির আহবায়ক আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তৃতা করেন মোঃ নাসিরউদ্দিন আলি আল রশিদ এবং অন্যান্যরা। বক্তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় আগ্রাসনের নিন্দা জানান।
| মােঃ নাসির উদ্দিন সভায় বক্তৃতাকালে বলেন, পাকিস্তানের ১২ কোটি মানুষ একাত্ম হয়ে ভারতের আক্রমকে প্রতিহত করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকবে।
লাকসাম: গতকাল ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানাের লক্ষ্যে লাকসামে একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব কৱেন মােঃ জাহিদুল হক। সভায় অরিও বক্তৃতা করেন মােঃ শফিউল্যাহ, শহীদ উল্যাহ, অধ্যাপক মোঃ আলী, মাহবুবুর রহমান, নির্বাচিত এম, এম, এ, আব্দুল হাকিম। বক্তাগণ পাকিস্তানের পবিত্র মাটির প্রতি ভারতীয়দের আধিপত্যের তীব্র নিন্দা করেন এবং প্রদেশ রক্ষায় শেষ বিন্দু পর্যন্ত দেবে বলে অঙ্গীকার করেন। সংবাদে বলা হয় হাজার হাজার পায়ে হাঁটা সাধারণ মানুষেরা এই মিছিলে যোগ দেয় এবং ভারতীয় অসিনের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠে শ্লোগান দিতে থাকে।”১০০
শান্তি কমিটি আয়োজিত নােয়াখালীর জনসভায় পাকিস্তানের প্রতি ইজ্ঞি জাগা রক্ষার প্রতিজ্ঞা করা হলাে। সংবাদে বলা হলাে : | ‘কােয়াখালী, কমলমুন্সী এবং বাজার প্রতিটি অনুষ্ঠিত জনসভায় নাজিরের আক্রমণ থেকে দেশের প্রতি ইঞ্চি জায়গা রক্ষা করার জন্য জনগণ পূনবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছেন। দু’টি জনমঙ্গা জেলা শান্তি কমিটির উw্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান সাইলুল হক সভাপতিত্ব করেন।
বক্তাদের মধ্যে সিদ্দিক উল্লাহ এJTডভোকেট এবং সামশুল হক ঐতিকেট তীব্রভাবে ভারতের কংসাত্মক কার্যকলাপের নি সা জানিয়ে বলেন, পাকিস্তানের অখণ্ডতা ও সংহতি রংসের যে কোন অপচেষ্টা ব্যর্থ করার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। সভা থেকে প্রেসিডেনেটর সাধারণ ক্ষমা ঘােষণাকে অভিনন্দিত করা হয়।৯০৭ ।
________________________________________
ভারতের হুমকি মোকাবেলায় জনগণকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হলাে। সংবাদে বলা হলো;
“ফেনী, অক্টোবর ১৭ (এপিপি) ফুণারতে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় বক্তারা ভারতের গুমী মােকাবেলায় জনগণকে একতাবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
দরবার ইউনিয়ন শান্তি কমিটির প্রেসিডেন্ট মাওলানা আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। ফুলগাজী ইউনিয়ন কাউন্সিল-এর মুফতি হাবিবুর রহমান, সিতােলা ইউনিয়ন কাউলি চেয়ারম্যান মকসুদুর রহমান এবং ফুলগাজী থানা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান। সামছুদ্দিন আহমেদ বক্তৃতা করেন। ভারা ভারতের রাষ্ট্রদ্রোহী কাজের জবাব দিতে পাকিস্তান সৈন্যবাহিনী ও রাজাকারদের গৌরবজ্জ্বল ভূমিকার প্রশংসা করেন।
তারা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। তারা জাতির জন্য সকল জনগণকে সর্বোচ্চ ত্যাগ। আকারেরও আহবান জানান।০৮।
ভারতীয় অগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ঢাকাতেও হরতাল মিছিলের আয়ােজন করলাে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি : ‘মর্নিং নিউজ’-এর ২৯ নভেম্বর সংখ্যায় এ সম্পর্কে বলা
পাকিস্তানের পবিত্র মাটির উপর ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে গতকাল দিনব্যাপী কায় হরতাল, মিছিল করা হয় এনং শক্রয়ে বিপক্ষে অন্ধ যােদ্ধাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়। কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির আহ্বানে ঢাকায় গতকাল তথাকথিত যুদ্ধ এবং আধিপত্যের প্রতিবালে হতাল পালিত হয়। হরতালের সমর্থনে সকল লােকানপাট, ব্যবসা। ক্ষেত্রে, সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বাজার সব বন্ধ ছিলাে। কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করেনি। জনগণ পায়ে হেঁটে শান্তি কমিটি। আহবানে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদ করতে হরতালে যােগ দিয়েছে।
গতকাল বিকেলে মুহুর্মুহু শ্লোগানে এবং প্ল্যাকার্ড বহন করে মিছিলটি বায়তুল মােকাররম হতে গdীর বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। মিছিল থেকে ভারতীয় সিনেন্য বিরুদ্ধে শ্লেীগন দেয়া হয় ও প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানার থেকে ভারতীয় কার্যক্রমের বিরােধিতা করা হয়।
প্রধান মিছিলটির নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির আহ্বায়ক খাজা খয়ের উদ্দিন, মুসলিম লীগের (কাইয়ুম) সাধারণ সম্পাদক খান এ সবুর, জামায়াতে ইসলামের উপ আমির মাওলানা রহিম, প্রাদেশিক মন্ত্রী মােঃ এ. এম, এম সােলায়মান এবং মােঃ আখতার উদ্দিন।
শ্লোগান : মিছিলকারীরা বিভিন্ন শ্লোগানবাহী প্ল্যাকার্ড বহন করে। শ্রোনিগুলাে ছিল”ণ্ডিা খতম কর, আসাম, কলকাতা এবং দিল্লী ঘিরে ফেঞ্চল, আমাদের সৈন্যরা। পাথজীবী হউক, আওয়ামী লীগে শুন্নিা সানথান, ভারতীয় এজেট নিপাত যাক, “আমাদের যুবক ভাইয়েরা ফিরে আসুক, পাকিস্তান জিন্দাবাদ’, ‘রাশিয়া কুকুর ভারত কুর, পাকিঋনের মূল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, ‘হশিরা সাবধান”, কায়েদে আযম #শাবাদ’, ‘ভারতকে খতম কর”, “চল আমরা দিল্লী যাই, আমাদের সৈন্য জিন্দাবাদ,
________________________________________
‘পাক চায়না জিন্দাবাদ’, ‘ভারতীয় আধিপত্যের কূট-কৌশল বাতিল কর’। মিছিলকারীরা। উচ্চকণ্ঠে বললাে, “নির্গী চলাে, নিলী চলাে’।
মিছিলকারীরা কায়েদে আযম, কায়েদে মিল্লাত, প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ছবি এবং জাতীয় পতাকা বহন করছিলাে।
প্রতিমূর্তি : মিছিলকারীরা ঘােড়ার গাড়ী ও ঠেলা গাড়ীতে করে দুজন ডজন ইন্দিরাগান্ধী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শৱণ সিং এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জগজীবন রামের প্রতিমূর্তি নিয়ে যাওয়া হয়।
| পুরো মিছিলটি বায়তুল মােকাররম থেকে গুলিস্তান, নওয়াবপুর, সদরথাটি, ইসলামপুর হয়ে চকবাজারের দিকে যায়। এ সব স্থানে জনগণ তাকে স্বাগত জানায় এবং বাস ও ট্রাকে করে মিছিলে অংশগ্রহণ করে। | শান্তি নমিটির খালা খয়ের উনি, অধ্যাপক গােলাম আযম, মােঃ এম, এ, মতিন, অলি ঐকবার অন্দ, মাওলানা আশরাফ আলী এবং মোঃ এ, এস, এম সোলায়মান চুক বাজার থেকে মিছিলে নেতৃত্ব দেন এবং বলেন মাতৃভূমি রক্ষার্থে তার শেষ বিন্দু রক্ত দেবে। নেতারা পাকিস্তান সৈন্যদের প্রতি তাদের পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেন।
তাৱা আশা প্রকাশ করেন যে, জাতি বর্তমানের সকেট থেকে আরও সাহস এবং সাফল্য লাভ করবে। তারা ভারতকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাহায্য না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পাকিস্তানকে ভাঙ্গার দুষ্ট চক্রান্ত কখনও সফল হবে না। তারা আরাে বলেন, উপমহাদেশের সকল মুসলমান তাদের অবদান দিয়ে পাকিস্তান তৈরি করবে এবং যে কোন ভূল্যে এ এক সংহতি রক্ষা করবে।
শান্তি কমিটি জনগণের কাছে তাদের নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সংহতির জন্য আবেদন জানান। ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিরােধ করতে এরা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের প্রতি পূর্ণ সমর্থনও ব্যক্ত করেন।
আবেদন: বক্তাগণ আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে আবেদন জানিয়ে দেন মে ভারত যে বিপজ্জনক পথ অনুসরণ করজে তাতে বিশ্ব সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে। শান্তি কমিটির নেতারা উল্লেখ করেন যে, পাকিস্তানের গুনগণ শাস্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়ােজিত থাকলে তারা যে কোন আধিপত্যকে মোকাবেলা নাতে পান্তৰে। শান্তি কমিটির আহ্বায়ক খাজা গনাের উদ্দিন র্যালীকে সামনে রেখে পাকিস্তানকে আক্রমণ করায় বিপজ্জনক কৌশল পৰিহার গ্রার জন্য সতর্ক করেন।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের জনগণ তাদের সার্বভৌমত্ব এবং একতা যে কোন প্রকারে রক্ষা করবে। জামারে ত ইসলামীর অধ্যাপক গোলাম আযম বলেন, এটি যে আমাদের প্রদেশের উপর আক্রমণ তা নয়। এটি আমাদের অলিশ এবং বিশ্বাসের ওপর আক্রমণ, তিনি বলেন, পাকিস্তানের জনগণ মনে করছে যে, শত্রুরা ধ্বংস হবে। তিনি ইশরা গান্ধীকে এরি আধিপত্যশীল কৌশলের জন্য সতর্ক করে দেন।
মােঃ এ. এস, এম সােলায়মান ভারত সরকারের কাছে চার দফা দাবী জানান, যে গুলাের মধ্যে ছিলাে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আগ্রাসন বন্ধ করা, ভারতীয় দুস্কৃতিকারীদের দ্বারা আহতদের ক্ষতিপূরণ, পাকিস্তানে পাঠানাে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার এবং পূর্ব পাকিস্তান ও ভারত সীমান্তে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক ব্ৰাথা।
________________________________________
তিনি বলেন, যদি ভারত সরকার এই প্রস্তাব মেনে না নেয়, তাহলে যে কোন ঘটনার জন্য তারা দায়ী থাকবে। গতকাল বিকেলে মােহাম্মদপুর এবং মিপুরে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে পৃথক প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়।
মিছিলের অগ্রভাগে দোতলা বাসের চতুর্দিকে অসংখ্য ব্যানার এবং ফেস্টুন প্রদর্শিত হয়। এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন তানজিন্ন মিল্লির, আখতার আলম এবং হাশেম হাশমি। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
জনাব আতার এবং হাশেম হাশমি পাকিস্তানের কাছে মিছিলকারীদের উদ্দেশ্যে ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে একত্রিত হতে বলেন। তারা জনগৰে কাছে পাকিস্তান সৈন্যদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন দেয়ার আহ্বান জানান। মিছিলকৰিীনিৱা নিশ্বাস দেন ফাসায়। নাশী করে।১৯।
এ দিকে সশরী বাহিনীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করলাে : ঢাকা প্রবাসী নােয়াখালী শান্তি কমিটি গতকাল এক সভায় শক্রর বিপক্ষে সশন্ত্র বাহিনীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়। নির্বাচিত এম. এন. এ. এ. জে ঋণর সভায় সভাপতিত্ব করেন এনং সৱকান্তকে এই নিশ্চয়তা দেন যে, যুদ্ধ ঘােষণা ছাড়াই পাকিস্তান আক্রমণকারী ভারতকে ধ্বংস করতে সরকারকে পূর্ণ সমর্থন এবং সহযোগিতা দেয়া হবে।
| সভা থেকে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি যে ত্যালীর আয়ােজন কনেছে তার জন্য অভিনন্দন জ্ঞাপন করা হয়। সভায় ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জেও গুজবের বিপক্ষে প্রচারণা চালানাের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় করাচীতে মৃত্যুবরণকারী ইউসুফ আলী ওরফে মােহন মিয়ার মতে গভীর শােক প্রাশ করা হয় এবং বলা হয় যে তার। মৃত্যুতে জাতির অপরিসীম ক্ষতি হলাে।১১০,
________________________________________
তথ্যনির্দেশ। ১. দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ১১ এপ্রিল ১৯৭১ ২. দৈনিক পাকিস্তান, ঢাকা ১৯ এপ্রিল ১৯৭১ ৩, নৈক আজাদ, চাকা, ১৩ এপ্রিল ১৯৭১ 6. প্রাগুক্ত। ৫: দৈনিক আজাদ, ফান্স ১৮ এপ্রিল ১৯৭১ ৬, দৈনিক আয়ল, চল ১৮ এপ্রিল ১৯৭১ « দৈনিক আজল, চাকা ১৫ এপ্রিল ১৯৭১ ৮, দৈনিক আজ, U, ১৫ এপ্রিল ১৯৭১ ৯, দৈনিক মঙ্গম, ফাকা ১৬ এপ্রিল ১৯৭১ ১০, দৈনিক আজাদ, টাকা, ১৬ এল ১৯৭১ ১১. নৈক আলাপ, কা, ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ ১৯. দৈনিক আজা, চাক, ২০ এপ্রিল ১৯৭১ ১৩, দৈনিক আরমান, চাল, ২২ এফিল ১৯৭১ ১৪. সৈক আজাদ, জাকা, ২৯ এপ্রিল ১৯৭১ ১৫, দৈনিক আজা, চাকা, ২৩ এপ্রিল ১৯৭১ ১% দৈনিক আজম, দা, ২৭ এপ্রিল ১৯৭১ ১৭ দৈনিক আজলি, ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ১৯৭১ ১৮. দৈনিক অজি, ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ১৯৭১ ১৯, দৈনিক আজা, ঢাকা, ২৭ এশ ১৯৭১ ২০, দৈনিক অঞ্জলি, ঢাকা, ২ মে ১৯৭১ ২১, প্রাগুক্ত। ২২. দৈনিক আজাদ, , ৩ মে ১৯৭১ ২৩, দৈনিক আজা, চাকা, ৫ মে ১৯৭১ ২৯, দৈনিক আজাদ, চাকা, ৫ মে ১৯৭১ ২৫, দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ৫ মে ১৯৭১ ২৫, দৈনিক আজাদ, চাকা, ৫ মে ১৯৭১ ২৭, দৈনিক আজাদ, চাকা, ৬ মে ১৯৭১ ২৮, নৈশক আ৯, bন্স, ৬ মে ১৯৭১ ২৯, দৈনিক আজাদ, জাক্স, ৬ মে ১৯৭১ ৩০, দৈনিক আজ, ঢাকা, ৬ মে ১৯১ ৩১. দৈনিক আজাল, চাকা, ৭ মে ১৯৭১ ৩৪, দৈনিক আজল, চাক, ৮ মে ১৯৭১ ৩৬, দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ১০ মে ১৯৭১ ৩%, দৈনিক আজ, ঢাক, ১১ মে ১৯৭১ ৩৫. আজাদ, ঢাকা, ১৯ মে ১৯৭১ ৩% সৈনিক আজাশ, দকি, ১৯ মে ১৯৭১ ৩৭, দৈনিক আজা, ঢাকা, ১৩ মে ১৯৭১
________________________________________
ফ, দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ১৪ মে ১৯৭১ ৩৯, দৈনিক আজাদ, দ্বাঝা, ১৫ মে ১৯৭১ #, দৈনিক হল, চাকা, ১৯ মে ১৯৭১ ১. দৈনিক আজাদ, জাকা, ১৯ মে ১৯৭১ #, দৈনিক সংগ্রাম, ঢাকা ১৭ মে ১৯৭১ ৪৩, দৈণিক আজাদ, ঢা, ১৮ মে ১৯৭১ ৪৯. দৈনিক আজাদ, দা, ৯ মে ১৯৭১
৫. দৈনিক আজাদ, জাকা, ২১ মে ১৯৭১ ৪৬. দৈনিক আজাল, ঢাকা, ২১ মে ১৯৭১ ৪৭, দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ২২ মে ১৯৭১ কজি, দৈনিক সকল, সকা, ২৯ মে ১৯৭১
দৈনিক মজল, চাকা, ২৪ মে ১৯৭১ ৫০, দৈনিক আজাল, ঢাকা, ২২, মে ১৯৭১ ৫১. দৈনিক আজাল, চাকা, ২২ মে ১৯৭১ ৫৭ দৈনিক আজা, চাক, ২৯ মে ১৯৭১ ৫৩, দৈনিক আজাল, টক, ২৩ মে ১৯৭১ ৫৪, দৈনিক জাল, ঢাকা, ২৩ মে ১৯৭১
দৈনিক আজালি, ঢাকা, ২৩ মে ১৯৭১
দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ২৩ মে ১৯৭১ ৫৭ দৈনিক আজাদ, ফাক, ২৯ মে ১৯৭১
দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ২৪ মে ১৯৭১ দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ২৬ মে ১৯৭১ দৈনিক আজাদ, ঈক, ২৭ মে ১৯৭১ দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ২৯ মে ১৯৭১ দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ৩০ মে ১৯৭১ সৈনিক আজাদ, ঢাকা, ৩০ মে ১৯৭১
দৈনিক আজাদ, চাকা, ৩১ মে ১৯৭১ ৬৫, মর্নিং নিষ্ট, ঢাকা , ১ জুন ১৯৭১ ৬৬. দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ১ জুন ১৯৭১ ৬, দৈনিক আজা, চাকা, ২ জুন ১৯৭১
, দৈনিক পাকিস্তান ঢাকা, ৩ জুন ১৯৭১ ৬৯। মর্নিং নিউজ, ঢাকা ,৩ জুন ১৯৭১ 10, দৈনিক আশি, চাকা, ৪ জন ১৯৭১ ৯. দৈনিক আজাদ, সকা, ৫ ফু ১৯৭১ ৭২, মর্নিং নিউজ, ঢাকা ১ফু ১৯৭১ ৭৩, মর্নিং নিউজ, ঢাকা ১০ জুন ১৯৭১ *, দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ১১ জুন ১৯৭১ ৫. দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ১২ জুন ১৯৭১
________________________________________
৭%, দৈনিক আজ, জাকা, ১৩ জুন ১৯৭১ ৭৭, দৈনিক আজল, চাকা, ১৪ জুন ১৯৭১ ৭৮. সৈনক আশ, জন্ম, ১৬ জুন ১৯৭১
৯, দৈনিক পাকিস্তান, ঢাকা, ১৭ জুন ১৯৭৯ ৮t, দৈনিক আদাল, ফাক, ২০ জুন ১৯৭১। ৮১. দৈনিক আজল, চাকা, ২৯ জুন ১৯৭১ ৮২, দৈনিক আজাল, ঢাকা, ২৬ জুন ১৯৭১ ৮৩, সৈনিক আজা, ঢাকা, ২৮ জুন ১৯৭১ ৮6দৈনিক আজাদ, ঢাক, ২৮ জুন ১৯৭১ ৮৫. সৈনিক আজাল, চাকা, ২৮ জুন ১৯৭১ ৮% সৈনিক অলি , ঢাকা, ২৮ জুন ১৯৭১ ৮৭, দৈনিক পাকিঞ্চান, ঢাকা, ১৯ জুলাই, ১৯৭১ ৮৮, দৈনিক পাকিস্তান, চাকা, ১৯ জুলাই ১৯৭১ ‘৮, দি মর্নিং নিউজ, ঢাকা, ৩১ জুলাই ১৯৭১ ৯০, দি মণি, নিউজ, ঢাকা, ৩ আগষ্ট ১৯৭১ ৯১, দি মনিং নিউ, ঢাকা, ৩ আগষ্ট ১৯৭১ ৯২, সি মনিং নিউ, ঢাকা, ৫ আগস্ট ১৯৭১। ৯৩, দৈনিক সংগ্রাম, ঢাকা, ৯ আগস্ট ১৯৭১ ১৪, দি মুনি, নিউ, ঢাকা, ১৫ আগস্ট ১৯৭১ ১৫, দৈনিক আজাদ, জাকা, ১৬ আগস্ট ১৯৭১ ৯৬. দি মনিং মিউজ, ঢাকা, ১৯ আগস্ট ১৯৭১ ৯৭, ডি মনিং নিউজ, ঢাকা, ২৪ আগস্ট ১৯৭১ ৯৮, Hক আকন, Wা, ২৯ আগস্ট ১৯৭১ ১৯. সি মলি মউজ, ঢাকা, ৩১ আগস্ট ১৯৭১ ১০০, সি মর্নিং নিউজ, ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ১০১, সি মর্নিং নিউজ, ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ১৯৭১ ১০২, লি মনিহ, নিউজ ,ঢাকা, ৯ অর্থেীবর ১৯৭১ ১০. দি মর্নিং নিউজ, ঢাকা, ১৬ অক্টোবর ১৯৭১ ১০৮, দি মর্নিং নিউ, ঢাকা, ১৭ অক্টোবর ১৯৭১ ১০৫, সি মর্নিং নিউজ, ঢাকা, ১৮ অক্টোবর ১৯৭১ ১০৬, দি মর্নিং নিউজ, ঢাকা, ৮ অক্টোবর ১৯৭১ ১০৭ দি মর্নিং নিউজ, ঢাকা, ২৯ নভেম্বর ১৯৭১ ১০৮, দি মর্নিং নিউ, ঢাকা, ২৯ নভেম্বর ১৯৭১ ১০৯, সি মনিং নিউজ, ঝ, ২৯ নভেম্বর ১৯৭১ ১১০. পি মর্নিং নিউজ, ঢাঞ্চ, ২ ডিসেম্বর ১৯৭১
________________________________________
দ্বিতীয় অধ্যায়
রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনী : গঠন ও তৎপরতা।
বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালের পূর্বে রাজাকার, আলবদরা” বা “আলশামস’ নামের সঙ্গে তেমন পরিচিত ছিলাে না। একার আগেই এসব নামের সঙ্গে বিশেষত ‘রাজাকার নামের সঙ্গে এদেশের মানুষ সর্বাধিক পরিচিত হয়। আমরা জানি, বাঙালির সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ চলাকাল অবরুদ্ধ বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনে রাজাকার সম্পর্কে তীব্র ঘৃণা, ক্ষোভ-যন্ত্রণা যেমন ছিলাে—তেমনি ছিলাে শঙ্কা, ভয়-ভীতি আর মৃত্যু আশঙ্কা। স্বাধীনতার স্পর পরই সারাদেশ জুড়ে রাজাকার-আলবর বাহিনীর শংস অত্যাহার-নির্যাতন, নারীঅশি আর নির্মম হত্যাকাঞ্চের অবিরাখবর একের পর এক জাতীয় দৈনিক পত্রপএিকাকলিতে প্রকাশিত হওয়ার পর রাজাকার-আলকর সম্পর্কে ঘেক্ষতি, দৃণা তীব্র থেকে *ীব্রতর হয়।
| পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চ লাইট’ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশে গণহত্যা *ংসলীলা চালাবান্ন মাত্র কয়েক দিনের মাথ্যায় ৯ এপ্রিল জামাত নেতা অধ্যাপক গোলাম আজম লে. জেনারেল টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে রাজাকার বাহিনী গঠHেIHয় পরিকল্পনা পেশ করেন। অধ্যাপক গােলাম আজম পশ্চিম পাকিস্তান সফরকালে জাকার বাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা এবং তাদের হাতে অস্ত্র দেয়ার দাবি জানান।
| এ সত্য অঙ্গ প্রতিষ্ঠিত যে, একাত্তরে দক্ষিণপন্থী উগ্র ধর্মান্ধ রাজনৈতিক দলগুলির শেষত জামাতে ইসলামীর প্রত্যক্ষ সহায়তা ও তত্ত্বাবধানে রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়।
মাতে ইসলামী নেতা মওলানা এ, কে, এম, ইউসুফ ১৯৭১ সালের মে মাসে খুলনার আন জাহান আলী রােডের afflট আনসার ক্যাম্পে ৯৬ জন জামাঞ্চকর্মী নিয়ে প্রথম জাকার বাহিনী গঠন করেন। এদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের চলাচল অবাধ, নিবিড় ©, সেতু-কালভাট, রেল লাইন, সড়ক যানবাহন ইত্যাদি রক্ষা এবং মুক্তিযােদ্ধাদের পণ্ডিবিধি, অবস্থান, চলাচল ইত্যাদি বিষয়ে খবরাখবর নেয়ার জন্য রাজাকার বাহিনীকে
েলাগলো। শুধু তাই নয়-মুক্তিকামী সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরােধ-হত্যার অগিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে নস্যা নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা তাদের সেনাবাহিনীর ‘কাউটার ইন্সারজেপী’ বাহিনী হিসাবে কাজ করার জন্যও রাজাকার বাহিনীকে শহRষ্ট করে।
________________________________________
‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এদের ঐনিং দেয়া হতো। উচ্চপদস্থ রাজাকারদের ট্রেনিং মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবন সংলগ্ন মাঠ এবং ফিজিক্যাল ট্রেনিং কলেজের আলবদর হেড কোয়ার্টারের মাঠে অনুষ্ঠিত হতাে। এদের ট্রেনিং কাজ ছিলাে দেড় থেকে দুসপ্তাহ । সবাইকে সকা করা হতাে। প্রতিটি রাজাকার ব্যাচ’ ট্রেনিং গ্রহণের পর সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানাে রাজাকারদের সামনে একজন মোল্পা হাতে করে কোরান শরীফ বয়ে নিয়ে যেতেন, সেই কোরান শরীফ (য়ে ৰাজাকাররা আনুগত্য শপথ গ্রহণ করতো। শান্তি কমিটির মাধ্যমে তাদের রিকুট করা হতো এবং সামরিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে তারা পরিচালিত হতাে। সাধারণত মাদ্রাসার মােহাসে মােরসের ও দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলের সদসানের আরা রাজাকার বাহিনী গঠিত। প্রতিটি মাদ্রাসাকে রাজাকার ক্যাম্পে পরিণত করা হয়। জামাতে ইসলামীর ছাত্রফ্রন্ট ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা মােহন ইউনুসকে রাজাকার বাহিনীর সালিনায়ক করা হয় এবং ইসলামী ছাত্র সংঘের জেলা নেতৃবৃন্দকে ১০টি জেলায় রাজাকার বাহিনীর প্রধান করা হয়। রাজাকার বাহিনী সাধারণত স্থানীয় শান্তি কমিটির নেতৃত্বাধীন ছিলাে। তারা শান্তি কমিটির সভায় উপস্থিত হয়ে বক্তব্য পেশ করতাে এবং গহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে কোম্পানী কমান্ত থেকে জুনিয়র নেতৃত্ব ছিলে রাজাকারদের নেতৃত্বে। কিন্তু তার উপর সবাই ছিলাে ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা-কর্মীবৃন্দ।
আমরা জানি, মে-জুন মাসে শান্তি কমিটির উদ্যোগে প্রদেশের সর্বত্র রাজাকার বাহিনী গঠনের পর কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দ এই বাহিনীকে সরকারী স্বীকৃতি প্রদানের আনা সামরিক সরকারের কাছে আবেপন জানাতে থাকেন। এছাড়া হাফে হুজুর, মওলানা সিদ্দিক আহম, মওলানা আজিজুর রহমান মেসাৱৰ-সিহ প্রভাবশালী তথাকথিত আলেমরাও সশগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠনাে আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেন।’
এই পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানি সামরিকজান্তা আগস্ট মাসে রাজাকার বাহিনীকে আনুষ্ঠানিক সকারি স্বীকৃতি প্রদান করে। এ সম্পর্কে অবরুদ্ধ বাংলাদেশের সৈনিক পূর্বদেশ’ পত্রিকায় একটি সংবাদ পাওয়া যায়। ২২ আগষ্ট তারিখের সংখ্যায় ‘পূর্ব পাকিস্তান সরকার প্রদেশে “রাজাকার” নামে একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন সম্পকিত একটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছেন’ শিরোনামে বলা হয় :
পূর্ব পাকিস্তান রাজাকার অর্ডিন্যান্স-১৯৭১’ নামে জারীকৃত এই অর্ডিন্যান্স বলে “মানসাৱস এ্যাক্ট-১৯৪৮’বাতিল বলে বিবেচিত হবে এবং আনসার সংস্থার সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, তহবিল, দায় এবং রেকর্ডপত্র এই অডিন্যান্স জারীর পর পরই রাজাকার সংস্থায় হস্তান্তরিত হয়েছে। রাজাকার বাহিনী নিয়ােগকৃত ব্যক্তিদেরকে পূর্বপাকিস্তান সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী ট্রেনিং এবং সজ্জিত করা হবে। তাদের উপর অর্পিত ক্ষমা ও কবলে তারা মূল্পাদনা করবেন।
অর্ডিনন্সে নির্ধারিত বিধান মতে প্রাদেশিক সরকার সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সকল রাজাকার বা নির্দিষ্ট সংখ্যক রাজাকারকে প্রাদেশিক পুলিশ বাহিনীর অন্তর্ভুক্তি আদেশ দিতে পারেন। এই নির্দিষ্ট সময়েৱ মোৰ মাঝে মাঝে বাড়িয়ে দিতে পারে। এই ধরনের অস্তর পর তারা। ১৮৬১ সালের পুলিশ এক্টের অস্ত্রাতাভুক্ত হবেন।
________________________________________
“প্রাথমিকভাবে এই বাহিনীতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর লােক অন্তর্ভুক্ত হলেও তাদেরকে তিনভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রথমত : যারা পাকিস্তান ও ইসলামকে এতক্ষার জন্য বাঙ্গালী হত্যা ও মুক্তিযােদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ করাকে কর্তব্য মনে করেছিল, থিতীয়ত : যারা লুটপাট, প্রতিশােধ গ্রহণ, নারী নির্যাতন করার একটি সুযােগ গ্রহণ করতে চেয়েছিল এবং তৃতীয়ত : গ্রামের দরিদ্র অশিক্ষিত জনগণ যারা সীমান্তের এপারে চলে খেতে ব্যার্থ হয়—এ ধরনের লােককে প্রলুব্ধকরণ, বল প্রয়োগ বা ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে রাজাকার বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এদের অনেকেই যুদ্ধ চলাকালে স্বপক্ষ ত্যাগ করে। মুক্তিযােদ্ধাদের সাথে যোগ দেয়।
‘এ. এস, এম জল হককে রাজাকারলের ডাইরেক্ট নিয়ােগ করা হয়। LIাসিস্টেন্ট ভাইয়ের এম,ই, মুখ, মঞ্জি ইয়া পশ্চিম রে ভাইবোনর, এ, ঐ, হাসানজ, এ্যাসিস্টেন্ট, কেন্দ্রীয় রেঞ্জ, ফরিদ উদ্দিন ঢাকা শহর এডজুটেন্ট। পরবর্তীকালে মুহম্মদ ইউনুসকে মহাপরিচালক ও মাপ্তার-ইন-চীফ এবং মীর কাশিম আলীকে চট্টগ্রামে প্রধান করে ইসলামী ছাত্র সংঘেন্য জেলা প্রধানের রাজাকার বাহিনীর প্রধান করা হয়।’ “আলবদৰ এৰী আল শামস বাহিনী ছিল জামাত ও মুসলিম লীগের নিজস্ব বিশেম। মধাসবাদী সংগঠন।
বর্তমান জামালপুর জেলা শহরে আলবদর বাহিনী প্রথম গঠিত হয়। ‘২২শে এপ্রিল জামালপুরে পাক বাহিনীর পদার্পণের পর পরই মােমেনশাহী জেলা ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি জনাৰ মুহম্মদ আশরাফ হোসাইনের নেতৃত্বে আলবদর বাহিনী গঠিন্ধ হয়। আলবন্দর সম্পূর্ণরূপে একটা স্বেপ্রণােদিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। আল কোরআনের মহামন্ত্রে উজ্জীবিত, সত্য ন্যায় ও কল্যাণের জন্য উৎসর্গীকৃত পাকিস্তানবাদী এসব তরুণরা ভারতীয় চর, অনুপ্রবেশকারী ও দুষ্কৃতিকারীদের মােকাবেলায় অবতীর্ণ হয়।”৭।
দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার ১৬ সেপ্টেম্বর সংখ্যায় আলবদর বাহিনী গঠন বিষয়ে আনে। একটি সংবাদ পাওয়া যায়। পত্র লেখক মুহাম্মদ আবদুল বারী, ইনচার্জ, আলবদর ক্যাম্প, ইসলামপুর থানা, মােমেনশাহী ও প্রচার সম্পলক, জামালপুর মহকুমা শান্তি কমিটি, তার | চিঠিতে জানালো; ‘স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “আলবদর বাহিনীর নাম আজ স্বদেশের প্রত্যন্ত প্রস্তর লৌছে গেছে। গত ২৭ জুন জামালপুর মহকুমায় আলবদর বাহিনী গঠিত হবার পর। আজ সল্প মােমেনশাহী জেলা ও প্রদেশের আরও দু একটি জেলায় এর কাজ শুরু হয়েছে। বলে সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। আলবদর বাহিনী পাকিস্তানবাদী ইসলামপন্থী দেশপ্রেমিক। ছাত্রদের দ্বারা গঠিত। ইস্কুলের ১২ বছরের ছেলে থেকে আরম্ভ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বই ছাত্র রয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তা গােয়েন্দা বাহিনীর কর্মকর্তা সিকি গালিক লিখেছেন, সেপ্টেম্বর মাসে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে একটি রাজনৈতিক প্রতিনিধিদল জেনারেল নিয়াজীর নিকট অভিযােগ উত্থাপন করে বলে যে, জামাতী ইসলামীর নমিনিলেয় নিয়ে এই সমই বাহিনী গঠন করা হয়েছে। জেনারেল আমাকে কে নিয়ে এলেন, এখন থেকে রাজাকারদের আলশামস ও আলবদর নামে অভিহিত করা হবে যাতে তারা একই দলভুক্ত এটা কারাে মনে না আসে।
| সোনা দেখা যায় ইসলামী ছাত্র সংকে মাপকারে রূপান্তরিত করা হয় ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলােকে একত্রি করে গঠিত হয় আলিশামস বাহিনী। এ দলেও মুসলিম লীগ, জমিতিসহ মাদ্রাসা ছাত্রদের সংগঠন জমিয়তে তালাৰায়ে আরাবিয়ার প্রাধান্য ছিল। অনও ইংলদেশ ।
________________________________________
অধ্যাপক আবু সাইয়িদ তার মন্ত্রে বেশ কিছু আলকর হাইকমাতলের নাম ই পরিচয় তুলে ধরেছেন। একাত্তরে এসব নেতৃবৃন্দ বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ অসংখ্য হত্যাকারে সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন এমন তথ্য-প্রমাণ আজ সকলের নাগালের মধ্যেই বর্তমান। এসেৰে নামের মধ্যে রয়েছে-১, মতিউর রহমান নিজামী, ২. আলী আহসান মুজাহিদ, ৩, মীর কাসেম আলী, ৪, মােহাম্মদ ইউনুস, ৫, মােহাক্ষম কামরুজ্জামান কার বাহিনীর চীফ অনািইজর), ৬, আশরাফ হােসেন (বন্দর বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা ও ময়মনসিংহ জেলা এখান), 41. মােহন্দি শামসুল হক, ৮. মােস্তফা শওকঃ ইমৰান (জাক বদর বাহিনীর অন্যতম নেতা), ৯. আশরাফুমান খান ঢাকা শহর নগর বাহিনীর প্রধান ও বুদ্ধিজীবী হত্যার চাপ একজিকিউটর), ১০. আ. ম.কাস, ১১, কলার আব্দুস সালাম (ঢাকা জেলা প্রধান), ১২. সুবৱম মুরাদ, ১৩. আবদুল বারী মেলার প্রধান), ১৮. আবদুল হাই ফারুক (রাজশাহী জেলা প্রধান), ১৫. আবদুল কাহের মােহাম্মদ আবু নাসের, ১৮ মতিউর রহমান খান (খুলনা জেলা প্রধান), ১৭, চৌধুরী মঈন উদ্দিন (বুদ্ধিজীবী হত্যার অপারেশন ইনচা), ১৮. নূর মােহামূল মকি, ১৯, ই, কে, মােহাম্মদ আলী এবং ২০, মাজাহারুল ইসলাম।
মুক্তিযােদ্ধাদের চিহ্নিত বা নিশ্চিহ্ন করার নামে এসব বাহিনী গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে, নিরীহ-নিরস্ত্র বাঙালিদের নির্মমভাবে হত্যা-নির্যাতন চালিয়ে হাসের রাজত্ব কায়েম করে। নারী ধর্ষণ ছিলাে তাদের নিত্যদিনের কাজ। এই নির্যাতনের হাত থেকে শিশুকিশাের, যুবক-যুবতী, ঘরের বৌ-ঝি কেউই রেহায় পাননি। মুক্তিযােদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক সংখ্যালঘু পরিবারের ঘর-বাড়ি, সােনা-দানা, টাকা-পয়সা, সহায়-সম্পদ ভোগ দল করাকে তারা ফরজ কাজ বলে মনে করতো। বিশেষ সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের আম্প দখলে, নারী নির্মানে এই সব নাহি বাহিনীর হত্যা প্রএিহাও ছিলো নানা ধরনের। গুণ করে, বেয়োনেট দিয়ে হত্যা করা জজ
লা ইলর রাজাকার-আলবদর তাৱা ধারালাে দা বা ছুরি দিয়ে আবার কখনাে ভোতা ছুরি দিয়ে গুছিয়ে পুড়িয়ে জবাই করে হাজার হাজার মুক্তিকামী বাঙালিকে হত্যা করেছে। জবাই করার জন্য তা নিশিতানত বেছে নিয়েছিলো। স্বাধীনতার পর এসব চাঞ্চল্যকর সংবাদ জাতীয় দৈনিকগুলিতে প্রকাশিত হলেও অবরুদ্ধ বাংলাদেশে সরকাগুলিতে এসবের কিছুই জানে ছাপাতে পাৱেনি। কিন্তু সংবাদপত্রগুলি এসব বাহিনীর কর্ম তৎপরতার সংবাদ ভিন্নমাত্রা ও আঙ্গিকে প্রকাশ করেছে-যা তাদের স্বরূপ উন্মােচনে, চিহ্নিতকরণে, সুনির্দিষ্টকরণে যথেষ্ট বলেই প্রতীয়মান হবে। আমরা অবরুদ্ধ বাংলাদেশের পত্রিকাগুলি থেকে এসব বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কিছু চিত্র তুলে ধরতে পারি।
“সৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকার ৪ জুন সংখ্যায় অনুশীলন ফায়ারিং’ শিরােনামের একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। খবরে বলা হয় :
*… ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জেগে ইনিংরত রাজাকারগণ আজ (রবিবার) তাজসৈয় সুত্র আগ্নেয়াস্ত্রের অনুশীলন ফায়ারিং পরিচালনা করিবে। সকাল ৮টা হইতে বৈকাল ৪টা পর্যন্ত এই অনুশীলন ফায়ারিং পরিচালিত হইবে। কর্তপক্ষ ঘােষণা করেন যে, এই আগ্নেয়াস্ত্রে ফায়ারিং রাজাকার ইনিং-এর একটি অংশ হওয়ায় জনসাধারণের মহেতুক ভীত হওয়ার কারণ নাই।১১।
________________________________________
অধ্যাপক আবু সাইয়িদ তার মন্ত্রে বেশ কিছু আলকর হাইকমাতলের নাম ই পরিচয় তুলে ধরেছেন। একাত্তরে এসব নেতৃবৃন্দ বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ অসংখ্য হত্যাকারে সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন এমন তথ্য-প্রমাণ আজ সকলের নাগালের মধ্যেই বর্তমান। এসেৰে নামের মধ্যে রয়েছে-১, মতিউর রহমান নিজামী, ২. আলী আহসান মুজাহিদ, ৩, মীর কাসেম আলী, ৪, মােহাম্মদ ইউনুস, ৫, মােহাক্ষম কামরুজ্জামান কার বাহিনীর চীফ অনািইজর), ৬, আশরাফ হােসেন (বন্দর বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা ও ময়মনসিংহ জেলা এখান), 41. মােহন্দি শামসুল হক, ৮. মােস্তফা শওকঃ ইমৰান (জাক বদর বাহিনীর অন্যতম নেতা), ৯. আশরাফুমান খান ঢাকা শহর নগর বাহিনীর প্রধান ও বুদ্ধিজীবী হত্যার চাপ একজিকিউটর), ১০. আ. ম.কাস, ১১, কলার আব্দুস সালাম (ঢাকা জেলা প্রধান), ১২. সুবৱম মুরাদ, ১৩. আবদুল বারী মেলার প্রধান), ১৮. আবদুল হাই ফারুক (রাজশাহী জেলা প্রধান), ১৫. আবদুল কাহের মােহাম্মদ আবু নাসের, ১৮ মতিউর রহমান খান (খুলনা জেলা প্রধান), ১৭, চৌধুরী মঈন উদ্দিন (বুদ্ধিজীবী হত্যার অপারেশন ইনচা), ১৮. নূর মােহামূল মকি, ১৯, ই, কে, মােহাম্মদ আলী এবং ২০, মাজাহারুল ইসলাম।
মুক্তিযােদ্ধাদের চিহ্নিত বা নিশ্চিহ্ন করার নামে এসব বাহিনী গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে, নিরীহ-নিরস্ত্র বাঙালিদের নির্মমভাবে হত্যা-নির্যাতন চালিয়ে হাসের রাজত্ব কায়েম করে। নারী ধর্ষণ ছিলাে তাদের নিত্যদিনের কাজ। এই নির্যাতনের হাত থেকে শিশুকিশাের, যুবক-যুবতী, ঘরের বৌ-ঝি কেউই রেহায় পাননি। মুক্তিযােদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক সংখ্যালঘু পরিবারের ঘর-বাড়ি, সােনা-দানা, টাকা-পয়সা, সহায়-সম্পদ ভোগ দল করাকে তারা ফরজ কাজ বলে মনে করতো। বিশেষ সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের আম্প দখলে, নারী নির্মানে এই সব নাহি বাহিনীর হত্যা প্রএিহাও ছিলো নানা ধরনের। গুণ করে, বেয়োনেট দিয়ে হত্যা করা জজ
লা ইলর রাজাকার-আলবদর তাৱা ধারালাে দা বা ছুরি দিয়ে আবার কখনাে ভোতা ছুরি দিয়ে গুছিয়ে পুড়িয়ে জবাই করে হাজার হাজার মুক্তিকামী বাঙালিকে হত্যা করেছে। জবাই করার জন্য তা নিশিতানত বেছে নিয়েছিলো। স্বাধীনতার পর এসব চাঞ্চল্যকর সংবাদ জাতীয় দৈনিকগুলিতে প্রকাশিত হলেও অবরুদ্ধ বাংলাদেশে সরকাগুলিতে এসবের কিছুই জানে ছাপাতে পাৱেনি। কিন্তু সংবাদপত্রগুলি এসব বাহিনীর কর্ম তৎপরতার সংবাদ ভিন্নমাত্রা ও আঙ্গিকে প্রকাশ করেছে-যা তাদের স্বরূপ উন্মােচনে, চিহ্নিতকরণে, সুনির্দিষ্টকরণে যথেষ্ট বলেই প্রতীয়মান হবে। আমরা অবরুদ্ধ বাংলাদেশের পত্রিকাগুলি থেকে এসব বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কিছু চিত্র তুলে ধরতে পারি।
“সৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকার ৪ জুন সংখ্যায় অনুশীলন ফায়ারিং’ শিরােনামের একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। খবরে বলা হয় :
*… ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জেগে ইনিংরত রাজাকারগণ আজ (রবিবার) তাজসৈয় সুত্র আগ্নেয়াস্ত্রের অনুশীলন ফায়ারিং পরিচালনা করিবে। সকাল ৮টা হইতে বৈকাল ৪টা পর্যন্ত এই অনুশীলন ফায়ারিং পরিচালিত হইবে। কর্তপক্ষ ঘােষণা করেন যে, এই আগ্নেয়াস্ত্রে ফায়ারিং রাজাকার ইনিং-এর একটি অংশ হওয়ায় জনসাধারণের মহেতুক ভীত হওয়ার কারণ নাই।১১।
________________________________________
“ঢাকা, ৩রা জুলাই (এপিপি)—আগামীকাল রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেঞ্জ ট্রেনিংরত রাজাকার বাহিনী অনুশীলন গ্রহণ করবে। সকাল ৮টা মেনে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুশীলন চলবে। কর্তৃপক্ষ ঘােষণা করেছেন যে, রাজাকারদের অনুশীলনের অংশ হিসেবে পােলাঙ্গুলি ছোড়া হবে। জনসাধারণ যেন অহেতুক এতে সধান্ত না হন।
ফুলপুরে রাজাকারদের ট্রেনিং সমাপ্ত’ শিরােনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় “দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার ১০ জুলাই সংখ্যায় । সংবাদে বলা হলো :
ঢাকা, ৯ই জুলাই (এপিপি)।-ফুলপুর থানা ঐনিং ও উন্নয়ন কেন্দ্রের মাঠে ১৬০ জন রাজাকার-এর এক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এরা সকলেই সাত দিনের ট্রেনিং শেষ করেছেন। এই অনুষ্টানে এনিংপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ছাড়াও শান্তি কমিটির সদস্য, ইউনিয়ন কাউন্সিলসমূহের চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ এবং বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ১৬০ জন রাজাকারকে সাটিফিকেট প্রদান করা হয়। এছাড়া দু’জন রাজাকারকে এঁদের কৃতিত্ব ও কর্তব্যনিষ্ঠার জন্য নগদ টাকা পুরস্কার দেয়া হয়।
ফুলপুর থানা থেকে মােট সাড়ে দু’শ রাজাকার মনােনীত করা হয় এবং এদের সকলকেই ট্রেনিং দেয়া হবে। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানটি পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ ‘কায়েদে আজম জিন্দাবাদ’ ও ‘পাকিস্তানের সংহতি জিন্দাবাদ’ শ্লোপানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।”১৫
কুষ্টিয়া জেলাতেও মােজাহিদ ও রাজাকারদের আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হলাে। সংবাদে বলা হলাে :
কুষ্টিয়া, ১৬ই জুলাই(এপিপি)-গতকাল সকালে এখানে রাজাকার ও মােজাহিদদের আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াক ইউনাইটেড স্কুল এগ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক সরকারি কর্মচারী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ বিরাট জনতা অনুষ্ঠানটি প্রত্যক্ষ করেন। জেলা শান্তি কমিটির সভাপতি জনাব সাদ আহমদ মুয় দুই সহস্রাধিক রাজাকারের অভিবাদন গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রসঙ্গে জান সাল আহমেদ রাজাকারদের স্বেচ্ছামূলক কাজ এবং ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে তাদের কর্মতৎপরতার প্রশংসা করেন। তিনি তাদের পর্বত প্রমাণ দৃঢ়তা নিয়ে শত্রুপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তায় এগিয়ে আসতে হন জানান।
আতপয় রাজাকার শান্তি কমিটির সদস্যবর্গ এবং জনতার একটি বিরাট অংশ এক শােভাযাত্রা বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলাে ধ্বণি কােন। তারা পাকিস্তান। জিন্দাবাদ, কায়েদে আজম জিন্দাবাদ ধ্বনি দেন। রাজাকার ও মােজাহিদ|ণ দুষ্কৃতিকারীদের উৎখাত কত্রে জনসাধারণের নৈতিক মনােবল বৃদ্ধির কাজে সাহায্য করছে। দৈনিক শত শত লোক রাজাকার বাহিনীতে যােগদানের উদ্দেশ্যে নিজেদের নাম তালিকাভুক্ত করছে। এবং তারা রাষ্ট্রদ্রোহী, সমাজ বিরােধী ও ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাশকে নস্যাৎ করতে সতত চেষ্টিত।
সামরিক ট্রেনিং শেষে রাজাকাররা গ্রামে গিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের সহায়তায় এবং জীবনে স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে ডিকেল পাটি গঠন কাছে। তারা অবাহিত এবং অতি পরিচয় ব্যক্তিদের প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছেন যাতে কোনরূপ ংসাত্মক কার্যকলাপ ন| ঘটতে পাবেঃ *১৬
________________________________________
জুলাই মাসেই জেনারেল নিয়াজী টাঙ্গাইল, শেরপুর ও হালুয়াঘাট সফর করেন। এ সমা। তিনি রাজাকাৰলের সসে সাক্ষাৎ করেন। সংবাগে বলা হয় ।
“পূর্বাঞ্চল কমাণ্ডের কমাণ্ডার এবং ‘খ’ অঞ্চলের সহকারী সামরিক আইন পরিচালক লে: জেনারেল এ. এ, কে, নিয়াজী গতকাল শনিবার টাঙ্গাইল, শেরপুর (জামালপুর) ও হালুয়া ভাট (ময়মনসিংহ) সফরকালে সেনাবাহিনী এবীয় এলাকায় আইন শখলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সাহায্যকারী শান্তি কমিটিসমূহের সদস্যদের সহিত সাক্ষাৎ করেন। বলিয়া গতকাল এপিলি পরিবেশিত খবরে প্রকাশ।
জি ও সি কে সঙ্গে নিয়া জেনারেল নিয়াজী প্রত্যেক স্থানে বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সহিতও সাক্ষাৎ করেন। স্থানীয় কর্মকর্তাগণ জেনারেলকে বলেন যে, জনগণ বিপুল সংখ্যায় রাজাকার হিসাবে নিজেদের নাম তালিকাভুক্ত করিতেছে। তাহাদের ট্রেনিং এলান ও অগ্রগঞ্জি খুলা হইতেছে। ট্রেনিংপ্রাপ্ত রাজাকার খিলট সেতুগুলি পাহারা। দেয় এবং গােলযোগ সৃষ্টিকারীদের খুঁজিয়া বাহির করার ব্যাপারে আইন প্রয়ােগকারী এজেন্সীগুলিকে সাহায্য করে। জেনারেল নিয়াজী ট্রেনিং, গ্রহণরত কতিপয় রাজাকারের সহিত সাক্ষাৎ করেন।
শেরপুরে ১৫ সহস্রাধিক লােকের একটি উৎফুল্ল জ্বলন্ত দেশাত্মবােধক শ্লোগান দিয়া সহকারি সামরিক আইন পরিচালককে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করে। তাহারা জাতীয় পতাকা বহন এবং পাকিস্তানের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার দৃঢ় সঞ্চয় প্রকাশ করে। শেরপুর সার্কেলের পক্ষ হইতে শান্তি কমিটি জেনারেল নিয়াজীকে একটি মানপত্র প্রদানের পর বিশিষ্ট নাগরিকগণ তাহাদের বক্তৃতায় পাকিস্তানের অখণ্ডতা ও সংহতি বক্ষার জন্য সশস্ত্র নাহিনীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
মনিপলের জন্যে কেনারেল নিয়াজী তাহাদের দেশাত্মবােধক চেতনা ও দৃঢ়সংকল্পের প্রশংসা করেন। সর্শ বাহিনীর ভূমিকার উল্লেখ করিয়া জেনারেল নিয়াজী বলেন, ভিতরের ও বাহিরের বিপদ হইতে দেশকে রক্ষা করা সশস্ত্র বাহিনীর মৌল দায়িত্ব। সাম্প্রতিক বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন দমন করিয়া তাহারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করিয়াছেন। সভার পর জেনারেল নিয়াজী গাড়িতে চড়িয়া শহর প্রদক্ষিণ ও শেৱপুর রাজাকার ট্রেনিং শিবির
পূর্বাহে ডে-রেল নিয়া! টাঙ্গাইলে অবতরণ করেন। তার আইন ও মলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রহিয়াছে বলিয়া তাহাকে জানানাে হয়। জেনারেল নিয়াজী টাঙ্গাইলে শান্তি কমিটিসমূহের সশসা এবং রাজাকারদের সহিত সাক্ষাৎ করেন।
হালুয়াঘাটে জেনারেল নিয়াজীকে বলা হয়, যােগাযােগের ব্যবস্থা ব্যাহত এবং 18″প্রয় নাগরিকদের হয়রানি কত্ৰাৰ কন্য সম্প্রতি ¥ংসাত্মক কামালনকা] কতিপয় ব্যক্তি সীমান্তের অপর পার হইতে পাকিস্তানী ভূখণ্ডে অনুপ্রেবেশের চেষ্টা করে, তিরােধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে উক্ত এলাকায় ব্যাপক টহলদানের ব্যবস্থা করা হইয়াছে। কেনারেল নিয়াজী হালুয়াঘাটে সৈন্যদের সহিত কথাবার্তা বলেন না, তাহদের ভালমন্দ সম্পর্কে ঘেঁজ-খবর নেন। তিনি অপরাহ্নে ঢাকা প্রত্যাবর্তন করেন।”১৭
রাজাকারদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করলেন কুমিল্লার এড়িভােকেট আলী আকবর। “পূর্বদেশ” এ সম্পর্কে জানালাে :
________________________________________
‘কুমিল্লা, ১৯শে জুলাই (এপিপি) এখানকার খ্যাতনামা এ্যাডভােকেট জনাব আলী আকবার যুবকদের কাবিত হয়ে রাজাকার বাহিনীতে যােগদান করতে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি কুমিল্লা জেলা শান্তি কমিটির একজিকিউটিভ বডির সদস্য। তিনি বলেন যে দেশ থেকে দুস্কৃতিকারী ও ভারতীয় এজেন্টদের বিনষ্ট করার ব্যাপারে দেশপ্রেমিক যুবকেরা সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য শান্তি রক্ষী বাহিনীকে পূর্ণ সহযােগিতা প্রদানে বদ্ধপরিকর। তিনি আরও বলেন যে, যুবক সমাজ রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করার ফলে, কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে উদ্বুদ্ধ কৱেছে।”৮ |
সংহতি রক্ষার জন্য রাজাকারদের প্রতি আহবান জানালেন যশােরের ডেপুটি সাব মার্শাল ল এ্যাডমিনিস্ট্রেটর। ‘পূর্বদেশ’ জানালাে :
“যশাের, ২১শে জুলাই (এপিপি) ।-জাষ্ঠীয় ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে আত্মনিয়ােগের জন্য ডেপুটি সাব-মার্শাল ল’ এডমিনিসট্রেট রাজাকারদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
স্থানীয় শান্তি কমিটির উদ্যোগে গত শুক্রবার তসবির মহলে শুষ্ঠিত এক জনসভায় তফন্দিনকালে ডেপুটি সাব-মাশ ল’ এ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাজাকার বাহিনীর প্রতি আহবান জানান। দুতিকারী আর অনুপ্রবেশকারীদের কর্মতৎপরত্যা বন্ধের জন্য সব সময় সতর্ক থাকার জন্যও তিনি রাজাকারদের প্রতি পরামর্শ প্রদান করেন। সমাজ ও রাষ্ট্রবিরােধী লােকজনকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য তিনি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
কায়েদে আজমের একত, ঈমান ও শৃঙ্খলার উদ্দেশাের কথা স্বরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, পাকিস্তানের আদর্শ ফৱে সৰ সময়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। সংখ্যক দুস্কৃতিকারীকে ধরার ব্যাপারে সুষ্ঠু কর্মতৎপরতার স্বীকৃতি জল ডেপুটি সাবমশাল ল’ এyড এডিমিনিসট্রেটনা রাজাদের দু’হাজার টাকা পয়েছেন। ডেপুটি মার্শাল ল” এ্যাডমিনিসটের এর আগে টাউন হল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত রাজাকার বাহিনীর কাগুজোর সালাম গ্রহণ করেন।’৯৯।
সুলাই মাসে সিলেটে আয়ােজন করা হয় উলেমা সমাবেশের। এই সমাবেশে রাজাকার বাহিনীতে যােগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বক্তাগণ বাত, ভাৰতীয় দালাল, অনুপ্রবেশকারী ও নাশকতামূলক কাজের ব্যক্তিদের প্রতিহত করার আহবান জানান। এ সম্পর্ক দৈনিক পাকিস্তান জানালাে।
সিলেট, ২২শে লাই (এলসি)।-পাতকাল হজরত শাহজালালের দরগায় অতি এক বিরাট উলেমা সমাবেশে ভারত, ভারতীয় দল, অনুপ্রবেশকারী ও নাশকতামূলক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদেরকে প্রতিহত করার জন্যে দলে দলে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেবার দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রখ্যাত আলেম মওলানা সলিম জনে কাশরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে জামে মসজিদের ইমাম মওলানা কাজী ইবরাহিম, পাকিস্তান মুসলিম লীগের নেতা ও জেলা শান্তি কমিটির আহ্বায়ক জনাব শহীম আলী, জৰ গোলাম “লানী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
সিলেটে বাজাকারনে তৎপরতা লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। এই তৎপরতা সংবাদ পাওয়া যায় দৈনিক পূর্বদেশ’ পত্রিকায়। ২৫ জুলাই সংখ্যায় প্রাশিসংবাগে বলা হয়;
________________________________________
‘সিলেট, ২৩শে জুলাই (এপিপি)-এ এলাকার গ্রামাঞ্চলে, বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় রাজাকাররা অত্যন্ত মন্ত্রকতার সাথে প্ররিক্ষার কাজ করছে এবং ভ্ৰাৱা মুক্তিকারী ও মাংসাত্মক ক্রিয়াকলাপে লিপ্ত লােকদের দমন করছে।
সম্প্রতি বিয়ানীবাজার থানায় কারাগার থামের উপর দক্ষতিকারীরা আক্রমণ পরিচালনা করলে, রাজাকারগণ তাদের আক্রমণ তো প্রতিহত করেই, অধিকন্তু চারজন পুষ্টিরাকে হত্যা করে এবং তিনজনকে আহত অবস্থায় রে ফেলে। একারলে প্রতি আক্রমণের ফলে কৃতিকারীরা হত চান ত আহত তিন জনকে ফেলে পালিয়ে
আহতদের কাছে থেকে জানা গেছে যে, ভারতে কিছুদিন ট্রেনিং গ্রহণ করার পর পানিস্তানে দুকর্ম অনুষ্ঠানের আজ তাদেরকে জোর করে ভারত থেকে পাঠানো হয় । উল্লেখযােগ্য যে, উক্ত মাটি নীমান্ত এলাকা থেকে দেড় মাইল দূরের অবই। এছাড়া মাজাকাররা জাকিগঞ্জ এলাকায়ও কিছু সংখ্যক দৃতিকারীকে ধরে ফেলে এবং সাতজনকে হত্যা করে। উক্ত প্রকৃতিকারীরা নাশকালঃ শার্যে লিপ্ত ছিল। এখানে বহুলােক স্বত:ভাবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে।”
জুলাই মাসে ইউনিয়ন পর্যায়েও রাজাকার বাহিনী গঠনের সংবাদ জানা যায়। দৈনিক পাঙ্কিাল* এ সংবাদ পরিবেশন করে জানালাে।
“গত রােববার ইসলামপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির আফিসে এক আৱী সভা অনুও হয়। সভায় ইসলামপুর ইউনিয়ন শাস্ত্র কমিটির আহবায়ক জনাব মােবারক হোসেন সভাপতিত্ব করেন। ইসলামপুর ইউনিয়ন শান্তি কমিটির এক প্রেস রিলিজ কলা হ৷ যে, সভায় প্রত্যেকটি ইউনিটের ২৫ জন করে লােক নিয়ে একটি রাজাকার বাহিনী। গঠন করা হয়। সভায় মহরর -প্তি ও শৃংখলা ব\ রাযার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরাে করা হয়। পাকিস্তান বাহিনীর সময় মত ব্যবস্থা গ্রহণের = সস্তায় পাকিস্তান সশখ বাহিনীর ভুমিকার প্রশংসা করা হ।”২৯।
দিকে গােয়ালন্দ আহকুমার পাংশ এবং বাড়াবাড়ি ও রাজাকার রুশ পোলা হলাে। সেখানে প্রথম পর্যায়ে শতাধিক রাজাকারের প্রশিক্ষণ গ্রহনে সংবাদ জানা
মুন্সীগঞ্জেও রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। প্রশিক্ষণের অন্য ২০০ জন রাজাকারের নাম তালিকাভুক্ত করা হয় এবং এর মধ্যে প্রথম ব্যাচে ৪০ জন রাজাকার ১০ দিনের শিক্ষণ শেষ করে নালে জানা যায়। স্থানীয় প্রশায়ানের সহায়তায় সদর মহকুমা আনসারদের নেতৃত্বে মুগ খেলার মানে এই প্রশিণ দেয়া হয়। এ
“তুষ্টিয়ার গ্রামে দুজন ভারতীয় এজেন্ট নিহত” শিরােনামে সংবাদ পাওয়া যায়। আওফাক’ পত্রিকার ৫ আগস্ট সংখ্যায়। সংবাদে বলা হয় ?
| কুষ্টিয়া, ৫ই আগ% (এসিলি)। এবার প্রত্যুষে কুষ্টিয়া জেলার সদর মহকুমার THরখালী থানার অন্তত পাটি এম রাজাকারদেণ্ড হতে ৪ থান ভারতীয় নিহত হয় এবং এ দিন ধা পড়ে। রাজাকারগণ এবং ইউনিয়ন শাস্তি কমিটির চেয়ারম্যান খেলাফ3 মেনের গা শামসুন্নাহার সাহসিকার সহিত ভারতীয় এক টপের আক্রমণ প্রতিহত
________________________________________
করে। ভারতীয় এজেন্টগণ মারণাস্ত্রে সজি% হইয়া শুক্রবার ভোররাত প্রায় সাড়ে ৪টায় গ্রামের উপন্য আক্রমণ চালায় এবং বেপরোয়া গুলীবর্ষণ শুরু করে। রাজাকারগণ পাল্টা অলী চালায়।
ভারতীয় এজেন্টগশ খেলাফত হোসেনেৰা নাড়ী ফেরাও করে। খেলাফত হােসেনের পুত্র হাল হােসেন ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিয়া ভারতীয় এজেলের নেতাকে গুলী করিনা হত্যা করে। ৬ আন ভারতীয় নিহত এবং ২ জন আহত হয়।
| অন্য আর একগণ মুক্ত লেহজলি এবং জাতীয় জাপমাত্রা হলে ঐ হাতবােমাসহ অস্ত্রশস্ত্র এবং গোলাবারুদ ফেলিয়া পলায়ন করে ?
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, পাকিস্তানি সামরিকজান্তা ও তাদের দোসররা মুক্তিযোদ্ধাদের ‘ভাতীয় জৈ, রানিকােলা’, ‘ভারতীয় চর, ‘অনুপ্রকােশকারী’ প্রভৃতি অতিধায় অভিহিত করত। ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থানে রাজাকারদের হাতে ৭০ জন রাষ্ট্রবিরােধী-নিহত হওয়ার সংবাদ দিল ‘দৈনিক ইত্তেফাক’। পত্রিকায় বলা হলাে :
গত মাসে রাজাকার বাহিনীর হাতে ময়মনসিংহ জেলায় ৭০ জন বিরােধী নিহত হইয়াছে বলিয়া গতকাল (সোমবার) ঢাকায় এপিপি পরিবেশিত এক খবরে বলা হয়। খবরে আরও বলে যে, উক্ত সময়ের মধ্যে রাজাকার বাহিনী বহু রাষ্ট্রবিরােধীকে আহত করেন। ইহাছাড়া ‘তাহাদের নিকট হইতে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হইয়াছে।
এ সম্পর্কে bকায় প্রাপ্ত বিস্তারিত খবরে জানা যায় যে, গত ৪ঠা জুলাই পুৰু একারীরা। শেরপুরের কাছে একটি সেতু ধ্বংস কন্যার চেষ্টা করে। কিন্তু ব্রাঞ্জকারগণ বহুসংখ্যক দুস্কৃতিকারীকে হত্যাহত করে। দুস্কৃতিকারীরী ১৯টি মৃতদেহসহ ১৩টি টিএনটি, বহু সংখ্যক ইতিবোমা, ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী মাইন এবং ভারতে তৈরি ১৯টি টিউবা বিকোরক দ্রব্য ফেলিয়া পলায়ন করে।
পন্নের দিন শেরপুর হইতে ২০ মাইল দূরের এক গ্রামে বিদ্রোহীদের অবস্থানের খবর লাইফ রাজাকার বাহিনী উক্ত গ্রামে আমাণ চালাহলে ২৪ জন কারা নিহত হয়। রাজাকারগণ এথানে কযেকটি রাইফেল, হাতবােমা ও ৩ শ মণ মত চাউল উদ্ধার করে। গত ১৩ ও ১৪ই জুলাই রাত্রে ময়মনসিংহ জেলার নালা এলাকায় দুস্কৃতিকারীদের সহিত রাজাকারসের এক সংঘর্ষে ৪ জন দুষ্কৃতিকারী নিহত হয়। এখান হইতে দুটি হাতিবােমা ও ৩০ রাউন্ড গুল উস্কার করা হয়। ইহার ৪ দিন পর রাজাকার বাহিনী ইসলামপুর থানার ফুলকান্দি গ্রামে এক আক্রমণ চালাইলে ২৩ জুন রাষ্ট্রবিরােধী লােক নিহত হয়। ২৬
| মৌলভীবাজায়ে গাৰ ওপর’ শাক সংবাদ পাওয়া যায় “দৈনিক ইত্তেফাক সুশকার ১৩ আগস্ট সংখ্যায় । সংবাদে বলা হয় :
মৌলভীবাজার মহকুমায় রাজাকার ও মুজাহিদ ভর্তি পুরাদমে চলিতেছে। ইতিমধ্যে ত্যাহারে অনেকেই ট্রেনিংলাভ করিয়াছেন এবং তার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করিতেছেন। সম্প্রতি মৌলভীবাজার শান্তি কমিটির জনৈক সদস্য মহকুমা শান্তি কমিটির আচ্ছায়াকের নিকট একটি রাইফেল জমা দেন। বিগত মার্চ মাসে জেল হইতে পলাতক এন দুধর্ষ ডাকাতের নিকট হইতে এই রাইফেলটি উদ্ধার করা হয়। শান্তি কমিটির
________________________________________
আহবায়ক রাইফেলটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করেন। শান্তি কমিটির সদস্যগণ বহু রাইফেল, বন্দুক ও বুলেট উদ্ধার করিয়া স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট অর্পণ করেন। ২৭
অাগস্ট মাসেই ‘ইত্তেফাক অবর দিলাে রাজাকার বাহিনী খুলনায় ২৫ জন ভারতীয় চত্রকে হত্যা করেছে। পত্রিকা জানালো ;
গত ৪ঠা আগস্ট তেরখাদা থানার রাজাকারগণ এক সংঘর্ষে ২৫ জন ভারতীয় চর। হত্যা করিয়াছে। প্রকাশ, একদল ভারতীয় ছয় রাজাকার ক্যাম্পে গুলীবর্ষপ করিলে রাহকারুকাও পাল্টা গুলীবর্ষণ করে এবং কাহালিগকে তাড়া করে। তখন ভাবা রগণ। লাশ এবং রাইফেলসহ ধরা অস্ত্রশস্ত্র ওঁ গোলাবারুল ফেলিয়া পলাইয়া যায়। সিলেটের এক খবরে বলা হয় যে, তথাকার রাজাকারাণ গোপালগঞ্জ থানা শান্তি কমিটির সহায়তায় সম্প্রওি একজন ভারতীয় চরকে গ্রেফতার করিয়াছে। উক্ত র পূর্ব পাকিস্তানে জান-মাল *#ংসের উদ্দেশ্যে হবোমা বহন করিতেছি।”
রাজশাহীতে রাজাকারদের কুচকাওয়াজ’ শিরােনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় দৈনিক পাঙ্কিান পিত্রকার ১৪ আগস্ট সংখায়। সংবাদে বলা হয় :
বাকশাহী, ১৫ই আগস্ট (ইউপিআই)। (ট্রনিং সমাপ্তি শেষে রাজাকারদের দ্বিতীয় দলটি গত বৃহস্পতিবার এখানে কুচকাওয়াজে পাকিস্তান ও ইসলামের স্বার্থে তাদেৰা জীবন উৎসর্গ নানির শপথ গ্রহণ করেন। সাহেব বাজার জামে মসজিদের ইমাম তাদের অভিবাদন গ্রহণ করেন। ব্রাজাকারণে তাদের পবিত্র দায়িত্ব সম্পর্কে আণ করিয়ে নেয়া হয়। শান্তি কমিটির সদস্যবৃন্দসহ অপরাপর নেতৃবৃন্দ ও উক্ত অনুষ্ঠানে ভাগ পান।
এ দিকে খুলনাতেও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে রাজাকারসে এক বন্দুক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ইফেক’ ‘৪০ জন ভারতীয় এতে হিত’ শিরােনাম জানালাে ;
কচুয়া থানার মাধৰকাঠিতে রাজাকার ও পুলিশের সহিত সংঘর্ষে ৬০ জন ভারতীয় এজেন্ট হিত হয়। প্রায় পাঁচশ ভারতীয় এজেন্ট রাজাকারদের একটি ক্যাম্প ঘেরাও করিয়া তুর্দিক হইতে জলনির্মাণ শুরু করে। ইহাতে ত্রাজাকার ও পুলিশগণ পাল্টা গুলি বর্ষণ। করিয়া সুতিকারীদের হটাইয়া দেয়। সংঘর্ষে দুষ্কৃতিকারীদের ৪০ জন নিহত ও বহু আহত হয় এবং বাক্টারা এল, এম, ,ি রাইফেল এবং বন্দুকসহ বিপুল পরিমাণু অস্ত্রশস্ত্র ফেলিরা। পলায়ন করে।”
খুলনা ও বগুড়ায় রাজাকারদের তৎপরতা’ বিষয়ক সংবাদ জানা যায় দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ২০ আগস্ট সংখ্যায় । সংবাদে বলা হলাে :
– গত বুধবার এপিপি পরিবেশিত এক খবরে বলা হয় : জেলাসমূহ হইতে প্রান্ত। খবরে জানা যায় যে, রাজাকারগণ ভারতীয় এজেন্ট ও দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধ চরম আঘাত। হানা গিয়াছে। তাই এই শলেয় বিনাশ করার ব্যাপারে দেশপ্রেমিক নাগরিক ও এমিরক্ষা পালের সন্দশ্যগণ সহযােগিতা দান করিতেছেন।
গত ১০ই আগস্ট খুলনা জেলার উদয়পুর গ্রামের রাজাকারগণ ভারতীয় এজেন্টের একটি দলের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘ উক্ত নিলের ৯ ম মইত হয়। এবং একটি আইফেলসহ এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। বগুড়ার এক রিপাের্টে প্রকাশ, গত ১২ই আগস্ট বগুড়ার নিকটে গল্পীৱঙ্গা পাটির সদস্যপূণ প্রামবাসীদের সহায়তায় একদল
________________________________________
-পুৰুতকারকে আক্রমণ করে এবং তাহাদের দুইজনকে গ্রেফতার করে। দু কাদের নিকট হইতে ৪টি রাইফেল, একটি গাশা বন্দুক ও ৫০ মণ গােলাবারুল উদ্ধার করা হয়।
রাফাকারদের হাতে ২ জন নিহত ১২ জন গ্রেফতার’ শিরোনামে সংবাদ পাওয়া যায় “দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকার ২৫ আগস্ট সংখ্যায়। পত্রিকা জানালাে ;
| সাতক্ষীরা, ২৪শে আগস্ট এপিলি-আশাশুনি থানায় বুধহাটার রাজাকারগণ দুইজন দুতিকানীকে হত্যা এবং অপর ১৯ জনকে গ্রেফতার করিয়াছে। তাহাদের নিকট হইতে একটি হালকা নন, ওয়েট রাইফেল এবং সুস্থ ও গোলাবারুল আটক করা হইয়াছে। প্রায় ২০ জন দুষ্কৃতিকারী এবং ভারতীয় এজেন্ট একটি নৌকায় করিয়া গমৰে সময় প্রহরারত রাজাকারগণ তাহাদের চ্যালেঞ্জ করে। তখন তাহারা গুণাবর্ষণ কৰিলে রাজাকাও পাল্টা গুৰষণ করে। ফলে, তাহাদের দুইজন ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং ১২ জন বন্দী হয়। তাহাদের নিকট হইতে আটককৃত অস্ত্রশস্ত্রে ভারতীয় স্থাপ রহিছ ‘
সেতু উড়াইয়া দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ শিরােনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ২৯ আগষ্ট সংখ্যায় সংবাদে বলা হলো :
সিলেট, ২৮শে আগস্ট (এপিপি)-ভারতীয় এজেন্টগণ সিলেট এলাকায় সীমান্তের প্রায় দুই মাইল দূরে চরথাইয়ের নিকট একটি সেতু উড়াইয়া দেওয়ার রী করিলে
জারগণ তাহা আখ করিয়া দেয়। এখানে প্রাপ্ত রিপোর্ট বলা হয় যে, গত হবার নার প্রায় ৪০ বর এ মাসামের * চৰখাই এলাকায় প্রবেশ করে। তাহলে সহিত মাইন, বিকারক
লেয় করিম হইতে গোপনে *ছল। তাহারা চরখাই সেতুর প্রহরায় নিযুক্ত রাজাকারদের প্রতি গুৰমণ করে।
এবং স্বয়ংক্রিয় নায়িকার সংখ্যায় কম হইলেও ভারতীয় এজেন্টদের প্রতি পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। এমতাবস্থায় অনুপ্রবেশকাশের একজন সংজ, ন হইয়া প্রাণত্যাগ করলে অবশিষ্ট সকলেই ভারতীয় এলাকায় ফিরিয়া যায়। তবে সেতুটির কোন ক্ষতি হয় নাই ১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের নিকটে প্রচুর গােলাবারুদ উদ্ধার’ শিরােনামে প্রকাশিত
। সংবাদে বলা হলাে :
“গাল (মঙ্গলবার) এপিপি পরিবেশিত খবরে বলা হয় : রাজাকরগণ গত রবিবার রাত্রে টাঙ্গাইল হইতে প্রায় ৫ মাইল দূরে সাহল পাড়ায় দুইটি স্থানে করে প্রতিকুর গোলা-বারুদ ও হাতবােমা আনিকার করে। উক্ত স্থানের নিকট হইতে এক ব্যক্তিকে afফতার করা হয়। সে গোলাবারুদ মজুতের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং গোলা-বারুদের অপর স্তুপের সূযের সন্ধান দেয়। ফলে মােট ৮৭ বা গােলা-বারুদ
| এ কে ঢাকায় প্রাপ্ত বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ, এক দল রাজাকার টাঙ্গাইলে উত্তরে অবস্থিত ঘাটাইলের নিকটবর্তী এক সেতু প্রহরায় নিয়োজিত ছিল। তাহারা খালের অপর পারে কয়েককে চলাফেরা করতে দেখে। শীঘ্রই ইহরা একমঞ্চে খাথিয়া সেখান হইতে মরিয়া পড়ে। জিকিরগণ হাজির সপকে সন্ধিহন হইয়া খাল পার হয় এবং এহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে থাকে। লােকটি ভারতীয় এলে দেশিয় রাজাকার
________________________________________
তাহাকে গ্রেফার করে। লােকটি জানায় যে, তাহার সঙ্গি কর্তক উক্ত এলাকায় স্তুপীকৃত গোলা-বারুদের উপর সে নজর রাখিতেছিল। ৰজাকারগণ পচা পাট পাতার মধ্যে গােলা-বারুদের স্কুপের সন্ধান পায়। তাহারা যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষুদ্রা, গোলা-বাকা । হাতবোমা আবিষ্কার করে।’
গ্রাজাকারদের হাতে ৬ জন ভারতীয় চর নিহত: ২ জন আটক’ শিরােনামে সংবাদ প্রত্যাশিত হয় |ৈ+কি ইত্তেফাক পত্রিকার ৫ সেপ্টেম্বর সংখ্যা। পত্রিকা বলা হলাে :
কুমিল্লা, ৪ঠা সেপ্টেম্বর এপিপি-সম্প্রতি বুড়িচং থানায় মােফাহিদ ও রাজাকারদের একটি টহলদার বাহিনী ৬ জন ভারতীয় এজেন্টকে নিহত এবং অপর ২ জনকে গ্রেফতার করিয়াছে বলিয়া স্থানীয় শান্তি কমিটির প্রেরিত সংবাদে জানা গিয়াছে। | ধূটনার বিবরণে প্রকাশ, দেশপ্রেমিক লােকদের নিকট হইতে সংবাদ পাইয়া মােহিদ ও রাজাকার ও ঘটনাস্থলে পুমান করে এবং ভারতীয় #Jজটদের বুড়িচং থানার রাজাপুরের নিকট একটি সেতু উড়াইয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে ডিনামাইট স্থাপন্নত দেখিতে পায়। তখন টহলদার বাহিনী দুষ্কৃতিকারীদের আক্রমণ করিয়া ও জনকে নিহত করে। তাহাদের নিকট হইতে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিক্ষোৱলব! আটক করা হয়।
আরেক রিপাের্টে বলা হয় যে, কতিপয় দুষ্কৃতিকারী কুমিল্পার শাহান গান্ধ্য দুইটি রেলওয়ে কালভার্ট উড়াইয়া দেওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় দেশপ্রেমিক বনগণ তাহা ব্যথ করিয়া দেয়।
দিলেট ময়লা হয় যে, হান¥ জনসাধারণ কয়েকজন মুক্তিকারীকে রাত্রি বেলা নিকটবর্তী রেলওয়ে কালঙ্গটে কোন কিছু স্থাপন করতে দেখিতে পাইয়া তাহাদের তাড়া কর। তখন কও কারাগণ বিস্ফোরকদ্রব্য স্থাপন করিয়াই পলাইয়া যায়। পাক সেনাবাহিনীর স্থানীয় ইউনিট ঐসব ডিনামাইট উঠাইয়া নিয়া যায়।” _ এ দিকে গফরগায়ে আলবদর বাহিনী গঠিত হলাে ১ সেপ্টেম্বর। দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার নিজ সংবাদদাতা গফরগাঁও থেকে জানালেন ; | “গফরগাঁও, ২রা সেপ্টেম্বর, গতকাল্প বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গফরগায়ে আল-বদর বাহিনী গঠিত হয়েছে। এতদুপলক্ষে স্থানে এক সভার আয়োজন করা হয় এবং তাতে স্থানীয় শিক্ষক, ছাত্র, যুবক, রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যবর্গসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের লােক যােগদান করেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি মওলানা আনিসুর রহমান মুর্শিদাবাদী বক্তৃতাৰী আল-কার বাহিনীর আদর্শ ও উম্পেশ খ্যাখ|| করেন এবং ‘আল-বলর বাহিনীর দেশপ্রেমিক যুবকদের দেশের শান্তি ও শৃংখলা রক্ষার কাজে আত্মনিয়োগ করতে
সতায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্ত করেন | ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের ছাত্র সংঘের নেতা জনাব মহাউদ্দীন ও ময়মনসিংহ জেলা ইসলামী ছত্রি সংঘের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উনাৰ মুজিবর রহমান।
লাকসামে ৫ জন অনুপ্রবেশকারী হিও’ শিরােনামে সংবাদ পাওয়া যায় “দৈনিক ইওেফা’ পত্রিকার ২১ সেপ্টেম্বর সংখ্যায়। পত্রিকায় বলা হয় :
কুমিল্লা, ২৪শে সেপ্টেম্বর (এপিপি)-সম্প্রতি লাকসাম থানার নারায়ণপুরে ৫ জন ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী নিহত এবং সেখান হইতে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা
________________________________________
হইয়াছে। এ সম্পর্কে প্রাপ্ত বিস্তারিত খবরে জানা যায় যে, স্থানীয় লােকজনের নিকট হইতে খবর পাইয়া একদল রাজাকার লাকসাম থানার নারায়ণপুরের একটি বাড়িতে হানা দেয় । অনুপ্রবেশকারীক্ষের বাধাদান সত্ত্বেও রাজাকারা ৫ জন ভারতীয় এCTস্টকে হত্যা এবং ৩টি ভারতের তৈরি স্টেনগান, ১টি রাইফেল, ২টি হাতবােমা ও ৪ শত রাউন্ড গুলী উদ্ধার করে।”
| ‘৯১ জন ভারতীয় এয়। নিহত ও প্রচুর অর্থশাস্ত্র উদ্ধার ‘ শিরােনামে সংবাদ পাওয়া যায় দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকা’র ২২ সেপ্টেম্বর সংখ্যায় । সংবাদে বলা হয় :
| ‘সিলেট, ২১শে সেপ্টেম্বর (এপিপি)-আজ এখানে প্রাপ্ত এক সংবাদ প্রকাশ, প্রায় ২৫০ জন তারতীয় না গত রবিবারে পুনরায় সীমান্ত এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করে।
পাকিস্তানী সেনাবাহিনী অনুপ্রবেশকারীদেরকে বালিগাওয়ের নিকট দেখিতে পায় এবং আহাৱা পাকিস্তানী এলাকার অর্থ মাইল অভ্যন্তরে প্রবেশ করার পর পাক বাহিনী তাহাদেরকে অকস্মাৎ আচমণ করে। আক্রান্ত হওয়ার পর অনুপ্রবেশকারীরা পশ্চাৎপসরণের চেষ্টা করে। আক্রমণের ফলে তাহাগের ২৩ গুণ নিহত হয়।
তাহাদের নিকট হইতে ২৪টি রাইফেল, ৬টি স্টেনগান, ৬০টি হাতবােমা, ২৮টি মাইন, ৫ পাউ বিস্ফোরক এবং ১৮ শত কাটিজ উদ্ধার করা হয়। ভারতীয় জন এক এক সপ্তাহে পূর্ব পাকিস্তানে প্রবেশের ইহা শ্রীয় প্রচেষ্টা। পূর্ববর্তী বারের ন্যায় এইবারও তাহাদের এটা ব্যর্থ করা হয়।
৬ জন নিহত ;
এপিপি পরিবেশিত অপর এক খবরে প্রকাশ, কুমিল্লা জেলা শান্তি কমিটি সূত্রে জানা গিয়াছে যে, সম্প্রতি কুচয়া থানার রঘুনাথপুর গ্রামের একটি গোপন টিতে আক্রমণ করিয়া রাজাকারী ৬ জন ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীকে নিহত এবং লাইট মেশিনগানসহ কিছু পরিমাণ মুসুশস্ত্র উদ্ধার করে।
১ অক্টোবর “দি মর্নিং নিউজ’ পত্রিকায় সিলেট এলাকায় একটি সংবাদ পাওয়া যায়। সংবাদে বলা হয়;
| ‘গত বুধনার সিলেট জেলায় সীমান্তের কাছে রাজাকাররা ভণিীয় এন্টদের সেতু ধ্বংসের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। ভারতীয় এজেন্টরা সেতু উড়ালার লক্ষ্যে সীমানা অতিক্রম করে সাগর গ্রামের কাছে একত্রিত হয়। এমনকি এ সংবা পার্শ্ববর্তী রাজাকার ক্যাশ পেজে দেয়। রাজাকাল্লা খুব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছায়। যখন ভারতীয় এজেন্টরা সেতু ধ্বংসের চেষ্টা করে-তখন রাজাকাররা তাদের সাক্ষ্য করে গুলী চালায়। ভারতীয় একা তাদের সাথী ৩ জনকে মৃত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায় এবং বংসাত্মক কামের জন্য। ব্যবহৃত গোলাবারুদণ্ড ফেলে রেখে যায়।
রাজাকার হত্যার অভিযোগে কয়েক ব্যক্তি মোর” শীর্ষক সংবাদ পাওয়া যায় “দৈনিক ইতেফাক পত্রিকার ১০ অক্টোবর সংখ্যায়। সংবাদে বলা হয়?
“গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রী হােস্টেলের সম্মুখে ৩ জন রাজাকারকে হত্যা করার ব্যাপারে জড়িত থাকার অভিযোগে লালবাগ পুলিশ কয়েক ব্যক্তিকে গ্রেফতার রুব্রিয়াছে বলিয়া জানা গিয়াছে। তাহাদের মধ্যে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছাড়িয়া দেওয়া হইয়াছে।
________________________________________
এখানে উল্লেখ করা যাইতে পারে যে, গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্র হােস্টেলের গেটের সম্মুখে কর্তব্যরত থাকাকালে দৃহিকারীদের গুলিতে ৩ জন। রাজাকার নিহত হয়। গত শুক্রবার জুম্মার মাজা পর বায়তুল মােকাররমে তালের নাজামে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ঐলিল সন্ধ্যায় ৪ জন অজ্ঞাত পরিচয় লােক মেডিক্যাল কলেজ হােষ্টেলে প্রবেশের সময় জনৈক রাজাকার তাহাদের একজনের দেহ, ‘তমুরাশী করতে উদ্যত হইলে প্টেনগানের গুলিতে ৩ জন রাজাকারকেই হত্যা কলিয়া দুতিকারীরা। উধাও হয়। নিহত রাজাকারদের মধ্যে আবুল হােসেন ও আমার হোসেন মাদ্রাসার ছাত্র। এবং ওয়াহিদুল ইসলাম এ বৎসৱ এস, এস, সি পরীক্ষা দিয়াছিলেন। একইদিন দুপুরে মেডিক্যাল কলেজে ক্লাস চলাকালে একি হবোমা বিস্ফোরিত হওয়ায় ৪ জন ছাত্র-ছাত্রী আহত হয় বলিয়া অপর এক খবরে জানা যায়।
রাজাকারদের প্রতি উ অনিন্দন জানালেন মঞ্জী এ, কে, এম, ইউসুফ। সংবালে।
| খুলনা, অক্টোবর ১১, তাল জেলা স্কুল অডিটোরিয়ামে আমাণে পূর্ব পাকিস্তানের রাজস্ব মন্ত্রী মাওলানা এ, কে, এম, ইউসুফ রাজাকারদের প্রতি উষঃ অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন।
মন্ত্রী পরিতৃপ্তির সঙ্গে জানান যে, রাজাকাররা পুস্কৃতিকারী ও ভারতীয় সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের ভালো জবাব দিতে পাগছে। তারা যে শুধু অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিতো নয়, এৱং তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু অস্ত্র এবং গােলাবারুদ উদ্ধার কয়ছে।
| মাওলানা এ, কে, এম. ইউসুফ তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, আমাদের সাহসী জনগণ, সশস্ত্র বাহিনী এবং আঙ্গাকার সকল কূট কৌশলের বিরুদ্ধে দেশের সংহতি রক্ষায় পর্বতের মত দুড় আছে। এর আগে খুলনার ডেপুটি কমিশনার এবং বাক্সাকার কমাস্তাররা তাদের বক্তৃতায় রাজাকারদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে সেয়া।
দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ১৩ অক্টোবর সংখ্যায় জেনারেল নিয়াজীর Jafাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম সীমান্ত এলাকা পৱিদর্শন বিষয়ক সংবাদ পাওয়া যায়। পত্রিকায় বলা
*এপিপি পরিবেশিত সংবাদে বলা হয় : ইন্টার্ণ কমাজের কমারি ও খ” এলাকার। সামরিক আইন প্রশাসক লেজেনারেল এ, এ, কে নিয়াজী চট্টগ্রাম ও পার্বত্য ba/মে। একদিনের সফর শেষে গতকাল (শুক্রবার) ঢাকা প্রত্যাবর্তন করিয়াছেন।
জেনারেল নিয়াল সৈন্যদের সহিত দিন যাপন এবং মােটরযোগে সীমান্তবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেন। স্থানীয় কামাঞ্জার জেনারেল নিয়াজীকে বলেন যে, তাহার। এলাকার শান্তি ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অব্যাহত রহিয়াছে। তিনি বলেন : রাজাকার ও মােজাহিদগণ অত্যন্ত ফলপ্রসূ কাজ করছেন এবং তাহাৱা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানগুলির প্রহরান এবং শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার ব্যাপারে প্রশাসন কর্তৃপক্ষকে সাহায্য। করিতেছেন। পরে জেনারেল নিয়াজ মােটযােগে পার্বত্য চট্টগ্রামের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব। সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি সৈন্যদের সহিত বেশিরভাগ সময় কাটান। তিনি মীমান্ত এলাকার প্রতিরক্ষা কার্যে ব্যস্ত সৈন্যদের উচ্চ মনােবল ও তাহাগের সদা সতর্ক। দেখিতে পান ‘কই,
________________________________________
*
* *
এ দিকে জেনারেল মিয়ার পূর্বাঞ্চল সীমান্ত ও সফর করলেন। এ সম্পর্কে দৈনিক
“এপিপি পরিবেশিত সংবাদে বলা হয়; ইটশ কমঞ্চের কমাণ্ডার ও খ এলাকার সামরিক আইন প্রশাসক লে: জেনারেল এ, ই, কে নিয়াজ। গতকাল (বুধবার) পূর্বাঞ্চল সীমান্তে কর্মব্যস্ত দিন যাপন করেন। কেনলে নিয়াজী এথনে কুমিল্লায় সৈন্য ও রাজাকারদের সহিত মিলিত হন এবং তাদের উদ্দেশ্যে তথনাশ করেন। তিনি সৈন। এ রাজাকারদের কাৰে দেশের এক ও সংহতির জন্য কাজ করতে দেখিয়া সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি তাদের কলের মধ্যে উদ্দেশ্য সম্পর্কে সল সতর্ক থাকার জন্য আহবান জানান। সীমান্ত বরাবর ভারতের ব্যাপক সেনা সমাবেশের প্রেক্ষিতে এবং ভারতীয় নেতাদের যুদ্ধের হুমকি মােকাবিলায় তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ আমরা শত্রুদের নিজেদের সীমানার মধ্যে হটাইয়া দিতে পারি এবং আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের পাস জাতি হিসাবে বিকাইয়া দিব না। জেনারেল নিয়াজী পরে আম হেডকোয়ার্টার্সে গমন। করেন এবং এই এলাকায় সৈন্য ও রাজাকারদের ভূমিকা কি হইৰে উহা ব্যাখ্যা করেন। জেনারেল নিয়াজী বলেন, ভারতের ক্রমবর্ধমান হুমকির প্রেক্ষিতে সৈন্যদের জন্য এতটুকু বিশ্রাম বা শৈথিল্যের অবকাশ নাই। তিনি মাতৃভূমির প্রতি ইঞ্চি ভূমি রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর পূঢ় প্রত্যয়ের পুনরুক্তি করেন।
জেনারেল নিয়াজী উজর সীমান্ত পরিদর্শনকালে রাজাকারদের সঙ্গে কথা বলে তাদের কাজের প্রশংসা করেন। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় এ সফর সম্পর্কে বলা হয় :
*এপিপি পরিবেশিত সংবাদে বলা হয় : ইস্টার্ণ কমাণ্ডের কমাণ্ডৰ এবং ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেফটেনান্ট জেনারেল এ, কে, নিয়াজী গতকাল (শনিবার) উত্তরাঞ্চলীয় সামীপ্ত পরিদর্শন করেন। উত্তর দিক হইতে শক্রর হামলা হইলে তাহা প্রতিহত করার জন্য যেসব প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইয়াছে, তাহা সরেজমিনে
হণ করা যাইতে পারে যে, সত সমান্তে ভারতের শালক কামকলাপ বৃদ্ধি পাইয়াছে। অবিরাম গােলাবর্ষণ এবং মাঝে মাকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা ছাড়াও ভারত উত্তরাঞ্চলে পাকিস্তানী অবস্থানসমূহের উপর বিমান হইতে গুলীবর্ষণ শুরু করিয়াছে। বুধবার সকালে দুইটি ভারতীয় বিমান লালমনির হাটের উত্তরে মোগল হাটে গুলা নাশ করে এবং শুক্রবার সকালে একটি ভারতীয় জঙ্গী বিমান রায়ের পক্ষিণ-পশ্চিমে বাণী। সফাইলের উপর পিয়াড়য়া যায়। তাহাছাড়া ভারত উহার সময় সকালের বিরাট অংশও সীমান্তে মোতায়েন করিয়াছে।
জেনারেল নিয়াজী সারাদিন যাবৎ নৌকা, জীপ এবং পায়ে হাঁটিয়া উক্ত এলাকা পরিদর্শনের পর তথায় গৃহীত প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। সিনিয়র সামরিক অফিসারগণ তাহার সঙ্গে ছিলেন। জনসাধারণ বিভিন্ন প্রকারে স্বতঃফুর্তভাবে যে। প্রচেষ্টা গ্রহণ করিয়াছে তাহার মধ্যেই গতকাল জেনারেল নিয়াজীর সফরের সর্বাধিক পুনারাবাস সূচিত হয় । ময়মনসিংহের শেরপুর এবং আরও বহু স্থানে বিরাট উৎসাহী জনতা। জেনারেল নিয়াজীকে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করে। জেনারেল নিয়াজী স্থানীয় জনসাধারণকে পাকিস্তানী সৈন্যদের সহিত স্বেচ্ছায় হাতে হাত মিলাইয়া কাজ করিতে দেখিতে পান।
________________________________________
জেনারেল নিয়াজী পূর্ণাঙ্গ ময়মনসিংহ সকালে জাকারদের ট্রেনিং স্কুল পরিদর্শন করেন এবং তাহাদিগকে ট্রেনিংয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে দেখিতে পান। তিনি রাজাকারদের সহিত ব্যক্তিগতভাৰে আলাপ করেন এবং তাহাদের ট্রেনিং সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। রাজাকার বাহিনী বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ভূমিকা পালন করিতেছে, তিনি তাহার প্রশংসা
এ দিকে মধ্য অক্টোবরে মালিক মন্ত্রী সভার অর্থমন্ত্রী আবুল কাসেম চট্টগ্রামের মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে আয়ােজিত জনগণের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণের এক পর্যায়ে বলেন, বাজাকারের সংখ্যা এখন ৫৫০০০ হাজারে উন্নীত হয়েছে। তাদের উপযুক্ত শিক্ষণ এবং প্রয়ােজনীয় অত্র দিতে হবে। তিনি জানান, রাজাকারদের শক্তি বৃদ্ধি করে ১ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। তিনি আরাে জানান, প্রতি ইউনিয়নে উচ্চ শিক্ষি© ঞ্জকার তৈরি করা প্রয়ােজন যাচ্ছে পুলিশ বাহিনী ব্যতিরেকেই রাজাকাররাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।
মন্ত্রী জানান, যারা ভাতের প্ররোচনায় বিপথগামী হয়ে সীমান্ত অতিক্রম করেছে প্রতিকূল পরিস্থিতি তাদের মােহমুক্ত আটাৰে।
দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ১৮ অক্টোবর সংখ্যায় আর এক সংগে বলা হলাে।
“গত বু ও বৃহস্পতিবার রাত্রে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানাধীন সেলিমপুর ইউনিয়নে ভারতীয় চরদের দুইটি গৃহ হইতে ৫টি রাইফেল, একটি স্টেনগান এবং যথেষ্ট পরিমাণ গােলাবারুদ উদ্ধার করা হইয়াছে বলিয়া জানা গিয়াছে।
সেলিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বুধবার রাত্রে গােপন সূত্রে সংবাদ পাইয়া কয়েক রাক্ষারসহ সুতিকারীর গৃহে হানা দেয়। উক্ত গৃহে একটি নেন এবং মুহাট রাইফেল ছাড়াও একটি চোৱাই হাত খড়ি পাওয়া গিয়াছে। পরদিন রাত্রে আরেকজন ভারতীয় চরের গৃহ হইতে দুইটি রাইফেল লিং কেটি চোৱাই নাইলনের জাল উদ্ধার করা হইয়াছে। চেয়ারম্যান বলেন যে, ভারতীয় চঞ্চয় বিরাট সংখ্যক গ্রামবাসীর সম্মুখে তাদের দোষ স্বীকার করিয়াছে। তাহারা কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ও ৫টি ডাকাতি করিয়াছে এবং ফাংসাত্মক কার্যকলাপের পরিকল্পনা করিতেছিল বলিয়া জানায়।
একই তারিখে ‘রংপুর সীমান্তে ৭৯ জন ভারতীয় এজেন্ট নিহত বিষয়ক সংবাদে কলা হলো :
“গতকাল পাকিস্তানী এলাকায় গােপনে অনুপ্রবেশের পুইটি জেষ্টায় ভারতীয় এজেন্টসের ৭৯ জন নিহত হয়। তাছাড়া ভারতীয় এজেন্টদের নিকট হইতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। তারা এরাে সাম| এলাকায় ঢুকিয়া পাকিস্তানী এলাকার দেড় মাইল অন্তরে দইঘাটায় পৌছে। তাহারা অতঃপর নিরীহ গ্রামবাসীদের হয়রানি করিত্রে শুরু করে। পাকিস্তানী সৈন্যরা সঙ্গে সঙ্গেই তাহাদের ফিরিয়া ৪৪ জনকে খতম করিয়া দেয়।
| ভারতীয়রা তাহাদের ৮টি রাইফেল, ২৮টি মাইন, ৩৭টি হাতবােমা এবং বিপুল সংখ্যক কার্তুজ ফেলিয়া যায়। গন্তকাল সকালের দিকে এক কোম্পানী ভারতীয় এজেন্ট লালমনিরহাটের উত্তরে অপর একটি সীমান্ত গ্রাম মােগলহাটে অনুপ্রবেশ করে।
| তাহারা পাকিস্তানী এলাকার অর্ধ মাইল অভ্যন্তরে মোগলহাটে পৌছার সঙ্গে সঙ্গে টহলরত পাকিস্তানী সৈন্যরা তাহাদের উপর আকস্মিক আক্রমণ চালায়। ইহার ফলে
________________________________________
ভারতীয়দের ৩৫ জন নিহত হয় এবং বাকী সকলেই সীমান্তের অপর পায়ে পালাইয়া যাইতে সক্ষম হয়। তাহারা এক হাজক মেশিনগান, ১২টি রাইফেল, ২৪টি হাতবােমা এবং ১২৪টি বিস্ফোরক প্রখ্য ফেলিয়া যায়।
এখানে দিনাজপুর হইতে প্রাপ্ত অপর একটি খবরে জানা গিয়াছে যে, একদল টহলপার রাজাকার চিতপুর সীমান্ত গ্রামে ভারতীয় এজেন্টদের একটি গোপন আজায় হানা দেয়। ভারতীয় এজেন্টেরা কয়ের মিনিট প্রতিরােধ করার পর সীমান্তের অপর পানের পালাইয়া যায়। তাহারা ৬টি মাইন ও একশত পাউa বিস্ফোরক দ্রব্য ফেলিয়া যায়।
জেনারেল নিয়াজী পাবনা এক রাজাকার সমাবেশে তাদেরকে আত্মােৎসর্গের মানসিকতা অর্জন করার আহবান জানালেন। পাকায় বলা হলাে :
“পূর্বাঞ্চল কমাঝের কামাস্তান এবং ‘খ’ অঞ্জলের সামরিক আইন প্রশাসক মো: জেনারেল এ, এ, কে নিয়াজী নিয়মানুবর্তিতা ও জাতীয় স্বার্থে আত্মােৎসর্গের মানসিকতা অর্জনের জন্য রাজাকারদের হইঞ্চি আহবান জানান।
গতকাল (মঙ্গলবার) ঢাকায় এপিপি পরিবেশিত খবরে বলা হয় যে, জেনারেল নিয়াল পাবনায় রাজাকারদের এক সমাবেশে বক্তৃতা করিতেছিলেন। সমাবেশে স্থানীয় শান্তি কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। জেনারেল নিয়াঞ্জী-পূর্বাহে @ি ওসিকে সঙ্গে লইয়া স্থানীয় রাজাকার ট্রেনিং স্কুল পরিদর্শন করেন।
তিনি রাজাকারদের বলেন, দেশের প্রতিরক্ষায় অংশগ্রহণের দায়িত্বলাও একটি দুর্লও সুযোগ। এমন মহ, দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজন নিয়মানুবর্তিতা এবং আয়োগের পৃহা। জেনারেল নিয়াজী বলেন, দেশের প্রতিরক্ষা, নিজের মা-বােনের সম্মান, দেশের ভৰি নাগরিক শিশুলে ভবিষ্যৎ লিন্নাপত্তার নিশ্চয়তা বিধানেরই নামান্তর মাত্র। তিনি বলেন, মানুষের জীবনের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। রণক্ষেত্রের মৃত্যু গৌরবজনক।
জেনারেল নিয়াজী পাবনায় আসিয়া পৌছিলে জনতা তাহাকে বিপুলভাবে সম্বর্ধিত করে। শহরের রাজপথে জনতা দুই পাৰে দণ্ডায়মান হইয়া মােরেলকে স্বাগত জানায়। পাবনা হইতে তিনি রাজশাহী গমন করেন।’
রাজাকারদের তলতার বেশ কিছু সংবাদ পাওয়া যায় ইত্তেফাক পত্রিকার ২২ অক্টোবর সংখ্যায়। পাকা বলা হলাে :
‘ৰাজাকার বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় চরদের মােকাবিলা করিতেছে,। ব্রাহ্মণবাড়িয়া হইতে প্রাপ্ত খবরের বরাত বলা হয় যে, পঙ্ক বুধবার রাত্রে রাজাকাররা কাবার দক্ষিণে মনপুরার নিকট ভারতীয় করণের এক গোপন আততায় জানা দেষয়। দেশপ্রেমিক নাগরিকদের নিকট হইতে প্রাপ্ত খবরের ভিত্তি পক্ষ উক অভিমানের ব্যবস্থা করেন। সংঘর্ষে ১ জন ভারতীয় চৰ নিহত হয়।
| জাকাররা উক্ত গোপন আbা হইতে ১টা মটাৰ, ২টি স্টেনগান, ১০টি রাইফেল, ৫০টি গ্রেনেড, ১টি বেতার যন্ত্র ও সামরিক গুরুত্বপূর্ণ দলিল দখল করে। সিলেটের জৈন্তিয়াপুরের এক খবরে বলা হয়, সেতু প্রহরনিত রাজাকান এলাকার রেল লাইনে আইন স্থাপনের 5েষ্টা চালাইবার সময় গুলি করিয়া ৩ জন ভারতীয় চরকে হত্যা করে।
রাজাকাররা গত বুধবার রাত্রে ৫ জন লােককে সন্দেহজনকভাবে রেল লাইনের উপর ঘুরাফিরা করিতে দেখে এবং নিঃশব্দে তাহাদের নিটবর্তী হইয়া তাহাদের থিরিয়া ফেলে
________________________________________
এবং পরিচয় জিজ্ঞাসা করে । অাপরিচয় না লিয়া ভাহারা রাজাকারদের উপর গুলিবর্ষণ করেন। ইহাতে রাজাকাররা তাণোচ্ছ কাছাকাছি জায়গা আশ্রয় গ্রহণ করে। ইহার পর একাকার সুক্ষ কারাসের উপর পাল্টা গুলিবর্ষণ করলে লুক্তিকারীদের ৩ জন নিহত হয়। এবং অবশিষ্ট রাজাকারদের নিকট আত্মসমর্পণ করে।
রাজাকাররা তাৰ তলতা অব্যাহত রেখেছিলো। তারা একুয়া এবং রাজশাহীতে এমিলা চালিয়ে বেশ কযেকজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। সংলাপে বলা হলো :
রাজাকার! ৩৭ । চর ও রাষ্ট্রবিরােধী লােকদের গোপন আমায় না দিয়া পায়ক্রমিকভাবে তাহাদিগকে নির্মূল করিতেছে।
অগতকাল (সােমবার) তাহাৱা কুষ্টিয়া ও রাজশাহী জেলায় দুইটি সফল অভিযান শাচালান করে । তাহারা কুয়া জেলার লেলিতপুলের নিকট কিরীতে অার চরদের গােপন আbe}} জন| দি ৪ জনকে মহত করে এবং ১২, ৩ ও গুলিসহ ৫১টি রাইফেল, ২৩টি হাতবােমা ও ১০৯টি মাইন উদ্ধার করে।
অনুজপালে রাজাকারগণ রাজশাহী জেলার মাওবা গ্রাম গায়েবাড়িতে হানা দিয়ে ২৩ রাউণ্ড গুলিসহ ৭২টি রাইফেল, ৫৪টি হাতবােমা এবং ২১০টি মাইন উদ্ধার করে। এসব অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের পূর্বে ৫ | ভারতীয় সরের সহিত তাহানের কলি নিবনিময় হয়। সংঘর্ষে ৩ জুন ভারতীয় জ্বর নিহত হয়।’
সিলেট অঞ্চলেও রাজাকাররা বেশ তৎপর ছিলাে। সংবাদে বলা হলাে :
গতকাল (মঙ্গলবার) প্রায় ৮০ জন ভারতীয় চর সিলেটের উৱে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু *ংস করার চেষ্টা করিলে ব্রাজাকারণ সে চেষ্টা ব্যর্থ করিয়া দেয়। Hইল রাজাকার সিলেটের উত্তরে সীমান্ত এলাকার গোয়ান এবং রাত এগামে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু পাহয় [[তছিল। এমন সময় সীমান্তের ওপার হইতে adৰয় ৮০ জন ভারতীয় চর আসিয়া বাজারিদের আক্রমণ করে। রাজাকাশ সংখ্যায় কম হইলেও পাট প্রণাবর্ষণ করিয়া ৩ জন ভারতীয় চরকে নিহত করে। তখন কারখায় রগণ মামার গানের পাইবা! খায়। সে পুইটি অক্ষত রহিয়াছে। কুষ্টিয়ার এক অবরে বলা হয় যে, রাজকারণ চাপই গান্ধাই বিলে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে হানা দিয়া ১৫টি রাইফেল এবং ৩৮টি হাতবােমা উদ্ধার করে ।*৫১
কুমিqায় রাজার সমাবেশে গভর্নর ড; মালিক বললেন, ‘আদেশ জাপুন এক এ সংহতি রক্ষা করুন। সংবাদে বলা হয়;
‘ৰদেশকে তলবন, জনগণের সেবা করুন এবং শের ঐক্য ও সংহতি রক্ষা। রুন-অদ্য এখানে রাজাকারদেৰ এক সমাবেশে ভাষণ দানকালে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর ডা: এ. এম, মালি উপত্রে আবেদন জানান।
কুমিল্লা শহর ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেপরােয়া গুলীবর্ষণের শিকার হওয়ায় গভর্নর ২৮শ্বে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার জন্য অন্য বিমানযোগে ঢাকা হইতে এখানে আগমন কল্লোল।
গভীর রাজাকারদের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং সীমান্ত পালের হামলা প্রতিহত ৪ আভ্যন্তৰীণ নাশকতামূলক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য আজাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে, ভারতীয় মিথ্যা প্রচার ও ওয়াদায় বিক্রান্ত ব্যক্তিরা অবরুদ্ধ বাংলাদেশ ।
________________________________________
এতদিনে নিশ্চয়ই ভাহালের ভুল বুঝিতে পারিয়াছে। পরে শান্তি কমিটির সদসানের সমাবেশে ভাষণ দানকালে গভীর বলেন যে, কতিপয় জননেতার দায়িত্বহীন কার্যকলাপের ফলে দেশের উপর সুযোগ ও দুর্ভোগ নামিয়া আসিয়াছে। এখন জনগণের আন্তরিক ও নিঃস্বার্থ সেই শৈকে স্বয়ংসের হাত হইতে রক্ষা করিতে পারে বলিয়া তিনি উল্লেখ
| রাজাকাতদের হাতে ১৭ জন ভারতীয় এজেন্ট গ্রেফতার’ শিৰোনামের সংৰাণ পাওয়া যায় সৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকার ৩১ অক্টোবর সংখ্যা।
“এপিপি পরিবেশিত খবরে বলা হয় : রাজাকার বাহিনী গতকাল ঝিনাইদহের নিকট তোমরনিয় ১৭ জন ভারতীয় এজেন্টকে গ্রেফতার করে। ভূত তাহস্তায় এজেন্টরা পরে স্বীকার করে যে, তাহারা ভারত ট্রেনিং লাভ করার পর সম্প্রতি ছুটি লইয়া নিজেদের আমের বাড়িতে ফিরিয়া আসিয়াছে। তাহা আ আমায় যে, আর ও নদশের ন্য তাহাদের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারতে ফিরিয়া আওয়ার কথা রহিয়াছে। রাজাকারণে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট তাহানের হাওলা করিয়ে নেয়।
রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও রংপুর হইতে প্রাপ্ত খবরে জানা গিয়াছে যে, রাজাকাণ নারলিয়া (রাজশাহী), ইসলামপুর (ময়মনসিংহ) এবং মেগাওয়ে (রংপুর) ৩টি সেতু ধ্বংস করিয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে পরিচালিত ভারতীয় এজেন্টদের প্রDেষ্টা ব্যর্থ করিয়া দেয়। তাহাদের হাতে লুইজন ভারতীয় এজেন্ট নিহত ৩ ৩ জন বন্দী হয়।”
| তুমিল্লায় ৩০ জন ভারতীয় দলে নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেল দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ৩১ আসাণৰ সংখ্যা। কুশিয়া থেকে অবরে বলা হয় । ২৫শে অক্টোবর পুলিশ ও রাজাকারনে এক যৌথ অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানার মার্জিং পুবে ৩০ জন ভারতীয় এজেন্ট নিহত, ৬ জন বন্দী হয়। এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও গােলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। দেশপ্রেমিক নাগরিকদের নিকট হইতে সকল পাইয়া এই অভিযান চালান হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদে! মাথাে ৯টি রাইফেল, ৬টি স্টেনগান, ৩০টি এল, এম, জি, ১০টি হাতবােমা, ৫টি মাইন, ৬ প্যাকেট বিস্ফোরক দ্রব্য, ১টি গান কাটুন ও vশ রাও বিভিন্ন প্রকার গােলাবারুপ পরহিয়াছে।অক।
গাজাকারদের হ| ৫ জন তার এয় জেহথ ও ৫৮ জন বন্দী হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায় দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায়। এপিলি পরিবেশিত খবরে বলা হয় “গাওকাল (নবার) রাজাকারগণ দেশের বিন্নি অংশে জাতীয় এজের ৩ দফা ওমাকাবিলা করে। তাহলে হতে ৫ জন ভারতীয় এজেন্ট নিহত ও ৬ জন না হয়। তাছাড়া রাজাকার একটি ভারী মেশিনগান ৬ বা ক্ষুদ্র মন্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করে। তাহারা ঢাকা জেলা মীরজালুনের উওরে বরলিমের নিকট একদল ভারতীয় এজেন্টের মােকাবিলা করে। তাহাদের হাতে ৪ জন হারতীয় জাল্ট নিহত ও ৩ জন বশ হয়। তাহারা ১৬টি নাইফেল ও ২৩ হাতবােমও উদ্ধার করে।
কমিg! হইতে । এর একটি অবরে বলা হয় যে, রাজাকারগণ নাসির নগরের দক্ষিণে কুসুমবাজিনঃ নিকট এবং জাতীয় হজটের সহিত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উহাতে ৩ জন ওর এক্স এক্স | নহত হ হজ পত্রিকারগণ এ# এর মেশিনগান, ৪টি ১ঠন ও ১০৮টি হাতবোমা উদরি করে’।
________________________________________
ততা মােকাবিলা ঘটে সিলেটের পূর্বে ঢাকার দক্ষিণে। সেখানেও ৩ জন ভারতীয় এজেট বন্দী হয় এবং সকলে সীমান্তের দিকে পলায়ন করে। তাহারা পিছনে এটি রাইফেল ও ৪১০ রাউন্ড গুলা ১৪৩ টি মাইন এবং ৬ বাক্স গোলাবারুদ ফেলিয়া Uম।’t | | আল-শামস বাহিনীর তৎপরতার সংবাদ জানা যায় ৩ নভেম্বর তারিখের একটি সংবাদপত্রে। এপিপি পরিবেশিত খবরে বলা হয় :
পাল (মাদার) রাকানরদের আল-শামস্ শাখা ময়মনসিংহ, যশাের ও চট্টগ্রামে সাফল্যের সহিত ৩টি অভিযান পরিচালনা করে। ময়মনসিংহে ‘তাহারা কিশােরগঞ্জের গি-পর্বে সুরিয়া হেটলের একটি গোপন আমায় হানা দেয় এবং ২টি ষ্টেনগান, ১টি রাইফেল ও ৫টি হাতবােমা উদ্ধার করে। এইসব অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারকালে তাহারী একদল আ{তীয় এজেন্টের সম্মুখীন হয় এবং ভাহালের তিনজনকে হত্যা করে। অন্যরা পলায়ন।
চট্টগ্রাম হইতে এক রিপাের্টে বলা হয়, দেশপ্রেমিক নাগরিকদের নিকট হইতে সন্ধান পাওয়ার পর আল-শামস্ দলের লােকেরা চট্টগ্রামের উত্তরে হাটহাজারীতে একটি লোকের বাড়িতে হানা দিয়া তথা হইতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক বই-পুস্তক উদ্ধার করে। হ্যা বাড়ির মালিকদের গ্রেফতার করে।
যশােরে আল-শামস্ দলের লােকেরা ঝিনাইদহের দক্ষিণ-পূর্বে আড়পাড়া ভারতীয় এজেন্টদের সহিত সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং তাহাদের ৪ জনকে হত্যা করে। আল-শামস ললেন একজন আহত হয়।
ভারতীয় এজেন্টদের পদস্থ কর পর আল-শামসের লােকেরা একটি অস্ত্র স্ত্র বারদাগার আবিষ্কার করে। ভারতীয় এজেন্টগুণ উহা রক্ষার চেষ্টা করিতেছিল। আলশামসের লােকেরা তথা হইতে ১৩টি রাইফেল, ২৪টি শর্টগান, ১০৮টি মাইন এবং ৬০। পাট বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে।
রাজাকারদের আরাে তৎপরতার সংবাদ জানা যায় ৫ নভেম্বর তারিখের সংবাদপত্রে। “দৈনিক পাকিস্তান এসব তলতার কথা উল্লেখ করে লিখলাে :
| পিরােজপুর, ৪ঠা নভেম্বর। মহকুমার নাজিরপুর হনির রাজাকাররা থানা পুলিশের। সাহায্যে সাতকানিয়ায় একদল ভারতীয় চৱেৱ সঙ্গে সাহকিত্তার সাথে আড়াই করে। সংঘর্ষে ৪ জন এরতীয় চর নিহত হয়েছে এবং একজন ভারতে তৈরি একটি স্টেনগান, একটি রাইফেল ও দুটো স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রসহ ধরা পড়েছে বলে এক সরকারি হাঅাইটে আকাশ। ভারতীয় চর লুতফর রহমান জানায় যে, তাদের ভারতে ট্রেনিং দেয়া হয়েছে এবং কারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অস্ত্রশস্ত্র ও গােলাবারুদ সরবরাহ করেছে।
এপিপি পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, রাজাকাররা দ্রুত অভিযান চালিয়ে বান্দরবন এলাকা। এক ভারতীয় চরনের নির্মূল করেছে। তারা দুজন ভারতীয় জরকে হত্যা ও মুহনকে বশী করে। এছাড়া তারা ভারতে তৈরি বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে। এসব ভারতীয় চর স্থানীয় লােকদের হয়রানি করেছিল, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিগ্বিল ও সম্পত্তি
সিলেট থেকে প্রাপ্ত অবরে প্রকাশ, রাজাকারদের আল-শাম বাহিনী সুনামগঞ্জের আর পশ্চিম এলাকায় টহল দেয়ার সময় দুটি সন্দেহজনক নৌকাকে চ্যালেঞ্জ কলে।
________________________________________
অারােহীরা তাদের প্রতি গুলি তে শুরু করে। ফলে একজন রাজাকার আহত হয়। রাজাকাররা সাথে সাথে পাল্টা গুলি চালালে নৌকার আরােহীরা পানিতে লাফিয়ে পড়ে পালাবার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের ৪ জন নিহত হয়। রাজাকাররা নৌকা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করে। ভৈরব বাজার থেকে প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ আল বল বাহিনী ভৈরব বাজার থেকে ৩ মাইল উত্তর ণে শিমুলকান্দিতে ভয় চরসের গোন আয় হানা দিয়ে ৬টি রাইফেল, ৪টি স্টেনগান, ৮টি বেয়নেট ও গােলাবারুদ উদ্ধার করে।
ভারতীয় চররা রাজাকারদের দেখামাত্র আগুড়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। ব্রাহ্মণবাড়ীয়া থেকে প্রাপ্ত অপর এক খবরে বলা হয়েছে যে, রাজাকাররা বিদ্যাকোটের কাছে ভারতীয় চসের, এক সংযে, ৩ কে হত্যা করেছে। অপর ৫ জন সশস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছে।”
এ সময় রাজাকারদের পাশাপাশি আল বদর ও আল শামস বাহিনীর তৎপরতাও বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এ সম্পর্কে এপিপি পরিবেশিত খবরে বলা হয় :
‘গতকাল (বুধবার) রাজাকারদের আল-পর ও আল-শামস শাম রাজশাহী, রংপুর ও বড় ঐ ভাল ভারতীয় এজেন্টকে হত্যা করছে। রাজশাহী জেলার বড় ইমর রেল সেতুর কাছে রাত্রে ভারতীয় এজেন্টরা এটি ডিনামাইট স্থাপনের সময় টহলদানৱত আলশামস বাহিনী তাহাদিগকে দেখতে পায়। ভারতীয় এজেন্টরা সঙ্গে সঙ্গে পজিশন গ্রহণ করে, স্থি রাজাকারদের আক্রমণের মুখে দুইটি মৃতদেহ ফেলিয়া অন্যরা পলাইয়া যায়।
পরে রাজাকার বাহিনী সেতু হইতে বিস্ফোরক দ্রব্য অপসারণ এবং দৃকতিকারীদের ফেলিয়া যাওয়া দুইটি রাইফেল উদ্ধার করে। | হলুরের রাজয়ৈ ভারতীয় এজেণপের সহিত অপর এক সাথে রাজাকাররা ৩ জন সুতিকারীকে হত্যা এবং তাহাদের নিকট হইতে দুইটি রাইফেল ও ৩টি শটগান উদ্ধার করে। এ এলাকায় জাতীয় এতােগণ কর্তক টেলিফোন লাইন নষ্ট করার সময় উক্ত সংঘর্ষ হয়। | রংপুর হইতে প্রাপ্ত এক খবরে জানা যায় যে, আল-শামস বহন কড়কমার কাছে একটি আবর্জনা সৃণ হইতে ১ শত ৫০ পাউa বিস্ফোরক দ্রব্য, ৩৯টি মাইন এবং ১ শত্র ১১টি গ্রেনেড উদ্ধার করে।
| বগুড়া হইতে প্রাপ্ত এক নবরে জানা যায় যে, আমি দিখিন কাছে নৈক শত্রি কমিটির সম্পদের বাড়িতে হানা দেওয়ার উদ্ধেশে ভারতীয় এজেণ তথাৰ গমন করিতেছে শুনিতে পাইয়া আল-বলর বাহিনী তাহাদের অনুসরণ করে এবং ছোট-খাট এক সংঘর্ষের পর তাহারা ২জন লেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজনের গায়ে অলীর আঘাত লাখ ই৮ |
রাজাকারদের আল-মসূ শাখার আরো তৎপরতার সংবাদ পাওন। গেল ইমোক’এর ৬ নভেম্বর সংখ্যায়। গত বৃহস্পতিবার এপিপি পরিবেশিত খবত্রে বলা হয় :
ভৈরব বাজার ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া হইতে রাজাকারদেনা মনমান নৈতিক মনোবল ও কার্যকারিতার খবর ঢাকায় পৌছিতেছে।
সিলেট হইতে এক রিপাের্টে বলা হয়, রাজাকারদের আল-শামস শাখার লােকেরা গতকাল সুনামগঞ্জের উত্তর-পশ্চিমে ইল সানকালে দুইটি নৌকাকে সন্দেহজনক ৰে
________________________________________
তাহিরপুৱেৱ নিকটবর্তী হইতে দেখে। যাত্রীদের সনাক্ত করার জন্য বাজাকারগণ নৌকাগুলির কাছে পেীছিলে তাহাদের প্রতি গুলি বর্ষণ করা হয়। একজন রাজাকার আহত হয়। রাজাকারগণ তৎক্ষণাৎ গুলীবর্ষণ করিতে শুরু করিলে নৌকার লােকেরা জান বাচাইবার জন্য পানিতে মাইয়া পড়ে। তাহাদের ৪ জন নিহত হয়। নৌকা হইতে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র ও গােলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। ইহাতে বুঝা যায় তাহাৱা উক্ত এলাকায় তাহাদের সহযােগিদের জন্য গােলাবারুদ বহন করিতেছিল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া হইতে এক রিলাের্ট বলা হয় যে, রাজাকারগণ বিদ্যাকোটের নিকট ভারতীয় এজেন্টদের সহিত এক সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং তাহাদের তিনজনকে হত্যা করে। বাকী ৫ জন রাজাকারদের নিকট আত্মসমর্পণ এবং তাহাদের রাইফেল ও হাতৰােমার ব্যাগগুল তাহালের কাছে হস্তান্তর করে।”
নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ৪ জন ভারতীয় এজেন্ট নহত হওয়ার সংবাদ জানা যায়। পত্রিকায় বলা হলো :
পিরােজপুর মহকুমার নাজিরপুর থানায় রাজাকারগণ থানা পুলিশ সহযোগিতায় সাহসিকতার সহিত একদল ভারতীয় এজেন্টের মােকাবিলা করে। ইহাতে ৪ জন ভারতীয় এজেন্ট নিহত এবং ভারতীয় ছাপমারা একটি স্টেনগান, একটি রাইফেল ও অপর দুটি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রসহ একজন ভারতীয় এজেন্ট খৃত হয়। গ্রেফতারকৃত ভারতীয় এজেন্ট লুৎফর রহমান বলেন যে, তাদেকে ভারতে ট্রেনিংদান এবং ভাঙীয় সেনাবাহিনী অস্ত্রশস্ত্র ও গােলাবারুল সরবরাহ করিয়াছে।২০
আল-শামস্ ও আল-বদর বাহিনীর আরাে তৎপৰাৱ সংবাদ পাওয়া যায় “দৈনিক। ইত্তেফাক পত্রিকার পাতায়। এপিপি পরিবেশিত খবরে বলা হয় :
| রাজাকার বাহিনীর আল-শামস ও আল-বলৰ গ্রুপ গত শনিবার কুমিল্লা ও রাজশাহী জায় দুইটি সফল অভিযান চালায়। তুমিল্লা জেলায় জাহাৱা ৫ জন ভারতীয় এজেকে জ্যা করে। তাহারা ১৮৫০ রাউণ্ডসহ ১০টি রাইফেয়া, গোলা-বারুলের ১১টি ম্যাগাজিনসহ ২টি স্টেনগান, ৯৫টি হাতবােমা ও ১৩০ পাউণ্ড বিস্ফোরক দ্রব্য দখল করে।
কুমিল্লার খবরে বলা হয় যে, আল-শামস, রাজাকাররা জানিতে পারে যে, শান্তিপ্রিয় শনিকদের হয়রানি করার জন্য একদল ভারতীয় এজেন্ট কুমিয়া জেলার অন্তর্গত পাদপুরের দক্ষিণে অবস্থিত অপসা আমি অমুখে গ্রসর হইতেছে। ইহাতে রাজাকাররা আগে ভাগেই গ্রামটিতে পোই তাহাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ফলে ৫ জন ভারতীয় এজেন্ট নিহত হয়। অন্যান্য এজেন্ট ৩৭৫ রাউঞ্জ পিসহ ৩টি, রাইফেল ২টি গােলাবারুদের ১১টি ম্যাগাজিনসহ ২টি স্টেনগান এবং ২০টি হাতবােমা ফেলিয়া পালাইয়া
| রাজশাহীর খবরে বলা হয় যে, আল-বদর রাজাকাররা! গতকাল (শনিবার) রাজশাহী জেলার নওগাঁর ১০ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত চেীধুরী হবানীপুরের নিকট ভারীয় কেউসের এক গোপন আস্তায় হানা দেয়।
কিন্তু এজেব্রা পূর্বেই উহা টের পাইয়া রাজাকারদের আগমণের পূর্বে ১৭৫ রাউঞ্জ। গুলিসহ ৭টি রাইফেল, ৩৫টি হতনােমা এবং ১৩০ পাউঞ্জ বিস্ফোরক দ্রব্য ফেলিয়া সরিয়া।
________________________________________
অনুষ্ঠিত হয়। এরপর এক মিছিল বেবােধ।। গণজমাতে পূর্ব পাকিষান ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি নাৰি আলী আহসান মােহাম্মদ এনাহিল এই বত্র দিবস উপলক্ষে সংঘের পক্ষ থেকে একটি ৪ দফা চেষণা করেন। তিনি ঘোষণা করেন যে
১, “দুনিয়ার বুকে হিন্দুস্তানের কোন মানচিলে আমরা বিশ্বাস করি না। যতদিন পর্যন্ত দুনিয়ার বুক থেকে হিন্দুস্তানের নাম মুছে না নেয়া যাবে ততদিন পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেব
।” লাইব্রেরী সমূহের প্রতি লক্ষ্য করে তিনি তার দ্বিতীয় দফা ঘােষণা করেন। তিনি বলেন।
২, “আগামী কাল থেকে হিন্দু লেখকদের কোন বই অথবা হিন্দুদের দালালী করে লেখা পুস্তকালি লাইব্রেরীতে স্থান দিতে পারবেন না বা বিক্রি ৰা প্ৰচাৰ তে পারবেন না। যদি কেউ করেন তবে পাকিস্তানের অস্তিত্বে বিশ্বাসী সেচ্ছাসেবকরা জ্বালিয়ে প্রশ্ন করে দেবে। জনাব মুজাহিদের বাকি দুটি ঘােষণা হল :
৩. পাকিস্তানের অস্তিত্বে বিশ্বাসী সেচ্ছাসেবকদের সম্পর্কে বিরূপ প্রচার করা হচ্ছে। যায়! এই অপপ্রচার করছে তাদের সম্পর্কে হুশিয়ারা থাকুন এবং
৪, বাংল মোকাদ্দসকে উদ্ধান্তের সংগ্রাম চলবে। জনাৰ মুহি# এই ঘোষণাকে বাস্তবায়িত করার জন্য ছাত্র; কৃষক, শ্রমিক, জনতার প্রতি আহবান জানান, তিনি বলেন,-“এই মেগা বাস্তবায়িত কথার জন্যে শিৱ উ করে, লুকে ফোন নিয়ে মুর্শে। মুজাহিদের মতাে এগিয়ে চলুন। প্রয়োজন হলে নয়া লিঃ) পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে আমরা তাহার পানি পতাকা উত্তোলন করবাে”।
জমায়েতে ঢাকা শহর ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি জনাব মােঃম্মিদ সামসুল হক অE পারেন। বক্তা দৈন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র সংঘের সাধারণ সম্পাদক জনাব মীর কাশেম আলী। তিনি বলেন যে, আজকের বদর দিবসের শপথ হলাে :
ক. ভাতের আক্রমণ রুখে দাড়াবাে । গ, দুস্কৃতিকারীদের খতম করনােগ, ইসলামী সমাজ কায়েম করলাে। তাৰ মােহাম্মণ শামসুল হক বলেন যে, আজয়ে এই ১৭ই রক্তমানে পলি ‘ন শবেণী বীরত্বপূর্ণ ঘটনাব আলঃ Gধ হয় আমর) বাইস। শক্তিকে নির্মূল করার শপথ নতুন করে নিচ্ছি। জমায়েতের প্রত্যেক শক্ত খানিস্তানে অখণ্ডতা ও সংহতি রক্ষার জন্যে দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা দোষণা করেন।
পাকিস্তানের সীমান্তে ভারতীয় হামলা চলছে বলে উল্লেখ করে জনগণকে এর পঞ্চদ্ধে একাত্ম হয়ে সংগ্রাম করার জন্যে তারা আহবান জানান। এওসি বদর যুদ্ধ। থেকে প্রেরণা ও শিক্ষা লাভের জন্য তার আহবান জানান। সার পর এক মিছিল, সেপেITয়। নওয়াবপুর রোড হয়ে বাহাদুরশাহ পার্কে গিয়ে তা শেষ হয়। মিস্থিলে কয়েকটি শ্রেণিরান ছিল : ১, আমাদের রক্তে পাকিস্তান টিকবে। ২. বীর মুজাহিদ অস্ত্র ধর, ভরতকে অহম কর। ৩, মুজাহিল এগিয়ে চল, কলকাতা হাল কৰী । ৪. বদর দিবস সফল হােক। , ভারতণ চরণে অহন না ইভ্যাদি।
“ভারতীয় এজেন্টদের দুটি দল উৎখাত’ শিরােনামের সংলাদে রাজশাহী এবং চট্টগ্রামে Wাকার বাহিনীর তৎপরতার বিষয়টি আদেয়া লাষ্ট করে। এপিপি পরিবেশিত খবরে বলা
________________________________________
“গতকাল (সোমবার) রাজাকার ও মুজাহিদরা বাশার এবং চট্টগ্রাম জেলায় পৃথক পৃথক অভিযান চালাইয়া ভাৱতীয় এজেন্টদের সুইটি দলকে উৎখাত করিয়াছে।
| রাজশাহী হইতে প্রাপ্ত এক খবরে জানা গিয়াছে যে, এক ভারতীয় এজেন্ট ভারপুরের কাছে একটি সেতু ধ্বংস করার কাজে যখন নিয়ােজিত ছিল, সেই সময় তাহারা রাধাকাবদের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। ভারতীয় এজেরাে কয়েকবার গুলীবর্ষণ করে, কিন্তু কিছু সময় পরেই অসমাপ্ত কাজ ফেলিয়া তাহারা পিছনে দৌড়াইয়া পলাইয়া যায়। তবে রাজাকারদের হাতে হালের ১ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়। ইহা ছাড়া তাহারা ২টি রাইফেল, ২টি বাইনােকুলার এবং ১ শত ৫০ পাউণ্ড বিস্ফোরক দ্রব্য ফেলিয়া
| চট্টগ্রাম হইতে প্রাপ্ত অপর এক খবরে জানা গিয়াছে যে, বাড়বকর কাছে একেল ভারতীয় এজেন্টের সহিত মুজাহিলশের এক সংঘর্ষে ৩ জন এতে নিহত হয় এবং তাহসিনা নিকট হইতে হাজার রাউজ কুর, ১শত ১০টি গ্রেনেড, ১৮ মাইন এবং ৪ শও পাও বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
বন্ত দিবস পালন উপলক্ষে কেবল জাকাতেই অনুষ্ঠানের আয়ােজন করা হয়নি-রাজশাহী, যশােরের কোট চাদপুর, কুমিল্লার চাঁদপুর এবং টাঙ্গাইলসহ অন্যান্য স্থানেও সত। মিছিলের আয়ােজন করা হয়। রাজশাহীতে আয়ােজিত সভা সম্পর্কে সৈনিক সংগ্রাম’ পাণFB লেখা হলাে :
রাজশাহী, ৮ই নভেম্বর -ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে গতকাল হয় ভুবন। মােহন পার্কে আলবদর বাহিনীর বেসামরিক বিভাগের উদ্যোগে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় আলবর বাহিনী প্রধান জনাব আব্দুল হাই ফারুকী।
এক তার বার্তায় প্রকাশ, সভায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে নবনির্বাচিত এম, এম, এ একাকেট আফাজউদ্দীন আহমদ এবং এম পি এ উকিলার আয়েন উদ্দীন আহমদ বশরফুদ্ধের প্রেরণায় উক হয়ে পাকিস্তান বিরােধী চক্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানাের জন্য জনগণের প্রতি আহবান। জানান। তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুশা প্রচারণা চালানাের জন্য রাতের ইব্র নিন্দা
গতাপতির ভাষণে উনাব আবদুল হাই ফারুকী জনগণকে পাকিস্তান ও ইসলামের দুশমনলের নিল করার কাজে আলবদনা সেনালের সহায়তা করার আহন আলময় গই প্রস্তাবে ভারতের মূল্য প্রচারণার শিক্ষা ও উনকে বদর সেনাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহবান জানানাে হয়। এক প্রস্তাবে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতার নিন্দা করা হয় এবং তা কলিয়ে নয়া শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার দাবী করা হয় কোটচলিপুরে আয়ােজিত অনুষ্ঠান সম্পর্কে পত্রিকায় করা হলাে :
। “ইসলামী ছাত্র সংঘ ও জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় মডেল স্কুলে গত ৭ই নভেম্বর বদর দিবসে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব কলোনি মওলানা আবদুল হামিদ। … বক্তাগণ বর্তমান
শ ইতিহাসকে সামনে রেখে পাকিস্তানের প্রতিটি নাৱিককে যথাযথ শিক্ষা গ্রহণ করার
ত আকবর আকন পরামর্শ দেন। সতীয় যুবাঙ্গি ভারতের অর্ক পাঁয়তারাকে নস্যায় করার জন্য জনগণের
________________________________________
‘মির চানপুরেও বদর দিবস উপলক্ষে ইসলামী ছাত্র সংঘের কর্মী সভার আয়োজন করে। জালপুর কলেজ মাঠে আয়ােজিত মত সতিত্ব করেন ছাত্রসহ নেতা মােহাম্মদ হাবিবুল্লাহ।
| উলিইলেও কলয় শিবস উপলক্ষে ইসলামী ছাত্র সংঘ ও জমিয়তে তালাবায়ে আৱাৰিয়ার উ7েগে আলােচনা সভা ও মিছিলের আয়ােজন করা হয়। আর রহমান সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় বক্তৃতা করেন অধ্যাপক আব্দুল মালেক, হাকিম হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক হাবীবুর রহমান, আবদুল্লাহেল ওয়াছেক এজতোকেট আবদুল অৱ মােক, এসএম. রেজা, ভাৱ আবলুল বাসেত ও অন্যান্য নেতৃব। জামায়াত কী অধ্যাপক এম, এম, আব্দুল কাদের আলবন্দরের উপর স্বরচিত কবিতা পাঠ করে
বক্তাগণ ‘খোন্দাদ্রোহী শকি’ তথা হিন্দু সম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সদা জগত থাকায় জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানান। আলোচনা শেষে সমবেত হবার যে একটি মিছল বের হয়। এতে আলৰৱ জিন্দাবাদ’, ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’, ‘পানিস্তানের উৎস কি লাইলাহা ইল্লাহ’ প্রভৃতি শ্লোগান সহকারে মিছিলটি জামে মসজিদে গিয়ে শেষ হয়।
এ দিকে ভারতীয় এজেন্টদের তিনটি আস্তানা নিশ্চিহ্ন’ শীর্ষক সংবাদ পাওয়া গেল। “ইয়েফাক পত্রিশার ১৫ নভেম্বর সংখ্যায়। সংলাপে বলা হলাে :
| পূর্ব পাকিস্তান সিভিল আর্মত ফোর্সেস (ইপকাফ) ও রাজাকারগণ গতকাল (মঙ্গলবার) বরিশাল, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহে ভারতীয় এজেন্টদের তিনটি গােপণ আড6 নিশ্চিহ্ন কয় | গলিয়া গণ্ডল ঢাকা। প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ। এপিপি পরিবেশিত এই অবর বলা হয়, ও এন ভাৱধী এজেন্ট নিহত এবং উল্লেখযোগ্য পরিমা অশস্ত্র ও
লালার উদ্ধার করা হইয়াছে। | বরিশাল হইতে এক রিপোর্ট বলা হয়, প্রায় ১০ জন ভারতীয় এক বাণীপাড়ার [নকট একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে আত্মগোপন করিতেছিল। ইপকফি-এর লােক ও রায়ণঞ্চাশ হঠাণ, তাদেরকে ধরিয়া ঘটনাস্থলে নিরস্ত্র করে। তাহJপর একজন লাগালালের চেW কৰিলে ওাহকে হত্যা করা হয় এবং অন্যদের জাতি ধরা হয়। তাজ]:পর নিকট হইতে ৬টি রাইফেল, ২৭টি হাতবােমা ও ৩০টি মাইন উদ্ধার করা হয়।
কুমিল্লা হইতে এক রিপাের্টে বলা হয়, ব্রাজকারণ সাতমুরার নিকট ভারতীয় এজেন্টদের একটি গােপন আমায় হানা দিয়া ২ জনকে হত্যা এবং একটি হালকা মেশিনগান, ৫টি রাইফেল ও ৪৫০ পাউণ্ড বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে।
ইপাৰ লােকেরা মায়মনসিংহ জেলার চকপাড়ার নিকট ভারতীয় এজেন্টদের অপর এক আস্তানা নিশ্চিহ্ন করায় দেয়। তিনজন ভারতীয় এজেন্ট নিহত হয় এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অস্ত্র ও গােলাবারুদ উদ্ধার হয়।
চট্টমে ৪০ জন দুস্কৃতিকারী গ্রেফতার শিরােনামে সংবাদ পাওয়া যায় পত্রিকার ১১ নভেম্বর সংখ্যায়। সৈনিক ময়ম’ এ সূর্কে জানালাে :
| “baম, ১০ই নভেম্বর চট্টগ্রামের মল-কদর বাহিনী গতকাল সন্ধ্যায় চাকতাই এ এক মহান চালিয়ে ৪০ জন কৃতকারীকে গ্রেফতার করেছে। দেশপ্রেমিক জনগণের আয় থেকে প্রাপ্ত প্রকারের ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযানকালে চীথামে কৃতিকারীদের তৎপরতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ গােপন দলিলপত্রও আলবদর বাহিনী হস্তগত করে।
________________________________________
এ অভিযানকালে আলবদর বাহিনী কুষ্টিকারীদের কাছ থেকে ১টি গান, ২টি রিভলবার, ৯টি গ্রেনেড, ১টি ইলেকট্রিক ভােল্টেজ টেস্টিং মেশিন, ১টি গুলি ভর্তি স্টেনগান ম্যাগঞ্জিন, ২০ বাউ৫ রিভলবারের গুলি, ৪৭ রাউণ্ড পিস্তলের গুলী, ৪৫ রাউণ্ড রাইফেলের কলী ও ৩ হাজার প্রচারপত্র উদ্ধার করে।”
| ভারতীয় এজেন্টলেৰা ৪টি নৌকা নিমজ্জিত’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় ১২ নভেম্বর তারিখে। এপিপি ও পিপিআই পরিবেশিত খবরে বলা হয় ।
| ‘রাজাকারসের আল-শামস আললয় এপ গতকাল বৃহস্পতিবার) রংপুর এ রাজশাহী জেলায় ভারতীয় এজেন্টদের ৪টি নৌকা ডুবাইয়া দেয়। তাহারা কুমিল্লা এবং যশােহর cdংলায় তারায় এজেন্টদের গোপন আওসমূহ, ফংস করে।
_ রংপুর হইতে এক রিপাের্টে বলা হয় : ‘অলি-বদর রাজাকারগণ দেশপ্রেমিক নাগরিকদের নিকট হইতে নিতে পারে যে, তাৱষ্টয়া মাগুব্রিকআণ দৃফিসন্ধি নিয়া তিতা। নী লি নৌকাযোগে স্নাসর হইতেছে। একাকারগণ গাইবান্ধার উত্তরে পানীর নিকট অতর্কিতে ‘জামণ চালাইয়া তিনটি মেণিই ডুবাইয়া দেয়। এই অভিযানে পাঁচজন ভাৱতীয় কােন নিহত হয় এনং অপর চারজন পরা পড়ে। তারা স্বীকার করে যে, তাহারা একটি স্থানীয় এলাকায় ছটকনিতে হয়েছিল।
ভারতীয় এজেন্টগণ রাজশাহী জেলায় প্রবেশের জন্য সীমান্ত অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে আল-শামস বাঞ্চাকারগণ নবীনগরের 3 ৬ারী রেশদের অপর একটি নৌকা জুনাইয়া দেয়। নৌঞ্চার তিনজন আরোহী তাহাদের অস্ত্রশস্ত্রসহ |ঞ্জকারদের নিকট আত্মসমর্পণ করে এবং অপর দুইজন নিহত হয়।
| কুমিরা হইণ্ডে এক নিলােট | হয় ; আল-শামস বাজাকানগুগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ১০ মাইল Hক্ষণ-পশ্চিম সরাইলের কি গণ্ডাৰ এজেন্টদের গোপন আসায় আক্রমণ হালায়। ভারতীয় এগশ কয়েকটি গুলী ছেড়। কিন্তু অল্পক্ষণের মধ্যেই, তাহারা পরাভূত হয়। তাহাদের নিকট হইতে দুই হাজার রাউণ্ড গুলিসহ ৯টি রাইফেল, এটি bনশন এবং ২টি বেয়নেট উদ্ধার করা হয়। | যশােহরুখ আ লুপ্ত হন, অরূপ একটি রিপাের্ট পাওয়া গিফII। থা! ‘আল-দর রাজাকারগণ শুনিয়া টলের অলর একটি আজ নিই করিয়া দেয়। এই অভিযানে দুইজন ভারতীয় এজেট নিহত হয়। বাৱিগণ আচা হইতে ৬ ম্যাগাজিন গোলাবারুদসহ, একটি মেশিনগান, ১৬ শত বাউঞ্জ গুলাসহ ১৫টি রাইফেল, ১২০টি হাতবােমা ও ৩৮টি মাইন উদ্ধার করে।
রাজাকার বাহিনীর তৎপরতা বিষয়ক আধ্যে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় ১৩ নভেম্বর সংখ্যায়। সংবাদে বলা হয়
গতকাল (শুক্রবার) রাজাকার বাহিনী ময়মনসিংহে শান্তিপ্রিয় জনগনে বিপদের মুখ হইতে রক্ষা করছে। তাহারা বহুড়ায় একটি এই রক্ষা করে। রাজধাকার বাহিনী ৪ জন ভারতীয় অনুচবকে হ্যা করে ১৯ জনকে গ্রেফতার করে।
এপিপি’ৰা এক খবরে বলা হয়, ময়মনসিংহ, হইতে প্রাপ্ত সংখ্যান্সে আনা যায়, আলবন-র রাজাকার বাহিনী এই নামে এক সংবাশ পায় যে, গফরগাও-এর নিকট শোলাসিয়া। বামের শান্তিপ্রিয় জনগণ ভাৱতীয় অনুচরদের হুমকীর সম্মুখীন হইয়াছে। রাজাকার বাহিনী।
________________________________________
*খবর পাইয়া উক্ত গ্রামের দিকে অগ্রসন্ন হয়। তাহারা এরামের নিকট হইলে ভারতীয় অনুচররা রাজাকারদের লক্ষ্য করিয়া গুলীবর্ষণ করে। রাজাকার বাহিনী পাল্টা গুলী চালায় এবং শেষ পর্যন্ত তাহারা গ্রামে প্রবেশ করিতে সক্ষম হয়। রাজাকার বাহিনী ৬ জন ভারতীয় অনুচরকৈ নিহত এবং ১ জনকে গ্রেফতান্ত্রি করে। | আল-শামুস রাজাকার বাহিনী টহলদীনের সময়ে বগুড়া জেলার ধুনটেন্য নিটলত একটি প্রজের আশেপাশে কয়েক ব্যক্তিকে সন্দেহজনকভাবে ঘুরাফিরা করতে দেখে। রাজাকার বাহিনী তহন তাহাদের চ্যালেঞ্জ করিলে তাহারা পলায়ন করে। রাজাকার বাহিনী হ্রিজের নিকট আসিয়া প্রায় ৬৫১ পাউন্ড ওজনের বিক্ষোৰু ই এক বাক্স ডেটোনেটর উদ্ধার করে। সম্ভবত: এই সমস্ত ভারতীয় অনুচর ব্রিজটি ধ্বংস করার কন্য প্রস্তুতি গ্রহণকালে রাজাকার বাহিনীর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়।” | ব্রাজাকারদের তৎপরতা সংবাদ দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকার ১৫ নভেম্বর সংখ্যাতেও প্রকাশিত হয় । এপিপি পরিবেশিত সংবাদে বলা হয় : | গত শনিবার রাজাকার ভারতীয় এজেন্টদের হামলা প্রতিহত করিয়া মান্দাশ্রীপুরবরিশাল নেড়ে তিনটি সেতু রক্ষা করিতে সমর্থ হয়। টক ৩টি সেতু চদিদশী, বানসার এবং বাটাজোরে অবস্থিত। | কুমির হইতে প্রাপ্ত আরেক সংবাদে বলা হয় যে, প্রায় ৫০ জন ভারীয় এজেন্ট পাকিস্তানী এলাকায়। অথলেশ করিয়া গুণবতী রেলস্টেশনের উওরে অবস্থিত বাংলান সীমান্ত এলাকায় সমবেত হয়। রাজাকারগণ শনিবার ভোৱে উক্ত এলাকায় হামলা চালাইয়া ২ জন ভরিতীয় এজেন্টকে নিহত এবং ৫ জনকে গ্রেফতার করে। অন্যরা সীমান্তের ওপারে পলাইয়া যায়। তাহাৱা ৩৩০০ রাউণ্ড গুলিসহ ১৬টি রাইফেল, একটি মেশিনগান, একটি স্টেনগান, ১২১টি হতনােমা এবং ১৬০ পাউণ্ড বিস্ফোরক দ্রব্য ফেলিয়া যায়। | ১৬ নভেম্বর তারিখেও রাজাক্কায় তৎপরঙ্গ সম্পর্কিত সংবাদ প্রকাশিত হয়। এপিপি পরিবেশিত এক খবরে বলা হয় : | ‘রাজাকারগতকাল (সােমবার) সিলেট ও পাবনায় ভারতীয় সুত্রিকাৱীবাহী ৯টি নৌ ডুবাইয়া লিয়াছ। এ সম্পর্কে প্রান্ত খবরে জানা যায় যে, সিলেটের জকিগঞ্জের কাছে প্রায় ২ শত ভারতীয় এজেন্ট নৌকা করিয়া পাকিস্তানী এলাকায় প্রবেশ করিতেছে কনি ৫০ জন রাজাকার উক্ত এলাকায় গমন করে এবং শক্রর প্রতীক্ষায় ওঁৎ পাতিয়া থাকে। যথাসময়ে নৌকাল সীমান্তের এপাৱ আসিয়া পেীছাইলে রাজাকাররা তাহাদের প্রতি গুলীবর্ষণ শুরু করে। ভারতীয় এজেন্টও পাল্টা গুণী চালায় এবং এৱে নামার ব্যর্থ চেষ্টা করে। তবে তাহাসের অধিকাংশই নৌকাতে থাকা অবস্থা গুলীবিদ্ধ হয় এবং অনাদের নিমজ্জিত নৌকার সহিত সলিল সমাধি ঘটে। শুধু অল্প সংখ্যক ভারতীয় এতে ওপারে চলিয়া যাইতে সক্ষম হয়। | পাবনা হইতে প্রাপ্ত এক খবরে জানা গিয়াছে যে, পাবনা জেলার টিচোরীর আছে রাজাকারদের লীতে ভারতীয় এজেন্টবাহী ৫টি নৌকা উল্টাইয়া গিয়াছে। গতকাল (সােমবার) রাজাকাররা রংপুর ও কুমিয়ায় ১টি রেল সেতু ও ১টি রাস্তার সেতু রক্ষণ করিয়াছে বলিয়া আনা পিছে। রেল সেতুটি হইল রংপুর জেলার গাইবান্ধার ২ মাইল দক্ষিণে ত্রিমােহনীর কাছে এবং রাস্তার সেতুটি হইল কুমিল্লা জেলার লাকশামের ৮ মাইল পশমে রাজাপুরের কাছে।
________________________________________
এ দিকে সমাজের সকল পর্যায়ে শাস্তিসেনা’ নামে একটি সংগঠন গঠনের সংবাদ পাওয়া গেল একটি দৈনিকের ১৭ নভেম্বরে সংখ্যায় ।
‘শাস্তিসেনা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন প্রদেশের সকল পর্যায়ে মহল্লায়, থানায় গঠিত হয়েছে- এমন সংলানি এলপি পরিবেশন করলাে। খবরে জানা যায়, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ডা: এ, এম মালিক মামড়ার নিয়মিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সংগঠনের মূল কাজ হবে যথাযথ বিচারের মাধ্যমে শান্তি ও সম্প্রীত রক্ষা করা ।”৭৪
৩ নভেম্বরের মধ্যভাগে সিলেট, রংপুর, কুমিা এবং পাবনা জেলার বিভিন্ন স্থানে রাজাকার বাহিনীর তৎপরতা সবিশেষ লক্ষণীয়। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। দৈনিক পাকিস্তান পায়। পত্রিকায় বলা হলাে :
‘গতকাল সােমবার রাঙ্গাকররা মিলেটি ও পাবনায় জাতীয় চর বহনক্সায়া ৯ট নৌকন ডুবিয়ে নিয়েছে। ঢাকায় প্রাপ্ত এলিপি পরিবে: রে জানা গেছে, নৌকাযোগে প্রায় দুই শত ভারতীয় চর লিগেটর কিগাথর
কিনী এলাকায় প্রবেশ রঙে যাচ্ছে এই খবর জানতে পেরে ঐ০ জন রাজাকার ৮a এলাকার গমন করে এবং শক্রর অপেক্ষায় ওই পথ থাকে।
মোকাগুলাে সীমান্তের এপাশে আসার সাথে সাথে রাজাকারণ তাদের উপর গুলিবর্ষণ করে। ভারতীৰ উৰা পাল্টা গুলি ছোড়ে এবং ৰাজাকাদের মারধর করার উদ্দেশ্যে নৌকা থেকে নামানাের চেষ্টা করে। কিন্তু তাদেরকে কাজ করার সুযোগ দেয়া হয়নি। তাদের আধিকাংশ নৌকাতেই আঘাত পায় এবং শুন্যান্যরা নৌকা সমেও পানিতে ডুবে যায়। এটি নৌকা ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যান্য নৌকা ভারতীয় এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। | রাজাকারদের গুলিতে পাবনা জেলার ডিকোলির নিকট ভারতীয় চরনাই আরও দুটি নৌকা উন্টে পানিতে ডুবে গেছে। অপর এক খবরে জানা যায় যে গতকাল সােমবার রাজাকাররা রংপুর ও কুমিল্লা জেলায় একটি রেল সেতু ও একটি সড়কসেতু রক্ষা করেছে। রেল সেতুটি রংপুর জেলার গাইবান্ধার ২ মাইল দক্ষিণে ত্রিমােহনিতে অবস্থিত। আর সাড়ক সেতুটি কুমিল্লা জেলার লাকসামের ৮ মাইল পশ্চিমে দুর্গাপুলের নিকট অতি ৫
| দৈনিক ইত্তেফাক’ পএিকার ১৭ নভেম্বর সংখ্যায় একটি ভিন্নধর্মী সংবাদ পাওয়া যায়। পােলােয়ারের সন্ত্রাস পিপলস্ পার্টির চেয়ারম্যান হায়াত মাহমুদ খান শেরও এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, বিরােধীদের খতম কার ঐশ!ই জামাত নাজানি বাহিনী গঠন করেছে।’ শেরপও সাংবাদিক সগােলনে আরাে বেশ কিছু প্রশ্ন উথাপন করেন। এ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় অবরুদ্ধ বাংলাদেশের ‘দৈনিক ইকফাক পত্রিকায় । পরি জানালাে ;
পেশােয়ার, ১৪ই নভেম্বর- সরহাদ পিপলস পাটির চরম্যান জনাৰ হায়াত মােহNল খান শেৱপাও গতকাল এখানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তৃতা প্রসঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানে আল-মম’ ও এল-বদর রাজাকার বাহিনীর সমালোচনা করেন। তিনি অভিযােগ করেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে নিজেদের রাজনৈতিক বিরোধীদের খতম করার জন্যই জামাতে ইসলামী এই বাহিনী গঠন করিয়াছে। তিনি প্রশ্ন করেন, “১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর যুদ্ধের সময় এই রাজাকারগণ কোথায় ছিল?”
________________________________________
সম্প্রতি লাহােরে জনাব ভুট্টোর উপ কথিত হামলা সম্পর্কে তিনি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন শুদণ্ড অনুষ্ঠানের দাবী জানান। এই দুটিনায় ছাত্রসমাজকে ভূত করার চেষ্টার জন্য তিনি জামানের সমালোচনা করেন। তিনি অভিযােগ করেন যে, ম|তে ! এরা কারাই জনাৰ ভূট্টান্ন প্রাণনাশের চেষ্টা করিয়াছিল।।
জামাত অনাৰ তুফাকে কোনরূপ গুরুত্ব দেয় না বলিয়া যে মন্তব্য করা হইয়াছে জনাব শেরপও উহার বিরুদ্ধে আপত্তি করেন। তিনি বলেন যে, ইহ জামাতে পলায়ন মনােবৃঞ্জির বহি:প্রকাশ ছাড়া কিছুই নয়। আঞ্চলিকতাবাদের ইন্ধন পিপলস পাটির হিসাধনের জন্য কতিপয় রাজনৈতিক দল ও সরকারী কার্তিা আঞ্চলিকতাবানে ইন্ধন যােগাইতেছে বলিয়া তিনি অভিযােগ করেন। তিনি জোর দিয়া বলেন যে, পিপলস পাটি একটি জাতীয় দল ৰিষা মতলা ও ভাষা নির্বিশেষে জনগণে খেদমত করা নিজেদের প্রধান কর্তব্য বলিয়া মনে করে।
কাইয়ুম পাকিস্তান বিরােধীদের সঙ্গে হাত মিলাইয়াছেন, কয়টি দক্ষিণপন্থী দলের সঙ্গে জেটি শীধাৰা জন্য গান শেরপাও অন্যতম মুসলিম লীগ এরুশ প্রধান জনাব কাইয়ুম খানের সমালােচনা করেন। তিনি বলেন যে, যাহারা পাকিস্তান কায়েমের পূর্বে ও পরে উহায় বিরােলা ছিলেন, তাহাও জোট রহিয়াছেন।”
এ দিকে পিজ্ঞিপি প্রধান নুরুল আমীন ১৪ নভেম্বর এ সংবর্ধনা সভায় রাজাকারের সংখ্যা ১ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ করার প্রস্তাব করেন। পত্রিকায় বলা হলো :
..দুষ্কৃতিকারীদের কার্যকলাপ ব্যর্থ করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানে রাজাকার বাহিনীর প্রয়ােজনীয়তার || য়েখ করিয়া তিনি বলেন যে, তারা জাঙ্কার সংখ্যা একে অক্ষ হইতে ৫ লক্ষে বুদ্ধি করিতে প্রস্তুত। কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে সহযােগিতা করিস্তেছেন না। তিনি অভিযোগ করেন যে, সরণর অস্ত্র সরবরাহ কিংবী রাজাকারদের তেমন ট্রেনিং দিতেছেন না। তিনি বলেন যে, রাজাকাৰগ প্রদেশের প্রত্যেকেই চিনে কালিয়া সীমান্ত
ক্ষা ও অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির মােকাবিলায় ব্যাপারে সশস্ত্রবাহিনীর পরিপূরক হিসানে নিজেদের যােগ্যতা প্রমাণিত করিতে পারিবে।।
নূরুল আমীন বলেন যে, পাকিস্তান স্বীয় ভূখঞ্জের এক ইঞ্চি জমিও ছাড়িয়া দিতে রাজী। নয়। আমীন বলেন যে, গুটিকতক্ক থিকৃত ব্যক্তি ছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ এক ও অখণ্ড পাকিস্তানে বিশ্বাসী । তিনি আরও বলেন যে, কোন কতিপয় তরুণ ভারতীয় প্রচারণা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী আওয়ামীলীগারদের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়।৭৭
‘রাজাকারদের তৎপরতা সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১৭ নভেম্বর তারিখেও পাওয়া গেল। এপিপি পরিবেশিত সংবাদে বলা হলাে :
রাজাকারগ গতকাল মঙ্গলবার) রাজশাহী এবং পূষ্টা দুইদা মােকাবিলায় ভারতীয় এজেন্টদের দুইটি দল পথুদস্ত করিয়াছে।
রাজশাহী হইতে প্রাপ্ত সংবাদে বলা হয় যে, নওগাঁর ৫ মাইল উত্তণ-পূর্বে কাইকুরী এলাকায় টহলদানে সময় রাজাকারগণ দেখিতে পায় যে, প্রায় ৩০ জন ভারতীয় এক হিনের দিকে অগ্রসর হইতেছে, রাজাকারণ তৎক্ষণাৎ অবস্থান গ্রহণ করিয়া গুলীবর্ষণ
________________________________________
শুরু করে। ভারতীয় এডেটগণ রাজাকারদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। কিন্তু রাজাকান্তলের গুলীতে তাহাদে ২ জন নিহত এবং ৪ জন অহিত হয়। প্রায় ১ ঘন্টা গুলী বিনিময়ের পর তাহা হইলের জেলি পলাইয়া যায়। কুষ্টিয়া হইতে প্রাপ্ত অনুপ খবরে বলা হয় যে, একপল ভারতীয় এজেন্ট চুয়াডাঙ্গার নিকটে একটি সেতু উড়াইয়া দিবার 5ষ্টা করিলে রাজাকারগণ তাহাদের মােকাবিলা করে।
রাজাকার তৎপরতা বিষয়ক সংবাদ ১৯ নভেম্বর তারিখেও মুত্রিত হয়। এপিপি পৱিৰেশিত খবরে বলা হয় ।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাজাকাররা রাজশাহী ও যশোরে দুইটি পৃথক সংঘর্ষে দুইদল ভারতীয় এক্সটের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করিয়া দেয়। রাজশাহী হইতে প্রাপ্ত এক অবরে বলা হয়
“গতরাত্রে বড়াই গ্রামে টহলদানরত রাজাকাররা দেখিতে পাই যে, প্রায় ৩০ গুন ভারতীয় এজেন্ট লুটপাট নবান্ন উদ্দেশ্য ঐ গ্রামে ঢুকিতেছে। তখন তাহায় ভারতীয় এজেন্টদের প্রতি গুলীবর্ষণ শুরু করে এবং যতবারই তাহারা গ্রামে প্রবেশের চেষ্টা করে ততবারই রাজাকারগণ তাহাদের বাধা দান করে। ইহাতে ৪ জন ভাৱতীয় এজেন্ট নিহত হয় এবং তাহাদের নিকট হইতে ৪ শত ২ রাউই গুণীসহ ৪টি রাইফেল উদ্ধার না হয় !
যশাের হইতে প্রাপ্ত অপর এক খবরে জানা গিয়াছে যে, চৌগাছার পশ্চিমে মাসলিয়া এলক্কিায় টালনির একদল রাজাকার প্রায় ৪০ জন ভারতীয় সেন্টকে তাহাদের দিকে আসিতে দেখে এবং সঙ্গে সঙ্গেই তাহারা এজেন্টদের প্রতি গুলীবর্ষণ শুরু করিলে তাহারা ৮টি ম্যাগাজিন ও ৮টি রাইফেল, ৮ শত রাউঞ্জ গুলীসহ ১টি মেশিনগান, ১২টি হাতবােমা ও ৫টি মাইন ফেলিয়া সীমান্তের পাৱ চলিয়া যায়।
নভেম্বর মাসে রাজাকার বাহিনীর বেতন ও ভাতা বৃদ্ধি করা হলাে। ব্রাঙ্গনায় পৰিচামলী সূত্রে বলা হয় : রাকিবিদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করে মুজাহিদদের সমান করা হয়েছে। হ্যান্ডআউটে বলা হয়, প্রদেশে বিলমান অবস্থায় রাজাকাররাও মুজাহিদলের মতাে দেশরক্ষা কাজে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে- এই দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমান পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এখন থেকে তারা সৈন্য এবং মুজাহিদদের মতো বিনামূলাে রেশন পাবে। তবে তাদের তৎপরতা এবং কাজের মান বর্তমান অবস্থার নাচে হলে রাজাক্কাৱৱা বিনা পয়সায় কোনো রেশন পাবে না। খাদ্যের সংস্থান নিজেদেরকেই করতে হবে। ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর রাজাকারদের সংশােষিত কেন ফেল হলাে ; 2
রাজাকার কোম্পানী কমান্ডার ব্রেশনসহ ৩০০.০০ টাকা এবং ব্রেশন ছাড়া
৩৫৫০০ টাকা; * প্লটুন কমান্ডার রেশনসহ ১৩৫০০ টাকা এবং রেশন ছাড়া ১৮০,০০ টাকা; * সাধারণ রাজাকার রেশনসহ ৭৫০০ টাকা এবং রেশন ছাড়া ১২০,০০ টাকা।
এই বেতন হর সে সময় মথেষ্ট আকর্ষণীয় ছিলাে। কারণ একান্তরে ১২০ টাকায় ৪ মন চাল পাওয়া যেত । আসলে দরিদ্র জনগোষ্টিকে প্রলুব্ধ করে রাতে টেনে মানাই ছিলাে এই বেতন কাঠামো প্রধানতম লক্ষ্য। পুরো নভেন্না মাস জুড়েই রাকিরি তৎপরতা অব্যাহত ছিলাে। ২৩ নভেম্বরের সংবাদপত্রে বলা হয় :
________________________________________
গত শুক্রবার রাজাকাররা বরিশাল ও রাজশাহীতে শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করিয়াছে বলিয়া প্রাপ্ত খবরে জানা গিয়াছে। এ সম্পর্কে বরিশাল হইতে এক খবরে জানা যায় মেহেন্দীগঞ্জের শান্তিপ্রিয় জনসাধারণ রাজাকারসে কাছে এই মর্মে একটি সংবাদ জানায় যে, ভারতীয় একেশ কয়েকজন দেশপ্রেমিককে হত্যা করার জন্য Cহদী মামে আগমন করছে। রাজার সঙ্গে সঙ্গেই থায় গমন করে এবং ভৱা এজন্টদের জন্য অপেক্ষা করিতে গায়ে। ইমিথ্যে হলেন তারা (ভারতীয় এজেন্টগণ) মে প্রবেশ করে, রাজাকাররা তাহাদের প্রতি গুলীবর্ষণ শুরু করে। ভারতীয় এক্সেস্টশও প্রতি আক্রমণের ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। কিন্তু তাহালের ৬ জন নিহত হয় এবং ৪টি রাইফেল, একটি সট গান, ২টি স্টেনগান এবং ১টি মর্টার ফেলিয়া পলায়ন করে। | রাজশাহী হইতে প্রাপ্ত অনুরূপ এক খবরে জানা যায় যে, নওগাঁ। হইতে ৬ মাইল দক্ষিণ পূর্ব দিকে অবস্থিত কোবরা গ্রামে কিনল ভারতীয় এজেন্ট প্রবেশ করে এবং তাহHয়ী কয়েকজন দেশপ্রেমিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে নগদ টাকা ও খাল দ্রব্য সাথী করে। তাহারা এই মর্মে ভীতি প্রদর্শন করে যে, পাবী পূরণে ব্যর্থ হইলে তাহাদিগকে হত্যা করা। হইবে।
যাহা হউক, রাজাকাররা এই সংবাদ শুনিয়া ঘটনাস্থলে আগমন করায় ভারতীয় এন্টরা ১টি মেশিনগানসহ ৬টি ম্যাগাজিন ভক্তি গুলী, ২টি স্টেনগান এবং এটি রাইফেল ফেলিয়া দৌড়াইয়া পালাইয়া যায়।
একই দিনে নারায়ণগ✉ে ৫ + রাজাকার অপহরণের সংবশি পাওয়া যায়। দক্ষিণ ইতেফাৰু” জানালো :
‘গত বুধবার রাত সাঞ্চে নয়টায় নারায়ণগঞ্জ ইলেকট্রিক সাপ্লাই কেন্দ্রে পাহারারত ৫ জন রাজাকার অপহৃত হইয়াছে।
পুলিশলে বলা হয় যে, একদল সশস্ত্র ব্যক্তি একটি সাপে চড়িয়া সেনাবাহিনীর ছঘৰশৈ নারায়ণগঞ্জ ইলেকট্রিক সাপ্লাই অফিসের সথে আসিয়া পাহাৱত এক জন বলিটেল ও ৫ রাজাকারকে ডাক দেয় এবং তাহাদেরকে বলে উঠাইয়া ‘র উধাও হয়। পরে উক্ত সশস্ত্র ব্যক্তিরা পথিমধ্যে কনস্টেবলকে ছাড়িয়া দেয় বলিয়া পুলিশ জানাইয়াছে।
এই ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হইয়াছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত থানার সাথে যােগাযোগ করিয়া জানা যায় যে, অপহৃত রাজাকারদের উদ্ধার করা সম্ভব হয় নাই ।৮২।
নভেম্বর মাসেই ঢাকার মাওরে রাজাকারদের বিদায়ী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হলাে। সংলাপে বলা হলাে :
| “ঢাকা হইতে ১৫ মাইল দূরে সাভারে রাজাকার কোম্পানী কমাণ্ডাৱদের প্রথম দলের বিদায়ী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। বলিয়া এলিপি’র এক খবরে বলা হয়। জেনারেল নিয়াজী উক্ত কুইজে অবদন গ্রহণ করেন। রাজাকারদের ভূমিকা সম্পর্কে জানানো নিয়া বলেন যে, একলিকে তাহাদেরকে প্রদেশের সকল ভারতীয় এজেন্টদের নির্মূল কৱিতে হইবে এবং অপ দিয়ে বিপথগামী তরুণদের সঠিক পথ নির্দেশ করতে হইবে।’
________________________________________
১৯ জন ভারতীয় এজেন্ট নিহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায় দৈনিক ইত্তেফাক’ এর ২৯ নভেম্বর সংখ্যায়।
এপিপি পরিবেশিত করে বলা হয় যে, গতকাল (সােমবার) রাজাকার ও মুজাহিল। যশাের, গোপালগঞ্জ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘ভারতীয় এঞ্জেলের ঘণভাবে পর্যন্ত করিয়া। দেয়। তাহারা ১৯ জন ভারতীয় এরেস্টকে হত্যা এবং ১টি হাল্কা মেশিনগানসহ প্রচুর। পৰিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
রাজাকাররা যশাের জেলার শুকপুকুরিয়ার কাছে ভাৱীষ একে পর একটি গােপন আডডাখানা ধ্বংস করিয়া দেয়। উক্ত অভিযানে ১০ জন ভারতীয় এজেন নিহত এবং ৮৩ লাউ বিস্ফোরক দ্রব্য, ৪টি রাইফেল, ৮টি শটগানসহ ৩থস্থানে রক্ষিত বহু গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
কাপ্তাই হইতে প্রায় ১৮ মাইল দক্ষিণে বান্দরনাড়া এলাকায় এক অভিযান চালাইয়া রাজাকাররা ৪ জন ভারতীয় এজেন্টকে হত্যা এবং দুইটি রাইফেল ও ১৮টি হাতবােমা উদ্ধার করে। গােপালগঞ্জ এলাকায় মধুমতী নদীর পূর্বতারে খুলার কাছে মুজাহিদ বাহিনী। এক অভিযান চালাই ৫ জন জারতীয় এজেন্টকে হত্যা নয়, ১টি মালকা মেশিনগান, ৪ শত ৫০ রাউও গুলীসহ ৯টি রাইফেল এবং ১৯টি মেনেস্ত্র উদ্ধার করে।”৮৪।
| ভারতীয় হামলার প্রতিবাদে সারা দেশে ব্যাপক বিক্ষো’ শিরােনাম সংবলিত সংবাদ পাওয়া যায় দৈনিক ইণ্ডেফাক পত্রিকার ২ ডিসেম্বর সংখ্যায়। পত্রিকায় বলা হয় :
‘পূর্ব পাকিস্তানের উপর ভারতীয় নগ্ন হামলা প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র শােভাযাত্রা ও জনসভা অনুষ্ঠিত হইতেছে। শহর ও গ্রামাঞ্চলে রাজনৈতিক নেতা এবং ছাত্রদের দ্বারা বিক্ষো4 মিছিল ও সভার আয়োজন করা হইতেছে।
না।
গত মঙ্গলবার ভারতীয় হামলা প্রতিবালে ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক, রাজাকার, আলবদর, আল-শামশ মণল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, কমা কিং সাগরিণ নাগরিকবৃন্দ। বিরাট শােয়া ! বাইর করে। ৪ মিছিলে নেদান করেন || পরমাণ সমল! মশা আবদুস সােবহান। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান অঞ্চল অতিক্রম কল্লি। স্থানীয় টাউন হল মনে হয় শেষ হয় এবং সেখানে এক বিরাট কাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট
গত মঙ্গলবার সিলেট জেলা মুসলিম লীগের উদ্যোগে নাইয়ারপুরে এক জলভা। অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় পূর্ব পাকিস্তানের উপর ভারতীয়দের wিww হামলার তীব্র নিন্দা করা হয়। সভায় বিভিন্ন বক্তা ভারতীয় আহ্মণ মােকাবিলা এবং তাহাদের এজেন্টদের উৎখাত করার জন্য তরুণদের রাজাকার বাহিনীতে যােগদান করার আহবান জানান হয়, উক্ত সভায় সাহসিকতার জন্য মুসলিম লীগ পক্ষ হইতে রাজাকারদের পুরস্কৃত করা হয়।
ইহা ছাড়া সিলেট জেলাঞ্জ হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ এবং মওলা বারে ভারতীয় হামলার প্রতিবাদে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এপিলি পরিবেশিত অপর এক খবরে বলা হয়, গত মঙ্গলবার সিলেট শহরে মাদ্রাসা, কলেজ এবং স্কুলের ছাত্ররা এক বিৰাট || হল বাহির করে। পরে আদালত প্রাঙ্গণে এক ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মওৰ সভাপতিত্ব করেন। আল-বদর ওপের কমার জানার আবদুল কাদের।
________________________________________
টাঙ্গাইল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের নগ্ন হামলার নিন্দা করার জন্য স্থানীয় স্কুল ময়দানে এক বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় প্রফেসর আলেক, হাকিম হাবিবুর রহমান, মাে: আবদুল জব্বার মিয়া, প্রাক্তন এম. পি. খােন্দকার মােহাক্ষম খুদা বথস প্রমুখ বক্তৃতা করেন। তাহাৱা পাকিস্তানের সৎ ও দেশের অখণ্ডতা রক্ষার প্রয়ােজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন। তাহারা পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী, রাজাকার ও মুজাহিল বাহিনীর অপূর্ব সাফল্যের প্রশংসা করেন।
আমরা জানি, পাকিস্তানি সামরিক জান্তা তাদের দোসরদের নিয়ে বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশা প্রণয়ন করে। বুদ্ধিজীবী হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আলবার বাহিনীকেই এগিয়ে আসতে দেখা যায়। ডিসেম্বর মাসের শুরুতেই যখন সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়েছে- ঠিক তখনই আলবদর বাহিনীকেও বেশ তৎপর দেখা গেল। এই বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টাফ কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন বাড়িতে হানা দিয়ে বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে একে একে হত্যা করলাে।
পাক সামরিক জান্তার দােসর আলবদর বাহিনীর সদস্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট , সিরাজুল হক খানকে ১৪ ডিসেম্বর ফুলার রােডের ১৬ নম্বর বসি তখন থেকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্যকে ১৪ ডিসেম্বর ঈসা খাঁ রােডের ৩১ নম্বর বাসভবন থেকে, ডা: মােহাম্মদ মাের্তজাকে ১৪ ডিসেম্বর তার ফুলার রােডের ১৪/এ নম্বর নালিন থেকে এৰং জ: এম. এ. খাবোরকে ১০ ডিসেম্বর তার ফুলার রােডের ৩৫ নম্বর ভসভবন থেকে ধরে নিয়ে যায়। অপরদিকে অধ্যাপক রাশীদুল হাসানকেও ১৪ ডিসেম্বর আনােয়ার পাশার ঈসা খাঁ রােডের ৩০ নম্বর। বাড়ি থেকে এবং অধ্যাপক মােফাজ্জল হায়দার চৌধুশ্রীকে তাঁর ছােট ভাই লুফুল হায়দার চৌধুরীর ইন্দিরা রােডের ৬৮/১ নম্বর বাড়ি থেকে আলবদরা ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা
এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি পূর্বদেশ’ পত্রিকা প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করা খেণ্ডে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয় : বদর বাহিনীর শিকার আরও সাতজন বুদ্ধিজীবীর লাশ উদ্ধার নরপশুটি গােরস্তানের পাশে দাঁড় করিয়ে গুলী করে তাঁদের মেরছে হ্যাকাঞ্জের দীর্ঘ একুশ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের জ’জন প্রফেসর ও একজন ডাক্তারের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। গতকাল পুলিশ সূত্রে জানান হয়েছে যে, মীরপুর থানাৰীন হরিরামপুর গােরস্থানের ৫০ গজ দত্রে একটি গর্ত থেকে চারটি ও তার কিছু দূরে অপর একটি গর্ত থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত প্রথম চারটি লাশের মধ্যে ড: সিরাজুল হক খান, ডঃ ফয়জুল মহী, সন্তোষ ভট্টাচার্য ও ড: মুর্তজা আলীর লাশ রয়েছে। শহীদদের আত্মীয়-স্বজন এসব লাশ সনাক্ত করেছেন। বাকী তিনটি লাশ সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে এই লাশগুলাে নাৰ আনােয়ার পাশা, জনাব রাশীদুল হাসান ও : আবুল খায়েরের লাশ বলে অনুমান করা অচ্ছে। এই তিনটি লাশ পৃথক একটি গর্ত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
________________________________________
প্রত্যেকটি লাশ চোখ বাধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। ১৪ই ডিসেম্বর সকাল ৯টায় কারফিউর মধ্যে উপরােক্ত সাতজন বুদ্ধিঙীবীকে নিজ নিজ কোয়ার্টার থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের সকলের মনে যে এপ ছিল, তাও সনাক্ত কলা কমল হয়েছে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, মফিজুমি নামক বিআরটিসির একজন ড্রাইভার গত ডিসেম্বর মাসের ১৮ তারিখে সকাল সাড়ে দশটায় রমনা থানায় হাজির হয়ে এই মর্মে একটি লোহার দেয় যে, সে এবং তার আরও তিনজন সহকর্মী ড্রাইভার কারফিউর সময় আলবদরের নরঘাতকদের নির্দেশে ও প্রাণের ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোয়ার্টার থেকে প্রফেসরদের তুলে নেয়ার কাজে সাহায্য করে। উক্ত মফিজুদ্দিন আরও জানায় যে, সে ছাড়া বাকী তিনজন সহকর্মীকে শেষ পর্যন্ত আলবদরের পশু হত্যা কলেজে, সে কোন রকমে রক্ষা পেয়েছে।
মফিজুনি আরও জানিয়েছে, আলবদরের যে পশুর নির্দেশে সে কাজ করেছে, সে পশুই গত ১৪ই ডিসেম্বর সকাল দশটায় মীরপুরের হরিৱামপুর গােরস্তানের কিছু দূরে (বিহারী গােরস্তান) সাহছেন কেকে এক সাছে দাড় করিয়ে তার সামনেই গুলা করে মেরেছে।
এ অখবর পাওয়া সত্ত্বেওঁ ব্রমনা থানা সেলিন কার্যকরী ভাবে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে নি। থানা কর্তপক্ষ তপন মফিজুদ্দিনকে আটক করে তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা
এর ফলে যে লাশগুলাে ভিসেম্বর মাসের ১৮ তারিখে উদ্ধার করা অব হিল, তা নয়। ২১ দিন পর বিকৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। শুনেছি ড্রাইভার মফিজুদ্দিনকে তার গ্রামের বাড়া টাঙ্গাইল থেকে আটক করা হয়েছে এবং মুফিজুদ্দিনের জামিলন্দিতে প্রাপ্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করেই পুলিশ বিভাগ তদন্ত চালিয়েছেন ৪ উপরােক্ত লাশগুলাে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে, মফিজুদ্দিন নিজেই স্বেচ্ছায় থানায় গিয়ে হত্যাকাণ্ডের গােপন অত্র প্রকাশের জন্য এগি}েয় এলে সেই মমিজ্জিনয়ে এতলিন পর টাঙ্গাইল গিয়ে আটক করতে হল কেন?
ডিসেম্বর মাসের সেই সময় যিনি ঢাকার ডেপুটি কমিশনার ছিলেন, কেও মফিজুদ্দিনের নাম জানান হয়েছিল। তবুও কোন ফলােদয় হয়নি। রমনা থানাতে সেদিন মফিজুদ্দিন সাতজন গুনির নাম প্রকাশ করেছে। সেই সব খুনীদের কেউই আবাদ পর্যন্ত ধৱা পড়েনি। অথচ সেই সাত খুনীর প্রথম দু’জন ধরা পড়লেই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সকল চল্যিকর রহস্য উদঘাটন করা যেত।
আলবদর বাহিনীর অন্যতম হাে ত আলেক মজুমদার তার জবানবন্দীতে সাতজন খুলার নাম প্রকাশ করেছে এবং বার বার বলেছে, তালের যে কোন এক্সিজেনকে ধরতে পারলে হত্যাকাস্ত্রের সকল রহস্য উদ্ঘাটিত হবে। কিন্তু তারপরেও উল্লিখিত্র সাতজন খুনীর কাউকেই আটক করা যায়নি। শুনা যাচ্ছে ডিসেম্বর মাসের শেষ নাগাদণ্ড বই খুশী। রাজধানী ঢাকা নগরীর আশেপাশে দোলাফেরা কলেজে।
গতকালকের লাশ উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছেন গােয়েন্দা বিভাগের ডিএসপি আবদুস সামাদ তালুকদার। তাঁকে সাহায্য করেছেন মিত্রবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী। গােমো বিভাগের প্রধান জনাব এন. এম. খান এই অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।’
________________________________________
ঢাকা তেজগাঁওস্থ কৃষি সম্প্রসারণ ট্রেনিং ইনষ্টিটিউটের স্টাফ কোয়ার্টার সংলগ্ন স্থান থেকেও বেশ কিছু লাশ উদ্ধার করা হলাে স্বাধীনতা লাঙ্গে পৱ পৱই। এসব হত্যাকাণ্ডেও। আলবদর জড়িত ছিলাে বলে পত্রিকার অবরে প্রকাশ।
১৯৭৯ সালের ৫ জানুয়ারি দৈনিক ইত্তেফাক’ পত্রিকায় এ বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় লেখা হলো :
“মালয়েতিহাসের জঘন্যতম নরপিশাচ কাতি
জাল পাখিস্তান বাহিনী তাবেদার ও পুষ্ট আলশামস, রাজাকার, আলবলন্ত স্ত্র মােজাহিদ বাহিনীর নরপিশাচদের জামাতম হত্যাকাণ্ডের নতুন নতুন ব্যহস্য এখনও উদঘাটিত হইতেছে। গােপন সূত্রে সংবাদ পাইয়া পুলিশ গতকাল (সােমবার) তেজগাঁওস্থ কুথি সম্প্রসারণ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটেন্ন স্টাফ কোয়ার্টারে আলবদর ও মােজাহিদ বাহিনীর ক্যাম্পের নিকট হইতে মাটি খুড়িয়া ৪টি ও মহাখালী টি, বি, হাসপাতালের নিকট পরিখা। হইতে ১টি পচা ও বিকৃত লাশ উদ্ধার করিয়াছে।
| পুলিশ লাশগুলি দেচ্ছিা আদর মোহিদ বাহিনীর হাতে নিহত বুদ্ধিজীবীদের হইলে নলিয়া মনে করিতেছে। তবে কোনটি সনাক্ত করা সম্ভব হয় নাই।
গােপন সূত্রে সংবাদ পাইয়া তেজগাঁও থানা এলাকার সার্কেল ইনস্পেক্টর জনাব আবপুল ওয়াহেদ ও সাব-ইন্সপেক্টর জনাব সুলতান আহমেদ গতকাল লােকজসহ সাবেক দ্বিতীয় রাজধানীর নিকটবর্তী কৃষি সম্প্রসারণ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ২৮নং, ৩৩ নং ও ৩৭ নং স্টাফ কোয়ার্টারে যান এবং কোয়ার্টার প্রাঙ্গণ খুড়িয়া ৪টি বিকৃত মৃতদেহ উদ্ধার করেন। ২৫শে মার্চেণ পর উপরােক্ত স্টাফ কোয়ার্টাথে আলবদর ও মোজাহিদ বাহিনীর ক্যাম্প ছিল।
নিহত ব্যক্তিদের কাপড় দিয়া ও হাত পিছনে বাঁধা অবস্থায় ছিল। তাহাদের চালানোর বাল ৩০ হইতে ৪৫ বৎসর ও ১ জনের বয়স ২৪/২৫ বৎসর হইবে বলিয়া। পুলিশ অনুমান করে। ইহপ ১ জনের গলা কাটা । একজনের পেটের ভুড়ি ছেড়া ও লে জনের বুকে গুলী কিংবা বেয়নেট বিদ্ধ করার চিহ্ন রহিয়াছে। এক ব্যক্তিকে অনুজ রাঞ্জের জামা কাপড় দিয়া গলা কালিয়া শাসরুদ্ধ করিয়া মারা হইয়াছে বলিয়া মনে করা হইতেছে। দুজনের মুখে পাড়ি ছিল । ২৪/২৫ বৎসর বয়স্ক যুবকের পরনে চাপা ফুলপ্যান্ট ও হাফ হাউই শট ছিল। তিনজনের পরনে লুঙ্গি, ২ জনের গায়ে শালী, একজনের মাথায় টুপি। ও গায়ে সুয়েটার। তাহলে চেহারা বিকৃত হইলেও আত্মীয়-স্বজন হয়ত তাহাদের নিতে সক্ষম হইকেন ললিয়া পুলিশ মনে করিতেছে। ১০ হইতে ১৬ই ভিসেম্বরের মধ্যে ইহাদের হত্যা করা হইয়াছে বলিয়া ‘অনুমান করা হইতেছে।
উদ্ধাপ্রাপ্ত মৃতদেহগুলি ময়না তদন্তের জন| Bকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান হইয়াছে। আজ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে মৃত দেহগুলি দেখিতে ওয়া যাইলে এলিয়া পুলিশের পক্ষ হইতে ঋন হইয়াছে।’
এ পর্যন্ত সমকালীন পত্রিকায় বর্ণিত সংবাদ থেকে পাকিস্তানি ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর নৃশংস-নিমমি হাজারো কর্মকাণ্ডের কিছু চিত্র তুলে দর। সঞ্চব হলাে। এসব সংবাদের মধ্য দিয়ে বর্তমান এবং আগামী প্রজন্য পাকিস্তানি দোশরদের তৎপরতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।
________________________________________
তথ্য-নির্দেশ
১. আৰু সাইয়িন, অধ্যাপক, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আড়ালে যুদ্ধ (ঢাকা: মােঃ
শরীফ আহমেল, ১০ বস্তু অথবাজার, ১৯৮3) – ১৪৫-১৪৩ একাত্তরের ঘাতক দালালরা কে কোথায় (ঢা: মুক্তিযুদ্ধ চেজন বিকাশ কেন্দ্র,
তৃতীয় সং, ১৯৮৮) পৃ. ১০১ | দৈনিক পূর্বদেশ, ২৯ আগস্ট ১৯৭১
| একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায়, পৃ. ১০১-১০২ ৫. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আড়ালে যুদ্ধ, পৃ. ৯ ৬. এবারের দাতিক ও দালালরা কে কোথায়, পূ, ১০১ ৭ প্রাগুক্ত, পৃ. ১২৫ ৮. প্রাক্ত, পৃ. ১৩৫ ক. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আফালে যুদ্ধ, পূ, ১৪৭ ১৪৮ ১০. প্রাগুক্ত, পৃ. ১৪৯-১৫০ ১১. দৈনিক ইত্তেফাক, ৪ জুন ১৯৭১ ১২. দৈনিক সক্ষম, ১১ জুন ১৯৭১ ১৩. দৈনিক ইত্ত্বেফাক, ২৭ জুন ১৯৭১ ১৪, দৈনিক পূর্বদেশ, ৪ জুলাই ১৯৭১ ১৫. দৈনিক পাকিস্তান, ১০ জুলাই ১৯৭১। ১৬. দৈনিক পূর্বদেশ, ১৭ জুলাই ১৯৭১ ১৭, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৮ জুলাই ১৯৭১ ১৮, দৈনিক পূর্বদেশ, ২১ জুলাই ১৯৭১ ১৯. গৈনিক পূর্বদেশ, ২২ জুলাই ১৯৭১ ২০, দৈনিক পাকিস্তান, ২৫ জুলাই ১৯৭১ ২১, দৈনিক পূর্বদেশ, ২৬ জুলাই ১৯৭১ ২২. দৈনিক পাকিস্তান, ২৭ জুলাই ১৯৭১ ২৩, দি মর্নিং নিজি, ১ আগষ্ট ১৯৭১।
২৫. দৈনিক ইত্তেফাক, ৬ আগস্ট ১৯৭১ ২৫. দৈনিক ইত্তেফাক, ১০ আগস্ট ১৯৭১ ২৭, দৈনিক ইত্ত্বেফাক, ১৩ আগস্ট ১৯৭১ ২৮, দৈনিক ইফাক, ১৩ আগস্ট ১৯৭১ ২৯, দৈনিক পাকিস্তান, ১৬ আগস্ট ১৯৭১ ৩০. দৈনিক ইৰেক্ষাক, ১৭ আগস্ট ১৯৭১ ৩১, দৈনিক ইত্তেফাক, ২০ আগস্ট ১৯৭১ ৩২ দৈনিক ইত্তেফাক, ২৫ আগস্ট ১৯৭১ ৩৩. দৈনিক ইত্তেফাক, ২৯ আগস্ট ১৯৭১ ৩৯৭, দৈনিক ইত্তেফাক, ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
________________________________________
৩৫. দৈনিক ইত্তেফাক, ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ৩৬, দৈনিক ইত্তেফাক, ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ৩৭ দৈনিক ইত্ত্বেফাক, ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
৬. দৈনিক ইত্তেফাক, ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ৩১৯, নৈ মনিং নিষ্টজ, ১ অক্টোবর ১৯৭১ ৪০, দৈনিক ইত্তেফাক, ১০ অক্টোবর ১৯৭১
দি মর্নিং নিউজ, ১৯ অক্টোবর ১৯৭১ ন২, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৩ অক্টোবর ১৯৭১ ৪৩. দৈনিক ইত্তেফাক, ১৪ অক্টোবর ১৯৭১ ৪৪, দৈনিক ইওেফাক, ১৭ অক্টোবর ১৯৭১ ৪৫, দি মর্নিং নিউজ, ১৮ অক্টোবর ১৯৭১ সঞ্জ, দৈনিক ইচোৰু, ১৮ অক্টোবর ১৯৭১ ৪৭, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৮ অক্টোবর ১৯৭১ ৪৮, দৈনিক ইত্তেফাক, ২০ অক্টোবর ১৯৭১। ৪৯. দৈনিক ইত্মেফাক, ২২ অক্টোবর ১৯৭১ এo, দৈনিক ইত্তেফাক, ২৬ অক্টোবর ১৯৭১ ৫১. দৈনিক ইত্তেফাক, ২৭ অক্টোবর ১৯৭১ ৫২ দৈনিক ইত্মেফাক, ৩০ অক্টোবর ১৯৭১ ৫৩, দৈনিক ইয়েফাক, ৩১ অক্টোবর ১৯৭১। ৫৪: দৈনিক ইকোক, ৩১ অক্টোবর ১৯৭১। ৫৫. দৈনিক ইত্তেফাক, ১ নভেম্বর ১৯৯৭
| দৈনিক ইত্তেফাক, ৩ নভেম্বর ১৯৭১ ৭ দৈনিক পাকিস্তান, ৫ নভেম্বর ১৯৭১ এ৮, দৈনিক ইত্তেফাক, ৫ নভেম্বর ১৯৭১ ৫৯. দৈনিক ইত্তেফাক, ৬ নভেম্বর ১৯৭১ ৬০, দৈনিক ইত্ত্বেফাক, এ নখের ১৯৭১ ১১. দৈনিক ইত্তেফাক, ৮ নভেম্বর ১৯৭১ ৩২. দৈনিক ইত্তেফাক, ৭ নম্বের ১৯৭১ ৪৩, দৈনিক পাকিস্তান, ৮ নভেম্বর ১৯৭১ ৬৪, দৈনিক ইত্ত্বেফাক, ৯ নভেম্বর ১৯৭১ ৬৪৫; সৈনিক সংগ্রাম, ১০ নভেম্বর ১৯৭১ ৬৬. দৈনিক সংগ্রাম, ১২ নভেম্বর ১৯৭১।
৭ এঞ্জিও। ১৮. দৈনিক ইত্ত্বেফাক, ১০ নভেম্বর ১৯৭১ ৬৯, দৈনিক সংগ্রাম, ১১ নভেম্বর ১৯৭১ ০. দৈনিক ইৱেকি, ১২ নম্বর ১৯৭১ ৭১. দৈনিক ইত্ত্বেফাক, ১৩ নভেম্বর ১৯৭১ ৭২, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৫ নভেম্বর ১৯৭১
৭৩, দৈনিক ইত্ত্বেফাক, ১৬ নভেম্বল ১৯৭১ ৪, দি মর্নিং নিউ, ১৭ নভম্বর ১৯৭১ ৫, দৈনিক পাকিস্তান, ১৬ নভেম্বর ১৯৭১ ২৬. দৈনিক ইত্তেফাক, ১৭ নভেম্বর ১৯৭১ 44, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৭ নভেম্বর ১৯৭১
৮. সৈনিক ইত্তেফাক, ১৭ নখের ১৯৭১ ৭৯, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৯ নভেম্বর ১৯৭১ ৮৫, লি মনি, নিউই, ২০ ন9েথ ১৯৭১ ৮১, দৈনিক ইত্তেফাক, ২৩ নভেম্বর ১৯৭১ ৮২. দৈনিক ইত্তেফাক, ২৩ নভেম্বর ১৯৭১ ৮৩, দৈনিক ইত্তেফাক, ২৮ নভেম্বর ১৯৭১ ৮৪, দৈনিক ইত্তেফাক, ২৯ থেd ১৯৭১ ৮৫, দৈনিক ইতেক্ষাক, মেম্বর ১৯৭১
________________________________________
তৃতীয় অধ্যায়
পাকিস্তানি দোসর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠন
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী আধুনিক মারণাথে সজ্জিত হয়ে এদেশের নিবন্ধ নিরীহ মস্ত বাঙ্গালি ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে হত্যা করে হাজার হাজাৰ মানুষকে। পাকিস্তানি সামরিক জান্তা তাদের ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এ কালরাতেই সারাদেশ জুড়ে শুরু করে ব্যাপক গণহত্যা। আর এ গণহত্যর সমর্থনে, সহযােগিতায়, জনমত গঠনে হত্যা-নির্যাতনকারীপে করে সামিল হয় । দেশীয় কিছু ব্যক্তি, ৰাজনৈতিক দল-ছাত্র সংগঠন। এসব দলগুলাের মধ্যে ছিলাে– পাকিস্তান মেমােক্র্যাটিক পার্টি, জামাতে ইসলাম’, ‘নেজামে ইশলাম’, ‘কাশেম। মুসলিম লীগ’, ‘কাউন্সিল মুসলিম লীগ” এবং “কাইয়ূমপন্থী মুসলিম লীগ’ । এছাড়া। জামাতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংস্থা ও জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া-র সক্রিয় অংশগ্রহণও আজ সর্বজন স্বীকৃত। এসব দল ও ছাত্র সংগঠনের অনেকেই। সামরিকজাস্থাকে কেবল সমর্থন নয়া সন্ত্রাসরি হত্যাকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাে বলে। অভিযোগ রয়েছে। বিশেষত জামাতে ইসলাম এবং তাদের &jত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রী। সংগর নেতা-কর্ম]ৱা জিকার, আলবদর আলশামস বাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক শিল্প-সাহিত্যিক-সাংবাদিক রাজনীতিক বুদ্ধিজৰিী তথা সাধারণ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। তারা হাজার হাজার মা- বোনকে ধর্ষণ করে হত্যা করে। অগুণতি নাশ্রিী-শিশুকে।
অবরুদ্ধ বাংলাদেশে পাকিস্তানি দােসর গুলাের নেতা-কর্মীরা যেসব বক্তৃতা-বিবৃতি প্রদান করে তার প্রকাশ খাট সমকালীন পত্র-পত্রিকাগুলোতে। এতিহাসিক প্রয়োজনে, জাতীয় ইতিহাস নির্মাণে এনিং সর্বোপরি মনি ও আগাম খবর জন্য এসব যাত্রবিখ্যাত উপস্থাপন করা যেতে পারে।
| ২ এপ্রিল পাকিস্ত্রানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এই সংহতি রক্ষার জন্য মসজিদে। মসঙ্গি মােনাজাত করে পাকিস্তানি নেতৃবর্গ তানা হুমকি মােকাবেলা করার আহবান জানালেন। সংবাদে বলা হলো * জমিয়ত নেতা মওলানা মুফতি মাহমুল প্রস্তাব করেন যে, মুছলমানরা আর গুণাতীয় হস্তক্ষেপ বরদস্তি করিবে না’। ভারতের এই হস্তক্ষেপ। পাকিস্তানের মাটিতে ভারতের নগ্ন হামলায় শামিল হইয়া দাড়াইয়াছেaaaaaaa.. পূর্ণ।
________________________________________
পাকিস্তানের সীমান্তে ভারতীয় সশস্ত্র হামলারদের অনুপ্রবেশের ফলে যুদ্ধ ঘােষণার কাছাকাছি অবস্থা সৃষ্টি হইয়াছে। কোন মুসলমানই জাতির এই সন্ধিক্ষণে নীরব দর্শক হইয়া থাকিবে না ।…. কাইয়ুৰ লগ প্রধান কাইয়ুম খান পূর্ব পাকিস্তান সীমান্তে ভারতের সশগ্ধ অনুপ্রবেশের নিন্দা করিয়া বলেন যে, ইহা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধমূলক কাজের ন্যায় অবস্থার সৃষ্টি হইয়াছে। … ইহা আমাদের সার্বভৌমত্বের উপর প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ ।……….তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাহায্যের জন্য ভারত অস্ত, টাকা-পয়সা এবং সশস্ত্র গেরিলাদের প্রেরণ করিতেছে। তিনি এই হুমকির মােকাবেলা করিতে কতিকে প্রস্তুত থাকিতে আহবান জানান।
| এদিকে ৪ এপ্রিল পিডিপি নেতা নুরুল আমীনের নেতৃত্বে ১২ জন পূর্ব পাকিস্তানি রানৈতিক নেতা ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লে. জেনারেল টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাত করেন। নেতৃবৃন্দ পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি আত্রে জানার ব্যাপারে তাদের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযােগিতার আশ্বাস দেন। তারা পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপেরও ‘ত্রণা শুনে।’ এই দলে অন্যান্যের মধ্যে খাজা খয়ের উদ্দিন, অব্যপক গোলাম আজম, শফিকুল ইসলাম ঐ মওলানা নূরু মিনও ছিলেন। এ সম্পর্কে পকথা বলা হলাে :
| ‘গত রবিবার অপরাহে শুনাৰ নুরুল আমিনের নেতৃত্বে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট নেভা সমন্বয়ে গঠিত এক প্রতিনিধিদল ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানের সহিত সাক্ষাৎ করেন বলিয়া সামরিক আইন কর্তৃপক্ষের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানাে হইয়াছে। | উনার নুরুল আমিন ছাড়াও আজ যকের ডান, জশ গোলাম আজম, নীৰ শফিকুল ইসলাম, মওলানা নূরুজ্জামান ও মওলবী ফরিদ আহমদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ এই প্রতিধি সলে স=৪ ছিলেন। নেতৃবৃন্দ গলৈশে সম্পূর্ণ স্বাভাক অবস্থা ফিফরাইয়া আনা এবং জনগণের মন হইতে অহেতুক ও ভিত্তিহীন শঙ্কা দূর করার উদ্দেশ্যে ঢাকায় নাগরিক কমিটি গঠন করার জন্য সামরিক আইন প্রশাসনের নিকট প্রস্তাব পান করেন। প্রদেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আনার ব্যাপারে সামরিক আইন প্রশাসককে পূর্ণ সহযোগিতা দামেরও তাহারা আশ্বাস দিয়াছেন। তাহারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপাত্রে ভারতের হস্তক্ষেপের এবং ভারতের বিদ্বেষপূর্ণ ও ভিত্তিহন প্রচারণার এত্র প্রতিবাদ জানান।
| প্রতিনিধি দলে সহযােগিতার আশ্বাস পানের জন্য সামরিক আইন প্রশাসক তাহাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রতিনিধি দলকে সামরিক আইন প্রশাসক কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক জীবনের পুনর্গঠন সম্পর্কে গহীত ব্যবস্থাদি সম্পর্কে অবহিত করেন। সামরিক আইন প্রশাসক নলেন যে, সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক অচলাবস্থার ফলে যে ক্ষতি হইয়াছে তাহা পুরণের উদ্দেশ্যে
________________________________________
রাষ্ট্রদ্রোহী এবং সমাজ বিরােধীদের কার্যকলাপের ফলে স্থানচ্যুত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন তল্লাহিত করার প্রয়োজনের উপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। এইসৰ মানবিক কার্যে সরকারের সর্বপ্রকারের সম্ভাব্য সাহাবােয় তিনি প্রতিশ্রুতি দেন। প্রদেশে কোন খাদ্য। ঘাটতি নাই বলিয়া জেনারেল টিক্কা খান প্রতিনিধি দলকে কাননি। এই প্রসঙ্গে তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করিয়া বলেন যে, দুষ্কৃতিকারীরা খাদ্যশস্য প্রোণে বাধা দিলে কোন কোন কি অসুবিধার সম্মুখীন হইতে পারে বলিয়া তিনি দুশিয়ারী উচ্চারণ নেন।
এ ধরনের দুষ্কৃতিকারী, রাষ্ট্রদ্রোহী ও সমাজবিরােধীদের আশ্রয় না দেওয়ার এবং সামরিক আইন কর্তৃপক্ষের নিকট ইহাদের সংবাদ পৌছাইয়া দেওয়ার কথা পুনরুল্লেখ করেন। তিনি শান্তিপ্রিয় জনগণের জানমালের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধানের সামরিক আইন কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতির পুনরুল্লেখ করেন।”
৫ এপ্রিল পিডিপি প্রধান ঢাকাতে এক বেতার ভাষণে বলেন, সার্বভৌমত্বের ওপর অন্য দেশের হস্তক্ষেপ বরদাসত্ করব না। দৈনিক পূর্বদেশ” পত্রিকায় এ বিষয়ে বলা হয় :
“ঢাকা, ৫ই এপ্রিল। – পিডিপি প্রধান ও জাতীয় পরিষদ সদস্য জনাব নূরুল আমীন আজ এক বেতার ভাষণে বলেন, ভারতীয় সংসদে প্রস্তাব গ্রহণের পর সশস্ত্র ভারতীয় নাগরিকদের পূর্ব পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করিয়ে প্রকাশ্যভাবে আমাদের দেশের পূর্বাঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহ, উস্কিয়ে দেয়ার খবর অলিন্ত প্রমাণ হচ্ছে যে, আন্নত অন্য দেশের স্থাহীনতার প্রতি সামান্যই সম্মান প্রদর্শন করে থাকে।
উদ্দেশ্য সিদ্ধি হােক বা না হােক, ভারত অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে আদৌ ৰিাবােধ করে না। পাকিস্তান সরকার ইতিপূর্বে উল্লেখ করেছেন এবং আমিও এখানে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে। ভারত সকল আন্তর্জাতিক রাষ্টিনতি খেলাপের চরম মজার স্থাপন করেছে। ভারতের এই সরাসরি হস্তক্ষেপ ও ন্যাক্কারজনক কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা করে আমরা পূর্ব পাকিস্তানের সকল নাগরিক মিথাই ছিওে বলতে চাই যে, আমাদের সার্বভৌমত্বের পর অন্য দেশের হস্তক্ষেপ নাদান্ত করতে আমরা প্রস্তুত নই। এছাড়া ভারতের সকল প্রচারযন্ত্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ অপপ্রচার চালিয়ে নিৰীহ ও সরল নাগরিকদের উত্তেজিত করে তুলছে এবং তাদের একটি মারাত্মক পরিণতির দিকে নিয়ে চলেছে। ভারত। উপমহাদেশকে ভাগ করে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুই ব্রাষ্ট্রের সৃষ্টি করা হয়েছে যাতে তারা সুখী ও সৎ, প্রতিবেশী হিসাবে বসবাস করতে পারে। কিন্তু বড়ই পৱিতাপের বিষয়। সৃষ্টি থেকে এ পর্যন্ত ভারত পাকিস্তানকে সুনজরে দেখতে পারেনি। ভারত সর্বদা যে কোন উপায়ে পাকিস্তানের অস্তিত্ব বিলোপ করে দোর চেষ্টা করে এসেছে এবং, তা সে 5ে8) এখনাে
অব্যাহত রয়েছে। এই ধরনের নীতির যে মারাত্মক পরিণতি আসতে পায়ে সে সম্পর্কে আমরা ভারতকে স্পষ্টভাবে হুশিয়ার করে দিতে চাই, এবং এই ধরনের কার্য। থেকে তাকে নিবৃত্ত থাকতে আহবান জানাই। তাহলে ঐশু রাষ্ট্রই পারস্পরিক স্বার্থ বজায় । রেখে শান্তিপূর্ণতাবে সই-অবস্থান করে আসতে পারবে।’
কাইয়ুমপন্থী মুসলিম লীগের সাবেক সেক্রেটারী জেনারেল খান এ, সবুর সংবাদপরে। দেয়া এক বিবৃতিতে ভারতের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তার দল আওয়ামী লীগকে বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেন।
________________________________________
খান এ, সরুর বৃিতিতে বললেন : “এটা এখন প্রতিষ্ঠিত সত্য যে শেখ মুজিব ও ভার বেআইন ঘােষিত আওয়ামী লীগের ৬-দফা পূর্ব পাকিস্তানের সকল প্রাণ জনসাধারণকে বােকা শেওয়া জড়া আর কিছুই নয় এবং প্রকৃত প্রস্তাবে তা হল ভারতীয় মল ও সতে পরিচালিত হাটহন একদল জ্ঞসী তরুণের সহায়তায় এবং পথনির্দেশের জন্য সর্বদাই যারা সমান্তের অপর পারে তাকিয়ে থাকে প্রধানতঃ তাদের উপর নির্ভর করে এবং ফ্যাসিষ্ট পন্থ অনুসরণ করে নির্বাচন প্রহসনে দিতে পাকিস্তানকে খণ্ডবিখণ্ড করার একটা সূক্স পাছা মাত্র।
সিবিএস-এর (ক) মওৰাকার নয়াদিল্লী থেকে যে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন তাতে নির্ভুলভাবে একথা প্রমাণিত হয়েছে যে ভারত |Wলন বলেই অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের নেতা ও তার দলকে অ ও অর্থ দিয়ে আসছে। তার রা মারাত্মক পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায় ও জেনারেল ইয়াহিয়া কর্তৃক সময়ােচিত পদক্ষেপ গ্রহণে মিসেস ইশরা গান্ধীসহ ভারতীয় নেতাদের মন ও মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কিন্তু উন্মাক্তা ও হতাশা ভারতীয় নেতাদের পরিমিতিবােধকে যতই আশ্ন করুক তাদের পাকিস্তানের একেবারেই আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের প্রাথমিক নিয়মকানুন ভুলে যাওয়া ও নয়। পাকিস্তানের স্বাভাবিক সওদাগর। কা ক্রম এবং সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ ভারত ও পাকিস্তানের তিক্ত সম্পর্ককে এক নতুন ইন্ধন যোগানাের নামান্তর এবং ভারতের স্মরণ রাখা উচিত যে এই ধরনের উস্কানিমূলক কার্যক্রম একটা। প্রচণ্ড আন্তর্জাতিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে এবং তার পরিণতির জন্য তাকেই দাবি
“মিথ্যা বার বার উচ্চারণ কলে তা প্রতিষ্ঠিত সত্যে পরিণত হয়’ ভারতীয় বেতার ও সংবাদপত্রগুলাে গােয়েবলসের এই তত্ত্বকেও ম্লান করে নিয়েছে। তারা দৈনিক শিক্ষা মিথ্যা কথা প্রচার করে প্রতিবেশী দেশের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের সমাধি রচনা করেছে। তথাকথিত বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠন, জেনারেল টিক্কা খানের মৃত্যু ও মুজিবুর রহমানের অনুগামীদেম্বা কাল্পনিক হিল্লোথ স্বকপোলক ও আড়া আর কিছুই নয়। আমি পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনসাধারণকে অল ইজিয়া রে৬ি৩ বা আকাশবাণী কলকাতার মিথ্যা প্রচারে কণপাত না করার আবেদন জানাচ্ছি। অন্যদিকে দেশে যথাশীঘ্র স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা এবং আইন ও শালা প্রতিষ্ঠায় সামরিক আইন কর্তৃপক্ষকে আন্তরিকভাবে সহযােগিতা করার আবেদন জানাচ্ছি। কারণ বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগ প্রায় একমাস দেশে যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা স্থাপন করেছিল তার ফলে সৃষ্ট বিভ্রান্তিকা পরিস্থিতিতে জনসাধারণের অর্থনৈতিক অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে গেছে ।
অপর নাহিক মজলণী ফল আহনও ভারতের গাত্র সমালােচনা করেন। যা তোরে দেয়া তাঁর ভাষণে বললেন : | আমাদের প্রিয় দেশ, বিশেষ করিয়া পূবালকে কাংস করিয়া ভারতের সংযুক্ত ভারত প্রতিষ্ঠার ব্যর্থ স্বপ্নকে পুনরুজ্জীবিত করার এবং পূর্ব পাকিস্তানী মুসলমানদিগকে পুনরায় ব্রাহ্মণ্য সাম্রাজ্যবাদের ক্রীতদাসে পরিণত করার হীন ষড়যন্ত্র আজ ধীমান জনগণের নিকট সুস্পষ্টজপে প্রকট হইয়া উঠিয়াছে। এই প্রসঙ্গে উল্পেশ করা যাইতে পারে যে, আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করা না হইলেই প্রথম হইতেই মল হাওয়া রেডিও হইতেই বলা হয় যে, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করা হইয়া এবং বাজি যুদ্ধ কালাইয়া যাইত ও দেশের বহু অংশে তারা ধান্য পাক করিয়াছে।
________________________________________
গােড়ার দিকে দুইতিন দিন প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় কোন প্রকার গন্ডগোল লেখা যায় নাই। কিন্তু জনগণকে অস্ত্র ধারণের জন্য এই সমস্ত উৎসাহ ও উদ্ধানী এবং প্রথমে ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পাঞ্জাব ও পরে পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য বলিয়া বর্ণনা করিয়া পূর্ব পাকিস্তানী জনসাধারণের মনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করিয়া তাহাদের প্রিয় সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে মৃণার ভৰ সৃষ্টির চেষ্টা করিয়াছে। সেনাবাহিনীতে পূর্ব পাকিস্তানের হাজার হাজার সেনাও যে অন্যান্যদের কাঁধে কাঁধ মিলাইয়া ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ ও সম্প্রসারণবাসে বিরুদ্ধে সংগ্রাম ফরিয়া যাইতেছে, এই প্রচারণায় ‘তাহারা সেই বিষয়টিকেই উপেক্ষা করিয়া গিয়াছে।
আমাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হইতে মিথ্যা বলিয়া জানিলেও ঢাকার পতন, জেনারেল টিক্কা খানকে হত্যা, চাকা ক্যান্টনমেন্ট পরিবেষ্টিত, ঢাকা বিমান বন্দর দখল, শহর নিয়ন্ত্রণাধীনে প্রভা ভারতীয় প্রচারণার মূল্যায়ন করতে পারিবে। জনগণের একটি অংশ যদি আইন ও শখলা পরিস্থিতিতে আর কোন নয়া সমস্যা সৃষ্টিতে উৎসাহিত না। হইত তাহা হইলে শক্তি প্রয়ােগের ক্ষেত্রে যে সামনা] পরিমাণ শক্তি প্রয়োগের বেদনাদায়ক প্রয়োজন হইয়াছে, তাহার প্রয়ােজন হইতাে না। অসহায় পূর্ব পাকিস্তানী ভাইদের জন্য কুক্ষীরাশ্রু বিসর্জন করিয়া ভারত একটি বিশেষ শ্রেণীর লােককেই বুঝাইয়াছে। ইহা দ্বারা জাহাৱা আমাদের দুঃখ দুর্দশা বৃদ্ধিই করিয়াছে মাত্র। ইন্দিরা গান্ধী এবং তাহরি সহযোগিণই পূর্ব পাকিস্তানী জনগণের দুঃখকষ্টের জন্য দায়ী বলিলে সত্যের অপলাপ হইবে না” {ই অন্যদিকে পাকিস্তান ডেমােক্র্যাটিক পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আলী ৬ এপ্রিল ঢাকাতে দেয়া এক বিবৃতিতে বললেন, ‘ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু সমাজের অত্যাচার, অসহিষ্ণুত, সংকীর্ণতা এবং শােষণের মধ্য থেকেই পাকিস্তানের জন্ম হয়েছে। …… ভামাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী সকল দেশপ্রেমিক মানুষের কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থন ও সহযােগিতার দাবী রাখে।’
এ সম্পর্কে দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হলাে :
‘পাকিস্তান ডেমােক্রেটিক পার্টির ভাইস-প্রেসিডেন্ট জনাব মাহমুদ আলী গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় এক বিবৃতিতে বলেন, প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রীদের সাথে পরামর্শ না করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী তাড়াহুড়া করে অতি উৎসাহবলে পূর্ব পাকিস্তান সম্পর্কে পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাশ করায় ভারতের তামিলনাড় প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আপত্তি জানিয়েছেন এবং তার এই আপত্তি খুবই সঠিক। বাস্তবিকই সংশ্লিষ্ট বিষয়টির গুরুত্বকে কোনক্রমেই খাটো করে দেখা যায় না। ভারতীয় লােকসভা প্রস্তাবটি গ্রহণ করে প্রকৃতপক্ষে অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার সর্বজন স্বীকৃত আন্তজাতিক নীতিকে পদদলিত করেছে । মিঃ করুণানিধির কণ্ঠ তাই ক্ষুদ্র জাতিসমূহের স্বাধীনতা গ্রাস করার বৃহৎ জাতিগুলো ফ্যাসিবাদী মতললে বিরুদ্ধে প্রতিবাদ । ভাৱত মা করছে তাতে অন্যান্য এশীয় দেশে ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদী অভিসন্ধি প্রকাশ হয়ে পড়েছে।
ভারতীয় পার্লামেনের সর্বসমত প্ৰপ্তাবের পর পূর্ব পাকিস্তানে সশখ ৬ার এীয় লােকদের অনুপ্রবেশ আমাদের দেশের পূর্ব অঞ্চলের লােকের জন্য অবর্ণনীয় দুর্নশ ডেকে এনেছে। পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হয়েছে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা।
________________________________________
দেখা দিয়েছে, মানুষের জানমাল বিপন্ন হয়েছে এবং অন্যান্য দুর্ভোগ পােহাতে হবে। অন্যথায় তাদের উপর এ বিপদ আসতাে না। এর ফলে, পূর্ব পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক বিকাশও মাথাব্যকভাবে ক্ষত্রিস্ত হয়েছে।
| বৃটিশ সাম্রাজ্যলাল এবং হায় ভারতীয় সহযােগীরা আমাদের জনগণের জীবনে যে দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছিল-আজলি লাভের পর ২৩ বছরে আমরা পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষ একযোগে সেই বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ এবং তাদের ভারতীয় সহযোগ জমিদার, মহাজন এবং আমলারা আমাদের জনগণের যে দুর্ভোগ ও সুশার সৃষ্টি করেছিল। আমরা পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণ একযোগে সেটা মােচনের জন্য ২৩ বছর ধরে সংগ্রাম করেছি। যখন পাকিস্তানের মানুষ নতুন করে গণতন্ত্রের ও প্রগতির পথে যাত্রা শুরু করেছে তখনই তাৰত পূর্ব পাকিস্থানের ওপর একটি সশস্ত্র হস্তকেল চালিয়ে দিয়েছে। ঠিক যেমনটি সে করেছিল আমাদের দেশেই ১৯৬৫ সালে এবং আরাে আগে ১৯৪৮ সালে।
ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু সমাজের অত্যাচার, অসহিষ্ণুতা, সংকীর্ণতা এবং শােষণের মধ্য থেকেই পাকিস্তানের জন্য হয়েছে। আমাদের স্বাধীন অস্তিত্বের ২৩ বছরে ভারত সব সময় একই শক্রতার মনােভাব দ্বারা পরিচালিত হয়ে। কিন্তু পাকিস্তান জয়ী হয়ে বের হয়ে
নিঃসন্দেহে, ভারতের সর্বশেষ উদ্যোগটাও পাকিস্তানকে ধ্বংসের প্রয়াসে বার বার ব্যর্থ হতাশাগ্রস্কের প্রতিশোধ গ্রহণের শাস্তিকর চেষ্টা। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে আমাদের জনগণ এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর সম্মিলিত শক্তির হাতে পরাজয়ের গ্লানি হরিত লতে পারেনি। তাই সে এখন আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মতভেজের সুযোগ নিয়ে ১৯২৫ সালের যুদ্ধে যে উদ্দেশ্য হাসিল হয়নি। সেই লক্ষ্য হাসিল করতে চাচ্ছে। সশস্ত্র তৎপরতাকে উৎসাহলান এবং সাহায্য করা ছাড়াও ভারত তার রেডিওসহ সমস্ত প্রচার মাধ্যমকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিষােদগারের এবং পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে নির্লজ্জ মিথ্যা বানােয়াট বিদ্বেষমূলক প্রচারণার কাজে নিয়ােজিত করেছে।
সশস্ত্র ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের এবং সহযােগীদের প্রতিরােধ করা এবং তাদের একটি চরম শিক্ষা দেওয়ার জন্য আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী মাঠে নেমেছে। আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী সকল দেশপ্রেমিক মানুষের কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার দাবী
খে। এই সমর্থন যত বেশি হবে তত তাড়াত; স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে, দেশের এই অংশে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক তৎপরতা শুরুও সহজ
আমি আশা করি ও বিশ্বাস করি যে আমাদের জনসাধারণ পরিস্থিতির গুরুত্ত্ব উপলব্ধি করবেন এবং জাতির আহবানে সাড়া দিবেন।
| ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসকের সঙ্গে আরও কতিপয় রাজনৈতিক নেতা দেখা করে প্রদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আনার কাজে পূর্ণ সহযােগিতার আশ্বাস পান করলেন। সংবাদে বলা হলাে : | ‘গতকাল মঙ্গলবার পূর্ব পাকিস্তানের আরও রাজনৈতিক নেতা খ” অালের সামরিক আইন প্রশাসকের সহিত সাক্ষাৎ করেন এবং প্রদেশে অবিলম্বে পূর্ণ স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিদইয়া আনার ব্যাপারে তাহাদের পূর্ণ সহযােগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। এক সরকারি হ্যান্ড আউটে বলা হয় যে, সাবেক পররাষ্ট্র উজির জনাব হামিদুল হক চৌধুরী, প্রাদেশিক
________________________________________
জামাতে এলামীর সভাপতি অধ্যাপক গোলাম আজম, জমিয়তে উলামায়ে এছলামের প্রাদেশিক শাখার সভাপতি পীর মােহসীন উদ্দিন আহমদ ও স্থানীয় বিশিষ্ট আজনজীবী এডভােকেট জনাব এ, কে, সাদা পৃথকভাবে জেনারেল টিক্কা খানের সহিত সাক্ষাৎ
যও আউটে বলা হয় যে, নােতলু পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ ও পাকিস্তানে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন যে, প্রমেশের দেশপ্রেমিক জনসাধারণ ভারতের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ, করার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে সহায়তা করিবে। সামরিক আইন প্রশাসক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে এই মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করেন যে, কর্তৃপক্ষ শান্তিকামী নাগরিকদের জান ও মালের পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদান অব্যাহত রাখবেন বলিয়া হ্যান্ড মাউট বলা হয়। সামরিক আইন প্রশাসক গত মাসের কমতিপরতার অভাবে দেশের ক্ষতি পূরণের জন্য অনৈতিক তৎপরতা পূর্ণোদ্যমে চালনার প্রয়োজনীয়তার কথা পুনরায় উল্লেখ করেন।
এদিকে আইনজীবী হামিদুল হক চৌধুরী ও পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখা সাক্ষাৎ করে পত্রিকায় বিবৃতি দেন। তিনি বললেন, ‘পূর্ব পাকিস্তান মেশের ঐক্য বিনষ্ট করতে চাচ্ছে না। সংবাদে বলা হলো :
*চাকা, ৬ই এপ্রিল। পাকিস্তানের সাবেক পররট উর এবং বিশিষ্ট আইনজীবী জনাব হামিদুল হক চৌধুরী সংবাদপত্রে নিলিখিত এক বিবৃতি দান করিয়াছেন।
| তিনি এই বিবৃতিতে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানীগণ আর যাহাই লাবি করুক না কেন, ত্যাহারা অবশ্যই পেশের ঐক্যকে বিনষ্ট করিতে চাহে নাই এবং তাহা কল্পনাও করে না। ভারতীয় প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য হইতেছে উহার নিজের সম্প্রসারশন সুবিধার জন্য পশ্চিম পাকিস্তান হইতে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করিয়া সার্বভৌম দেশ হিসাবে পাকিস্তানকে ধ্বংস করা। এই উদ্দেশ্য সাধন এবং বিশ্বকে ধোকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বোমা বর্ষণের দ্বারা নগরসমূহ #ংস এবং হাজার হাজার মানুষ হত্যার ভিত্তিহীন প্রচারণা চালানাে হইতেছে। প্রকৃতপক্ষে, আকাশ বাণীর খবর পরিবেশনের অর্ধেক সময়ই এই উদ্দেশ্যে ব্যয় করা হইতেছে, কিন্তু কতগণ এই মিথ্যা প্রচারণা টিকাইয়া রাখা যাইবে বলিয়া বি চৌধুরী প্রশ্ন করেন।
পূর্ব পাকিস্তানীগণ যাহা চাহে, তাহা মাত্র ১২০ দিন পূর্বেই বেশী করা হইয়াছে। প্রাপ্তবয়স্ক পূর্ব পাকিস্তানীগণ একক জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচনের জন্য ভােলান করছিল। তাহারা সমগ্র দেশের একক জাতীয় পরিষদ অধিবেশনে বস, একক দেশের জন্য একটি শাসনত প্রণয়ন ও এবং তাহার পায় ৫টি প্রদেশের ভিওিতে দেশের জন্য এনকার সরকার গঠনের উদ্দেশ্যেই আইনের প্রতিনিধি নির্বাচিত কমিয়েছিল বলি। তিনি
সুতরাং এমতাবস্থায় হিন্দুস্থানী প্রচারবিদগণ কি করিয়া দাবী করেন যে, পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তান হইতে বিচ্ছিন্ন হইতে চাহে। তিনি হিন্দুস্থানী কর্তৃপক্ষের প্রতি এই মর্মে প্রশ্ন করেন যে, তাহারা উষ্ণ ভিত্তিহীন মতবাদে বিশ্বাসী হইয়া কি করিয়াই ৰা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নৈতিক ও বৈষয়িক সাহায্য প্রদান করিয়াছেন। অনুরুপ বিঘ্নিতাবলী লােকদের সন্ধান পাকিস্তান অপেক্ষা হিন্দুস্থানেই বেশি পাওয়া যাইবে। কারণ, গত ফেব্রুয়ারী ও মার্চ মাসে
________________________________________
হিন্দুস্থানে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এতটা অবনতি ঘটে যে তথায় জীবনহানীও ঘটিতে থাকে।
হিন্দুস্থান উপমহাদেশের শান্তির স্বার্থে এবং উজমা দেশের আনাদের কল্যাণে অশ্রুপ। আক্রমণাত্মক মনােভাব ত্যাগ করিৰে বলিয়া জনাব চৌধুরী আশা প্রকাশ করেন। পূর্ব পাকিস্তানের সহিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে হিন্দুস্থানের যদি কোনরূপ সন্দেহ থাকিয়া থাকে তাহা হইলে উহা অনায়াসেই আবাসিক এলাকাসমূহে নিরাপদে অবস্থানকারী হিন্দুস্থানী কূটনীতিবিদদের নিকট হইতে তথ্যলাভ করিতে পারে, যদিও উক্ত এলাকাসমূহ ধুলিসাৎ কৰিয়া দেওয়া হইয়াছে বলিয়া আকাশবাণী ভিত্তিহীন প্রচারণা চালাইয়াছিল।
মার্চ মাসে ৩ সপ্তাহব্যাপী দীর্ঘ হরতালের ফলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় একে পুনস্থায় স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরাইয়া আনার জন্য দ্বিগুণ শক্তিতে আত্মনিয়ােগ কন্যা সকল শ্রেণীর জনগণের দায়িত্ব বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন। যে কোন সরকারের নিকট হইতে যে কোন নাগরিক তাহার জানমাল ও পেশার নিরাপত্তা লাভের আশা করতে পারে। যত & সঞ্জব দেশে জনপ্রিয় সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালাইয়া যাওয়া উচিত। এই দৃষ্টিকোণ হইতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার বিবৃতির প্রতি মােবারকবাদ জানাই।
“জিরাতিয়া প্ৰজা সমিতি’র আহবায়ক ফরিদ উদ্দীন সিদ্দিকী “ভারতের সম্প্রসারণবাদী মতলবের বিরুদ্ধে রুখে পড়ার আহবান জানালেন। এ সম্পর্কে পত্রিকায় বলা হয় : ঢাকা, ৭ই এপ্রিল। জিরাতি প্রজা সমিতিৰ (অরাজনৈতিক) আহবায়ক জনাব ফরিদ উদ্দীন সিদ্দিকী আজ এখানে বলেন যে, পাকিস্তান সৃষ্টির পর হইতেই শুরও যে পাকিস্তানের প্রতি বৈরী অনি পোষণ করিয়া আসিয়াছে তাহা বিশ্ববিদিত।
| তিনি বলেন যে, সাম্প্রতিক কয়েক বৎসর খাবৎ ভারত বিশ্বের মানচিত্র হইতে পাকিস্তানকে নিশ্চিহ্ন করার কয়েক দফা চেষ্টা করিয়াছে। এমনকি ১৯১৫ সালে তাহারা পাকিস্তানের উপর সশস্ত্র হামলা চালায়। কিন্তু ইনশাআা আমাদের কাগ এবং সশস্ত্র বাহিনী তাহাদের সেই অ৬ চেষ্টা সম্পূর্ণরূপে নস্যাৎ করিয়া দে ।।
ভাৰত পুনরায় তাহার সেই পুরান শয়তানী মতলব লইয়া আবির্ভূত হইয়াছে। সে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সহিত যুদ্ধ করিয়া! দেশের এই অংশটিকে দখলের মতলবে পূর্ব পাকিস্তান সীমান্ত পথে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী দল প্রেরণ করিয়েছে।
ইহা ছাড়া ভারত তাহার সংবাদ প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন গুজৰ ছড়াইয়া ফকিরী দলকে আই ও “লা ভঙ্গের কম। উৎসাহিত কষা চলিয়াছে। তিনি বলেন যে, আমাদের ভুলিয়া গেলে চলবে না যে, ইসলামের সামাজিক ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে একটি আদর্শ ভিত্তিক জীবন ব্যবস্থা কায়েমের আশাতেই লক্ষ লক্ষ মুসলমান নারী-পুরুষের জীবন ও সম্পত্তির বিনিময়ে পাকিস্তান হাসিল হইয়াছিল। একমাত্র দেশের সার্বভৌমত্ব ও অর্থস্তত্ব রক্ষিত হইলেই এই লক্ষ্য অর্জিত হইতে পারে বলিয়া তিনি মত প্রকাশ করেন।
| এই কারণে তিনি দেশের জনগণ বিশেষ করিয়া পূর্ব পাকিস্তানের সময় সীমান্ত এলাকায় জিরাতিয়া প্রয়ােগের প্রতি ভারতের এই সম্প্রসারণবাদী মতললের বিরুদ্ধে রুখিয়া পড়াইবার আহ্বান জানান। ইহা ছাড়া তিনি নিরাতিৰা প্রজাদের প্রতি পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর সহিত পূর্ণ সহযােগিতারও আহবান জানান। ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী দল যাহাতে।
________________________________________
পূর্ব পাকিস্তান সীমান্তের কোন গৃহে আশ্রয় গ্রহণ করিতে না পারে, তপ্রতি নজর রাখরি জুন] তিনি জিহাতিয়া প্রজাদের প্রতি অনুরােধ জানান।
জামায়া ইসলাম, মুসলিম লাগ, মিঃ ওলামায়ে ইসলাম, পাকিস্তান ইসলামিক নিরবলিক পাটিসহ বেশ কয়েকটি দল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে সাময়্যিবাদী ভারতকে ছিনিমিনি খেলতে দেবে না’ বলে উল্লেখ করলেন। পরিকায় বলা ইলে :
“একটি মামে রাষ্ট্রের নাগরিকসানে প্রতিটি পাকিস্তানীর আত্মসম্মানের পরিমাণ যাই হোক না কেন, পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপকে তারা অবশ্যই কঠোর ভাষায় নিন্দা কৰে। পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর নেতবৃন্দ গতকাল বুধবার সাক্ষায় প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে একথা বলেন।
এপিপি পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম, ঐTদশিক খচৰঃ সম্পাদক জনাব কমিমি এবং ঢাকা। জামাতের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গােলাম সারােয়ার যুক্ত বিবৃতিতে আরাে বলেন, সারা বিশ্ব জানে, হানৱত্ৰই হচ্ছে পাকিস্তানের একমাত্র শক্র। নেতৃবৃন্দ বলেন, পূর্ণ পাকিস্তানীরা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী ভারতকে ছিনিমিনি খেলতে দেবে। না। তারা বলেন, পাকিস্তানের ব্যাপারে ভারত কখনাে কোন আন্তর্জাতিক তিনতি অথবা নীতিবােধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেনি।
| তাছাড়াও পাকিস্তান, কাশীর এবং ভারতীয় মুসলমানদের বিষয়ে ভারত সৰ সময় তার নিজস্ব আস্তঞ্জাতিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। ভারতীয় পার্লামেন্ট সম্প্রতি সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাশের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ কয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং প্রস্তাবটির ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ২৩ বছরে ফারাক্কা বাল, সকল সীমাও এলাকাৰঃ ক্রমাগও গােলযােগ, বলপূর্বক লক্ষ্মীপুর দখল, বেরুবাড়ী প্রশ্নে বিশ্বাসঘাতকতা এবং আসাম ত্রিপুরা ও বত্রিগাছ ছিটমহল থেকে বাঙালী মুসলমান বিভাগের গটনার মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ভারতের হেয়ালীপূর্ণ বন্ধুত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট তিক্ত অভিমত সঞ্চয় করেছে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি ভারতের তথাকথিত সহানুভূণ্ডির মধ্যে ব্রাহ্মণ্য সাম্রাজ্যবাসের দূরভিসন্ধির গন্ধ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে বলে তারা জানান।
জামায়াত নেতৃবৃন্দ আরাে বলেন, ভারঙ্গীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মরণ রাখা উচিত, পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানরা এরইকে তানো গান শক্ত মনে করেন এবং তারা ভারতের শিকারে পরিণত হতে অাসী প্রস্তুত নয়। ভারতীয় নেতৃবৃন্দের উজানা উচিত যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তাদের শত্রুর কাছ থেকে মহানুভূতি কামনা করে না। না তাদের অধিকার চায় এবং কিভাবে তারা তালে জন্ম অত্রন করতে পারবে সেটা হল সম্পূর্ণরূপে তাসের আভ্যন্তরা ব্যাপার । জামায়াত নেতবৃন্দ বলেন, অসং লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে প্রতিটি পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণের ব্যাপারে ভারতীয় নেতৃবৃক্ষের দূরভিসন্ধি মানে ফাস হয়ে গেছে। তারা নিশ্চয় করে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানীরা কখনাে হিন্দু ভারতের দ্বারা প্রভাবিত হবে না। ভারতীয়রা কি মনে করেছে যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের এতদূর অধঃপতন হয় যে, তারা ঋণকে তার বন্ধু খে?
________________________________________
কশীবীদের আহবাধিকার পান ৰং ভারতীয় মুসলমানসের নিরাপতার নিশ্চয়তা বিধানের পূর্বে কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রতি সহানুভূতিসুলত একটি শব্দ উচ্চারণ করার ব্যাপারে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের অবশ্যই লজ্জিত হওয়া উচিত। তারা বলেন, পাকিস্তানের মাটিতে সশস্ত্র অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ভারত বস্তুতঃ পূর্ব পাকিস্তানীদের দেশপ্রেমের প্রতি চ্যালেঞ্জ প্রদান করেছে।
ভারতীয়দের জানা উচিত, এদেশের জনগণ সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের কখনাে রাণকর্তা হিসেবে মনে করেন না। পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণ সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের কোন স্থানে দেখামাত্র খতম করে দেবে বলে তারা দৃঢ় আস্থা পােষণ
মুসলিম লীগ পূর্ব পাকিস্তান শ্রীশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াৰ এ এম, এম হসু পূর্ব পাকিস্তান সীমান্ত নিয়ে ভারতীয় অনুপ্রবেশ এবং পূর্ব পাকিস্তানে অস্তিত্বহীন তথাকথিত বাংলাদেশ সরকারের সমর্থনে কোলকাতায় তথাকথিত বিক্ষোভের কঠোর প্রতিবাদ করেছেন।
গতকাল বুধবার সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে জনাব ইউসুফ বলেন যে, আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লংঘন করে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারত নাক গলাচ্ছে এবং পাকিস্তানের শান্তিপ্রিয় জনগণকে অশান্তি মুখে ঠেলে দেয়ার জন্য কারও লােক, অ| ও অস্ত্র সংগ্রহ করছে। তাছাড়া তার তারা বেতার ডাহা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রচারণার মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছে। আমরা এর তীর বিল
মুসলিম লীগ নেতা করি তকে দুশিয়ার করে নিয়ে বলেন যে, ‘৬৫-এর সেটে থর যুদ্ধকালে জনগণের ঐক্যের কথা ভারতের অবশ্যই মনে রাখা উচিত। তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভারতের “অখণ্ড ভারত’ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ভারতীয় হামলাকে পাকিস্তানের বিশেষত এর পূর্বাঞ্চলের জনগণ কখনােই বরদাশত করবে না।
পরিশেষে মুসলিম লীগ নেতা পাকিস্তানের পবিত্র ভূমি রক্ষা করার জন্য ভারতীয় কার্যক্রমের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে রুখে দাঁড়ানাের আহবান
পীর মােহসেনুদ্দীন। পূর্ব পাকিস্তান জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের (হাজাদী গ্রুপ) সভাপতি পীর সােহসেনুদ্দীন আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লংঘন করে পাকিস্তানের আতান্তরীণ ব্যাপারে ভারতীয় হস্তক্ষেপের কঠোর নিন্দা করেছেন এবং দেশে শান্তি ও শমলা স্থাপনের জনা দুতিকারী ও বিশশলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত সেনাবাহিনীর কার্যক্রমে সহযােগিতা করার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে পীর সাহেব বলেন যে, গত কয়েকদিনে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার সম্পর্কে ভারতীয় বেতারের কাল্পনিক ও নিজ জাহা মিথ্যা প্রচারণা এবং ভারতের স্বাধীনতা পূর্বকালের মনােভাবেরই প্রকাশ
________________________________________
গটিয়েছে। তিনি বলেন, এই ভারতীয় কার্যক্রম আমাদের প্রাক-স্বাধীনতা যুগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তখন বৃটিশ রাজার হুছায়ায় ভারতীয় হিন্দুরা মুসলমানন্দের সকল অধিকার হরণ করে তাদের মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য করেছিল। এই নিপীড়ন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে বসবাস করার জন্যেই মুসলমানরা পাকিস্তান চেয়েছিলাে।
পীর সাহেন নলেন, স্বাধীনতার পরও তানহত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বারবার মন্ত্রে লিপ্ত ধেছে। বর্তমানে ও পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে। সেই বই সড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তিনি ভাৱতকে হুঁশিয়ার করে নিয়ে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের আশাপ থনাে ভারতীয় গড়ায়ে শিকারে পরিণত হবে না। নং, আন্না জাতীয় অযথ ব্যানচাল করে স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্যে এক দেহ এক প্রাণ হয়ে সবকিছু বিসর্জন দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না। তিনি বলেন, বর্তমানে সেনাবাহিনী আভ্যন্তরীণ শাস্তি শৃংখলা ও শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের জানমালের হেফাজতের জন্যে ব্যস্ত রয়েছে। সেনাবাহিনী দেশের সীমান্ত রক্ষায় সম্পূর্ণ প্রতি। তিনি এই কাজে সেনাবাহিনীর সাথে পূর্ণ সহযোগিতা করার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানান। মওলানা নুরুজ্জামান পাকিস্তান ইসলামিক রিপাবলিক পাটি সাপতি মওলানা নুরুজ্জামান সংলাপপলে প্রল এক বিবৃতিতে পাকিস্তানকে #ংস করার জন্য ভারতের নয়া পরতায় কঠোর নিন্দা করেছেন এবং ভারতকে ২শয়ার করে দিয়েছেন যে, পাকিস্তানের অখঞ্জতা ও সার্বভৌমত্ব নস্যাতের উদ্দেশ্যে পরিচালিত যে কোন হামলার বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানীরা একটি সুদৃঢ় দেয়ালের মত দাঁড়াবে। বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের জানাল স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে ভােট দিয়েছিলাে, তারা পৃথক ও স্বাধীন বালা দেশের পক্ষে ভােট সেনি। তিনি বলেন, পাকিস্তান অর্জনকারী মুসলমানৱ জানে কিভাবে তাদের মাতৃভূমিকে
দেওয়ান বেরাসত পূর্ব পাকিস্তান আম্মুমানে মােহঞ্জনিয়নের সভাপতি দেওবানি বেরসিক হোসেন প্রেসিডের ইয়াহিয়া খানকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও অখণ্ডতা রক্ষা করার জন্য লক্ষ লক্ষ মুহাক্কির কোন ত্যাগকেই অতিরিক্ত মনে করবে না। বিবৃতিতে তিনি পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপেরও কয়েক মিনা করেন। ১০
সাবেক কৃষক-শ্রমিক পার্টির প্রধান এ. এস. এম সােলায়মান ৮ এপ্রিল এক নিৰুতিতে ভারতীয় বেতনের প্রচারে কর্ণপাত না করার আহবান জানালেন। দৈনিক আহলি আনি|লো :
ঢাকা, ৮ই এপ্রিল। সাবেক কম্বক শ্রমিক গ||টি প্রধান আনার এ, এস, এম। সােলায়মান আজ পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক নাগরিকদের নিকট ভারতীয় কোনাে দূর একিমূলক প্রচারণাৰা কপাত না করার জন্য আহবান জানান। কারণ উহা শুধু প্রদেশের অনগণের দুঃখ-দুর্দশাই বাড়াইয়া তুলিতেছে।
এক বিবৃতিতে তিনি জনগণের নিট সকল সমাজবিরোধী ও রাবিরোধী ব্যক্তিদের প্রতিহত করার আহ্বান জানান। যাহাতে কোন কাক্ষেপ ছাড়াই শান্তি ফিরাইয়া অন্য
________________________________________
যায় এবং জনগণকে অপরিসীম দুঃখ-দুর্দশার হাত হইতে রক্ষা করা যায়। তিনি বলেন, পাকিস্তান মুসলমানদের মাতৃভূমি হিসাবে সৃষ্ট হইয়াছে। বিশ্বের এই বৃহত্তম মােছলেম নেশট পাওয়া তোলার জন্য লক্ষ লক্ষ লােক জীবন বিসর্জন দিয়াছে । মুসলমানদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিঞ্চার আসার জন্য শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ১৯৪০ সালে ঐতিহাসিক লাহাের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই প্রসঙ্গে আমি অতীতে বহুবার বলিয়াছি যে, লাহাের প্রস্তাবের উথাপক এক এবং অখণ্ড পাকিস্তানে বিশ্বাসী ছিলেন। এই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় জন্য বাংলায় মােছলেম সমাজ শেরে বাংলা ফজলুল হক, জানাৰ এইচ, এস সােহরাওর্দী ও খাজা নাজিমুদ্দিনের নেতৃত্বে সপ্তগ্রাম করিয়াছিল। | তিনি বলেন, পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক বিরােধ একটি পুরাতন বিষয় এবং সম্পূর্ণ আভ্যন্তরীণ ব্যাপারও বটে। তিনি আর বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ গণ সাধারণ নির্বাচনে এলামী অনুশাসন মােতানেক সর্বোত্র প্রকার শোষণমুক্ত এক গণতাকি সমাজ গঠনের জন্য ভোট দিয়াছিলেন। তাহারা অতীতের এক বিরাট ত্যাগের বিনিময়ে গড়া পাকিস্তানকে খণ্ড-বিখণ্ড করার জন্য ভােট দেন নাই।’৯৯।
একই বিষয়ে দৈনিক পাকিস্তান’ শিরোনাম কলো- ‘দেশবাসীর প্রতি সােলায়মানের আহান, সমাজবিরােধী ও রাষ্ট্রবিরােধী ব্যক্তিদের প্রতিহত করুন। পত্রিকায় বলা হলো :
প্রাক্তন জাতীয় পরিষদ সদস্য ও কৃষক-শ্রমিক পার্টির সভাপতি জনাব এ, এস, এম. সোলায়মান ভারতীয় বেতারের দূরভিসন্ধিমূলক প্রচারণায় কান না দেয়ার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতি আহবান +[ন। কারণ ভারতীয় বেতার পূর্ব পাকিস্তানী নগগেৱা কৰিনে দুঃখকট সৃষ্টি করছে। এপিপির খবরে প্রকাশ, গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি মম নষ্টি না করে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা এবং অশেষ দুঃখকষ্ট থেকে জনগণকে রক্ষার শেশে স সমাজবিরােধী ও রবিরোধী লাক্তিদের প্রতিহত করার অন্য জনগণের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, মুসলমানদের বাসস্থান হিসেবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্টার জনা দক্ষ জনুক্ষ লােক জীবন দিয়েছ। মুসলমানদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার প্রধাৱ উল্য শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ১৯৪০ সালে ঐতিহাসিক লাহাের প্রস্তাব পেশ করেন। এবং ইতিপূর্বে আমি বহুবার বলেছি লাহাের প্রস্তাবের উথাপক এক ও অৰিহ পাকিস্তানে বিশ্বসী শেরে বাংলা এ, কে, ফজলুল হক, জনাব এইচ, এস, সােহরাওয়ার্দী ও খাজা নাজিমুদ্দিনের নেতৃত্বে বাঙ্গালী মুসলমরা পাকিস্তান এ তার জন্য এই শ্যাগ স্বীকার করেছে।
| হিন্দুদের রাজনৈতিক নিপীড়ন থেকে মুসলমানদের রক্ষার জন্য সেই ১৯০৬ সালে বাঙ্গালী মুসলমানরা নবাব সলিমুল্লায় নেতৃত্বে বাংলাকে বিভক্ত করে মুসলমানদের জন্য একটি নয়া প্রদেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে হিন্দুদের চাপে বৃটেন এটি না করে দেয়। বাঙ্গালী মুসলমানরা কখনাে হিন্দুদের সত্ব মেনে নেয়নি এবং তারতো ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। অামাদের আস্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপ সকল আন্তজাতিক শালীনতার বরখেলাপ বিশেষ। পাকিস্তানের শাসন তান্ত্রিক বিয়ে একটা পুরানাে প্রশ্ন পুরােপুরি ভাবে আভাস্কৰীণ ব্যাপার। গন্ত সাধারণ নির্বাচনের সময় পূর্ব পাকিস্তানী জনগণ ইসলামী নীতির বিধান মতে সকল কম শােষণমুক্ত একটি
________________________________________
পণতাত্রিক সমাজ গঠনের পক্ষে ভােট দেয়। তারা দেশকে টুকরাে টুকরাে করার জন্য। ভোট দেয়নি। কারণ এই দেশের জন্য তারা অতীতে বহু ত্যাগ স্বীকার করেছে।
প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি শামসুল হুদা ঢাকাতে দেয়া এক বিবৃতিতে বললেন, ‘ভারতের অভিসন্ধি শান্তিপ্রিয় দেশগুলাে লক্ষ্য করছে। সংবাদপত্রে বলা হলাে :
‘পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি জনাব শামসুল হুদা গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় বলেন যে, অর্থ ও সশস্ত্র অনুপ্রবেশকাৱীদের পূর্ব পাকিস্তানী সীমানায় ভিতরে ঢুকিয়ে সর্বতােভাবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সম্রাজ্ঞয়বাদী ভারতের নির্লজ্জ এ অনাহত হস্তক্ষেপ সম্পর্কে কোন মুসলমান ও দেশপ্রেমিক নীরব ও নির্বিকার থাকতে
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে জনগণ ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ ও সংঘর্ষের যেসব অঞ্জস্র অলীক উদ্দেশ্যমূলক বানােয়াট কাহিjী কলকাতার অাকাশৰাণী । মিসেস ইন্দিরা গান্ধী সরকারের অন্যান্য তথ্য মাধ্যম অনৱত প্রচার করে যাচ্ছে, তা যুদ্ধকালীন নাৎসী প্রচার কৌশলকেই শুধুমাত্র ছাড়িয়ে যায়নি, অধিকন্তু আন্তর্জাতিক আচরণের ক্ষেত্রে নজীরবিহীন ভন্ডামী ও নির্লজ্জতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
জনাব হুদা আরাে বলেন যে, ভারত স্বীকার না করলেও ভারতের ব্রাহ্মণ্য কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভারতের সম্প্রসারণবাদী অভিসন্ধি বিশ্বের শান্তিকামী গণতান্ত্রিক দেশগুলো লক্ষ্য করে আসছে। বাঙ্গালী মুসলমানদের সমর্থনে তার সাম্প্রতিক ভাল পাল্টানাে ও আলগা প্রেম পূর্ব পাকিস্তানের নিরীহ শান্তিকামী জনগণকে বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও অশেষ দুঃখকষ্টের দিকে ঠেলে দেয়ার গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি বলেন, ক্ষুদ্র বড় সকল উন্নতিশীল দেশেৱ সৱকার পদ্ধতি, পরিচালনা পদ্ধতি ও শাসনতান্ত্রিক পদ্ধতির ব্যাপারে সমস্যা রয়েছে। আমাদের পাকিস্তানীদেরও নিজস্ব শাসনতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে যা পুরােপুরিভাবে আমাদের নিজস্ব ও আমাদের নিজেদেরই তার সমাধান করতে হনে। ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধৰাৱা যদি মনে করে থাকে যে, তারা আমাদের আভ্যন্তরীণ বিরোবের সুযোগ নিতে পারবে এবং পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও অলিক অবতী বানচাল করতে পারবে তবে তারা ভুল করছে।
এটা বিশ্বের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে তারা এক টিলে দুই পাখী মারতে চাচ্ছে, যথা পাকিস্তানকে ‘রংস করার তাদের লক্ষ্য পূরণ এবং ব্রাজনৈতিকভাবে অবহেলিত ও অনৈতিকভাবে শান্তি পশ্চিম বাংলা থেকে দৃষ্টি অন|দিকে ঘুরিয়ে দেয়া। আমরা এখনাে আশা করি, ভারতের শান্তিপ্রিয় জনগণ এই বিপজ্জনক খেলা থেকে যুদ্ধবাজদের প্রতিহত করবেন। আমি নিশ্চিত যে, পাকিস্তান বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ। তাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীন জাতি হিসেবে বসবাসের অধিকাৰা ৰক্ষার জন্য একানদ্ধকাৰে রুখে দাঁড়াবেন।”১৩
| সংবাদপত্রে এ বিষয়ে আরাে সংবাদ পাওয়া যায়। রাজনৈতিক নেতা শামসুল হুদা। ছাড়াও কাইয়ুমপন্থী মুসলিম লীগের কাজী আবদুল কাদের, জমিয়তে উলামায়ে-র মওলানা গুৱানা, পিপলস্ পার্টির আবদুল হালিম পীরজালা, মওলানা জাফর আহমদ ওসমানী প্রমুখ নেতাও “হিন্দুস্থানের বিরুদ্ধে রুখিয়া দাড়াইবার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানালেন। সংবাদে বলা হলো :
________________________________________
“ঢাকা, ৯ই এপ্রিল। পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক মােছলেম লীগের সভাপতি জনাব শামছুল হল গতকাল এখানে বলেন যে, অর্থ ও সশস্ত্র বিদ্রোহীদের অনুপ্রবেশ করাইয়া পাকিস্তানের সর্ণে অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হিন্দুস্থানের নিল এবং গুঞ্জৰ অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ সম্পর্কে কোন মুছলমানের পক্ষেই নীরব থাকা সম্ভব নহে।
জনাব ছুদা এক বিবৃতিতে আরও বলেন যে, কলিকাতার আকাশবাণী এবং ইন্দিরা সমকালের অন্যান্য প্রচার মাধ্যমে দ্বারা পূর্ব-পাকিস্তানে জনসাধারণ ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে লড়াই ও সংঘর্ষের বানােয়াট কাহিনীও অনবরত বস্তাপচা প্রচারের দ্বারা মহাযুদ্ধকালীন প্রচারণা কৌশলকেই শুধু ছড়াইয়া যায় নাই আন্তর্জাতিক সনাচরণে নিলক্ষা ও তুলনাবিহীন ভন্ডামীর এক কলংকময় নজীর সৃষ্টি করিয়াছে।।
জনাৰ হুদা আরও বলেন যে, হিন্দুস্থান স্বীকার না করিলেও উহার ব্রাহ্মণ্য কর্তত্ব প্রতিষ্ঠার পর হইতেই হিন্দুস্থানের সম্প্রসারণবাদী অভিসন্ধি বিশ্বের শান্তিকামী গণতান্ত্রিক মানুষ লক্ষ্য করিয়া আসিতেছে। বাঙ্গালী মুছলমানদের সমর্থনে মুছলমানদের চির দুশমন হিন্দুস্থানের সাম্প্রতিক ভােল পরিবর্তনও আগা প্রেম পূর্ব পাকিস্তানের নিরীহ শান্তিকামী জনসাধারণকে বিশৃংখলা, নৈরাজ্য ও অশেষ দুঃখ কষ্টের দিকে ঠেলিয়া দেওয়ায় গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নহে।
তিনি বলেন, ক্ষুদ্র বড় সকল উন্নতিশীল দেশের সরকার পদ্ধতি, পরিচালনা পদ্ধতি ও শাসনতান্ত্রিক পদ্ধতির ব্যাপারে সমস্যা রহিয়াছে। আমাদের পাকিস্তানীদের নিজস্ব শাসনতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা রহিয়াছে, যাহা সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিজস্ব ও আমাদের নিজেদেরই উহার সমাধান করিতে হইবে। ভারতীয় সমাজাবালী যুদ্ধবাজিগণ যদি মনে করিয়া থাকে যে, তাহারা আমাদের আভ্যন্তরীণ বিরােধের সুযােগ গ্রহণ করতে পারিবে এবং পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অন্ততা বানচাল করিতে পারিবে তাহা হইলে তাহারা মারাত্মক ভুল করিতেছে।
| বিশ্বের নিকট ইহা সুস্পষ্ট হইয়া গিয়াছে যে, মুছলমানদের চির দুশমন হিন্দুস্থান এক ঢিলে দুই পাখি শিকার কন্মিতে চাহিতেছে যেমন পাকিস্তানকে গংসওল্পে তাহাদের উদ্দেশ্য হাসিল এবং রাজনৈতিকভাবে শােষিত পশ্চিম বাংলা হইতে হিন্দুস্থানীদের অন্যদিকে দৃষ্টি ঘুরাইয়া দেওয়া। আমরা এখনও আশা করি, হিন্দু স্নানের শান্তিপ্রিয় জনগণ এই বিপদজনক খেলা হইতে তাহাসের সুফলের প্রতিহত করবে। পরিশেষে মাছলেম লীগ নেতা বলেন যে, পাকিস্তান বিশেষ করিয়া পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তাহাদের সার্বভৌমত্ব ও আজাদ জাতি হিসাবে বসবাসের অধিকার রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে রুখিয়া দাড়াইলেন।
আওয়ামী লীগ হিন্দুস্থানের পক্ষে কাজ করিতেছিল করাচী হইতে পরিবেশিত অপর এক খবরে প্রকাশ, পাকিস্তান মােছলেম লীগের (কাইয়ুম এপ) প্রধান সংগঠক কাজী আবদুল কাদের গতকাল এখানে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এবং সামরিক আইন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সময়ােচিত ব্যবস্থা গ্রহণ সঠিক হইয়াছে। পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হিন্দুস্তানের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের দ্বারা ইহাই নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হইয়াছে যে, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব পাকিস্তানের জখনা দুশমন হিন্দুস্থানের পক্ষে কথষ্ট করিয়া আসিতেছিল।
________________________________________
করাচীতে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে জনাব কাদের শেখ মুজিবর রহমান ও বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের তীব্র সমালােচনা করিয়া বলেন যে, প্রদেশের সকল প্রকার বেআইনী কার্যকলাপের জন্য একমাত্র শেখ মুজিবকেই দায়ী করা যাইতে পারে । পূর্ব পাকিস্তানে সাম্প্রতিক সংকট আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বিশেষ করিয়া শেখ মুজিবের একগুয়েমির ফলেই সৃষ্টি হইয়াছে। শেখ মুজিব গত নভেম্বর মাসে পূর্ব পাকিস্তানে সামুদ্রিক গৱকীসহ কতিপয় জিনিসকে পুঁজি করিয়া লইয়াছিল। কাহার (শেখ মুজিব) সকল রাজনীতির একমাত্র পশ্চিম পাকিস্তান ও উহার অধিবাসীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ প্রচারের ভিত্তিতেই গড়িয়া উঠিয়াছিল।
জনাব কাদের আরও বলেন যে, শেখ মুজিব পাকিস্তানের উজিরে আজম হওয়ার এক সুবর্ণ সুযােগ লাভ করিয়াছিলেন কিন্তু হিন্দুস্থানের নিকট ওয়াদাবদ্ধ থাকার ফলেই তিনি শুধু পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থ লইয়াই রাজনীতি করিতেন।
| নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করিয়াছিল সত্যি কিন্তু উহা পশ্চিম পাকিস্তানী ভ্রাতাদের পূর্ব পাকিস্তানীদের মনে বিদ্বেষ সৃষ্টি ও সস্তা শোগানের মাধ্যমেই সঞ্জ হইয়াছিল। পূর্ব পাকিস্তানীগণ যদি বুঝিতে পারি যে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের সহিত হিন্দুস্থানের যােগসাজশ এহিয়াছে তাহা হইলে কোন অবস্থাতেই আওয়ামী লীগকে ভােট দান ও না বলা জনাব কাদের উল্লেখ করেন। মওলানা নুরানী। মওলানা নুরানী জমিয়তে উলামায়ে পাকিস্তানের পার্লামেন্টারী গ্রুপের চেয়ারমান মওলানা শাহ আহমদ নুরানী পাকিস্তানকে ধ্বংস করা ও আক্রমণাত্মক অভিসন্ধি চরিতার্থকল্পে হিন্দুস্থানী মুখোশ খুলিয়া পরার উদ্দেশ্যে মােছলেম দেশগুলােতে আলেমদের একটি প্রতিনিধি দল প্রেরণের জন্য সরকারের প্রতি সোপারেশ করেন। নি, এক বিবৃতিতে হিন্দুস্থানের সহিত কুটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য মােছলেম দেশগুলাের প্রতি আবেদন জানান।
পজিদি অপর এক খবরে প্রকাশ, শঙ্কর পিপলস পার্টির চেয়ারমান জনাব আবদুল হালীম পীরজাদা গতকাল পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দুস্থানী সশস্ত্র হস্তক্ষেপের তীর নিন্দা করেন এবং কঠোর হুশিয়ারী উচ্চাঙ্গ করিয়া বলেন যে, পাকিস্তানী জনসাধারণের ধৈরেও একটা সীমা আছে উহা ছাড়াইয়া গেলে হিন্দুস্থানের পরিণতি মারাত্মক হইয়া পাড়াইবে ।
জনাব পীরজাদা এক বিবৃতিতে আরও বলেন যে, পাকিস্তান তাহার আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হিন্দুস্থানী হস্তক্ষেপ আর বরদাশত করিবেন এবং তাহারা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হইবে । হিন্দুস্থান পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের প্রেরণ করিয়া আন্তর্জাতিক গীতিনীতির মারাত্মক অবমাননা করিয়াছে।
হিন্দুস্থানী প্রচার যন্ত্রগুলি পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে মিথ্যা ও বানােয়াট প্রচার চালাইয়া আবার ইহাই প্রমাণ কৰিল যে হিন্দুস্থান পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমােক ভূমিকাই শুধু গ্রহণ করে নাই-উহা মধ্য প্রাচ্যের এইরাসেল যে ভুমিকা পালন করিয়াছি এশিয়তে উমারই, পদাংক অনুসরণ করিতেছে। জনাব শীরতাপী ঘােষণা করেন যে, সিঙ্গুর জনগণ হিন্দুস্থানের এই ধরনের কার্যকলাপ বরদাশত কৰিৰে না এবং পাকিস্তানের ঐক্য ও
________________________________________
সংহতি রক্ষার জন্য যে কোনরূপ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রহিয়াছে। তিনি আক্রমণাত্মক চক্রাপ্ত করা হইতে হিন্দুস্থানকে বিরত রাখার জন্য বিশেষ শান্তিকামী মানুষের প্রতি আবেদন জানান। কারণ অনুৰূপ ব্যবস্থা গ্রহণ না করিলে হিন্দুস্থান হাত এক সময় সময় বিশ্ব-শাপ্তির পক্ষে দুমকী হইয়া লাড়াইবে। মওলানা জাফর আহমদ ওসমানী হায়ারাবাল হইতে পরিবেশিত অপর এক খবরে প্রকাশ, জমিয়তের প্রেসিডেন্ট মওলানা জাফর আহমদ ওসমানী পাকিস্তানের আস্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপের নিন্দা করেন। জমিয়ত প্রধান তাহার বিবৃতিতে বলেন যে, ভারতের লােকসভায় গৃহীত প্রস্তাব পাকিস্তান ধ্বংসের আরেকটি চক্রান্ত।
তিনি বলেন যে, নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হইয়াছে যে, ভারতের সম্প্রসারণবালী অভিসন্ধি আছে এবং তাহার সম্প্রসারণের পিপাসা মিটাইবার জন্য পূর্ব পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে চায়। মাওলানা মাছের প্রেসি9ে ইয়াহিয়াকেমিস্টি করেন যে, দুশমনের অসং অভিসন্ধি বাথ করিয়া নিতে সমগ্র জাতি তাহার পশ্চাতে হিয়াছে এবং পাকিস্তানের আঞ্চলিক অথতা এবং সংহতির সুন্য যে কোন কোরবানী করিতে তাহারা ইতস্ততঃ করিবে না।
অপরদিকে দৈনিক পাকিস্তান’ এপিপি-কে উদ্ধৃত করে কাজী কাদের-এর ৮ এপ্রিলের বিবৃতির পূর্ণ বিবরণ তুলে ধরে। পত্রিকায় বলা হলো :
করাটা, ৮ই এপ্রিল (এপিপি)। পাকিস্তান মুসলিম লীগের (কাইয়ুম এল) প্রধান সংগঠন জনাৰ কাল্পী আবদুল কাদের আজ এনে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের সাতিক ঘটনাবলী সামরিক আইন কর্তৃপক্ষের সময়ােচিত পদক্ষেপ এবং একই সাথে পাকিস্তানের আ®প্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপ ইত্যাদি ব্যাপারে একটি কথা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তা হলাে, আওয়ামী লীগ নেতারা পাকিস্তানের পরম শক্ত ভারতের পক্ষই শা করছিলেন।
fতাল এখানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তৃতা বলছিলেন। পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক খ্য ও কৃষিমনৰ কাপের শেখ মুজিবুর রহমানের এবং বে-আইনী জওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, সমস্ত অরাজকতার জন্য শেখ মুজিবুর বহমানই দায়ী। তিনি বলেন, নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে শেখ মুজিবুর রহমান গােটা পরিস্থিতিটাকে সঠিকভাবে পরিচালিত না করার দরুনই পূর্ব পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
পূর্ব পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ও জলো জ্বাসসহ আরো কতিপয় ঘটনাকে শেখ মুজিবুর রহমান মূলধন করেছিলেন। তার গোটা রাজনীতি মাত্র একটি বস্তু অর্থাৎ পশ্চিম পাকিস্তান এবং তার অধিবাসীদের ঘৃণার উপর প্রতিহিত ছিল। কী কাদের বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান গােটা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুবর্ণ সুযােগ পেয়েছিলেন। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ভারতের সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ-জানাই তিনি তার রাজনীতি পূর্ব পাকিস্তানে মামিত রেখেছিলেন।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়ী হয়েছে, এটা সত্য। কিন্তু তারা শােষণের বিরুদ্ধে চটকদার শ্লোগান দিয়ে এবং পশ্চিম পাকিস্তানী ভাইদের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানীদের মন বিষিয়ে তুলেই তারা বিজয়ী হয়েছে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি ভারতের সাথে
________________________________________
আওয়ামী লন্থ নেতৃবৃন্দের যোগসাজশের আসল মতলটা আদি জনসাধাৰণ জানতে তাহলে তারা নিষিদ্ধ দলটিকে কোন মতেই ভোট দিতেন না।
জনাব কাদের বলেন যে, বিগত সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রবিরােধী চক্র, কুখ্যাত হিন্দু গুন্ডা এবং দুর্ব দৃষ্কৃতিকারী দলের আশীর্বাদ পেয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারকালে আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের উদ্দেশ্য অর্থাৎ পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার এবং আমাদের প্রিয় দেশকে খণ্ড-বিখণ্ড কৱাৱ কথা প্রকাশ করেনিন । পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী জনাব কাদের বলেন যে, আওয়ামী লীগের অসহযােগ আন্দোলনে যা খা খটেছে তার সব কিছুর জন্য শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পলই পুরােপুরি দায়ী।
| তিনি বলেন যে, শেখ মুজিব ও তার দলের লােকের কুখ্যাত বাইশ পরিবারের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা পয়সা নিয়েছেন। তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানকে ভারতে কাছে তুলে নেওয়া ৰা মাতৃভূমির বাকি অংশ থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে বিভিন্ন করার জন্যে জনসাধাৰণ নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়নি। তিনি আরো বলেন যে, কোন দেশপ্রেমিক পূর্ব পাকিস্তানিই দেশ ভাংগার স্বপ্নও দেখছে না।
| রাষ্ট্রবিরােধীদের বিরুদ্ধে সরকার যে ব্যবস্থা নিয়েছে ফাঞ্জী কাদের তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন নিয়েছেন। পূর্ব পাকিস্তান ভারতের কাছে তুলে দেওয়ার আওয়ামী লীগ নেতা অড় অংকুরেই বিনাশ করে প্রেসিভেট ‘তা রাষ্ট্রপ্রধানের পাই পালন করেছেন। জাতিই প্রথম জাতিই শেষ। পাকিস্তানের দুশমনর আরেকবার শোনা যাবে পর্যন্ত করা হয়েছে। চীন প্রশংসিত কাজী কাদের পাকিস্তানের আভ্যন্তহীণ ব্যাপারে ভারতের নিল হস্তক্ষেপ এবং ভারতীয় পত্র-পত্রিকা ও বেতারে অন্য প্রোপাগান্ডা এবং নাক গলানাের জন্য আজকে উৎসাহদানকারী এবং পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতির বিরুদ্ধে থবর পরিবেশনরত পাশ্চাত্যের এক শ্রেণীর পত্র-পত্রিকার জন্য নিন্দা করেন।
পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে চীন যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে, তিনি তাকে স্বাগ জানান। টনি যে নৈতিক সমর্থন নিয়ে তার জানা। পূর্ব ও পশ্চিম দু-অংশের জনসাধারণই চীনের কাছে কৃতজ্ঞ। ১৯৬৫ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উস্কানিতে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তাতেও তা পাকিস্তানের পক্ষ সমর্থন
কাজী কাদের বলেন যে, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ প্রবর্তিত মাসীবাদী নীতিতেই গত নির্বাচন সম্পাদিত হয়েছিল। তিনি বলেন যে, পাকিস্তান মুসলিম লীগ সব সময় পাকিস্তানেৰী সংহতি ও আঞ্চলিক অখস্থতা অক্ষুন্ন রাখার নীতি অনুসাণ করে যাচ্ছে। যখনই মুসখিনা লীগের পূর্ব পাকিস্তানী নেতৃবৃন্দ নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও ৬ দফা কর্মস্টার বিরুদ্ধে কথা বলেছে তখনি তাদের পশ্চিম পাকিস্তানী শােষকদের তাবেদার বলে অভিহিত করা হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীই প্রমাণ করে যে, পাকিস্তান মুসলিম লীগ যে কথা বলেছিল তা সম্পূর্ণ সত্য।”১৫।
________________________________________
| দৈনিক আজাদ’ পত্রিকার ১০ এপ্রিল সংখ্যায় ভিন্ন মাত্রার একটি সংবাদ পাওয়া যায় । সংবাদের শিরােনাম ছিলাে ‘স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠা, শেখ মুজিবের পূর্ব প্রস্তুতির প্রমাণ। এপিপি পরিবেশিত এ খবরে বলা হলো :
| ‘আহলামাবাদ, ৯ই এপ্রিল। শেখ মুজিবর রহমান এবং তাহার সহযােগিগণ যে পূর্ব হইতেই স্বাধীন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার আয়ােজন করিয়াছিলেন, বিশ্বস্ত মহা হইতে উহার প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে।
| শেখ মুজিবর রহমানের সহিত প্রেসিডেন্টের আলােচনাকালে ঢাকা সফরে স্বাগত ‘টাইমস’ পত্রে বিশেষ সংবাদপত্র পল মার্টিন লিখিত এবং ২৫শে মার্চ তারিখে “টাইমস’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক খবরে বলা হয় যে, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে চরমপন্থীদল ছাত্র-ছাত্রীদিগকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার সম্পর্কে ট্রেনিং দান শুরু করিয়াছে।’
পূর্ব পাকিস্তানের বই মুক্তে গণবাহিনীর সূচনা হিসাবে বই মেচ্ছাসেবক বাহিন-গঠিত হইয়াছে। ভবিষ্যতে ইহাৱা সেনাবাহিনীর মােক্কাবিলা কৱিৰে। গত কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন লেবরেটরী হইতে চুরি করা রাসায়নিক প্ৰব্য হইতে তৈরি পেট্রল বােম এবং অন্যান্য ধরনের হাতে তৈরি বোমা জিমধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানীতে অপ্রকাশ করিতে গুরু করিয়াছে।’১৬
| ১০ এপ্রিল পাকিস্তান, ইসলামী ছাত্র সংঘের চারজন নেতা ঢাকায় এক চিঠিতে ‘পূর্ব পাকিস্থানের জনগণ ভারতের সম্রাজ্যবাদী অড়গ্র নস্যাৎ করবে’ বলে জানালাে। এই যুক্ত বিবৃতিতে পাকিস্তানি ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারী জেনারেল মোহাম্মদ ইউনুস, পূর্ব পাক সভাপতি মোহন নূরুল ইসলাম এনিং, ঢাকা শহর ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি সৈয়ণ শাহজামাল চৌধুরী স্বাক্ষর করেন। এ প্রসঙ্গে পত্রিকায় বলা হয় :
পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংক্ষের চারজন নেহা গতকাল শনিবার ঢাকার প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে জাগ্রত ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে তারতকে ইশয়ার করে দেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তার সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেবে। এপিলি জানায়, পাকিস্তানের অস্তিত্ব ধ্বংস করার ভারতীয় দূরভিসন্ধি নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হবার জন্য ছাত্রনেতৃবৃন্দ মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা পাকিস্তানের আস্তরীণ ব্যাপারে ভারতের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের ‘ত্র নিন্দা করছি। আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, ভারতীয় পার্লামেন্টে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অতি ও অনার্থিত এক প্রস্তাব গ্রহণ করার পর ভাণরত পূর্ব পাকিস্তানের সাত কোটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের জীবন দুর্বিষহ করার হীন মানসে মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে উত্তেজনা সৃষ্টির মুখ্য ভূমিকা পালনে মেতে উঠেছে।
একদিকে ভারত পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী পাঠিয়ে আভ্যন্তরীণ আইন শখলার সমস্যা সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধ প্রস্তুতি ও উত্তেজনা সৃষ্টি করে পাকিস্তানকে একটি আন্তর্জাতিক যুদ্ধে জড়াতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারত পূর্ব পাকিস্তানের তথাকথিত বন্ধু সেজে পূর্ব পাকিস্তানকে গ্রাস করার পুরাতন দুঃস্বপ্নে বিভোর হয়েছে। পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখার্জি পূর্ব পাকিস্তানকে পশ্চিম বাংলার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে সম্প্রতি যে উক্তি করেছেন তা থেকেই এটা পরিস্কার হয়ে গেছে।
________________________________________
ভারতীয় পার্লামেন্টে এই প্রস্তাব গ্রহণ এবং পরে পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ, সীমান্ত বাবর সৈন্য মােতায়েন ও পাকিস্থানের ভৌগােলিক অখণ্ডত্বের বিরুদ্ধে ভাৱীৰ বোৱৰ ভিসন্ধিমূলক প্রচারণার মালঃমে পূর্ব পাকিস্তাণে প্রতিটি নাগরিকের কাছে এটা অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তথাকথিত “স্বাধীন বাংলা” আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে চিরতরে গােলামে পরিণত করার জঘন্য ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।”১৭
১০ এখিলি শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক- এর পুর এ, কে, ফয়জুল হক- এর এক বিবৃতিও রেডিও পাকিস্তান থেকে প্রচার করা হলাে। বেআইনী ঘােষিত অাওয়ামী লীপের নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য তাঁর বিবৃতিতে ‘ভারতীয় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে নাড়ার আহ্বান জানালেন। “দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে এ সম্পর্কে বলা
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের পুত্রও বেমাইনী আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচিত জাতীয় পৱিল সদস্য গুনাব এ. কে. ফয়জুল হক গতকাল শনিবার ঢাকায় এক বিবৃতিতে পাকিস্তানে আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভাতে হস্তক্ষেপ ও সশস্ত্র অনুপ্রবেশের তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, ভারত আমাদের প্রিয় দেশের সংহতি বিনষ্ট করার জন্য। ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ভারতের এই হীন চক্রান্তের নিন্দা করার ভাষা আমার নেই। জনাব ফয়জুল হক আরাে বলেন, ভারত পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের জন্য কুম্ভীরা বর্ষণ। করছে। তিনি বলেন, ভারত তথাকথিত এক সংস্কৃতির’ নামে পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদেরকে দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ করতে চায়।
শেরে বাংলার পুত্র দৃঢ়তার সাথে বলেন, ‘আমাদের প্রিয় দেশ পাকিস্তানকে ধ্বংস হতে নিতে পারি না এবং দেশের সংহহির ব্যাপারে আমরা কোন পক্ষ হতে পারি না। হিনি। ভাৱতীয় যড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাড়াতে এবং সরকারের প্রতি পূর্ণ আস্থা। স্থাপন করতে আহবান জানান। এগনো যেসব কর্মদ্রিাহী কাজে যােগদান নকলননি তিনি। তাঁদেরকে অবিলম্বে জাতীয় স্বার্থে কাজে যােগদানেরও অনুরােধ জানান। গতকাল শনিবার। রাতে রেডিও পাকিস্তানের সর্বশেষ খবরে জনার ফয়জুল হকের এই বিবৃতি প্রচার করা। হয়।১৮।
পূর্ব পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আজমও ঢাকা বেতার কেন্দ্র থেকে এক বিবৃতি প্রচার করেন। তিনি তার দীর্ঘ ভাষণে ভারতকে দোষারােপ করে অনাহত সহানুভূতি ব্রাহ্মণ্য সাম্রাজ্যবাদের নয়া চাল’ বলে মস্তুৰ্য করেন। দৈনিক আজাদ পত্রিকার ১১ এপ্রিল সংখ্যায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
“ঢাকা, ১০ই এপ্রিল। পূর্ব পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গােলাম আজম গতকাল পূর্ব পাকিস্তানের সাত কোটি মানুষের ভাস লইয়া ভারতের প্রতি অতি উৎসাহী নেতালের হীন খেলার বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন। রেডিও পাকিস্তান। ঢাকা কেন্দ্র হইতে প্রচারিত এক বক্তৃতায় অধ্যাপক গােলাম আজম নিজেই নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্ত হইবার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
ৰোন্য ভাষণে তিনি বলেন যে, মুসলমান হিসানে আমরা একটি শান্তিপ্রিয় জাতি। আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন। এই পর্যন্ত পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে ভাল
________________________________________
সম্পর্ক রাখিয়া আসিয়াছে। কিন্তু ভারত সব সময় পাকিস্তানকে ভাংস কমায় আড়যন্ত্রে লিপ্ত তুহিয়াছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা এক আভ্যন্তরীণ শাসনাপ্রন সঙ্কটের সনি এবং আমরা এই পরিস্থিতি মাোবেলা করার চেষ্টা করিতেছি। কিন্তু ভারত আমাদের এই আভ্যন্তরীণ ব্যাপানাে ইচ্ছাকৃত নগ্ন হয়ে করিস্থে এবং পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের দুঃখ দুর্দশায় কুম্ভিরাশ্রু বিসর্জন দিতেছে ।
| আমি নেতা হলেন, ‘আত্মমর্যাদাসম্পন্ন প্রত্যেক পূর্ব পাকিস্তানাই আমাদের অত্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের নগ্ন হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ না করিয়া পারে না। সমগ্র বিশ্বই ভারতকে পাকিস্তানের প্রধান শত্রু বলিয়াই বিবেচনা কৰি থাকে। পাকিস্তান সম্পর্কে ভারত অদ্যাবধি আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি পালনের প্রতি সামান্য শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে নাই। তিনি বলেন ভারতীয় মুসলমান কাশর ও পাকিস্তান সম্পর্কে আন্তর্জাতিকভাবে সুবিদিত প্রতিশ্রুত পালনে ভারত সম্পূর্ণ ব্যর্থ হইয়াছে।
| অধ্যাপক গােলাম আজম নালেন যে, সম্প্রতি জাতের উজিরে আজম একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হইয়া লােক৷ সৰু পূর্ব পাকিস্তা||পে প্রতি সহা= এম করিয়া আমাদের বিপ্রাপ্ত করার চেষ্টা করেন। গত ২৩ বত্সর খাত ভারতের অe বন্ধুত্ব সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তানীদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রহিয়াছে। ফরাক্কা বাধ সমসা!, সময় সীমান্ত এলাকায় বিরামহীন আক্রমণ, জোরপূর্বক লক্ষ্মীপুর গ্রাম দখলের হীন চেষ্টা, বেরুবাড়ী হস্তান্তরের প্রশ্নে বিশ্বাসঘাতকতা এবং আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও বত্রিগাছঃ ছিটমহল হইতে নালী মুসলিম বিতাড়নের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি ভারতীয় ভালবাসার (?) প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে।
তিনি বলেন, ‘আমICদর উল্যি এই অদ্ভুত সহানুভূতি প্রপশন বনপী ভাৰতীয়, ব্রাহ্মণ্য সাম্রাজ্যবাদের অপর একটি প ছাড়া আর কিছুই নহে। অধ্যাপক আজম বলেন, ভারতের স্মরণ রাখা উচিত যে নিজেদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের প্রশ্নে পূর্ব পাকিস্তানীরা কোন শত্রু দেশের সাহায্য কামনা করে না। কিভাবে অধিকার আদায় করা হইবে তাহা পূর্ব পাকিস্তানীদের নিজস্ব ব্যাপার। ভারয় নেতৃবৃন্দ কি মনে করেন যে, পূর্ব পাকিস্থা+বাবা কি। এতই নিচে নামিয়া আসিয়াছে যে ছাহারা তাহলে এখনি শ ারতের নিকট হইতে সাহায্য গ্রহণ করবেন?
তিনি বলেন, ভারও যে কি ধরনের বন্ধু ওহ পূর্ব পাকিস্তানীরা ভাল ভাবেই অন্তত রহিয়াচ্ছে। এই বধু! ভারতে মুসলমান প্রজাদের নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা ও কারি মুসলমানদের উপর নির্যাতন বন্ধ করে নাই। কাশ্মীরীসের আনিয়ন্ত্রণাধিকার, হায়দরাবাদ, জুনাগড় ও মানভেদারের স্বাধীনতা প্রদান এবং স্টকৰ সংখ্যালঘু জনগণের নিরাপত্তা বিধানের পূর্বে কোন বিদেশী জনগণের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনে ভারতীয় নেতাদের ললিত হওয়া উচিত।
| তিনি আরও বলেন, বস্তুঃ সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ করিয়া ভাৱত পূর্ব পাকিস্তানীদের শেহেমঞ্চে চলে ওলিয়াছে। ভারতের ইহা স্মরণ রাখা উচিত যে, একটি দেশের স্বাধীনতার জন্য বৈদেশিক সশস্ত্র বাহিনী হস্তক্ষেপ করে না। আমি বিশ্বাস করি যে, এই সব অনুপ্রবেশকারী পূর্ব পাকিস্তানী মুছলমান নের নিকট হইকে কোন সাহায্যই পাহৰে না।
________________________________________
তিনি বলেন, ভারতীয় বেতাৱেৱ ডাহা মিথ্যা প্রচারণা ও পূর্ব পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী প্রেরণের পশ্চাতে কোন সং উদ্দেশ্য থাকিতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে ভারতে উহার অর্থে গঠিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিরস্ত্র পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে যুদ্ধে লিপ্ত করার একটি চিরাচরিত ভূমিকা গ্রহণ করিয়াছেন। ইহার মাধ্যমে ভারত আমাদিগকে সকল দিক দিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করিয়া পূর্ব পাকিস্তানকে উহার দাস ভূমিতে পরিণত করার পথ প্রশস্ত করিতে জাহিতেছে। তিনি আরও বলেন, সে কারণে ভারত ভ্রাহে অস্বাভাবিক অবস্থা আরও দীর্থ হউক যাহাতে আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটিবে এবং ফলে পূর্ব পাকিস্তান উহার নিকট হইতে সাহায্য প্রার্থনা করিতে বাধ্য হইবে।
অধ্যাপক আজম আরও বলেন, হলয় বিদারক পরিকল্পনা এই যে, ভারত চাহে মিল ও কারখানায় কোন উৎপাদন না হইক এবং আমাদের শ্রমিকরা অনাহারে মৃত্যুবরণ করুক, নিত্যদ্রব্যের অভাবে জনগণ উত্তরােত্তর দুর্দশার সম্মুখীন হউক, সীমান্ত এলাকায় কোন প্রহরী না থাকুক এবং বিনা বাধায় খাদ্য দ্রব্য ভারতে পাচার হউক। তিনি বলেন, ভাত চাহে যোগাযােগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হউক এবং আমাদের জাক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার হইয়া চরম দুর্দশা ভােগ করুক, দেশের অশান্ত অবস্থা বিরাজ করুক, এখানে কোন সরকার গঠিত না হউক এবং সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ুক।
তিনি বলেন, আমি ভারতের অতি উৎসাহী নাগরিকদের সতর্ক করিয়া দিতে চাই যে, ৭ কোটি পূর্ব পাকিস্তানীর ভাগ্য নিয়া এহেন হীন খেলা হইতে তাহাৱা যেন বিরত থাকেন। তিনি বলেন, আমাদের ভাগ্যের নির্মাতা আমাদেরই হইছে দেওয়া হউক। সর্বশেষে তিনি শক্তিমান আধাহর কাছে পাকিস্তানের ও উহার জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা এবং পূর্ব পাকিস্তানে পূর্ণ শান্তি ফিরিয়া আমার জন্য প্রার্থনা করেন।
এদিকে রাওয়ালপিন্ডি থেকে কাইয়ুমপন্থী মুসলিম লীগের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা পূর্ব বাংলায় সামরিক জান্তার পদক্ষেপকে সমর্থন করে এক যুক্ত বিবৃতিতে বললেন, ‘প্রেসিডেন্ট পূর্ব পাকিস্তানে একটি ভারতীয় যন্ত্র বানচাল করিয়া দিয়াছেন।” আজাদ’ পত্রিকা জানালাে :
রাওয়ালপিণ্ডি, ৯ই এপ্রিল। – শেখ মুজিবুর রহমান সহ দলের অপরাপর ক্রমপন্থীরা গত ১৯৫১ সালে আওয়ামী মােছলেম লীগ সংস্থা হইতে মােছলেম শব্দটি বাদ দেওয়ার পর আওয়ামী লীগ সৱাসৱি ভারতীয় প্রভাবের খপ্পরে পড়ে। রাওয়ালপিন্ডিছ পাকিস্তান মােছলেম লীগ (কাইয়ুম গ্রুপ) নেতৃবৃন্দ উপরােক্ত মর্মে অভিমত প্রকাশ করিয়াছেন। পাকিস্তান মােছলেম লীগের এই সৰ নেতৃবৃন্দ হইতেছেন রাজা জহুর আখতার, চৌধুৰী মাকসুদ আলী, এ, মালিক, গােলাম হােসেন, সৈয়দ জমির হােসেন ও চৌধুরী আমির
নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে জানান যে, আওয়ামী মােছলেম লীগ হইতে মোছলেম শব্দটি বাদ দেওয়ার পর হইতে ভারতের ক্ষমতাসীন সরকার পানির জাতীয় ঐক্য ও অখণ্ডত্ব বিনষ্টের জন্য আওয়ামী লীগের এই চরমপন্থীদের কোটারীকে কাজে লাগাইতেছিল।
ওলপিন্ডিস্থ পাকিস্তান মােছলেম লীগের (কাইয়ুম পই) প্রধান সংগঠক রাজা জহুর আখতার বলেন যে, আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করাচীতে ১৯৫১ সালে
________________________________________
অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি হইতে জনাব আবদুল রহিম, রাজা আখতার এ মিয়া নাজিমুনি (বাওয়ালপুর) দল ত্যাগ করেন। আওয়ামী লীগের উপরােক্ত সিদ্ধান্তের প্রতিবাসে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বহু দেশ প্রেমিক ব্যক্তি দল ত্যাগ করেন।
তিনি বলেন, দ্বিজাতি ভিত্তিক নীতির পরিপ্রেক্ষিতে মুছলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার প্রয়ােজনকে মিথ্যা প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে ভারতীয় মতলবকে চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই ভাতীয় ক্ষমতাসীন সরকারের ইংগিতেই দলের চরমপন্থীরা মােছলেম শব্দটি বাদ দিয়াছিলেন। তাই ন্যায়সঙ্গত কারণেই এইসব দেশপ্রেমিক সদস্যগণ দল তাপ করিয়াছিলেন।
পাকিস্তান মােছলেম লীগের (কাইয়ুম এপ) অপর একজন নেতা চৌধুরী মাকসুদ আলী বলেন, আওয়ামী লীগ সংস্থা হইতে মােছলেম শব্দটি বাদ দেওয়ার সাথে সাথে ভারত পাকিস্তান সীমান্ত এলাকা বরাবর আক্রমণাত্মক মনোৰি লইয়া স থ বাহিনী সমাবেশ করে। জনাব মাকন বলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার তিন বার কালের মধ্যে ভারত পর পর তিনবার পাকিস্তানকে বার্থ করার উদ্যোগ গ্রহণ করিয়াছিল। ইহার মধ্যে দুইবার আলের পানি বন্ধ করিয়া ও একবার কাশ্মীরের আক্রমণ পরিচালনার মাধ্যমে।
কাইয়ুমপন্থী পাকিস্তান মােছলেম লীগের অন্যতম নেতা জনাব মালিক গোলাম হােসেন বলেন, ভারত তাহরি এজেলের মাধ্যমে প্রথমে এখানে ৬ দফা দাবীৱ ধুয়া তােলে এবং পরব! কালে বাংলাদেশের গির শুরু করে। তিনি বলেন, গত ১৯৪৫ সালে ভারত পাকিস্তান আক্রমণের পর পরই শেখ মুজিবের ৬ দফা কর্মসূচি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের মৃণ্য পদক্ষেপের আর একটি পাল্প হিসাবে গণ্য না করিয়া পারা যায় না। পাকিস্তান মােছলেম জাগেন তথাকথিত নির্বাচন- বিজয় সুস্পষ্টভাবে ভারতের পাকিস্তান বিভক্তির দাবীকেই প্রতিষ্ঠিত করিয়াছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের গৃহীত ব্যবস্থা ও পূর্ব-পশ্চিম পাশ্মিানের দেশপ্রেমিক রাজনীতিকদের দৃষ্টি ভারতীয় আড়যকে ব্যর্থ করিয়া দিয়াছে। তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ করিয়া ভাৰত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রকাশৰে দন্ডায়মান হইয়াছে। পাকিস্তানের এই পরিস্থিতিতে নয়াচীনের ভূমিকায় তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিয়া বলেন যে, পাকিস্তান এই সময়ে কে তাই প্রকৃত শত্র- ও মিত্র তাহা উপলব্ধি করিতেছে।২০
এদিকে কনভেশন মুসলিম লীগের কতিপয় নেতা এক যুক্ত বিবৃতিতে ‘পাকিস্তানের সংহতি রক্ষাকল্পে একৰিদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানালেন। পত্রিকায় বলা হলাে : | “ঢাকা শহর মুসলিম লীগের (কনভেনশন) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাঃ নুরুর রহমান, প্রচার সম্পাদক জনাব মোশাররফ হোসেন, যুগ্ন সম্পাদক দেওয়ান আবদুল কাদের ও ঢাকা শহর মুসলিম লীগ কার্যকরী কমিটির পয়জন সদস্য গত শুক্রবার এক যুক্ত বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তানে সাঞ্জ অনুপ্রবেশকারী পাঠাইয়া পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতেৰা হস্তক্ষেপের কঠোর নিন্দা ও পন করেন।
বিবৃতিতে তাহারা বলেন যে, সীমান্তের ওপার হইতে সশস্ত্র ছাপা হয় অনুপ্রবেশের ফল পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল আকার ধারণ করছে। দেশের আস্তরীণ ব্যাপারে যে কোন হস্তক্ষেপকে পাকিস্তান মনিই সাত আশাৰ দেওয়ার জন্য হুহ রহিয়াছে।
জনাব নুরুল আমীন ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের প্রস্তাব অনুযায়ী ঢাকা শহর শান্তি কমিটি গঠনের উদ্যোগের প্রতি তাঁহারা পূর্ণ সমর্থন জানান। পাকিস্তানের সংহতি ও অখণ্ডতা
________________________________________
রক্ষার উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য বিবৃতিতে পাকিস্তানী নাগরিকদের প্রতি আহবান
এদিকে এন, এস, এ-এর পোলন ও এক বিবৃত প্রচার করে ভারতীয় হস্তক্ষেপ নিন্দা জানায়। পত্রিকায় কী হয় :
জাতীয় ছাত্র ফেজারেশনের (দোলন রুল) ভারপ্রাজ্ঞ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জনাব আমিনুর রহমান জিন্নাহ ও জনাব মাহবুব সিদ্দিক পাকিস্তানে জাতীয় সশস্ত্র ব্যক্তিদের অনুপ্রবেশে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করিয়াছেন।
এক যুক্ত বিবৃতিতে তাহারা বলেন যে, গত পক্ষকাল যাবত যাহা ঘটিয়াছে তাহা সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার এং তাহারা কি ধরনের রাজনৈতিক পদ্ধতি প্রণয়ন করিবে তাহা কেবল এই দেশের জনগণের উপরই নির্ভর করে। তাহারা বলেন, ভারত পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করিয়া শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থানের সকল নীতি নগ্নভাবে লজ্জন করিয়াছে। ভারতের হীন চক্রান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা প্রকাশ করিয়া ছাত্র নেতাদ্বয় বলেন যে, ইহা সকলের জানা উচিত যে, পূর্ব পাকিস্তানীরা কোন প্রকারেই ভারতীয় নাগপাশে আবদ্ধ হইতে প্রস্তুত নহে এবং কখনও তাহালের বহু কষ্টে অর্জিত আজাদীকে বিকাইয়া নিতে রাজী নয় ২২
এদিকে পাকিস্তান জমিয়তুল সিলম”-এর প্রেসিডেন্ট শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক-এর কন্যা ইসী বেগম সংবাদপত্রে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘২৫শে মার্চ ছিল। পূর্ব পাকিস্তানের বিপদ মুক্তির দিন’। পত্রিকায় বলা হলাে :
মরহুম শেরে বাংলা এ, কে, ফজলুল হকের কন্যা ও পাকিস্তান জমিয়তুল সিলমএর প্রেসিডেন্ট রইসী বেগম সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন যে, ১৯৭১ সালে ২৬শে মার্চ ছিল একটি শত্রুপক্ষীয় ও যুদ্ধংদেহী শক্তির কবল থেকে আমাদের অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানের সাত কোটি জনগণের বিপদ মুক্তির দিন।
তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় পাকিস্তানের সীমান্তের ওপার থেকে শত্রুপক্ষ কর্তৃক সংগঠিত ও প্ররােচিত কতিপয় দেশদ্রোহীদের দ্বারা চরম ভয়ভীতি ও হুমকির মধ্যে কাল কাটাচ্ছিলাম । কিন্তু আলহামদুল্লিাহ মহান আল্লাহতায়ালা লাঞ্ছিত ও অত্যাচারিত মুসলমানদের সারা রাতের আকুল প্রার্থনা কবুল করেছেন এবং পাকিস্তানকে সমূহ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, এটা এখন দিবালােকের ন্যায় পবিষ্কার যে, শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামের জাতশত্রুদের সহায়তায় পাকিস্তানের ৭ কোটি জনগণের এ অঞ্চলকে বিশ্বনাথ, কাল ও দুর্গার মন্দিরে পরিণত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। তিনি আরাে বলেন, তারা পাকিস্তানের পাকভূমি থেকে সার্বজনীন ইসলামী সংস্কৃতিকে ধ্বংস করাতে চেয়েছিলেন।
এ প্রসঙ্গে রইসী বেগম বলেন, “আল্লাহ আকবরের স্থলে শেখ মুজিব পৌত্তলিকদের ধুদ্ধের শ্লোগান “জয় বাংলার আমদানি করেছিলেন।
পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের উদ্দেশ্যপূর্ণ হস্তক্ষেপ নিশ্চয়ই পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব পবিত্রতার প্রতি একটি চ্যালেঞ্জ বলে তিনি উল্লেখ কৱেন । এ ব্যাপারে ভারত সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেন, তারা যদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এ ধরনের নাশকতামূলক কার্যকলাপ থেকে বিরত না থাকে তবে পাকিস্তানের জনগণ জানে কিভাবে তার পাতভাঙ্গা জবাব দিতে হয়।
________________________________________
জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া বেতার ভাষণে সব স্থান বললেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগই নারী’। পত্রিকায় এ শর্কে বলা হলো :
ঢাকা, ১২ই এপ্রিল =সাবেক জাতীয় পরিষদের সরকারী দলের নেতা জনাব আব্দুস শকুর কান নেতার ভাষণে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানবাসী প্রমাণ কৰিৰে য়ে, তাহারা দেশের অপরাপর অঞ্চলের জনগণের ন্যায়ই দেশপ্রেমিক। তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে ভারতীয় সশ অনুপ্রবেশকারীৰা অভিনন্দিত হইবে বলিয়া ভারত ভ্রান্ত ধারণা পােষণ করিয়াছিল। কিন্তু প্রদেশের দেশপ্রেমিক জনসাধারণ এইসব অনুপ্রবেশকারীদের ছত্রভঙ্গ ও আত্মসমর্পণে ৰাধ্য করিয়া ভারতে এই ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ দুঃসাহসিক অভিযান ব্যর্থ করিয়া দিয়াছে।
| বেতার ভাষণে জনাব আবদুস সবুর খান আরও বলেন যে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য বেআইনী ঘােষিত অাওয়ামী লীগই দামী। তিনি বলেন, এই দলের প্রকৃত লক্ষ্য ছিল দেশকে খণ্ড-বিখণ্ড করা। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া জানি দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ড রক্ষায় যে পলক্ষেপ গ্রহন করিয়াছেন জনাব সলুর উজকে অভিনন্দি করেন।’ | জাতীয় যুব কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট এভােকেট মাহবুবুর রহমান এক বিবৃতিতে তারা প্রদেশের অর্থনা ও সংস্কৃতিকে বিনষ্ট করতে বদ্ধপরিকর বলে উল্লেখ করেন।
টাকা, ১২ই এপ্রিল ।-জাতীয় যুব কাউন্সিলের প্রেসিলেট ও ঢাকা হাইকোর্টের এভাকেট নাৰ মাহবুবুর রহমান আজ এখানে বলেন যে, ভারতের সাম্প্রতিক শামুলক আচরণে প্রতীয়মান হইতেছে যে, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণার সর্বাত্মক কৌশল অবলম্বন করিয়াছে। ভারত বিশেষ করিয়া পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও আঞ্চলিক অখকে বিনষ্ট করিতে বদ্ধপরিকর।
সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে জনাব মাহবুবুর রহমান ভারতের পূর্ব পাকিস্তানে ক্রমাগত অশস্ত্র প্রেরণ ও সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি ভারতের প্রচারযন্ত্রগুলির অপকৌশলের নিন্দা করিয়া বলেন যে, ভারত তাহার প্রচারগুলি অামাদের বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমতকে বিভ্রান্ত করায় ও আমাদের নিরাপরাধ জনগণকে এপ্তি পথে পরিচালিত করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করিয়াছে।
তিনি বলেন, এখানে প্রেরিত ভারতীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হইয়াছে এবং সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদেরা নন্দী কন্যা হইয়াছে। এখানকার ভারতীয় দূতাবাসে অবৈধ ওয়ারলেস ট্রান্সমিশন সেট উদ্ধার করা হইয়াছে। তিনি বলেন, আমি তাতের এই অব্যাহত তৎপরতার নিন্দা জ্ঞাপন করিতেছি এবং বৃহৎ শক্তিবর্গের নিকট বিশেষ করিয়ার জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনের নিকট আবেদন জানাইতেছি যে, তাহারা যেন অবিলম্বে ভারতকে এ বনেৱ আচমণাত্মক তৎপরতা হইতে বিরত হওয়ার আহবান জানান। বিশ্বশান্তি নিশ্চিতভাবে বিঘ্নিত হইবে । তিনি দেশবাসীর নিকট ধীর-স্থির ও সাহসিকতার সহিত ভারতের এই জঘন্য হামলার মােকাবেলার জন্য আহবান জানান।২৫
‘প্রদেশ হইতে হিন্দনী অনুপ্রবেশকারীদের উদেকল্পে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানালেন কতিপয় রাজনৈতিক নেতা। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
‘ঢাকা, ১২ই এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান কনভেনশন মােছলেম লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য জনাব মােহাম্মদ শহীদুল্লাহ সামরিক আইন
________________________________________
কর্তৃপক্ষের সহিত সর্বাত্মক সহযােগিতা এবং পবিত্র ভূমি হইতে হিন্দুস্থানী অনুপ্রবেশকারীদের উপেকল্পে সশ বাহিনীর বীর জোয়ানদের সহিত একযোগে গজ করিয়া যাওয়ার জন্য দেশপ্রেমিক নাগরিকদের প্রতি আকুল আবেদন জানান।
এখানে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন যে, আমাদের আত্যন্তরীণ ব্যাপারে হিন্দুস্থানের হস্তক্ষেপে পাকিস্তানের জন্মলগ্ন হইতেই হিন্দুস্থানের দুশমনীর কথাই পুনরায় প্রমাণিত হইল ও পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ হিন্দু ভারতকে খুব উত্তমভাবেই জানে এবং জাহাৱা কোন অবস্থাতেই হিন্দুদের অধীনতা স্বীকান্ত করিয়া লইবে না বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন।
অনাব শহীকুল্লাহ আলঞ্জ বলেন যে পাক-ভারত ইতিহাসের গত ২৪ বৎসরে ইহাই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হইয়াছে যে, হিন্দুস্থান সুযােগ পাইলেই পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতিকে পঙ্গু করিতে চেষ্টা করে। তিনি বলেন জোরপূর্বক লক্ষ্মীপুর দখল, বেরুবাড়ীর ব্যাপারে বিশ্বাসঘাতকতা, আসাম হইতে মুছলমান বিতাড়ন এবং ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের দ্বারা হিন্দুস্থানে পূর্ব পাকিস্তানীদের জন্য কোনরূপ দরদেরই চিহ্ন দেখা যায় নাই। হিন্দুস্থান নিত্যনৈমিক ব্যাপারে মুহামানদের হত্যা করিতেছে এবং এখন পূর্ব পাকিস্তানকে হাসি করার জন্য বাঙ্গালী মুছলমানন্দের জন্য কুকির বিসর্জন করিতেছে।
হিপুষ্ঠানের ইহা পরিষ্কারভাবে জানা উচিৎ উহার সকল হীন চক্রান্ত পূর্ব পাকিস্তানীগণ নস্যাৎ করিয়া দিবে। পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ এক পাকিস্তানের জন্যই ভােট দিয়া ছিল এবং উহাকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য কাহাকেও ভােট দেয় নাই। তিনি আকাশবাণীর নিমজ্জি ভিত্তিহীন প্রচারণায় কর্ণপাত না করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনসাধারণের প্রতি শাহিবান জানাইয়া বলেন যে, উক্ত তিনি প্রচারণায় কী করলে জনগণের দুঃখ দুর্দশা বৃদ্ধি পাইবে। মােছলেম ছাত্রলীগ। ঢাকা শহর মােছলেম ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব কে, জি, করিম পূর্ব পাকিস্তান কাউন্সিল মােছলেম লীগ সভাপতি খাজা খামেরুদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত নাগৰিক শাস্তি কমিটির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করিয়াছেন। তিনি আজ এক বিবৃতিতে বলেন যে, তাহার দল উক্ত কমিটির সহিত সহযােগিতা করিতে প্রস্তুত রহিয়াছে এবং আগামীকালের মিছিলে মােগদান করে।
তিনি আগামীকাল বায়তুল মােকাররমে উপস্থিত থাকার জন্য মােছলেম ছাত্রলীগের সকল সস্যকে অনুরোধ করেন। মুফতী মাহমুদ জমিয়তে উলামায়ে। এছলামের সাধারণ সম্পাদক মুফতী মাহমুদ গতকাল হিন্দুস্থানের সহিত কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন এবং জেহাদের জন্য সমগ্র জাতিকে প্রস্তুত করিয়া তােলার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাইয়াছেন বলিয়া মুলতান হইতে পরিবেশিত খবরে জানা গিয়াছে। তিনি এক সাংবাদিক সম্মেলনে ভাষণ দানকালে দলীয় রাজনীতি ত্যাগ কন্নিয়া বর্তমান মুহুর্তে এক্যবদ্ধ হওয়ার উপর সবিশেষ গুরুত্বারােপ করেন।
দেশের ঐক্য ও সংহতি রক্ষাকল্পে আভ্যন্তরীণ ও বিদেশী হুমকির বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থার সমর্থনে বিশ্ব জনমত গড়িয়া তােলার জন্য অমােছলেম প্রতিবেশী
দেশ ও মােছলেম দেশগুলিতে উলেমা ও রাজনৈতিক নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধিদল প্রেরণের জন্য সকারের প্রতি মোকাবেশ করেন।
তিনি পাঞ্চিস্তানের প্রতি সমর্থন এবং হিন্দুস্থানের নিন্দা করার জন্য চীনের প্রশংসা করিয়া বলেন যে, চীনের আHও সমর্থন ও সহযােগিতা লাভের জন্য আরও চেষ্টা করা উচিত। অনুরূপভানে পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতি প্রতি হিন্দুস্থানী চুমকী সম্পর্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ফ্রান্স এবং সােভিয়েট ইউনিয়নকে অবহিত করা উচিত বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন। মালিক কাশিম লাহাের হইতে পরিবেশিক্ত অপর এক খবরে প্রকাশ পাকিস্তান মােছলেম লীগের (কনভেনশন) সভাপতি মালিক মােহাম্মদ কাশিম গতকাল বলেন যে, পাকিস্তানের অত্যন্তরীণ ব্যাপারে মুয়ামনিদের চির দুশমন হিন্দুস্থানের নগ্ন হস্তক্ষেপ ও উহার দুমকার মুখে পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করিয়া তোলার উদ্দেশ্যে একটি মুক্ত আন্দোলন গড়িয়া তােলার জন্য বিভিন্ন রাজনৈএিক ললের উৎসাহ, উপনায় প্রদেশের জনগণের দেশপ্রেমিকই ফুটিয়া উঠে।
গতকাল লাহােরে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন যে, হিন্দু স্থানী অঞ্চত চক্রান্ত ব্যর্থ করিয়া দেওয়ার জন্য তথায় সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসিবে। সকল প্রতিবেশী দেশের সহিত উত্তম ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পড়িয়া তােলার অন্য পাকিস্তানের। প্রত্যেকটি সরকার ই ০ষ্টা করিছেন এবং একমাত্র হিন্দুস্থান জ9িা অন্যান্য সকল দেশের সহিত সং, সম্পর্ক গড়িয়া তােলার ব্যাপারে পাকিস্তান সাফল্য লাভ করিয়াছে বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন। পাকিস্তানীগণ সকল সময়ই এই কথা মনে করিয়াছে যে, উভয় দেশের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য উহাদের সকল সম্পসের সন্ধাণহার করা হইবে কিন্তু হিন্দুস্থান পাকিস্তানের ক্ষতি করার জন্য অব্যাহতকালে দুশমনীর ও গ্রহণ করিয়া চলিয়াছে।
| হিন্দুস্থান এইবারও ||লের আ5্যন্তরীন সমস্যার সুযোগ গ্রহণ করিয়াছে, কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের যৌথ তৎপরতার খার। হিন্দুস্থাণী বাণখান নেতাদের এই কথাই বুঝাইয়া দিয়াছেন যে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাইয়া তাহারা মারাত্মক ভুল করিয়াছে। ইত্তেহাদুল উলামা পাকিস্তান জমিয়তে ইত্তেহাদুল উলেমা পার্টির ২ জন নেতা মওলানা মিয়া মুফিজুল হক এবং মওলানা কামাল উদ্দিন হিন্দুস্থান সাম্রাজ্যবাদীদের ভূমিকার তীত্র নিন্দা করিয়া বলেন। যে, পূর্ব পাকিস্তানের পক্যেকটি মুছলমান উক্ত দুশমনদের জন্য চাক্ত নস্যাথ করিয়া! দিবে। ঢাকায় প্রকাশিত এক যুক্ত বিবৃতিতে তাহারা আরও বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানী মুছলমানগণ এছিয়াম ও পাকিস্তান রক্ষার জন্য তাহাদের শেষ ব্যক্তবিন্দু তাপ করিতেও দ্বিধা করিবে না।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন যে, তথাকথিত বিঞ্ছিন্নতাবাদীদের একথা স্মরণ করা উচিত যে, পূর্ব পাকিস্তান যদি বৃহৎ শক্তিবর্গের রণক্ষেত্রে পরিণত হয় তাহা হইলে উহা রাজনৈতিক
________________________________________
এ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে হংস হইয়া যাইবে। অনুপ্রবেশকারী হিন্দুস্থানদের প্রতি। কোনরূপ সাহায্য প্রদান করিলে পরিণতিতে মুছলমানদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পূর্ণরূপে যgংস হইয়া যাইবে । মুহলমানলো চির দুশমন হিন্দুস্থান পাকিস্তানকে স্বীকার করিয়া লয় নাই এবং এখনও সে গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে একটি ব্রামরাজ্যে পরিণত করিতে চাহিতেছে এবং এই এ9, পেশা বাস্তবায়নের জন্য সীমাঝে ৫ ডিভিশন হিন্দু সৈন্য মােতায়েন করিয়াছে বলিয়া তাহারা উল্লেখ করেন। জমিয়ত নেতৃদ্বয় মুক্তিফ্রন্টের ছদ্মবেশে পূর্ব পাকিস্তানে অনুপ্রবেশঙ্কারী হিন্দুদের অশুভ চক্রান্ত প্রতিহত করার জন্য এছলামের অনুসারী পূর্ব পাকিস্তানীদের প্রতি আকুল আবেদন যাননি। খাজা জামাল পাকিস্তান মােছলেম লীগের পার্লামেন্টারী নেত্রী খাজা জামাল মােহামণ কোরিজা পাকিস্তানের উপর হিন্দুস্থানী আক্রমণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আকুল আবেদন জানান। তিনি পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের প্রেরণের জন্য হিন্দুস্থান সরকার কঠোর সমালােচনা করেন। জনাব কােরিয়া হিন্দুস্নানে নগ্ন হামলার বিরুদ্ধে পাকিস্তানী জোয়ানদের বীত্বপূর্ণ ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার প্রতি মােবারকবাদ জ্ঞাপন করেন বলিয়া করাচী হইতে পশ্রিবেশিত অপর এক খবরে প্রকাশ। শীর এলাহী বক্স সিন্ধুর স্যকে উজিরে আজম পীৱ এলাহী বক্স দেশের ঐক্য ও সংহতি রক্ষার জন্য বর্তমান সামে সরকারে সহিত সহযােগিতা করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। তিনি বর্তমান মুহূর্তে নীরবতা অবলম্বনের জন্য কতিপয় পাকিস্তানী নেতার কঠোর সমালােচনা করেন । তাহারা হিন্দুস্থানের নিন্দা করিতেছেন কিন্তু পাকিস্তানের প্রকাশ্য দুশমন ও রাষ্ট্রদ্রোহী শেখ মুজিবের কোনরূপ নিন্দা করিতেছেন না। গাজী পরদেশী। করাচী হইতে পরিবেশিত অপর এক খবরে প্রকাশ, পাকিস্তান মােছলৈম লীপের (কাইয়ুম গ্রুপ) সিনিয়র যুগ৷ সম্পাদক পূর্ব পাকিস্তানে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক অবস্থা ফিরাইয়া আনার কাজে প্রসনের সহিত সহযােগিতা করার জন্য দলের পূর্ব পাকিস্তানে সমাদর প্রতি আহবান জানান। তিনি হিন্দুস্থানী কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা করেন ।
পর্ব পাকিস্তানে শান্তিপ্রিয় নাগরিকগণ সামরিক ব্যবস্থায় আহত হন নাই” বলে এক বিবৃতি দিলেন পূর্ব পাকিস্তান জুনাগড় পিপলস এসােসিয়েশন । পরিকায় বলা হয় ।
করাচী, ১২ই এপ্রিল।-পূর্ব পাকিস্তান জুনাগড় পিপলস এসােসিয়েশনের আহ্বায়ক জনান গুলী মােহাম প্যাটেল গতকাল এখানে ললেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে সাম্প্রতিক সামরিক বাবস্থায় শান্তিপ্রিয় নাগরিকগণ আহত হন নাই। ঢাকা হইতে এখানে আসার পর এক বিবৃতিতে তিনি বলেন যে, কেবলমাত্র পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী ও কতিপয় দেশদ্রোহী সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে। তিনি বলেন, পানিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অব্যাহত প্রচারণায় “শাক একি ভাগও সত্য নাই।” তিনি। আরও বলেন, আভ্যন্তরীণ গোলযোগ সৃষ্টি করার জন্য ভারত শাদা পােশাকে সশন্ধ অনন্ধ কংলাদেশ ১০।
________________________________________
অনুপ্রবেশকারী প্লেৱশ করিতেছে এবং উহার মাধ্যমে দেশ হইতে পূর্বাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করিতেছে।২৭
| এনিকে ১২ এপ্রিল গভর্নরের সঙ্গে প্রাদেশিক মােছলেম লীগ নেতৃবৃন্দ দেখা করে সকালকে পূর্ণ সহযােগিতার আশ্বাস দিলেন। সংবাদে বলা হলো : | ‘ঢাকা, ১২ই এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান মােহলম লীগের (কনভেনশন) সভাপতি জনাৰ শামসুল হুদার নেতৃত্বে প্রাদেশিক মােছলেম লীগের নেতৃবৃন্দ অন্য পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর লেঃ জেনারেল টিক্কা খানের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আমার ব্যাপারে সময়ের সহিত সহযােগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন। | প্রাণে শক লীগের জেনারেল সেক্রেটারী আলাৰ এ এন এম ইউসুফ, প্রাক্তন পার্লামেন্টারী সেনেটারী জনাব আবদুল আওয়াল এবং জনৰ মোহাগল হােসেন প্রতিনিধি দলে ছিলেন।
এদিকে মওলনা ফরিদ আহমদ এক বিল এতে পক্কিানকে বিচ্ছিন্ন করার উপায় প্রচারণার তীব্র নিন্দা জানান। পত্রিকায় বলা হলাে : | ‘ঢাকা, ১৫ই এপ্রিল।মজাৰী ফরিদ আহমদ আজ এখানে বলেন যে, “পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করা এবং মুছলমানদের হিন্দু ব্রাহ্মণ্য ফ্যাসিবানের গােলামে পরিণত করার হিন্দুস্থানী চঞ্জ বর্তমানে নিরপেক্ষ ও পঞ্চপাণ্ডহীন বিশ্ব জনমতের নিক পত্রিয়ারভাবে ফাম হইয়া গিয়াছে। | তিনি এক বিবৃতিতে বলেন যে বিশ্বাস ও দেশদ্রোহীদের রক্ষায় হিন্দুস্থান পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনী কর্তক নিতমের কাল্পনিক ঘটনায় একটানা অপপ্রচার চালাইতেছে। হিন্দু ভারত সহিত কাৰন্ত্রে লিপ্ত সাম্রাজ্যবাদীসের এজেন্টগণ ইজাক তাৰে এই সকল মিথ্যা অলর পরিবেশন করে । হিন্দুস্থান পাকিস্তান করার জন্য উহারই পবিত্র ভূমিতেই এইসব এয়ালের নিয়োজিত করিয়াছে।
সে এই সকল সংবাদদাতাদের মিথ্যা গলৱ তৈরিতে সক্রিয়ভাবে সাহায্য ও প্ররােচণা দান করা হইতেছে। ঢাকা শহরে সম্পূর্ণ ধ্বংস সাধন, ট্যাঙ্কের যুদ্ধ, কটনমেন্ট ঘেরাও, সেজেনারেল টিকা খাৰুকে হত্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, চরম বন্দরের সূর্ণ রংস সাধন, শেখ মুজিবর ও তাহার সমর্থকগণ কর্তৃক স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠন এবং আমাদের মাতৃভূমিতে বিন্নি রণক্ষেত্রে জয়লাভের মিথ্যা খবরের স্বরূপ বর্তমানে সকপে উদঘাটিত হইয়া গিয়াছে।
ফেসৰ ব্যক্তি ব্যক্তিগতভাবে এই সব মিথ্যা প্রচার প্রমাণ লাভ করিয়াছেন তাই দেবর হিন্দুস্থানী বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণার প্রতি ঘৃণাই সৃষ্টি হইয়াছে। মঞ্জাবী ফরিদ বলেনঃ “আমি ২ বার চট্টগ্রাম সফর করিয়া বিভিন্ন শ্রেণীর জনসাধারণের মতামত লাভ করার সৌভাগ্য হইয়াছে। ১লা মার্চ হইতে ২৯শে মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রাম শহরে তথাকথিত মুক্তিবাহিনীর সহায়তায় হিন্দুস্থান এজেন্টদের খালা নানরতীয় নির্যাতনের সমথিত খবর আমার হাতে
রহিয়াছে।
১লা মার্চ হইতে ২৫ শে মার্চ পর্যন্ত বেআইনী থেসিত আওয়ামী লীগ সশসা ৪ গণবাহিনী কতপয় হিন্দু যুবকের সহায়তায় বন্দুক দেখাইয়া বিভিন্ন শ্রেণীর লােকদের নিকট হইতে প্রায় এক কোটি টাকা অায় কৰে। প্ৰক্ষিণশীগণ বলেন যে, আওয়ামী লীগের খেলেদের আচার সকল প্রকার তাকেও আভূইয়া যায়।
________________________________________
অবাঙ্গালী মুছলমান হওয়ার অপরাধে পাথরঘাটায় কর্তব্যরত ২৬ জন নাইট গার্ডকে হত্যা করা হয়। এই জুলুম হইতে উদ্ধার লাভকারী আহত এক ব্যক্তি কসম খাইয়া বলেন যে, কর্ণফুলী কাগজ কল হইতে ৩ ট্রাক ভর্ষি শ্রমিক জীবন রক্ষার্থে চট্টগ্রাম আগমনকালে; কালুরঘাট পুলের নিকট তাহাদের সকলকেই নির্দয়ভাবে হত্যা ৱা হয়। শহরের অন্যান্য স্থানেও অনুরুপ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। আওয়ামী লীগের প্রস্তাগণ মায়ের কোলের বাচ্চা, বন্ধ ও মেয়েদের এ রেহাই দেয় নাই। অত্যা ওয়ারলেস কলোনীকে কলে ভস্মীভূত করিয়া দেয়। প্রত্যক্ষদর্শী এই ধরনের অমানুষিক আচরণ লাভেস জন্যই কি মােহাত্মোয়ণ হিন্দুস্থান হইতে এলামী রাষ্ট্র পাকিস্তানে হিজরত করিয়াছিল।
মওলণী সাহেব হিন্দুস্থানী এজেন্টদের নৃশংসতার কাহিনী বর্ণনাকালে আরও বলেন যে, গত ২৭শে ২৫শে মার্চের মধ্যবর্তী কোন এক ভেবে হিন্দু চােরী পবিত্র কোরান তেলয়াছন্ন সময় একসঙ্গে ৪ মাত্রাকে হত্যা করে এবং পবিত্র গ্রন্থকে অবমাননা, রে।
কেবলমাত্র এহুলামের নামে অজিত পাকিস্তানে ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস যে, হিন্দুস্থানী এজেন্টগণ তথাকথিত সাংস্কৃতিক বাংগালী জাতীয়তাবাদীদের প্রতি আমাদের এতটাই ঠেলিয়া দিয়াছে যে, আমরা এমন ধরনের কাজে লিপ্ত রহিয়াছি যাহা নাজীদের খরতাকেও হার মানাইত।
এই অবস্থায় সেনাবাহিনী হিন্দুস্থান হইতে আনীত তথাকথিত মুক্তি বাহিনীকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করিয়া দিয়া চট্টগ্রামে আইন শৃংখলা কায়েম করে। এবং চট্টগ্রামবাসীগণ জীবনদাতা হিসাবে পাক জোয়ানদের ফোজ আমদেদ জানায়। তাহাদের অনেকেই নামে মসজিদে তাহার সহিত অশ্রুসজল নয়নে বিশেষ অকীয়া নামাজ আদায় করেন বলিয়া মণ্ডলৰী ফরিল আমহদ উল্লেখ করেন। পরিশেষে মওলবী ছাহের বলেন, চট্টগ্রাম শহরের ঘরে ঘরে অনুসন্ধান চালাইয়া সকল প্রকার তথ্য সংগ্রহ করার জন্য আমি রুপক্ষকে অনুরোধ করিতেছি। কারণ তাহা হইলে হিন্দুস্থান কর্তৃক সমর্থিত উত্তাপের জঘন্য চক্রান্তের স্বরূপ বিশ্বের সম্মুখে উদঘাটিত হইবে যে, বিশ্বে এখনও লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ সত্যকে জীবনের সম্বল বলিয়া গণ্য করিয়া থাকে।”২৯
৭ জন মুসলিম লীগ নেতা ১৬ এপ্রিল এক যুক্ত বিবৃতিতে ভৈরব ব্রীজ ধ্বংল চেষ্টার নিন্দা জানালেন। এ সম্পর্কে পত্রিকায় বলা হয় ।
. চাকা, ১৬ই এপ্রিল।-সাতজন মুসলিম লীগ নেতা অলা এখানে প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ইহা সত্য যে, ভারতীয় সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী ও দুষ্কৃতিকারীরা পূর্ব পাকিন্তানের যোগাযােগ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভৈরণ সেই কাংসে প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। দেশের দেশপ্রেমিক জনগণের নিকট নিঃসন্দেহে ইহা একটি উদ্বেগজনক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতাকামী প্রতিটি মানুষকে এহেন •ঙ্কাজনক প্রচেষ্টার বিয়ে রুখিয়া দাড়াইয়া পাকিস্তানকে ধ্বংস নন্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত অবতীয় সাম্রাজ্যবাদীদের উকান্তকে নস্যাৎ করার বিধামইনি সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার
বিবৃতিতে তাহারা বলেন যে, বহু ত্যাগ ও তিতিক্ষার মাধ্যমে মুছলমানলে মাতৃভুমি হিসাবে পাকিস্তান অর্জিত হইয়াছে। সকা পাকিস্তানী দেশের সংহতি ও স্বাধীকার বজায়
ব্রাৰিৰে। পাকিস্তানকে রক্ষা করার সংগ্রামে একজন মুছলমানেরা ত্যাগ ও তিতিক্ষা তেমন উল্লেখযােগ্য কিছু হইবে না। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, জনাব আবদুল আওয়াল, জনাব মােহাম্মদ আলী, জনাব মাহতাব উদ্দিন খান, জনাব মোহাম্মদ হােসেন, জুনাব নূরুল ইসলাম, উনাব শাজাহান ও জনাৰ মঈনউদ্দিন আহমদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মোহাজের পাটির সভাপতি এক বিবৃতিতে ‘আওয়ামী লীগ প্রজাদের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তপ্ত অনুষ্ঠানে দাবী জানালেন। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
| করাচী, ১৫ই এপ্রিল-নিখিল পাকিস্তান মােহাজের পাটির সংগঠিত সভাপতি নাৰ মােহাস্মদ জিয়াউল ইসলাম অন্য এক বিবৃতিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের গুপ্তপাস্তা দ্বারা নিরীহ পাকিস্তানীদের উপর যে হত্যাযজ্ঞ ও ফাংসযজ্ঞ চালানো হইয়াছে তাহার প্রস্তু তথাসমূহ রেকঃ করিনার জন্য সুপ্রীম কোর্টের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করার দাবী জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, উক্ত তদন্ত কমিশন পূর্ব পাকিস্তানে আইন ও শখলার অবনতি ঘটনার কারণ সম্পর্কে সচেতন থাকিয়া একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করিবেন যাহাতে উক্ত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন কি ধরনের ভূমিকা পালন করিয়াছিল তাহারও বিশেষ উল্লেখ থাকিবে। কমিশন গঠনের ব্যাপারে তিনি পরামর্শ দেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের একজনসহ দূই জ্ঞান হাইকোর্টের কার্যরত জজকে উক্ত কমিশনের সদস্য হিসাবে নিয়ােগ নকরিতে হইবে।
জনাব ইসলাম বলেন, পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের ভিত্তি ভূমিতে ফাটল স্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে সুতরাং ইহার এমন একটি বাস্তব হিসাব বাহির করিতে হইবে যাহাতে সত্যিকারের অবস্থা সঠিকভাবে অনুধাবন করা যায় ও যথাযথ প্রতিকার ব্যবস্থা উদ্ভাবন করা যায়। তিনি বলেন, ফিল্ড মার্শাল মােহাম্মদ আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির জন্য আন্দোলনের প্রাক্কালে তিনি পদত্যাগ করেন। অতঃপর পূর্ব পাকিস্তানের গন্ডগােল তথায় বসবাসকারী অনারী জনসাধারণের বিরুদ্ধে দুঃখজনকভাবে এক কুৎসিত দিকে মােড় নেয়। কিন্তু এই প্রবণতা মূল্যায়ন ও প্রতিরােধের জন্য তখন এবং পরবর্তীকালে কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করা হয় নাই।
| তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের জলী জাতীয়তাবাদী আন্দোলন জোরদার হইলে পূর্ব পাকিস্তানের অণালি। ঈসাধারণ তাহাদের জীবনের নিরাপত্তার প্রশ্নে ভীষণ অশিক্ষিত হইয়া পড়ে। তিনি বলেন, আবাভালা আনসাধারণের কোন দোষ না থাকলেও তাহাদের বিরুদ্ধে শেখ মুজিব তাহার রাজনৈতিক অনুগামী ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃণশের অন্তত ইপিতে এক ইয়াবহ পরিণতি প্রকাশ পায়। তিনি উল্লেখ করেন, অথচ প্রকাশন যন্ত্রের কার্যনির্বাহক শাখা এই পরিস্থিতির প্রতি কোন নজর দেখা নাই অনা আলী জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে আইন ও শৃংখলা প্রয়োগের কোন গ্রাই করে নাই। | কিমি বলেন, নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগ ক্ৰমশঃ তার নীলি পর্দা সরাইতে থাকে এলঃ, ইহা পরিস্কার হয় যে, অবাঙালী জনসাধারণকে তাহার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতে হইবে কিন্তু তাহা রাজনৈতিকভাবে না; রক্তদানের মাধ্যমে। তিনি বলেন, বিগত জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারী ৪ মার্চ মাসের দিকে শেখ মুজিবের দল শুধু আইনই তাহাদের হাতে তুলিয়া লয় নাই, উপরন্তু অবাঙালী জনসাধারণের বিরুদ্ধে ব্যাপকহারে পরিচালিত সকল খুন, লুটতরাজ ও আগুন জ্বালানাের জন্য ও তাহারাই দায়ী।
________________________________________
জনাব ইসলাম জাতীয় সংবাদপত্রের সমালােচনা করিয়া বলেন যে, এই অবস্থার প্রতি তাহাৱা কোন গুরুত্ব প্রদান করে নাই ও হইও প্রকাশ করে নাই। রিপাের্ট সংগ্রহের জন্য কোন প্রতিনিধি নিয়ােগ করে নাই এবং সম্পাদকগণ তাহাদের আরামদায়ক চেয়ারে বলিয়াছিলেন। তিনি সেই সমস্ত পশ্চিম পাকিস্তানী নেতৃবৃন্দকে কষাঘাত করেন যাহা পূর্ব পাকিস্তানে গিয়াছিল অথচ জাতীয় স্বার্থে ইস্পাতের মত উমা প্রকাশ করিয়াছিল। তিনি বলেন, অবাঙালী জনসাধারণের বিরুদ্ধে পরিচালিত ব্যবস্থায় নিন্দও করে নাই। অথচ তাহাৱা মুছলমান এবং যে কোন লােকের চেয়ে সুনাগরিক।
১৬ এপ্রিল ঢাকা শহর কনভেনশন লীগে সভায় শান্তি কমিটির প্রতি পূর্ণ সহযােগিতা প্রদানের আশ্বাস দেয়া হলাে। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
| “ঢাকা, ১৭ই এপ্রিল।গতকাল ঢাকায় ডাঃ নুরুৰ ৰহমানের সভাপতিত্বে ঢাকা শহর কনভেনশন মােছলেম লীগের এক কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ঢাকা শহর শান্তি কমিটির প্রতি পূর্ণ সহযােগিতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় এক প্রস্তাবক্রমে আমাদের বন্ধুদেশ চীন কর্তৃক পাকিস্তানের সংহতি ও অখণ্ডতার প্রতি জোর সমর্থন এবং যে কোন প্রয়ােজনে তাহরি পাশে দাঁড়ানাের প্রতিশ্রুতি প্রদানের জন্য চীনের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। এই সভা সেইসব নেতৃবৃন্দের প্রতি ধন্যবাদ আপন করে যাহারা পাকিস্তানের সংহতি ও অখণ্ডতার প্রতি পূর্ণ সমর্থন পান করিয়াছেন। এবং দেশের শান্তি ও ভৰি সমৃদ্ধির জন্য এই সংকটময় মুহূর্তে তাহাদের সর্বশক্তি নিয়ােগ করিয়াছেন। সভা শহরের জনগণের প্রতি সমাজ বিরােধী দ্বারা পরিচালিত লােকদের চুরি, লুটতরাজ, অগ্নিসংযােগ ও অন্যান্য ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে রুখিয়া দাঁড়াইবার আবেদন জানায়।
সভায় উপস্থিত অসংখ্য কর্মী ও নেতৃবৃন্দের মধ্যে যাঁহাসের নাম উল্লেখযোগ্য তাহারা হইলেন, জনাৰ হাকিম ইরতেজনুর রহমান খান আখনজাদা, জনাব আলাউদ্দিন আহমদ, জনাব সামিউল্লাহ সরকার, জনাব আব্দুর রহিম সরলাই, সেগুনি আকন্দুল কাদের, জনাব সেলিম সরদার, জনাব আবদুল মান্নান, জনাব আবদুল মালেক, জনাব আবদুর রহমান, খােন্দকার মােজাম্মেল হক, জনাৰ নূর মােহাম্মদ চৌধুরী, মােঃ সেলিম খান, মােঃ ফয়েজ বথশ, জনাব গােলাম মােরশেদ, জনাৰ খওয়াজা আবদুল্লাহ, কে, আবদুল গনি, এস, কে, আশির, সৈয়দ নাসিরুল হক, জনাৰ উাদ মিয়া সরদার, উনাব আবদুস সালাম সরদার, জনাব তোতা মিয়া সৱদার, মােঃ ওয়াহেদুল্লাহ, মােঃ শরিফুদ্দিন আহাম্মদ, মােঃ শাহাবুদ্দিন, মােঃ আবদুর রব হাজী, মােঃ সিদ্দিক চৌধুরী, মােঃ আল্লাৱাখা ও জনাৰ আনাে£দ্দিন
মতভূমির প্রতি ইঞ্চি ভূমি রক্ষার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানালাে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। ‘আজাদ পত্রিকায় বলা হলাে :
“ঢাকা, ১৭ই এপ্রিল।-ঢাকা সিটি মােছলেম স্টুডেন্টস লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব কে. জি করিম এক বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তান সীমান্তে ভারতের নগ্ন আক্রমণের নিন্দা করিয়া প্রতিটি দেশপ্রেমিককে মাতৃভূমির প্রতিটি ইঞ্চি ভূমি রক্ষার জন্য দেশবাসীর প্রতি অশান্ত আহবান জানান। সংবাদপত্রে প্রদত্ত বিবৃতিতে জনাব করিম বলেন যে, ভারতের এ হামলা আমাদের দেশপ্রেমের প্রতি চ্যালেপ। কিন্তু এদেশের জনসাধারণ।
________________________________________
বিগত ১৯৪৫ সালের যুদ্ধকালীন সময়ের মত এবারও তাহাদের দেশপ্রেমের পরাকাষ্ঠ
এই মুহুর্তে আমি ভারতকে জাতিৰ পিতার মহানবাণী স্বরণ করাইয়া দিতে চাই-পাকিস্তান টিকিয়া থাকার জন্যই প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। পৃথিবীর কোন শক্তিই আমাদের পবিত্র আক্রাণী রক্ষার মহান দায়িত্ব হইতে বিরক্ত করতে সক্ষম হইবে না। তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রামে কোন কোন মহল হইতে যে সমর্থন পাওয়া গিয়াছে তাহাতে আমাদের এই ধারণা বদ্ধমূল হইয়াছে যে, প্রয়ােজনের সময়েই কিন্তু বন্ধুর পৰিচয় পাওয়া যায় । সৈয়দ ওয়াজা খায়রুদ্দিনের নেত্বে গঠিত শান্তি কমিটির উদ্দেশ সম্পর্কে তিনি প্রশংসা করিয়া বলেন যে, ইহার ফলে ঢাকা সহ অন্যান্য স্থানে সর্বস্তরে শান্তি পুনরুদ্ধাণের কাজ ফলবতী হইবে।।
| ঢাকা শহর ত্যাগ করিয়া যাহার গ্রামাঞ্চলে চলিয়া গিয়াছেন তাহাসের পুনরায় শহরে প্রত্যাবর্তন করিয়া – কাজে মনােনিবেশ করার জন্য নি অনুরােধ জানান। ডার মায়জুর রহমান পূর্ব bষী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মায়তুর রহমান সংবাদপত্র প্রদ ও এক বিবৃতিতে বলেন যে, পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট ও পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থাদি পাকিস্তানেরই নিজক মাষ্যন্তরীণ ব্যাপার। এই অনস্থার পরিপ্রেছি, কি ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে এবং কি করা উচিত ইহা একা স্তুৰে পকিস্তান সরকারেরই গণ নিষা। পাকিস্তান সরকারই এ ব্যাপারে সিদ্ধাও গ্রহণ করিবেন। পাকিস্তানের অভ্যস্ত? ব্যাপারে অন্য কোন দেশের নাকি গলানাের কোন অধিকার নাই। কিন্তু ভারত সরকার অসৎ উদ্দেশ্য প্রণােদিত হইয়া সূরভিসন্ধিমূলকভাবে মুজিবের কাল্পনিক সরকারকে সাহায্য প্রদানের অজুহাতে পাকিস্তানে অন্ত্র ও সঙ্গ অনেক প্রেরণ করতে। ভারতকে বিগত ১৯৯৫ সালের যুদ্ধে ফলাফল হইতে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। পাকিস্তান সরকার বা এদেশের জনসাধারণ কোনমেই ভারীeণা এই সমাজ্যবাদী আক্রম বরদাশত কৰিলে না। পূর্ব পাকিস্তানবাসী ফারাক্কা বাঁধ বরিগাছা ও বেবাড়ির ক্ষেত্রে ভারতীয় নীতি সম্পর্কে ওয়াকেফহাল আছে। সুতরাং, তাহার (ভারত) এই কুঞ্জরার অর্থ প্রদেশেবাসী সহজেই অনুধাবন করিতে সক্ষম।
তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব ও অওত্ব রক্ষার প্রশ্নে পূর্ব পাকিস্তানবাসী তার বা যে কোন বিদেশী শক্তির বিরুদ্ধে কাধে কাধ মিলাইয়া সংগ্রাম করিয়া যাইবে। তিনি পাকিস্তানী ওয়ানলের সহিত সর্বতোভাবে সহযোগিতা প্রদান এবং জাতীয় হামলা প্রতিরোধের জন্য গ্রামে গ্রামে ডিফেন্স পার্টি গড়িয়া তোলার জন্য প্রদেশের চাষী কল্যাণ সমিতির সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান । এম. এ. জহির পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক এম, পি, এ ও চীপ হুইপ জনাব এম, এ, জহির বলেন, বহু নিমালি কোৱৰাৰ নিনিময়ে পাকিস্তান কায়েম ইইয়াছে। সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, পাকিস্তানের প্রতিবেশী দেশ হিন্দুস্থান পাকিস্তানের অখণ্ডত্ব ও
________________________________________
সার্বভৌমত্ব ধ্বংস করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট রহিয়াছে। পাকিস্তানকে তাহারা কোনদিনই স্বীকার করিয়া লইতে পারে নাই। বিগত ১৯৯৫ সালে আন্তর্জাতিক আইনেৰা সনদ লক্ষন করিয়া ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করে। কিন্তু পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণের সমর্থনপুষ্ট সদা অতন্দ্র পাকিস্তায়ে নীৰ সিপাহীরা হাহাসেন দাতভাঙ্গা জওয়াব দেয়।
| ভারত এবাধও একদিকে পাকিস্তানের বন্ধুত্বের ভান করিয়ে অপরদিকে আমাদের বিরু»ে সামরিক ব্যবস্থা আরোপ করিয়ায়। ভারতের এ ধরনের কাফকশপ স্পষ্ট? জাতিসংঘ, বান্দুং সম্মেলন ও তাসখন্দ আনলের পরিপা। আরএকে অdীতের ইতিহাস হইতে শিক্ষা গ্রহণ করিতে আমি আবেদন জানাইতেছি।23 |
এদিকে ১৮ এপ্রিল পূরের সঙ্গে আমি হাতে উলেমায়ে এলাম নোর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে। সংবাদে WIা যথা :
| “ঢাকা, ১৮ই এলি।আজ র ঞ্চ দলনে মিয়তে উলামায় ৫লাম নেমে এছাম পাটির ভাইস প্রেসিদ্ধন্ট লৈল মাহমুদ আল মােস্তফা আল মাদানীর নেতৃত্বে একটি এনিধি দল পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর ও খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেঃ টিক্কা খানের সহিত সাক্ষাৎ করেন। প্রতিনিধি দলটি প্রদেশব্যাপী সম্পূর্ণ স্বাভাবিকলনত্রিী পুনঃপ্রতিষ্ঠান ব্যাপারে ধনকে তাহাদের সহযোগিতার নিশ্চয়ই [লেন ।
গভর্নরের সঙ্গে কনভেনশন মুসলিম লীগ নেতা ফলুল কালো ধুেরীও পো করলেন। সাক্ষাৎকালে নি সামরিক ঐকে গণ সহযােগিতার আশ্বাস দিলেন | কয়। এ সম্পর্কে বলা হলাে :
ঢাকা, ১৯শে এপ্রিল।-কনভেনশন মােছলেম লীগের সভাপতি জনাব ফজলুল কাসের চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক মালিক মােহাম্মল কাসিম আজ আপনাহে গভর্ণমেণ হাউসে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর লেঃ জেনারেল টিক্কা খানের সহিত সাক্ষাৎ করেন। মোছলেম গগের উভয় নেতাই দেশে স্বাচ্চাবিক মনস্থা ফিরাই অনা হালের দলের ++ হইত তরকে পর্ণ সহযােগিতার আশ্বাস দেন তাহার] আলাে+কল গর্শনের সাম্প্রতিক রে ভা| ঠাকুল শ্রেণীর লাইন তথা বেআই মেথি আধ}}মী লীগ। নােতুর্গের প্রতি দেশ ও জাতি সেনা আগাইয়া আসার জন্য প্রদত্ত প্রস্তাবের প্রশংসা মরুবেল। ৩৫ | কন-শ্রমিক পার্টি নেতা জয়নাল আবেদীন ১৯ এপ্রিল গভর্নৱেৰ বেৰ ভাষণকে অভিনন্দিত করে বিবৃতি নিলেন। পত্রিকায় বলা হলো :
‘টাকা, ১৯ শে এপ্রিল ।-চমক শ্রমিক পার্টির সিনিয়র প্রাইম প্রেসিডেন্ট জনাব জয়নাল আবেদীন আজ সংবাদপত্রে প্রণও কি বিবৃতিতে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের গভীর ও সামরিক আইন প্রশাসক লেফটেন্যান্ট জেনাবাে টি খান গত ১৮ই হল। তাহার প্রশংসনীয় বেতার ভাষণে সুস্পষ্টভাবে তাহার মনােভাব ও বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করিয়াছেন। আমার বিবেচনায় জাতির উদ্দেশ্য হ্যর এই ভাষণে তিনি সুষ্ঠুভারে জাতীয় গঠন কয়ে পূর্ব পাকিস্তানের প্রানু|| Cয় অংশগ্রহণের জন| মােলাখুলি তালে আমন্ত্রণ। জানাইয়াছেন।
বিবৃতিতে নাৰ জনাল আবেদীন আরও বলেন যে, দেশের এই অংশে ফ্যাটি ও সূতিকারীরা যে গােলযােগ সৃষ্টি করিয়াছিল, এক্ষণে উহা অবদমিত হইয়াছে এবং দেশে
________________________________________
শান্তি প্রতিঙ্কিত হইয়াছে। গণবের এই আহবানে প্রত্যেকেরই সাড়া দেওয়া উচিত এবং দেশের অর্থনীতি ও পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য প্রত্যেকেরই আন্তৱিকজনে আত্মনিয়োগ করা কর্তব্য। সেশে শান্তিপূর্ণ জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্যে জনসাধারণকে সরকারের সহিত পূর্ণ সহযােগিতায় কাজ করিয়া খাইতে হইবে।
উপসংহারে আমি এই মর্মে ভরি ছাহেবকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, সশস্ত্র অনুপ্রবেশকাৰী ও ভারতীয় এজেন্ট ও উপড়দের নিমূল মাত্র ব্যাপারে আমাদের সাহসী সশস্ত্র বাহিনীর সহিত আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করিয়া যাই। আমরা স্বদেশভূমির হেফাজতে অন্য শেষ রক্তবিন্দু উৎসর্গ করিতেও প্রস্তুত রহিয়াছি।’৩৬।
| ভারতীয় কাপ্ত নস্যাৎ করার জন্য দেশবাসী সঞ্চরব’ বলে জানালেন জমিয়তে তালানায়ে আরাবিয়া নেতা খলিলুর রহমান। পত্রিকা জানালাে :
ঢাকা, ১৯ শে এপ্রিল-পাকিস্তান জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার সাধারণ সম্পাদক জনাব খলিলুর রহমান আজ ভারতীয় গড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা করিয়া নলেন যে, ভারত প্রদেশের ম ঞ্চে পঙ্গু শরয় পূর্ব পানের ইলমানদের দাসত্বের নগণ আবদ্ধ করিতে চায়। সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন যে, পাকিস্তানিম একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বার্তা এবং আমাদের অভান্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার অধিকার ফোন দেশেরই নাই। তিনি বলেন, ভারত পূর্ব পাকিস্তানে অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ করিয়া আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে হস্তক্ষেপ করিয়াছে। এবং জ||সংখ সবল ও বান্দুং সম্মেলনের আদর্শ অনুজান করিয়াছে।
ভারতের কার্যাবলী বিশ্বশান্তির পক্ষে দুমকিঙ্কন্ধপ বলিয়া তিনি তাহার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন। মিয়ত নেত্রা আরও বলেন যে, ভারত উহার অনুপ্রবেশকারীদের সহায়তায় পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থায় ভাঙ্গন সৃষ্টি করিতে চাহে, এবং শেখ মুজিবের নেতৃত্বে তথাকথিত প্রাদেশিক সরকার গঠন করিতে চাহে। তিনি শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের দুশমনরূপে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ভারতের মূল লক্ষ্য হইতেছে প্রদেশের মুছলমানদের দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা।
| ভারতীয় অর্থ ব্যর্থ করিয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানী সশন্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করিয়া জাল খলিলুর বলেন, ভাবতেন যে কোন ধরনের যন্ত্র ধ্বংস করার উ} পূর্ব পাকিস্তানের মুছলমানগণ সঙ্কল্পবদ্ধ হইয়াছে। তিনি ফাঙ্কিা ৰাধ, ত্রিচ্ছা ও বেরুবাড়ি সম্পর্কিত প্রশ্নে ভারতের অনুসৃত নীতির সমালােচনা করেন। জনাৰ ৰহমান ভারতীয় বেতারের মিথ্যা প্রচারণারও নিন্দা করেন। তিনি বলেন, প্রলেশের মাদ্রাছ। ছত্রবৃন্দ পূর্ব পাকিস্তানের ভূমিতে পবিত্র মসজিদের ন্যায় মনে করে এবং ইহার প্রতি ইঞ্চি ভূমি সংরক্ষণে যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রহিয়াছে।”৩৭
মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দের বিবৃতিতেও জনগণ দেশের অগ্রতা রক্ষাকল্পে সঙ্কল্পবদ্ধ’ বলে উল্লেখ করা হলাে। এ সম্পর্কে সৈনিম আদি’ জানালো ;
কা, ২১ শে এপ্রিল।=পর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক মোছলেম লাগার কনভেনশন প) খসিডেন্ট জনাব সামসুল হুদ ও সাধারণ সম্পাদক জনাব এ, এন, এম ইউসুফ এক
বিবৃতিও বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। বিবৃতিতে তাহাৱা বলেন যে, ভারতীয় বেতার ও সংবাদপত্রে দিবারাত্র মিথ্যা ও
________________________________________
উত্তেজনামূলক প্রচারণা ও পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ করা সত্ত্বেও পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও গুত্বের নিরাপত্তা বিধানের জন্য পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক শশাখায়ণ তাহাদের এই চ্যালেঞ্জ মােকাবেলার জন্য দৃঢ় সঙ্কল্পবদ্ধ। | নেতৃবৃন্দ জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত বিবৃতিতে বলেন যে, এই মুহূর্তে সর্বাগ্রে আমাদের স্বাভাবিক অবস্থা পুনরুদ্ধার ও টনিনের সর্বক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন করিতে হইবে। দেশে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমােদন কমে ই-ই এলাকায় শান্তিপ্রিয় জনগগের কমিটি গঠনের জন্য আমরা সারা প্রদেশব্যাপী মােছলেম লীগেৱ ইউনিটকে সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দান করিতেছি।
বেগম আখতার সােলায়মানি ২১ এপ্রিল করাচীতে #নালেন পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক বাবস্থা ছাড়া উপায় ছিল না’। সংবাদে বলা হলাে :
করাচী, ২১ শে এপ্রিল মরহুম হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দীর কন্যা বেগম আখতার সােলায়মান আজ এখানে বলেন যে, দেশকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতা হইতে রক্ষা করার জন্য সরকারের পূর্ব পাকিন্ধানে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ ব্যতীত অন্য কোন পথ ছিল না। এক বিবৃতিকে তিনি বলেন যে, জাতির নিকট ওয়াদা পালনে প্রশংসনীয় প্রয়াসের জন্য সকল পাকিস্তানী প্রেসিডেন্টের প্রতি কৃতজ্ঞ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত: পরিস্থিতি ভুল পথে পরিচালিত হয়, যাহার জন্য সামরিক ব্যবস্থা ব্যতিরেকে বিকল্প ছিল না।
বেগম শােষামান আরও বলেন যে, সেনাবাহিনী দ্রুততার সঙ্গে যন্ত্রকারী ও ভারতীয় এজেন্টদের নগ্ন খড়যথের আচরণ উন্মােচিত করিয়া দিয়াছে। তাহলেগ্ন বিপুল। পরিমাণ অর্থ শত্র ও গোলাবারুণ স্থল ও বিনষ্ট করা হইয়াছে। ফলে আমাসের জন্য । ভারতের বহু বছরের অখয়াল নস্যাৎ, হইয়াছে।
| তিনি বলেন যে, সম্পূর্ণরূপে পৱাজিত হওয়ার ফলে মর্মাহত হইয়া ভারতীয় বেতার ও সংবাদপত্র মিথ্যা ও অপপ্রচার অভিযান শুরু করিয়াছে। অপরদিকে তার সরকার। অত্রিমণের প্রকৃত দুমকিসহ কূটনৈতিক অপরাধ ও অনুপ্রবেশের পথ বাছিত ইয়াছে। তিনি বলেন যে, আল্লাহর রহমতে পাকিস্তানের জনগণ হুমকির বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাড়াইয়াছে এবং ভারতীয় আক্রমণের বিরুদ্ধে যথাযোগ্য উত্তর দেওয়ার জন্য সক্ষম।
পাকিস্তানের মুছলমানশাণ দেশকে রক্ষা করার আশা শেষ রক্তবিন্দু দিতে প্রস্তুত’ নলে। জানালেন মওলানা আবদুল জববার। সংগ্রামে লা হলাে :
| ‘ঢাকা, ২১ শে এপ্রিল।পাকিস্তা* এছানী নগরণ সংস্থার সভাপ িম জানি। আবদুল করি তার কর্তৃক পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সশস্ত্র হস্তক্ষেপের ব্রি। নিন্দা করিয়াছেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানী মুছলমানদের প্রতি ১৯৪৫ সালের ন্যায় নির্ভীক সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে হাতে হাত মিলাইতে আহ্বান জানাইয়াছেন।
আজ সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন যে, পাকিস্তানের মুছলমানগণ। তাহাদের দেশকে রক্ষা করার ®ন্য শেষ রক্তবিন্দু দঃখ ভুত এবং বিশ্বের কোন শক্তিই তাহাদের পবিত্র স্বদেশ ভূমিকে ধ্বংস করিতে সক্ষম হইবে না।
তিনি আরও বলেন যে, প্রাক-স্বামিতার লিনে অবিভক্ত ভারতে হিন্দুগণ যে অত্যাচার কত্রিয়াছিল পূর্ব পাকিস্তানের মুলমানগণ তাহা নিহত হন নাই। ভারতীয় বেতারের বর্তমান
________________________________________
পাকিস্তান বিরােধী প্রচারণার সমালােচনা করিয়া তিনি বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানী মুছলমানগণ ভারতীয় মিথ্যা প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস স্থাপন করিবেন না।
এদিকে মােছলেম লীগ নেতা শান্তি কমিটির সঙ্গে পূর্ণ সহযােগিতার নির্দেশ দিলেন তাদের নেতা কর্মীদের। পত্রিকায় বলা হলো :
||কা, ১৯ শে এপ্রিল ঢাকা সিটি মেহম লীগের প্রেসিডেন্ট জনাব মােহামলা ফয়েজ নৱশ আজ সংবাদপত্রে প্রলিপ্ত এক বিবৃতিতে নালেন যে নাগরিক আবনে স্বাভাবিক অবস্থা পুনরায় ফিরাইয় আনা ও ইংলগণের দুঃখ-দুর্দশা মােচনের উদ্দেশ্যে মানবতার নামে ঢাকা সিটি মােছলেম লীগের সকল ইউনিটকে নাগরিক শান্তি কমিটির সহিত একযােগে কাজ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে। জনসাধারণের সামাজিক ও অথনৈতিক কন ব্যবস্থায় স্বাভাবিক অবস্থা পুনরুদ্ধার এবং নমনা হইতে সকল প্রকার বিভ্রান্তি দূরীকরণের উদ্দেশ্যে সিটি মােছলেম লীগ প্রত্যন্ত পল্লী অঞ্চলে ভলেনিয়ার প্লেবলেরও সিদ্ধান্ত গ্রহ করিয়াছে।
শহরের বিভিন্ন এলাকার যেন মানুষ তা সমাপ্ত হইয়া নিস্ব বাসভবন ত্যাগ করি চলিয়া গিয়াছেন তাহাদের পুনর্বাসনের ব্যাপারেও সিটি মােছলেম লীগ কয়েকটি বিশেষ প্রস্তাব গ্রহণ করিয়াছে। আমাদের জাতীয় জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রয়ােজন মুহুর্তে আমাদের দেশপ্রেমের দ্বারা শাস্তিকামী মাগরিকদের প্রানমাল ওমের নিশ্চয়তা বােধকে সুনিশ্চিত করিতে হইবে। সেই সাথে আমাদের জাতীয় শলের অন্তহঁতী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকিতে হইবে।
আন এ, সৰুণ শকর চক্রান্ত রোধ করার আহ্বান জানিয়ে বললেন, ভারত কেন কালেই পূর্ব পাকিস্তানের সমৃদ্ধি কামনা করে নাই” । পত্রিকায় বলা হলাে :
“চাকা, ২১ শে এপ্রিল-জাওঁীয় পরিষদের প্রাক্তন নেতা খান এ. সবুর খান এক বিবৃতিতে দেশ দরদী জনগণের প্রতি পাকিস্তানের শত্রুর মােকাবিলায় নির্ভিক সেনাবাহিনীর পাশে আসিয়া দাড়াইলার মহান জানান। সংবাদপত্রে এক বিবৃতি দান প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, বর্তমানে ভারত ও ওহার তীবাহ-কল পাকিস্তানে যােগাযোগ, খা), শস্য, বিদ্যুৎ প্রকৃতির সরবরাহ বানাইল ও ইন] রংসাত্মক কামে লিপ্ত হওয়ায় এই চ্যালেঞ্জের মােকাবেলায় কিনা প্রতিটি নাগরিকের পক্ষে সেনাবাহিনীকে সাহায্য করা অবশ্য কর্তব্য
ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী দলের আগ মতলন প্রতিহত করার জন্য কেম, কালভাট, সড়ক, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন প্রতিষ্ঠানের উপর নজর রাখার উদ্দেশ্যে খান এ সবুর জনগণকে স্থানীয় সামরিক আইন কলের সহযােগিতায় স্ব-স্ব গম, মহা গু শহুত্রের ভিজিল্যান্ট কমিটি গঠনের উপদেশ দান করুন। তিনি তাহাদের প্রতি ভারতীয় বেতারের মিথ্যা গুজবের প্রতি কর্ণপাত না কৰাৱও উপদেশ দেন।
খান এ. সবুর বলেন যে, সীমান্তের ওপারের জিপতি ও শিল্পপতিগণ চিরকালই নাচামাল সংগ্রহ ও উৎপাদন বাজারজাত করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের বাজার দখলের
* করিয়া আসিতেছে । * দুই দশক ধৰি পূৰ পা কানে দ্রুত শয়ন তাহার কিংবা তাহাদের সরকার ভাল চোখে দেখিতে পারে নাই।
________________________________________
| ভারতীয় অভিসন্ধির মুখােশ উন্মােচন করিয়া খান এ সবুর বলেন যে, ভারত যদি প্রকৃতই পূর্ব পাকিস্তানের মঙ্গল কামনা করিত তাহা হইলে উহার অথ•||তিকে পঙ্গু করার জন্য ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ কর্নিাত না।
| কিনি নলেন যে, অবৈধ ঘােষিত আওয়ামী লীগ কর্তন পাকিস্তানী জাতীয়তাবাদের স্থলে অন্যায়ভাবে বাংলা জাতীয়তাবাদের প্রতি আগ্রহ পাকিস্তান সৃষ্টির উদ্দেশ্যকে নিল করার গােপন অদ্ধি ছাড়া আর কিছুই নহে। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের উল্লেখ করিয়া খান এ. সবুর বলেন যে, এই সময়ে অধিকাংশ নেতা সেনাবাহিনী ও জনগণের মনােবল বৃদ্ধির জন্য জাতির উদ্দেশ্যে বক্তৃতা কৱিলেও শেখ মুজিবর রহমান পর পর অনুরােধ সত্ত্বেও বেতারে জাতির উদ্দেশ্যে কোন ভাণদানে অস্বীকৃতি জানাইয়াছিলেন। | খান এ সবুর বলেন যে, পূর্ববর্তী সরকারসমূহ পূর্ব-পাকিস্তানের দাবীর প্রতি কর্ণপাত করিলেও, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান উহার বহু দাবি পূরণে সম্মত হইয়াছিলেন। তিনি কলেন যে, প্রেসিডেন্টের প্রধান কর্তব্য হইতেছে দেশের ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখা। কিন্তু শেখ মুৰিৰ ৰহমানের প্রতিশ্রুতি কেবলমাত্র প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না।
তিনি আরও বলেন যে, শেখ মুজিবর রহমান সা মার্চ কোন একটিমাত্র জাতীয় পরিষদের অধিনেশনের শিকাৰী ছিলেন এবং এই কাল্পগেই তিনি প্রেসিডেন্টের ১লা মাঠের যৌযুণা মোতাবেক জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতে সম্মতি দান করেন। জনাব এ. সবুখ বলেন যে, এই স্থগিতকরণের সুযােগ গ্রহণ করিয়া আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ দেশে গৃহদাহ, লুণ্ঠন, হত্যা ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন।”৪২
চট্টগ্রাম জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মােহাম্মদ ওসমান রম ২৭ এপ্রিল করাচীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানালেন, ‘দেশের দু’অংশের মধ্যেই ক্ষমতা হস্তান্তর কতে হবে।’ তিনি জানালেন, ছাত্র সমাজের মধ্যে ইসলাম ও পাকিস্তানের প্রতি অনুরাগ। তুষ্টি উদ্দেশ্যে সিলেবাস পরিবর্তন করা উচিত।’ তিনি আরো বললেন, “
হিপ এবং পাকিস্তান বিরােধী লােকদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নহিষ্কার করা অপরিহার্য।’ এ সম্পর্কে পত্রিকায় লেখা হয় :
করাচী, ২৭ শে এপ্রিল (এপিপি)।-চট্টগ্রাম জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মোহাম্মদ সুমন মিয়া। আজ এখানে বলেছেন যে, যখনই ক্ষমতা হস্তার করা হােক না কেন, দেশের দু’অংশের মধ্যেই তা করতে হবে। এক সাংবাদিক সষ্মেলনে ভাষণ পাকালে তিনি বলেন, সরকারের প্রথমে দেশের পশ্চিমাংশে ক্ষমতা হস্তান্তর করার মতো কোন ভূল করা উচিত নয়। কারণ, এর পরিণাম মধ্যিাত্মক আকার ধারণ কৰে। অধ্যাপক রমূত্র বলেন, এতে পূর্ব পাকিস্তানী হানগণকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে আWা হচ্ছে বলে তারা । মনে কৰে। ফলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে যা আয়ত্তেবা বাইরে চলে যাবে।
তিনি আরো বলেন, এই মনােভাবে যারা এক পাকিস্তানে বিশ্বাসী তাদের মাকেও অনেক অসুবিধার সৃষ্টি করবে। পূর্ব পাকিস্তানে পরিস্থিতির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে হণের জন্য কতকগুলাে পদক্ষেপের কথা তিনি উল্লেখ করেন।
. অধ্যাপক রমুজ বলেন, খারাপ পথে পরিচালিত করে এমন সৰ বিদেশী সাহিত্য নিষিদ্ধ করা উচিত এবং তথ্য ও প্রকাশনকার্য পরিচালনাকারী আদেশপ্রেমিক ও পাকিস্তানের
আদর্শে অবিশ্বাসী লােকদের এসব দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া উচিত। জনার রমজ আৱাে বলেন, জাত্র সমাজের মধ্যে ইসলাম ও পাকিস্তানের প্রতি অনুরাগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সিলেবাস পরিবর্তন করা উচিত। তিনি বলেন, হিন্দুদের এবং পাকিস্তান বিরােধী লােকদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বহিস্কার করা অপরিহার্য। এছাড়া জনগণকে ভুল পথে পরিচালনাকারী অন্যান্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। অধ্যাপক রঞ্জ বলেন, সময় নষ্ট না করে পূর্ব পাকিস্তানের সত্যিকার সমস্যাগুলাে দূর করা উচিত। | প্রসঙ্গক্রমে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে যা কিছু ঘটেছে, সে সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ দেন। তিনি বলেন যে, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অঞ্জনের পর বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান শেখ মুজিবর রহমান তার বিচ্ছিতাবান পরিকল্পনা ত্বরাণিত করেন এবং অহিংস ও অসহযোগ আন্দোলনের নামে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ বল প্রয়ােগ শুরু করেছিলাে। তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনাকারী হিন্দুরাই এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এপ্রিল মাসেই মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী ঢাকা বেতারে জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। ভাগে ভারতের হীন চক্রান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া আহবান জানিয়ে তিনি বললেন :
আমি পাকিস্তানের বৃহত্তম সংকটের মুহূর্তে আপনাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছি। আমারে মুসলিম আবাসভূমি পাকিস্তান অর্জনের জন্য উপমহাদেশের লাখাে লাখাে মুসলমান যে আত্মত্যাগ করেছে তা আপনাদেৰাও জানা আছে। পাকিস্তান এবং যে মূল্যবােধের বাস্তবায়নের জন্য পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়েছিল তা আর বিপন্ন। ভাৰাত তাদের দালালনের মাধ্যমে পাকিস্তানের আভাস্করে নাশকতামূলক কাজ চালাতে গিয়ে এবং তাদের দালালদের সাহায্যার্থে আমাদের দেশের মস্তরে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী পাঠিয়ে আমাদের দেশের রাজনীতিতে খােলাখুলিভাবে ও নির্লজ্জভাবে হস্তক্ষেপ করতে গিয়ে। সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। রেলপথ, সড়ক ও সেতুগুলাে মংস করে দিয়ে আমাদের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে সেয়াই ভারতেন মতলব। এসব রেলপথ, সড়ক ও সে দেশের বিন্ন অঞ্চলে খাগ্যশস্য ও অন্যান্য নিত্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্য পাঠানোর জন্য এখাশস্বরূপ। আপনারা প্রত্যেকে জানেন, পূর্ব পাকিস্তানে ২০ লাখ টন ধাদোর ঘাটতি রয়েছে। আমাদের দেশে দুর্ভিক্ষ নিয়ে আশাই ভারত জ “তার দালালদের উদ্দেশ্য।
ভারত ও তার দালালরা আলাে চা৷ যে, আমাদের শিল্প ও বাণিজ্য বিশশলা সৃষ্টি হোক, যাতে আমাদের দেশের লােক বেকার হয়ে যায়। কারণ ভারত বিশ্বাস করে যে, আমাদের অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে গেলেই ভারতের পক্ষে পূর্ব পাকিস্তানকে গ্রাস করা সম্ভব হবে। আমাদের আভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে। আমাদের আভ্যন্তরীণ মতদ্বৈধতার সমাধান করার অধিকার একমাত্র আমাদের পাকিস্তানীদেরই রয়েছে। ভারতের জানা উচিত যে, কোন অবস্থাতেই পাকিস্তানের আবাল-বৃদ্ধ-বণিত, সে পূর্ব অংশেরই হােক বা
জীবন পরিচালিত হবে। পাকিস্তানকে একটি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তুলতে আমরা দৃঢ় প্রতি। এখানে। প্রতিটি নাগরিক ও প্রতিটি অঞ্চল ইনসাফ পাৰে।
পাকিস্তান অর্জনে আমারও কিছুটা মান আছে। পাকিস্তানের অথগুত্ব ও ইসলামী মূল্যবােধ রক্ষার জন্য আমি আমার জান কোরবানি করতে প্রস্তুত। ইসলামী মূল্যবােধই পাকিস্তান অর্জনের মূল লক্ষ্য। আমি সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই যে, পাকিপ্তানকে টুকরাে টুকরো করে পাকিস্তানের অখরুত্ব ইস করার মানলে জনগণ কাউকেই লেনি। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস করি যে, পাকিস্তান এক ও অবিভাজ্য। পাকিস্তানের জনগণ যে ভাষায়ই কথা বলুক না কেন তারা সবাই পাকিস্তান। এ ব্যাপারে স্থানীয় অস্থা+CHয়র কোন প্রশ্ন নেই, পাকিস্তানের প্রতিটি নাগরিকেরই সমান অধিকার (য়েছে।
ভারত ও তাদের দালালদের দূরভিসন্ধির বিরুদ্ধে যে কোন মূল্যে পাকিস্তানকে রক্ষা। করার জন্য দলমত নির্বিশেষে এ4্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আমি আমার দেশবাসী ও অামার লণীয় লােকদের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি। এটি পাকিস্তান টিকে থাকে তবে আমন্না টিকে থাকব। কিন্তু যদি পাকিস্তান বিলুপ্ত হয় তবে কে টিকে থাকবে। কোন দল না। ব্যক্তিবিশের বিরুদ্ধে আমার কোন প্রেম নেই। যে পাকিস্তানের ঐ সে আমার শ, যে পাকিস্তানের বন্ধু সে আমার বন্ধু পাকিস্তানের অখগুত্বের প্রশ্নে কোন দরকাকয়ি বা রাজনীতি চলতে পারে না।
ভারতীয় সশগ অনুবেশকারীরা আমাদের যোগাষোগ ব্যবস্থা ধ্বংসের কাজে লিপ্ত। রয়েছে। মিথ্যা প্রচারণার সাহায্যে আমাসে নগণের মনে সন্দেহ, সৃষ্টি করার কাজেও তারা লিপ্ত রয়েছে। তাছনা ও হালের দালালরা হয় আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা। “ংস করতে এবং ণৈর মনে সন্দেহ, সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমাদেরকে সজাগ হতে হবে।
জনগণের স্বার্থে স্বাভাবিক রেল চলাচল, স্টিমার সার্ভিস, ডাক চলাচল, টেলিগ্রাফ । টেলিফোন চালু রাখতে হবে। সরকার ইতিমধ্যেই গোষণা করেছে যে, পর্যাপ্ত পরিমাণ। পলাশ মওসুল রায়েছে। সিন্ধু এসব খাদ্যশস্য ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য অবশ্যই। দেশের অভ্যন্তরে পাঠাতে হবে। না হয় জনগণ ভয়ঙ্কর পুর্ভোগে ভুগবে। আমালেকে নৈরাশার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। যাতে করে আমাদের জনগণ শান্তিতে থাকত্রে পারে এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও সমৃদ্ধির স্বাধীনতা। ভোগ করতে পারে। | আমি আনন্দিত যে, ইতিমধ্যেই জনগণ দুস্কৃতিকারীদের রুখে দাড়িয়েছে এবং, ভারতীয়দের ও তাদের দালালদের দূরভিসন্ধি বুকতে পেরেছে।
পরিশেষে, আমি দেশপ্রেমিক জনগণ| এ বার সশস্ত্র বাহিনীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। ভারতে সশগ অনুপ্রবেশকারী ঔ তাদের দালালদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে রক্ষা করায়।
ঙ্গে এ নিয়োজিত রয়েছে। আমি আহিবা কাছে মুনাজাত করি যে, আমাদের দেশের প্রতিটি নাগরিকেরা মনে যেন সুচন্তা ও দেশাঝাবোধ জাগরিত হয় এবং আমরা যেন কখনাে। ব্যক্তিগত স্বার্থ ও অসদুদ্দেশ্য দ্বারা পরিচালিত না হয় সর্বদা দেশত্যােগ স্বারা পরিচালিত
#E
এদিকে পুমার দৌলতপুর থানার দিয়ানা আয়োজিত সমাবেশে খুলনার কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্যগণ বক্তৃতা করেন। জাতীয় পৰিল সাবেক সদস্য খান এ, সবুর।
________________________________________
সমাবেশে সভাপতির ভাষণে বলেন, দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে আইন ও শখলা রক্ষাকারী কর্তপক্ষকে সর্বক সহযােগিতা করতে হবে। সভায় সাবেক প্রাদেশিক পত্রিষদ সদস্য আবদুল হামিদ, আবুল হােসেন এবং কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সেক্রেটারী মােহাম্মল আলী না করেন।
২ মে একটি ভিন্ন প্রকৃতির সংবাদ পাওয়া যায়। সংবাদে বলা হয় :
জামাত চট্টগ্রামে নিহতদের তালিকা প্রস্তুত করিতেছে। দৈনিক আজাদ” এ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে জানালাে :
লাহোর, ৩০ শে এপ্রিল চট্টগ্রাম বিভাগের জামাত ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মোহাম্মদ ওসমান নাম ‘আজ এখানে এক সংবাদিক সম্মেলনে বলেন যে, গত মার্চেই কেবলমাত্র চামই হিসু ঐ ক্ষতিকারীনেত্রী হতে হয় হাজার আইন অনুগত নাগরিক নিহত ও আহত হইয়াছে। চমের গটনার বিবরণ প্রদানকালে অধ্যাপক নয় বলেন যে, সামাল ধরিয়া! শহরে রাসের রাজত্ব কায়েম খাকে। উল্লেখযােগ্য যে, অধ্যাপক মুজ আজ সকালে কার্দী হইয়া এখানে আসিয়াছেন। ৪৬
বে আইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগ টিকিট নির্বাচিত সদসা দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে এক বিবৃতি দেন। এই বিবৃতি সম্পর্কে পত্রিকার প্রতিবেদন :
| ‘ঢাকা, ১লা মে। মােমেনশাহী হইতে নির্বাচিত এম, পি, এ এবং বেআইন ঘােষিত আওয়ামী লীগের একজন বিশিষ্ট সদস্য জনাব এস, বি, জামান দলের দেশদ্রোহীদের সাম্প্রতিক জঘন্য কার্যকলাপে বীতশ্রদ্ধ হইয়া উক্ত দলের সহিত সম্পর্ক ছিন্ন করিয়াছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন যে, তাঁহার মত বহুসংখ্যক দেশপ্রেমিক আওয়ামী লীগের এম, পি, এ ও এম, এন, ও এইসব লুক্তহিকারীদের আসল মতলব সম্পর্কে কিছুই
নিতেন না। তিনি পাকিস্তানের এই ও সংহতি ক্ষাকল্পে প্রেসিছে ইয়াবা ও সশস্ত্র নাহিনীকে সাহায্য করে আগাইয়া আসার জন্য মােমেনশাহী জেলার সকল দেশপ্রেমিক নাগরিকদের প্রতি আকুল আবেদন জানান। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের চির দুশমন হিন্দু হান সকল অনুপ্রবেশকারীদের প্রেরণ এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাইয়া আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশের আলোকে বিপন্ন করিয়া তুলিয়ছে।
সন্ধিলক এমতাবস্থায় আমাদের সাফল্যের জন্য প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিকের সহযােগিতা প্রদান করা বর্তমান মুহর্তে একান্ত প্রয়োজন।’
জনাব জামান আরও বলেন যে, উপরোক্ত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও প্রাদেশিক গভর্নর জেনারেল টিক্কা খানের পক্ষে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ব্যতিরেকে অন্য কোন পন্থা ছিল না। তাহাদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা ইতিহাসের পাতায় স্বাক্ষরে লিৰিত থাকিবে এবং সমজাত তাহাদের নিকট চিরকতজ্ঞ থাকিবে বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন। তিনি পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হিন্দুস্থানের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা করিয়া বলেন যে, অনুরূপ বেআইনী কার্যকলাপের দ্বারা হিন্দুস্থান সকল প্রকার আন্তর্জাতিক রীতি-নীতিৰ লংঘন করিয়াছে। তিনি মুসলমানদের পুশমন হিন্দুস্থানের অত্যন্ত চক্রান্ত সমস্যা, করার | সশস্ব বাহিনীর বীর সৈনিকদের প্রতি মােবারকবাদ জ্ঞাপন করেন। কায়েদে আজমের আদর্শে উকিত হইয়া সকল পাকিস্তানীর উচিত দুশমনের বিরুদ্ধে পর্বতের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ হইয়া রুখিয়া দাঁড়ান।
________________________________________
জনাব জামাল প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করিয়া বলেন, বে আইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগে আমাৰ যােগদানের এমাত্র উhশ্য ছিল পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকাৰঃ ভুল বুঝাবুঝি দূর করিয়া দেশের সার্বভৌমত্ব ও সংহতির নিশ্চয়তা বিধান কন্যা। ইহা আমার আন্তরিক আশা ছিল যে, নব নির্বাচিত এম, পি, এ ও এম, এন, এ গণ উক্ত দলের মাধ্যমে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের পবিত্র জনগণের ন্যায্য অধিকার আলায়। কথিত সক্ষম হইবেন। দুর্ভাগ্যমে গুটিকতক দুষ্কৃতিকারীর চক্রান্তের ফলে সমগ্র দেশ বর্তমানে সর্বাপেক্ষা জাতীয় সঙ্কটের সম্মুখীন হইয়াছে। যদি প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক নাগরিক দৃঢ়তার সহিত পরিস্থিতির মােকাবেলা করেন তাহা ইহলে ইনশাআল্লাহ আমরা হিন্দুস্থানী চক্রান্ত জনসা করতে সক্ষম হইল। আমি পাকিস্তানের দুশমনদের মারণ করাইয়া দিতে চাই, য়ে, মায়েদে আজম ২৪ বত্সর পূর্বে বলিয়াছিলেন, পাকিস্তান টিকিয়া থাকার জন্যই আসিয়াছে, এবং বিশ্বের কোন শক্তিই উহাকে ধ্বংস করিতে পারিবে না। ক্লীনাব জামান স্বাভাবিক অনস্থা ফিরাইয়া আনার ব্যাপায়ে প্রেসিড্রেট ও সশস্ত্র বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য দেশপ্রেমিক জনসাধারণের প্রাপ্ত আবেদন জানান। তিনি পাকিস্তানের প্রতি সকল প্রকার সাহায্য পানের আশ্বাস পানের জন্য চীনের প্রতি তা প্রকাশ করেন।’
জামাতে ইসলামীর আমীর মওলানা মওদুলীর এক বিবৃতিতে ‘চরম নিষ্ঠুরত্র। পানকারীদের ধরাইয়া দেওয়ার আহবান জানাইলেন। পত্রিকার বিবরণে জানা যায়;
লাহাের, ২৭ মে। পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক ও খাটি মুসলমানদের প্রতি আজ জামাতে ইসলামীর আমির মওলানা আবুল আলা মওসুপী এই মর্মে এক আবেদন জানান যে, বিগত মার্চের মন্ত্রাসের রাজত্ব চলাকালে আজিয়া নিরপরাধ নগণের প্রতি চরম নিঠুরতা প্রদর্শন করিয়াছে ডাহাপনা পরার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ সাহায্য করা উচিত।
আজ এখানে সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে ৬িনি বলেন, এক মুসলমান এক অপর এক দিন মুসলমান ভাইকে হত্যা করার ন্যায় সুস্পষ্টভাবে বিপথগামী হওয়ার মত – শখ আর ছুিই হইতে পারে না। তিনি বলেন, প্রত্যেক মুসলমানেরই কওঁৰ) হইতেছে আর এক মুসলমানের জান মালের হেফাজত করা এা সে পাঞ্জাব, পাঠান, সিন্ধী, বালুচ তা বাঙ্গালি যে কেউ হউক না কেন।
সাধারণের প্রতি শাহ আজিজুর রহমান আহবান জানিয়ে বললেন, ‘সেনাবাহিনীকে দৃঢ় সমর্থন দান করুন। পত্রিকায় বলা হলাে :
টাকা, ৩রা মে । সাবেক জাতীয় পরিষদের বিরোধী পরে ভেপুটি নেতা শাহ, আqির রহমান ভারতের নয়া সামৰািলী অভিলাকে খতম করার ব্যাপারে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে সমর্থন দানের জন্য আজ জনসাধারণের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, পাকিস্তান পুনর্বার ভারতে নগ্ন হামলার শিকারে পরিণত হইয়াছে। তিনি ললেন, আমাদের আন্তরীণ ব্যাপারে ভারতেৰা হস্তক্ষেপ আস্ত ইহঁাহিক রীতি ও জাতিসংঘ। সনদের পরিপন্থী। তিনি ভাৱত্রের এই বিশ্বাসঘাতকতার তীব্র সমালােচনা করিয়া বলেন, ভারত কেলমাত্র আমাদের ভৌগােলিক অখণ্ডতাকেই বিনষ্ট করার চেষ্টা করে নাই। পর আমাদের অর্থনীতিকে পঙ্গু করারও চক্রান্ত কণিষয়ছে।” | পিপলস পার্টি নেতা কামাল হাসান রিজী এক বিবৃতিতে রাষ্ট্রদ্রোহীদের নিশ্চিহ্ন কণার | ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানালেন। পত্রিকা মালা হলাে :
________________________________________
*ঢাকা, ২রা মে। পূর্ব পাকিস্তান পিপলস পাটির জয়েন্ট সেক্রেটারী জনাব কামাল হাসান রিজভী হিন্দুস্থানা অনুপ্রবেশকারীসহ অন্যান্য সমাজ বিরােধী ও রাষ্ট্রদ্রোহীদের নিশ্চিহ্ন করে লেওয়ার উদ্দেশ্যে একাবদ্ধ হওয়ার জন্য জলাধারণের কাছে উপাত্ত আহবান জনাইছেন। তিনি গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন যে, প্রেসিজেন্ট ইয়াহিয়া খান বিজনােচিতষ্ঠানে বিভিন্ন ও *ংসের হাত থেকে দেশকে রক্ষা কৰিাজেন এবং সশস্ত্র বাহিনী পুশমনদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য অপূর্ণ ভূমিকা পালন করিয়াছে। ঐণি রিজভী পরিশেষে বলেন যে, পাকিস্তান ইনশাআৱাই অনন্ত কাল টিকিয়া থাকিবে এবং উহার দেশপ্রেমিক জনাথ সুখ-শান্তিতে বাস করিবে।
‘পাকিস্তান সরদী সংঘ’ বালাকােট দিবস উপলক্ষে আয়ােজিত অনুষ্ঠানে এ.টি, সাদী “পাকিস্তানের অমরতা রক্ষার জন্য জানালেন। সংবাদে বলা হলো :
‘ঢাকা, ৭ই মে। পাকিন্তান নৱদী সংঘ উহার কেন্দ্রীয় দফতরে বালাকোট দিবস ল্যাপন করেন। সংস্থায় প্রধান এ, টি, সাদী এডভােকেট এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আইন বী, সাংবাদিক, উলেমা, ব্যবসায়ী এবং ছাত্ররা উহাতে যােগদান করেন।
মওলানা মােনাসির ভ্রাহমদ রহমানী, মওলানা আবদুল জব্বার, মওলানা আবদুল্লাহ, মায় আবুল ফজল, এডভোকেট ওবায়দুর রহমান মল্লিক, সৈয়দ আহমদ ব্রেলভী এবং তাহার সহকর্মী শাহ ইসমাইল শহীদের জীবনী আলোচনা করেন- যাহার ১৮৭১-এর ওই মে ব্রিটিশ এবং শিখনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে জীবন কোরবানী করেন।
সভাপতির ভাষণে জনাৰ সানী বলেন যে, আজালী সংগ্রামের প্রথম শহীদ পাকিস্তানের মুসলমানদের আবাসভূমি সৃষ্টির জনা পথ টক করে। আক্ষ লক্ষ মুসলমানের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত পাকিস্তানের আবালিক অখণ্ডতা এবং সংহতি রক্ষা করিতে সর্বশক্তি নিয়ােগ করার জন্য তিনি সকলকে বিশেষ করিয়া এলিগের প্রতি আহবান জ্বালান।”
শেরে বাংলা এ, কে, মজলুল হকের কন্যা বইসি বেগম ‘বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনে ৭ কোটি পূর্ব পাকিস্তানীর মর্যাদা ক্ষুন্ন হইয়াছে’ বলে মত দিলেন। পত্রিকায় বলা হয় :
| “ঢাকা, ৭ই মে। মরহুম শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক সাহেবের কন্যা মােহতারেমা রইসি বেগম ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে গতকাল শুক্রশার এক বিবৃতিতে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান হইতে ১৫শত মাইল দূরে অবস্থিত। কি ইসলামের সার্বজনীন শাসনত এমনই যে, ইহা কেবলমাত্র পাকিস্তানের ৬টি ভাষার মধ্যেই নহে, ইহা বিশ্বের সকল ভাষার মধ্যেই সমন্বয় সাধন ঘটাইতে পারে।
মােহশ্রাৱেম রইলি বেগম বলেন যে, গত নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের বিজয় ছিল একটি দলের একক বিজয়। প্রত্যেকে আশা করিয়াছিল যে, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জনগণের প্রতিনিধিদের নিকট ক্ষমতা হস্তান্ধনে সক্ষম হবেন। কিন্তু গত ২৩শে মার্চ পাকিস্তান লিসে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা আমাদের আশাআকাঅফার প্রতি মরণ আঘাত হানা হইয়াছে এবং বিশ্বের দরবারে ৭ কোটি পূর্ব পাকিস্থানর মর্যাদা ক্ষুণ্ডা হইয়াছে।”৫২।
________________________________________
আওয়ামী লীগের একজন এম,পি, এ আত্মসমর্পণে সংবলি জানা যায় ‘আজাদ পত্রিকার ১০ম সংখ্যায় । পত্রিকায় বলা হয় :
খুলনা, ৯ই মে বোইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের একজন এম, পি, এ পীরজালা মােহাম্মদ সাঈদ গত শুক্রবার স্থানীয় সামরিক আইন কর্তৃপক্ষের নিকট স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ – করিয়াছেন। তিনি সামরিক কর্তপক্ষের নিকট বলেন যে, তিনি আওয়ামী লীগের বিক্ষিন্নতাবাদী আন্দোলন সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে অজ্ঞ ছিলেন এবং তিনি পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতির প্রতি বিশ্বাসী। খুলনা হইতে নব নির্বাচিত এম, পি, এ জনাব সাঈদ প্রেসিডেন্ট এক গহীত সময়োচিত ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন দান করেন এবং পাকিস্তানকে ধ্বংস করিতে সচেষ্ট রাণী বিরোধীদের তীব্র নিন্দা করেন। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শত্রুতাপূর্ণ মনােভাব পােষণের জন্য ভারতের নিন্দা করেন এবং পাকিস্তানের আস্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার জন্য ভারতকে সতর্ক করিয়াছেন ?”৫৩
এদিকে দুই নেতার বিবৃতিতে বলা হলাে-“দেশপ্রেমিক জনগণ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতিহত কল্পিৰে। সংবাদে বলা হলো;
‘ঢাকা, ১১ই মে। পূর্ব পাকিস্তানি মুসলিম লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাঃ এম, মােফাজ্জল আলী এক বিবৃতিতে বলেন, হিন্দুস্থানী সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের সহায়ক্রমে বিচ্ছিন্নতাবাদীগণ তাহালের কুমতলব হাসিলের যে চক্রান্ত করিয়াছে পেশপ্রেমিক জনগণ তাহা যে কোন মূল্যে বানচালের জনা দঢ় প্রতিজ্ঞ। পাকিস্তানী জনগণ সেনাবাহিনীর প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সহযােগিতা দান করিয়া চলিয়াছে বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয় যে, লক্ষ লক্ষ লােকের আন-মাল কোরবানীর পর যে পাকিস্তান, অজিত হইয়াছে ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারত তাজার অস্তিত্ব সহ্য করতে পারিতেছে না বলিয়াই বিভিন্ন উপায়ে এমনকি ক্রিয় সামরিক সাহায্য দান করিয়াও পানিস্তানকে বানচাল করার চেষ্টায় মাতিয়া উঠিয়াছে। সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য। সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য, জাতীয় পরিষদের স্বত সদস্য গ্রপের আহবায়ক এবং চট্টগ্রাম শিল্পপতি ও বণিক সমিতির সাবেক প্রেসিডেন্ট এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপের নিন্দা করিয়াছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ২৩ বছর ধরিয়া ভারত পাকিস্তান সেনা যে কষ্টা চালাইয়া যাইতেছে এইবার তাহা চরম হামলায় রূপপরিগ্রহ করিয়াছে। বিপথগামী আওয়ামী লীগপন্থীগণ ভারতের অস্ত্রশস্ত্র ও অনুপ্রেরণাবলে বলীয়ান হইয়া সশস্ত্র বিদ্রোহীতে পরিণত হইয়াছে। তিনি বলেন, “আমি এই ভাৱষ্টীয় নগ্ন ও সুপরিকল্পিত পাকিস্তান ধ্বংসের চেষ্টা এবং পাক-ভারত উপমহাদেশ হইতে মুসমানদের নাম নিশানা মুছিয়া ফেলার অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা করিতেছি।’৫৪ অপর অবরে জানা যায় যে, পিভিপি মোঃ নূরুল আমিন রাওয়ালপিণ্ডিতে ১১ মে সকালে পাক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এদিন সন্ধ্যায় পিজিপি নেতা নুরুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন যে, ‘পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সমাধানের প্রশ্ন উঠে না।’ এপিপি পন্নিবেশিত খবরে এ সম্পর্কে বলা হলাে :
________________________________________
রাওয়ালপিন্ডি, ১২ই মে। পাকিস্তান ডেমােক্রেটিক পার্টির সভাপতি জনাব নুরুল আমিন গতকল্য সন্ধ্যায় এখানে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসিতেছে। পিপি প্রধান গতকাল ঢাকা হইতে এখানে আগমন করেন। এনি সাংবাদিকদের নিকট বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি আলােচনার জন্য প্রেসিডেন্ট তঁাহাকে আমন্ত্রণ করিয়াছেন। তিনি আজ সকালের দিকে প্রেসিডেন্টের সহিত সাক্ষাৎ
| তিনি বলেন যে, জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরাইয়া আমার অন্য পূর্ব পাকিস্তানের জেলা ও মহকুমা পর্যায়ে শান্তি কমিটি গঠন করা হইতেছে। ভারতের কুসত প্রচারণা ও সুতিকারীদের গুজৰ সত্ত্বেও এই প্রচেষ্টা অনেক দূর সাফল্যমন্ডিত হইয়াছে। এক প্রশ্নের জবাৰে নাৰ নুরুল আমিন বলেন যে, প্রেমিকের সহিত তিনি কোন রকম অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা বা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন সম্পর্কে আলােচনা করেন নাই।
তিনি বলেন যে, তাহার মতে উপদেষ্টা পরিষদের কোন গুরুত্ব নাই। কেননা, প্রেসিডেন্টের বহু উপদেষ্টা রহিয়াছে। ক্ষমতা হস্তান্তর সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, তিনি ইহার বিরোধিতা করেন না। দেশের সর্বত্র একই সাথে ক্ষমতা হস্তান্তর কৰা এচ এক সাংবাদিক যে মহিমত প্রকাশ করেন তিনি তাহার সহিত একমত হন। বেআইনী গােদিত আওয়ামী লীগের নির্বাচিত ব্যক্তিরা যদি দলের বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মসূচি পরিত্যাগ করেন তবে তাহাদের নিকটে ছমতা হস্তান্তর করা যায় কিনা? এই প্রশ্নের জওয়াবে জনাব নুরুল আমিন বলেন যে, ইহা ক্ষমতা হস্তান্তরকারীদের সষ্টির উপর নির্থ কৰে। গুম হত্ৰাস্তৱকানুয়ারী সকু হইলে তাহাকা। ইহা করতে পারেন। পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির কিভাবে কাজনৈতিক সমাধান করা যাইতে পারে এই মর্মে এক প্রশ্নের জওয়াবে তিনি বলেন যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সমাধানের প্রশ্নই উঠে না।
প্রসঙ্গক্রমে জনাব নূরুল আমিন বলেন যে, তিনি শন্তই পূর্ব পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করিলেন। পশ্চিম পাকিস্তানে আর কোন রাজনৈতিক নেতার সহিত তাহার সাক্ষাতের কচি নাই। এখানে অবস্থানকালে তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্টের সহিত সাক্ষাৎ করবেন কি এক প্রশ্নের জবানে জনাৰ নুরুল আমিন বলেন যে, পুনরায় সাক্ষাতের কর্মসূচি এখনও নির্ধারিত হয় নাই।
এক বেতার কথিকায় সাবেক এম, এল, এ মতিন বলেন, পূর্ব পাকিস্থান কখনই ভারতের দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হইবে না।’ ১৩ মে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিকে এ শর্কে বলা হলাে : | ‘ঢাকা, ১২ই মে। সাবেক জাতীয় পরিচ্ছন্ন সদস্য জনাব এ, মতিন ভারতীয় নেতৃবৃন্দকে এই মর্মে হুশিয়ার করিয়া দেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ দেশের ঐক্য ও সংহতি অক্ষুন্ন রাখিয়া তাহাদের পানি আয়ের জন্যই কেবল টেলিজে বন হওয়ার জন্য নহে। রেডিও পাকিস্তান হইতে প্রচারিত এক কখিকায় তিনি ভারতীয় নেতৃবগকে স্মরণ করাইয়া দেন যে, গুণ পাকিস্তান কখনই ভারতীয় দাসত্বের তলে আবদ্ধ হইবে না।
জনাব মতিন বলেন, ব্রাহ্মণ্যবাপের অমানুষিক নির্যাতন, অত্যাচার এবং শােষণই তৎকালীন ভারতের ১০ কোটি মুসলমানকে পৃথক সার্বভৌম একটি ইসলামী বই
________________________________________
কায়েমের জন্য সংগ্রাম শুরু করিতে বাধ্য করিয়াছিল । পরিশেষে লক্ষ লক্ষ মুসলমানদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট শবে কদরের পবিত্র রাত্রে পাকিস্তান অর্জিত হইয়াছে। কিন্তু ভারতীয় নেতারা পাকিস্তানের অস্তিত্বকে কিছুতেই সহ্য করিছে পারেন নাই।।
ভারতীয় নেতারা বিশ্ববাসীকে বুঝাইতে চান যে, তাহাদের দেশ ধর্মনিরপেক্ষ কিন্তু ভারতীয়দের আসল্প সাম্প্রদায়িকতার রূপ প্রকাশ হইয়া পড়ে ১৯৫২ সালে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় সেখানে অক্ষ লক্ষ মুসলামান প্রাণ হারাইয়াছে। প্রাণতের রূপ আরাে নগ্নভাবে প্রকাশ পায় ১৯৪৫ সালে। ভাৰত ১৯৫৫ সালের সেপ্টেম্বরে অতর্কিতে পাকিস্তানের পবিত্র ভূমিতে হামলা চালায়।
| জনাব মতিন বলেন, আজ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের জন্য ভারত যে ভালোবাসা দেখাইতেছে উহা অর্থহীন। কারণ অপরদিকে ভারত পূর্ব পাকিস্তানের একটি বিরাট এলাকাকে মরুভূমিতে পরিণত করার উদ্দেশ্যে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করিয়াছে। ভারত ইত্য। ভালভাবেই উপলব্ধি করিতে পারিয়াছে যে, পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ধ্বংস করার আগে পাকিস্তানের অস্তিত্বকে ধ্বংস করা যাইতে পারে না । এই ধারণার বশবর্তী হইয়াই ভারত পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের দ্বারা আমাদের অর্থনীতি ও যােগাযােগ ব্যবস্থা ধ্বংস করার চেষ্টা করিতেছে। ইতিমধ্যে ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীরা দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, পাবনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া ও অন্যান্য সীমান্তবর্তী অঞ্চল হইতে কোটি কোটি মণ চট্টল লুট কন্নিয়া পালাইয়া গিয়াছে। তিনি বলেন, ভারতের এই অসৎ উদ্দেশ্য বুঝিতে পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণের দেরী হয় নাই। এই জন্যই দুষ্কৃতিকারী ও অনুপ্রবেশকারীদের নিশ্চিহ্ন করার কাজে সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার জন্য। প্রত্যেকটি পর্ব পাকিঙ্কানী স্বতঃস্ফুর্তভাবে আগাইয়া আসিয়াছে। পন্নিশেষে জানাৰ মতিন বলেন, ভারতের এই অসয্য, উদ্দেশ্য ব্যর্থ করিয়া দেওয়ার জন্য দেশপ্রেমিক জনসাধাৰণ যােগাযােগ ব্যবস্থা রক্ষা এবং উৎপাদন বৃদ্ধির কাজে স্ব স্ব দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করিতেছেন বলিয়া তিনি বিশ্বাস করেন।
| এদিকে পিজিপির ভাইস প্রেসিডেন্ট মওলবী ফরিদ আহমদ রাওয়ালপিণ্ডিতে প্রেসিডেনট এ. এমী, ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে তার সরকারি বাসবনে সাক্ষাৎ করেন। ফরিদ আহমন কোন বিষয় নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন তা প্রকাশ কা হয়নি।
নােআইনী ঘােষিত তিনজন আওয়ামী লীগ এম,পি,এ এক বিবৃতিতে “যে কোন মূল্যে পাকিস্তানের সংহতি রক্ষার আহবান জানালেন। পত্রিকায় বলা হলাে :
‘ঢাকা, ১৫ই মে। বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের তিনজন এম.পি, এ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে যে কোন উপায়ে পাকিস্তানের সংহতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়ােজনীয়তার প্রতি গুরুত্ব আরােপ করিয়েছেন। তাহারা বলেন যে, পাকিস্তান এক ও অবিচ্ছিন্ন। বিশ্বের কোন শক্তি ইহা ধ্বংস করিতে পারিবে না। তাহারা কঠোর ভাষায় পূর্ব পাকিস্তান ভারতীয় সশস্ত্র প্রবেশ এবং পাকিস্তানের শাস্তির ব্যাপারে হস্তক্ষেপের নিন্দা করিয়াছেন। তাহারা গোলযোগ, বিশলা, অনৈক্য, বিদ্বেষ এবং এই মহান দেশে মুসলমানদের মধ্যে শ্রেণীগত মনােভাব সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পূর্ব পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও শাধ বিরােধীদের উস্কানীদান এবং সক্রিয় সমর্থন ও বৈষয়িক সাহায্যদানের জন্য কঠোর তামায় ভারতের সমালোচনা করেন। তাহারা বলেন, ভারতের জঘন্য অভিসন্ধি কখনােই
________________________________________
সকল হইবে না। এই তিনজন এম, পি, এ হইতেছেন শেরের জনৰ মে মঈনুল মিয়াজী, খুলনার জনাব হাবিবুর রহমান খান ও জনাব মােঃ সাইদ। যশােরের অপর একজন ফিলীয় নেতা জনাব এম, এ অজিও অনুরূপ মন্তব্য পেশ করেন।
এ.এস.এম, সােলায়মান ১৫মে এক বেতার ভাষণে ভারতীয় চকাওকে লাখ করার আহবান জানালেন। তিনি বললেন : পাকিস্তান বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র। লক্ষ লক্ষ মুসলমানের আত্মত্যাগ ও জান কোরবানীর মধ্য দিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হইয়াছে। মুসলমানদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে পাকিস্তান প্রস্তাবের প্রণেতা ও উথাপক শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ঐতিহাসিক লাহাের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। পাকিস্তান প্রচেষ্ঠায় শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের উপযুক্ত নেতৃত্বে মরহুম হােসেন শইল সােহরাওয়ারি বাজা খাজা নাজিমুনি ও বাংলার মুসলমানশণ বহু ত্যাগ স্বীকার করিয়াছেন। পাকিস্তান প্রস্তাবের উথাপক শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এক ও অণও পাকিস্তানে বিশ্বসী ছিলেন।
কায়েদে আজমের বিরাট নেতৃত্বে পাকিস্তান অর্জিত হইয়াছিল। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর হইতে প্রতিবেশী হিন্দু সমাজ্যবাদী শক্তি ভারত পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্য সর্বাত্মক অপচেষ্টা চালাইয়াছে। কিন্তু অরহর অসীম করুণায় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনসাধারণের সন্মিলিত প্রচেষ্টায় তাহাদের সকল প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হইয়াছে।
বিগত সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ ইসলামী নীতির ভিত্তিতে সর্বপ্রকার শােষণমুক্ত গণতাথিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য ভোট দিছিল। অতীতে যে পাকিস্তানের জনা তাহারা বিরাট কাগ স্বীকার করিয়াছে, তাহা ভাঙ্গিয়া দেয়ার কোন কর্মসূচি। তারা কখনই সমান করে নাই। করতেও পারে না। পাকিস্থানে শাসনাক সমস্যা একটা পুরাতন সমস্যা এবং তাহা সম্পূর্ণ আস্তরীণ ব্যাপার। পূর্ব পাকিস্থানের জনগণ তাহাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ভারতের উপর নির্ভর করে নাই। আজাদী লাভের পূর্বে বাংলার হিন্দু সম্প্রদায় তাহাদের ব্রিটিশ প্রভুদের সহযােতািয় মুসলমানদেরকে অর্থনৈতিক দিক দিয়া বন্ধ শােষণ করিয়াছেন, কিন্তু রাজনৈতিক দিক দিয়া তাহাদিগকে কখনাে শাসন করিতে পারে নাই। ভারতের বর্তমান হিন্দু সমাজবাদীদের ইতিহাস হইতে এই শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। সূচনা হইতেই বাংলার মুসলমানগণ কংগ্রেসের নেতৃত্বের বিরােধিতা করিয়াছে।
১৯০৬ সালে নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর উদ্যোগে দুসলমানদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার রক্ষার জন্যই মােসলেম লীগ গঠন করা হয়। এ বছরই আকাকে রাজধানী রিয়া আসাম ও পূর্ব বাহকে লইয়া একটি প্রদেশ গঠন করা হয়। একালীন হিন্দু মে এগিণ ইহার ত্রবরােধিতা করেন এবং ১৯০৫ সালের মহাশ প্রতিষ্ঠাকে বাতিল করার জন্য তথাকথিত ‘জয় বাংলা’ আন্দোলন শুরু করেন। এটিশ সরকার হিসেব চালের কট অবশেষে নাতি স্বীকার করিয়া এসব শ খালি করতঃ মুসলমানদিগের সহিত বিশ্বাসঘাতকতা করেন। প্রতিষ্ঠার সময় বাংলাকে ভাগ করিয়া পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা কবিয়ছিল। বাঙ্গালি মুসলমানগণ ব্রিটিশ ও হিন্দু নেতাসের এইসব বিশ্বাসঘাতকতা কখনই
________________________________________
সম্প্রতি ভারত পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করিয়া জাতিসংঘ সনদ জন করত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক মারাত্মক দৃষ্টান্ত স্থাপন করিয়াছে। পাকিস্তানকে ধ্বংস করার ভারতীয় ষড়যন্ত্র এখন দিবালােকের ন্যায় স্পষ্ট হইয়া গিয়াছে। এবং ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাহার দুরভিসন্ধিমূলক কার্যকলাপের সমর্থন সংগ্রহ করিয়া মারাত্মকভাবে ব্যর্থ হইয়াছে। পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন দানের জন্য পাকিস্তানের জনসাধারণ বিশেষভাৰে চীনা সাধারণতন্ত্র মাঙ্গো এশিয়া দেশগুলাের নিকট কৃতজ্ঞ। ভারত একদিকে গঙ্গা নদীর উপর ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করিয়া পূর্ব পাকিস্তানকে মরুভূমিতে পরিণত করার চেষ্টা করিতেছে, অন্যদিকে তারা পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণের জন্য বেতার ও শক্তিশালী প্রচার মাধ্যমে কুঞ্জিরা বর্ষণ করিতেছে। ভারতীয় দুষ্কৃতিকারীরা সীমান্ত অঞ্চলে যােগাযোগ ব্যবস্থা বিনষ্ট করিয়া পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতিকে বিস্ত করার চেষ্টা করিতেছে এবং তাহাদের মৃতপ্রায় পাটশিল্পকে প্রতিযােগিতা হইতে চাইৰায় জন্য পাকিস্তানের পাট শিল্পকে খংস করা চেষ্টা করিতেছে। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনসাধারণ ভারতীয় চ্যালেঞ্জের মােকাবেলা করিয়াছে ফলে ভারতের সকল চেষ্টা ব্যর্থ হইয়াছে এবং একথা আবার প্রতিপন্ন হইয়াছে যে, পাকিস্তান টিকিয়া থাকার জন্যই প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।
আমি আমার প্রিয় দেশবাসীর নিকট আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার ভারতীয় যড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করার এবং সাম্প্রতিক গােলযােগে যে ক্ষতি হইয়াছে, তাহা দ্রুত পূরণের জন্য পূর্ব পাকিস্তানে কৃষি ও শিল্প উৎপাদন তরান্বিত করার জন্য সর্বশক্তি নিয়ােজিত কার আবেদন জানাইতেছি। আমি এই সুযোগে সকলকে আমাদের মহান নেতা শেরে বাংলা জনাব ফজলুল হকের অমর বাণী স্বরণ করাইয়া দিতেছি। তিনি বলিয়াছেন, হিন্দুরা যখন। আমার প্রশংসা করে তখন আমি ভতি হই, আর আমি বুঝিতে পারি যে আমি নিশ্চয়ই। মুসলমানদের স্বার্থ বিরোধী কোন কাজ করিয়াছি। পক্ষান্তরে তাহারা যখন আমার সমালােচনা করে, আমি তখন খুশী হই । আমি বুঝিতে পারি যে, আমি সঠিক পথেই কলিতেছি। আমাদের মহান নেতার এই উক্তি বিপদের এই যুগ সন্ধিক্ষণে আমাদে পথ প্রদশর্ক হউক।”৯।
আমিঠা ইতোমধ্যে বলেছি যে, মওলবী ফরিদ আহমদ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানে সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এদিনই তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বললেন, ভারতীয় প্রচারণার জবাৰে পূর্ব পাকিস্তানের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা বিদেশ সফরের জন্য ৩।’ এ সম্পর্কে পত্রিকায় বলা হলো :
রাওয়ালপিন্ডি, ১৩ই মে। পিডিপি-৭; ভাইস প্রেসিডেন্ট মওলবী ফরিদ আহমদ এখানে বলেন যে, দেশের অবস্থা সম্পর্কে ভারতীয় মিথ্যা প্রচারণা প্রতিরােধের জন্য পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন শ্রেণীর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা বিদেশ সফর করিতে প্রস্তুত রহিয়াছেন। সিভিপি নেত্রী এখানে প্রেসিডেন্টের সহিত সাক্ষাতের পর এক সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেন।
জানান আহমদ বলেন যে, দেশের পূর্বাঞ্চলের সম্রান্ত এবং নাগরিক প্রতিনিধিদের প্রস্তাবিত বিদেশ সফরে বিশ্ব জনমত গঠনের পক্ষে সহায়ক হইবে এবং ভারত যে মিথ্যা প্রচারণা চালাইতেছে তাহার মুখােশ উন্মোচিত হইবে। বেসরকারী উদ্যোগে এই ধরনের
সফরের ব্যবস্থা করা হইবে বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন। মল। রিন আহমাদ জানান যে, প্রেসিডেন্টের সহিত সাক্ষাৎকালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের নাগরিকদের বিদেশ সফরের প্রস্তাব পেশ করেন। প্রেসিভেন্টের সহিত তিনি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি শর্কে আলোচনা করেন বলিয়া জানান।
পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ সভাপতি এ, মুতালিৰ আখন্দ এক বিবৃতিতে জানালেন”পাকিস্তানের সংহতি রক্ষায় জনগণ বদ্ধপরিকর।’ সংবাদে বলা হলাে :
“ঢাকা, ১৬ই মে, পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সভাপতি জনাব এ, মুতালিব আখন্দ অদ্য ঢাকায় এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের আভ্যাণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপের নিন্দা করিয়াছেন।
তিনি বলেন যে, পাকিস্তানীরা ভারতের চক্রান্ত সম্পর্কে সম্পূর্ণ সজাগ এবং যে কোন মূল্যে পাকিস্তানের আলিশ ও সংহতি রক্ষার জন্য বদ্ধপরিকর। তিনি আরও বলেন যে, দেশপ্রেমিক জনসাধারণের সহযোগিতায় পাকিস্তানের বীর সেনাবাহিনী পুঞ্চ এরী ঔ ভারতীয় অনুচরদেনা নিশ্চিহ্ন করিয়া দেওয়ায় পাকিস্তানের সংহতি বিনষ্ট করার ভারতীয় প্রচেষ্টা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হইয়াছে। বর্তমানে সয়া প্রদেশ সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন এবং জীবনের সর্বস্তরে দ্রুত স্বাভাবিক ফিরিয়া আসিতেছে।১১
পূর্ব পাকিস্তান জমিয়তে উলামায়ে এছলাম ও নেজামে ইছলাম পার্টির নেতা মওলানা আশরাফ আলী সংবাদপত্রে দেয়া এক বিবৃতিতে বললেন, ‘যে কোন মূল্যে ভারতের চক্রও নাস্যাৎ কৰিব।’ জাতীয় দৈনিকে এ প্রসঙ্গে বলা হলাে :
“ঢাকা, ১৮ই মে । পূর্ব পাকিস্তান জমিয়তে উলামায়ে এলাম ও নেজামে এছলাম পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আশরাফ আলী এঞ্জকাম অমিশ ও মুসলিম জাতীয়তার ভিত্তিতে পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ গড়িয়ায় তােলার সুন্য জনগণের প্রতি
গতকল্য সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আজ আমাদের উচিত সময়ের ডাকে সাড়া দিয়া আৱাহর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করিয়া সাচ্চা মুছলমান হিসাবে নিজেদেরকে পড়ুয়া তােলা। তিনি বলেন, পাকিস্তানের আতান্তরীণ ব্যাপারে ভারতের নগ্ন হস্তক্ষেপ ও ভারত কর্তৃক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার পুনরায় একথাই প্রমাণ করিল যে, ভারত পাকিস্তানকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে মানিয়া নিতে কখনও রাজি নহে ।
| নেমে এহলাম নেতা আরও বলেন যে, পাকিস্তান সৃষ্টির পর হইতেই ভারত পাকিস্তানের রায় আগুতা নিনষ্ট করার চেষ্টা করিয়া আসিতেছে। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের হাতে শােচনীয়ভাবে পরাজিত হইয়া সাম্রজাবালী ভাৱত এক্ষপে পাকিস্তানকে নস্যাচ্ছ, করার এক প্রসিদ্ধিমূলক কৌশল অবলম্বন করিয়াছে। কিন্তু ভারতের একথা জানি রাখা উচিত যে, পাকিস্তান আল্লাহর এক মহান অবদান এবং আমাদের পুশমনরা পাকিস্তানকে কংস করার যত ফন্দিই আটুক না কেন, আমরা তাহাদের সকল ষড়যন্ত্র যে কোন মূল্যে নস্যাৎ করিয়া দিব।
তিনি বলেন, আমাদের জনসাধারণ হিন্দুস্থানের মণ স্বরূপ ধরিয়া ফেলিয়াছে। তাহারা এখন ভালভাবে বুঝিতে পারিয়াছে যে, আমাদের অর্থনীতিকে পঙ্গু করার জন্যই ভাৰত আমাদের পথঘাট, সেতু ও সহকারী পরি অশেষ ক্ষতিসাধন করিয়াছে।
পাকিস্তান দোসর বিভিন্ন রাজনৈতক দল ও ছাত্র সংগঠন ১৬৭ এলিকে জামাত নেত্বরে এক যুক্ত বিবৃতিতে বলা হলো—’আglাহর অসীম অনুগ্রহ পানি রক্ষা পাইয়াছে।” পত্রিকায় এ প্রসঙ্গে বলা হলাে :
“ঢাকা, ১৯শে মে পূর্ব পাকিস্তান জামাতে এছলামীর সাধারণ সম্পাদক এবং শ্রম সংক্রান্ত সংলাপঃ জনাব মােহাম্মদ শফিকুয়াছ, গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, পরিশেষে পাকিস্তান বিরােধী দুষ্কৃতিকারী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী দ্বারা সৃষ্ট সন্ত্রাসের রাজত্ব এবং গােলযােগের উপর মারাত্মক আঘাত হানা হইয়াছে এবং মহান শক্তিশালী আল্লাহ তায়ালার অসীম অনুগ্রহে পাকিস্তান রক্ষা পাইয়াছে।” ভাৱত পূর্ব-পাকিস্তানের অন্তরে উহার দালালদের খাৰ এই প্ৰদেশকে দেশের বাকী অংশ হইতে বিচ্ছিন্ন করতে চেষ্টা করিছি তা কিন্তু আমাদের বার সশল বাহিনী সমধে|Bক বলল শপথ গ্রহণ করিয়া। তেমন কোন অসুবিধা ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণাধীনে আনয়ন করিয়াছে।
তাঁহারা উক্ত যুক্ত বিবৃতিতে আরও বলেন যে, ইহা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হইয়াছে যে, ভারত পূর্ব পাকিস্তানস্থ উহার দালালদের দ্বারা পাকিস্তান খণ্ড বিখণ্ড করার জন্য এই জঘনা খেলায় মাতিয়া উঠিয়াছিল। পূর্ব পাকিস্তানের উক দালালেরা সর্বদাই ভারতের স্বার্থে কাজ করিত। সশস্ত্র ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী এবং তাহাদের দালালেরা পুল ও সড়ক উইয়া গিয়াছে, ব্যাংক লুট করিয়াছে এবং বন্দুকের মুখে পক্ষ আঞ্চ মণ আলশস্য পাচার করিয়াছে। আহৰা এই সৰ অহাচারের নিন্দা করিয়াছে তাহাদিগকে সীমান্তের ওপারে ধরিয়া লইয়া নির্মমভাবে হত্যা লা হইয়াছে।
উপরােক্ত ঘটনাবলী পূর্ব পাকিস্তানী দেশপ্রেমিকদের চক্ষু খুলিয়া দিয়াছে এবং ভারতীয়। দলািলদের মুখােশ উন্মোচন করিয়া দিয়াছে। এখানকার মােছলেম জনসাধারণ পাঝিস্তান। বিরােধী ও ভারতীয় দালালদের আর বরদাশত করবে না এবং পাক মই হইতে তাহালের সম্পূর্ণরুপে উৎথতকষ্টে জনগণ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলিয়া তাহা আশা প্রকাশ করেন। ইনশাআল্লাহ পাকিস্তান এক ও ঐক্যবদ্ধ দেশ হিসাবে টিকিয়া থাকিবে বলিয়া তাহার ঘােষণা
মে মাসেই রংপুরের কন কাউন্সিল মুসলিম wীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম ও আবদুর। রহমান এক যুক্ত বিকৃদ্ধিতে জানতায় অনুপ্রবেশের তীব্র নিন্দা করেন।’ এ সম্পর্কে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে বলা হয় :
রংপুর, ২১শে মে। প্রাক্তন এম, এল, এ ও জেলা মুসলিম গেল সেক্রেটারী। জনাব সিরাজুল ইসলাম এবং e]ক্তম এমপিএ ঔ |Cমার সেন0}: নাৰ আবপুর বহমান সম্প্রতি এক যুক্ত বিবৃতিতে ভারতীয় অনুপ্রবেশে তীব্র নিন্দা করেন। এই দুইজন কাউন্সিল লীগ নেতা তাঁহাদের বিবৃতিতে সমধেমাচিত হস্তক্ষেপ দ্বারা দেশের সেনাবাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তানী জনগণের জানমাল রক্ষা করায় গতর কৃত প্রকাশ করেন।
তাহারা বলেন যে, রংপুর সম্পর্কে তারতীয় বেতারে যে প্রচারণা অব্যাহত রান্না হইয়াছে, আমাদের ব্যক্তিগত অতি অনুসারে তাহা সম্পূর্ণ মিথ্য!, বিশ্বেষপ্রসূত ৩ বানােয়াট। ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী ও হিকারীদের উচ্ছেপের পাত্রে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যে সাফল্য ও করিয়াছে, উজার জনা সংস্কাম প্রকাশের ভাষা আমাদের অজানা। তাহারা বলেন যে, সামগ্রিকভাবে রংপুরে পূর্বের মত স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ
________________________________________
করিতেছে, এবং একার জনগণ তাহাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রী চালাইয়া যাইতেছে। তাহারা দেশের অত্র অংশের শান্তিপ্রিয় জনগণের প্রতি দেশ ও দেশবাসীর জানমালের হেফাজতকারী পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহিত পূর্ণ সহযােগিতার আবেদন জানান। তাহারা যে কোন মূল্যে পাকিস্তানের আদশ ও সংহতি রক্ষায় বদ্ধপরিকর বলিয়া ঘােষণা করেন।
এদিকে বেআইনী যােযিত আওয়ামী লীগের দু’জন সদস্য পৃথক পৃথক বিবৃতিতে ললাের সঙ্গে তাদের সম্পর্কচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেন। এরী দুজন হলেন কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমজাদ হােসেন এবং টাঙ্গাইলের সাবেক এমপি খোলা বকশ মোখতার। তারা বিচ্ছিন্নতার হাত থেকে দেশকে রক্ষাকল্পে সরকারের সঙ্গে পূর্ণ সহযােগিতা পাষের জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান ।
ভারতীয় দূরসিন্ধি ফাসের উদ্দেশ্যে বিদেশে পাক মিশন প্রেরণের আহবান জানালেন কৃষক শ্রমিক পার্টি নেতা জয়নুল আবেদীন। পত্রিকায় এ প্রসঙ্গে বলা হলো :
‘ঢাকা, ২২শে মে পাকিস্তানের ভূমিকা বিশ্লেষণ ও ভারতের দুরভিসন্ধি ফাস করার উদ্দেশ্যে নেতবৃন্দের একটি প্রতিনিধি দলকে বিদেশে প্রেরণের জন্য পাকিস্তান সরকারকে অনুৰােধ জানানাে হইয়াছে। কৃষক শ্রমিক পার্টির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব জয়নুল আবেদীন ফারাক্কা সমস্যাটি আত জাতিসংগে উথাপনের জন্যও সরকারের প্রতি অনুরােধ জানান। এক বিবৃতিতে তিনি প্রসঙ্গতঃ বলেন যে, উজিকাে আম মিসেস ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানকে এই বলিয়া হুমকি দিয়াছেন যে, ভারত পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ করিতে সম্পূর্ণ ত।
আজাদী কাজের পর হইতে পাকিস্তান সর্বদাই ভারতসহ, প্ৰঙিবেশী রাষ্ট্রের সহিত শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার চেষ্টা করিয়াছে এবং এখনও অন্যাপd আশ্ৰস্তুরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে নাই। কিন্তু ভারতীয় রণ-লিপ সুর নরস্তণভাৱে পকস্তানকে ধ্বংস কৰাৱ চেষ্টা করিয়া আসিতেছে। তাহৰাি কারের প্রশ্নে যাবতীয় ওয়ালার বরখেলাপ করিয়াছে এবং পূর্ব পাকিানাে অর্থনীতিকে পঙ্গু করার দেশে যাবতীয় ও জকি এ ও আইনের বিরুদ্ধে একতরফাভাবে ফারাক্কা বাধ সমাপ্ত করার পন্থা গ্রহণ করিয়াছে।
ইনাৰ জয়নুল আবেদীন প্রসঙ্গঃ বলেন যে, ভারত উহার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে জানমালের হেফাজত ও নিরাপত্তা বিধানে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হইয়াছে এবং লিয়াকত নেহেরু চুক্তি এল কারণ সাদাৰিক দাঙ্গায় লক্ষ লক্ষ মুছলমকে হত্যা ও নির্যাতনের শিকারে পরিণত করিয়াছে। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ আসাম ও অন্যান্য অঞ্চল হইতে ১২ সূক্ষাধিক নির্দোষ মুরলমানকে বিতাড়িত এবং পূর্ব পাকিস্তানে মােহঙ্গের রূপে আশ্রয় গ্রহনে বাধ্য করি অক্ষাপ্তরে ভারতীয় নেতারা এখন পূর্ব পাকিস্তান হইতে তথাকথিত শরণার্থী সমাগমের
। জন্য gbচামেচি শুরু করিয়াছে।’
| চট্টগ্রামে নেজামে এসলাম নেতা এক লতায় পাকিস্তানের দুশমনদের নিশ্চিহ্ন কৰা আহবান জানালেন। এ সম্পর্কে সংবাদে বলা হয় :
| 05ামে, ২২শে মে পূর্ব পাকিস্তান নেজাম এছলাম পাটির সভাপতি মওলানা সিদ্দিক আহমদ সকল প্রকার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক মহলে তুলিয়া গিয়া পাকিস্তানের সুশমন’র সম্পূর্ণরুপ নিশ্চিহ্ন করি দেওয়ার উদ্দেশ্যে একযােগে কাজ করা যাওয়ার অন্য সকল শান্তি কমিটির সদস্যদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাইয়াছেন।
________________________________________
মওলানা সিদ্দিক আহমদ গতকাল লালদিঘী ময়দানে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় ভাষণদান কালে বলেন, যে, রাষ্ট্রদ্রোহী ও সমাজদ্রোহীদের কার্যকলাপ প্রতিহত করার মাধ্যমে পূর্ণ স্বাভাবিকতা ফিরাইয়া আনার ব্যাপারে সেনাবাহিনীর সহিত সহযােগিতা করা শুধুমাত্র শান্তি কমিটির নহে, কাঞ্চন প্রত্যেক পাকিস্তানী নাগরিকের কর্তব্য। মওলানা ছাহেব দুঃখের সহিত বলেন যে, যখন ভারতের মুছলমানরা অমানুষিক জারণ ভােগ করিতেছেন তখন অতি সম্প্রতি আমাদের এক শ্রেণীর লােক হিন্দুদের সহিত যােগ দিয়াছে।
চট্টগ্রাম শান্তি কমিটির উদ্যোগে আহত এই সভায় উহার আহ্বায়ক জনাব মাহমুদুন্নবী চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। সভাপতির ভাণে হবে মাহমুন্নবী চৌধুৰী পাকিস্তানের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে ভারত ও পাকিস্তানের হিন্দুদের দ্বারা সংগঠিত একের পর এক যড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করেন।
শান্তি কমিটির ভূমিকা সম্পর্কে তিনি বলেন যে, পাকিস্তানের দুশমনলের কার্যকলাপ, সম্পর্কে সতর্ক থাকা প্রত্যেক দেশপ্রেমিক নাগরিকের কর্তব্য। যে কোন ব্যক্তি যে কোন সমস্যার সম্মুখীন হইলে অবিলম্বে তিনি শান্তি কমিটির সাহায্য গ্রহণ করিলেন। তিনি এই যাবত যেসব স্থানে শান্তি কমিটি গঠিত হয় নাই, তথায় তাহা গঠনের পরামর্শ দেন।
| হালিশহর হাউজিং এষ্টেট ওয়েলফেয়ার এসােসিয়েশনের প্রেসিস্টেন্ট জনাব গোলাম বিলানী বলেন যে, উন্নয়নের অত সুযোগ সুবিধা দ্রুত পরিপূরণের জন্য অতীতের চাইতে পূর্ণ শান্তি ও স্বাভাবিকতা ফিরাইয়া আনা আজ সর্বাধিক প্রয়োজন।
জনাব জিলানী, তিনি একজন মােহাজের নেতাও বটে। বলেন যে, মােহাজের পাকিস্তানের জন্য রক্ত পান করিয়াছে। এই সময় পাকিস্তান রক্ষা করার জন্য তাহাদের পুনরায় রক্তদান করা উচিত। এবং ভবিষ্যতে যে কোন সময়ে পাকিস্তান সংহতির জন্য এয়োজনে তাহারা রক্তদান করে।
কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্য এডভােকেট আবু সালেক বক্তৃতা কলে বলেন যে, ভাৱত পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে অসন্তোষ ছড়াইতেছে। কিন্তু পশ্চিম নার বাঙ্গালীদের এই বাস্তব সত্যটা ভূলিয়া গিয়াছে। তিনি বলেন, পাকিস্তানে বাংলা অন্যতম। রাষ্ট্র স্থা। কিন্তু ভারতে বাংলা ভাষার তাে কোনরূপ সম্মান নাই। এছাড়া সভায় বক্ততা। করেন, মওলানা নূর মােহাম্মদ খান কারী, মওলানা আবদুল মোনায়েম, জনাব এ, এফ, হাসান, জনাব কামালুদ্দিন, মলানা শামসুদ্দিন ও জনাৰ আমিনুল ইসলাম চৌধুরী।
খুলনার খালিশপুরে খান এ সবুর এক কুতায় জাতিগঠনে আত্মনিয়োগের আহবান জানান। প্রকশি এ খবরে বলা হয় :
খুলনা, ২৩ শে মে সাবেক কেন্দ্রীয় উজির খান আব্দুস সবুর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদীদের দুমকির মুখে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষা এবং জাতি গঠনের কাজে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে নিয়ােজিত করার অন্য জনগণের প্রতি আহবান জানান। খান সবুর গত শুক্রবার খালিশপুর হাট্টা, এষ্টেট প্রাইমারী স্কুল প্রাঙ্গণে এক সমাবেশে বক্তৃতা जानिन ।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মিসেস ইন্দিরা গান্ধী সম্প্রতি যুদ্ধের যে হুমকি প্রদান করিয়াছেন উহার উল্লেখ করিয়া খান সাবুর বলেন যে, ১৯৩৫ সালের যুদ্ধে ভারতের সমুচিত শিক্ষা হওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, আরেকটি দুঃসাহস করা ভারতের উচিত না। তিনি পৃঢ়তার সহিত উধ্যেখ করেন যে, যদি চরম বিপর্যয় আমাদের উপর আসে তবে
________________________________________
পাকিস্তানের প্রতিটি ইজি মাটি ক্ষার জন্য দেশের ১২ কোটি লােক মাপের অপৰাজয় সশস্ত্র বাহিনীর সহিত পাশাপাশি থাকিয়া যুদ্ধ করিনে।
অল ইন্ডিয়া রেডিও মিথ্যা প্রচারণাৰ কথা উল্লেখ করা খন সবুর বলেন যে, প্রতিদিন ভারতীয় বোর হইতে দুস্কৃতিকারী ও ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের কাপ্পনিক সাফল্যের কথা প্রচার করা হইতেছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত হইতে গেলাবণ কৰা হইতেছে এবং বই পারতীয় নাগরিক হতাহত হইতেছে। এই অজুহাত তুলিয়া তাহারা মিথ্যা প্রতিবাদ জানাইতেছি । রিতীয় বেতারে প্রচারণা যে, পরস্পর বিরােধী, ক্ষতিকারক ও দূরভিসন্ধিমূলক প্রহা যে কোন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক স্বীকার করিবে। তিনি আরও বলেন যে, দুস্কৃতিকারীদের জন্য সমর্থন লাভ করার চেষ্টা ব্যর্থ হইয়া ভারত এখন বাস্তুহারাদের ফ! তুলিয়া বিশ্বমত সৃষ্টির চেষ্টা করিতেছে। ইহাও ভারতীয় বেতারের প্রচারণার দ্বারা একটি নিজের সন্ত্র সমস্যা।
খান সবুর বলেন যে, সকল ফ্লন্টেই শােচনীয়ভাবে ব্যর্থ হইয়া মিসেস ইন্দিরা গান্ধী সশর হামলার হুমকি প্রদান করিতেছেন। পাকিস্তান সৃঢ় এবং সাহসের সহিত যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হত্যু বলি নি উথ করেন। কলকারখানা চালু রাখিয়া সর্বালিক পরিমাণ উৎপাদন অব্যাহত রাখায় ন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
মুসলিমলীগ নেতা হাজী হাবিব ফকির এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর সহিত পূর্ণ সহযোপিত্রার আহবান জানান। প্রতিবেদনে বলা হয়;
*Uকা, ২৩ শে মে প্রাদেশিক মোছলেম লীগের কার্যনির্বাহ কমিটির মূল্য ও বিশিষ্ট সমাকামী হাজী হাবিব ফকির গত শুক্রবার প্রদত্ত এক বিবৃতিতে প্রদেশে পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজে নিয়ােজিত সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি পুরােপুরি সহযােগিতা দানের জন্য জনগণের নিকট আকুল আবেদন জানান।
তিনি প্রসঙ্গত বলেন যে, সশস্ত্র বাহিনীর সময়ােচিত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে প্রায় বিলি হওয়ার পথে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি রক্ষা পাওয়ার পাকিস্তানের এই অংশের প্রত্যেক দেশপ্রেমিক আল্লাহর নিকট গভীর ভাবে কৃতঃ। বেআইনী মােধি আওয়ামী লীগের ও উঃ ভারতীয় সহযােগীদের প্রান্তে দেশ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে ছিল বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি প্রসঙ্গঃ বলেন যে, এখনও অনেক কিছু করার আছে এবং কর্তপক্ষ আমাদের * স্থায়িত্বের পথে ফিরা ইবা নিতে ও গৌরবােজ্জ্বল ভবিষ্যত রচনার জন্য যে বিরাট দায়িত্ব গ্রহণ করিয়াছেন, উহ! সাইকি করিতে রাষ্ট্রদ্রোহীদের হাতের ব্যাপারে এবং পাকিস্তানের শক্তি ও সংহতিৰ নিশচয়তা বিধানের উদ্দেশ্যে সাব্য আৰীয় ৰাৰাবণী প্রতি আমাদের প্রকারেই অকুত সমর্থন দিতে হইবে। | তিনি বলেন, দেশ ও উহার মৌলিক স্বার্থ সকল বিবেচনার ভঝে থাকিতে হইবে এবং উহাদের রক্ষা করার জন্য আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকিতে হইবে। এই মহান কারাে ব্যাপারে যে কোন ত্যাগকে বড় বলিয়া বিবেচনা করা উচিত হইবে না।
ভোলা থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ এম, পি, 4 মােশাররফ হোসেন নলের সঙ্গে সম্পর্ক হেল করে পত্রিকা প্রকাশের জন্য এক বিবৃতি দেন। পত্রিকা জানালাে : ‘সাকা, ২৫শে মে রিশাল জেলার তোলা হইতে নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য জনাব
________________________________________
মােশাররফ হােসেন ওরফে শাহজাহান বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের সহিত সম্পর্ক ছিন্ন করিয়াছেন বলিয়া এক বিবৃতি দেন।
তাহার এই বিবৃতিতে তিনি পাকিস্তানকে সার্বিক ধংস হইতে রক্ষা করিতে প্রেসিডেন্টের কর্মপন্থাকে পুরােপুরি সমর্থন করেন। জনাব হােসেন বলেন যে, প্রত্যেক দায়িত্বশীল পাকিস্তানই এজন বুঝিতে পারিছেন যে, আওয়ামী লীগ এমনঞ্জাবে পদক্ষেপ। নিয়াছিল যার ফলে পাকিস্তানের নিরাপত্তা, আদর্শ এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা সম্পূর্ণভাবে বিপন্ন। হইয়াছিল। তিনি জানান যে “আমি তাহাদের মধ্যে এক জোন”, যাহারা পাকিস্তানের আদর্শ ও ঐথতায় দৃঢ় বিশ্বাস রাখেন।
কোন মুছলমানের পক্ষে ইহা মাই ভুলিয়া যাওয়া সম্ভব নয় যে, ‘অরুণ চৰরতে মুছলমানদের এই আবাসভূমির প্রতিষ্ঠার জন্য লক্ষ লু খুলেমানের জানমাল কোৱান করিতে হইয়াছিল, যেখানে পুরাপুরি জলামের অনুশাসনের পরিপ্রেক্ষিওে জীবন ব্যবস্থা গড়িয়া ফলে, যেখানে একদল অন| পলকে, এক অলু অন্য অঞ্চলকে শােয়| করিবে। না। এবং এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তি বা অন্য দল স্বারা শােষিত হইবে না। ৬ দফার প্রশ্ন। তিনি বলেন, সাধারণ নির্বাচনের চার পাঁচ মাস আগে আমি আওয়ামী লীগে যোগ নেই। এবং সেই সলের মনােন লাক্স করি। কিন্তু একথা স্বীকার করতে আমার ছিলো নাই যে, আমি আওয়ামী লীগের ৬-দফার প্রশ্নে পুরােপুরি সন্তুষ্ট ছিলাম না। কিন্তু শেখ মুজিৰ কর্তৃক প্রদত্ত পুনঃপুনঃ দুইটি ঘোষণা, যেমন=১, আওয়ামী লীগের ৬- | কোনক্রমেই পাকিস্তানকে ঘণ্ড বিখণ্ড করিবে না এবং ২, উহা কোন কমেই কোরান ও সুন্নাহ পরি । হইবে না–এই দুইটি ঘােষণা দ্বারা আমি মুখ হই। সুতরাং আমি বলি যে, আওয়ামী লীগের ৬ দফা শেখ মুজিবের উক্ত দুইটি ঘোষণা দ্বারা বগতভাবে সম্প্রতিবন্ধন ছিল। এছাড়া সমগ্র সাধারণ নির্বাচনটাই আইন কাঠামাের নির্দেশমূলে অনুষ্ঠিত হয় এবং উহা এই প্রতিশ্রুতিই দেয় যে, পাকিস্তানে প্রৗঞ্চলিক অথচ্চা এবং মতাদর্শ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে গৃহীত উহার ৫ দফা লংঘন করিয়া কোনই শাসনতান্ত্রিক ফমূলা গ্রহণ করা যাইবে না। অতএব আমি মানসিক দিক নিয়া পুরাপুরিই সন্তুষ্ট ছিলাম যে, কোন অবস্থাতেই আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের আদর্শ এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা ধ্বংস করিতে পারিবে না। এখন কথা হইল, সময় নির্বাচনী প্রচারণা অভিযানে শেখ মুজিব বা অন্য কোন আওয়ামী লীগ নেতা এই আইন কাঠামাের নির্দেশনামার বিরুদ্ধে একটি কথাও উচ্চারণ করেন নাই । আইন কাঠামাে নির্দেশের বিরােধিতা । কিন্তু নির্বাচনে পনের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ মগ ৪ লঙ্কা কর্মসূচীর উপর অহেতুক গুরুত্ব Hিও অরু করে এবং শেখ মুঞ্জিণের উক্ত দুইটি ঘােষণা ভুলিয়া গিয়া জানিয়া। শুনিয়াই আইন কাঠামাে নির্দেশনামা শুরু করে, তখন আমি মনে মনে একেবারে নিরাশ। হইয়া পড়ি। আমি| পটকিরি উ4 গতি প্রতিতে সyষ্ট হইতে পারি নাই। আমি দলের। নতুন সদস্য হিসাবে পলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সংঘমে লুত হইতেও সাহস করি নাই। প্রেসিডেন্ট বাবস্থার প্রতি সমর্থন এই পটভূমিকায় দেখিলে পাকিস্তানকে ধ্বংসের হাত হইতে রক্ষা করার জন্য গ্রেশমেন্টের আকিক ব্যবস্থা যুক্তিযুক্তই হইয়াছে। আমি প্রেসিডেন্টের এই লাবস্থার প্রতি পূর্ণ সমর্থন
________________________________________
জানাই এবং এতদ্বারা বে-আইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের সহিত সম্পর্ক ত্যাগ করিলাম এবং পান্ধিানের মুক্তি ও ইহার আদর্শ ও আঞ্চলিক অখস্থতা বজায় রাখার প্রয়োজনে আমার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রিত করিতে দ্বিধানােধ করি না।।
এদিকে টাঙ্গাইল কনভেনশন মুসলিমলীগ নেতা হাকিম হাবিবুর রহমান এক বিবৃতিতে টাঙ্গাইলের সর্বত্র স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসিয়াছে বলে অভিমত দেন। এ সম্পর্কে সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয় :
“ঢাকা, ২৫শে মে। টাঙ্গাইল ভোলা মোছলেম লীগের (কনভেনশন) সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা শান্তি কমিটির সভাপতি হাকিম হাবিবুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন যে, জেলার শহর এবং পল্লী এলাকাসমূহে সপুতিৰে স্বাঞ্চাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আসিয়াছে। তিনি বলেন যে, পীর সশস্ত্রবাহিনী দেশপ্রেমিক জনসাধারণের সহায়তায় পাকিস্তানের পবিত্রভূমি হইতে সকল দুষ্কৃতিকারী এবং ভারতীয় চরদের নিমূল করিয়া দিয়াছে।
তিনি বলেন, আমৱা জেলার ইউনিয়ন এবং থানা পর্যায়ে শান্তি কমিটি গঠনের জন্য দ্রুত কাজ করিয়া যাইতেছি। শান্তি কমিটি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহিত সর্বপ্রকার সহযােগিতা করিতেছে এবং অর্থনীতিতে স্থিতিশীল অবস্থা ফিরাইয়া আনার জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালাইতেছে। ভারতীয় প্রচারণা সত্ত্বেও চাষীরা আরও বেশী করিয়া পাট চাষ করিতেছে এবং ইনশাআল্লাহ আমরা এই বত্সৱ বিপুল পরিমাণ পাটের ফসল লাতি করিব। | তিনি আরও বলেন যে, পল্লী এলাকার জনসাধারণ বে-আইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের জঘন্য খেলা সম্পূর্ণভাবে বুঝিতে সক্ষম হইয়াছে এবং তাহাৱা এখন তাহাদের সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা নস্যাৎ করার জন্য বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন যে, ছিলামী ভ্রাতৃত্ব ওঁ সৌহার্দের মনোভাব খােদাভীরু মুছলমানদের মধ্যে পুনরাৰিত রহিয়াছে। ইনশাল্লাহ পাকিস্তান এই সংকট কাটাইয়া উঠিবে এবং পূর্বাপেক্ষাও শক্তিশালী হইবে।’৭১
অপরদিকে প্রেসিঙেনের ঘােষণার প্রতি জমিয়ত নেতা মওলানা আজিজুর রহমান অভিনন্দন জানালেন। সংবাদ বলা হলাে :
ঢাকা, ২৭শে মে জমিয়তে হেজবুল্লাহর নাজেমে আলা মওলানা আজিজুনা বহমান নেসাৱাৰাণী সম্পাদক ও সাংবাদিক সম্মেলনে প্রেসিঞ্জেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের থেণার প্রতি মােবারকবাদ জ্ঞাপন করিয়া বলেন যে, প্রেসিভেন্টের উক্ত ঘােষণায় আফগণের অন্তরে না আশার সঞ্চার হইয়াছে। এক বিবৃতিতে তিনি প্রেসিডেণের উক্ত বিবৃতিকে সময়ােচিত এবং বাস্তবধর্মী বলি আখ্যায়িত করেন।
মওলানা নেসারাবাদী প্রসঙ্গতঃ বলেন যে, বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সুতিকারীগণ এমনই সম্রাসের রাজত্ব কায়েম করে যে, পাকিস্তানের সংহতি ও আদর্শে বিশ্বাসী পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণ তাহাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলিতে সমর্থ হয় নাই। পরিস্থিতির এতই অবনতি ঘটে যে, বিচ্ছিন্নতার হাত হইতে দেশকে রক্ষাকল্পে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ অবশঝাবী হইয়া পড়ে। দুষ্কৃতিকারী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদিশাণ দেশের অর্থনীতির বিরাট ক্ষতি নকৰিয়াছে বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন। তিনি দেশের অর্থনীতিকে পুনরায় গ্রহ:পর করিয়া তোলার জন্য প্রেসিডেন্টের ব্যবস্থাদিকে উপযুক্ত ও সময়ােচিত বলিয়া আখ্যায়িত করেন। প্রেসিধে হাহাকে জাতির প্রতি প্রদত্ত তাহার ওয়াদা পালন করতে পারেন; এজন্য মাইনি আহ ক্ষরবারে তিনি মােনাজাত করেন।২
________________________________________
পাকিস্তান ৱনী সংঘ প্রধান এ.টি. সার্দী ঘোষণা করেন ‘প্রত্যেকটি পাকিস্তানীই ভারতীয় চক্রান্ত নস্যাৎ করতে দৃঢ়প্রতিজ। এ বিবৃতি প্রসঙ্গে পত্রিকায় বলা হয় :
| ‘ঢাকা, ২৮ শে মে পাকিস্তান দরদী সংঘ প্রধান জনাব এ, টি সাদী আজ এখানে এক বিবৃতিতে বলেন যে, পূর্ব অথবা পশ্চিম পাকিস্তান যেখানেই বসবাস করুন না কেন প্রত্যেকটি দেশপ্রেমিক পাকিস্তানী দেশের সংহতি, ঐক্য এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষাকল্পে যে কোন ভারতীয় চক্রান্ত নস্যাৎ করিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
| জনাব সালী আরও বলেন যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মিসেস গান্ধীর সাম্প্রতিক যুদ্ধের হুমকির বিরুদ্ধে নিয়ে প্রতিটি শাড়িপ্রিয় মানুষ প্রতিবাদ জানাইবে। ভারতীয় পার্লামেন্টে
হ্যর (মিসেস গান্ধী) বিলাপের ফলে ইহাই প্রমাণিত হইয়াছে যে, বিশ্ব জনমত ভারত সরকারের ভূমিকার নিন্দায় মুখর। বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে ইহা পরিষ্কার হইয়া গিয়াছে, যে পূর্ব পাকিস্তানে বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ভারতই দায়ী। ভারত একদিকে পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনাবলী সম্পর্কে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাইতেছে এবং অন্যদিকে খুন, অগ্নিসংযোগ, খাদ্য সামগ্রী লুট করার কুমতলবে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের প্রেরণ করিতেছে। এই সব অনুপ্রবেশকারী যখনই যীর পাকিস্তানী সেনাদের সম্মুখীন হয় ঠিক তখনই ত্যাহারা তাহাদের দালালদের সহ, ভারতে পলায়ন করে এবং ভাৱত খোলাখুলিভাবে এই সৰ দুষ্কৃতিকারীর সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করিয়াছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট যে সময়ে দেশপ্রেমিক পাকিস্তানীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আহবান জানান ঠিক তখন উক্ত আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে সহযােগিতা না করিয়া শ্রীমতি গান্ধী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুমকি দান করিতেছেন। পাকিস্তান সর্বদাই তাহার প্রতিবেশীদের সহিত শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থানে বিন্ধাসী এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া সম্প্রতি উহারই পুনরুল্লেখ করিয়াছেন। মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর হুমকিতে পাকিস্তান ভীত হইয়াছে বলিয়া ভারত মনে করিয়া থাকিলে সে মারাত্মক ভুল করিবে। কারণ মহাশক্তিশালী আল্লাহতায়ালার ইচ্ছায় প্রত্যেক পাকিস্তানই ভারতীয় চক্রান্ত নস্যাৎ এবং পাকিস্তানের ক্য সংহতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে শুঢ় প্রতি বলিয়া। জনাব সাদী ঘােষণা করেন।
এদিকে কিশােরগঞ্জে এক জনসভায় মওলানা মােছলেহ উদ্দিন সেনাবাহিনীর সময়ােচিত ব্যবস্থায় দেশ রক্ষা পাইয়াছে” বলে মত প্রকাশ করেন। পত্রিকায় বলা হলাে :
| কিশােরগঞ্জ, ৩০শে মে ‘লিডিপি এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মওলানা সৈয়ল মোস্থলেই উদ্দিন এখানে বলেন যে, ঈমানের বলে বলীয়ান পাকিস্তানের জনগণ ভারতীয় ব্রাহ্মণবাদের যাবতীয় চক্রান্ত প্রতিহত করিবে।
মওলানা ছাহেব গত শুক্রবার এখানে এক জনসভায় বক্তৃতা করিতেছিলেন। সৈয়দ মােছলেহ উদ্দিন প্রসঙ্গত বলেন যে, ২৫ শে মার্চের পর ইহা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হইয়াছে যে, নয়াদিল্লী সৱাত্রের সহিভ বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তিনি বলেন, পাক সেনাবাহিনী তাহাদের সময়ােচিত ব্যবস্থার দ্বারা আমাদের পবিত্র ভূমিকে কায়েমী স্বার্থ ও ব্রাহ্মণ্যবাদের বল হইতে রক্ষা করিয়াছে।
তিনি বিশেষভাবে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও সাধারণভাবে সেনাবাহিনীকে তাহাদের গৃহীত ব্যবস্থার জন্য অভিনন্দিত করেন এবং তারতকে উহার নিজ্জি কার্যাবলীর জনা নিন্দা করেন। সভা শেষে একটি বিরাট মিছিল এই ক্ষুদ্র মহকুমা শহরের প্রধান সড়কসমূহ
________________________________________
এক্ষিণ করে। সভায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার গহীণ বাবস্থার প্রশংসা করা হয় এবং পাক সেনাবাহিনীর প্রতি পূর্ণ সহযােগিতা দানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সভায় বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার নিন্দা করা হয় এবং নয়া এছলামি শিক্ষা আইন প্রবর্তনের আহবান জানানাে হয়। এছাড়া দেশ ও কৃষ্টি’ পুস্তকটি বাধ্যতামূলক পাঠ্যবই করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরােধ জানানাে হয়।
কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সিনিয়র সদস্য আবদুল করি অন্দর এক বিবৃতিতে সেনা বাহিনী সময়োচিত নাবস্থার প্রশংসা করেন। দৈনিক আজাদপত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
| ঢাকা, ৩০শে মে।-পূর্ব পাকিস্তান পরিষদের প্রধান চাপ দুইপ জনাব অঞ্চল করার ধরী ঋন্য এখানে ঘােষণা করেন যে, দেশের আঞ্চলিক অঋণী রক্ষাকায় পাকিস্তান নােনাহিনী যে সময়ােচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করে, ১9থমে জনসাধারণ উহার ভূয়সী প্রশংসা করে। পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শক্তি কমিটির কার্যনির্বাহক সংস্থার অন্যতম সিনিয়র সদস্য ঐব জবার মকর সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন যে, সুতিকার ও বিরােধী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে জনগণ সেনাবাহিনীকে সর্বপ্রকার সহযােগিতা দান করে। | তিমি ললেন যে, চট্টগ্রামের দেশদরদী ও সাহসী মুছলমানদের সর্বাত্মক চেষ্টার ফলেই প্রায় সব কয়টি সেতু এ সড়ক অক্ষত থাকে। বিবৃতিতে তিনি জানান যে, শান্তি কমিটি গঠন প্রসঙ্গে গত দুই সপ্তাহে তিনি চট্টগ্রাম ও নােয়াখালী জেলার বিভিন্ন অংশ সফর করেন। তিনি বলেন যে, চট্টগ্রামে অবস্থানকালে তিনি চট্টগ্রাম জেলা শান্তি কমিটির সদস্যদের সহিত বৈঠকে মিলিত হইয়া এলাকার শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আনা সম্পর্কে আলাপ-আলো করেন।
| তিনি প্রশ করেন যে, তিনি নােয়াঘালী জেলার ফেনী, সােনাগাজী ও অন্যান্য আরও কতিপয় স্থান। সারা করেন। এই সমস্ত এলাকার কোন কোন স্থানে শান্তি কমিটি গঠিত হইয়াছে এবং কোন কোন স্থানে শান্তি কমিটি গঠনের জন্য প্রয়োজ-থ্রি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইয়াছে।
জনাব জালায় আরও প্রকাশ করেন যে নােয়াখালী জেলা শান্তি কমিটির আহবায়ক জনাব সাঈদুল হক এডভােকেট তাহাকে জানাইয়াছেন যে, জনগণ ভৱিতের পূরভিসন্ধি সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন এবং উহার পরিপ্রেক্ষিতে ত্রহণ তাহাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু করিয়াছে। স্থানীয় জনগণ যে কোন মূল্যে দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর বলিয়া তিনি জানান।
এম, এম, এ নূরুল ইসলাম এক বিবৃতিতে জানালেন আওয়ামী লীগের বিন্নিতাবাদী পরিকল্পনা সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলাম।’ পত্রিকায় বলা হলাে :
“ঢাকা, ৩০শে মে জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত সদস্য মােহাম্মদ নূরুল ইসলাম এক প্রেস বিবৃতিতে জানাইয়াছেন, “আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের হনি অভিসন্ধি ও রাষ্ট্র বিরোধী ব্যক্তিদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ এমন এক গুরুতর জীয় সংকটের সৃষ্টি করিয়াছে যে, একজন শান্তিপ্রিয় ও পাকিস্তানের প্রতি অনুগত নাগরিক হিসালে এ ব্যাপারে আমার মনােভাব ব্যক্ত না করিয়া পারিতেছি না।”
উনাৰ নুরুল ইসলাম জাহর বিবৃতিতে জানান যে, আমার সমাজসেবামূলক কাজের অংক আমানুয় এলাকার লােকজন আমাকে ভালবাসিতেন ও সম্মান করিতেন। তাহাদের চাপে পাত্র সাধারণ নির্বাচনে আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিন্বি করি ও নির্বাচিত হই। ইতিপূর্বে আর কোন রাজনৈতিক দলের সহিত আমি সংশিষ্ট ছিলাম না। অধুনা নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষ হইতে জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসাবে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করার পর আমি নিজেকে এমন কলুষিত এক পরিবেশের মধ্যে দেখিতে পাই যেখানকার ধ্যান-ধারণা ও ভাবাবেগ আমার দেশ হিতৈষী মনােভাবের প্রতিকূল এবং আমার পক্ষে কিছুতেই গ্রহণযােগ্য নয় । ইহা আমাকে মর্মাহত ও নিরাশ করে। আমি আওয়ামী লীগে ঘােষিত নীতি ও আদর্শের জন্যই ইহাতে যােগ দিয়াছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিল্কিতালী পরিকল্পনা সম্পর্কে আমি সম্পূর্ণৰূপে অজ্ঞ ছিলাম।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস ভারত আমাদের প্রধান শক্র। ভারত আমাদের প্রতি যে বিদ্বেষ পােষণ করিয়াছে ও যে নির্যাতন চালাইয়াছে আমাদের তা ভুলিয়া যাওয়া উচিত নয় । সত্যিকারের মুসলমান ও পাকিস্তানী হিসেবে আমাদের উচিত অল পাহাড়ের মত হিন্দু সম্রিাজান্তাকে প্রতিহ্য কন্যা । আমার আজীবনের স্বপ্ন এ আশাল কেন্দ্রবিন্দু একটি সমৃদ্ধিশালী পাকিস্তান এবং সাহাৱা এই পাকিস্তান ও এছলামের শত্রু তাহাদের সহিত আমার কোন সংশ্রব নাই।’
ভারতীয় প্রচারণা প্রতিহত করার জন্য বিদেশে উলেমা প্রতিনিধি দল প্রেক্ষা করা। উচিত’ বলে মত প্রকাশ করলেন মিলানা গোলাম গাউস হাসরিন। অবরে বলা হয় :
পেশােয়ার, ৩০শে মে পশ্চিম পাকিস্তান জামিয়াতুল উলেমা-ই-এছলামের জেনারেল সেক্রেটারী মওলানা গােলাম উল হাজারী গতকল্য এখানে নলেন যে, নিত্যপ ভারতীয় প্রচারণা প্রতিহত করার জন্য উলেমা সমস্বয়ে গঠিত সরকারী প্রতিনিধি দলকে বিদেশে প্রেরণ করা উচিত। সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে মওলানা হাজারভী বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে সঠিক পৰিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করার জন্য বিদেশে এই ধরনে প্রত্রিনিধি দল প্রেরণ আবশ্যক। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বলগাহীন সামরিঃ উসকানীর নিন্দা করিয়া তিনি বলেন যে, বিশ্ব শান্তির জন্য এই পরিস্থিতি বিপদজনক। তিনি আরাে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনা সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বিধায় এই ব্যাপারে ভারত অথবা অন্য কোন শক্তি হস্তক্ষেপ করার অধিকার নাই।
ভারতীয় উজিরে আজম মিসেস ইন্দিরা গান্ধী ও তাহার উজিরগণ যে হুমকি প্রদর্শন করিতেছেন উহ্যর নিন্দা করিয়া তিনি তাহাদের ১৯৬৫ সালের পাকভারত যুদ্ধের কথা স্মাণ করাইয়া দেন। উল্লেখযােগ্য যে, ‘৬৫ সালে ভারভীয় হামলায় পাক সশস্ত্র বাহিনীর হাতে ভারতীয় সেনাবহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
| মওলানা হাজারী পাকিস্তানের ঐক্য ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রামে টীয় জনগণ ও সরকারের সমর্থনের প্রশংসা করিয়া বলেন যে, চীন যে পাকিস্তানের বিশ্বস্ত ও নির্ভরশীল সুহৃদ তাহা পুনরায় প্রমাণ করিল । জমিয়ত নেতা বলেন যে, তাহার দল সর্বদাই জাতীয় ঐক্য রক্ষার চেষ্টা করিয়া আসিয়াছে। দেশের ভবিষ্যৎ শাসনতন্ত্র এছলাম ভিত্তিক হওয়া উছিত বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন।”৭৭
________________________________________
| মে মাসের শেষ সপ্তাহে, লেশিক কনভেনশন মুসলিম লীগ নেতা এ. এন. এম. ইউসুফ নওয়াবগঞ্জ, রাজশাহী এবং ভেড়ামারা সফর করে জানালেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বে-আইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের ক্যাসীবাদী কার্যক্রম বুঝতে পেরেছেন।” দৈনিক পাকিস্তান এ সম্পর্কে জানালাে :
‘রাজশাহী, ৩১শে মে (এপিপি)!-পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের (কনভেনশন) সাধারণ সম্পাদক জনাব এ. এন. এম, ইউসুফ সম্প্রতি নওয়াব করেন। এই সফরকালে তিনি শান্তি কমিটির সদস্য ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের লােকের
ও রাজশাহী সফর সাথে সাক্ষাৎ করেন। জীবনের সর্বস্তরে অতি দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার অগ্রগতিতে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ভারত পূর্ব পাদ্যিানে অনুপ্রবেশকারী পাঠিয়ে আন্তজাতিক নদ লংঘন করছে এবং এর পরিণতির জন্য তারতকে দায়ী হতে হবে। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী কার্যক্রম বুঝতে পেরেছেন। এই বেআইনী ঘােষিত দলের নেতৃবৃন্দ জনগণকে একা ফেলে রেখে দ্রুও দেশ ত্যাগ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের আসল উদ্দেশ্য ও পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর সাথে তাদের সম্পর্কের কথা জনসাধারণ এখন পরিষ্কার অনুধাবন করতে পেরেছেন। তারায় আক্রমণ থেকে পাকিস্তানকে রক্ষার জন্য রাজশাহীবাসীর মনপ্রাণে কাজ করে যাচ্ছেন এবং সর্বত্র আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্বপূর্ণ কার্যক্রম অভিনন্দিত হচ্ছে বলে তিনি জানান। তেড়ামারা সফর মুসলিম লীগ নেতা জনাব ইউসুফ কুষ্টিয়ার একটি অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্য কেন্দ্র ভেড়ামারাও সঞ্চার করেছেন। তিনি শান্তি কমিটির সদস্য, বিশিষ্ট নাগরিক ও বিজি সদস্যদের সাথে দেখা করেছেন। জনগণের সহযােগিতায় সশর বাহিনী ভেড়ামারায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে এনেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। | কালীন ইউসুফ বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের ফ্যাশীবাদ কক্ষনের ফলে যে সব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের অনেকের সাথে সাক্ষাৎ করেন। জনাব ইউসুফ পাকিস্তানের সংহতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জনা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
| দেশবাসীর প্রতি দু’জন মুসলিম লীগ নেতা মে মাসের শেষ সপ্তাহে আতবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠাকল্পে সেনাবাহিনীকে সমর্থন দানের আহবান জানান। পত্রকায় বলা হলাে :
‘ঢাকা, ৩১ শে মে-২ জন বিশিষ্ট মােছলেম লীগ নেতা জনাব এ, এইচ মােহাম্মদ হোসেন এবং জনাব নূরুল ইসলাম শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা করা হয়া মানার জন্য সশস্ত্র ৰাহিনীর প্রতি সক্রিয় সমর্থন পান এবং ধ্বংসাত্বক কাজে লিপ্ত ব্যক্তি ও ভারতীয় দালালদের উতকরে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করার জন্য সাধারণের প্রতি উদাত্ত আহবান
এক যুক্ত বিবৃতিতে মােছলেম লীগ নেতম্ব বলেন যে, আমাদের বীর সশস্ত্র বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনসাধারণের সহযােগিতা ক্রমে ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী এবং হিংসাত্মক ব্যক্তিদের উৎখাত করিয়াছে। জাতির উক্ত দুশমনগণ দেশের যোগাযােগ।
________________________________________
ব্যবস্থা বানচালের চেষ্টা করিতেছিল এবং লুট, অগ্নি সংযােগ মারধোর এবং হত্যাক্কান্ডের মাধ্যমে নির্বাহি গামলামাদের উপর অকথ্য বিষাক্তন ছালাই ছিল এশিয়া তাহার উল্লেখ করেন। আক্কাহালা তাহার অসীম অনুগ্রহে পাকিস্তান রক্ষা করিয়াছেন এবং ভারতের জঘন্য খেলা নস্যাৎ করিয়া দিয়াছে। ইহ! অত্যান্ত উৎসাহজনক যে, এছলাম প্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ সকল মােছলেম দেশই অমাননা চরম সঙ্কট কালে পাকিস্তানের প্রতি নৈতিক ঐ বৈষয়িক মাহাম| Fান করিয়াছে, অন্যদিকে মহান আদামা সাম্রাজ্যবাদী ভারতের যে কেন। হামলার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতি অকুখ সমর্থন প্রদানের কথা ঘোষণা করিয়াছে বলিয়া মোছলেম লীগ নেতৃদ্বয় উল্লেখ করেন। তাহারা আরও বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানীগণ মুসলমানদেৰা চির দুশমন ভাৱতীয়দের চক্রান্ত ধরিয়া ফেলিয়াছে এবং দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিণবাইয়া আনার ব্যাপারে সেনাবাহিনীর প্রতি সক্রিয় সমর্থন দান করিতেছে। ‘তাহাৱা। পরিশেষে জাতীয় অনুপ্রবেশকারী ও তাহালের অনুচরদের উৎখাত এবং দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আনার জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি পূর্ণ সহযােগিতা প্রদানের জন্য। জনসাধারণের প্রতি ভ্রাহ্বান জানান।
রাজশাহী হইতে পরিবেশিত অপর এক খবরে প্রকাশ, পূর্ব পাকিস্তান মােছলেম লীগে (নেশন) সাধারণ সম্পাদক বি এ, এন. এম ইউছুফ স৬ি নওয়াবগঞ্জ ঔ রাজশাহী সফর করিয়া সময়ে নিম্নি স্তৰােৰা জনসাধারণ এবং শান্তি কমিটির সদস্যদের সহিথ সাক্ষাৎ করেন। উল্পে সর্বস্তরে ও আশাবক অবস্থা ফিরিয়া আসায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
| তনিমাৰ ইউছুফ প্রসঙ্গত নলেন যে, আমাদের দেশে আজ্ঞাস্তরে অপ্রবেশকারী প্রেরণ করিয়া তারও আও জাতিক রীতিন ৩ জন কণয়ছে এবং ভার টহানা দুখপত্র পরিণতির জন্য অবশ্যই মায়া থাকিবে। পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ বেআইনী গোষিত আওয়ামী লীগের ফার্সীখালী মনােভাল এরিয়া ফেলিয়াছে। উক্ত দলের নেতারা জনগণকে ফেলিয়া রাখিয়া চোরের মত দেশ ত্যাগ করিয়াছে। তিনি আরও বলেন যে, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের অশুভ মনােভাব এবং পূর্ব পাকিস্তানকে বিক্রি করার কুমতলবে মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর সহিত উহান্য সম্পর্কের কথা সাধারণ মানে সম্পূর্ণরূপে অবগত হইয়াছে। রাজশাহীর সাধারণ বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে সচেতন হইয়া উঠিয়াছে এবং ভারতীয় হামলার হাত হইতে পাকিস্তানকে ৰক্ষার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সর্শন আমাদের বীর সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থার প্রতি জনগণ অকুণ্ঠ সমর্থন দান করিয়াছেন বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন।’ ৭।
কনমেশন মুসলিম লীগ নেতা এ. এন. এম ই এল সিরাপ, পানা জেলার বেলকুচি থানা প্রভৃতি এলাকা সফর করে সিরাজগঞ্জে আসাদ উল্লাহ সিরাজীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় মুসলিমলীগ নেতা ইউসুফ বললেন, বিলুপ্ত আওয়ামী লীগের মাংসাত্মক কর্মকান্ড পাকিস্ত্রানকে দুর্বল করে পাচ্ছে। তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জ অনেক চাংসাত্মক ঘটনার সাক্ষী। নিন্মাচনের পূর্বে এবং নির্বাচনের পরের ঘটনার মধ্য দিয়ে জনগণ আওয়ামী লীগের অামি বুঝতে পেরেছে। তিনি জনগকে ছিলামের পতাকাতলে একত্রিত হওয়ার আহবান জানান ।৮৩।
এলিক ও পানমিস্টারী হল গঠনের জনা বেগম অলির সােলায়মাকে বেশ তৎপর লক্ষ্য করা গেল। তিনি পাকিস্তান থেকে ঢাকা এসে নিষিদ্ধ ঘােষিত আওয়ামী লীগ
________________________________________
নেতাদের সঙ্গে যােগাযােগ স্থাপনে প্রয়াসী হন। এ সম্পর্কে দৈনিক আজাদ’ পত্রিকার
অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগ টিকেটে নির্বাচিত জনাৰ জহিরুদ্দিনের নেতৃত্বে স্বতন্ত্র পার্লামেন্টারী গ্রুপ গঠনের চেষ্টা অনেক দূর আসৱ হইয়াছে বলিয়া জানা গিয়াছে। জনাব শহীদ সােহরাওয়ার্দীর কলা বেগম আখতার সােলায়মান যে প্রচেষ্টা চালাইয়া যাইতেছেন, তাহারই পরিণতিতে অনুরূপ একটি ব্যবস্থা গৃহীহ হইতে পারে বলিয়া পৰ্যবেক্ষকগণ মনে
| অনা আওয়ামী লীগের এম, পি, ঔ এম, এন এর সহিত যােগাযোগ হপনের জন্য বেগম আখতার সােলায়মান যে তৎপরতা শুরু করিয়াছিলেন, তাহা অনেক দূর সাফল্যমণ্ডিত হইয়াছে বলিয়া জানা যায়। বহু সংখ্যক এম, পি, এ ও এম, এন, এ পান্তিানের অস্তিত্ব ও অখণ্ডতার অনুকূলে কাজ করিবেন বলিয়া তাহার নিকট প্রতিশ্রুতি দিয়াছেন বলিয়াও প্রকাশ। তিনি এই পর্যন্ত ৪০ জনের অধিক এম, এন, এ এবং ২০ জনের অধিক সংখ্যক এম, পি এর সহিত যোগাযোগ স্থাপন করিয়াছেন। প্রকাশ, তাহাৱা অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের বিচ্ছিন্নতাবাদী নীতির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ। করিয়াছেন এবং ইহার সহিত তাহাৱা কোনরূপ সংশ্লিষ্ট ছিল না বলিয়া জানাইয়াছেন।
বেগম আখতার সােলায়মান পুনর্গঠনেৱ কাজে অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের এন, পি, এ, এম, এন এদের উদ্যোগী ও উৎসাহী করিয়া তোলার আশা পােষণ কৱেন এবং আখতার সােলায়মানের তৎপরতাৱ আসল উদ্দেশ্য তাহাই বলিয়া তিনি। সংবাদদাতাকে জানাইয়াছেন। ঢাকায় তিনি সপ্তাহেরও অধিক কাল ধরিয়া তাহার ই পুনর্বাসন তৎপরতাই চালাইয়া যাইতেছেন। অনুমান করা হইতেছে যে, তিনি আরও কিছুকাল এই তৎপরতা চালাইয়া যাইবেন। তাহার সহিত অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের এম, এন, এ জনাব জহির উনি এবং, শেরে বাংলা এ, কে, কলুল হকের পুত্র জনা ফয়জুল হক নিজাবে কাজ করিপ্রেজেন। জনাব জহির উদ্দিন ও ফয়জুল হকের সহায়তায় বেগম অন্ধকার সােলায়মান একটি নতুন পার্লামেন্টাৰী গ্রুপের প্রতিষ্ঠা করতে পারেন বলিয়া পর্যবেক্ষক মহল দৃঢ় ধারণা পোষণ করিতেছেন।
| বেগম আখতার সােলায়মানের মিশনের পক্ষ ইহা হইলে উহার ফলাফল কতপূর্ণ কি হইৰে, পর্যবেক্ষক মহল সে সম্পর্কে নিশ্চিত নহেন। এখন পর্যন্ত বেগম আখতার সােলায়মানের মিশনের যে সাফলা লক্ষ্য করা যাইতে, তাহাতে অনেকে মনে করেন যে, তিনি লক্ষাভিমুখে অগ্রসন্ন হইতেছেন, তাহা বাস্তবায়িত করা কঠিন নাও হইতে পারে । তবে ইহা বর্তমান অবস্থায় যথার্থ জওয়াব কিনা, সে সম্পর্কে পর্যবেক্ষক মহলকে নানা প্রশ্ন তুলিতে দেখা যাইতেছে ।
বেগম আখতার সামান-এর একটি টেলিশিন সাক্ষাতকার ও প্রচার করা হলাে। টেলিভিশন সক্ষাৎকারে বেগম আখতার সােলায়মান জানালেন, “অধিকাংশ নির্বাচিত প্রতিনিধি বিচ্ছিন্নতাবাশী যড়যন্ত্র সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। দৈনিক আজাল’ এ সম্পর্কে
| কাকা, ৫ই জুন। মরহুম হােসেন শহীদ সােহরাওয়ালার নয়া বেগম আখতার ধমান আজ সন্ধ্যায় এখানে বলেন যে, তাহার এই মনের বিশ্বাস আছে যে,
________________________________________
JITAম – 7 এম. বর্তমানে যে বিচ্ছিন্নতাবালী ষড়যন্ত্র ফাঁস হইয়া পড়িয়াছে সেই সম্পর্কে অধুনালুপ্ত আওয়ামী পীগের অধিকাংশ নির্বাচিত প্রতিনিপিই কোন কিছু জানিতেন না। এখানে এক টেলিভিশন সাক্ষাঙ্কারে বেগম সুলায়মান বলেন, “আমরা সকলেই নির্বাচনের সময় পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ অধিকতর শক্তিশালী ও সমৃদ্ধিশালী পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য তাদেরকে ম্যান্ডেট প্রদান করিয়াছিল। | জনসাধারণকে বারবার এই কথা বলা হইয়াছিল যে, ঈম পঞ্চার সহ অ| হইতেছে, বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থাসহ প্রদেশগুলির জন্য সর্বাধিক আয়শাসন। আমার সy বিশ্বাস যে, অধিকাংশ এম. এ+, এ এবং এম. পি, # এক ও অগঞ্জ প্রাকিস্তানে বিশ্বাসী ছিল এবং এ অঝকে তাহাৱা তাহাতে বিশ্বাস করে। মাহৱিী তাহাদের নির্বাচন করিয়াছেন তাহাও এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে কোন কিছু জানি না। প্রেসিষ্ট্রেট শীধুই ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে তাহার পরিকঞ্চনা পেশ করবেন বলিয়া সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি যে ঘােষণা করেন এই সম্পর্কে বেগম আখতার সােলায়মানকে জিজ্ঞাসা করা হইলে তিনি বলেন যে, প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতি খুবই পরিষ্কার এবং তিনি ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য খুবই উদগ্রীব।” বেগম আখতার সােলায়মান বলেন যে, প্রকৃত পাকিস্তানীদের স্বদেশে ফিরিয়া আসার জন্য প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি যে আহবান জানাইয়াছেন তাহা খুবই মহানুভার পরিচয় বহন করে।
ভারত সরকার কর্তৃক উদ্ধৃত তথাকথিত শরণার্থীদের সংখ্যা সম্পর্কে মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি জানান, কতভাবে সে ভারতীয় প্রচারণা চালান হইয়াছে তাহা পরিষ্কার হাশ হইয়া গিয়াছে। শরণার্থী সংখ্যা অত্যন্ত বাড়াইয়া এবং ২াপাইয়া বলা হইয়াছে। ইহ্য অত্যন্ত স্পষ্ট যে, পূর্ব-পাকিস্তানী নিাথদের নামে ভারত নিজের স্বার্থে যত বেশী সময়ৰ, তত বেশী আন্তর্জাতিক সাহায্য কুড়াইতে চেষ্টা করিতেছে। | আন্তর্জাতিক রাজনীতি ক্ষেত্রে পাকিস্তানের দুর্নাম রটনা করাই ভারতের আরেকটি অভিসন্ধি বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন। আজ বেগম আখতার সোলায়মান ঢাকা টেলিভিশন কে হইতে ভাষণ দান করিতেছিলেন। নিম্নে তাহার টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বিৰৱণ। দেওয়া হইল।
খঃ বেগম সাহেবা আপনি মাসখানের বেশী ঢাকা আছেন। পূর্ব পাকিস্তানে আপনার এই সফরের উদ্দেশ্য কি, বলিবেন কি?
উ আপনারা জানেন, আমি পাকিস্তানী । দেশের এই অংশটা আমার। আমার বাবার নখুৰণিলৈ সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করার জন্য আসিয়াছি এবং প্রাঞ্চাবিক অবস্থা ফিরাইয়া। আনিতে এবং আমাণঃ এখানকার ভাইবোেনর মনে আস্থার জ্ঞান ফিরাইয়া আনিতে আমি কিছু করিতে পারি কিলা,- এজন্যই এখানে আসিয়াছি।
প্রঃ আপনি কার, কার সাথে দেখা করিয়াছে? | এ আমি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর লেঃ জেঃ টিকা খানের সহিত সাক্ষাৎ করিয়াছি। কিছু সংখ্যক বন্ধু-বান্ধব এবং রাজতিকলের সাথে সাক্ষাৎ করি। এদের মধ্যে জনাব। #রুল আমীন রহিয়াছেন। এছাড়া আমার ঘনিষ্ঠ সহকমীও মেহেরবাণী করিয়া আমাকে দেখিতে আসেন।
আমার এই সফরের একটা উল্লেখযোগ্য ফলাফল এই যে, আমি বেশ কিছু সংখ্যক এম এন এ/এম পিএর সাথে সাক্ষাৎ করিয়া খুশী হইয়াছি। তাহারা আমার বাবার বন্ধু এবং, অনুশ্রী তাহাদের সাথে আমার মতামত বিনিময় হইয়াছে ।।
________________________________________
প্রঃ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সহিত আলােচনার দ্বারা আপনার মনে কি ধারণার সৃষ্টি
উঃ আমি এ ব্যাপারে নিশ্চিত হইয়াছি যে, যে বিচ্ছিন্নতাবাদী পরিকল্পনা এতদিনে প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছে তসম্পর্কে অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের একটা বিনাট সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ কিছুই জানি না। নির্বাচন কালে আমরা ঠিকই জানিয়াছিলাম যে,পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ পাকিস্তানকে আরও শক্তিশালী সমৃদ্ধশালী করার জন্যই তাহাদের ম্যান্ডেট প্রদান করিয়াছে।।
একটি বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থাসহ প্রদেশ সমূহের জন্য সর্বাধিক স্বায়ত্তশাসনই ৬-দফার উদ্দেশ্য বলিয়া জনসাধারণকে পুনঃ পুনঃ বলা হইতেছিল । অামার এই প্রত্যয় হইয়াহ যে, এম, এন, এ এবং এমপিএ গণের অধিকাংশ এক অখণ্ড পাকিস্তানে বিশ্বাসী ছিলেন বেয়, এখনও তাহারা তাহাতে বিশ্বাস করেন।
যেমৰ জনসাধারণ তাহাদেল নির্মান করিয়াছিলেন তাহারাও এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে কোন কিছুই জানি নে না। তারা কি ২৪ বছর পূর্বে পাকিস্থান হাসিলের জন্য সব রকমের ত্যাগ স্বীকার করে নাই? | প্রঃ প্রেসিডেন্ট এই কমতা হস্তান্তরেণ ব্যাপারে তােদর পরিকল্পনা পেশ করবেন বলিয়া সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে যে ঘােষণা করেন, সেই সম্পর্কে আপনার মতামত কি? | উঃ প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতি খুবই পরিক্ষায় এবং তিনি ক্ষমতা হস্তান্তরে জমা খুবই উপগ্ৰীৰ । আমাকে অবশ্যই বলিতে হয় যে, প্রকৃত পাকিস্তানীদের স্বদেশে ফিরিয়া আমানত জন্য প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি যে আহবান জানাইয়াছে, তাহা তাহার মহানুভবতারই পরিচয় বহন করে।”৮২,
জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে অবরুদ্ধ বাংলাদেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে জামাত প্রধান মওদুলী একটি স্মারকলিপি বিন্নি মুসলিম দেশের সরকার, জননেতা, সংবাদপত্র প্রভূতির মধ্যে বিলি করেন। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
| লাহাের, ৬ই জুন জামাতে এলাম প্রধান মওলানা সৈয়দ আবুল আলা মওদুদী পূর্ব পাকিস্তানের প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে অন্যান্য মেশের মুছলমানদের অবহিত করার পেঁশ্যে বিভিন্ন মােছলেম দেশের সরকার ও জননেত্রী, মোছলেম জাহানের সংবাদপত্রে উহাদের রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় সংস্থাগুলির নিকট একটি দীর্ঘ স্মারকলিপি প্রেরণ
জামাতের এক প্রেস রিলিজে বলা হয় যে, ভারতীয় দূতাবাস সমূহ এবং বাঙ্গলা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দ্বারা মােছলেম জাহানে প্রচাৰিত ভুল বান্না এবং সন্দেই সম্পূর্ণভাবে নিরসনের জন্যই এই স্মারকলিপি প্রেরণ করা হয়। প্রেস রিলিকে বলা হয় যে, পূর্ব পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবানী এবং ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণের সময় হইতেই মানা মওদী নিলে হই এই মম অপরাপর পত্র এবং এর পাইতেছেন যে, বিদেশে বসবাসকারী প্রাণী বিবিন্নতাবাদীরা প্রচার করিয়া বেড়াইতেছে যে, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী নিরীহ বাঙ্গালী মুছলমানদের রক্তপাত করিতেছে।”
________________________________________
প্রদেশের মুছলমানরা বিচ্ছিন্নভা চাহে নাই প্রেস রিলিজে বলা হয় যে, ইহা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হইয়াছে যে, পূর্ব পাকিস্তানের মুছলমান অধিবাসীরা কোন সময়ই বিনিতা চাহে নাই। এই সব মুসলমানরা বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্য শেখ মুজিবর রহমানকে ভােট দেয় নাই বা ১লা মার্চ হইতে বিদ্রোহেও যোগ দেয় নাই। বস্তুতঃ এই শিকিঃ[তাবাদী আন্দোলন শুরু করে এক এক চরমপন্থী লােক। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধানতঃ হিন্দু অধ্যাপকদের হাতে শিক্ষাপ্রাপ্ত এহলামিক শিক্ষা বিবর্জিত সমাজের এইসব ব্যক্তিরা হিন্দু লেখকদের দ্বারা রচিত সাহিত্য হইতে অনুপ্রেরণা লাভ করে। তাহারা এছলাম হইতে দূরে সরিয়া যাইয়া নাস্তিকতার দিকে ঝুকি পড়ে এবং তাহাদের মধ্যে ব্যাপক নৈতিক অধঃপত্রিন ঘটে। ৮০ লক্ষ হইতে ১ কোটি হিন্দু এই শ্রেণীর মুছলমান অধিবাসীদের সমর্থন দেয়। বৈদেশিক মড়যন্ত্র আইয়ুব শাসনামলে শেষ দিকে ইহা পরিষ্কার ভাবে ধরা পড়ে যে, ভারত, আমেরিকা এবং বৃটেন পাকিস্তানকে খণ্ড বিখণ্ড করার পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য বদ্ধপরিকর। ভারতের হিন্দুৱা এছলাম এবং মুছলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ এবং শত্রুতা পােষণের ব্যাপারে এহনীদের সমতুল্য । পাকিস্তানের অস্তিত্ব তাহাদের নিকট চক্ষুশুল বিশেষ। আমেরিকার ব্যাপাত্রে ইহা। সকলেরই জানা আছে যে, সেখানে এহদীপের চারশ প্রভাব হিয়াছে।
পাকিস্তান এহিয়ায়েলের বিরুদ্ধে সয়িতাকে আরবদের সমর্থন করায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাহাদের আক্রোশ রহিয়াছে। অন্য কোন অনানুন মােছলেম সেশ এই পর্যন্ত আরবদের স্বার্থ এত দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন নাই । কাজেই বিশ্বের দীরা পাকিস্তানের শক্তিকে খর্ব করার জন্য তাহাদের সমুদয় সম্পদ নিয়ােজিত করিয়াছে। আইয়ুব শাসনামলের শেষে নয়া যুগের সৃষ্টি হইতে পাকিস্তানকে খণ্ডিত করার ব্যাপারে বামপন্থীলে ষড়যন্ত্র ফাস হইয়া পড়ে।
সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচন কালে হিন্দু এবং এহুলাসহ বৈদেশিক শক্তিগুলাে সুজ্ঞিানে অঞ্চল|ত্রিক পার্টিগুলিকে ধ্যাপক আর্থিক সাহায্য দেয়। তথ্যে পশ্চিম পাকিস্তানে একটি পার্টির কোনই প্রভাব ছিল না। শক্রদের নিকট ইহা সুস্পষ্ট ছিল যে, আঞ্চলিক পাটিগুলি জয়ী হইলে পাকিঝন আপনা হইতেই খণ্ড বিখণ্ড হইয়া যাইবে।
উপরে উল্লেখ করা হইয়াছে যে, পূর্ব পাকিস্তানে বসবাসকারী ৮০লক্ষ হইতে ১ কোটি সু শেখ মুজিবর রহমানকে পূর্ণ সমর্থন নি কয়ে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, কোন নির্বাচনী এলাকাকে কোন হিন্দু প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বতি করিতে চাহিলেঞ্জ হিন্দু তাহাদের সহধর্মীকে না দিয়া শেখ মুজিবর রহমানের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দান করিয়াছে।
বৈদেশিক আর্থিক সাহায্য নির্বাচনী অভিযানের সময় প্রথম দিন হইতে শেষদিন পর্যন্ত শেখ মুবের পাট ব্যপক ভ্রানি ও লবরে
________________________________________
|
“
“”
“”
“
তখন ব্যাপক আশংজ্ঞা | যে, সেনাবাহিনী এসির না হইলে চরম প ছৱিা সমুখে অগ্রসর হইয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা মােষণা করিত। ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা গােলা করা। হইলে তার সঙ্গে সঙ্গে উহাকে স্বীকৃতি দান করিত। পরবর্তী কোন এক পর্যায়ে শেখ। মুজিবর রহমান ভারতের নিকট সামরিক সাহায্য চাহিতে এবং ভারত পূৰে কাষ্টার যেমন করিয়াছে তেমনই উহার সেনাবাহিনী লইয়া পূর্ব পাকিস্তানে প্রবেশ করিত। এই পরিস্থিতিকে বলিতে পারে যে, সশস্ত্র বাহিনীর ব্যবস্থা গ্রহণ যুক্তিসঙ্গত হয় নাই? অপর কোন বিদেশী শক্তির সাহায্যে কোন দেশের এক অংশকে যদি অপর অংশ হইতে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হয় তাহা হইলে পৃথিবীতে এমন কোন দেশ আছে কি যাহা নিল এশিয়া থাকিবে।
নেজামে ইসলাম নেতা এক বিবৃতিতে জানালেন, ‘ভারতের বর্তমান নিরপ আচরণ। বিভ্রান্ত ব্যক্তিদের চক্ষু খুলিয়া দিতাছে।’ ৰ নিৰ্বাচিত এমপি মওলানা আহমদ সগীর সেনাবাহিনীকেও অভিনন্দিত করেন। পত্রিকা জানালাে; _ চট্টগ্রাম, ৯ই জুন। নেফামে এছলাম পার্টির নির্বাচিত এমপিএ মওলানা আহমল সার শাহজালা আজ বলেন যে, তার, ওর বাংলাদেশ মিথ্যা প্রচারের মােজে পড়িয়া পশ্চিমবঙ্গে গমনাৱা মুছলমানদের প্রতি ভারতের বর্তমান বিপ আচরণ, খাদ্ধারা ভারতীয় চএান্তের স্বারা বিভ্রান্ত হইয়াছে; তাহাদের চক্ষু জুলিয়া দিয়াছে । চট্টগ্রামের বাঁশখালী নির্বাচনী কেন্দ্র হইতে নির্বাচি০ এমপি মওলানা আহমদ বলেন, পর্তমানে প্রত্যেক পাকিস্তানা তাহলে প্রিয় দেশের শ্রতি ইঞ্চি ভূমি রক্ষা করতে এবং ভারতের যে কোন কারসারি নর্থ করিয়া দিতে দৃঢ়চিত্ত ও সৰু ৰা হয়ছে।
নেমে এছলাম পার্টির নেতা বলেন যে, ছয় দফা কর্মসূচিতে যাহা কিছু স্থা, ভারতীচর ৪ অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা ঃ গোলফো ও অসহযােগ আন্দোলনৰ ম||্যমে পূর্ব পাকিস্তানে তাহার চাইতে অনেক বেশি অম্বানি ঘটিয়াছে।
| মওলানা ছাহণ যথাসময়ে শত্রুর সুর প্রান্ত নস্যাৎকারী আল্লার আশীর্বাদপুর আমাদের সেনাবাহিনীকে অভিনন্দিত করেন।
আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচিত এমপিএ) অধ্যাপক শামসুল হক দলের সঙ্গে সম্পর্কলে করে এক বিবৃতি দেন। পত্রিকায় বলা হলাে :
চট্টগ্রাম, ৮ই জুন। বেইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের এমপি অধ্যাপক শামসুল হক গতকাল বলেন যে, নির্বাচনের পর যে সকল মাটনা ঘটিয়াছে তাহাতে আমারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইতে বাধ্য হইয়াছি যে, শেখ মুজিবর রহমানসহ বেজাইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের উচ্চপদস্থ নেতারা পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার স্বপ্নে বিভোর হইয়া মানুষের প্রতি বিশ্বাসমতিকতা আর সেই জন্যই তাহারা দেশকে বর্তমান অবস্থায় তলাইয়া শেয়ার যন্ত্র করে।
বেআইন মেখিত আওয়ামী লীগের সহিত সকল সম্পর্ক ছিন্ন কথার কথা ঘােষণা রুরি অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, আমি নিলে তাহলে এই খে||| কখনই অাল্লাহণ করিতাম না। তিনি ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদী ও শেখ মুজিবর রহমানসহ হালের এজেন্টদের পাকিস্তানের প্রকৃত শত্রু বলিয়া আখ্যাত্ৰিত করিয়া তাহাদের ভূমিকার নিন্দা রে ‘ত্রী।
কিশােরগঞ্জে শান্তি কমিটি আয়ােজিত জনসভায় পিডিপি-র সহ সভাপতি মওলানা সৈয়দ মুসলেহ উদ্দিন বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের এই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদীরাই দায়ী। জাষ্ঠীয় সংহতি রক্ষায় জুনা প্রেসিডেন্ট যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ায় তিনি তার প্রশংসা কেন। না তিনি কঠোরভাবে ভারতীয় আসনের নিন্দা করেন। সভায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদকারী নেতা এম, ৰি, জামান, নুরুল্লাহ খান, মৌলভী বদরুজ্জামান, এডভোকেট শফিকুল হোসাইন খান এবং মৌলভী মােহাম্মদ আৰু ইলিয়াস বক্তৃতা করেন। ।
হােসেন শহীদ সােহরাওয়ালীর কন্যা নেম আখতার সােলায়মান পাকিস্তানি সামরিক জান্তার পক্ষে বেশ তৎপর লক্ষ্য করা গেল। নানাভাবেই তিনি সামরিক জান্তার পদক্ষেপ ও তৎপরতাকে সমর্থন ও সহযােগিতা দানের জন্য বার বার আহবান জানান। ১২ জুন ঢাকা বেতারে দেয়া এক ভাষণে তিনি এমএনএ ও এমপিএ-সে “গণমাধ্যমে আস্থা মিরুবাইয়া আমার কাজে আয়োপি করার আহ্বান জানালেন। সংবাদে জানা যায় :
*এপিপি ও পিপিআই পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, গতরাতে মরহুম হােসেন শহীদ সােহরাঞ্জম্বালরি না বেগম আখতার সােলায়মান সকল এমএনএ ও এমপিএ-কে নিজ নিজ এলাকায় প্রত্যাবর্তন এবং ভারতের দূরভিসন্ধি বলতের উদ্দেশে প্রশাসন কর্তৃপক্ষের সহিত সহযােগিতার জন্য আকুল আবেদন জানান।
| রেডিও পাকিস্তান ঢাকা হইতে প্রদত্ত এক ভাষণে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের সকল নাগরিককে মি মি হে ফিরিয়া আসার অন্য গমন লেঃ জেনারেল টিক্কা খানের ক্ষমা মজুরীর কথা উঃখ করেন। তাহাদের পুনর্বাসনের সম্ভাব্য সকল প্রকার সাহায্য প্রদান এৰিং নিরাপদে নিজ নিজ গৃহে, লৌছাইয়া দেওয়া হইবে বলিয়া গণ্ডর যে আশ্বাস দিয়াছেন বেগম সােলায়মান তাহার প্রতি স্বাগত জানান এবং বলেন, শুধুমাত্র সীমান্ত অতিক্রমকালের পক্ষেই নয়, দেশে আগোপনকারীদের পক্ষে ও ইহা সমাজয়। তিনি বলেন, জনগণ তাদের সহিত সাক্ষাৎ করিতে আগ্রহী। বেগম সােলায়মান নিজেও তাহাদের সহিত সাক্ষাতের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন।
| তিনি বলেন, ইসলাম বিরােধী শক্তিসমূহ একটি স্বাধীন ও প্রগতিশীল মুসলিম জাতি হিসাবে আমাদের মাথালি স্বীকার করে নাই। ১৯৯৫ সালে আমাদিগকে আমাসের বিন্নাই শর সঙ্গে যুদ্ধ করিতে হয়। আমরা তাহাদের বুঝাইয়া দিয়াছি যে, জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার সময় আমিলে পাকিস্তানীগণ সর্বস্ব নিয়া শেষ যুদ্ধ করিবে। আমাদের অসীম সাহসী স্বাধীনতা রক্ষাকারীদের হাতে চরম নাজেহাল হইয়া শত্রুকে পশ্চাদপসরণ করিতে হয়। কিন্তু তবুও শত্রু আমাদের নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা ত্যাগ করে নাই। এখন আমরা সেই হীন সঞ্চশল্পের পূর্ণ বিকাশ দেখিতেছি। পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব নষ্ট এবং পূর্ব পাকিস্তানকে গ্রাস করার জন্য ইহা একটি গভীর ষড়যন্ত্র। তাহৰো পরিকল্পনা প্রায় সফল হইয়া আসিয়াছিল, কিন্তু খেলাকে ধন্যবাণ, তাহাদের যড়যন্ত্র মাস হইয়া গিয়াছে। কারা বাধের কথা উল্লেখ করিয়া বেগম আখতার গােলামনি রেডিও পাকিস্তান হইতে প্রচারিত এক ভাষণে বলেন যে, এই বাঁধ নির্মিত হইলে পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতি পঙ্গু হইয়া যাইবে। ইহার ফলে প্রদেশের ৭টি জেলায় কমপক্ষে ৩কোটি লােক সুস্থ হইয়া পড়িবে ললিয়! তিনি উল্লেখ করেন।
________________________________________
বেগম সােলায়মান বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক বিতাড়িত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত দুষ্কৃতিকারী ও ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীরা পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে। তাহারা যােগাযােগ ব্যবস্থা বাঙ্গাল এবং ব্যাংক ট্রেসী লুট করে।
পাকিস্তানের সাবেক উজির চৌধুরী মােহাম্মদ আলী ১৩ জুন এক বিবৃতিতে বললেন, ‘জাতীয় ঐক্য ও সম্প্রীতির পরিপন্থী দলীয় রাজনীতি এবং শাসনতান্ত্রিক প্রশ্নে বাদানুবাদের কারণে এ দুটোই দু’বসরের জন্য স্থগিত রাখা উচিত। তিনি বলেন, কায়েদে আজমের তিসমূহ সর্ণরূপে গ্রহণের মাধ্যমেই আজ নতুনভাবে যা করা অব এবং উহা সাহস ও দৃঢ়তার সহিত প্রয়ােগের প্রতি তিনি গুরুত্ব আরােপ করেন।”
তিনি যুবকদের মধ্যে জাতীয় আদর্শ, জাতীয় পরিচিতি ও জাতীয় ঐক্য সম্পর্কে আত্মচেতনাবােধ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে দেশের শিক্ষানীতি পুনর্গঠনের আহবান জানান। এই উদ্দেশ্যে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের আমূল সংস্কারের সুপারিশ করেন। এই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এন অনৈক্য, মৃণা এবং প্রায়শঃই সাঁই৷ আনুগত্য ইমিতার উৎপত্তিস্থল বলে Tয় করেন ।
ঝালকাঠি থানা আওয়ামী লীগ সেক্রেটারী বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করে এক বিবৃতি প্রচার করেন। মধ্য জুনে প্রকাশিত এ খবরে বলা হয় :
“ঢাকা, ১৫ই জুন। অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের ঝালকাঠি থানা শাখার সাবেক সেক্রেটারী জনাৰ ফজলুল হক এক বিবৃতিতে বলেন যে, তিনি যে মুকুতে বেআইনী। ঘােষিত আওয়ামী লীগের বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা সম্পর্কে অবহিত হইয়াছেন সেই মুহূর্তেই ইহার সহিত তাহার সম্পর্ক সম্পূর্ণভাবে ছিন্ন করিয়া ফেলিয়াছেন।
তিনি বলেন যে, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগ যে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদীদের যােগসাজসে পাকিস্তানকে বিছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হইয়াছিল সেই সম্পর্কে তিনি কিছুই জানিতেন না। তিনি বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের দৃণ্য চক্রান্ত এবং ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী ও তাহাদের সহযোগীরা আমাদের জনসাধারণের জীবন এবং শক্তির যে ক্ষতি করিয়াছে আমি অত্যন্ত কঠোরভাবে তাহার নিন্দা করিতেছি। | জুন মাসেই পান এ, সবুৰ এক বিবৃতিতে সামরিক সাহায্য লাভের জন্য হিন্দুস্থান উদ্বাস্তু প্রশ্ন লইয়া দর কষাকষি করিতেছে বলে মন্তব্য করেন। পরিণায় বলা হলাে : | ‘সাবেক জাতীয় পরিথদের নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সংযােগ উজির খান এ সবুর পাকিস্তানী নাগরিকদের তাহাদের বাড়িঘরে প্রত্যাবর্তনে বাধা সৃষ্টি করার জন্য ভারতের সমালােচনা করিয়াছেন। খান এ, সবুর এক বিবৃতিতে বলেন যে, ভারত উহার অর্থনৈতিক সঙ্কট পূরণের উদ্দেশে। বৈদেশিক সাহায্য লাভের জন্য পাকিস্তানী উন্মস্থানের দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করিতেছে।
| তিনি বলেন যে, ভারত আমাদের জনগণের একটি সংখ্যাকে সীমান্ত অতিক্রম করিতে প্রলুব্ধ করে। যাহা স্বর্গসুখ ভোগের আশায় সীমান্ত অতিক্রম করিয়া যান তাহারা অচিরেই উপলব্ধি করেন যে, তাহাৱা নৱকে নিক্ষিপ্ত হইয়াছেন। ভারতে যেসব মুছলমান বন্দী রহিয়াছেন দেশবাসী তাহাদের দুঃখ-দুর্দশা মর্মস্পর্শী কাহিনী নিশ্চয় জানিতে
________________________________________
পররাষ্ট্র উক্তির শরণ সিংসহ বিভিন্ন ভারতীয় নেতার বিদেশ সফরের দূরভিসন্ধির সমালােচনা করিয়া তিনি বলেন যে, ভারতীয় সামরিক শক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে অর্থনৈতিক ও সামরিক সাহায্য লাভের জন্য এই সকল নেতাকে বিদেশ প্রেরণ করা হইয়াছে। তাহাদের মিশনের উদ্দেশ্য হইতেছে পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি না এবং পাকিস্তানকে তার জন্য। শর্তে রাজী করিতে বাধ্য করা। কিন্তু তাহালে এই মিশন এখনও পর্যন্ত সার্থক হয় নাই। কারণ তাহারা সংখ্যালঘু মুছলমান ও প্রতিবেশী দেশগুলির সহিত কি করম ব্যবহার করে বিশ্ব সাহা ভাল ভাবেই সুবগত আছে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতর যুদ্ধের হুমকি সম্পর্কে আলােচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, ১৯৬৫ সালে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা হইতে ভরৱা উজিরে আজম মিসেস ইন্দিরা গান্ধী বুঝিতে পারেন যে, তিনি যুদ্ধ শুরু করিলে যুদ্ধে টিকিয়া থাকিতে পারিবেন না। এই যুদ্ধ দুই দেশের মধ্যে সীমিত থাকিবে না । উহা নিশ্বযুদ্ধের আকার ধারণ করার আশঙ্কা রহিয়াছে ?
| অধ্যাপক গােলাম আজম লাহাের বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের জানালেন, ‘আমতা হস্তান্তরের জন্য উপযুক্ত সময় আসে নাই।’ সংবা বলা হলো :
লাহাের, ১৮ই জুন, পূর্ব পাকিস্তান জামাতে এলামীর আমীর অধ্যাপক গােলাম আম ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবীর প্রতিকূল মনােভাব প্রকাশ করেন। এ উপযুক্ত সময় আসে নাই বলিয়া তিনি জানান। আজ ঢাকা হইতে লাহাের বিমান বন্দরে পৌছানাের পর তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপ করিতেছিলেন।
তিনি না, প্রথম ক্ষমতা গ্রহণের জন্য একটি জাতীয় পরিমল থাকিতে হইবে। আমাকে জানত, জাতীয় পরিমাণ আছে কি? দ্বিতীয়তঃ যাহানের হাতে ক্ষমতা দেওয়া হইবে তাহারা বেআইনী সােমিত ব্যক্তি। জনান গোলাম আজম আরেকটি প্রশ্ন পাশ কাটাইয়া যান। [৩নি জানান, এ ব্যাপারে সিদ্ধন্টকেই প্রথম মতামত প্রকাশ করিতে দেন।
পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থিতি । পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন যে, দুষ্কৃতিকারীরা এখনও কংসাত্মক কমে লিপ্ত আছে। তাহারা ত্রাস সৃষ্টি করিতে চায় এবং বিশথল অবস্থাটি দীর্দাষিত করিতে চায়- এলা মঙ্গালী নং বামপন্থীদের দ্বারা চালিত হইতেছে। পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্যশীল ব্যক্তিদের উপরই কেবল তাহারা আক্রমণ চালায় বলি তিনি উল্লেখ করেন। পূর্ব পাকিস্তানে কতিপয় নিভৃত গ্রাম আছে, সেখানে লােকজনকে পাকিস্তান রেডিও খবর শুনিতে দেওয়া হয় না বলিয়া তিনি জানান।
শ্রমিক নেতা সাইফুর রহমান ১৯ জুন এক বিবৃতিতে শ্রমিকদের নিয়ে কাজে যােগদানের আহবান জানান। তিনি শ্রমিকলের সামরিক সরকারকে সহযােগিতারও আনান জানান। পত্রিকায় বলা হলাে :
Wাকা, ১৯ শে জুন। পূর্ব পাকিস্তান, শ্রমিক ফেডারেশনের কারও প্রেসিডেন্ট জনাব সাইফুর রহমান আজ পুনরায় শ্রমিকদের কাজে যোগদানের আহবান জানাইয়া বলেন, আমরা যেহেতু শ্রমিক কল্যাণের প্রতি কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট আন্তরিকতা প্রত্যক্ষ করিতেছি, সেইহেতু সর্বপ্রকার মিথ্যা প্রচারুণ উপেক্ষা করিয়া শ্রমিকদের নিয়ে কয়ে। যােগদান করা ভ$ত। যে সকল শ্রমিক পুনরায় স্ব স্ব কাজে ফিরিয়া আসিতেছেন তাহার চাকুরীর
________________________________________
* |{ণ সে ম
” ” ধারাবাহিকতা অs রাখিয়া অনতিবিলম্বে এহণের জন্য সামরিক কর্তৃপক্ষ মালিকদের প্রতি যে নির্দেশ দান করিয়াছেন, জনাব সাইফুর রহমান এক বিবৃতিতে উহার প্রশংসা করেন।
জনাব সাইফুর রহমান তাহার বিবৃতিতে বলেন, সম্প্রতি ফেডারেশনের প্রতিনিধিদলের এক সাক্ষাঘকালের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশ পাৰ কব্রিছেন। এমতাবস্থায় দেশে পুনরায় শান্তি, স্বস্তি ফিরাইয়া আনা ও দেশের সমৃদ্ধির জন্য সকলকে সরকারের সহিত পূর্ণ সহযােগিতা প্রদর্শনের আহবান জানান হয়।’৯২
এনিকে ২০ জুন লাহােরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যাপক গােলাম আজম বলেন, অলিশ অনুসরগে আমাদের ঔদাসীন্যই বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী।’ সাংবাদিক সায়েনের বিস্তারিত বিবরণ নিয়ে পত্রিকায় বলা হলাে :
লাহোর, ২০ শে জুন। পূর্ব পাকিস্তান জামাতে এলামীর আমির অধ্যাপক গোলাম আজম অ্যু বলেন যে, পাকিস্তানের আদর্শ অনুসরণে আমাদের ঔদাসীনতার ফলেই পূর্ব পাকিস্তানে বর্তমান পরিস্থিতি উদ্ভব হইয়াছে। অন্য এখানে পার্টি অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ভাষণদানকালে তিনি বলেন, এই উপমহাদেশের মুছলমানরা স্বেচ্ছাপ্রণােদিত হইয়া একটি পৃথক আবাসভূমি স্থাপনে সম্মত হইয়াছিল- ইহার পিছনে কোন চাপ ছিল না। কিন্তু আমাদের নেতারা এই আদর্শের প্রতি বিশ্বসম্মতিন করিয়াছে বলিয়া তিনি উয়োগ
তিশা বলেন, পশ্চিম পাকিস্তান হইতে পূর্ব পাকিস্তানের দূরে সরিয়া যাওয়ার আর
প্রয়োগের একটি কারণ হইতেহে গণতন্ত্রের ধ্বংস সাধন এবং পূর্ববর্তী সরকারের নীতি। পর্ববর্তী রক্তারের শাসনামলে বলি একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচি! পৰিষদ অনিক, তবে পূর্ব পাকিস্তানীরা তাহাদের দাবী লাম্বার ব্যপারে আলোচনা ও সংগ্রাম করার সুযােগ। লাভ করি।
অধ্যাপক গোলাম আজম খালেন যে, শেখ মুজিবুর রহমান সম্ভবত বিচ্ছিন্ন। চাহিয়াছিল, কিন্তু তিনি প্রকাশ্যজ্ঞানে স্বাধীনতার জন্য চিৎকার করেন নাই। যদিও তার ৬ দফা স্বাধীনতার পথকে প্রশস্ত করিয়াছিল। তিনি বলেন, মওলানা ভাসানী প্রকাশ্যে। বিৰািলী করিয়াছেন এবং এই ধারণাকে জনপ্রিয় করিয়া তােলার জন্য সময় পূর্ব পাকিস্তান সফর করিয়াছেন। অধ্যাপক মােজাফফর আহমদ ও খান আতাউর রহমানের দলও অনুপ উদ্যোগ গ্রহণ করে।
| তিনি বলেন, শেখ মুজিব বিচ্ছি| হইতে চাহিয়াছিল এবং তাহাকে গ্রেফতার করা। হইয়াছে। কিন্তু যে সকল ব্যক্তি প্রকাশ্যে বিকাতা আন্দোক্ষিন চালাইয়াছিল তাহলের ধরা হয় নাই।
অধ্যাপক আঞ্জম বলেন, পূর্ব পাকিস্তানীরা পশিচম পাকিস্তান অপেক্ষা ভারতকে কোন কালেই পছন্দ করে নাই। শেখ মুজিৰ বিচ্ছিন্নতার উপর গণভােট চায় নাই। তাহার গণভোট ছিল সর্বাধিক প্রাদেশিক স্বায়ত্বশাসনের উপর। যে সকল ব্যক্তি আওয়ামী লীগকে ভােট দিয়াছে তাহাদের পাকিস্তান বিরােধী বলিয়া আখ্যায়িত করা উচিত হইবে না, কারণ তাহাৱা কখনই বিচ্ছিন্নতা চায় নাই। তিনি বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা এখনও পূর্ব পাকিস্তানে সক্রিয় রহিয়াছে এবং তাহাগের কার্যকলাপ চালাইয়াছে। শান্তিপ্রিয় জনগণকে তাহাদের নিজের প্রতিরক্ষার জন্য অস্ত্রে সজ্জিত হইতে হইবে।
*
**
**
জামায়াত নেতা গোলাম আজম পশ্চিম পাকিস্তানের হাসমত আলী ইসলামিয়া কলেজে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেন, “পূর্বাঞ্চলে সামরিক হস্তক্ষেপ ছাড়া উপায় ছিল না। এ সম্পর্কে দৈনিক সম’ পত্রিকায় লেখা হলাে :
ইতিপূর্বে পিড়িতে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গােলাম আষম বলেছেন যে, দেশের পূর্বাঞ্চলের পরিস্থিতি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আয়েছে। পিপিআই পরিবেশিত অপর এক খবরে প্রকাশ, গত শনিবার রাতে এখানে হাসমত আলী ইসলামিয়া কলেজে দলীয় কর্মীদের এক সভায় অধ্যাপক আখম বতা দানকালে একথা বলেন। স্থানীয় জামায়াত প্রধান মাওলানা তেই মােহাম্মদ উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন।
পূর্ব পাকিস্তান জামায়াত প্রধান বলেন যে, দেশের সংহতি ও আঞ্চলিক অরুতা নয় খাখারি উচ্চশাে পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। পূর্ব পাকিস্তানে যেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিসমূহ কাজ করছে তারা কতিপয় সীমান্ত এলাকা ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তুলে দেয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে তিনি বলেন যে, সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে প্রায় সকল দুতিকারীদের উৎখাত করেছে এবং বর্তমানে এমন কোন শক্তি নেই যা সেনাবাহিনীর প্রাধান্যকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। অধ্যাপক আযম বলেন, বিরােধী ব্যক্তিরা এখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মােকাবিলা করার সাহস না পেয়ে বরং তারা রাতের অন্ধকারে রংসাআক কাজে নিলেণর লিপ্ত রেখেছে। তিনি বলেন, তার দল পূর্ব পাকিস্থানে দুস্কৃতিকারীদের তৎপরতা দমন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে এবং এ কারণেই ওকাশের হাতে বহু জামায়াত কর্মী, শহীদ হয়েছেন বলে তিনি উল্পেখ করেন। তবে এসব প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তার দল দেশের অলর বয়ে রাখার জন্য সম্প্রাম চালিয়ে যাবে বলে জামায়াত নেতা অভিমত প্রকাশ করেন।
পাকিস্তান ও ইসলাম এ দু’ট অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত এবং কেবলমাত্র ইসলামী আদর্শই পাকিস্তানের অস্তিত্বকে টিকিয়ে ৰাখতে পারে বলে অধ্যাপক আযম অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, পাকিস্তান ইসলাম বিন ব্যবস্থার যে এক দল অধ্যায় সূচিত হবে সেদিন আর বেশি দূরে নয়।’
জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আজম লাহােরের ফাতেমা এই রােতে দলীয় অফিস কর্মীদের উশ্যে দেশকে রক্ষা করার বিকল্প ব্যবস্থা ছিল না। এ প্রসঙ্গে পত্রিকায় বলা হলাে :
ভাষণ দান কালে বলেন, সায়িক হস্তক্ষেপ ছাড়া লাহাের, ২১শে জুন (এপিপি)-আজ পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম পর্ব পাকিস্তানে শিক্ষিতাবাদী আন্দোলনকে ধ্বংস করে দেয়ার ই পাকিস্তানের সশল বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। লাহে রের ফাতেমা তুই বেজে অবস্থিত জামায়াত অফিসে গতকাল কমলের উদ্দেশ্যে ভাষণদানকালে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়া দেশকে বিচ্ছিন্নতার হাত থেকে বশ করার অন্য কোন বিকল্প ব্যবস্থা ছিল না। তিনি বলেন, বেআইন ঘােষিত আওয়ামী লীগ কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানে সঃ সাম্প্রতিক গােলযোগ ১৮৫৭ সালের বাংলার বিদ্রোহের চেয়ে দশগুণ বেশী শক্তিশালী।
ল।
অধ্যাপক আযম বলেন, ১৯৬৯ সনের ১৭ই সেদ্ধের ইয়জন ইহা কি বিশবিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলাদেশ-এর মেগান তোলে। পরবর্তীকালে
________________________________________
জদেৱকে সামরিক আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তারা হাজির হয়নি। পরে তাদের বিরুদ্ধে আনীত মামলা প্রত্যাহার করার জন্য শেখ মুজিবুর রহমান এক তারবার্তায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কাছে আবেদন জানান। অক্টোবর মাসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান স্বয়ং ঢাকা আসেন এবং উক্ত ছাত্রদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শনের কথা। খেলা করে।” | জামায়াতে ইসলামী নেতা গােলাম আজম করাচীর এক হােটেলে আয়ােজিত মাংবাদিক সম্মেলনেও জন্য রাখেন। পত্রিকায় বলা হলাে :
‘করাচী, ২২শে জুন (পিপিআই)।-পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম আজ এখানে বলেছেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য সব সময়ই তাদের পশ্চিম পাকিস্তানী ভাইদেয় সাথে একত্রে বসবাস করবে।
| আজ বিকেলে কাসীর এক হােটেলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে ভাষণদানকালে তিনি বলেন যে, ভারত কোন মতেই পূর্ব পাকিস্তানীদের বন্ধু হতে পারে না। তিনি বলেন, পাকিস্তানের আদর্শ গোটা জাতির জন্য পথ-নির্দেশক এবং একমাত্র ইসলামই দেশের দুই আশকে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ রাখতে পারে।
অধ্যাপক গােলাম আযম বলেন যে, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের হয় সফা কর্মসূচীর উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া। যেসব দল খােলাখুলিভাবে বিচ্ছিন্ন আন্দোলন শুরু করেছিল এবং স্বাধীন বাংলা গঠনের জন্য জনগণকে উত্তেজিত করেছিল, সেসব দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য তিনি সরকাত্রের প্রতি আহবান জানান।
অধ্যাপক গোলাম আযম নগণের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং দুষ্কৃতিকারী ও রাষ্ট্রবিরােধীদের কার্যকরীভাবে প্রতিহত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলে প্রতি আবেদন জানান।
জামায়াত নেতা পাকিস্তানকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এক্ষণে সকল ক্ষেত্রে স্বাভাবিকতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আমাদেরকে কার্যকরী সহযােগিতার সাথে কাজ করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষের সাথেও সহযােগিতা করতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আষম বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ কখনও বিচ্ছিন্নতার জন্য ভােট দেয়নি। তাদের অভাব-অভিযােগ পূরণের জন্য ভেটি লিয়েছিল।
তিনি প্রসঙ্গত: বলেন যে, কায়েদে আজম পাকিস্তানের মহান নেতা ছিলেন এবং দেশের উভয় অংশের লােক ঐক্যবদ্ধভাবে এই বৃহত্তম ইসলামী রাষ্ট্র পাকিস্তান কায়েম করেছিল। যে নীতি দেশের এই অংশকে এখন পরপর ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম সে সম্পর্কে পরামর্শ দেয়া ও কাজ করার জন্য জামায়াত নেতা পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের প্রতি অনুরােধ জানান।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত ক্ষমতা হস্তান্তর করা যাবে না এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারবে না। অধ্যাপক গোলাম আযম বলেন যে, পিণ্ডিতে প্রেসিঞ্জে ইয়াহিয়া খানের সাথে সাক্ষাকালে তিনি প্রেসিডেন্টকে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
________________________________________
এদিকে শ্রমিক ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস, এম সােলায়মান এমিকদের অবিলম্বে কাজে যােগদানের আহবান জানালেন। সংবাদপত্রে বলা হলাে;
‘পূর্ব পাকিস্তান এমিক ফেডারেশনের ভাইস প্রেমিক জনাব এস, এম সােলায়মান। কারখানায় স্ব স্ব কাজে অনতিবিলম্বে যােগদানের জন্য শ্রমিকদের প্রতি আহবান
সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের নিকট হইতে অভিযোগ পাওা পর আমরা এবং অন্যান্য ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের বর্তমান অসুবিধা ও দুঃখ দুর্দশা সম্পর্কে শ্রম ও শিল্প বিভাগকে অবহিত করি। সরকার সহানুভূতি সহকারে আমাদের সুপারিশসমূহ বিবেচনা করেন এবং দীদিন যাবৎ অননুমােদিতভাবে অনুপস্থিত থাকার জন্য বরখাস্তকৃত শ্রমিক অথবা চার্জশাটপ্রাপ্ত বা অনিবার্য কারণে কাজে যোগদানে অপারগ শ্রমিকগণ ৩০শে জুনের মধ্যে যোগদান করিলে তাহাদের গ্রহণের জন্য প্রদেশের সকল শিল্প প্রUিানের মালিকদের নির্দেশ পান করেন। তিনি শ্রমিকদের স্মরণ করাইয়া দেন যে, এ ব্যাপারে সামরিক আইন কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই সংবাদপত্রে বিকল্প প্রকাশ
| সিলেটে ছাত্র নেতৃবৃন্দ এক যুক্ত বিবৃতিতে ভারত পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করিতেছে’ বলে অভিমত দেন। এ সম্পর্কে পত্রিকায় বলা হলাে :
| সিলেট, ২৬ শে জুন জাতীয় ছাত্র ফেডারেশনের জেলা শাখার প্রেসিডেন্ট এ, কে, এম শামসুল হুদা নােমানী, সাধারণ সম্পাদক জনাব মোহাম্মাল অানসার খান, অফিস সেক্রেটারী জনাব মােস্তফা কামাল শরীফ, সাবেক ভিপি জনাব শফিউদ্দিন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব এ, রশিদ চৌধুরী এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন যে, দুস্কৃতিকাৱীলের কোনক্রমেই বরদাস্ত করা হইবে না। আমরা জানি, কেন ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করা হইয়াছে। বত্রিগাছা ও দহগ্রামের ঘটনাবলী সম্পর্কেও আমরা অবহিত আছি। ভারত এই পরিস্থিতির সর্বাধিক সুযােপ গ্রহণের চেষ্টা করিতেছে। আরও পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণের মাধ্যমে দেশে এইরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করিয়াছে, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তামে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টির উদ্দেশে অল ইন্ডিয়া & নানারূপ কাল্পনিক কাহিনী প্রচার করিয়া থাকে। | বিৰুতিতে ছাত্র নেতৃবৃন্দ আরও বলেন যে, এক্ষণে প্রতিটি পাকিস্তানী নাগরিকের দায়িত্ব হইবে গুজব প্রচারকারী, দুস্কৃতিকার ও সমাজ বিরোধীদের বিরুদ্ধে অতন্দ্র দৃষ্টি রাখা । এছলামের গৌরব হিসাবেই এক পাকিস্তান সৃষ্টি হইয়াছিল, আঞ্চলিকতা ও ভাষাগত জাতীয়তা সম্প্রসারণের জন্য নহে। | পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনী সাফল্যজনকভাবে রাষ্ট্রবিরোধী ব্যক্তি, দুস্কৃতিকারী ও ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের নিমূর্ল করিয়া দেওয়ায় ছাত্র নেতৃবৃন্দ উহাদের প্রতি মােবারকবাদ জানান। বনমন হইতে কিম্বান্তি অপসারণের জন্য হাহাৱা জনসাধারণকে কঠোর পরিশ্রম করার আহবান জানান। সমাজ জীবন হইতে সমাজ বিরোধী ব্যক্তিদের উচ্ছেদ সাধনের জন্য তাহারা জনগকে ঐক্যবদ্ধ হওয়াথ আহবান জানান।
জুলাই মাসে জামাতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক আখাউড়ায় আয়ােজিত এক জনসভায় বক্তৃতাকালে গ্রামে গ্রামে “জাকার’ গঠনের আহবান জানান।
________________________________________
III
” “” ” “”” “” “ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, ২রা জুলাই (এপিপি) -পাকিস্তান বিরােধী দুস্কৃতিকারীদের অশুভ তৎপরতাকে নস্যাৎ করে দেবার জন্যে পূর্ব পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক অনাব আবদুল খালেক দেশপ্রেমিক জনসাধারণের প্রতি এক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান। জনাব খালেক গ্রামে গ্রামে রক্ষীশল (রাজাকার বাহিনী) গঠনের এবং উক স্থানলের ওপর নজর রাখার আহবান জানান।
| আমাষ্টায় এক জনসভায় বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, সামাজ্যবাদী ভারত পাকিস্তানের। যক্তি কে কথও মেনে নিতে পারেনি। এবং ওই মেবেই হোক পাকিস্তানের বিনাশ সাধনই তার লক্ষ্য।
আমি নেতা বলেন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে পরাজয়ের পর ভারত এমনি পাকিস্তানকে কুলি করার নেয়, তার এদের দিয়ে দেশের এক অংশ থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার পরােক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করছে। তিনি বলেন, ভিত্তিহীন এপ্রচারণা চালিয়ে মুসলমানদের ঐক্যে অঙ্গন রানের জন্যে ব্রাহ্মণ্যবালী ভারত সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে।
স্থানীয় শাখা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই জনসভায় বক্তৃতাকালোৰ খালে । ভারতীয় মুসলমানদের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানরা আছির পিতা কায়েদে আজমের পতাকা তলে সংঘবদ্ধ হয় এবং তাদের আদর্শ অনুযায়ী জীবন যাপনের জন্যে পাকিস্তানের পক্ষে ভােট দেয় ।
জামাত নেতা বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জুনসাধারণ তার অজাবঅভিযোগ থেকে মুক্তি পাবার জন্য এবং স্বায়ত্বশাসন লাভের আশায় আওয়ামী লীগকে ছোট শিলে । তারা কখই রিদ্ধি| তার জন্যে ভোট দেয়নি। এই পর্যায়ে জনাব খালেক সমবেত ইনতার কাছে জানতে চান তারা পূর্ব পাকিস্তানকে দেশের অপর অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্যে ভোট শিফলেন কিনা ? উপস্থি সঞ্চলে একবাক্যে না বলে ওঠেন।
তিনি বীর জওনলের ভূমিকার প্রশংসা করেন। ব্রাক্ষণবাড়ীয়া মহকুমা শান্তি কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই জনসভায় জনাব এ, আর, মােৱা, নাৰ শীয়ারা মিয়া, আনৰ মুজিবুর রহমান ও আমান আবলুল্লাহ ইয়াও বক্তল
এদিকে সিলেট, জালালাবাদ থানা সমিতির সভাপতি ফরিদ উলিল চৌধুণী। এবং, ধারণ সম্পাদক আবু সায়্যিদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, দেশদ্রোহীদের ঘৃণ্য wংসায় কাকিম, জনগণের সম্পও নষ্ট এবং হত্যার প্রতিবাদে নিপা প্রকাশের ভাষা তাদের জানা।
| ভারত তাদের এজেন্ট এবং বিলুপ্ত আওয়ামী লীগের কর্মীদের নিয়ে মারাত্মক কর্মকাণ্ড Wটাচ্ছে। তারা এদেশে সাস করে এদেশের সম্পল ভারত নিয়ে যাওয়ার ] সন্ত্রাসীদের পাঠাচ্ছি।
ছাত্রনেতারা দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এক হাতে চিন্তাশীল ছাত্রলের প্রতি আবেদন জানায়। তারা দেশ রক্ষার জন্য মুজাহিদ ও রাজাকার কাহিনীতে যোগ দেয়ার জন্যও ছাত্রলের প্র৬ি আহবান জানান।
ভারতীয় পায়িত্বজ্ঞানহীন অafাসনের নিন্দা জানালাে নেজামে ইসলাম নেতা। পূর্ব পাকিস্তান নেজামে ইসলামের সভাপতি মাওলানা সিদ্দিক আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক
________________________________________
মাওলানা আশরাফ আলী যুগ। বিবৃতিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় অগ্রাসনের তীব্র নিন্দা দানানো হয়।
শুক্রবার এক যুগ বিবৃতিতে তারা বলেন, তাদের নিপা রজানাবার মতাে কোন ভাষা। তাতে সানা নেই। তারা বলেন, এর পূর্ণমা বিনা উসকানীতে বোমা হামলা করছে। তারা আরও বলেন যে, পাকিস্তানী জনগণ সুতিকারীদে কুটকৌশল এবং পাকিস্তানে অজ্ঞতা ও সংহতি রক্ষার জন্য যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে গতুত আছে।১০১
পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর ডেপুটি আমীর মাওলানা মােহাম্মদ আব্দুর রহিম গতকাল পূর্ব পাকিস্তান সরকারের গd ভা# এ, এম মালিকের সঙ্গে কথা কলেন। দলীয় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানাে হয় যে, গতরের সঙ্গে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে আলােচনাকালে তাকে নিশ্চয়তা প্রদান করা হয় যে, সন্ত্রকার পূর্ব পাকিস্তানের শান্তি, স্বাভাবিকতা, গুতা ও সংহতি রক্ষার জন্য যদি কোনাে পদক্ষেপ গ্রহণ করে তবে পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণ তাকে সমর্থন দেবে। | বরিশাল জেলার পিরােজপুর মহকুমা থেকে নির্বাচিত এম. মাওলানা আব্দুর। রহিম পর্নরের সঙ্গে পিরোজপুরের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলােচনা কৱেন । প্রেস। বিজ্ঞপ্তিতে আরও নলা হা যে, গভরি ‘তার মা ধৈ। পরে কনছেন ? সকল বিষয় বিবেচনার নিশ্চয়তা দিয়েছেন ।১০২
চট্টগ্রামে মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে চট্টগ্রাম শহর ইসলামী যাত্রসম আয়োজিত সমাবেশে মতিউর রহমান নিজামী তার বক্তৃতায় বললেন, ‘দুনিয়ার কোন শক্তিই পাকিস্তানকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না।’ পত্রিকায়। এ সমাবেশ সম্পর্কে বলা হলাে :
চট্টগ্রাম, ৩রা আগষ্ট। বিশ্ব মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের অন্যতম সদস্য সংগঠক পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের নিখিল পাকিস্তান সভাপতি জনাব মতিউর রহমান নিজামী দলীয় ও ব্যক্তিগত সংকীর্ণতার উর্বে থেকে পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতি রক্ষার কাজে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবার জন্য সকল দেশপ্রেমিক নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম শহর ইসলামী ছাত্রসংঘের উদ্যোগে স্থানীয় মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে আয়ােজিত এক জনাক্টা দুর-সুধী সমাবেশে ভাষণদানকালে জনাব নিজামী এই আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, এখন ব্যক্তিগত মর্যাদা বা দলীয় স্বার্থের প্রশ্ন নয়, এখন প্রশ্ন পাকিস্তান টিকে থাকার। পাকিস্তান টিকে থাকলেই কেবলমাত্র এখানকার মুসলমানরা টিকে থাকতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
“পাকিস্তানের বর্তমান জাতীয় সংকট এবং নাগরিকদের দায়িত্ব” শীর্ষক বিষয়ে আলােচনাকালে ছাত্রনেতা নিজামী বলেন, ১লা মার্চ থেকে দুস্কৃতিকারী ও ভারতীয় অনুচরর যে আ৭.বহ পরিস্থি%ি |ট করেছিল, তাতে কোন মানুই, আশা করতে পারেনি যে, পাকিস্তান ও পাকিস্তানের মুসলমানরা আপন সত্তা নিয়ে টিকে থাকবে। পুকৃতিকারীরা লেশের বুকে যে রাষ্ট্রের প্রইি হয়েছে তার নষ্টিৰ দুনিয়ার ইতহাস নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আনাৰ নিয়মী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পাকিস্তানী ও ইসলামপন্থী রাজনৈতিক নেতা ও দলসমূহের নৈক্যের কারণেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাও রেল এবং দেশে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল।
________________________________________
জনাব নিজামী বলেন, দেশপ্রেমিক জনপণ যদি ১লা মার্চ থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। দুষ্কৃতিকারীদের প্রতিরােধ করতে এগিয়ে আসতাে তাহলে দেশে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারতো না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আল্লাহ তার প্রিয়ভূমি পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্যে ঈমানলার মুসলমানদের ওপর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু মুসলমানরা যখন রাজনৈতিক সমস্যার মােকাবিলা রাজনৈতিক পন্থায় করতে ব্যর্থ হল, তখন আল্লাহ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে আর প্রিয়ভূমির হেফাজত কনেছেন।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ছাত্রনেতা জনাব নিজামী পাক সেনাবাহিনী সাফল্যের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতের সকল আভঙ্করণ ও বিদেশী মণ মােকাবিলা করার জন্য তাদের সাহস ঔ হ্যাগের নি। আধুতার কাছে মুনাজাত করেন।
পাকিস্তানের বর্তমান সংকটের কথা বলতে গিয়ে জনাব নিজামী বলেন, অনেকেই এর জন্যে দেশের ছবি সমাজকে দাবী করেন, তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, ছাত্রদের কিছু অংশ এর জন্যে দায়ী হলেও সময় ছাত্র সমার্থ এর জন্যে দায়ী নয়। বরং বিগত ২৩ বছরে যারা ছাত্র সমাজকে পাকিস্তান আন্দেলনের ইতিহাস, পাকিস্তানিপূর্ব ভারতের মুসলমানদের দুরবস্থার ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত রেখেছে তারাই এর জন্যে দায়ী বলে জানাৰ নিজামী মন্তব্য করেন। তিনি দুঃখ করে বলেন, বিগত আমলে ছাত্রদেরকে একদিকে ইসলাম সম্পর্কে কোন জ্ঞান দেয়া হয়নি অন্যদিকে শাসকদের দ্বারা গৃহীত বিভিন্ন কর্মপন্থার ফলে। ছাত্রদের মনে ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। | তিনি বলেন, পাকিস্তান অর্জনের পর বহুদিন আমৱা আমাদের পরিচয় ভুলে ছিলাম । কিন্তু ১৯৬৫ সালে ভারত মইন আমাদের ভূখণ্ডে আক্রমণ চালায় তখন আমরা। অসচেতনতার পরিচয় দিলাম কিন্তু যুদ্ধ শেষ হতে না হতেই আবার আমরা ভ্রান্তিতে নিমজ্জিত হলাম। আল্লাহর পক্ষ থেকে আবার আমাদের ওপর গজব মাল। এবায় অমিয়া, আবার আত্মসচেতন হলাম। যদি এই অসচেতনতার পর আবার আমরা ভুল করি। তাহলে হয়ত আল্লাহ আমাদেরকে আর সুযোগ নাও দিতে পারেন।
জনাৰ নিজামী অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে পাকিস্তানে যুবকদের জাতীয় আদর্শের আলােকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। পরিশেষে জনাৰ নিজামী বলেন পাকিস্তান আল্লার ঘর। আল্লাহ একে বার বার রক্ষা করেছেন, ভবিষ্যতেও রক্ষা করবেন। দুনিয়ার কোন শক্তি পাকিস্তানকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না।।
সভায় বক্তৃতাকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি নাৰি। আৰু নাছের পাকিঙ্কানপূর্ব ভারতে মুসলমানদের ওপর হিন্দুদের অত!!চারের এক বিষিকাময় চিত্র তুলে ধরেন। সিনি বলেন, সেই হিন্দুদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ২০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পাকিস্তাৰ অনি করেছি সেই হিন্দুদের সাথে আমি কোনদিন এক হতে পারি না। ভারতের সকল চক্রান্ত নস্যাৎ করে পাকিস্তানকে টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবার জন্য তিনি সকলের কাছে আহ্বান
সভাপতির ভাষণে শহর শাখার সভাপতি জনাব মীর কাসেম আলী বলেন যে, পাকিস্তান আর পুনর্জন্ম লাভ করেছে। পাকিস্তানের বুকে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার বাঝবানের মাধ্যমেই একে টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি গ্রামগদ্যের প্রতিটি এলাকা থেকে শত্রুর শেষ চিহ্ন মুছে ফেলার জন্য দেশপ্রেমিক জনগণের অবরুদ্ধ বাংলাদেশ ১৯৭৩
________________________________________
প্রতি আহবান জানান। সভায় পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় ভারতীয় হামলার নিন্দা এবং বৃটেন ও বিবিসির মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সকল বৃটেনী পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়ে অতিপয় প্রস্তাব গৃহীত হয়।১০৩।
এদিকে পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়ােজিত ছাত্র সমাবেশে মতিউর রহমান নিজামী বলেন, শাকিস্তান কোন ভূখঞ্জের নাম নয় একটি আদর্শের নাম।’ সংখলত্রে প্রকাশিও প্রতিবেদনে এ সভা সম্পর্কে বলা হয় ;
“অাজাদী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিল্যালয়ে এক ঐতিহাসিক ছাত্র সমাবেশে পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি জনাব মতিউর রহমান নিজামী বলেন, পাকিস্তান কোন ভূখণ্ডের নাম নয়, একটি আদর্শের নাম। ইসলামী আদর্শের প্রেরণাই পাকিস্তান সৃষ্টি করেছে, এবং, এই আদর্শই পাকিস্তানকে টিকিয়ে গাথতে সক্ষম। ইসলামী ছাত্রসংঘ কর্তৃক আয়োজিত এ সমাবেশে আনার নিজামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীর ঈদেশ্যে বলেন, ইসলামপ্রিয়া ছাত্র সমাজ বেচে থাকতে পাকিস্তানের অস্তিত্ব টিকে থাকবে।
পাকিস্তানের শক ইহুদী, ভারত ও রাশিয়ার পানিস্তান বিরােধী সভূষম্বের উয়েখ করে ছাত্রনেতা নিজামী বলেন, শুধু রাশিয়াই নয় সারা দুনিয়ার ইসলাম বিরােধী শক্তিগুলাে ভারতের পেছনে দাড়ালেঞ্জ ভারত, পাকিস্তানের এক ইঞ্চি জমিও দখল করতে পারবে না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক শর্তসাপেক্ষে আমরা কোন দেশের সাহায্য গ্রহণ করাতে রাজি নাই। এ প্রসঙ্গে ৬িনি সরকাঞ্জেগ প্রতি ইসলামী অর্থব্যবস্থা জারি করার দাবী জানিয়ে বলেন, ইসলামী অর্থনীতি প্রবর্তন হলে আমাদের বিদেশ | সাহায্যের প্রয়োজন হবে না । তিনি আরাে বলেন, মুন্সফামানি ভিক্ষা নেয় না, ভিক্ষা দেয়। নুরুল ইসলাম। পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি জনাব মােহাম্মদ নূরুল ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারত পূর্ব পাকিস্তানকে বিংস করার জন্য সকল প্রকার পন্থাই অনুম্বন করেছে। পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক শক্তি পঙ্গু করা এবং অর্থনৈতিক ও শিক্ষার মেরুদত্ত ভেঙ্গে দেয়ার জন্য তারত তাদের সরলের মাধ্যমে আভ্যন্তরীণ প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু দেশপ্রিয় নাগরিক ও পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র সমাজ তাদের সকল ধংসাত্মক কৃষকেই ব্যর্থ করে দিয়েছে ও নিচ্ছে। ঈমান নূরুল ইসলাম বলেন, দেশপ্রেমিক ছাত্র সমাজকে আজাদী ৰক্ষার দৃঢ়সংকল্প গ্রহণ করা হবে। তিনি ছাত্র সমাকে আর রক্তাক্ত ইতিহাস সার আহান আলন। সমাবেশে ঢাকা শহর ইসলামী জ.এসংঘের সভাপ৬ি জনাব মােহাম্মদ শামসুল হক ও সাধারণ সম্পাপ জনাব শওকত ইমরান বক্তৃতা করেন। পূর্ব পাক সংঘের সাধারণ সম্পাদক জনাব আলী আহসান মােহাম্মদ মুজাহীদ কতিপয় প্রস্তাব পাঠ নকলেন। ঐতিহাসিক মিছিল সমাবেশ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবন থেকে এক বিরাট মিছিল বের হয়। এসংঘের নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে কি লিবিদ্যালয়, বিভিন্ন কলেজ, চুল ও মাদ্রাসার ছাত্রদের এই বিশাল মিছিলটি গগনবিদারী শ্লোগান দিয়ে পাবলিক লাইব্রেরী, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পুৱানে হাইকোর্ট ভবনের সম্মুখস্থ পথ ধরে বায়তুল মােকাররমে এসে
________________________________________
মিছিল শেষ হয়। মিছিলের ছারা আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে শ্লোগান তােলেনআমাদের রক্তে পাকিস্তান টিকরে, পাকিস্তানের উৎস কি-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ইসলামী শিক্ষা কায়েম কর, ভারতের দালাল খতম কর ইতালি।”১০৮
অপরদিকে জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিক আয়ােজিত সভায় জামাত নেতা অধ্যাপক গোলাম আজম জানালেন, পাকিস্তান এখনো তার অভীষ্ট লক্ষ্যের পথে যাত্রা শুরু করেনি। পত্রিকায় এ সভা সম্পর্কে বলা হলো :
“পাকিস্তান জমিয়তে তালাৰায়ে আরাবিয়া আয়ােজিত ২৫তম অাজাদী দিবসের আলােচনা সভায় অধ্যাপক গোলাম আযম বলেন, পাকিস্তান এখনো তার অভীষ্ট লক্ষ্যের পথে যাত্রা শুরু করেনি। আর এটিই হচ্ছে জাতীয় সকেটের মূল কারণ।
ইসলামিক এ-জেনী হলে অনুষ্টিত এ সভায় অধ্যাপক গােলাম আযম, নগেন, কোন দেশ তার নিজের দেশের লােকদের দ্বারা শাসিত হলেই আজাদ হবে-সাধারণ আজাদী এই সস্তা ইসলাম স্বীকার করে না। বাংলাদেশ বাংগালীদের দ্বারা শাসিত হবে এ মতবাদ শেখ মুজিব বা শ্ৰী তাজুদ্দীনের। এজন্যেই তথাকথিত বাংগালী বীরের পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে বাংলাদেশ কায়েম করেছে। কিন্তু মুসলমনি আল্লাহর হুকুম পালন করার সুযােগ লাভকেই সত্যিকারের আজাদী মনে করে। এ ভিত্তিতে শাসক নিজের দেশের হােক বা বিদেশী হােক তা লক্ষণীয় নয়। তিনি আরাে বলেন যে, প্রত্যেক নবীই মানুষের সঙ্গিকার আদালীর জন্য নিজের দেশের মানুষের বিরুদ্ধেই সংগ্রাম করেছেন।
পাকিস্তানের আজাদী আন্দোলনের ইতিহাস বর্ণনা প্রসঙ্গে পূর্ব পাৰু জামায়াত প্রধান বলেন, পাকিস্তান আন্দোলনকে সত্যিকারের মুসলিম জাতীয়তাবাদী আন্দোলন না করে জাতীয়তাবাদী মুসলমানদের একটি আন্দোলনে পরিণত করা হয়েছিল। কিন্তু নাম নেয়। হয়েছিল মুসলিম জাতীয়তাবাদের। দোহাই দেয়া হয়েছিল ইসলামী সমাজের। তিনি বলেন, আমরা একটা আজাদ ভূমি পেয়েছি, ইসলামের সংজ্ঞা অনুযায়ী আজালী পাইনি। সে জন্যেই আজাদী লাভের ২৪ বছর পরই ইসলামী আদর্শের প্রতিফলন কোথাও ঘটেনি। এখনাে ইসলামী রাষ্ট্র হিসাবে দেশকে গড়ে তােলার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
তিনি সমবেত শ্রোতৃমণ্ডলীকে লক্ষ্য করে বলেন, কালেমায়ে তাইয়েবার অনুসারী হিসেবে যে কোন পরিস্থিতির মােকাবিলা করে সামনে অগ্রসর হবার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মতই পাকিস্তানের হেফাজত করা না কালে জানা আযম উল্লেখ করেন। এ-সম্পর্কে ভুল বুঝাবুঝির কোন অবকাশ নেই যে, ইসলামের খেদমতের ভীন্যই আমাদের সকল কাজ সেনাবাহিনীর সন্তুষ্টির জন্য নয় বলে উনাৰ আযম নলেন।
অধ্যাপক আখম গুরুত্বসহকারে বলেন, দেশ রক্ষার দায়িত্ব সেনাবাহিনীর তা তারা। পালন করছে, কিন্তু দেশের মানুষের চরিত্র গঠনের দায়িত্ব দেশপ্রেমিক নাগরিকদের। তিনি বলেন যে, দেশপ্রেমিক নাপরিকদের উচিত বিশূলা সৃষ্টিকারী দুস্কৃতিকারীদের দমন করা, যাতে সেনাবাহিনী ছাউনীতে ফিরে যেতে পারে।
ঢাকা শহর জমিয়তে তালাবায়ে আরাবীয়ার সভাপতি গাজী মােহাম্মদ ইদ্রিসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক জনাব আঘতার ফারুক বলেন, পাকিস্তান অর্জন সম্ভব হয়েছিল আলেম সমাজের সক্রিয় সহযােগিতার ফলেই । তিনি
________________________________________
বলেন, পাকিস্তান গড়ার মুহূর্তে আলেম সমাজের যেমন অবদান ছিল তেমন আজো পাকিস্তানের সংকট মুহূতে আলেম সমাজকে প্রাণ দিতে হচ্ছে।
আজালী সংগ্রামে আলেম সমাজের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজালী সংগ্রামে আলেম সমাজের ত্যাগ তিতিক্ষার সাক্ষ্য বহন করছে আজো আন্দামানে হাজার হাজার শহীদদের মারি। আলেম সমাজের সংগ্রামের ইতিহাসকে চাপা দেয়া হয়েছে। এ চক্রান্তের কারণ উল্লেখ করে জানা আখছার ফারুক বলেন, আলেম সমাজের সংগ্রামের ইতিহাস সামনে আসলে জনগণ আলেমদেরকে অগ্ৰণীয় কবে এ আশংকায়ই আলেমদের ইতিহাস চাপা দেয়া হয়েছে। ডঃ মােস্তাফিজুর রহমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট শিক্ষক ডঃ মােস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাকিস্তান আন্দোলনের গোড়ার কথা ছিল উপমহাদেশের মুসলমানদের জন্য এমন একটা আবাসভূমি লাভ কৰা যেখানে তৌহীদ রেসালতের ব্যপ্তি ঞ্জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি দুঃখ করে বলেন, বর্তমান তরুণ সমাজের নারী পাকিস্তানে জ[][হণ করেছে তাদেরকে পাকিস্তান কেন চেন ছিলাম তা জানতে দেয়া হয়নি। জমিয়তে তালাৰায় অনগ্রাহীয়ার স্বাদ সভাপতি মওলানা আশরাফ আলী খানও সভা ৰতা করেন।১০
আগস্ট মাসেই পাকিস্তান কাউন্সিল মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাসেম বলেন, বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ ভারতের হিন্দুদের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যে মক্কার খেলা থেলছে তা প্রকাশিত হয়েছে।
| একটি দীর্থ বিবৃতিতে তিনি বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিমদের জন্য আলাদা মত ভূমির প্রয়োজনে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছে। হিলের শোষণ থেকে মুক্তি এবং ইসলামের ভাণুতে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে খােলাফায়ে রাশেদীনের আঙ্গিকে। সত্যিকারের ইসলামিক সমাজ তৈরী করার জন্য পাকিস্তানের জI । ০৬
২০ আগস্ট লাহােরে জামাতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা অধিবেশনে জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল উথানের কঠোর সমালােচনা করা হলাে। এ সম্পর্কে পত্রিকায় বলা হলাে :
লাহেরি, ২০শে আগস্ট (এপিপি)। জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল উথান্ট শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বাসঘাতকতার বিচার প্রসঙ্গে যে বিবৃতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা তাকে সেক্রেটারী জেনারেলের কার্যসীমার বহিভূত বলে মন্তব্য করেছেন।
| আজ লাহােরে অনুষ্ঠিত মজলিসে শুরার সকালের অধিবেশনে গৃহীত এক প্রস্তাবে একলা হয়েছে, “বিশ্বসংস্থার সেটারী জেনারেল হিসেবে উথা যে মালা ও আস্থা অর্জন কছিলেন এই বিবৃতির মাধ্যমে তিনি তা নষ্ট করে ফেলেছেন।* প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যে, উথানের উচিত কোন দেশের প্রত্ৰাৰে পড়ে অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের মত বিষয়ে ভীড়িত হওয়ার পৱিত সকল সদস্য দেশের আস্থা অনেক।
জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শুরার এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন দলের সহাকী প্রাণ, মওলানা আবদুর রহম। এতে জামায়াতে প্রধান মওলানা মওদুলীও উপস্থিত
________________________________________
যেসব বিদেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানকে তাদের মঞ্জি মােতাবেক একটি সমাধান গ্রহণ করানাের ব্যাপারে চাপ দেয়ার উদ্দেশ্যে অর্থনৈতিক সাহায্যকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, জমায়েতের মজলিসে শুরার অধিবেশনে সেসব দেশের নিন্দা করা হয়।
| অধিবেশনে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয় যে, পাকিস্তান সরকার এ ধরনের শর্ত মেনে নিতে পারেন না। এপিপির অপর এক খবরে প্রকাশ, গতকাল অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামীর ফেভয় মলিসে শুরার দ্বিতীয় অধিবেশনে পূর্ব পাকিন্তানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি সম্পর্কে আলােচনা করা হয়। অধিবেশনে ভাষণ দেন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে প্রধান অধ্যাপক গোলাম আযম ও জেনারেল সেক্রেটারী জনাব আবদুল খালেক। জামায়াতে প্রধান মওলানা সাইয়েল আবুল আলা মওদুদী এতে উপস্থিত
লাহাের থেকে পিপিআই জানান, ভারতীয় যুদ্ধবাজ ও তাদের চরলের যােগসাজসে পূর্ব পাকিস্তানকে বিক্সি ব্রাত্ৰ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ব্যক্তিদের দমন করার ক্রম। সরকার যে ব্যবস্থা। গ্রহণ করেছেন মজলিসে দা ‘তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।১০৭
এদিকে পিডিপি নেতা মাহমুদ আলী লন্ডনে এক সাক্ষাকারে জানালেন, ‘একবন্ধ। পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোন সমাধান গ্রহণযােগ্য নহে। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
| ‘লন্ডন, ২৩শে আগস্ট। পূর্ব পাকিস্তানে পিজ্ঞিপি নেত্রী জনাব মাহমুদ আলী সম্প্রতি এখানে এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনাবলী সম্পর্কে পাশ্চাত্য সংবাদপত্রসমূহ ইউরােপ ও আমেরিকায় বসবাসকারী পাকিস্তানীদের সম্পূর্ণভাবে বিভ্রান্ত করিয়াছে। তিনি বলেন, এই ব্যাপারে আমি তাহাদের অনেকের সহিত আলাপ করিয়াছি। তাহা জানান যে, এখনাে পর্যন্ত তাহারা এই ব্যপারে অন্ধকারে ব্রহিয়াছেন। জনাব মাহমুদ আলী তাহার পশ্চিম ইউরােপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনাকালে পাকিস্তানী বিশেষ করিয়া পূর্ব পাকিস্তানীদের অভিযােগের কারণ বিশ্লেষণ করেন।
জনাব মাহমুদ আলী বৃটেনের বিভিন্ন শহর সফর করেন এবং তথায় বসবাসকারী পাকিস্তানীদের সহিত আলাপ-ভ্রালােচনা করেন। তিনি বলেন যে, বিভিন্ন প্রশ্নে পূর্ব পাকিস্তাদের মধ্যে থার্থ ভুল বুঝাবুঝি রহিয়াছে। তিনি এই সকল প্রশ্নের সমাধান করার চেষ্টা করিয়াছেন। পূর্ব পাকিস্তানীর! স্বায়ত্তশাসনের দাবী করিতেছিল কিন্তু সেনাবাহিনীর সমর্থনপুষ্ট পশ্চিম পাকিস্তান এই দাবী মানিতে প্রস্তুত নই—এই অভিযোগের জন্ধানে মাহমুদ আলী বলেন যে, পশ্চিম পাকিস্তানী নেতৃবৃন্দ এবং সেই সঙ্গে সরকারও স্বায়ত্তশাসনের এই দৰী স্বীকার করিয়া লইয়াছিলেন।
তিনি দৃঢ়তার সহিত বলেন যে, এটি কেবল প্রদেশের স্থায় শাসনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নহে। পশ্চিম পাকিস্তানের সকল নেতাই প্রদেশের জন্য স্বায়ত্তশাসনের পক্ষপাতী। কিন্তু যে প্রশ্নটি লইয়া বিরােধ সেইটি হইতেছে, বিস্কিতার প্রশ্ন, যাহা কোন দেশপ্রেমিক পাকিস্তানীই মানিয়া লইতে পারে না। হার মাহমুদ আলী বলেন যে, তিনি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে খােলাখুলিভাবে বলিয়াছেন যে, ‘তথাকথিত ‘বাংলাদেশ” সমস্যার সমাধান নহে। এর ফলে উহার মূল অস্তিত্বই বিপদাপন্ন হইয়া পড়িবে । একমাত্র ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তান হইতেই পূর্ব পাকিস্তানী জনগণ লাভবান হইতে পারে।
তিনি বাঙ্গালীদের স্বরণ করাইয়া দিয়া বলেন যে, বিগত ২৪ বৎসরে পাকিস্তানে প্রায় ৮০টি পাটকল স্থাপিত হইয়াছে। এছাড়া ইস্পাত কারখানা, সার কারখানা, বিরাট ডকইয়ার্ড
________________________________________
ও অন্যান্য শিল্প কারখানা স্থাপন করা হইয়াছে। সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান বাঙ্গালী অফিসারদের দ্বারা পরিচালিত হইয়াছে। কেন্দ্রে কতিপয় উচ্চ পদেও বাঙ্গালীদের নিয়োগ করা হইয়াছে। পূর্ব পাকিস্তানীরা যে দ্বিতীয় অভিযােগটি করিয়াছেন তাহা হইতেছে, সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সত্ত্বেও উহাকে কেন শাসনের ক্ষমতা দেওয়া হয় নাই- ইহার পরিবর্তে উহাকে পাৰাইয়া রাখা হয়।
উপরোক্ত আয়োগের উত্তরে জনাব মাহমুল আলী বলেন , শসা bনার জান গণপরিষদ গঠন না হয়। শাসনতন্ত্র রচনার পর উক্ত শাসনতন্ত্রের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যাইতে পারে। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ দল শাসনতন্ত্র রচনা করিতে সম্মত হয় নাই। এই পরিস্থিতিতে উক্ত দল কিভাবে ক্ষমতা লাভ করিতে পারে ? গুনাব মাহমুদ আলী বলেন, ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তান ব্যতিরেকে অন্য কোন সমাধানই গ্রহণযোগ্য হইতে পারে না।১০৮
পূর্ব পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক গােলাম আযম পেশােয়ারে আপড়ের শেষ সপ্তাহে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ভারতের দুটি চক্রান্ত এবং বিদ্রোহীদের কবল থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে রক্ষা করতে পারবে। আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত ফ্যাসিস্ট কর্মীদের নির্বাচনের পরে ভালের ৬ লক্ষায় অলান পরিবর্তন করেছে। ভারতের সাহায্যে তারা পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে চাচ্ছে, জামাত নেতা আন্নো বলেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় যুদ্ধবাজদের ীৈ সমস্যা ছাড়া বড় ধরনের আর কোনাে সমস্যা নেই। বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ কর্মীদের ক্রমাগত সন্ত্রাসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা তাণে ফ্যাসিস্ট কৌশল কাজে লাগিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে ভোট দিতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন, বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ কখনও পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের জন্য ভোট চায়নি, তারা ভােট চেয়েছে বিচ্ছিন্নতার জন্য। শ্ৰথচ জনগণ তাদের ভােট দিয়েছে তাদের অধিকার পাওয়ার জন্য ১০৯
পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর ডেপুটি আমীর মওলানা আবদুর রহীম পশ্চিম পাকিস্তানের শুজুর বলেন, দেশে পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা কায়েম না হওয়া পর্যন্ত ক্ষমতা হস্তান্তর অহিনি।’ এ সম্পর্কে সংবাদে বলা হয় :
‘কুর, ২৮শে আগস্ট (পিপিআই)।-পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর ডেপুটি আমীর মওলানা আবদুর রহীম সাংবাদিকদের কাছে বলেন যে, দেশে পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা কায়েম
হওয়া পর্যন্ত নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর অর্থহীন। তিনি আরও বলেন যে, দেশের পূর্বাঞ্চলে উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের উপযােগী পরিবেশ এখনও সৃষ্টি হয়নি। পূর্বাঞ্চলকে বাদ দিয়ে পশ্চিমাঞ্চলে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হলে এটাই বােঝা যাবে যে, ক্ষমতা গ্রহণকারী ঔ ক্ষমতা হস্তান্তরকারী কেউই দেশের অখণ্ডতা ও জাতীয় সংহতিতে
কোন বেসামরিক গভর্নর নিয়ােগের দ্বারা পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হবে না বলে মন্তব্য করে জামায়াতে নেতা বলেন যে, সুস্পষ্ট কার্যকরী পন্থা অবলম্বনই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উপায় । তিনি বলেন যে, আওয়ামী লীগের কোন সদস্যেরই আন্তরিকতা নেই এবং তাদের আনুগত্য পুনরায় পরীক্ষা করা যেতে পারে না। মুসলিম লীপের উপদলগুলাে একীকরণ সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেন যে, ঋতিকে দেয়ার কোন পরিকল্পনা মুসলিম লীগের না থাকায় একত্রীকরণের দ্বারা কোন সুফল হবে না।”১১০
________________________________________
পূর্ব পাকিস্তা+মায়াতে ইসলামী প্রধান অধ্যাপক গােলাম আযম ১ সেপ্টের কাঠীস্থ জামায়াত অফিসে আয়ােজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “অবিলম্বে জাতীয় পরিষদ বাতিল করে অনুকূল অবস্থার সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে লেশন) নতুন করে নির্বাচন দিতে হবে। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সী প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক গোলাম আযম জানান যে, বিচিছন্নতাবাদীদের খতম করার উদ্দেশ্যে পূর্ব পাকিস্তানের সকল এমন ও দেশশ্রেমিক জনগণ এক সাথে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে রেজাকাররা ভালাে কাজ নৰছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।’৯১১ পাকিস্তান। সামরিকাস্তা লেপেটম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে যােগ দেয়ার জন্য মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট পার্ক প্রতিনিধি নাম ঘোষণা করেন। এ গর্কে সৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার প্রতিবেদন : | ইসলামাবাদ, ৮ই সেপ্টেম্বর (এপিপি) । =াজ এনে সরকাণাৰে মোষণ কর। হইয়াছে যে, পাকিস্তান ডেমােক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) সহ-সভাপতি জনাব মাহমুদ আলী। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে পাকিস্তানী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব করিবেন। জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত জনাৰ আগশাহী সহকারী। নেতা থাকিবেন। ১৫ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের বেসরকারী ও সরকারী সদস্য।
কাজেট, কলাবিন)
বেসরকারী সদস্যগণ হইতেছেন । লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি কাৰ জাকিউদ্দিন। পাল, শাহ আজিজুর রহমান, এডভোকেট, ঢাকা; উনাৰ জুলমত আলী খান। এ্যাডভোকেট, ঢাকা; কামাল ফারুক বার এট-ল’ কৰাষ্টী: আঃ নেপম ইনায়েতুল্লাহ সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য বেগম রাজিয়া ক্ষয়েজ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের Sঃ ফাতেমা। সাদেকUক হাইকোর্টের এভ্রি=োকেট জনাব এ, টি, শালী এবং জাল খান লাল, এ্যাডভােকেট, লাহাের ।
প্রানিপলের সরকারী সদস্যগণ হইতেছেন তিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়।। প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত নাৰ আগশাহী, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সেক্রেটারী জনাব এম, এ, আলী, মরক্কোতে নিযুক্ত পাকিস্তানী কাটত আৰ এ, এইচ. বি. তৈয়ব, যুগো|ভয়ায়। নিযুক্ত পাকিস্তান রাষ্ট্রদূত জনাব আইএ, অখুন্দ, পররাষ্ট্র দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল (ইউ, এ, নেশাসন) জনাব ইউসুফ জে: আহমদ এবং ইসলামাবাদের পরই মন্ত্রের। সহকারী আইন উপদেষ্টা জনাব জাহিদ সাঈদ । জাতিসং সাধারণ পরিষলে ২৬তম অধিবেশন নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর পক্ষ হবে ২১শে সেপ্টেম্বর তারিখে শুরু হইবে।”১১২
| এদিকে যশােরে নিখিল পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি মতিউর রহমান। নিজামী ৯ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মী ও সুধী সামবেশে খােন, অপরিণামদর্শী নেতাৱাই পূর্ব পাকিস্তানে আটবলীর জন্য দায়ী।’ এ সমাবেশ সম্পর্কে বিস্তাৰিান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার ১৫ সেপ্টেম্বর সংথ্যায়। প্রতিবেদনে বলা হলো :
যশাের, ১৪ই সেপ্টেম্বর। নিখিল পাকিস্তান ইসলামী সংঘের সভাপতি জনাব মতিউর রহমান নিজামীর আগমনে যশোর ইসলামী ছাত্রসংঘের শহর শাখার উদ্যোগে একি ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। তিনি গত ৯ই সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় সংঘ অফিসে এক কর্মী বৈঠকে মিলিত হন এবং বিকেল ৪ টায় স্থানীয় বিড়ি হলে সুধী
________________________________________
সমাবেশে ভাষণদান করেন। এ সুধী সমাবেশে বক্তৃতা কৱেন সংঘের জেলা সাধারণ সম্পাদক জনাব মােহম্মদ জিয়াউল হক, শহর শাখার সভাপতি জনাব নুরুল ইসলাম। সাকর্মী আল আজিজুল হক কুতা পান করেন।
নিখিল পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি জনাব মতিউর রহমান নিজামী তাঁর সান্নগর্ভ ভাষণে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সম্প্রতি যা ঘটেছে তা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক, কিন্তু সবকিছুই প্রত্যাশিত নয়। কারণ কিছুসংখ্যক পরিণামদর্শী নেতার বন্ধাহীন রাজনীতিই এর জন্য দায়ী। বিগত নির্বাচনে অংশ্রহণকারী আঞ্চলিক দল ও সারা পাকিস্তানভিত্তিক দলগুলাের মধ্যে চিন্তাধারার মৌলিক পার্থক্য ছিল।
তিনি বলেন, সম্প্রতি স্বাৱা পাকিস্তান ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল আল্লাহ তাদের প্রত্যেককে লাকৃিত করেছেন। তিনি আরাে বলেন, পাকিস্তানকে মারা আজিমপুরের গোনিস্তান বলে শ্লোগান দিয়েছিল তাদেরকে পাকিস্তানের মাটি গ্রহণ করেনি। তাদের জন্য কোলকাতা আৱি আগরতলার মহাশ্মশানই যথেষ্ট।
সংঘনেতা জনাব নিজামী ছাত্র সমাজ ও দেশের জনগণকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, অতীতের এ দুঃখজনক Wটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য সকল মহলকে সজাগ হতে হবে। তিনি বলেন, ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৫ পর্যন্ত আমরা ভুলে গিয়েছিলাম আমি কোন জাতি। কিন্তু ৬৫-এর ৬ই সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারত যেদিন পাকিস্তানের পাক ভূখণে নগ্ন হামলা চালিয়েছিল সেদিন প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে রেডি টেলিভিশন ও জনগণ সরকারীভাবে কলেমা পড়ে মুসলমানিত্বের স্বীয় ঐতিহ্য স্বীকার করুণাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় মাত্র ৬ বছরের মধ্যে এত বড় দুটনা তুলে গিয়ে ১৯৭১ সালে ডেকে অনলাম নিজেদের সর্বনাশ। এদেশের মুসলমান ভাবিয়ি হিন্দু দালাদের ধোকায় পড়ে গেল। এতে শুধু দেশেই *য় বিদেশেও হাল্লা প্রতি হারিয়েছে।
জনৰ নিজামী উপসংহারে বলেন, দেশের সংকটময় পরিস্থিতিতে আমরা এখনো বিনিময়ে যেমনভাবে পাকিস্তানের সেবায় এগিয়ে এসেছি তেমনি সরকারের উচিত হবে আমাদেরকে আটি সৈনিকরূপে গড়ে তােলা। তিনি ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে তরুণ ছাত্র সমাজকে সত্যিকার পাকিস্তানী হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরােপ করেন।
সভায় বক্তৃতাকালে জনাব জিয়াউল হক পাকিস্তানের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার ত্র সমালােন করেন এবং বর্তমান অনৈসলামিক শিক্ষা ব্যবস্থা আমূল পরিবর্তন করে অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ ইসলাম শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য সরকারের নিকট জোর আবেদন ===
| জনাব নূরুল ইসলাম বলেন, পাকিস্তানে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য এবং পাকিস্তানের আলিশ রক্ষার জন্য আমরা প্রয়ােজন হলে বিন লত্রে প্রস্তুত রয়েছি। সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে ভারতীয় দালাল ও তার এজেন্টদের পাকিস্তান রংসের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয়ার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতি অভিনন্দন জানানাে হয়। অপর এক প্রস্তাবে অনতিবিলম্বে প্রাক্তন প্রাদেশিক গভর্নরের ঘোষিত ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করার জোর দাৱী জানানো হয়েছে।
অপর এক প্রস্তাবে সাকারী অফিস-আদালত থেকে ইসলাম ও পাকিস্তান বিরােধী সকল কর্মচাৰীলেরকে বরখাস্ত করে থাটি পেশপ্রেমিক মুসলমানদের নিয়োগ করার দাবী জমানো হয়েছে।
________________________________________
জুনাব মতিউর রহমান নিজামী গত শুক্রবার সকালে যশাের জেলা রেঙ্গাকার সদর দফতরে সমবেত রেজাকারদের উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরান শরীফের সুরায়ে তার ১১১ ও ১১২ আয়াতের আলােকে জাতির এই মুহূকেটজনক মুহুর্তে প্রত্যেক রেজাকারকে ঈমানদাৱীর সাথে তাদের উপর অর্পিত এই জাতীয় কর্তব্যে সচেতন হওয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, আমাদেরী প্রত্যেককে একটি ইসলামী রাষ্ট্রের মুসলমানি সৈনিক হিসেবে পরিচিত হওয়া উচিত এবং মজলুমাকে আমাদের প্রতি আস্থা রাখার মত ব্যবহার করে তাদের সহয়ােগিতার মাধ্যমে এ সকল ব্যক্তিকে খতম করতে হবে, যারা সশস্ত্র অবস্থায় পাকিস্তান ও ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্স লিপ্ত রয়েছে।১০
এদিকে অন্য স্থানের মতাে নারায়ণগঞ্জে ও বিলুপ্ত আওয়ামী লীগের চারজন নেতাসংস্কৃতি সম্পাদক নাজমুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ মহকুমা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সদস্য হারুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক ফিরােজ মিয়া এবং সদস্য জল সরকার দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে এক যুক্ত বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, পাকিস্তানকে বিভক্ত করার অপকৌশল সম্পর্কে তারা কিছুই জানতো না। তারা পাকিস্তানের অখকায় বিশ্বাসী। নেতৃবর্গ ভারতের ‘ংসাত্মক কাজের তীব্র নিন্দা জানান। দেশ রক্ষায় যথাথে ব্যবস্থা গ্রহণ। করায় তারা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে অভিনন্দিত করেন। নেতৃবর্গ নারায়ণগঞ্জের সকল পর্যায়ের মানুষকে পাকিস্তানের অঘণ্ডতা ও সংহতি রক্ষার কাজে এগিয়ে আসার আহবান জাদশ ১১৪ | সেপ্টেম্বর মাসেই ঋণী লীগ প্রধান আতাউর রহমান খান-এর একটি সাক্ষাৎকার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ‘আমরা পথভ্রষ্ট হইছিলাম” শিরোনামের সংখা এ প্রসঙ্গে কলা।
“প্রাক্তন প্রধানশিক উনের খালা এ জাতীয় লীগ প্রধান জনাব আউর রহমান খানের। সম্প্রতি মুক্তিলাতের পর করাচীর ও সাস্তাহিক অক্ষত্ৰত্রে জাহানের সংবাদদাতা জঁহার এক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। নিম্নে উক্ত সাক্ষাতের বিবরণ দেওয়া হইল :
পূর্ব পাকিস্তানে জিরে গণি ও জাতীয় লীগ প্রধান জনাৰ আজ্ঞাউর রহান খানের। আকস্মিক গ্রেফতারী ও আকর্মিক মুক্তির সংবাদে তাহার সহিত সাক্ষাৎ করার স্পৃহা বাড়িয়া যায়। ফলে ৫ই সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় কোন নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম ও পূর্ণ অনুমতি ছাড়াই আমি তাহরি খামন্ডিস্থ বাসরনে হাজির হয়। জৰ আতউর রাহমানিয়া গান একটি ছক্কা। টানিতে টানিতে বৈঠকখানায় প্রবেশ করিলেন এবং আমার দিকে হাসিমুখে অমসির হইয়া কোলাকুলি করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন গোলযােগের সময় আপনি কি ঢাকায়ই ছিলেন, না
|ী ঢাকাতেই ছিলাম আমি জিওমাৰ নিলাম। তিনি বললেন, তাহা হইলে তো আপনি স্বয়ে সব কিছুই দেখিয়াছেন। অসম্মতিসূচক জওয়াবসানের পর আমি জিজ্ঞাসা করিলাম আপনি কেমন ছিলেন ? কেমন ব্যবহার পাইলেন ? বলিলেন ভালই ছিলাম । হওয়া পাওয়ার কোন কষ্টত হ্যা নাই? না, আমার ভাল অহির দেওয়া হইয়াছে। পকী। পাইতেছিলেন না, তবে ধর্মীয় বই পুস্তক আমাদের পড়িয়ে দেওয়া হইয়াছিল। আমি সেই পুস্তক পাঠ করিয়া জানিতে পারিলাম যে, আমার পথ৭ষ্ট হইয়া গিয়া৬ি। এ পর্যন্ত আমাদের প্রতি যেসব বিপদ আপাত হইয়াছে তাহা শুধু এই না যে, আমরা আল্লাহ ও তলীয় রসুলের হুকুমকে উপেক্ষা করিয়াছি। ইহারই ফলস্বরূপ অামাদের উপর মহাবিপদ
________________________________________
নাজেল হইয়াচ্ছে। গত বৎস! যখন পূর্ব পাকিস্তানের দুর্ণিবার্তায় মহিলা সংঘটিত হয়যাহাতে প্রায় দশ লাখ লােক প্রাণ হারাইয়াছে-তখন আমি আমার বন্ধুদের ইহাই বলিয়াছিলাম যে, পােলা আমাদের প্রতি অম্বুষ্ট হইয়াছেন….. এই সব অামাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত বই, কিছুই নহে। আমরা আল্লার বিধান হইতে বছরে মন্তিয়া পড়িয়াছি। আর বিধানের বিরােধিতা করিয়াছি । ইহাতে আমাদের উপর ভয়াবহ বিপদ আপীত হইবে। তিনি বলেন, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগ মানবতার সকল বিধানকে লংঘন করিয়াছে এবং নীতি-নৈতিকতার সীমারেখাকে পদদলিত করিয়াছে। তাহা ফ্যাসীবালের নেশায় মত্ত হইয়া একথা সম্পূর্ণরূপে ভুলিয়া গিয়াছিল যে, তাহাদিগকে সময়ের সহিত তাল মিলাইয়া চলিতে হইবে এবং জনসাধারণের নিকট প্রদত্ত ওয়াদাসমূহ পূরণ করিতে হইবে। কিন্তু তাহারা ৬াবানে গা ভাসাইয়া চলিতে থাকে এবং দেশে অরাজকতা স্ত্র বিশ লাকে প্রশ্রয় ও উৎসাহিত করে। ফলে জনসাধারণকে সাহসের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়। কিন্তু ফল কিছুই হল না। বরং যাহা মাটি ও সত্য তাহাই বিমান রহিয়াছে। তিনি আরও বলেন, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগ যে ভুল করিয়াছে তাহাতে মনুষ্যত্বের উপরই আঘাত অনিয়াছে। আপনার ও আমরা দারুশনে ক্ষন্তি হইয়াছি। দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছে। গণজীবন বিপর্যস্ত ও ভবিষ্য, অন্ধকারে নিমজি হইত্যা গিয়াছে। এইসব দুর্যোগের জন্য একমাএ বেআইনা মােমি আওয়ামী জাগকে দায়ী নকরিলে বিস্মিত হওয়ার কিছুই নাই। সাময়িক ভাবাবেগ ও উত্তেজনা প্রবাহে গা ভাসাইয়া দিয়া আমরা এরূপ অপকর্ম করির!ছি মজা নৈতিকতা ও মাতা সৃষ্টিকোণ হইতে কথন ক্ষমার যোগ্য নহে। বস্তুতঃ এইসব অপকর্মের জন্য আমাদের অনুতপ্ত হওয়াই উচিত।
| জনাব আতাউর রহমান শেখ মুজিবর রহমানের প্রতিদ্বন্দ্ব ছিলেন। আমার এক প্রশ্নের আওয়াবে তিনি বলেন, আমরা ১৯৪০ সালের লাহাের প্রস্তাবের ভিত্তিতে স্বায়ত্তশাসিত পূর্ব পাকিস্তানের দার করিয়াছিলাম, পাকিস্তান হইতে বিচ্ছিন্ন হইতে চাহিয়াছিলাম- এরূপ ধারণা
| মারজুক ভুলআমরা এইনবধ পার্কিঝানেৱ কাঠামাের মধ্যে থাকিয়ায় স্বায়ত্তশাসিত পূর্ব পাকিস্তানের দাবী উত্থাপন করিয়াছিলাম। ইহার অর্থ এরপ করা আদৌ সঙ্গত নহে যে, আমরা বিচ্ছিন্নতাবাদী ছিলাম। আমরা শুধু প্রচলিত শাসনতান্ত্রিক পদ্ধতির বিরােধিতা কৰিীয়ছিলাম এবং বলি।ছান লাহাের প্রস্তাবের ভিত্তি: শীদের স্বায়ত্মশাসন দেওয়া হউক=যাহাতে উতই অলেয় সর্বপ্রকার বৈষমাের পরিসমাপ্তি ঘটে; কিন্তু ইহার অর্থ এক্সপ কখনও হইতে পারে না যে, আমরা বিচ্ছিন্ন হইতে চাহিয়াছিলাম। আমাদের পূর্ণ দাবী এখনও বহাল রহিয়াছে। কিছুক্ষণ নিতির পর জানান আতাউর রহমান খান পূণাস্ত্র বলেন, কথার কথা, যা প্রাদেশিক সরকার কোন ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের কোন সিদ্ধান্তে একমত হইতে না পাছেন ‘এলে ইজার অর্থ আলী ই হয় না যে, পাদশিক সরকার বিHেTহী হইয়া গিয়াছে, বস্তুত মতানৈক্য আর বিদ্রোহে, আকাশ-পাতাল খাবধান। অতঃপর তিনি তাহার অপর বন্ধুর সহিত আলাপকালে ২৫শে মার্চের বেআইনী আওয়ামী লীগ কর্মীদের ‘অরাজকতামূলক কার্যকলাপের উল্লেখ করেন। ইন্নাত অনুমিত হয় যে, অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগ প্রকৃতপক্ষে দেশকে খবিখও কণার ন্য প্রস্তুত হইয়াছিল এবং ভারত তাহার পৃষ্ঠপােষকতা করিতেছিল।১১৫।
সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ডেমােক্র্যাটি পার্টির সভাপতি নুরুল আমিন পুনরায় লমিঃ ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বাসভবনে লেখা করেন। এ সময় পিভিপি-র অপর নেতা
________________________________________
মাহমুদ আলী এবং নাসির উল্লাহ খান নূরুল আমিনের সঙ্গে ছিলেন ১১৬ তাঁরা কি কি বিষয় নিয়ে আলােচনা করেন সংবাদে সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। এদিকে মুসলিম লীগ নেতা খান আবদুল কাইয়ুম খান নিজেদের মধ্যে সকল ভেদাভেদ ভুলে শক্রর বিরুদ্ধে সকল য়ার্কিকে এক হওয়ার আহবান জানান।
সেপ্টেম্বর মাসেই নিউইয়র্কে জুমার নামাজের জামাতে এডভােকেট এ. টি সাদা বললেন, “বাংলাদেশ আন্দোলন ইসলাম বিরােধী ষড়যন্ত্র।” পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হয় ।
“জাতিসংগে, ২৬শে সেপ্টেম্বর (পিপি)। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাকিস্তানী প্রতিনিধি দলের সদস্য জনাব এ. টি সাদী গত শুক্রবার জাতিসংঘ ভবনের নামাজের কক্ষে অনুষ্টিত জুমার নামাডের জামাতে বক্তৃতাকালে যে ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিত্রে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে দেশের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য আসতে হয় তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন এবং বলেন যে, তথাকথিত ‘বাংলাদেশ’ আন্দোলন একটি ইসলাম বিরােধী ষড়যন্ত্র।
তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে ধর্মীয় নেতারা ভারতীয়দের সীমান্তে তৎপর তথাকথিত মুক্তিবাহিনীর বিশেষ শিকারে পরিণত হচ্ছেন। এ-প্রসঙ্গে তিনি মওলনা মাদানীর হত্যার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণ নিষ্ঠাবান মুসলমান এবং তারা যে কোন হামলার হাত থেকে তাদের আবাসভূমি রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করবে।”১১৮ | পিডিপি নেতা জাতিসংঘে পাকিস্তানি দলের দলনেতা মাহমুদ আলী সাধারণ পরিষদে ভায় বক্তৃতায় ‘আভ্যন্তৰীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ হইতে ভারতকে নিবৃত্ত করার আহ্বান জানান। সংবাদে বলা হয় ; | জাতিসংঘ, ২৮শে সেপ্টেম্বর |-পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের নীতি পরিহার করার উদ্দেশ্যে ভারতের উপর প্রভাব বিস্তার করার জন্য পাকিস্তান গতরালে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিকট অনুরোধ করিয়াছে। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘর্ষ এড়াইতে হইলে ইহা রক্ষা করা প্রয়ােজন। | জনাৰ দানের অধিকার প্রয়ােগ করিয়া পাকিস্তানী প্রতিনিধিদলের নেতা জনাব মাহমুদ অালী ৯৩০ সদস্যবিশিষ্ট সাধারণ পরিষদে বলেন যে, ভারত পূর্ব পাকিস্তান-ভারত সীমান্তকে সশস্ত্র সংঘর্যের মঞ্চে পরিণত করিয়াছে এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সকল প্রকার সামরিক ট্রেনিং দান ও সাহায্য করিতেছে। পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতীয় পররাষ্ট্র উজার সর্দার শরণ সিং গতকাল সকালে যে ভাষণ দেন উহার জৰাৰ দানের জন্য লিৰি মাহমুদ আলী এপরীকালীন অধিবেশনে বক্তা সেন। | উনার মাহমুদ আলী বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম ও বরাবর পূর্ব পাকিস্থান সীমান্তে এখন প্রতিদিনই গােলাগুলি বর্ষণ চলিতেছে। উক্ত এলাকায় নিয়মিত ভারতীয় সৈন্যের সংখ্যা দুই লক্ষে বুঙ্গি ‘রা হইয়াছে। ভারত সরকার তথাকথিত মুক্তিবাহিনীতে অস্ত্র সরবরাহ ও ট্রেনিং দান করিকেছে।
এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানী দলের নেতা বিদেশী পত্রিকার রিপাের্টের উদ্ধৃতি দিয়া সর্দার শরণ সিংকে স্মরণ করাইয়া দেন যে তিনি নিজেই ভারতীয় পার্লামেন্টে ঘােষণা করিয়াছেন যে, মুক্তি বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য ভারত সম্ভাব্য সৰ কিছু করিতেছে। তিনি বলেন, আমি জানি শাঁ ভারতীয় পররাষ্ট্র উজীর এই অভিযােগ অঞ্জনের জন্য পুনরায় বক্তৃতা মঞ্চে অবতীর্ণ হইবেন কিনা।’
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রাচণ, জাতিসংঘ সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইন লংঘন কবিয়া ভারত পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ কৱিষয়ছে। সমস্যার সমাধানের জন্য পাকিস্তান যে চেষ্টা চালাইয়াছে সদস্য দেশগুলি সেই সম্পর্কে অবগত আছেন বলিয়া জনাব মাহমুদ আলী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান যে ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হইয়াছে, কোন দেশই সেই ধরনের সমস্যা হইতে মুক্ত নহে। তিনি বলেন, পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু হিংসাশ্বক কার্যকলাপ সমানে চলিতে থাকে। হিংসাত্মক উপায়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ার চেষ্টা করিয়া সাধারণ নাগরিকদের জীবনকে বিপন্ন করিয়া তােলা হয়। তিনি বলেন, পাকিস্তান সরকার শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করিলে সঙ্গে সঙ্গে ভারতের প্রতিনিয়া জরু হয়। | সেই সময় কোন উক্ত সমস্যা ছিল না। এই ব্যাপারে ভারতের উদ্দেশ্য ছিল খুবই স্পষ্ট এবং সে নিজেই তাহা স্বীকার করিয়াছে। জনাব মাহমুদ আলী দৃঢ়তার সহিত ঘােষণা করেন, আমরা একটি অস্ত্র ও স্বাধীন জাঙি হিসাবে প্রতিবেশীদের সহিত শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করিতে বদ্ধপরিকর।
| পাকিস্তানী উদদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পথ সুগম করার জন্য পাক সরকার যে সকল বাবস্থা গ্রহণ করিয়াছেন জনাব মাহমুদ আলী এহিৰ ৰায় উহা পুনরুল্লেখ বলেন। এই প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান উদ্বাস্তুদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের যে আহবান জানাইয়াছেন জনাব মাহমুল অংশা উহারও উল্লেখ করেন।
| “পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন না হইলে উদ্বাস্তুদের ফেরত দেওয়া হইত না”- এই মর্মে ভারতীয় দেশরক্ষা উজীর যে বিবৃতি দিয়াছিলেন জনাব মাহমুদ আলী উহার উজতি দিয়া বলেন যে, তিনি সুস্পষ্টভাবে বলিতে চান যে, ৩াহার সরকার দেশের আর্মিীকে বিপন্ন হইতে দিতে পারেন না।১১১৯) | ঢাকাতে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম বলেন, পূর্ব পাকিস্তান পিপলস পার্টির কোন ভিত্তি নেই। ২৫ মার্চের পর এ বছর বায়তুল মোকাররম থেকে জামায়াতের প্রথম র্যালীতে অধ্যাপক গােলাম আযম বলেন, পিপলস পার্টির প্রধান ও পূর্ব পাকিস্তানের কটমান অবস্থার জন্য দায়ী। নি বলেন গত ছয় মাসে মিঃ ভুট্টো পূর্ব পাকিস্তানের নিণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে ভুলে গিয়েছেন। কিন্তু যখন উপ-নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে তখন মিঃ ভূয়া একজন পরিবর্তিত মানুষ হিসেবে আমাদের জন্য চোখের পানি ফেলছে। | ঢাকা শহর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে এই C]ালী আয়ােজিত হয়। অধ্যাপক গোলাম সারওয়ার এতে সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন এস, এম এইচ মামুন, মাহবুবুর রহমান এহর, রুহুল কুদুস এবং এম, এ রশিদ। তিনটি ভাগ। এপিলি উল্লেখ করে দেশের বর্তমান অবস্থার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অধ্যাপক গোলাম আযম দেশের বর্তমান অবস্থা জন মুসলিম লীগের তিন ভাগকে দায়ী করেন।
প্রথমত: তিনি যে সকল রাজনৈতিক নেতাদের কথা পালন বাবা! নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। তারা বন্ধুকের নলেই ক্ষমতা পরিবর্তনের কথা বলেন। এই ধরনের শ্রেণীকরণের তালিকায় আছেন ন|Tপের মওলানা ভাসানী, পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আতাউর রাহমান, অধ্যাপক মুজাফফর আহম্মদ ও তার অনুসারীরা।
দ্বিতীয়ত: তিনি পিপলস পাটি প্রধান ভূট্টোকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ভূষ্টা মার্চের পর থেকে এই প্রলেশকে গুরুত্ব দেননি, কিন্তু হঠাৎ করেই এখন খুব ভালােবাসা সেখানে। উপনির্বাচনের ঘােষণা নিলে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি জোর ভালােবাসা উন্মোচিত হয়। অধ্যাপক গোলাম আযম বলেন, ভূয়া এই অঞ্চলের অবস্থা বােঝার জন্য একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছেন।”
জামাত আমীর বলেন পিপলস্ পাটি পূর্ব পাকিস্তানের শূন্যের কোঠায়। তাদের
জামাত হলাে প্রতিক্রিয়াশীল দল পিপিপি সদস্যদের এই বক্তব্যের সমালােচনা করে অধ্যাপক গোলাম আযম বলেন স্পিন্সিপি বি আওয়ামী লীগ ও এমপিসহ অন্যাসের প্রগলি বিবেচনা করে। তিনি পিপিপি চেয়ারম্যানকে তার দলকে কলকাতা পাঠাতে বলেন, কেননা যেখানে প্রগতিশীল” বাস করে।
তৃতীয়ত; তিনি দেশের বর্তমান অবস্থার জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের অপূরণশী কাজ এবং বিলুপ্ত আওয়ামী লীগের চরমপন্থীদের দায়ী করেন। ভারতে যাওয়া আওয়ামী লীগের চরমপন্থীদের সমালােচনা করে গােলাম আযম বলেন এতে প্রমাণিত হয় যে, ভারত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দুষমে সহায়তা করছে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই। অধ্যাপক গোলাম আযম বলেন, তার দল দেশের স্বাক্ষরিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। | সায় ভারতীয় অমাসনের তীব্র নিন্দা জানানাে হয়। সকল শোষণ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ইসলামিক সংবিধান দাবী করা হয়।১২০
জামাতের মজলিসে শুরা অবরের প্রথম সপ্তাহে জানালাে যুদ্ধের পরিণতির জন্য ভারত সম্পূর্ণভাবে আয় থাকবে। পূর্ব পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর মঞ্জলিশ-ই-শুরা ভারত সৱকাৰকে সওক করে দিয়ে বলে, মনি ভাৱত পাকিস্তান প্রদেশের উপর তাদের আক্রমণ বন্ধ না করে তাহলে যুদ্ধের পরিণতির জন্য সে দায়ী থাকবে। ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয় যে, যদি বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে তাহলে ভারতীয় প্রবেশখারও যুদ্ধের উচ্চ স্বরে প্রকাশিত হবে।
মজলিসে শুরার দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে জামাতের প্রাদেশিক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এনি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে বলেন, সীমান্ত জেলাগুলােতে ভারতীয় সৈন্য বাহিনী পুনরায় আক্রমণ চালিয়ে জনগণের জীবন ও মালামালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে। মজলিস-ই-শুৱা আরও জানায় যে, ভারতীয় সরকারই পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে এবং শরণার্থী শিৰিৱেৰ নামে ৩ লাখ শিশুকে হত্যা করেছে। আরও বলা হয় যে, ভারত এসব শরণার্থীদের একসময় তাদের মাতৃভূমিতে পাঠিয়ে দেবে যখন শরণার্থীদের সীমাহীন দুঃখ কষ্টের সীমা থাকবে না।”১৯১
এদিকে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শুরা তৃতীয় দিনের মতো টাকায় মিলিত হবে। আসন্ন উপনির্বাচনে এংশগ্রহগেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ কৰে। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রাদেশিক আমীর অধ্যাপক গােলাম আযম ১২২
অপরদিকে পূর্ব পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর কার্যকরী কমিটি জাতির জন্য একটি সংবিধানের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে। ঢাকার পার্টি অফিসে আয়ােজিত সভায়
________________________________________
সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক গোলাম আযম। সভাপতি গােলাম আযম বলেন যে, কিছু মৌলিক নিয়ম নীতি ও বৈধ কাঠামাের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের তত্ত্বাবধানে শীঘ্রই সংবিধান প্রণীত হবে এবং অবশ্যই সংবিধানের মূলমন্ত্র হবে পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ। এই সায় আরাে উপস্থিত ছিলেন মওলানা আবদুর রহিম, জামায়াতে ইসলামীর ডেপুটি অমীৱ প্রাদেশিক শিক্ষামন্ত্রী আক্কাস আলী খান এবং প্রাদেশিক রাজস্ব মত্রী মওলানা এ, কে, এম, ইউসুফ।১২৩ | খান আবদুল কাইয়ুব খান ডাক্তাতে বললেন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ইসলাম এবং পাকিস্তানের আদর্শের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তিনি বলেন, স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলাে শিক্ষার্থীদের এমন দর্শনে তৈরী করছে- মা পাকিস্তান রাষ্ট্রের মূল আদর্শের বিরােধী। তিনি বলেন, পুরাে শিক্ষা ব্যবস্থাৱই পরিবর্তন প্রয়োজন। কারণ বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা দেশের একতার পরিপন্থী । তিনি আরো বলেন, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন শিক্ষককে নিয়ােগ দেয়া যাবে না- যিনি পাকিস্তানের আদর্শে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন ভাৱত পূর্ব পাকিস্তানে অনুপ্রবেশকারীদের পাঠিয়ে পাকিস্তানি আদর্শে বিশ্বাসী লােকদের হত্যা করছে, যােগাযােগ বাবস্থা ধ্বংস করছে। তিনি দুস্কৃতিকারী ও ২াংসকারীদের সমূলে উৎপাটনের জন্য সরকারকে আরো তৎপর হওয়ার আবেদন জানান। তিনি বলেন, যারা পাকিস্তান এবং ইসলামের অক্ষর্শে বিশ্বাস করে না তাদেরকে দেশ তাগি
তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দল আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের নামে দেশের সংহতির বিরুদ্ধে কাজ করছে। তিনি আরাে বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ উদ্দ্যোগ সত্ত্বেও হিন্দুরা মুসলমানদের সঙ্গে কখনাে একাত্ম হবে না। খান এ, সপুর তার নাস্তায় বলেন, কাউয়ুম খানই প্রথম ব্যক্তি যিনি বিলুপ্ত আওয়ামী লীগের দু-দফার বিরােধিতা করেন। তিনি বলেন, যে মূলনীতির উপর পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত তাকে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ দিয়ে ভাঙ্গা যাবে না।১২৬ এদিকে কনভেনশন মুসলিম লীগ সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী ভাৱতীয় হুমকি মােকাবেলায় সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানান।”১২ই।
এ সময় উপনির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে যোগাযােগ, তৎপরতা লক্ষ্য করা গেল। শেষ পর্যন্ত দু’টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝােতা প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ পাওয়া যায় দৈনিক আজাদ পত্রিকায়। পত্রিকায় বলা হলো :
‘পাকিস্তানের সংহতি ও আদর্শে বিশ্বাসী ৬টি রাজনৈতিক দল পূর্ব পাকিস্তানের আসন্ন প্রাদেশিক ও জাতীয় পরিষদের উপনির্বাচনে সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থী পাড় করানাের ব্যাপারে একমত উপনীত হইয়াছেন। এই ৬টি রাজনৈতিক দল হইতে পিডিপি, জামাতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম, কাউন্সিল লীগ, কনভেনশন লীগ ও কাউয়ুমপন্থী মােছলেম লীগ।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় পিডিপির সভাপতি জনাব নুরুল আমীনের ঢাকাস্থ বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই ৬টি রাজনৈতিক দল উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থীদের একটি সর্বসম্মত প্যানেল প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়ছেন। বৈঠকে পিডিপির জনাব নুরুল আমীন, জামাতে ইসলামীর অধ্যাপক গােলাম আযম, নেজামে ইসলামের মওলানা সিদ্দিক
________________________________________
আহমদ, কাউন্সিল লীগের সৈয়দ ওয়াজা খয়েরউদ্দীন, কাইয়ুম লীপের খান এ সবুর ও কতেনশীন লীগের জনাব এম, এ, মতিন উপস্থিত ছিলেন। ২৮
এই সমঝোতার পর পিজিপি সভাপতি নুরুল আমিন আসন্ন প্রাদেশিক পরিষদের উপনির্বাচনে দু’দলের সমর্থিত প্রার্থীদের নাম ঘােষণা করেন। এসব প্রার্থী নির্বাচনে প্রাদেশিক ছ’জন মন্ত্রী ও যুক্ত ছিলেন। মীরা হলেন রংপুর কনভেনশন মুসলিম লীগের মােহালে আবুল কাসেম, কুষ্টিয়ার মোহাম্মদ নওয়াজীশ আহমেল, পাবনায় নেজামে ইসলাম নেতা মওলানা মােহাম্মদ ইসহাক, বাখেরগঞ্জের পিড়িপি নেতা মােহাম্মদ আখতাৱ উদ্দিন আহমেদ, কুমিল্লার কাইয়ুম পন্থা মুসলিম লীগ নেতা মােহাম্মদ মজিবুর রহমান এবং সিলেটের পিভিপি নেতা জসীম উদ্দীন। প্রাদেশিক পরিষলে মােট আসন ১৯৩। কিন্তু সমন্বিত প্রার্থীর নাম দেওয়া হয় ১৭৭।
প্রাদেশিক পরিষদের উপনির্বাচনে দলের সমন্বিত প্রার্থীর নামের তালিকা। ১. পি-ই-1 রংপুর- মােশাররফ হােসেন আলিয়াদ লাৰু মিয়া (সি, এম, এল) ২. পি-ই-3 রংপুর-ill হাজী অফিতাব হোসাইন (জা, ই)। ৩, পি-ই- বাংপুর-iv সণীরউদ্দিন হাসমী (পি. জি. পি)। ৪, পি-ই-5 রংপুর মােঃ আব্দুল মান্নান খান (প, ডি. শি)। ৫. পি-ই-6 রংপুর মােঃ জসিম উদ্দিন আহমেল (সি, এম, এল. ৬. পি-ই-7 রংপুর-vi প্রিন্সিপাল শাহরুল ইসলাম (জা, ই} . ৭, পি-ই-৪ রংপুর-viii মােঃ আয়ের উদ্দিন খােন্দকার (পি. ডি. পি) ৮. পি-ই-II রংপুর-xi মিঃ সেঃ আকমল হােসেন কন, মু. লী) ৯, পি-ই-12 রংপুর-xii মিঃ আহমেদ আলী সরকার (সি, এম, এল) ১০. পি-ই-i3 রংপুর-xiii মিঃ সামছুল হক (জ. ই)। ১১. পি-ই 14 রংপুর xiv আলহাজ্ব পরিকদ্দিন আহমেল (কনভেনশন) ১২. পি-ই-15 রংপুর-xv মিঃ আবুল কাসেম (সি. এম, এল) ১৩, পি-ই-18 রংপুর-xvi মিঃ মাহবুবুর রহমান (কাইয়ুম মু. লী) ১৪. শি-ই=19 রংপুরxx মিঃ তালেনি মল (জা ই). ১৫, পি-ই-23 দিনাজপুর- মিঃ তাইবুল হক (সি, এম, এল)। ১৬, পি-ই-24 দিনাজপুর- ভাঃ শফিউর রহমান (ভা, ই)। ১৭. পি-ই-25 দিনাজপুর-iii মিঃ মােঃ ইসমাইল (জা, ই)। ১৮. পি-ই-27 দিনাজপুর-vi মিঃ মােঃ আব্দুল বশির মিয়া (জা, ই)। ১৯, পি-ই-28 দিনাজপুর- v মােঃ রিয়াজুল ইসলাম (পি, ডি, পি)। ২০. পি-ই-30 দিনাজপুর মােঃ কামরুজ্জামান (কন, মু. লী)। ২১, পি-ই-31 দিনাজপুর-ik মোঃ নূরুল হুদা বেপারী (কন, মু. লীগ) ২২. পি-ই-3ও বগুড়া মােঃ আব্দুল আলীম কন)। ২৩. পি-ই-34 বগুড়া- মোঃ তমিরউদ্দিন সরকার ( জ, ই) ২৪. পি-ই-96 বগুড়া-lv মােঃ মুরাদুজ্জামান (কাইয়ুম)। ২৫, পি-ই-37 বড় ডঃ এ চান (সি, এম, এল)।
________________________________________
২৬. পি-ই-39 বগুড়া-wif মােঃ এ, কে, এম ইব্রাহিম (নে, ই)। ২৭. পি-ই-41 বগুড়া- ix মােঃ এস, এম আজিজুল হক (পি, ডি, পি) ২৮, পি-ই-42 রাজশাহ্য জ্ঞাঃ ইন্তাজ আলম (সি, এম, এল)। ২৯, পি-ই-43রাজশাহী মােঃ ওবায়দুল্লাহ (জা, ই)। ৩০. পি-ই-44 রাজশাহী- মােঃ ইয়াব আলী, এডভােকেট (জা, ‘ই) ৩১. পি-ই-48 রাজশাহী মােঃ আব্দুল সালাম চৌধুরী (জা, ই) ৩২. পি-ই-49 রাজশাহী-vril মােঃ ফাৱাজউদ্দিন (নে-ই) ৩৩, পি-ই-60 রাজশাহী-x মিঃ ফালুর রহমান (সি, এম, এলে)। ৩৪. পি-ই-51 রাজশাহী-x মােঃ এস এ, এম ইউসূফ খান (কাইয়ুম) ৩৫. পি-ই-52 রাজশাহী-xii মিঃ আব্দুস সােবহান (পি. ভি, পি)। ৩৬. পি-ই-53 রাজশাহী-xli মিঃ এস, এ, এম ফারুক (কাইয়ুম)। ৩৭. পি-ই-54 রাজশাই-x মােঃ আইনউদ্দিন (কন) ৩৮, পি-ই-56 রাজশাহী-xv মােঃ কাউদ্দিন (ই) ৩৯, পি-ই-57 রাজশাহী-xv মােঃ আব্দু ওয়াহাব (সে-ই)। ৪০. পি-ই-559 পাবনা- মােঃ সৈয়দ আসাদ উল্লাহ সিরাজী (কন) ৪১, পি-ই-(5) পাবনা গোলাম আযম (কাইয়ুম)। ৪৯. পি-ই-62 পাবনা=tv মােঃ মমতাজউনি সরকার (কাইয়ুম) ৪৩, পি-ই- পাবনা প্রিন্সিপ্যাল আব্দুল মজিল (পি, ডি, পি) 48, পি-0) পাবনা মফা আলী (সি, এস, এল)। ৪৫. পি-ই-48 পাবনা মাওলানা শফিউদ্দিন ইয়াহিয়া (কন)। ৪৬, পি-ই-9 পাবনা-xi মিঃ খুদা বক্স খান (জা, ই) ৪৭, পি-ই-70 পাবনা মাওলানা মােঃ ইসহাক (নেই) ৪৮, পি-ই-71 কুষ্টিয়া মােঃ নূরুল ইসলাম (জা, ই) ৪৯, পি-ই-72 কুষ্টিয়া-ii মোঃ ইয়াকুব আলী (কাইয়ুম) ৫০, পি-ই-74 কুষ্টিয়া-v মিঃ আব্দুল কাইয়ুম (জা, ই) ৫১. পি-ই-75 কুষ্টিয়া মিঃ খালিদুজ্জামান (সি, এম, এল)। ৫২. পি-ই-76 কুষ্টিয়া-vi মিঃ মফিজুল্লাহ চৌধুরী (জা, ই) ৫৩. পি-ই-7 কুষ্টিয়া-viii মােঃ নওয়াদেল আহমেদ (সি, এম, এল) ৫৪. পি-ই-78 যশাের- মাওলানা নূরন্নবী সামদানী(জা, ই)। ৫৫. পি-ই-79 যশাের- মিঃ আবু নাসের মােঃ আনসারউদ্দিন (জ, ই) ৫৬, পি-ই-৪০ যশাের মােঃ মােজাম্মেল হক (জা, ই)। ৫৭. পি-ই-82 যশাের মােঃ তাৰিদুর রহমান (সি, এম, এল) ৫৮, পি-ই-৪3 যশাের মিঃ আব্দুর রশিদ (কাইয়ুম) ৫৯, পি-ই-৪4 যশােনা-vii মিঃ এস, এম মকবুল আহমেদ (পি, ডি, পি) ৬০, পি-ই-85 যশাের-uli মিঃ মশিউল আযম (জ, ই) ৬১. পি-ই-85 যশাের-xi মিঃ হারেশউদ্দিন আহমেদ (কাইয়ুম) ৬২. পি-ই-৪7 যশাের-x মােঃ রুস্তম আলী (পি, ডি, পি)। ৬৩, পি-ই-৪০ যশাের-xi কাজী এসহিয়া (কন)
________________________________________
৬৪, পি-ই-X) যশাের-x সায়িদ মােহাম্মদ আলী (সি, এম, এল) ১৫. পি-ই-91 খুলনা- মিঃ এ. এ. এম জলিল (পি. জি. পি) ৬৬, পি-ই-2 খুলনা-৪ মিঃ সারওয়ার জাহান চৌধুরী (কাইয়ুম) ৬৭, পি-ই-95 খুলনা মিঃ হাফিজ আব্দুল করিম (নে, ই)। ১৮. পি-ই-9৪ খুলনা মিঃ হামিদুর রহমান খােলদার কাইহান) ৬৯, পি-ই-104 খুলনা—xiv মিঃ আনসার আলী (জা, ই) ৭০, পি-ই-109 পটুয়াখালী ডঃগ্রাফউদ্দিন (কন) ৭১. পি-ই-i10 পটুয়াখালী- যিঃ লুৎফর রহমান (কাইয়ুম) ৭২. পি-ই-117 পটুয়াখালী—vid হাফিজ রহমান (কাইয়ুম) ৭৩, পি-ই-ll৪ বাকেরগঞ্জ—i মিঃ আকতার উদ্দিন আহমেদ ঝন)। ৭৪, পি-ই-i19 বাকেরগঞ্জ via মিঃ আব্দুল আজিজ তালুকদার (পি, ডি, পি) ৭৫. পি-ই-120) বাকেরগঞ্জ—x মাওলানা আব্দুল মতিন (নে, ই)
৬. পি-ই-121 বাকেরগঞ্জ-মিঃ এ. কে ফজলুল হক চৌধুরী (পি, ডি. পি) ৭৭. পি-ই-124 বাকেরগঞ্জ-xiii মিঃ আব্দুল জলিল খান (কাইয়ুম) ৭৮, পি-ই-126 বাকেরগঞ্জ— মাওলানা ফজলুর রহমান (জা, ই)। ৭৯. পি-ই-129 বাকেরগঞ্জ-৫viii মিঃ সুলতান মাহমুদ (কন)। ৮০. পি-ই-130 টাঙ্গাইল মিঃ ফজলুর রহমান তালুকদার (সি, এম, এল) ৮১, পি-ই-131 টাঙ্গাইল—ji মিঃ মজিবুর রহমান (জা, ই) ৮২. পি-ই- 132 টাঙ্গাইল মির্জা আমজাদ হােসাইন (কাইয়ুম) ৮৩, পি-ই-13ও টাঙ্গাইল—v মিঃ শহীদুল্লাহ খান ইউসুফ হা (জা-ই)। ৮৪, পি-ই-134 টাঙ্গাইল-vi হাকিম হাবিবুর রহমান (কন) ৮৫, পি-ই-136 টাঙ্গাইল—vi৷ মিঃ হাফিজউদ্দিন আহমেদ (পি. ভি. পি) ৮৬, পি-ই-137 টাঙ্গাইল—vli মিঃ আব্দুল হাজি খালাকি (মে-ই) ৮৭, পি-ই-139 ময়মনসিংহ জাঃ রফিকউদ্দিন (সি, এম, এল) ৮৮, পি-ই–14। ময়মনসিংহ— অধ্যাপক আব্দুল চানি (নে, ই) ৮৯, পি-ই-140 ময়মনসিংহ খন্দকার নুরুজ্জামান (পি, ডি, পি) ৯০, পি-ই-144 ময়মনসিংহ—v ডঃ সামছুল হক (কন) ৯১. পি-ই-16 ময়মনসিংহ-vil হাজী আব্দুর রহমান। ৯২. পি-ই-147 ময়মনসিংহ—x মােঃ হাসমত আলী (সি, এম, এল) ৯৩, পি-ই-148 ময়মনসিংহ—X মিঃ জুলমত আলী খান (পি. ডি. পি) ৯৪. পি-ই-19 ময়মনসিংহ—xi মিঃ এ. এস. এম নজমুল হুদা (পি. ডি. পি) ৯৫, পি-ই-l52 ময়মনসিংহ—xy মাওলানা আব্দুল জব্বার (জা-ই) ৯৬. পি-ই-153 ময়মনসিংহ-৮ মিঃ কাসেম আলী (পি, ডি, পি) ৯৭. পি-ই-155 ময়মনসিংহ-xvill মিঃ মােঃ হাতেম আলী (পি. জি. পি) ৯৮, পি-ই-156 ময়মনসিংহ—xix মিঃ রুহুল আমিন খান (নে, ই)। ৯৯, পি-ই-157 ময়মনসিংহ—xx অধ্যাপত আলাউদ্দিন আহাল (কাইয়ুম) ১০০. পি-ই-158 ময়মনসিংহ—xxi মােঃ আলী ওসমান (নে, ই)। ১০১. পি-ই-163 ময়মনসিংহ—xxv মােঃ হেদায়েত উল্লাহ (জাই)
.
________________________________________
১০২. পি-ই= 104 ময়মনসিংহ-xx মােঃ আল আলা মিনুমিয়া) (কন)। ১০৩, পি-ই-16ময়মনসিংহ—xxix মিঃ আৰু সায়্যিল ওয়াহিদ খান (পি, ডি. পি) ১০৪. পি-ই- 175 ঢাকা-৮ মি। আব্দুল কাদির (সি, এম, এল) ১০৫, পি.ই-17 ঢাকা মিঃ সায়দুর রহমান (সি, এম, এল) ১০. পি-ই-177 ঢাকা —vi| আব্দুল কাইয়ুম মিয়া (কাইয়ুম)। ১০৭, পি-ই- 18) ঢাকা-x মিঃ নুরুল ইসলাম চৌধু! (পি, ডি. শি) ১০৮, পি-ই= 18] ঢাকা-x। মিঃ ফজলুল বারী (সি, এম, এল) ১০৯, পি-ই- 182 ঢাকা—x। মিঃ মােঃ সিরাজউদ্দিন (সি, এম, এল) ১১০. পি-ই=183 ঢাকা-xll| মিঃ আব্দুল খালেক (জাই) ১১১, পি-ই-184 ঢাকা—xiv ডাঃ এ, এইচ ওসমান আলী (পি. ডি. পি) ১১. পি-ই- 185 চাকা—xv মিঃ মাহবুবুর রহমান গুই (জা-ই)। ১১৩, পি-ই- 187 ঢাকা-xvll মিঃ আসগর হোস। ইন (ফি, এম, এল) ১১৪, পি-ই- 199 টাকা—xvll| আলহাজ্ব মোহাম্মল আকিল (নে, ই)। ১১৫, পি-ই=181 কি-xxi মিঃ ওবায়দুল কবির (পি, ডি, পি) ১১৬. পি-ই-102 চাকা—xxil মােঃ সুলতানউদ্দিন খান (কাইয়ুম)। ১১৭, পি-ই-104 জাকা—xxiv মিঃ আব্দুল হামিদ (নে. ই)। ১১৮, পিই= 195 টাকা XXV অধ্যাপক মলিলুহি (জ. ) ১১৯. লি-ই- 104 কা—XVII মােঃ এম এ ওয়াহের (ক) ১২০, পি-ই= 1100 টাকা XXLX মিঃ মনজু আলী (লি, ডি, পি). ১২১, পি-ই-203 ফরিদপুর iii মিঃ খলিলুর রহমান ঠাকুর (পি, ডি, পি) ১৯২. পি-ই-20-ফরিদপুর-4x মাওলানা শাহ্ মোঃ জাকির (Wা, ই)। ১২৩. পি-ই-202) ফরিদপুর—মেয়ঃ আলাউদ্দিন খান (জ, ই)। ১৯৪, পি-ই-20? ফরিদপুর | অধ্যাপক সায়্যিদ মােহাম্মদ আলী (জা, ই) ১২৫, পি-ই-20049 ফরিদপুর—x মিঃ মশাররফ হোসেন। ১২৬. পি-ই-210 ফরিদপুর—* মিঃ এ. কিউ, এম জয়নাল আবেদীন ১২৭. পি-ই-212 ফরিদপুর Xll মিঃ শারাফাত হােসেন চৌধুরী (পি, ডি, পি) ১২৮, পি.ই-213 ফরিদপুর-xili মােঃ সামছুল হুদা চৌধুরী (পি, জি. পি) ১২৯, পি-ই-217 ফলিপুর—xv// মােঃ শামসুর রহমান (পি. ডি.পি) ১:৩০. পি-ই-218 ফরিদপুর-xvill মােঃ সােলায়মান (পি, ডি, পি) ১৩১. পি-ই- 120 ফরিদপুন—xix মাওলানা সিরাজুল ইসলাম (জা-ই), ১৩২. পি.ই=221 সিলেট | আব্দুল খালেক (পি, জি, পি)। ১৩. পি-ই-222 সিলেট মোঃ আব্দুল মান(জা, ই)। ১৩৪. পি-টু-24 সিলেট মেt Aমুল হোসাইন খান তারা মিয়া (ন) ১৩৫, পি-ই-2:29 সিলেটx মাওলানা হাবীবুর রহমান (জা, ই)। ১৩৬, পি.ই=2:30 সিলেট—xi মোঃ আব্দুল মােত্তালিব চৌধুরী (পি, ডি, পি) ১৩৭. পি. ই-2:31 সিলেট-x। গিয়াসউদ্দিন আব্দুর রব (জা, ই) ১৩৮, পি-ই-2:32 সিলেট-kl| মিঃ মিসিরউদ্দিন (সি, এম, এল) ১৩৯, পি-ই-2:23 সিলেট—xiv মােঃ জসীমউদ্দিন আহমেদ (পি, ডি. পি)
________________________________________
১৪০. পি. ই–2:28) সিলেট—xvi মৌলভী জারিফ আহমেদ (পি, ডি, পি)। ১৪১, পি-ই-236 সিলেট-xvi মােঃ এ, এম আবদুল্লাহ (সি, এম, এল) ৯৪২, পি-ই-237 সিলেট—xx রফিক আহমেল (পি, ডি, পি) । ১৪৩, পি-ই কুমিল্লা l সৈয়দ এ. টি. এম ওবায়দুল্লাহ (পি, ডি, পি)। ১৪৪, পি-ই-243 কুমিরা—i মিঃ আব্দুল গনি মুন্সী (জা, ই)। ১৪৫, পি-ই-244 কুমিল্লা— মিঃ শফিকুর রহমান (পি, ডি, পি) ১৪৬. পি-ই-a45 কুমিল্লা—v মিঃ এ. কে রফিকুল হােসাইন (পি, ডি, পি) ১৪৭. পি-ই-246 কুমিল্লা মােঃ হামিদুল হক (পি, ডি, পি)। ১৪৮, পি-ই-247 কুমিল্লা-vli মােঃ আরকান আলী (লি. ডি. লি) ১৪৯. পি-ই-249 কুমিল্লা আব্দুস সামাদ (পি. ছি. পি) ১৫০, পি-ই-250 কুমিল্লা-x মােঃ মােবারক আলী সৱকায় (কাইয়ুম) ১৫১. পি-ই-252 কুমিল্লা-xil মিঃ নূরুল ইসলাম (সি, এম, এল)। ১৫২. পি-ই-2:54 কুমিল্লা—xiv মােঃ আব্দুল হালিম (পি, ডি. পি)। ১৫৩, পি-ই-2? কুমিল্লা মােঃ হারুনুর রশিদ (নে, ই)। ১৫৪, পি-ই-258 কুমিল্লা–xviii আব্দুল হাকিম (কন) ১৫৫. পি-ই-26) কুমিল্লা-xx মােঃ মজিদুর হক (পি, ডি, পি) ১৫৬. পি-ই-261 কুমিল্লা-xxi মিঃ মজিবুর রহমান (কাইয়ুম)। ১৫৭, পি-হ262 কুমিল্লা-xxli মি৷ অব্দুির রাজ্জাক (সি, এম, এল) ১৫৮, পি-হ-26:3 কুমিল্লা-xxiii মােঃ আব্দুল সালাম (সি, এম, এল) ১৫৯, পি-ই-2কুমিল্লা-xxv মােঃ গােলাম মাওলা চৌধুরী (কাইয়ম) ১৬০, পি-ই-265 কুমিল্লা—xxv মােঃ মাসুদুজ্জামান (জা, ই) ১৬১. লি-ই-26২৪ নােয়াখালী— মােঃ ইব্রাহিম হােসাইন (কাইয়ুম) ১৬২, পি-ই-265) নােয়াখালী—i কাজী আব্দুল খায়ের (নে. ই)। ১৬৩. পি-ই-z7) নােয়াখালী—x কাজী আহমেদ (ক) ১৬৪, পি-ই-272 নােয়াখালী-—vi মােঃ সেরাজুল ইসলাম (কন) ১৬৫. পি-ই-275 নােয়াখালী-ix মােঃ সিদ্দিক উল্লাহ চৌধুরী (পি, ডি, পি) ১৬৬, পি-ই-274 নােয়াখালী—vi মােঃ আব্দুল মতিন (নে, ই)। ১৬৭, পি-ই-26 নােয়াখালী—xমিঃ এমদাদুল হক পি, ডি, পি)। ১৬৮. পি-ই-27 নােয়াখালী—d মােঃ এ, বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী (জা-ই) ১৬৯. পি-ই-27৪ নােয়াখালী-xii মিঃ ফয়েজ আহমেদ (জা, ই) ১৭০, পি-ই-29 নােয়াখালী-xii মিঃ আব্দুল ওয়াদুদ (লা, ই) ১৭১, পি-ই-24। চট্টগ্রাম— মিঃ আব্দুল মালেক (পি, ডি, পি)। ১৭২. পি-ই-284 চট্টগ্রাম-৮ মিঃ মাওলানা আব্দুল মুন্সী (নে, ই)। ১৭৩, পি-ই-28 চট্টগ্রাম— মিঃ মীর মােহাম্মদ সাহেব (জা, ই) ১৭৪. পি-ই-289 চট্টগ্রাম—x মিঃ শারাফত উল্লাহ (কন) ১৭. পি-ই-23 চট্টগ্রাম-xi/ অধ্যাপক খায়রুল বাশার (নে, ই) ১২৭।
________________________________________
এদিকে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও পূর্ব পাকিস্তানে Wাতীয় পরিষদের ৭৮টি খালি আসনের উপ-নির্বাচনে প্রতিম্বন্দ্বী করার জন্য ছয় দল একই সঙ্গে প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্তে পৌছায়। পাকিস্তান ডেমেটিক পার্টি প্রধান নূরুল আমিন এই ঘোষণা দেন। এই ছয় দলের মধ্যে রয়েছে নেজামে ইসলাম পি, এম, এল (কাইয়ুম), পি, এম, এল (কতেনশন), পি. এম, এনি (কাউন্সিল), পাকিস্তান ডেমােক্রেটিক পার্টি এবং পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী
| মােঃ নূরুল আমিন বলেন, প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে যারা তাকে মনােনয়ন দিয়েছেন তারা হলেন-পি, এম, এল (কাইয়ুম) এর সাধারণ সম্পাদক খান এ, সম্পূর্ণ খান, পাকিস্তান মুসলিম লীগ (কনতেনশন) এর সভাপতি এ. কে. এম ফজলুল কাদের চৌধুরী, পূর্ব পাকিস্তান কাউন্সিল মুসলিম লীগের সভাপতি এস কে অরউদ্দিন, জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গােলাম আযম এবং নেজামে ইসলামীর এস, আহমেদ। জাতীয় পৱিষদের জন্য মনােনীত প্রার্থীরা হলেন :
১. এন, ই-২ রংপুর-ff মােঃ ], বাশার (সি, এম, এল)। ২. এন, ই= রংপুর 1% মাঃ এস, ইসলাম (সি, এম, এল)। ৩, এন, ই-১০ রংপুর—x মােঃ সাইলুর রহমান (কিউ, এম, এল) 6. এন, ই-১১ রংপুর_xl জবাউদ্দিন (জা, ই)। ৫. এন, ই-১৩ দিনাজপুর- মকবুলুর রহমান (সি, এম, এল)। ৬, এন, ই-১৪ দিনাজপুর || তমিজউদ্দিন (জ. ই) । ৭, এন, ই-১৫ দিনাজপুর আব্দুল্লাহেল কাফী (জা, ই) . ৮. এন, ই-১৬ দিনাজপুর—v মােঃ রহিমউদ্দিন আহমেদ (পি, ডি, পি) ৯, এম, ই-১৭ দিনাজপুর—x মোঃ এ, কাসেম (জী, ই) ১০. এন, ই-১৯ বহড়ী মােঃ আব্বাস আলী খান (জা, ই) ১১. এন, ই-২০ বগুড়া– মােঃ মসিউল ইসলাম (পি. ডি, পি) ১২, এন, ই-২৪ পাবনা মােঃ এ খালেক ১৩, এন, ই-২৬ পাবনা– মিঃ এম এ মতিন (কনভেনশন, এম, এলি) ১৪. এম, ই-২৮ পবন মিঃ আসগর হােসাইন জাঙ্গল (এম. এল) ১৫, এন, ই-২৯ পাবনা w মাওলানা এ. সােবহান (জা, ই), ১৩. এ, ই-৩০ রাঞ্জশাহী মােঃ খসরুদ্দীন (কনভেনশন) ১৭, এন, ই=৩২ রাউশাহী। মােঃ জসীমউশিন (কিউ, এম, এল) ১৮. এম, ই-৩৩ রাজশাহী-tv মােঃ মমতাজ উদ্দিন (পি, ডি, পি)। ১৯, এন, ই-৩৫ রাজশাহী মোঃ আফাজউদ্দিন (জা, ই) ২০, এন, ই=৩৬ রাজশাহী-vil মােঃ এ সাতার খান (সি, এম, এলি) ২১, এন, ই ৩৯ কুষ্টিয়া আফিউদ্দিন (কিউ, এম, এল) ২২. এন, ই-৪৫ কুষ্টিয়া মােঃ সাল আহমেদ (জ. ই) ২৩, এন, ই-৪১ কুষ্টিয়া | মিঃ মােঃ এ মতিন (জা, ই)। ২৪, এন, ই-৪২ কু -fv মিঃ আজমত আলী (কা, . ল)
।
২৫, এন, ই-৪৩ যশাের- মিঃ এম, এ, রশিদ (পি, ডি, পি)। ২৬. এন, ই-৪৪ যশাের- মিঃ এস রহমান (সি, এম, এল) ২৭, এন, ই-৪৫ যশাের- মিঃ রফিউদ্দিন (কিউ. এম, এল) ২৮, এন, ই-৪৬ যশােরফ খাজা মােহাম্মদ শাহ (নে, ই) ২৯. ক, ৬৭ যশোর মিঃ মশাররফ হোসেন (পি, ডি, পি)। ৩০, এন, ই-6৮ যশাের সায়্যিদ ওবায়েদুল্লাহ (জা, ই). ৩১. এন, ই-৪৯ যশাের will অধ্যাপক সােলায়মান (জা, ই)। ৩২. এন, ই-৫০ খুলনা— মিঃ এ, কে, এম ইউসুফ (জা, ই)। ৩৩, এন, ই-৫৩ খুলনা—ly খান আব্দুস সবুর খান (কিউ. এম. এল) ৩৪, এন, ই-৫৪ সুলনা-২ মােঃ আমজাদ হোসাইন (ক. মু. লী)
৫. এন, ই-৫৮ বাকেরগঞ্জ মােঃ সায়িদ আজিজুল হক (পি, ভি, পি) ৩৬, এন, ই-৬০ বাকেরগঞ্জ— মিঃ আব্দুর রব (ক, মু, লী)। ৩৭, এন, ই-৬২ বাকেরগঞ্জ মােঃ এ, সােবহান (কিউ, এম, এল)। ৩%, এ, ই-৩ বাকেরগঞ্জ শাহ মতিউণ ধহমন (নে, ই)। ৩৯, এন, ই-৬৬ বাকেরগঞ্জ $x এম. এ. রহমান (জা, ই)। ৪০, এন, ই-৭১ টাঙ্গাইল অধ্যাপক গোলাম আযম (জ, ই) ৪১, এন, ই-৭৩ টাঙ্গাইল মােঃ আব্দুল হান্নান (কা, মু. লী) ৪২, নি, ই-৭৫ টাঙ্গাইল ॥ অধ্যাপক হল খালেক (জা, ই) ৪৩, এন, ই-৭৮ ময়মনসিংহ মােঃ ইউসুফ আলী (জা, ই) ৪৪. এন, ই-৮৫ ময়মনসিংহ—x মােঃ শাহাবুদ্দিন (পি, ডি, পি) H৫, এন, ই-৮৮ ময়মনসিংহ-XII মােঃ মহর হক (মে, ২) ৪৬, এন, ই-৯১ মমনসিংহ-xvi মােঃ মজিবুর রহমান (কিউ, এম, এল) ৪৭, এন, ই-২ ময়মনসিংহ-xvা মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন (পি, ডি, পি)। ৪৮. এন. ই-৯৩ ময়মনসিংহ—xvill মােঃ জিবুর রহমান (কিউ. এম. এল) ৪৯, এন, ই-৯৬ ফরিদপুর মােঃ ইউসুফ আলী চৌধুরী (পি, ডি. পি)। ঐ০, এন, ই-৯৭ ফরিদপুর মােঃ আব্দুর রহমান মুকুল (ক, মু. লী)_ ৫১, এন, ই -৯৯ ফরিদপুর —vi মিঃ আলীমুজ্জামান চৌধুরী (পি, ভি, পি)। ৫২. এন, ই – ১০৭ ঢাকা – মােগ্ন আহমেদ আলী মণ্ডল (পি, ডি, পি)। ৫৩, এন, ই – ১০৮ ঢাকা — অধ্যাপক ইউসুফ আলী (জা, ই)। ৫৪, এন, ই = ১১৩ ঢাকা —x মােঃ শহীদুল্লাহ (ক, মু লী) , ৫৫. এন. ই- ১১৫ ঢাকা —x মােঃ মেহতাব উদ্দিন (কিট, এম, এস) ৫৬, এন, ই- ১১৭ ঢাকা-xiv খাজা খয়েরউদ্দিন (সি, এম, এল) ৫৭, এন, ই-১১৯ ঢাকা — মিঃ শামসুদ্দীন আহমেদ (পি, ডি, পি)। ৫৮, এন, ই – ১২০ সিলেট — মােঃ নাসির উদ্দিন চৌধুরী (পি, ডি, পি)। ৫৯, এম, ই – ১২১ সিলেট — মিঃ কামরুল আহসান (নে, ই)। ৬০. এন. ই – ১২২ সিলেট — মিঃ ফজলুল হক (পি. ডি. পি) ৬১, এন, ই -১২৩ সিলেট – হাজী হাবিবুর রহমান (কন, মু. লী) । ৬২, এন, ই- ১২৫ সিলেট — মিঃ শাহিদ আলী (কন, মু. লী)
________________________________________
৬৩, এন, ই = ১২৭ সিলেট -in মিঃ মাহমুদ আলী (পি, ডি, পি)। ৬৪. এন. ই-১২৯ সিলেট —x মিঃ গােলাম জিলানী চৌধুরী (পি, ডি. পি) ৬৫. এন, ই- ১৩১ কুমিল্লা — মিঃ এম আশরাফ আলী (নে, ই)। ৬৬, এন, ই – ১৩২ কুমিল্লা ii মিঃ শফিকুল ইসলাম (ক, মু. লী)। ৬৭, এন, ই-১৩৫ কুমিল্লা — শামছুল হক (ক, মু. লী) ৬৮, এন, ই-১৩৬ কুমিল্লা — মিঃ আলী আকবর (ক. মু. লী)। ৬৯. এন. ই=১৩৮ কুমিয়া —vi৷ মিঃ রমিজ উদ্দিন (পি, ডি. পি) ৭০. এন-ই-১৪৩ কুমিল্লা – xiii মিঃ দলিলুর রহমান (পি. ডি. শি)। ৭১, এন, ই -১৪৪ কুমিল্লা – xiv মাওলানা আব্দুল হক (নে, ই)। ৭২, এন, ই – ১৪৭ নােয়াখালী — মােঃ আব্দুর জব্বার দ্বন্দর (পি, ডি, পি)। ৭৩. এ, ই ১৪৭ নােয়াখালী মােঃ আবদুল হক (৯, ৪. লী) ২৪. এন.ই ১৫০ নোয়াখালী — মােঃ শকাবুলাহ (জা, ই) ৭৫. এন, ই-১৫১ নােয়াখালী wif মােঃ আব্দুণ এয়াহাব (পি. ডি. পি) ৭৬, এন, ই- ১৫৩ $95াম -1 মিঃ মােঃ নুরুল্লাহ (পি. ডি. পি) ৭৭. এন. ই -১৫৫ চট্টগ্রাম – মােঃ ফজলুল কাদের চৌধুৰী (কন, মু, লী) ৭৮, এন, ই =১৫৮ চট্টগ্রাম —vi মােঃ মাহমুদুন্নবী চৌধুৰী (পি, ডি.পি) ১২৮
অক্টোবর মাসেই জামাতে-ই-উলেমা-ই ইসলাম প্রেসি6ে মওলানা মুফতি এক শ্রমিক সম্মেলনে বলেন, ‘ইসলামই হচ্ছে, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানকে একত্র করার প্রকৃষ্ট উপায়। তিনি বলেন দেশের ভবিষ্যত সংবিধান অবশ্যই ইসলামিক ব্যবস্থায় ইসলামের ভিত্তিতে রচিত হবে। এই ব্যবস্থার প্রতি সম্মতি দেওয়ায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে তিনি ধনবাদ জানান। সভায় মাওলানা গোলাম হাজারী বলেন, সকল মুসলমানের উচিত হিন্দুদের বিরুদ্ধে দেশকে রক্ষা করতে প্রস্তুত থাকা। কোন মুসলমান হিন্দু নীতি গ্রহণ করতে পারে না। ১২৯
এপিকে ঢাকা জামায়াকে ইসলামী বায়তুল মােকাররম প্রাঙ্গণে এক গণ জমায়েতের আবোজনা কৱে অক্টোবর মাসেই। এই গণজমায়েত সম্পর্কে পরিকায় লেখা হলাে :
‘বাংগালী মুসলমানদের নিজেদের অস্তিত্ব এবং অধিকার অক্ষুন্ন রেখে বেঁচে থাকছে হলে পাকিস্তানের ঐক্য-সংহতিকে অশাই টিকিয়ে রাখতে হবে। গতকাল শনিবার বায়তুল মােকাররম প্রাংগণে ঢাকা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়ােজিত এক বিরাট গাঞ্জমায়েতে সদানকালে পূর্ব পাকিস্তান জামায়ত প্রধান অধ্যাপক গােলাম আযম একথা নলেন। ঢাকা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক গোলাম সাখওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে অধ্যক্ষ রুহুল কুদ্স, জনাব এম. এ রশীদ, জনাব এ. এইচ. এম. হুমায়ুন ও জনাব মাহবুবুর রহমান গোৱহা বক্তৃতা করেন। | দেশে রাজনৈতিক তৎপরতার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর জাতীয় রাজনীতির কে>মি ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম গণসমাবেশে ভাষণদানকালে নেতা গোলাম আষম জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন যে, পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্য পরিচালিত মিথ্যে প্রচারণায় বিশ্বাস স্থাপন করা তাদের উচিত নয়। মিথ্যে প্রচারণায় নিদ্রান্ত হয়ে আমরা আত্মহত্যার দিকে নিজেদের ঠেলে দিতে পারি না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। অধ্যাপক
গােলাম আযম বলেন, নির্যাতিত নিপীড়িত বাংগালী মুসলমানদের যেটুকু উন্নতি হয়েছে, তা পাকিস্তান হাসিলের পরই হয়েছে। আজাদীপূর্ব যুগের মুসলমানদের করুণ চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংগালী মুসলমানদের ইংরেজ এবং হিন্দুদের যৌথ গােলামীর যাতাকলে নিষ্পেষিত হতে হয়েছে।
| এ প্রসংগে তিনি বলেন, গত তেইশ বছর কেন্দ্রীয় সরকার বিচার না করলে বাঙ্গালী মুসলমন্ত্রী আরও অনেক উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে পারতাে।
তিনি বলেন, গত ২৪ বছরে কৃত যাবতীয় নেইনসাফা থেকে মুক্তির প্রত্যাশায় জনগণ নির্বাচনে ভােট দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ী দু’টো অঞ্চলিক দলের নেতা জনগণের সে প্রত্যাশাকে বানচাল করে দিয়েছে বলে প্রামায়াত প্রধান উল্লেখ করেন। এ প্রসংগে তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে জনাব শেখ মুজিব এবং পশ্চিম পাকিস্তানে জনাব ভূট্রা বাদশা সাজাবার হন খাদেশ চৱিতাৰ ৰুতে গিয়েই জনগঞ্জের আশা-আকাক্ষা নস্যাৎ করে দিয়েছেন এবং সাম্প্রতিক চরম সংকটের দিকে দেশকে ঠেলে দিয়েছেন।
জামায়াত প্রধান বলেন, দেশের পূর্বাঞ্চলে স্বীয় নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে শেখ মুজিব দেশের অপর অঞ্চলের বিরুদ্ধে চরম ঘৃণা এবং বিদ্বেষের বীজ ছড়িয়েছেন। আর এ দৃণা এবং বিদ্বেষের তু তিনি তুলেছেন বাংগালী স্বার্থের নামে। অধ্যাপক আজম বলেন, এর ফলে সমস্ত বাংগালী মুসলমানই আজ সন্দেহের শিকারে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ২৪ বছর পর পূর্ব পাকিস্তানীরা দেশের কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালনার অধিকাক পেতে যাচ্ছিল। তাই পাঁচ বছরের মধ্যেই বিগত দু’যুগের সমস্ত শােষণ এবং বঞ্চনার অবসান ঘটান যেতো । কিন্তু শেথ মুজিবের ভাবাবেগে পরিচালিত ভূমিকার কারণে পুর্ব পাকিস্তানীরা তাদের অধিকার আদায়ের স্বর্ণ সােপান থেকে ছিটকে পড়তে বাধ্য হয়েছে কলেজে অনাব গোলাম আযম মন্তব্য করেন।
জামায়াত প্রধান বলেন, ভাসানীর নেতৃত্বে পরিচালিত নির্বাচন বিরােধী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি তথাকথিত স্বাধীন বাংলার দাবী তুলে মুজিবকে বিভ্রান্ত করে বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এ বিচ্ছিন্নতার অফিনে পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আতাউর রহমান, শাহ আজিজুর রহমান, রুশপন্থী ন্যাপ প্রধান মুজাফফর আহমদ ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গোদের হনি তুমিকার কথা উল্লেখ করে জননেতা গােলাম অাম বলেন, এৱাই দেশকে চরম সংকটের প্রত্তিসীমায় টেনে এনেছে। ভুট্টো বিচ্ছিন্নতার পথ প্রশস্ত করেছেন অধ্যাপক গোলাম আজম বর্তমান সংকটের পটভূমি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, জনাব ভূগ্রো একয়ে নীতি অবলম্বনের মাধ্যমে বিচ্ছিন্নতার পথ আরও প্রশস্ত করেন । তেসরা মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যােগদান করতে অস্বীকার করে এবং পশ্চিম পাকিস্তান থেকে যেসব পরিষদ সদস্য ঢাকায় আসবেন, তাদের ঠ্যাং ভেঙ্গে দেয়ার ফ্যাসিবাদী হুমকি ছেড়ে ভুঠো গােটা পরিস্থিতিকে সংকটময় করে তুলেছেন বলে জনাব আজম অভিযােগ কৱেন । তিনি আরও বলেন, এক দেশে দুটো সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের থিওরী তুলে এবং দেশের দু-অঞ্চলের ক্ষমতা দুটো সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের ওপর অর্পণের উট দাবী ভুলে ভুলে ভুট্টো বিচ্ছিন্নতার মৃতাহুতি দিয়েছেন। এই দুই আঞ্চলিক নেতার সংকীর্ণ ভূমিকাই দেশকে বর্তমানে সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে জননেতা গােলাম আজম ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘােষণা করেন। পরিশেষে অধ্যাপক গোলাম আজম জোর দিয়ে বলেন
________________________________________
দেশে একমাত্র লোমরিক সরকারই স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে পারে। জামায়াত ইসলামী গােটা দেশে বেসামরিক সরকার কায়েমের পথকে সুগম করার জন্যেই শান্তি কমিটির মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অপরদিকে একই বিষয়ে দৈনিক ইত্তেফাক পরাকার ১৭ অক্টোবণ সংখ্যায় সংকটর জন বামপন্থীরাই দায়ী” শিরােনামে বলা হলাে :
এপিপি এবং পিপিআই পরিবেশিত খবরে বলা হইয়াছে। গতকাল (শনিবার) বায়তুল মােকাররম মসঞ্জি প্রাঙ্গণে এক সভায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান জামাতে এছণামীর আমার আম্যাপক গােলাম আজম বলেন, আহাৱা পাকিস্তান |ংস করিতে চায়। তাহাদের বিস্তিমূলক প্রচারণায় জনসাধারণের বিশ্বাস করা উচিত না। ৰাজনৈতিক কার্যকলাপের উপর হইতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর প্রদেশে ইহাই প্রথম জনসভা।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতির উল্লেখ করিয়া জামাতে এলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম আজম বে-আইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানকে দোষারােপ করেন। প্রাদেশিক জামাতে এলামী প্রধান দেশের বর্তমান সঙ্কটের জন্য। বামপন্থী দলসমূহকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, কতিপয় নেতা নির্বাচনে বিশ্বাস কবিনে না এবং অন্ত্রের মাধ্যমেই ক্ষমতায় আসিতে পারে বলিয়া ধারণা পােষণ করিতেন। _ এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক গােলাম মাম বলেন, পিকিংপন্থ ন্যান্স প্রদান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসান, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান খান, শাহ আজিজুর রহমান, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, জনাব মসিউর রহমান এবং তাহাদের অনুগামী ঔ কর্মীগণ এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করিলে, যাহার ফলে আজ এই সঙ্কটের উদ্ভব হইয়াছে। তিনি জানান, বর্তমানে কেহই মনে করেন না যে, তাহার জান-মাল ও ইজ্জত নিরাপণ আছে। জামাতে এলামী নেতা অধ্যাপক গােলাম আজম। বর্তমান সাটির জন্য পিপলস পাটি প্রধান জনাৰ জেড. এ, ভূট্টোকে সমভাবে Wায়ী করেন। তিনি বলেন, জনাব ভূট্টো একটি গণতান্ত্রিক দেশে দুই সংখ্যাগরিষ্ট দলের থিওরী আবিষ্কার করিলেন। তিনি জামান; গত ৩ মার্চ পশ্চিম পাকিস্তানী এম, এন, এ গণজাতীয় পরিষদের আধবেশনে যোগদান করিলে উহার পরিণতি সম্পর্কে জনাব ভুয়ো তাহাসের ৬তি প্রণন করেন। অধ্যাপক গোলাম আজম আরও বলেন, জনাৰ ভূতোয় চাপে জাতীয় পরিষদের নির্ধারিত অধিবেশন স্থগিত প্রথা ভুল হইয়াছে।
অধ্যাপক গোলাম আম পিপিপি প্রধানের সমালােচনা করিয়া বলেন, মার্চ মাসের পর জানাৰ ভূয়ো পূর্ব পাকিস্তানে আসার প্রয়োজন মনে করােন নাই। কিন্তু উপনির্বাচনের কর্মসূচী ঘােষণার পর হঠাৎ পূর্ব পাকিস্তানের জন্য এহির (জন্ম জয়ার) প্রচণ্ড ভালবাসা দেখা দিল এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য একটি দল প্রেরণ কয়ছেন। অধ্যাপক গোলাম আজম বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে পিপলস পাটির বলতে গেলে একেবারেই কিছু নাই। তিনি বলেন, পিপলস পার্টি মনে করে বে-আইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগ ন্যাপ ও অন্যরাই কেবল প্রগতিশীল। অধ্যাপক গোলাম আজম বলেন, উপরােক্ত প্রগতিশীলবরা এখন কলকাতায় অবস্থান করিতেছেন এবং অনাৰ ভূর্কে তাহার প্রতিনিধিদল কলিকাতায় পাঞ্জাইনার জন্য তিনি পরামর্শ দেন। অধ্যাপক গোলাম আজম বলেন, সেনাবাহিনী হাতে ব্যারাকে প্রত্যাবর্তন করিতে পারে তজনা জামাতে এহিলামী দেশে। গাভাবিক অবস্থা ফিফরাইয়া আনার জন্য চেষ্টা চালাইতেছে।”১৩৯
________________________________________
উপনির্বাচন নিয়ে যখন তােড়জোড় চলছিলাে তখন ভাসানীপন্থী পূর্ব পাকিস্তান ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক মশিহুর রহমান (যাদু মিয়া) উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার কথা ঘোষণা করেন। হকিপূর্বে অবশ্য মশিহুর রহমান এবং ভাসানী ন্যাপের প্রাক্তন যুগ সম্পাদক আনােয়ার জাহিল পিপলস পার্টি নের্তৃবৃন্দের সঙ্গে ফলপ্রসু আলােচনা করেন। উপ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা প্রসঙ্গে পএিকা জানালাে ;
ভাসানপন্থা ন্যাপের নেতা ও কর্মীদের এক বৈঠকে পূর্ব পাকিস্তানের আসন্ন উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হইয়াছে। গতকাল রবিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলের সাধারণ সম্পাদক জনাব মশিহুর রহমান (যাদু মিয়) । গতকাল দলের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যে, ভাসানী ন্যাপের কোন। সদস্য যদি ব্যক্তিগতভাবে এই উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান, তবে তিনি করিতে পারেন। ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা গ্রহণের জন্য চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে দলের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হইবে। . ভাসানী ন্যাপ সংক্রান্ত আর একটি সংবাদ পাওয়া যায় দৈনিক পূর্বদেশ” পত্রিকায়। এ পত্রিকায় বলা হলাে : | ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা স্থির করার উদ্দেশ্যে আগামী মাসের কোন এক সময়ে ঢাকায় ভাসানীপন্থী পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির নেতা ও কর্মীদের এক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হতে পারে। গতকাল রবিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত ভাসানীপন্থী আলেশিক ন্যাপের এক কর্মসভায় পূর্ব পাকিস্তানের আসন্ন উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জনাব মশিহুর রহমানের আহ্বানে ও সভাপতিত্বে এই কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে, ন্যাপের কোন সদস্য যদি নির্বাচনে অংশ নিতে চান, তাহলে তারা নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।
জনাব রহমান ন্যাপ কর্মীদের জানান যে, পাকিস্তান পিপলস পার্টির পক্ষ থেকে পিপিপির টিকিটে আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্যে ন্যাপের কিছু সদস্য বার চাওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ন্যাপ দল হিসাবে এ প্রস্তাব গহণ করতে পারে না, কাজেই ব্যক্তিগত পর্যায়ে প্রচেষ্টা চালাবার জন্যে পিপিপিকে বলে দেয়া হয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পূর্ব পাকিস্তানের সাম্প্রতিক গোলযোগের প্রেক্ষিতে দলের সদস্যদেরকে কে কোথায় কিভাবে আছে তা খোঁজ নেয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেন। প্রদেশের বিভিন্ন স্থানের নেতা ও কর্মীদের সাথে যােগাযােগ স্থাপনের পর দলের কর্মী ও নেতাদের নিয়ে আগামী মাসের কোন এক সময়ে একি কনভেনশন অনুষ্ঠানের আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ন্যাপ ব্রাজনৈতিক কর্মতৎপরতা শুরু করার বিষয় চিন্তা করছে। এই কনভেনশনে ন্যাপ দল হিসাবে রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু কবে কিনা, জাতীয়ভিত্তিক রাজনীতির জন্য কেমনা অন্য কোন দল বা গােষ্ঠার সাথে যােগ দৈবে কিনা তা স্থির করা হবে। তিনি বলেন, কাশুনশনে যদি নাপ পুনরুজ্জীবনের বিরুদ্ধে সিন্ধান্ত নেয়া হয়, তাহলে সদস্যরা যে যার নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। কর্মীসভায় দলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা স্থির করার জন্যে কমনশন আহারে সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। জনাব মশিহুর রহমান আরও বলেন যে, দেশের সংকট নক পরিস্থিতি সকলের গ্রহণযোগ্য সমাধানের পর শাসন ক্ষমতা হস্তান্তর হওয়া প্রয়োজন।”১৩৩
________________________________________
অন্যদিকে বে-আইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগ টিকিট নির্বাচিও জাতীয় পরিষদ সদস্য জহিরুদ্দীন জাতীয় পরিষদে স্বতন্ত্র গ্রুপ হিসাবে থাকার কথা ঘােষণা করেন। সংবালে এ বিষয়ে বলা হলাে :
পল্পিরে প্রকাশিত এক খবরে বলা হইয়াছে, বোহনী মােদিত আওয়ামী লীগের টিকেট নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য জনাব জহিরুদ্দীন গত শনিবার ঢাকায় বলেন যে, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের বহাল জাতীয় পরিষদ সদস্যপূণ জাতীয় পরিষদে ঐক্যবদ্ধ স্বতন্ত্র গ্রুপ হিসাবে কাজ করিবে। জনাৰ জহিরুদ্দীন তাহার রানি স্ট্রীটস্থ বাসভবনে উক্ত পত্রিকার প্রতিনিধির সহিত এক সাক্ষাৎকারে উপরােক্ত তথা প্রকাশ নে ।
জাতীয় পৱিখলে লেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের বহলি সদসলে ভূমিকা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবানে কনাৰ জহিরুদ্দীন বলেন জাতীয় পরিষদে অন্যান্য দলের প্রতি আমাদের ভূমিকা শাসনতান্ত্রিক সমসা-বিশেষ করিয়া স্বায়ত্তশাসন প্রশ্নে অন্যান্য দলের ভূমিকার উপৰাই নির্ভর করবে।”
নাহল শস্যদের মধ্যে কতজন তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিয়াছেন, এই মর্মে এক প্রশ্নের জবাবে জনাব জহিকমীন জানান যে, বেআইনী ঘােয়িত আওয়ামী লীগের ৮৮ সুন বহাল সদসাের শতকরা ৫০ ভাগ সদস্যই তাহার সহিত যোগাযােগ কখিয়াছেন। তবে, কতজন জাতীয় পরিষদ সদস্য তাহার কাছে আসিয়াছিলেন, তিনি উহার সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করিতে অস্বীকৃতি আপন করেন। রমজানের পর বহাল সদস্যদের সভা, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব জহিরুদ্দীন বলেন, রােজার পর বহাল সদসগণ ঢাকায় মিলিত হইবেন। | রাজনৈতিক দলসমূহের উপর হইতে বিধিনিষেধ প্রত্যাহৃত হইলে বহাল সদস্যগণ এক সভায় মিলিত হইলেন বলিয়া ইতিপূর্বে যে সংবাদ প্রকাশিত হইয়াছে, সে সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে জনাব জহিরুদ্দিন জানান যে, ইতিপূর্বে তাহাদের অন্যাপ পঞ্জিকল্পনা ছিল। কিন্তু আসন্ন রমনি। এ বর্তমান যােগাযোগ ব্যবস্থার অসুবিধার দল ঈনুল ফেতরে পূর্বে প্রস্তাবিত সভা অনুন সব নয়া বলিয়া ভিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও জানান, উক্ত দলেৱ বহাল প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যগণও ইস্তিাবিত সাষ যোগদান করিবেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আমাৰ জহিরুদ্দীন জানান, ১০৫ জন। বহাল সম্পস্যের প্রায় সকলেই বর্তমানে প্রদেশে আছেন। উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে জনাৰ জাহিদীন বলেন, “আমাদের পাটি বেআইনী ঘোষিত হওয়ায় উপনিৰ্বাচনে অংশগ্রহণের কোন প্রশ্নই উঠে না। বেআইনী ঘােথিত আওয়ামী লীগের কোন সদস্য উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ করিতে ইচ্ছুক হইলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের সদস্যদের না দল গঠনের সম্ভাবনার প্রশ্ন নাৰি জহিরুদ্দীন সরাসরি অস্বীকার করেন। তিনি আরও জানান, ইহ সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত করা হইয়াফে যে, তাহারা কোন নূতন দল গঠন করবেন না। বরং তাহারা ভাঙায় পরিষদে
________________________________________
স্বতন্ত্র এপ হিসাৰে থাকিবেন। তিনি সাক্ষাৎকারে প্রকাশ কৱেন, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের কোন বহাল সদস্যই ব্যক্তিগতভাবে কিংবা দলগতভাবে অন্য কোন দলে যােগদানের পক্ষে মতামত প্রকাশ কঙ্গেন নাই।
সাধারণ ক্ষমা সম্পর্কে নিজের মতামত প্রকাশ করিতে গিয়া তিনি বলেন, ইহা একটি উত্তম পদক্ষেপ। সাধারণ ক্ষমা সকল নির্বাচিত প্রতিনিধির ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা উচিত ছিল। বলিয়া তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
সম্প্রতিক গোলযােগ অক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি জনাব জহিরুদ্দীন সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি তাঁহাদের সত্বর পুনর্বাসনের জন্য সুপারিশ করেন। পূনর্বাসনের কাজ আরও ত্বরাখিত করা উচিত বুলিয়া তিনি মনে করেন। ঢাকা শহর ও শহরতলীহ প্রদেশের সর্বত্র বহু লােক তাহাদের বাসভূমি হারাইয়াছেন এবং তাহাদের পুনর্বাসনের কাজ। অবিলম্বে শুরু করার পক্ষে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।১০০
| পাকিস্তান সশস্ত্র দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তান জামায়েতে এছলামীর আমির অধ্যাপক গােলাম আজম বলেন, ছয় বছর পূর্বে ভারতের কূটকৌশলের বিরুদ্ধে মাতৃভূমির সম্মান এবং ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য যেসব সাহসী জোয়ান জীবন উৎসর্গ করেছে। তাদের স্মরণ কত্রে আজকের পরিস্থিতিতে নেতাদের যুদ্ধ করার আহবান জানান। অধ্যাপক আজম যে সকল শহীদ ১৯৬৫ সালের জেহলে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলেন, যদি আমরা ইসলামের মূল্যবােধ পুনরায় ফিরে পাই তাহলে কোন
ই আমাদের জাতীয় অখণ্ডতায় কামিয়াব হতে পারে না। তিনি জণগণকে সম্মানজনক ভানে প্রতিরক্ষা দিবস পালন করার আহবান জানান।১৩৫
অক্টোবর মাসের চতুর্থ সপ্তাহে ঢাকায় পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘ আয়ােজিত সম্মেলনে ছাত্র নেতৃবৃন্দ বলেন, বিন্নিতাবাদীদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যেসব ষড়যন্ত্রকারী পাকিস্তানের আদর্শ ও অমতা ধ্বংস করতে চাচ্ছে ‘তালের চত ম্যাথ করার জন্য ছাত্রজনতার প্রতি আহবান জানান। সংগঠনের নব নির্বাচিত সভাপতি মােহাম্মদ আলী আহসান মুজাহিদ তার বকুজাৱা নলেন পাকিস্তানের পবিত্র মাটি রক্ষায় জনগণকে শেষ রক্তবিন্দু দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি বলেন, উপমহাদেশের মুসলমানদের সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাই সকলের উচিত কোরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন যাপন করা।”৯৩%
এদিকে দু’জন ব্ৰাজনৈতিক নেতা এক যুক্ত বিবৃতিতে বললেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে এবং বাইরে পাকিস্তান বিরােধী শক্তির মােকাবেলায় জনগণ্ঠকে শিলাখঞ্জের ন্যায় দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ ছুতে হবে। পত্রিকায় বলা হলাে ।
এপিপি পরিবেশিত এক খবরে বলা হয় ; পিডিপি প্রধান জনাব নূরুল আমিনসহ ৬টি রাজনৈতিক দলের নেতা গতকাল (মঙ্গলবার) রাত্রে বহিঃশত্রু এবং উহাদের আভ্যন্তরীণ এজেন্টদের বিরুদ্ধে দেশের সংহতি রক্ষায় শিলাখঞ্জো দায় দাড়াইতে জনসাধারণের প্রতি আবেদন জানাইয়াছেন। জাতীয় পরিষদের আসন্ন উপনির্বাচনের জন্য সম্মিলিত প্রার্থী ভালিকা প্রকাশ উপলক্ষে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে পাকিস্তান বর্তমানে যে গুরুতর সংকটের মশা দিয়া অতিক্রম করিতেছে, প্রতি তাঁহারা উনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছেন।
________________________________________
বিবৃতিতে তাহারা বলেন যে, দেশের অভ্যন্তরে ও বাহিরে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিদের দ্বারা দেশের সংহতি হুমকির সম্মুখীন। বিবৃতিতে স্বাক্ষরদানকারী অপর নেতাগণ হইলেন । মেসার্স ফজলুল কাদের চৌধুরী, খান এ সবুর, গােলাম আজম, খাজা খরুদ্দিন এবং সিদ্দিক আহমদ। জাতীয় নেতাগণ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ চাপাইবার জন্য ভারতের নিন্দা করেন এবং সীমান্তে গোলা নিক্ষেপ, সস্ত্র অনুপবেশনকারী ও সাবােটিয়ার্স প্রেৱণ এবং যোগাযােগ এ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এড়াইয়া দেওয়ার জন্য ভারতকে অভিযুক্ত করেন। বিবৃতিতে তাহারা বলেন যে, দুস্কৃতিকারীগণ ভারতকে ধূর্ত বন্ধু পাইয়াছে এবং তাহারা নাশকতামূলক ও মাংসাত্মক কামে লিপ্ত রহিয়াছে। তাহারা দেশপ্রেমিকদের হত্যা করিতেছে এবং বেপত্রোয়াভাবে নিরপরাধ মানুষকে হ্যবান করিতেছে।
নেতৃবৃন্দ বর্তমান জাতীয় সঙ্কটকালে জলাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হইতে এবং দেশের আদর্শ, সংহতি ও অগতার জন্য কী করিতে জনসাধারণের প্রতি আহবান জানাইয়াছেন।’১৩৭
এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানাে হয় যে, জাতীয় পরিষদে মােট ৩১ গুন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এর মধ্যে জামায়াতে এসলামী ৮, এম. এল. এস ৮, পিডিপি ৭, নেজামে ইসলাম ৫ এবং পিপিপি ৩। কমিশন গতকাল জাতীয় পরিষদে ৩১ জন বিনা প্রতিধ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম ঘােষণা করেন।
যেসব রাজনৈতিক নেতা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তারা হলেন পাকিস্তান মুসলিমলীগ (কাইয়ুম) এর সাধারণ সম্পাদক খান এ. সবুর, পূর্ব পাকিস্তান জামাতে ইসলমীর আমির অধ্যাপক গোলাম আজম, পূর্ব পাকিস্থান কাউন্সিল মুসলিম লীগের সভাপতি খাজা খয়ের উদ্দিন, পূর্ব পাকিস্তান পিডিপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আজিজুল হক, দু’জন প্রদেশিক মণী মওলানা এ. কে. এম ইউসুফ ও আকিয়াস আলী খান এবং নেজামে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আশরাফ আলী।
এই ৩১ জন সদস্যদের মধ্যে জমাতে এলামী ৮, পিপি ৭, এম, এল (কাইম) s, পিপিপি ৩, এম. এস (ক) ২, এম, এস (কাউলি ) ২ এবং নেজাম এছলাম।
নিম্নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্ধারিত জাতীয় পরিষদ সদস্যদের নামের তালিকা দেয়া হলাে : ১৩৮
১. এ, ই – রংপুর –XI বান Ctle | আহমেদ, (জা, ই) ২, এ, ই =2] পাবনা এম, এ মতিন (পি, এম, এল কনভেন) ৩, এন, ই-10 কুষ্টিয়া —ll সাল আহমেদ (জা, ই)। ৪. এ, ই-4। কুষ্টিয়া || মিঃ এম এ মতিন (জাই) ৫. এম, ই –$2 কুষ্টিয়া – আজমত আলী (সি, এম, এন) ৬. , –58 বাকের গঞ্জ – সাযিশ আজিজুল হক (পি, ভি, পি) ৭, এন, ইএBও বাকেরগঞ্জ Vল্প শাহ মতিউর রহমান (এন, আই)। ৮. এন. ই –9। ময়মনসিংহ —xVT মজিবুর রহমান (কিউ, এম, এল) ৯. এন ই-02 ময়মনসিংহ —XV|| মাওলানা মােসলেহ উদ্দিন (পি, ভি, পি) ১০, এন, ই-108 ঢাকা-v অধ্যাপক ইউসুফ অালী (-২) ১১, এন, ই=113 X মােঃ শহীদুয়াহ (এম, এল, ক)।
________________________________________
১২, এন, ই -–122 সিলেট | ফজলুল হক (পি, ডি, পি)। ১৩. এন. ই-j21 সিলেট | সায়্যিদ কামাল আহসান (নে, ই)। ১৪. এন, ই–131 কুমিল্লা — এম আশরাফ আলী (নে, ই)। ১৫. এন. 144 কুমিলী –KI৷ দলিলুর রহমান (লি, ডি, পি). ১৬, এ, ই=144 কুমিল্লা —XIV মৌলত আব্দুল হক (নেই) ১৭, এন, ই –153 চট্টগ্রাম – মােঃ নুরুন্নাহু (পি. জি. পি), ১৮. এন ই –71 টাঙ্গাইল – গােলাম আযম (আL. ই) ১৯, এন, ই-01 খুলনা | মাওলানা এ কে এম ইউসুফ (জা, ই) ২০, এন, ই –53 খুলনা আব্দুস সবুর খান (কাইম) ২১, এ, ই t] ফরিদপুর V] আলী মুজ্জামান চৌধুরী (পি, ভি, পি) ২২. এনি, ই 45 যশাের [] আব্দুল ওয়াহাব (পি, পি. পি) ২৩, এন, ই-40 যশাের —V মােহাম্মদ শাহ (নে, জা) ২৪, এন, ই 2 রংপুর | সাইদুর রহমান (কাইয়ুম) ২৫, এন, ই-2 রংপুর | কামাল হােসেন বিঞ্জী (পি, পি. লি) ২৬. এ, 10 ৰংপুর —X সাইদুর রহমান (কাইয়ুম)। ২৭. এন, ই-l4 দিনাজপুর – মাওলানা তমিজ উদ্দিন (জা, ই), ২#, এ, ই – কুষ্টিয়া = আকিল উনি কাইয়ুম)। ২৯, এম, =17 ঢাXIV এস. কে খয়ের উনি (সি, এম, এল) ৩০, এন, ই–2) বগুড়া – শমশিল ইসলাম (পি, ডি. পি)। ৩১, এন, ই =l9 বগুড়া — মিঃ আব্বাস আলী খান (জা, ই)
এদিকে নির্বাচন কমিশন প্রাদেশিক পরিষদে ৩৬ জন প্রার্থীকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ८५पनी हुन ।
৩৫ জন নির্বাচিত সদস্যদের নামের তালিকা। ১. পি, ই 24 দিনাজপুর —|| ডাঃ মােঃ শফিউর রহমান (জী, ই) ২. পি, ই-54 রাজশাহী —XII৷ আইনউদ্দিন (কন, ম, শী) ৩. পি, ই71 কুষ্টিয়া — মােঃ নুরুল ইলম (জা, ২) ৪. পি, ই- 72কুলিয়া-II. ইয়াকুব আলী (কি, এম, এল)। ৫. পি.ই -73 কুষ্টিয়া ||| মুহামূল হানিফ (স্বতন্ত্র)। ৬. পি. ই-74 কুষ্টিয়া — আব্দুল কাইয়ুম (জা. ই) ৭. পি. ই- 75 কুষ্টিয়া —v খালিদুজ্জামান (কিট, এম, এল)। ৮. পি, ই –8) যশাের – মৌলভী মােজাম্মেল হক (জা, ই), ৯. পি. ই -120 বাকেরগঞ্জ — মওলানা আব্দুল মতিন (নেই)। ১০. পি, ই =100 টাঙ্গাইল ফ র রহমান তালুকদার (কন, মু. লী) ১১. পি. ই–20)? ফরিদপুর —VIা সৈয়দ মোহাম্মদ আলী (ভা, ই. ১২, পি, ই -212 কুমিল্লা —XXII মিয়া রাজ্জাক (কাউন্সিল মু. লী) ১৩. পি, ই -266 কুমিল্লা —XXV মহসিনুজ্জামান চৌধুরী, এভোকেট, (জ্য, ই)। ১৪, পি, ই – 76 কুষ্টিয়া v. সেরাজুল ইসলাম মল্লিক (পি, এম, এল, কন) এবং
আজিজুল হক (কাউন্সিল মু. লী) তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন,
________________________________________
২২৯ অঙ্ক বাদেশে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ও তার দোসরদের তৎপরতা
১৫. পি, ই =77 কুষ্টিয়া —V|| নওয়ার আহমেল (কাউশিল মু. লী) ১৬. পি. ই-78 যশাের —. মৌলভী নুরুন নবী (জা, ই) ১৭. পি. ই =7) যশাের —ll আবু নাসের মােহরণ আনসারুজ্জামান (জা, ই) ১৮, পি, ই-187 ঢাকা-XVI| হাসান হোসাইন (কিউ, এম, এল)। ১৯, পি, ই -| ঢাকা —XXI ওবায়দুল কবির (পি, ডি, পি)। ২০. পি. ই =33 বড়! | আব্দুল আলীম (পি, এম, এল, কন) ২১. পি, ই -201 কুমিল্লা XX মজিবুর রহমান (কিউ, এম, এল) ২২. পি, ই-66 পাবনা-VTll মোফাজুল আলী (কিউ. এম, এল) ২৩, পি, ই-7) পাবনা —XII মওলানা মােহাম্মদ ইসহাক (মে, ই)। ২৪, পি, ই -242 কুমিল্লা — সৈয়দ এ, বি, এম ওবায়দুল্লাহ (পি, ডি, পি) ২৫. পি, ই-a43 কুমিল্লা –ill আবদুল গণি মুন্সী , ই) ২৬. পি, ই -244 কুমিল্লা শফিকুর রহমান (পি, ডি, পি) ২৭. পি, ই -24!) কুমিল্লা —v এ, কে, রফিকুল হোসাইন (পি, ডি, পি) ২৮, পি, ই – 204 কুমিল্লা —XV|| আব্দুল হাকিম (পি, এম, এল, কন) ২৯, পি, ই= 7 রংপুর-VIf আব্দুল হোসাইন মিয়া (ই)। ৩০. পি. ই-|| রংপুর -X] আকমল হােসাইন (পি, এম, এলে, কন)। ৩১. পি, ই= 102 ঢাকা—XXI৷ মোঃ সুলতান উদ্দিন খান (কি, এম, এলে) ৩২. পি, ই= 109 ঢাকা —XXIX সাইফুর রহমান ( 4) ৩৩. পি, ই -42 হলােৱ তবিবুর রহমান খান (কাউশি, মু. ) ৩৪. পি. ই –83 যশোর — আব্দুর রশিদ (কিউ, এস, এন)। ৩৫. পি. ই-85 অশাের ML|| মশিউল আযম (জা, ২). ৩৬. পি. ই -23 দিনাজপুর মােহাম্মদ ইসমাইল হক (জ. ই)
পিডিপি প্রধান নূরুল আমিন ৬ নভেম্বর লাহাের গভর্নর ভবনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে নব্বই মিনিটব্যাপী এক বৈঠকে মিলিত হন। নূরুল আমিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ছাড়াও রাজাকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও তালের আরো অস্ত্র দেয়ার সুপারিশ করেন। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হয় :
লাহাের, ৬ই নভেম্বর (এপিপি)। -পাকিস্তান স্কেমােক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেনট জনাব নূরুল আমীন আজ এখানে গভর্ণর ভবনে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে নকদই মিনিটব্যাপী এক বৈঠকে মিলিত হন। প্রেসিডেন্ট এখন গভর্ণৱ ভবনে অবস্থান করছেন। বৈঠকের পর জনাব নূরুল আমীন সাংবাদিকদের বলেন যে, তিনি প্রধানতঃ পূর্ব পাকিস্তানের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। সেখানকার আসন্ন উপনির্বাচন সম্পর্কে আলােচনা হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে উপনির্বাচনের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারত পূর্ব পাকিস্তানে তার ধ্বংসাত্মক তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি জানান যে, প্রেসিডেন্টের কাছে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে রাজাকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি কথা ও তাদের আরাে অস্ত্র দেওয়ার সুপারিশ করেছেন। তিনি বলেন যে, সেখানে মালাকার খুব ভাল কাজ করছে, কিন্তু বর্তমানে তাদের সকলের নিকট অস্ত্র নেই।
________________________________________
রাজাকাররা তাদেরাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকদের হত্যা করছে বলে মে অভিযােগ করা হয়েছে, জনাব নূরুল আমীন তার সত্যতা অস্বীকার করেন। জনাৰ নূরুল আমীন বলেন যে তিনি ২০শে ডিসেম্বরের পূর্বেই খসড়া শাসনতন্ত্রটি প্রকাশের জন্য প্রেসিডেন্টের নিকট প্রস্তাব করেছেন। উল্লেখযােগ্য যে ২০শে ডিসেম্বর শাসনতন্ত্র জারির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
| স্লিপি প্রধান বলেন যে, ২০শে ডিসেম্বরের পূর্বেই খসড়া শাসনতন্ত্রটি প্রকাশ করা হলে ২৭ শে ডিসেম্বর জাতীয় পরিষদের অধিবেশন জরু হওয়ার পূর্বে রাজনৈতিক দলগুলাে খসড়া শাসনটি বিনাে নারীর জন্য আরো সময় পাবে। এক প্রশ্নের উত্তরে জনাব নুরুল আমীন বলেন যে, প্রেসিডেন্ট তার ক্ষমতা হস্তান্তরের কর্মসূচীতে অটল থাকবেন। তিনি বলেন যে, সেনাবাহিনীর হাতে যত বেশী ক্ষমতা থাকবে, দেশের জন্য ততই খারাপ
পিপিআই পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, জনাব নুরুল আমীন জানান যে, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় তিনি সন্তুষ্ট হয়েছেন। তিনি বলেন যে, ভবিষ্যৎ শাসনতন্ত্র সম্পর্কে আলােচনার সময় তিনি শাসনতন্ত্রে পূর্ব পাকিস্তানকে কি পরিমাণ প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হচ্ছে, তা জানতে চান। প্রেসিডেন্ট তাঁকে আশ্বাস দেন যে পূর্ব পাকিস্তানকে সর্বাধিক স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হবে।
“সর্বাধিক বায়ত্তশাসনের কোন সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে কিনা এই মর্মে এক শ্রয়ে জবাবে তিনি বলেন যে, চারটি বিষয় মাথা প্রতিরক্ষা, পরই বিষয়, মুদ্রা ও বৈদেশিক বাণ্যি কেদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বৈদেশিক সাহায্য ও গুণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার আলোচনা করে এ সমস্ত সাহায্য ও ঋণ সংগ্রহ করবে এবং বিভিন্ন প্রদেশের জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রদেশগুলোতে ভ ন্যয় করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, শেখ মুজিবের মুক্তির প্রশ্ন নিয়ে কোন আলােচনা হয়নি। তিনি বলেন যে, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান শীঘ্রই পূর্ব পাকিস্তান সফরের কথা বিবেচনা করছেন। তিনি জানান যে, প্রেসিডেন্ট পূর্ব পাকিস্তানে রাজাকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও ভালেয় আরো অস্ত্রশস্ত্র নিতে সমর্থ হয়েছেন।
পূর্ব পাকিস্তানে ভারতের ধ্বংসাত্মক তৎপরতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, কেবল যে একটি যুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে তাই নয়, প্রকৃতপথে কক্ত এলাকায় যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এপিপির খবরে আরাে বলা হয়, অপর এক প্রশ্নের উত্তরে জনাব নূরুল আমীন বলেন যে, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী র্শীগের টিকেটে নির্বাচিত ও বহাল জাতীয় পরিষদ সদস্যদের মধ্যে সকলে হয়ত এখন দেশে উপস্থিত নেই, তবে ২৭শে ডিসেম্বর সকালের মধ্যে তারা হয়ত পরিষদের অধিবেশনে বসার জন্য ফিরে আসতে পারেন।
তিনি বলেন যে, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী সদস্যদের অন্য কোন দলে যােগদানের এপারে রাজনৈকি পল আইন ফোন বাধা নয়। তবে তিনি রাজনৈতিক দল আইনটিকে অবাধ গন্ত্রের পথে বাধাস্বরূপ বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন যে, তিনি জাতীয় পরিষদে হ’জন পিপিপি প্রার্থীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার রহস্য সম্পর্কে প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট বিষয়টি সম্পর্কে অনুসন্ধান করবেন বলে এঁকে জানিয়েছেন।
________________________________________
জনাব নূরুল আমীন বলেন যে, জাতীয় পরিষদেও দু’দলীয় মৈত্রী জেটি অব্যাহত থাকবে। পাকিস্তান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (পিডিএম) মত এই জোট যাতে একজনের নেতৃত্বাধীনে থাকে সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ কতেন।”১৩৯
নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বদর দিবস উপলক্ষে ইসলামী ছাত্র সংঘ বায়তুল মােকাররম জলে এক সমাবেশের আয়ােজন করে। সমাবেশ থেকে বন্দরের যুদ্ধে যে নৈতিক বলল ‘ আলশে অনুপ্রাণিত হইয়া মুসলমানরা কাফের বাহিনীর উপর ঝাঁপাইয়া পড়িয়াছিল, সেই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হইয়া ভারতীয় সমাজবাদের মােকাবেলা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানানাে হয়।
এদিকে লাহােরে মালিক মন্ত্রীসভার শিক্ষা মন্ত্রী জামায়াতে এলামীর নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য আব্বাস আলী বললেন, “ভারত আক্রমণ করলে কোলকাতা ও দিল্লীতে ঈদের নামাজ পড়বাে।’ পত্রিকায় এ প্রসঙ্গে বলা হলাে :
লাহোর, ৮ই নভেম্বর।-পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী ও জাতীয় পরিষলে উজামায়াতে এছলামীর নির্বাচিত সদস্য জনাব আব্বাস আলী খান বলেন, আমরা আঞ্চরিতাপূর্ণ দাবী করি না। কিন্তু আল্লাহঙ্কায়ালার ওপর আমাদের পূর্ণ ভরসা রয়েছে। আর যদি পাকিস্তানের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় তবে আমরা কোলকাতা ও দিতে ঈদের নামাজ আদায় করবে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান কোন বংশ বা সম্প্রদায়ের মালিকানা নয় বরং এটা উপমহাদেশীয় মুসলমানদের সম্মিলিত চেষ্টা সাধনার ফল। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য হিন্দু স্ত্র ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালে একথা সুস্পষ্টশবে বলা হয়েছিল যে, এদেশ বাঙ্গালী, পাঞ্জাবী, শিক্ষা, বেলুচা ও পাঠানদের নয় বরং ইসলামের জন্যই অজন করা হবে। জনাব আব্বাস আলী খান সামনাবাদ লাহাের জামায়াতে এজলামী প্রদত্ত এক সম্বর্ধনা সভায়
| পূর্ব পাকিস্তানের রেঙ্গাকার বাহিনী ও আলবদর বাহিনীর প্রশংসা করে প্রাদেশিক শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তার প্রমাণ করে দিয়েছে যে, মুসলমান মৃত্যুকে ভয় করে না বরং আল্লাহকে ভয় করে। ভারত স্বপি পাকিস্তানের ওপর হামলা করে তবে তার ভূতেই বুক সংগঠিত হবে এবং আমরা কোলকাতা ও পল্লীতে গিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করবাে। পাকিস্তান টিকে থাকার জন্য ই হয়েছে এবং পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনাবলী তা প্রমাণ করে দিয়েছে।’
নতন্ত্র মাসে জামাত-উল উলেমা- ই এছলামের প্রচার সম্পাদক মাওলানা আব্দুস হাকিম গতকাল ঢাকার আহসান মঞ্জিলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, দেশ কখনও এই ধরনের সংকট মােকাবেলা করেনি। জামাতের প্রচৰাি সম্পাদক বলেন, জনগণের মধ্যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে আসা হবে প্রধান এবং প্রথম কর্তনা। তিনি সকল রাজনৈতিক দলগুলােকে এই সংকটকে নিজস্ব স্বার্থে ব্যবহার না করার আহবান জানান।
তিনি বলেন, ভারতের হুমকি সত্ত্বেও সাধারণ জনগণ, রাজাকার মিলিটারী প্রশিক্ষণ (কৌজি প্রশিক্ষণ) নিচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনী তাদের সাহায্য করলে তারা শক্রদের মােকাবেলা করতে পারবে দেশের মিডিয়া এবং প্রচার মাধ্যমগুলাের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন কেন্দ্র পাকিস্তানকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে হবে যেন ভিন্ন দেশ থেকে এর অনুষ্ঠান শােনা যায়। আমরা আমাদের ট্রান্সমিটারের মধ্য দিয়ে বিবিসি এবং ভারত রেজির জবাব দিতে চাই।
________________________________________
তিনি কিছু আৱৰী অনুষ্ঠানমালার প্রস্তাব করেন যাতে এই অবস্থায় আরব দেশগুলাে আমাদের ভুল বুঝতে না পারে। ভারত এবং বিধিলি পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি বলেন শান্তি কমিটি যেন সকল রাজনৈতিক দলের সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব করে।১৪৩।
বদর দিবস উপলক্ষে এছলামী ছাত্রসংঘ গাইবান্ধাতেও অনুষ্ঠানের আয়ােজন করে। বক্তারা ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠাকল্পে যে কোন কোরবানীর জন্য প্রস্তুত থাকার আহবান জানায়। পত্রিকায় এসশর্কে বলা হলাে :
| গাইবান্ধা, ১১ই নভেম্বর। গত সোমবার এখানে যথােপযুক্ত মর্যাদার সাথে বদর দিবস পালিত হয়। এছলামী ছাত্রসংঘের গাইবান্ধা শাখার সভাপতি ও বদর বাহিনীর কমাজার নাৰ ফর রহমান বার বসের উদ্ধোধন করেন। বদর বাহিনী বিভিন্ন শ্রেনি সহকারে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে বদর বাহিনীর বিভিন্ন প্রাটুন কমান্ডারদের নিয়ে এক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাহিনীর কমান্ডার জনাৰ গুরুর রহমান সকলকে পাকিস্তান রক্ষার ও এছিলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের উদ্দেশ্যে যে কোন কোরবানীর জন্য প্রতুত থাকার আহবান জানান।*১৪E
জমিতে তালাবায়ে আরাবিয়া নেতা মওলানা দীন মােহাম্মদ যশােনেন মনিরামপুরে সকল পাকিস্তানখালী মুসলমানকে সামরিক এটনিং পানের দাবী জানালেন। পএিকা বলা।
“শাের জেলার মনিরামপুর থেকে সংবাদদাতা জানাচ্ছেন যে, গত রােববার। মনিরামপুর ম|প প্রাঙ্গণে এক বিরাট সত্ৰা অতি । | মাওলানা না মােহাম্মৎ ধ জমিতে তালাবায়ে আরাবিয়ার যশোর জেলা শাখার সঙ্গপতি শেখ আবদুল মতিন বক্তৃতা করেন।
| সভায় গৃহীত এক প্রস্তাবে প্রতিটি পাকিস্তানবাদী মুসলমানকে সামরিক ট্রেনিং দিয়ে। দেশ ও ইসলামকে শক্তিশালী করার জন্য সরকারাে কাছে দাবী জানান হয়। ইসলামী শাসন কায়েম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্টা এবং সহশিক্ষা ব্যবস্থা বিলােপের দাৰী। জানিয়েও কতিপয় প্রস্তাব গৃহীত হয়। ১৪৫
এদিকে ঢাকা জামায়াতে এছলামীর মজলিসে শুরা এক প্রস্তাবে ‘সুতিকারীদের চকও বানচালের জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানানাে হয়। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
গতকাল সােমবার চাঙ্গা জামায়াতের মজলিসে শুরার উদ্বোধনী অধিবেশনে গণহীত এক প্রস্তাবে পেশিক রাজধানী ও খদেশের অন্যান্য স্থানে আইন-শখলা পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
প্রস্তাবে বলা হয় যে, মজলিসের সুচিন্তিত অভিমত এই যে, সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারীদের হন চক্রান্ত ৰাজ্জালের জন্য কার্যকারী ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়ােজন।
ঢাকা জামায়াতে এহলামীর প্রধান অধ্যাপক গােলাম সাগুয়ার বলেন যে, দেশ ও জাতি চরম সংকটের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। ঢাকা জামায়াতে এছলাম নবনির্বাচিত মজলিসে শুরার ফোলনী অধিবেশনে দেশের বর্তমানে পরিস্থিতি পর্যালােচনালে তিনি উপরােক্ত মন্তব্য করেন। তিনি তার বক্তৃতায় শুরার সদস্যদেরকে পরিস্থিতির অনুধাবন এবং অবস্থা অনুসারে নীতি নির্ধারণের আবেদন জানান বলে এপিপির খবরে বলা হয়েছে।
________________________________________
অধ্যাপক সারওয়ার পূর্ব পাকিস্তানকে দাসত্বের নিগড়ে আবদ্ধ করার ভারতীয় হীন চক্রান্তকে সংঘবদ্ধ ভাবে প্রতিরােধের জন্য পাকিস্তানের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। তিনি আশা করেন যে, শসের সমূচিত শিক্ষাদানের জন্য পূর্ব পাকিস্তানীরা তাদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ কাবে।
মজলি, সাংগঠনিক কাজের ব্যাপক পর্যালােচনা করে এবং জামায়াতের কাজ সম্প্রসারণের জন্য স্তন কর্মসূচী গ্রহণ করে। মজলিসের গৃহীত প্রস্তাবে রোকারদের উন্নততর অর্থ এবং পুকুতিকারীদের মােকাবেলার উদ্দেশ্যে তাদেরকে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দান করে নেজাকারদের সুসংগঠিত করার আহবান জানান হয় ।
প্রস্তাবে বিনা উজানিতে পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় হামলা পরিচালনার জন্য ব্রাহ্মণ্য সাম্রাজ্যবাদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, সাম্রাজ্যবাদী ভারত এসব উস্কানিমূলক কার্যকলাপ থেকে বিরত না হলে পাকিস্তানের জনগণ আমাদের সাহসী সশ বাহিনীর সাথে ঐকবদ্ধ হয়ে ভারতীয় যুদ্ধবাজদের আবলকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেবে। নিত্যব্যবহার্য দ্রব্যাদির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে মজলিসে শুরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।১৪৬
এই উদ্বেগকালে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গােলাম আজম পিডিপি প্রধান নূরুল আমীনকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সমর্থন দান করেন। এক বিবৃতিতে গােলাম আজম দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের জনগন্ধ আন্তরিকভাবে চাচ্ছে যে, পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানের অংশ হােক কিন্তু প্রাণপ্রিয় দেশের একতা ও সংহতির লক্ষ্যে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পাকিস্তানের ভাবী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একজন পূর্ব পাকিস্তানীকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ প্রবে।”১৪৭
পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক মােহাঙ্গন এ, এম, এন ইউসুফ এক বিবৃতিতে ভারত আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে পূর্ব পাকিস্তানের ওপর যে হামলা চালিয়েছে তার নি জানান। বহিশত্রীর হামলা মােকাবেলায় দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণায় তিনি প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দিত করেন। তিনি ভারতীয়দের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ভাৰাত যাদি ভাস্ত্রে হামলা ৰান্ধ না করে তাহলে যে কোনাে পরিস্থিতির জন্য তারা দায়ী থাকবে। মাে: ইউসুষ্ণ সকল সমমনা দলগুলােকে নিজেদের মধ্যে বিভেদ ভুলে গিয়ে দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে একত্রে শরুর মােকাবেলা করার আহবান জানান।
অধ্যাপক গােলাম আযম লাহােরে সাংবাদিকদের জানালেন, ‘আমরক্ষার জন্য আক্রমণাত্মক ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
লাহাের, ২৩শে নভেম্বর (এপিপি)। পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইলামীর আমীর অধ্যাপক গােলাম আযম বলেছেন, আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধকৌশল শকে উৎসাহী ও উপমশল হতে সাহায্য করে মাত্র।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহক কমিটির বৈঠকে যোগদানের উদ্দেশ্যে এখানে এসে পৌছানাের পর সাংবাদিকদের সাথে আলােচনা প্রসঙ্গে অধ্যাপক গােলাম ‘আযম উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক গােলাম আযম বলেন, বর্তমান মুহর্তে আক্রমণাত্বক ভূমিকা গ্রহণ করাই হবে দেশের উন্য আগারক্ষার সর্বোত্তম ব্যবস্থা। আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধকৌশল শককে
________________________________________
উৎসাহী ও উদ্যমশীল হতে সাহায্য করে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, একটি মালাসম্পন্ন। রায় হিসেবে টিকে থাকতে চাইলে পাকিস্তানের পক্ষে আক্রমণাত্মক ভূমিকা গ্রহণ করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই।
পূর্ব পাকিস্তানের পর ভারতের সর্বশেষ হামলা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে জামায়াত নেতা বলেন, ভারতের এই হামলা নতুন কিছু নয়, কেবলমাত্র নতুনত্ব হচ্ছে এনানের হামলা আগের চাইতে ব্যাপক। তিনি বলেন, ভারত পূর্ব পাকিস্তানের অন্তরে অবস্থিত এমন একটি বিমানবন্দর দখল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে যাতে ভারত “বাংলা দেশের” নামে একটি সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করতে পারে। ভারতীয় হামলার মােকবিলার উদ্দেশ্যে দলীয় ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একবিন্ধ হওয়ার জন্য অধ্যাপক আষম জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
জামায়াত নেতা জানান যে, পূর্ব পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ অব্যাহত রয়েছে। এবং এর ফলে আসন্ন উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ কষ্টসাধ্য হতে পারে ।
পূর্ব পাকিস্তানে শান্তি রক্ষার উদ্দেশ্যে সকল দেশপ্রেমিক, শান্তি কমিটির সদস্য এবং রোজাকারদের উন্নতমানের এ স্বয়ংক্রি অস্ত্রে সজ্জিত করার জন্য অধ্যাপক আমি দাৰী জানান। সাধারণ ক্ষমার নলাফল সম্পর্কে মন্তব্য করতে বলা হলে অধ্যাপক আযম বলেন, এটা আংশিকভাবে সত্য যে, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর পুতিকীয়া তাহাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। অধ্যাপক গােলাম আযমের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের রাজস্বমন্ত্রী মওলানা এ. কে, এম, ইউসুফ এবং জামায়াতের সহকারী প্রধান মাওলানা আবলুর রহীম ও এখানে। এছন।১৯
কাইম পন্থী মুসলিম লীগ নেতা খান এ. সবুর ও ভারতের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ লালন। পত্রিকায় এ প্রসঙ্গে বলা হলো :
ঢাকা, ২৬শে নভেম্বর।আজ পাকিস্তান মােছলেম লীগের (কাইয়ুম স্লপ) সেক্রেটারী জেনারেল খান আবদুস সবুর ভারতের প্রতি এই মর্মে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন যে, সর্বাত্মক যুদ্ধ হইলে উহরি সম্প্রসাৱণবার্দী অভিসন্ধিকে নসাৎ করার জন্য পাকিস্তানের উভয় অঞ্চলের জনসাধারণ ঐক্যবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান হইবে।
এক বিবৃতি প্রসঙ্গে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যাপক আক্রমণ চালানাের জন্য ভারতের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালীর প্রতিনিধিত্ব করা সম্পর্কে ইন্দিরার ভূয়া ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ নাৰী এবং বাংলাদেশের প্রতি ভাওতা ও তাহার ভণ্ডামিপূর্ণ। সহানুভূতির আসল রহস্য নগ্নভাবে ধরা পড়িয়া গিয়াছে।
বেহিসাবী আশাবাদ লইয়া ভারতীয় বাহিনী সীমান্তের বিভিন্ন সেক্টরে ব্যাপকভাবে অভিযান শুরু করে। কিন্তু ঐশী অনুপ্রেরণায় উদ্বুদ্ধ বীর ও দক্ষ পাকিস্তানী সেনাবাহিনী “তাহারে প্রতিহত করিয়াছে এবং উহাদের বহু লােক হতাহত হইয়াছে। ভারতীয় সৈন্যদের বিকলাঙ্গ লাশগুলি এখনও পড়িয়া রহিয়াছে এবং ঐগুলি কুকুর ও শকুনের আহার্যরূপে পরিণত হইয়াছে।
যে হাজার হাজার ভারতীয় সৈন্য গুরুতরপে আহত হইয়াছে তাহাদের ক্ষত শুকায় WIছ। WITয় কাতর হইয়া তাহারা এই হঠকারিতাপূর্ণ কার্যের জন্য মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর উপর দোষারােপ কলিতেছে।
________________________________________
_ তিনি বলেন, সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হইলে মুষ্টিমেয় সংখ্যক ক্ষতিকারা এবং নাশকতাকার্যের জন্য এনিংপ্রাপ্ত বেতনভােগী ভারতীয় চৰ ছাড়া পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সক লােক ভারতীয় সম্প্রসারণবালী ও ভাহালের ফরলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দৃঢ়সংকল্প আইয়া ভায়মান হইলে এবং আমাদের পবিত্র ভূমির প্রতিটি হয় রক্ষা করার জন্য তাহাদের শেষ রক্ত বিন্দু মা করিবে।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগপন্থিগণ যে বিভীষিকার রাজত্ব কায়েম করিয়াছিল উহার জন্যই সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন হইয়া পড়ে। ভারত ও ছেরায়েলে এনিংপ্রাপ্ত তথাকথিত “মুক্তি বাহিনীর গেরিলাগণ হাজার হাজার নিরপরাধ নরনারী ও শিশুকে হত্যা করিতেছে, এবং পূর্ব পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ কারখানাগুলির ক্ষতিসাধন কৰিছে । ব্যাপকভাবে যে ক্ষমা প্রদর্শন করা হইয়াছে, উহা আমাদের দুর্বলতার পরিচায়ক বলিয়া ভ্রান্ত ধারাবশতঃ তাহার বাস্তবতা উপলব্ধি করিতে পারিতেছে না। তাহাদের ইহা উপলব্ধি করা উচিত যে, তাদের চরম পরিণতি ভোগ করিতে হইবে এবং তাহাদের ধ্বংস আসন্ন । ইতিহাসে এইপ আশংখা দৃষ্টান্ত রহিয়াছে যে, অতি সামান্য সংখ্যক সৈন্য ও অস্ত্রশস্ত্র থাকা সত্বেও মুছলমানগণ তাহাদের চেয়ে অধিকতনা শক্তিশালী শত্রুবাহিনীকে ধ্বংস করিয়া সিয়াছে। জেহালের জোশ একবার জাগ্রত হইলে প্রতিটি মােছলেম নরনারী কাফের সেনাবাহিনীকে প্রশ্রম করার জন্য সশস্ত্র বাহিনীতে যােগদান করিবে। আমাদের পক্ষে রহিয়াছে ন্যায়নিচাৰ । আমাদের উপর রহিয়াছে আল্লাহর রহমত। ইনশাআল্লাহ, আমরা জয়যুক্ত হইব।”১৫০
জামায়াতে ইসলামী নেতা অধ্যাপক গােলাম আযম এলপিঞ্জি আইনজীবী সমিতির এক সভায় ভাষণ দানকালে বললেন, ‘দেশপ্রেমিক জনগণ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত’। ‘দৈনিক সংগম’ পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
রাওয়ালপিন্ডি, ২৭ শে নভেম্বর (পিপিআই)।-পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী প্রধান অধ্যাপক গােলাম আযম জোয় দিয়ে বলেছেন যে, শক্রর হামলায় মােকাবেলায় আত্মরক্ষামূলক ভূমিকা নয়, বরং শরুর দেশে পাল্টা আক্রমণ চালানােই হচ্ছে সর্বোত্তম প্রতিক্ষা। কোন জাতি যুদ্ধকালে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা ছাড়াই টিকে থাকতে পেরেছে এমন কোন নারীর হতিহাসে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
অধ্যাপক গোলাম আযম আজ পিত্তি আইনজীবী সমিতির এক সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের ইসলাম ও আত্নীয় অখণ্ডতায় বিশ্বাসী জনগণ ভারতের ওপর মরণ আঘাত হানার জানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ উনগণ ভারতের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করে যাবে। তারা নিজেদেয় পবিত্র ভূমির এক ইঞ্চি পরিমাণ ভূমিও ভাৱত্রের কবলে যেতে দেবে না। জামায়াত নেতা দেশের অথতা রক্ষার জন্য সকল শক্তি নিয়ােগের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি মনে, পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধ চলছে। মােগা না করুক, পূর্ব পাকিস্তান যশি ভারতের দখলে চলে যায়, “তাহলে দেশের অপর অংশ টিকে থাকতে পারবাে না।
তিনি পূর্ব পাকিস্তানে বিতিবাদী তৎপরতার দীর্ঘ কাহিনী বর্ণনা করেন এবং তথাকথিত বাংলাদেশ গঠনের উদ্দেশ্যে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণের জন্য মওলানা ভাসানী, প্রফেসর মােজাফফর আহমশ, জাবলীগ ও ছ ইউনের উপদল লোকে দায়ী করেন।
________________________________________
তিনি বলেন যে, শেখ মুজিবুর রহমানের গৃহীত পদ্ধতিও বিক্ষিন্নতার পথ সুগম করে দিয়েছে।
অধ্যাপক গোলাম আযম সুস্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিচ্ছিন্ন হবার জন্য ভােট দেয়নি। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী অভিযানে খােলাখুলি ঘােষণা করেছিল যে, এই দল এক ও শক্তিশালী পাকিস্তানে বিশ্বাসী এবং তারা কোরআন ও সুন্নাহর গেলাম কোন আইন প্রণয়ন করবে না। তিনি বলেন, আসল কথা হলো এই যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগন্ধ ভােট নিয়েছিল আরো অধিক স্বায়ত্তশাসন অাদায়ের জন্য, বিচ্ছিন্নতার জন্য নয়।”৯৭১
এর পূর্বে অধ্যাপক গোলাম আযম লাহােরে এক সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেন, ‘পশ্চিম পাকিস্তানের উপর ভারত যে ন্যাক্কারজনক হামলা চালাচ্ছে, পশ্চিম পাকিস্তানের উচিত হবে একটি শক্ত জবাব দেওয়া। তিনি বলেন, ভারত বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ মাত্রায় অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধ করছে। পাকিস্তানকে কেবল প্রতিরােধ করলেই চলবে না, পাকিস্তানের উচিত হবে একই রকম আঘাত হানা। পালটা আক্রমণ না করা হলে ভারতীয় সৈন্যরা হরে ধীরে অগ্রসর হয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ছত্রভঙ্গ করে দেবে। জামায়াত নেতা বলেন, আইয়ুব আমলে। ভাসানী এবং মুজিবের নাশকতামূলক এবং দেশদ্ৰোহী কর্মকান্ড জাতি আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।১২
এদিকে ঢাকায় আট জন নির্বাচিত এম, এম, এ, এস এবং এম, পি,এ এস এক বিবৃতিতে জানাতের বােমা হামলার ‘ত্র নিন্দা জানান। বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তানের সাত কোটি জনগকে তাদের প্রিয় মাতৃ ভূমি প্রতি ইঞ্চি ভূমি ব্রাহ্মণ আধিপত্য থেকে রক্ষার অন্য অঙ্গ হতে তুলে নেবার আবেদন জানান। নেতৃবর্গ প্রত্যেক জেলা শহরে মিছিল, তালা এবং জনসভা করারও আহ্বান জানান। নেতৃবর্গ আশা প্রকাশ করেন যে, লেশপ্রেমিক জনগণ এই সংকটময় মুহূর্তে ব্যর্থ হবে না বরং তারা কাধে কাধ মিলিয়ে শত্রুর মােকাবিলা মননে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন মােহাম্মদ মশিউল ইসলাম, মােহাম্মদ নূরন্নাহ, মােহাম্মদ ফলুল হক, মােহাম্মদ এ, জবার খই, মােহাম্মদ শফিকুর হমান, মেহিমিন ফজলুল হক চৌধুরী, মােহালে সােলায়মান এবং মােহাম্মদ ইমদাদুল হক। ১৫৩
এ সময় লাহাের পাকিস্তান কনভেনশন মুসলিম লীগ সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী এই সংকটময় মুহূর্তে জাতীয় সরকার গঠনের জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার প্রতি আহ্বান
নান। মুসলিম লীগ নেহু বলেন জাতীয় স্বার্থেই জাতীয় নেতাদের আলােচনায় বস প্রয়োজন। ৯৫
এ দিকে ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর এক সভায় পূর্ব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এরতের অঘােষিত কাপুরুষােচিত আগ্রাসনের নিন্দা জানানো হয়। সভায় বলা হয়, পাকিস্তানের ১২, কোটি মানুষ শেখ রক্ত নিন্দু দিয়ে হলেও মাতৃ ভূমির ৬ি ইথিয়া ভূমি রক্ষা করনে। সভায় লা হয়, ভারতীয় আগ্রাসন হলো পাকিস্তানের প্রদেশ দল এবং এই কুট কৌশলের wধ্যদিন। বাংলাদেশ সরকার নামে এ অবৈধ শিশুর • সোয়া ১০ট।
অধ্যাপক গোলাম আযম শ্রেণিঙে ইয়াহিয়ার সঙ্গে দেখা করে রাওয়ালপিন্ডি থেকে ফেরার পথে লাহোর বিমান বন্দরে বলেন, ‘অনতিবিলম্বে জাতীয় সরকার গঠন করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের সংকট সমাধানে জাতীয় সরকার গঠন করার প্রয়ােজনীয়তা ইয়াহিয়া সরকারী অনুভব করেছেন। তিনি বলেন, দেশকে রক্ষার উন জাতীয় অধিবেশন ডাকার পূর্বে জাতীয় সরকার গঠন প্রয়োজন। গোলাম আযম বলেন,
________________________________________
সকারের উচিত সকল রাজনৈতিক দলকে ডাকা। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নুরুল আমীনের নাম প্রস্তাব করেন ১৫% | জামায়াত নেতা অধ্যাপক গোলাম আযম লাহােরে ১ ডিসেম্বর বললেন, জাতি আই যে অবস্থা অতিক্রম করছে তাতে জাতির সামনে দুটো বিকল্প পথ খােলা আছে। একটি হলাে সমানজনক মৃত্যু এবং আরেকটি হলাে আল্লাহর দান হিসাবে মহান জাতি হিসাবে বেঁচে থাকা। লাহোর হাইকোর্ট বারে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, এখনই ইসলামের জন্য কাজ করার সময়। দেশকে রক্ষা করার জন্য ইসলামের নামে সকল প্রকার ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকা দরকার। গোলাম আযম বলেন, যদি পূর্ব পাকিস্তান হারিয়ে যায়, তাহলে পশ্চিম পাকিস্তানিও নিরাপদ থাকবে না।
তথ্য নির্দেশ
১. দৈনিক আজাদ, ৫ এপ্রিল ১৯৭১ ২. সৈনিক আজা, ৬ এপ্রিল ১৯৭১ ৩, দৈনিক পূর্বদেশ, ৬ এপ্রিল ১৯৭১ 6, দৈনিক পাকিস্তান, ৬ এপ্রিল ১৯৭১ ৫. দৈনিক আজাদ ৬ এপ্রিল ১৯৭১। ৬, দৈনিক পাকিস্তান, ৭ এপ্রিল ১৯৭১ ৭, দৈনিক আলে, এপ্রিল ১৯৭১ ৮. দৈনিক আজাদ, ৭ এপ্রিল ১৯৭১ ৯, দৈনিক আজাদ, ৮ এপ্রিল ১৯৭১ ১০, দৈনিক সঞ্জাম, ৮ এপ্রিল ১৯৭১ ১১. দৈনিক আজাদ, ৯ এপ্রিল ১৯৭১ ১২. দৈনিক পাকিস্তান, ৯ এপ্রিল ১৯৭১ ১৩. দৈনিক পাকিজ্ঞান, একি ১৯৭১ ১৪, দৈনিক আজাদ, ১০ এপ্রিল ১৯৭১ ১৫. দৈনিক পান, ১০ এপ্রিল ১৯৭১ ১৬, দৈনিক আজাদ, ১০ এজিল ১৯৭১ ১৭, দৈনিক মমি, ১১ এজিল ১৯৭১ ১৮. দৈনিক সংগ্রাম, ১১ এপ্রিল ১৯৭১ ১৯. দৈনিক জাঞ্জলি, ১১ এপ্রিল ১৯৭১ ১০, দৈনিক আজাদ, ১১ এপ্রিল ১৯৭১ ২১. দৈনিক আজাদ, ১১ এপ্রিল ১৯৭১ ২২. দৈনিক্স আপ, ১১ এপ্রিল ১৯৭১ ২৩, সৈনিক সংগ্রাম, ১৯ এপ্রিল ১৯৭১ 26, দৈনিক আজপি, ১০ এপ্রিল ১৯৭১ ২৫. দৈনিক আজল, ১৩ এপ্রিল ১৯৭১ ২৬, দৈনিক আজাদ, ১৩ এপ্রিল ১৯৭১
________________________________________
২৭, দৈনিক আজাদ, ১৩ এপ্রিল ১৯৭১ ২৮, দৈনিক আজাদ, ১৩ এপ্রিল ১৯৭১ ২৯, দৈনিক আজাদ, ১৬ এপ্রিল ১৯৭১ ৩০, সৈনিক আজা, ১৯ এপ্রিল ১৯৭১ ৩১, দৈনিক আজাদ, ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ ৩২, দৈনিক আজাদ, ১৮ এপ্রিল ১৯৭১ ৩৩. সৈনিক আজাদ, ১৮ এপ্রিল ১৯৭১ ৩৪, দৈনিক আজাদ, ১৯ একিল ১৯৭১ ৩৫. দৈনিক আজাদ, ২০ এপ্রিল ১৯৭১ ৩৬. দৈনিক আজাদ, ২০ এপ্রিল ১৯৭১ ৩৭, দৈনিক আজাদ, ২০ এপ্রিল ১৯৭১ ৩৮. দৈনিক আজাদ, ২২ এপ্রিল ১৯৭১
৪০, দৈনিক আজা, ২৯ এপ্রিল ১৯৭১ ৪১. দৈনিক আজাদ, ২৯ এপ্রিল ১৯৭১ ৪৯. দৈনিক আলাপ, ২৭ এপ্রিল ১৯৭১ ৪৩, সৈনিক সংগ্রাম, ২৯ এপ্রিল ১৯৭১ ৪৪, দৈনিক সংগ্রাম, ২৯ এপ্রিল ১৯৭১ ৪৫, দৈনিক আকাল, ১ মে ১৯৭১। ৪৬. দৈনিক আজা, ২ মে ১৯৭১ ৪৭. দৈনিক আজ, ২ মে ১৯৭১ ৪৮, দৈনিক আজাপ, ৩ মে ১৯৭১ ৪৯, দৈনিক আজাদ, ৪ মে ১৯৭১ ৫০. দৈনিক আজাদ, ৮ মে ১৯৭১ ৫১. সৈনিক আকাশ, ৯ মে ১৯৭১ ৫৯. দৈনিক আজাদ, ৮ মে ১৯৭১ ৫৩. দৈনিক আজাদ, ১০ মে ১৯৭১ ৫. দৈনিক আজ, ১২ মে ১৯৭১ ৫৫, দৈনিক আজাদ, ১৩ মে ১৯৭১ ৫৬. দৈনিক আজাদ, ১৩ মে ১৯৭১ ৫৭, দৈনিক আলাপ, ১৮ মে ১৯৭১ ঐ৮, দৈনিক আজাদ, ১৬ মে ১৯৭১ ৫৯, দৈনিক আজাদ, ১৭ মে ১৯৭১ ৮০, দৈনিক আজ, ১৭ মে ১৯৭১ ৬১. দৈনিক আ৭, ১৭ মে ১৯৭১ এক, দৈনিক আজা, ১৯ মে ১৯৭১ ৮০, দৈনিক আঞ্চ, ২১ মে ১৯৭১ ৬৯, সৈনিক আজাদ, ২২মে ১৯৭১
________________________________________
৬৫. দৈনিক আজাশ, ২১ মে ১৯৭১ ৪৬, দৈনিক আজাদ, ২৩ মে ১৯৭১ ৫৭, সৈনিক আজাদ, ২৮ মে ১৯৭১ ৪৮, দৈনিক আজাদ, ২৭ মে ১৯৭১ ৬৯, সৈনিক আজাদ, ২৪ মে ১৯৭১ ৭০, দৈনিক আজাদ, ৬ মে ১৯৭১ ৭১. দৈনিক আজাদ, ২৭ মে ১৯৭১ ৭৭, দৈনিক আঙ্গম, ২৮ মে ১৯৭১ ৭:৩, দৈনিক আজাদ, ৩০ মে ১৯৭১ ৭৪, দৈনিক আজাদ, ৩১ মে ১৯৭১ ৭৫. দৈনিক আজাদ, ৩১ মে ১৯৭১ ৭৬. দৈনিক আজাদ, ৩১ মে ১৯৭১ ৭৭, দৈনিক আজাদ, ৩১ মে ১৯৭১ ৭৮, দৈনিক পাকিন, জুন ১৯৭১ ৭৯. দৈনিক আগুন, ১ জুন ১৯৭১ ৮০, সি মনিং নিউ, ৩ জুন ১৯৭১ ৮১, দৈনিক আজাদ, ৪ জুন ১৯৭১ ৮২. দৈনিক আজাদ, ৮৭ – ১৯৭১ ৮৩, দৈনিক আজাদ, ৭-৮ জুন ১৯৭১ ৮৪, দৈনিক আজাল, ১০ জুন ১৯৭১ ৮৫, দৈনিক আজ, ১১ জুন ১৯৭১ ৮৬. সি মর্নিং নি®®, ১৩ জুন ১৯৭১ ৮৭, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৩ ১৪ জুন ১৯৭১ ৮৮, দৈনিক আভালি, ১৯ জুন ১৯৭১ ৮৯. সৈনিক মজিল, ১৮ জুন ১৯৭১ ৯০, সৈনিক আজ, ১৮ শ ১৯৭১ ৯১, দৈনিক আজলি, ১৯ জুন ১৯৭১ ৯২. সৈনিক মুভিদাল, ২০ জুন ১৯৭১ ১৯৩, দৈনিক আজা, ২১ জুন ১৯৭১ ৯৪, দৈনিক সান, ২১ জুন ১৯৭১ ৯৫. দৈনিক সংগ্রাম, ২৯ জুন ১৯৭৪ ৯৬. সৈক সংগ্রাম, ২৩ খুন ১৯৭১ ৯৭. সৈনিক আজাদ, ২৩ জুন ১৯৭১ ৯৮, নৈক আজাদ, ২৮ জুন ১৯৭১ ৯১. দৈনিক পাকিস্তান, ৩ জুলাই ১৯৭১ ১০৯, সি মর্নিং নিউ, ৩১ জুলাই ১৯৭১ ১০১, দি মনিং নিউক, ১ আগষ্ট ১৯৭১ ১০৯. পি মর্নিং নিউজ, ৩ আগষ্ট ১৯৭১
________________________________________
১০৩, দৈনিক সঙ্গম, ৫ আগষ্ট ১৯৭১ ১০৪, দৈনিক সগ্রাম, ১৬ আগষ্ট ১৯৭১ ১০৫, দৈনিক সংগ্রাম, ১৬ আগষ্ট ১৯৭১ ১০৬, দি মর্নিং নিউ, ১৭ আগষ্ট ১৯৭১ ১০৭, দৈনিক সগ্রাম, ২১ আগষ্ট ১৯৭১ ১০৮. সৈনিক অস, ২৪ আগষ্ট ১৯৭১ ১০৯, দি মর্নিং নিউজ, ২৭ আগষ্ট ১৯৭১ ১১০, দৈনিক সল্লাম, ২৯ আগষ্ট ১৯৭১ ১১১, দৈনিক সংগ্রাম, ২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ১১৪, দৈনিক ইতেফাক, ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ১১৩. দৈনিক সংগ্রাম, ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ১১৯, দি মর্নিং নিউজ, ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ১১৫, দৈনি আজাদ, ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ১১৬, দি মর্নিং নিউজ, ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ১১৭, দি মর্নিং নিউজ, ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ১১৮, দৈনিক পাকিস্তান, ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ১১৯, দৈনিক আজা, ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ১৯০, দি মনিং, নিউজ, ২ অক্টোবর ১৯৭১। ১২:১, ডি মর্নিং নিউজ, ৫ অক্টোবর ১৯৭১ ১২২. দি মর্নিং মিউক, ৩ অক্টোবর ১৯৭১ ১২৩, দি মর্নিং নিউজ, ৫ অক্টোবর ১৯৭১ ১২৪, দি মনি, মন, ৮ অক্টোৱ ১৯৭১ ১২৫. দি মনিং নিউজ, ৯ অক্টোবর ১৯৭১ ১২৬, দৈনিক আজাদ, ১৮ অক্টোবর ১৯৪১ ১২৭. দি মর্নিং নিউজ, ২৮ অক্টোবর ১৯৭১ ১২৮, দি মর্নিং নিউজ, ২৭ অক্টোবর ১৯৭১ ১২৯, দি মর্নিং নিউ, ১৫ অক্টোবর ১৯৭১ ১৩০, দৈনিক সয়াম, ১৭ অক্টোবর ১৯৭১ ১৩১, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৭ অক্টোবর ১৯৭১ ১৩২. দৈনিক আজাদ, ১৮ অক্টোবর ১৯৭১ ১৩৩, দৈনিক পূর্বদেশ, ১৮ অক্টোবর ১৯৭১ ১৩৪, দৈনিক ইত্তেফাক, ১৮ অক্টোবর ১৯৭১ ১৩৫. দি মর্নিং নিউজ, ২৩ অক্টোবর ১৯৭১ ১৩৬. লি মনিং নিউজ, ২৫ অক্টোবর ১৯৭১
৩৭. দৈনিক ইত্তেফাক, ২৭ অক্টোবর ১৯৭১ ১৮. লি মনিং নিউজ, ২৯ অক্টোবর ১৯৭১ ১৩৯. দৈনিক পাকিস্তান, ৭ নভেম্বর ১৯৭১ ১৫৪o, দৈনিক আজাদ, ৮ নভেম্বর ১৯৭১
________________________________________
১৪১. দি মর্নিং নিউজ, ৮ নভেম্বর ১৯৭১ ১৪৭, দৈনিক সংগ্রাম, ১০ নভেম্বর ১৯৭১ ১৩. দি মনিং নিউজ, ১২ নভেম্বর ১৯৭১ ১৪, দৈনিক সংগ্রাম, ১ নভেম্বর ১৯৭১ ১৪৫, দৈনিক সংগ্রাম, ১৪ নভেম্বর ১৯৭১ ১৪৬, দৈনিক সংগ্রাম, ১৫ নভেম্বর ১৯৭১ ১৯, দি মর্নিং নিউক, ১৪ নভেম্বর ১৯৭১ ১৪৮, সি মন নিউজ, ২৪ নভেম্বর ১৯৭১ ১৪৯. দৈনিক সংগ্রাম, ২৪ নভেম্বর ১৯৭১ ১৫০, দৈনিক আজম, ২৭ নভেম্বর ১৯৭১ ১১. দৈনিক সম, ২৮ নভেম্বর ১৯৭১ ১৫২. দি মর্নিং নিউজ, ২৬ নভেম্বর ১৯৭১ ১৫৩, প্রাক্ত ১৫. দি মনি, নিউ, ২৭ নভেম্বর ১৯৭১ ১৫৫. দি মম, নিউ, নখের ১৯৭১ ১৬. লি মনিং নিউজ, ২ ডিসেম্বর ১৯৭১ ১৫৭, দি মনিং নিউজ, ৩ মেম্বর ১৯৭১
________________________________________
শিল্পী-সাহিত্যিক-সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী তৎপরতা।
পাকিস্তানি সামরিকজান্তা তাদের অপারেশন সার্চ লাইট” পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাত্র। কয়েকদিনের মধ্যেই এদেশের এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী সেনা শাসকদের প্রতি তাদের সাহায্য-সহযােগিত্তার হাত বাড়িয়ে দেয়। বুদ্ধিজীবী নামধারী এসন ব্যক্তি কেবল দেশে অভ্যন্তরেই নয়-দেশের সীমা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গেয়েছেন, মুক্তিকামী বাঙালির সশস্ত্র স্বাধীনতার আন্দোলনকে ভারতীয় আগ্রাসন’ হিসাবে চালাবার অপপ্রয়াস চালিয়েছেন। কিন্তু আমরা জানি, তাদের সে অপপ্রয়াস সফল হয়নি বাংলাদেশ নামের একটি দেশ পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের নৃশংস হত্যাকাণ্ড, নারী নির্যাতন, বাড়ি-ঘর লুট, অগ্নি সংযােগ ইত্যাদির মতাে জঘন্য অপরাধ এসৰ বুদ্ধিজীবীর হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারেনি, পারেনি তাদেরকে বিচলিত করতে। মানবিকতা, মানবাধিকার, মানবিক মূল্যবােধকে পদদলিত করে এসব বুদ্ধিজীবী পাকিস্তানি সামরিক খ রক্ষায় দেশে-বিদেশে দিন রাত ঘুরে বেড়িয়েছেন। বর্তমান প্রজনু জানে না অবরুদ্ধ বাংলাদেশে পাকিস্তানি দোসর এসব বুদ্ধিজীবীদের কীর্তিকলাপ। আমরা জানি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙালির ওপর অকস্মাৎ আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণের মাত্র কয়েকদিন পর ২ এপ্রিল ঢাকা হাইকোর্টের ৩৯ জন এডভোকেট একে যুক্ত বিবৃতি প্রচার করেন। দৈনিক আজাদ পত্রিকার ৫ এপ্রিল সংখ্যায় ভারতীয় হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা, ৩৯ জন এডভােকেটের যুক্ত বিবৃতি” শিরােনামে বলা হলাে;
“গত শুক্রবার পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের ৩৯ জন এডভােকেট এক যুক্ত বিবৃতিতে পাকিস্তানের “আওস্তরীণ ব্যাপারে ভারতের নগ্ন ও নিলজ্জ হস্তক্ষেপের নিন্দা করেন।
নিম্নে তাহাদের যুক্ত বিবৃতির পূর্ণ বিবরণ দেওয়া হইল।
আমরা পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের প্রেরণ এবং পরবর্তীকালে ভারতীয় পার্লামেন্টে অবাঞ্ছিত প্রস্তাব গ্রহণ দ্বারা আমাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের নগ্ন ঔ নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের নিন্দা করিতেছে।
________________________________________
“ইহার দ্বারা ভারত কেবল ২টি স্বাধীন রাষ্ট্রের মধ্যকার সকল আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাই লংঘন করে নাই ৰং পাকিস্তানকে ধ্বংশ করা উদ্দেশ্যে রূপে আত্মপ্রকাশ করিয়াছে। ইহার মাধ্যমে সকল প্রকার আন্তর্জাতিক আচরণবিধির প্রতি ভারতের অশ্রদ্ধা প্রকাশিত হইয়াছে। এই প্রসঙ্গে আমরা পূর্ব পাকিস্তানের ইনফ ভুল পথে চালিত করার জন্য ভারতীয় নেতারা মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণার নিন্দা ফরিতেছি।
ভারতের বর্তমান কার্যকলাপ হইতে উহার সকল প্রতিবেশী দেশের এ ব্যাপারে হুঁশিয়ারী গ্রহণ করা উচিত যে, ভারত নিঞ্জের সাম্রাজ্যবাদী ও ঔপনিবেশিক অভিসন্ধি চরিতার্থ করার জন্য তাহাদের সহিত একই ধরনের আচরণ করতে পারে। আমরা বিশ্বের সকল শান্তিকামী ও স্বাধীনতাপ্রিয় লােকের নিকট ভারতকে এহেন কার্যে অধিক দূর অগ্রসর হা হইতে নিবৃত্ত করার জন্য আবেদন জানাইতেছি। এছাড়া, আমরা আগণের প্রতি অনুপ্রবেশকারীদের সকল প্রকার সম্ভাব্য বাধা প্রদান করিয়া আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখিতে আবেদন জানাইতেছি।
বিবৃতিতে যাহারা স্বাক্ষর করেন : জনাৰ মরিল আহমাল, জনাব ফজলুল হক, জনাব মইনুল হক, জনাব এ, ‘ব্ল চৌধুরী, জনাব শফিকুর রহমান, জনাব আহমেদুর রহমান অনি, জনাব জুলমত আলী খান, জনাব মােদাবর হুসাইন, জনাব এ, এম, এ, জলিল, জনাৰ নাজিবপন, জনাব আবদুল ওয়াদুদ মিয়া, জনাব ইউসুফ আলী খান, জনাব মােঃ গিয়াসুদিন ভুইয়া, জনাব এ, কে, রফিকুল হোসেন, জনাৰ নাসিরুদ্দিন চৌধুৰী, জনাম নাসিম এ, ব্ৰহমান, জনাব মােহিতুর রহমান চৌধুরী, জনাব আকরাম হােসেন, জনাৰ আৰু সালেক, জনাৰ অনুদুর রশীদ, সৈয়দ মুহম্মল আলী, জনাব মোঃ কোরবান আলী, জনাব মােজাম্মেল হক, জনাব মােঃ নূরুল হক, জনাৰ মশিহুল ইসলাম, তামাৰ এম. এন, আলী, জনাব আজিজুর রহমান, জনাব নুরুল হুদা খােন্দকার, জনাৰ ফজলুল হক, জনাব এ কে ফজলুল হক চৌধুরী, জনাব আহমদ আলী মহম্মল, জনাব মােমতাজুদ্দিন আহমদ, জনাব শামসুল ইসলাম, নাৰ সিরাজুল ইসলাম, জনাৰ ফরমান উল্লাহ খান, জনাব আবু সাইদ, জনাব এইচ, কে আবদুল হাই, জনাব এম, এস, ভূইয়া ও জনাৰ মাহবুবুর রহমান।
বিশিষ্ট আইনজীবী ও পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হামিদুল হক চৌধুরী সংবাদপত্রে একটি বিবৃতি দেন। তিনি এই বিবৃতিতে বলেন যে,
| ‘পূর্ণ পাকিস্তানীগণ! আর যাহা দাবী করুক্ষ না কেন, তাহারা অবশ্যই দেশের একাকে বিনষ্ট করিতে চাহে নাই, এবং, তাহা কল্পনাও করে না। ভারতীয় প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য হইতেছে উহার নিজের সম্প্রসাৱণৰালী সুবিধার জন্য পশ্চিম পাকিস্তান হইতে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করিয়া সার্বভৌম দেশ হিসাবে পাকিস্তানকে ধ্বংস করা। এই উদ্দেশ্যসাধন এবং বিশ্বকে ধােকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বােমা বর্ষণের দ্বারা নগরসমূহ স্বংস এবং হাজার মানুষ হত্যার ভিত্তিহীন প্রচাষাণা চালানাে হইতেছে। প্রকৃতপক্ষে, আকাশবাণীর খবর পরিবেশনের অর্ধেক সময় এই উদ্দেশ্যে ব্যয় করা হইছে কিন্তু কতক্ষণ এই মিথ্যা প্রচারণা টিকাইয়া রাখা যাইবে বলিয়া জনাব চৌধুরী প্রশ্ন করেন।
পূর্ব পাকিস্তানীগণ যাহা চাহে তাহা মাত্র ১২০ দিন পূর্বেই ঘােষণা বা হইয়াছে। প্রাপ্ত বঙ্গ পূর্ব পাকিস্তানীগণ একক জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচনের জন্য ভােটলান।
________________________________________
করিয়াছিল। তাহাৱা সমগ্র দেশের একক জাতীয় পরিষদ অধিবেশনে বসা, একক দেশের জন একটি শাসনতন্ত্র প্রণয়ন এবং তাহার পর ৫টি প্রদেশের ভিত্তিতে দেশের জন্য একটি সরকার গঠনের উদ্দেশ্যেই তাহাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করিয়াছিল বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন।
সুতরাং, এমতাবস্থায় হিন্দুস্থানী প্রস্তাবিগণ কি করিয়া পাবী করেন যে, পূর্ব পাকিস্তান, পাকিস্তান হইতে বিচ্ছিন্ন হতে চাহে ? তিনি হিন্দুস্থানী কর্তৃপক্ষের প্রতি এই মর্মে প্রশ্ন করেন যে তাহারা ও ওহান মতবাদে বিশ্বাসী হইয়া কি করিয়াই না বিঞিানীদের নৈতিক ও বৈষয়িক সাহায্য প্রদান শুরু করিয়াছে অনুরূপ বিতািবাদী লােকদের সন্ধান পাকিন্তান অপেক্ষা হিন্দুস্থানেই বেশী পাওয়া যাইবে। কারণ, গত ফেব্রুয়ারী ৪ মার্চ মাসে হিন্দুস্থানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এতটা অবনতি ঘটে যে তথায় জীবনহানীও থটিতে থাকে।
হিন্দুস্থান উপমহাদেশে শান্তির স্বার্থে এবং উভয় দেশে জনগণের কল্যাণে অনুপ আক্রমণাত্ম মনােভাব ত্যাগ করিনে জিয়া জাৰি চৌধুরী আশা প্রকাশ করেন। পূর্ব পাকিস্তানের সত্যিকার পরিস্থি%ি সম্পর্কে হিন্দুস্থানের পি কোন সন্দেহ থাকিয়া থাকে তাহা হইলে উহ! অনায়াসেই আবাসিক এলাকা সমূহে, নিরাপদে অবস্থানকারী হিন্দুস্থানী কূটনীতিবিলপের নিকট হইতে তথ্য লাভ করিতে পারে। যদিও উক্ত এলাকাসমূহ, ধুলিসাৎ করিয়া দেওয়া হইয়াছে বলিয়া আকাশবাণী ভিত্তিহীন প্রচারণা চালাইয়াছিল। | মার্চ মাসে ৩ সপ্তাহব্যাপী দীর্ঘ হরতালের ফলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় যে আলাধার। সৃষ্টি হয়। উহাকে পুনরায় স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরাইয়া আনার জন্য দ্বিগুণ শক্তিতে আত্মনিয়োগ করা সকল শ্রেণীর জনগণের দায়িত্ব বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন।
যে কোন সরকারের নিকট হইতে যে কোন নাম্বরিক তাহার জানমাল ও পেশার নিরাপত্তা কাজের আশা করতে পারে। যত নীল দেশে প্রায় সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য। চেষ্টা চালাইয়া যাওয়া উচিত। এই দৃষ্টিকোণ হইতে প্রেসিঞ্জে ইয়াহিয়ার বিবৃতি প্রতি মােবারকবাদ জানাই।”
৮ এপ্রিল পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সাবেক স্পীকার আবদুল মতিন সংবাদপত্রে। এক বিবৃতিতে ভারতের মনোভাব বিশ্ব শান্তির পক্ষে বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন : ‘পাকিস্তানের প্রতি ভারতের বৈরী মনােভাব সম্পর্কে বিশ্ববাসী অবহিত রহিয়াছেন। ভারতের সেই মনােভাব আজ কুৎসিতভাবে আত্মপ্রকাশ করিয়াছে। পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নগ্নতাবে সমর্থন অজ্ঞাপন করায় আমি ভারতীয় পার্লামেন্টের বিরুদ্ধে তত্র নিন্দা জানাই। শুৰিত পরবর্তী ব্যবস্থায় সীমান্তের অপরপারে অশস্ত্র চোরাচালান সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ, পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্ত বরাবর তার সৈন্য সমাবেশ এবং ভারতীয় বেতারের অব্যাহত মিথ্যা ও দূরভিসন্ধিমূলক পাকিস্তান বিরােধী প্রচারণা প্রমাণ করিয়াছে পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান সঙ্কটজনক পরিস্থিতির জন্য ভারতই সায়ী। ভারতের কুখ্যাত মুছলিম হত্যাৱা আজ পূর্ব পাকিস্তানবাসীদের শেষ বুরা বিসর্জন করিতেছে। ভারতের উদ্দেশ্য আজ সুস্পষ্ট ভাবে ধরা পড়িয়াছে। ভারত চায় পাকিস্তান, হইতে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করিতে। ভারতের বিঘোষিত নীতি হইতেছে বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানকে ধ্বংস করা। কারণ আজ পর্যন্ত ভারত এসলামী ভাবাদর্শে
________________________________________
প্রতিষ্ঠিত আমাদের স্বদেশভূমিকে স্বীকার করিয়া লইতে পারে নাই। তিনি বলেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বিপজ্জনক নজির স্থাপন করিয়া এবং ভারতের এই মনােবৃত্তি বিশ্ব শান্তির পক্ষে হুমকি
ভারতের এই নয়া সাম্রাজ্যবাদী দূরভিসন্ধির প্রতি জাতিসংঘ ও বৃহৎ শক্তিগুলির দৃষ্টি আকষ্ট হওয়া উচিত। ভারতের প্রতিবেশ ক্ষুদ্র জাতিগুলির সার্বভৌমত্ব ও অঙ্গালী আজ বিপন্ন হইয়া পড়িয়াছে। ভারতের এই অঞ্চ পাঁয়তারা অনতিবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। বিগত ১৯০৫ সালে পাকিস্তানের হাতে তাহার শােচনীয় পরাজয়ের কথা এত দ্র বিত হওয়ার নহে। পাকিস্তানের বীর জওয়ানরা নয়াদিল্লী যুদ্ধবাজদের স্তব্ধ করিয়া দিয়াছিল । এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য ভারতের ভূমিকা সম্পর্কে পাকিস্তান সম্যক অবহিত রহিয়াছে। গত ১৯৬৭ সালে চীন-ভারত সংঘর্ষে চীনের হস্ত তাহার সম্পূর্ণ বিপত্তির কথা আমি
রহকে স্বরণ করাইয়া দিতে চাই। ভারত হইতে একটি অসং প্রতিবেশী দেশ। ভারত, যদি তাহার ইতিহাস হইতে শিক্ষা গ্রহণ করে তাহা হইলে তাহার পক্ষে উত্তম হইত।
পাকিস্তানের এই সঙ্কট মুহুর্তে আমি পূর্ব পাকিস্তানকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভারতীয় কারসাজি ৰাৰ্থ করিয়া দেওয়ার আহবান জানাইতেছে। এ, টি, সাদী। পূর্ব পাকিস্তান সরদী সম্মের প্রধান জনাব এ. টি. সাদী পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভাৱতের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং ভারতীয় পার্লামেন্টে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান। পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী প্রেরণের তিনি তীব্র সমালােচনা করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার ভারতের কোন অধিকার নাই। ইহা পাকিস্তানের সার্বভৌম ও অথগুত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ স্বপ।
তিনি ভারতে মিথ্যা প্রচারণায় কর্ণপাত না করার জন্য দেশপ্রেমিক পূর্ব পাকিস্তানবাসীদের প্রতি আবেদন জানান। তিনি বলেন, আজ পূর্ব ও পমি দেশের উভয় অংশের জনগণ বহিঃশক্তির আক্রমণ প্রতিহত করিতে ঐক্যবদ্ধ হইয়াছে।
অপরদিকে ঢাকা জেলা বারের ৫০ জন সদস্য এক বিবৃতিতে ‘পাকিন্তানের আতান্তরীণ বিষয়ে ভারতীয় হস্তক্ষেপের নিন্দা জানান। পত্রিকায় বলা হয় :
ঢাকা জেলা বার সমিতির ৫০ জন এভাকেট এখানে প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র বিদ্রোহী প্রেরণের মাধ্যমে পাকিস্তানের আস্তরীণ ব্যাপারে মন্ত্র হস্তক্ষেপের উত্র নিন্দা করেন। তাহাৱা বলেন যে, ভারতীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাব গ্রহণের মধ্যে পাকিস্তানে সশস্ত্র বাড়ি প্রেরণ করিয়া ভারত কেবল সকল মাওতিক দায়িত্ব ভঙ্গ করে নাই পক্ষান্তরে পাকিস্তানকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে তাহারা স্বৰূপেও আত্মপ্রকাশ করিয়াছেন। তাহারা বলেন যে, ভারতের বর্তমান শ্রীচরণে ভারতীয় সশসরণ পরিকল্পনার ব্যাপারে সকল প্রতিবেশী রাষ্ট্রের চকু উলিত হওয়া উচিত। ভারতকে উহার হীন চক্রান্ত হইতে বিরত করার জন্য বিশ্বের শান্তি ও স্বাধীনতাকামী লােকদের আগাইয়া আসা উচিত।
উপরি-উক্ত এডভােকেটগা অনুপ্রবেশকারীদের এবং পঞ্চম বাহিনীর লােকজনদের প্রতিরোধ করার জন্য দেশের জনসাধারণের প্রতি আহবান জানান। তাহারা দেশের সংহতি
________________________________________
বজায় রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাইয়া যাওয়ার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহবান জানান। ঢাকা হাইকোর্টের অপর ৩৯ জন এডভােকেট ইতিমধ্যেই ভারতীয় কার্যকলাপ। নিন্দা করিয়া বিবৃতি দান করিয়াছেন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীগণ হইতেছে জনাব আবদুল মতিন, জনাব মােহাম্মদ আলিম, সৈয়দ আলতাফ হােসেন, জালালুদ্দিন আহমদ, কে, এ, এম, তওফিকুল ইসলাম, শঙ্কর ফকরুদ্দিন আহমদ, এম, ইকবাল আহমদ, মােহাম্মদ আতাউল হক, সৈয়দ সহিদুল হক, কলিমুদ্দিন আহমদ, সিরাজুল ইসলাম, এ কিউ এম শফিকুল ইসলাম। এবং জনাৰ মেসবাহ উদ্দিন। খেলাফতে রব্বানী পার্টি খেলাফতে রানী পার্টির চেয়ারম্যান জনাব এম, এ, এস, এম, মােফাখখাৱ পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপের নিন্দা করিয়া বলেন যে, ভারত বিচ্ছিন্নতাবাদী মনােভাবকে উস্কানী পান করিতেছে। তিনি এই ধরনের কাজ হইতে বিগত থাকার জন্য ভারতের প্রতি সৰ্কবাণী উচ্চারণ কৱেন। প্রদত্ত বিবৃতিতে তিনি বলেন যে, পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতা রােধের জন্য প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মােহাম্মদ ইয়াহিয়া খান ব্যবস্থা গ্রহণ করায় পূর্ব পাকিস্তানে যাহা ঘটিয়াছে তাহা সম্পূর্ণভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। বিশ্বের সকল দেশ এমনকি জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল ও অবকাশভাবে এই কথা স্বীকাল করিয়াছেন।”
| অন্যদিকে মােছলেম বুদ্ধিজীবী কাউন্সি”ও ভারতকে হুঁশিয়ার করে দেয়। “দৈনিক আজাদ’ পত্রিকা জানালাে ;
মােছলেম বুদ্ধিজীবী কাউন্সিলের সভাপতি এবং ঢাকা মিউনিসিপ্যাল কমিটির সাবেক কাউন্সিলের অধ্যাপক এ, কে, শামস আজ এখানে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ ভারতের হন চক্রান্ত নস্যা করিয়া দিবে এবং ভারতীয় এজভ্যাঞ্চার অহম করিয়া দিলে। প্রদত্ত বিবৃতিতে তিনি পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেন। পাকিস্তান পার্টির আহবায়ক এবং শেখ মুজিবের নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী জনাব মােহাম্মদ আলী সরকার ভারতের প্রতি সতর্কবাণী উচ্চারণ করিয়া বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানীরা বাংগালীর নাম করিয়া মুজলমানদের হীন উদ্দেশ্যে কাজে লাগান নানন্দাশত করা হইবে না । তিনি বলেন যে, ভারতীয়রা অলি আমাদের পবিত্র ভূমিতে পদার্পণের চেষ্টা করে তাহ হইলে তাহারা শত্রুদের ওংস করিয়া দিবে। প্রদত্ত বিবৃতিতে তিনি বলেন যে, পাকিস্তান এ হিলামিক দেশ এবং আমাদের জাতীয় পাকিস্তানী। তিনি বলেন যে শান্তিনি অবিভাজ্য এবং জাতীয়তাও এদ্রপ।”
“আজাদ’ পত্রিকার ১৯ এপ্রিল সংখ্যায় সাবেক ডেপুটি স্পীকার এ,টি, এম, আবদুল মতিন -এর আরাে একটি বিবৃতি প্রচারিত হয়। তিনি জানালেন ; যে কোন বহিরাক্রমণ মােকাবেলায় দেশবাসী দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।’ পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
ঢাকা, ১৩ এপ্রিল। জাতীয় পরিষদের সাবেক ডেপুটি স্পীকার জনাব এ. টি. এম আব্দুল মতিন বলেন পাকিস্তানের আজানী ও আঞ্চলিক অখস্তত্ব রক্ষার সংগ্রামে নক্সাচীনের দৃঢ় আশ্বাসের জন্য এনেশেৱ দেশপ্রেমিক জনগণ চীনকে অভিনন্দন জানাইৰে।
________________________________________
তিনি বলেন, যে কোন বহিরাক্রমণের বিরুদ্ধে চীন পাকিস্তানকে সর্বপ্রকার সাহায্যপানে বদ্ধপরিকর। সংবাদপত্রে প্রদও এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এই ভূখঞ্চে শাস্তি অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্যে মহাচীনের সাম্প্রতিক ভূমিকা বিশ্বের সকল শান্তিপ্ৰিথা জাতির নিকট অনিন্দিত হইবে। পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে নয়াচীন সরাসরিভাবে ভারতকে দায়ী করিয়াছে।। | সাবেক ডেপুটি স্পীকার বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তান সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি এবং পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ ও অস্ত্রশ চালান দেওয়ার অর্থ হইতেছে পাকিস্তানে ব্যাপক হামলা চালানাে। হিমি বলেন, পাকিস্তানের এগার কোটি সাহসী ও দেশপ্রেমিক ও সংকল্পবদ্ধ জনগণ স্বদেশের এই পবিত্র ভূমিতে মানবতা ও শান্তির শকে চুর্ণ বিৰ্ণ করিয়া দিবে। | ইসলামী একাছেমীতে এক আলােচনা সভায় অধ্যাপক সাহেদ আলী বললেন ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য জেহাদ ঘােষণা মুসলমানদের কর্তব্য। সংবাদে বলা হলাে :
| ‘ঢাকা, ১৬ এপ্রিলা- এছলামী একাডেমীতে ‘এছলামে জেহাদ” শীর্ষক এক আলােচনা সভায় বক্তাগণ বলেন যে, এছলামী আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও সমাজ রক্ষার জন্য মুসলমানদের জেহাদ ঘােষণার নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে। এছলামী একাডেমীর ডিরেকটর জনৰ আহমদ হােসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় অধ্যাপক শাহেদ আলী ও অন্যান্য অংশগ্রহণ করেন।
অধ্যাপক শাহেদ আলী জেহাদের অর্থ বিশ্লেষণ প্রসঙ্গে বলেন, জেহালের কতি প্রধানতঃ আত্মরক্ষামূলক। এছলামী আদর্শের ভিতি প্রতিষ্ঠিত ব্র ও সমাজ হুমকীর সম্মুখীন হইলে মুছলমানদের অবশ্য কর্তব্য হইতেছে কে জল ঘােষণা করা। মহাননী হজরত মোহাম্মদ (ছঃ) বাণী উদ্ধৃতি দিয়া তিনি বলেন স্বীয় নকলের বিরুদ্ধে জেহাল ঘোষণায় সর্বোত্তম হাদ।
জনাব আহমল হোসেন, সাপী এর ভাষণে বলেন যে, অত্যাচার ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে মুসলমানদের হোলি খােলার নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে। তিনি কোৱানের উদ্ধৃতি দিয়া বলেন, তাহাৱা যদি জেহাল ঘােষণা না করেন তাহা হইলে তাহারা শাস্তিযোগ্য হইবেন।’
‘আজাদ’ পত্রিকার ২০ এপ্রিল সংগ্ধ্যায় ঢাকা সমিতির নেতৃবৃন্দের একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়। নেপূণ স্বাভাবিক পেশাগত কাজে প্রস্ত হওয়ার জন্য জনসাধারণের প্রতি আবেদন জানান। আজাদ জানালাে ;
‘ঢাকা, ১৯ এপ্রিল – ঢাকা সমিতির নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতি প্রসংগে নিরাপত্তা সম্পর্কে কোন প্রকার আশংকা না করিয়া স্বাভাবিক পেশাগত কাজকর্মে প্রবৃত্ত হওয়ার জন্য জনসাধারণের প্রতি আকেশন জানাইয়াছেন। তাহারা বলেন, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী সদস্যগণ, ঢাকা শহরে সর্দারগণ এবং ঢাকা সমিতির কর্মকর্তাগণ শহণে প্রত্যেক অধিবাসীকে ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী ও তাহাদের তল্পিবাহকদের এলামি ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণার প্রতি কর্ণপাত না কার জনা আবেদন করিতেছি।
আমরা ইহাও স্মরণ করাইয়া দিতে চাই যে, ঢাকায় পাকিস্তানের এই ভূমিতে ১৯০৫ সালে শাহবাগে পাকিস্তানের গজ সর্বপ্রথম ৰূপন করা হয় এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর
________________________________________
বহমতে এই ঢাকা শহরেই ভারতীয় ও পাকিস্তানের অন্যান্য শক্রদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিচালনার জন্য এক নম্বর আঁটি হিসাবে থাকিবে। শহরে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক সেবন যাত্র কায়েম হইয়াছে এবং আল্লার দেওয়ার নাগরিকগণ শহরে ও সময় পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের সামাজিক স্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে শূন্যতা পূরণের জন্য পূর্ব পাকিস্তান ও জন কল্যাণ পরিষদের সহিত সহযােগিতায় স্বাভাবিক অবস্থা পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করিয়া যাইতেছেন।
মৌলভী ফরুিল আহমদের নেতৃত্বে ও পরিচালনাধীনে গঠিত পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও জনকল্যাণ পরিষদের কর্মতৎপরতার প্রতি আমরা আন্তরিকভাবে সমর্থন জানাইতেছি। জানমালের নিরাপত্তা সম্পর্কে কোন প্রাণ আশংঙ্গা অথবা সন্দেহ ব্যতিরেকে স্বাভাবিক গেশগত কাজকর্মে প্রবৃত্ত হওয়ার জন্য আমরা প্রত্যেকের নিকট আবেদন জানাইতেছি। পর্নিশেষে আমরা ভাৱতীয় অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সংগ্রামরত রীয় সশস্ত্র সেনাবাহিনী প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন নিরাপন করিতেছি।
স্বাক্ষরকারীগণ : সিরাজুদ্দীন আহমন, প্রেসিডেন্ট ঢাকা সমিতিঃ মাজেদ আলী সর্দার, ঢাকা সমিতির প্রতিষ্ঠাতা কোষাধ্যক্ষ, মওলাববশ সরদার, ভাইস প্রেসিডেন্ট ঢাকা সমিতি এস. এ, ওয়াজেদ আলী, জেনারেল সেক্রেটারী, ঢাকা সমিতি ও আলহাজ্ব মােহাম্মদ আলম শাহাবুদ্দীন আহমদ।
এদিকে ঢাকা শহর সর্দারদের বৈঠকে ৫৪ কতৃপক্ষের সহিত একযােগে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলাে। সংবাদে বলা হলাে :
| “ঢাকা, ১৮ এপ্রিল সাবেক প্রাদেশিক উজির ও ঢাকার নওয়াব হাসান আসকারীর বাসভবনে ঢাকা শহরের শীর্ষ স্থানীয় সর্দাহদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রখ্যাত সর্দারদের মধ্যে জনাব আবু নাসের, প্রখ্যাত ব্যবসায়ী আবদুল মায়েল সরকার (ঢাকা হােটেলের মালিক), শিল্পপতি জনাব সিরাজুদ্দীন, সভায় যোগদান করেন। বিশেষ আমন্ত্রণ ক্রমে মৌলতী ফরিদ আহমদ ও মৌী মহাম্মদ নুরুজ্জামান (যথাক্রমে পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও কল্যাণ পৱিষদের সভাপতি ও সম্পাদক) বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সর্দারগণ পৱিষদের কর্মতৎপরতার সুযােগ ও সেবা সম্পর্কে জানিতে চাচ্ছেন। তাহারা তাহাদের সম্মুখে যে গুরুদায়িত্ব রহিয়াছে, সে ব্যাপারে তাহারা কখানি সহযােগিতা করিতে পারেন, সে সম্পর্কেও জানতে চান। তাহাদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করিয়া দেওয়া হয় এবং তাহারা সম্মত হন যে, শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার দিকে সকল উল্যেপি পরিচালিত হইতে হইবে। তারা এ ব্যাপারে সকল প্রকার সহযােগিতা ও সমর্থনের নিশ্চয় এ লেন । তাহারা শহরের সকল সদারদের একটি বৃহৎ সভার আয়োজন, একটি বিস্তারিত কর্মসূচী গ্রহণ ও সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের সহিত একাগ কাজ করার ইনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
পাকিস্তান শিল্প ও বণিক ফেডারেশন কর্মকর্তারা পত্রিকায় বিবৃতির মাধ্যমে প্রকাশ্যেই সামরিকজান্তাকে সমর্থন জানালাে। বিবৃতিতে বলা হলাে :
“দেশের আধাপ্তরীণ বিপথগামী ব্যক্তি ও বাহিরের শত্রুদের কার্যকলাপের ফলে দেশ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন ও ধ্বংসের মুখােমুখী হইয়া পঁাড়াইয়াছিল । জাতীয় সঙ্কটের সেই সন্ধিক্ষণে ঠিক একমাস পূর্বে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও সশস্ত্র বাহিনীর দৃঢ় ও সময়ােচিত ব্যবস্থার অব বাংলাদেশ ১৬
________________________________________
ফলে উপমহাদেশের মােছলেম রাষ্ট্র আবাসভূমি পাকিস্তান রক্ষা পাইয়াছে। অত্যন্ত স্বল্পকালীন সময়ের ব্যবধানে সকল প্রকার যড়যন্ত্র নস্যা হইয়া গিয়াছে, সশস্ত্র ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীরা নির্মূল হইয়ে এবং পুনরায় আইন ও শশলা মিত্র পরিস্থিতির উন্নতি হইয়া গেলে কি অবস্থা ফিরিয়া আসিয়াছে ইহা কেবল আমাদের সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগ ও চমকপ্রদ গুণাবলীরই প্রতীক বহন করে না, বরং তাহাদের প্রতি পাকিস্তানের উওর অঞ্চলের জনগণের অগাধ বিশ্বাস ও সংখ্যাধিক মানুষের পৃষ্ঠপােষকতা একটি উজ্জ্বল ও প্রমাণিত্র করিয়াছে। পাকিস্তানের সানীমত্ব ও এক নাগার জন্য তাহারা সবকিছুই করিয়াছেন। এজন্য পাকিস্তানের আপামর জনসাধারণ প্রেসিজেন ইয়াহিয়া ও সেনাবাহিনীর নিকট কৃতজ্ঞ। এই মহৎ উদ্দেশ্য সাধনে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ও বেসাময়িক পর্যায়ের যেসব ব্যক্তি তাহাদের নিকটতম প্রিয়জনদের হারাইয়াছেন অথবা দৈহিক ও বৈষকিক ক্ষতির সম্মুখীন হইয়াছেন, আমরা তাহাদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা আপন করিয়েছি এবং এই মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করিতেছি যে, জাতি তাহাদের ত্যাগের কথা চিরদিন শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ করিবে।
তিনি বলেন, দেশরক্ষার বিরাট দায়িত্ব পালনের কাজ এখনও শেষ হয় নাই। পাকিস্তানের অহনাতি ও নৈতিকতাকে ধ্বংসের উদ্দেশাে বাহিরের সকল কারসাজি ও উদ্যোগ বানচাল করা আমাদের দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের পবিত্র কর্তব্য। দেশে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে রুপক্ষকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদানের তিনি আশ্বাস দেন।১০।
‘আজাদ’ পাতার ১২ মে সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। ‘ গুরঃ কি চায় শীক সম্পাদকীয়। সম্পাদকীয়তে পাকিস্তান সামজিকাকে সমর্থন করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ভারীয় যড়যন্ত্র হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। পরিকন্নি ও সুবিন্যস্ত এ সম্পাদকীয়কে বলা হয় । মীমান্তের ওপারে ওরা কি চায়, ৪ জিজ্ঞাসার জওয়াব নূতন করিয়া সন্ধান করার প্রয়ােজন পড়ে না। গত ২১ বৎসর ধারা সকালে ও নীরব নিস্কায় ॥ জাগরগে যে কামনা ইহরা করিয়া আসিয়াছে, যে স্বপ্ন ইহাৱা দেখিয়া আসিয়াছে, সেই স্বপ্নকে সফল কৰি তোলার ষড়যন্ত্রের মধ্যে হিন্দুস্থানের আজকের সকল প্রচেষ্টা ও লরা নিয়ােজিত রহিয়াছে। শত মুখে মহস মিথTৱ জাল বুনিয়া আনা যাহা তাহার অক্ষিগে, তখন তাহাই সে প্রচার ও প্রমাণ করার চেষ্টায় উষ্মন্তু রহিছে। হিন্দুস্থান জাহর কল্যাণপ্রসূত বাহিনী শুনাইয়া বিশ্ববাসীকে চমৎকৃত এবং তাহার অনুউরলিশকে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা চালাইয়া যাইতেছে। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করিয়া কল্পনাপ্রসূত কাহিনী রচনা করিতেছে এবং বুকভাঙ্গা কপট কান্নার প্লাবনে জগতবাসীকে ভাসাইয়া দিয়া তাহাদের সহানুভুতি | রিয়া চলিয়াছে। তাহাদী কে এজ সন্তান তথাকথিত বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীনে পূর্ব পাকিস্তানের এই এলাকা শাসিত হওয়ার অলীক কাহিনী প্রচার করিয়া কলিকাত্তাৱ সৱকাৰী সরাইখানায় প্রতিষ্ঠিত সেই কাঞ্চনিক সরকারের স্বীকৃতির জন্য মায়াকাঃ কালিয়া চলিয়াছে । ইন্দিরা গান্ধীর সরকার আফসােস করিতেছেন যে, তাহাদের এ বৈধ সন্তানকে আর কোন দেশ স্বীকৃতি দান করে নাই। এদিকে তাহাদের বশংবল বিভিন্ন প্রাদেশিক সরকার তথাকথিত্ত বাংলাদেশ সরকারকে ধ্বীকৃতি দান করার জন তাহাদের উপর চালু দিয়া চলিছে । মােনাফেকী আর কাহাকে বলে? তাহাদের কল্পনার
________________________________________
ফানুসে সওয়ার হইয়া লাথের পর লাখ বাস্তুত্যাগী হিন্দুস্থানে ভিড় জমাইতেছে বলিয়া তাহারা তার স্বরে চিৎকার করিয়া চলিয়াছে এবং বিশ্বের দরবারে ভিক্ষার দাবী লইয়া অগ্রসর হইয়াছে।
পাৱেৰ গুৱা জানে না যে, তাহাদের এইসব দাবার একটি যুদি সত্যি হয়, তাহ হইলে অপর পাবীগুলি মিথ্যায় পর্যবসিত হইতে বাধ্য। আসলে ইহ ওহাৱা জানে। তবে মিথ্যার বেয়াতী যাহাদের মজ্জাগত এবং সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি যাহাদের পেশা তাহাদের পক্ষে একই মুখে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী দ্বারা প্রচণ্ড যুগ্ধ সংঘটিত করা, আর এই একই যুদ্ধের ময়দানে পাকিস্তানী বাহিনীকে কাল্পনিক অত্যাচারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ করানাে, গােটা পূর্ব পাকিস্তান তথাকথিত বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা বলি অপপ্রচার চালা, আবার লাখ লাখ লােকের পলায়নের আষাঢ় কাহিনী রচনা করা সম্ভব । পূর্ব পাকিস্তানের বাস্তুভ্যাগী বলিয়া হিন্দুস্থানে যাহাদিগকে দেখাইতে চাহিতেছে, আসলে প্রথমতঃ তাহাৱা পূর্ব পাকিস্তানে আগত হিন্দু অনুপ্রবেশকারী। পাকিস্তানী বাহিনীও এখানকার দেশপ্রেমিক জনসাধারণের হাতে চরম মাত্র খাইয়া ইহারা স্বদেশে ফিরিয়া গিয়াছে। দ্বিতীয়তঃ যাহারা নং পূর্থে পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগ করিয়াছে এবং পুনর্বসতির অভাবে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। তৃতীয়তঃ পশ্চিমবঙ্গের উদ্ভিরে আল জনাৰ অঞ্জয় মুখার্জী সম্প্রতি বলিয়াছেন যে, সেখানকার শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বিশ লাখ ছাড়াইয়া গিয়াছে। তাহাদের অধিকাংশকে পূর্ব পাকিস্তানের নাকৃত্যাপী বলিয়া হিন্দুস্থান বিশ্বকে দাল্লা দিতে চাহিতেছে, এবং এই প্রতারণার সাহায্যে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সমূহের সমর্থন আদায় করিয়া নিজের দীর্ঘকালীন সমস্যা সমাধান করিয়া নেওয়ার চেষ্টা চালাইতেছে। হিন্দু গ্রন নাকি বিশ্বের দরবারে মানবতার খাতিরে করুণ প্রার্থী হইয়াছে । কিন্তু তাহার উদ্দেশ্য মানবীয় নয়, দানবীয় । অতি দানবীয় মতলবে মাতিয়া উঠিয়া হিন্দুস্থান চক্রান্ত জালিয়াতির জাল বুনিয়া চলিয়াছে। বহির্বিশ্বে বহু দেশের নিকটই হিন্দুস্থান হাতে নাতে ধরাও পড়িয়া গিয়াছে। কোন প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্থানের কথায় কিছুমাত্র কর্ণপাত করিতে চাহিলে প্রাথমিক অবস্থা তাহলে খুঁজিয়া লেখা উচিত। হিন্দুস্থানের যে কোন দাবীর বৈধতা যাচাই করার জন্য গোড়া ‘তাহাকে জিজ্ঞাসা করা।
উচিত১. উলাদ সামরিক শক্তিতে সে কি কাশর দখল করে নাই । সিংগে বিশ্ববাসীর নিকট
শতটি অনুষ্ঠানের পবিত্র প্রতিশ্রুতি দান করিয়া সে কি সেই প্রতিশ্রুতির মাথায় পদাঘাত করে নাই। ২, হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে নৃশংস সামরিক অভিযান চালাইয়া সেই দেশটি সে কি দখল করে। নাই।
৩, জুনাগড় হানাদার কে গ্রাস করিয়াছে ?
8. গােয়ায় বর্বর অত্যাচার কে চালাইয়াছিল ? ৫, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরই পাকিস্তানের পাওনা অর্থ আটক করা, পাকিস্তানী মুদ্রার স্বীকৃতিদানে
অসম্মতি জ্ঞাপন, পশ্চিম পাকিস্তানকে খালের পানি হইতে বঞ্চিত করার চেষ্টা, ফরাক্কা বাঁধ নির্মাণ করিয়া পূর্ব পাকিস্তানে জনজীবনকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলিয়া দিয়া পূর্ব পাকিস্তানকে সমূলে “fংস করার অপচেষ্টা, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ পরিচালনা
________________________________________
প্রভৃতি পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্য হিন্দুস্থানের চিরপােষিত মনােভাবের অভিব্যক্তি নয়
পূর্ব পাকিস্তানের জনজীবনকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলিয়া দিয়া পূর্ব পাকিস্তানকে সমূলে ধ্বংস করার জন্য হিন্দুস্থান তার দালাললিথকে দীর্ঘকাল হইতে তৈয়ার করিয়া তুলিয়াছে। বিপুল অর্থ সে ব্যয় করিয়া আসিতেছে এবং গােলযােগের সকল পরিকল্পনাই হিন্দুস্থানের মাটিতে পরিকল্পিত হইয়াছে। হিন্দুস্থানী সৈন্য, অস্ত্র-শস্ত্র এবং খুলনায় হিন্দুস্থানের রেডিও ট্রান্সমিটার ধরা পড়ার ফলে বিশ্বের কাছে নির্ভুলভাবে প্রমাণিত হইয়াছে যে, পূর্ব পাকিস্তানের সাম্প্রতিক গােলযােগ ও ক্ষয়ক্ষতি সাধনের সকল কাজই হিন্দুস্থান সম্পন্ন করিয়াছে। পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণকে সমূলে ধ্বংস করার জন্য যে অমানুষিক বর্বর চেষ্টা হিন্দুস্থান শুরু করিয়াছিল সেই মানবতা বিরােধী জঘন্য অপরাধের জন্য হিন্দুস্থানের বিচার করার পরিবর্তে কোন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্থানের কোন দাৰী বিবেচনা করিয়াই দেখিতে পারে না। মানবতা বিরোধী জঘন্য অপরাধের জন্য হিন্দুস্থানের আয় বিচার করিতে হইবে। হিন্দুস্থানের অর্থপুষ্ট দেশদ্রোহী এবং হিন্দুস্থানী ‘অনুপ্রবেশকারীদিগকে পুনরায় পূর্ব পাকিস্তানে প্রেরণ করিয়া পূর্ব পাকিস্তানের জনজীবনকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার জন্য আস্তর্জাতিক সহযােগিতা অর্জনের অস, উদ্দেশ্যে হিন্দুস্থান যে ৰাজনৈতিক জালিয়াতি শুরু করিয়াছে তাহা কিছুতেই বরদাশত করা হইবে না। সীমান্তের ওপারে ওদের একমাত্র ধ্যান-ধারণা, স্বপ্ন হইতেছে পাকিস্তানকে ধ্বংস করা। তবে এবারও পূর্ব পাকিস্তানে তাহাদের অঘােষিত বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধের দাতভাঙ্গা জওয়াব দিয়া পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাহাদের দূরভিসন্ধি না করিয়া দিয়াছে। এখন তাহার লে কী
ত্যাগীর শকুনী চালে কিশে নয়া দাবা খেলায় মাতিয়া উঠিয়াছে। হিন্দুস্থানী দাবার চাল বিশ্ব প্রতিষ্ঠানসমূহের ধরিতে না পারার কোন কারণ নাই। তাহাদের ইহাও জানিয়া রাখি। উচিত হইবে যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ এখনও ঋশিয়া শুনিয়া হিন্দুস্থানী অনুপ্রবেশের সুযােগ সৃষ্টি হইতে দিবে না।১১
১৩ মে আকাশ” পত্রিকায় ‘দুহিকারিগণ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করিয়াছিল শিরােনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয় ।
“চট্টগ্রাম অঞ্চলে যাহারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহিত বৃথায় সংঘর্ষে লিপ্ত ছিল ২৬ মার্চ আওয়ামী লীগের সখ অভুথানকে তাহারা একটি সুবর্ণ সুযােগ হিসাবেই গ্রহণ করে দলিয় এপিপি’র সংবাদদাতা আলতাফ অ্যাওয়ায় জানাইয়াছেন। এইসব ব্যক্তি আওয়ামী লীগের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহিত মােগসাজশে ও ভারতের সক্রিয় পৃষ্ঠপােষকতায় পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ফ্যাসিস্ট ও বর্ণবাদী তথাকথিত বাংলাদেশ রাজ্য প্রতিষ্ঠার কাজে তৎপর হইয়া উঠিয়াছিল। এতদঅঞ্চলে সফর সমাপজের পর সংবাদদাতা জানান যে, গত সপ্তাহে পাকিস্তানের যে সশস্ত্র বাহিনী চট্টগ্রাম অঞ্চলের কক্সবাজার হইতে টেকনাফ পর্যন্ত অবশিষ্ট এক হাজার মাইল দখল করিয়া লইয়াছে, তাহাদের সহিত অবস্থানকালে আমি প্রত্যক্ষ করিয়াছি যে, এইসব ব্যক্তি সর্বপ্রকার সংঘর্ষ ত্যাগ করিয়াছে। তবে পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনী সেখানে পৌঁছার পূর্বে তাহারা অত্যন্ত কর্মতৎপর ছিল। কিন্তু পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনী যখন এখানে আগমন করে তখন ব্যাপারটি তাহণের জন্য ওয়াকওভারের মিল এই দাড়ায়।
________________________________________
| সংবাদশাহা আরও জানান যে, প্রবর্তী সেনাবাহিনীর অন্যান্য ক্ষেত্রের মাঝে বিশেষ করিয়া সীমান্ত ফাড়ির প্রতি লক্ষ্য ছিল। এইসব ফাঁড়িতে ই, পি, আর নামে তথাকথিত আধা-সামরিক ব্যক্তিরা থাকত। দলত্যাগী সৈন্যরা এখান হইতে তাহাদের স্মৃণ্যতম কার্যকলাপ চালাইয়া যাইত। এক্ষণে উহা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করিয়া দেওয়া হইয়াছে।
পাকিস্তানী সন্ত্র বাহিনী এই ফড়িগুলিতে হানা দিয়া কিছু পােশাক, সৈন্যদের ব্যবহৃত সাক্ষীও অস্ত্র-শস্ত্র পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখিতে পায়। কারণ, দলত্যাগী সৈন্য, ই-পি আর ও বিচ্ছিন্ন পুলিশের লােকজন সে সময় অতিদ্রুত স্থান ত্যাগ করিয়া পালাইয়া যায়। অগ্রসরমান সেনাবাহিনীকে বাধাদানের ব্যাপারে ফঁাড়িগুলাের অবস্থান ছিল খুবই সুবিধাজনক। সেনাবাহিনী সেখানে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য এবং আওয়ামী লীগের পকেট সংস্থা স্টুডেন্ট লীগের সশস্ত্র সদস্যদের জন্য তল্লাশী চালায়।
সংবাদদাতা আরও জানান যে, আমি পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের জনসাধারণের সহিত আলাপ করিয়া জানিতে পারিয়াছি যে, এইসব দলত্যাগীগণ পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনীর আগমনের সংবাদ পাওয়া মাত্র পূর্ব পাকিস্তানের দরিদ্র জনসাধারণের বিশেষ ধরনের পােশাক, লুঙ্গি ও বেনিয়ান পৰিধান করিয়া লুকাইৰাৱ স্থান অনুসন্ধান করিতেছে অথবা কোন অজ্ঞাত স্থানের উদ্দেশ্যে অন্তর্হিত হইয়া গিয়াছে। স্থানীয় জনৈক ব্যক্তি ভ্ৰামাকে এতদঞ্চলের বর্তমান অবস্থার ঠিক বিপরীত অবস্থা বর্ণনা করিয়া বলেন যে, এইসব ব্যক্তিরা এখানে জনসাধারণের মনে ভীতি ও সন্ত্রাসের ভাব সৃষ্টি করিয়াছিল এবং সাধারণ মানুষকে তাহাদের হাতে কি ধরনের নাজেহাল হইতে হইয়াছিল তাহার বর্ণনা দান করেন।
এইসব দুষ্কৃতিকারী স্থানীয় জনসাধাৰুণের নিকট আসিয়া নিজেদের তথাকথিত বাংলা দেশের সৈন) হিসাবে পরিচয় দান করিয়া ট্যাক্স আদায় করিত। এইসব ট্যাক্স জনসাধারণের নিকট হইতে নগদ অর্থ আবার কখনও জিনিস-পত্রের মাধ্যমে আদায় করা হইত। স্থানীয় বিত্তশালী ব্যক্তিদের যানবাহন আটক করিয়া তাহারা সেগুলি ব্যবহার করিত।
সংবাদদাতার নিকট তাহারা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করিয়া আরও জানান যে, কক্সবাজারে দশ ব্যক্তি অর্থ নিতে অসামর্থ জ্ঞাপন করিলে তাহাদের প্রতিভূ হিসাবে আটক করা হয়। যাহা হউক, শহরের নিরপেক্ষ বাজিনের মধ্যস্থতায় প্রায় ২০ হাজার টাকায় বিনিময়ে তাহাদের মুক্তির কথা বলা হয়।
| এই ধরনের আরও একটি ঘটনার বিবরণ দিয়া সংবাদদাতা জানান, টেকনাফের ১৫ মাইল উত্তৱে নীলা নামক এক স্থানে ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়াৱমান জনাব আবদুল গফুরকে প্রতি হিসাবে আটক করিয়া নগদ দুই হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁহাকে মুক্তি দেয়। স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে আহাৱা অর্থ ও খাদ্য দিতে অস্বীকৃতি জানায় তাহাদের হত্যা করা হয় অথবা তাহাদের জিনিসপত্র লুণ্ঠন করা হয়।
সংবাদদাতা জানান যে, এইসব দলত্যাগীদের সংঘর্ষ ত্যাগের অন্যতম কারণ হইতেছে তাহারা নেতৃত্বহীন হইয়া পড়িয়াছিল। ফলে তাহারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হইয়া তৎপরতা চালাইতে ছিল। তাহাদের পরস্পরের মধ্যে কোনরূপ যােগসূত্র ছিল না। এমএবিহাৰ৷ প্রত্যেক দিল নিজেদের উদ্যোগেই সংসারে আয়োজন করিয়া যাইতেছিল। ইহাদের মধ্যে একটি দল বেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। তবে তাহারা পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনীর যােগ্যতা এবং তাহাদের ভাগ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকেফহাল ছিল।
________________________________________
দলত্যাগীলের অপর একটি দল এখানে ভারতের সাহায্যের উপর সর্বতোভাবে নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু কক্সবাজার হইতে টেকনাফ পর্যন্ত ভূখণ্ড ভারত হইতে বিচ্ছিন্ন থাকার ফলে ভারতীয় সাহায্য পৌছানাের কোন প্রশ্ন আসতে পারে না। সমুদ্রপথে সাহায্য পৌঁছার সম্ববনা নাই। কারণ, পাকিস্তানী নৌবাহিনী এদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখিয়াছে।] | তিনি বলেন, আর এক শ্রেণীৱ ৱষ্ট্রবিরােধী ব্যক্তি যাহারা ভাবপ্রবণতার বশবর্তী হইয়া এই অ্যুথানে জড়িত হইয়াছিল, এক্ষণে তাহাদের মােহভঙ্গ হইয়াছে।”১২
৫৫ জন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীর বিবৃতি প্রকাশিত হয় ‘আজাদ’ পত্রিকার ১৭ মে সংখ্যায় । ‘জ্জিনদের নির্বিচার হত্যা সংক্রান্ত প্রচারণার পাতভাঙ্গা জওয়াব” শিরােনামে প্রকাশিত এ সংবাদে বলা হলো :
ঢাকা ১৬ মে- পূর্ব পাকিস্তানের ৫৫ জন বিশ্ববিদলা শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পী আঞ্জ বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে ভারতের উদ্দেশ্যমূলক প্রহারে নিউইয়র্কে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব ইউনিভার্সিটি ইমার্জেন্সিী যেভাবে সাড়া দিয়াছে তাহাতে আমরা মর্মাহত হইয়াছি।
উক্ত সংস্থার এক বিবৃতিতে ঢাকায় পণ্ডিত ব্যক্তিদের নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের উল্পেখ করিয়া যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হইয়াছে তাহাতে ছাহাৱা এক যুক্ত বিবৃতিতে কিয় প্রকাশ করেন। বিকৃতিতে বলা হয় আমাদের অনেকের নাম গুলিবিদ্ধ ও নিহতদের তালিকায় দেখিয়া আমরা বিস্মিত হইয়াছি। কিন্তু এই তালিকায় উল্লিখিতদের অনেকে ইতিমধ্যে টেলিভিশন সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে যােগদান করিয়া প্রােপাগঞ্জকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করিয়াছে।
ভাঁহারা বলেন যে, ঢাকা ও অন্যান্য স্থানে গােলযােগের কারণ মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আমাদের প্রায় সকলেই গ্রামে চলিয়া গিয়াছিলাম। এই কারণে ভুল বােঝাবুঝির সৃষ্টি হইতে পারে। এই ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট সময়ের উল্লেখ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় বৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত সরকারকে ব্যাপকভাবে অমান্য কন্যা জাইতেছিল।
| প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের ম্যান্ডেটের উপর নির্বাচনে আদালত করা হইয়াছিল। তারপর চরমপন্থীরা স্বায়ত্তশাসনের প্রশ্নটি একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণার দাবীতে পরিণত করার কাজে লিপ্ত হয়। এই সময় দলীয় ৰাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের উন্য শিক্ষার সুযোগু= সুবিধার ব্যাপকতাৰে অপৰ্যবহার করা হইতেছিল। উদাহরণস্বরল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ছাত্র পড়াশুনা কৰিীত ননী বা খেলাধূলাও করি না। হলটি একটি গােপন অগ্রগার ও বাংলাদেশ মুক্তি ফৌজের এট্রনিং, উ% ছিল। তথায় মেশিনগান ও মর্টারের মত সামরিক সরঞ্জাম রক্ষিত ছিল। এই স্বসিদ্ধ পরিস্থিণ্ডি ও ফার্সীবলী সানিতার হাত হইতে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদেৰা প্রায় সকলে গ্রামে আশ্রয় নিয়াছিলাম। প্রদেশে শাস্তি শলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও পাকিস্তান সৈন্যবাহিনী কর্তৃক পাকিস্তান ধ্বংসের প্রচেষ্টা বানচাল এরিয়া নেয়ার পর আমরা শহরে ফিরিয়া আসি। তবে মনে হইতেছে আমাদের কয়েকজন সহকর্মী সীমান্ত অতিক্রম করিয়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলিয়া গিয়াছেন। অমৃতবাজার পত্রিকার গত ২৫ এপ্রিল এ সংস্থার মতে তাহাদের ১৫ জনকে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ােগ করার পরিকল্পনা নেওয়া হইয়াছে। পূর্ব পাকিজানের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের আগে শিক্ষককে লাঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে অধিক পরিমাণে অর্থ বরাদ্দের জন্য ভারত সরকারের নিকট মানে জানানাে হইয়াছে,।।
________________________________________
প্রসঙ্গক্রমে তাহারা যুক্ত বিবৃতিতে আরও বলেন যে, বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগের চরমপন্থীগণ কর্তৃক ন্যায্য দাবীকে একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘােষণা করার দাবীতে রূপান্তরের চেষ্টা করিতে দেখিয়া তাহারা মর্মাহত হইয়াছেন। বালি হিন্দু বিশেষ করিয়া কলিকাতার মাড়োয়ারীদের আধিপত্য ও শােষণ হইতে মুক্তি পাওয়ার জন্য ১৯০৫ সালে বাংলার মুছলমান পূর্ব বাংলার একটি পৃথক প্রদেশ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়াছিল। ১৯৪৭ সালে আমরা পুনরায় গণভােটের মাধ্যমে একটি চেওন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এবং ভারতের অন্যান্য প্রদেশের মুছলমানদের সহিত হাত-মিলাইয়া পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করি। ভবিষ্যত সম্পর্কে আমাদের আশাবাদী হওয়ার কারণ রহিয়াছে। কেননা আমাদের দেশে পর্ণ গণত পুনঃপ্রতিক্ষার সাথে এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের নাম নিয়ে দেওয়া হইল :
ড: সাজ্জাদ হােসেন, প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খা, ড: মীর ফকরুজ্জামান, ডঃ কাজী দীন মােহাম্মদ, জনাব নুরুল মােমেন, জনাব জুলফিকার আলী, জনাব আহসান হাবীব, জনাব খান আতাউর রহমান, মিস শাহনাজ বেগম, জনাব আসকার ইবনে শাইখ, মিসেস ফরিদা ইয়াসমীন, জনাব আব্দুল আলীম, জনাব আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম, জনাব এ. এইচ, চৌধুরী, উ: মােহর আলী, জনাব মুনীর চৌধুরী, ড: আশরাফ সিদ্দীকী, খােন্দকার ফারুখ আহমেদ, জনাব এস, এ, হাদী, মিসেস নীনা হামিল, জনাব এম, এ, সামাদ, মিসেস লায়লা আঞ্জুমান্দ বানু, জনাব শামসুল হুদা চৌধুরী, জনাৰ বেদার উদ্দিন আহমদ, মিসেস ফেরদৌসী রহমান, জনাব মােস্তফা জামান আব্বাসী, জনাব সরদার জয়েন উদ্দিন, সৈয়দ মুর্তজা আলী, জনৰ তালিম হােসেন, জনাব শাহেদ আলী, কবি আবদুস সাত্তার, জনাব ফারুক শায়ের, কবি ফররুখ আহমদ, জনাব আবদুস সালাম (সম্পাদক পাকিস্তান অবজারভার), জনাব বদরুদ্দীন (সম্পাদক মর্নিং নিউজ), জনাব আবুল কালাম শামসুদ্দীন (সম্পাদক সৈনিক পাকিস্তান), জনাব ফতেহ লােহানী, জনাব হেমায়েত হােসেন, জনাব বি, রহমান, জনাৰ মজলুল হােসেন, জনাব আৰুৱ উদ্দীন, জনাৰ আকবর হােসেন, জনাৰ এ, এফ, এম, আবদুল হক, প্রিন্সিপাল এ, কিউ. এম আদম উদ্দীন, জনাৰ আলী মনসুর, কাজী আফাজ উদ্দীন, জনাৰ সানাউল্লাহ নূরী, সার ফজলুল করিম, জনাৰ বদিউজ্জামান, জনাব শফিক কবির, মিসেস ফওজিয়া খান, লতিফা চৌধুরী ও জনাব আব্দুল আলীম।”১৩
এ দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে আয়ােজিত মিলাদ মাহফিলে বক্তাগণ “এহলামী ভ্রাতৃত্ববােধ পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান জানালেন। পত্রিকায় এ সম্পর্কে বলা হলাে :
| রাজশাহী, ১৪ মেগত শনিবারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্যোগে যথাযােগ্য পরিবেশে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপিত হয়। এই উপলক্ষে ভাইস চ্যান্সেলরের – বাসভবনে একটি বিরাট মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকমলী, উচ্চপদস্থ ও নিম্নপদস্থ কর্মচারীগণ সহ বিপুল সংখ্যক লােকের সমাবেশ
তেলাওয়াতে কালামে পাকের দ্বারা অনুষ্ঠান শুরু করা হয় এবং ইছলামী ইতিহাস বিভাগের সিনিয়র লেকচারার জনাব গােলাম রসুল একটি না’ত পেশ করেন। ইছলামিক ইতিহাস ও তমুদুন বিভাগের অধ্যক্ষ ডঃ আব্দুল বারী বলেন, মুছলমান যে কোন
________________________________________
ভাষাভাষীরই হােক না কেন, সকল মুছলমানই একটি ভ্রাতৃত্ব সূত্রে আবদ্ধ। তিনি এই শ্ৰাতৃত্মবােধকে পুনরুজ্জীবিত করার এবং প্রদেশে শান্তি অনুন্ন রাখার জন্য পাকিস্তানের সকল মুছলমানের নিকট অনুরােধ করেন। তিনি বলেন বিশ্ব মুছলিমের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠাই হইতেছে রাসুলুল্লৱ শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য।
ইতিপূর্বে অনুষ্ঠানে জনাব মওলানা গােলাম মােস্তফা কওর এই পবিত্র দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন এই দিন হইতেই অন্ধকারাচ্ছন্ন মানব সন্তানকে আলাের দিকে, মিথ্য] হইতে সত্যের দিকে এবং মৃত্যুর স্বাভাবিক বিলুপ্তি পথ হইতে অমরত্ব লাভের দিকে পরিচালিত করা হয়।১৪
রংপুর থেকে সাবেক পার্লামেন্টারী সেক্রেটারী আবুল হোসেন মিয়া সেনাবাহিনীকে সহযােগিতা পানের আহবান জানালেন। সংবাদে বলা হলাে :
| প্রাদেশিক সরকারের সাবেক পার্লামেন্টাল সেলেটিরা মওলানা আবুল হােসেন মিয়া রংপুরে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে দেশকে শত্রুণ চক্রান্ত হইতে রক্ষা করার জন্য। সেনাবাহিনীকে অভিনন্দিত করেন। তিনি জনগণকে সরকার এবং দেশের সংহতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর প্রতি তাদের আন্তরিক সহযােগিতা দানের অনুরােধ জানান। জনাব আবুল হোসেন মিয়া বলেন যে, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জনগণের গণতাধিক অধিকার পূরণ করিয়াছেন। ফলে পূর্ব পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে তিনশত আসনেন! মধ্যে ১৬২ টি আসন লাঞ্চ করিয়াছে। তিনি ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদী ও তাহলের রদের জন্য বিশ্বাসNতিকতামূলক কার্যাবলার নিন্দা করেন।
অবরূদ্ধ বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলাে। গভর্নর সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন ললেন। সংবাদে বলা হলাে :
‘পূর্ব-পাকিস্তানের গবর্নর প্রদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা সংস্কারের জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করিয়াছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড: সাজ্জাদ হােসেন উক্ত কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হইয়াছেন বলিয়া প্রাদেশিক সরকারের এক হ্যান্ড আটটি উল্লেখ করা হয়। | বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের শিক্ষাপদ্ধতি সংস্কার, পাঠ্যতালিকা সংশােধন ও জাতীয় আশা আকাক্ষার সহিঞ্চ উহার সময় বিধান এবং উপরিউক্ত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের পক্ষে সহায়ক সুপারিশ পেশ করিবেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ হইতেছেন : জাতীয় পূনর্গঠন ব্যুরেণর বিব্রেক’টর ডঃ হাসান জামান, সদসা-
সেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয্যেন্ত এ.এফ. এম আনিসুর রহমান, সদস্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উ: আবদুল বারী, সদস্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উ; সাইফুদ্দিন জোয়ারদার, সদস্য এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ড: মকবুল হােসেন সদস্য।”১৮
মে মাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩জন শিক্ষক এ যুক্ত বিবৃতি প্রচার করেন। তারা বিবৃতিতে বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি সংক্রান্ত ভারতীয় প্রচারণা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ ৩ জুন প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হলাে :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩ জন শিক্ষক আজ এক যুক্ত বিবৃতিতে পাকিস্তান বিরােধী স্বার্থান্বেষী মহল ও ভারতের বিদ্বেষপূর্ণ ও উদ্দেশ্যপ্রণােদিত প্রচারণার তীব্র নিন্দা
________________________________________
করেন। তাঁহারা বলেন যে, “ভারত ও অন্যান্য স্থানের পাকিস্তানের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন ব্যক্তিদের মিথ্যা প্রচারণা এমন পর্যায়ে উপনীত হইয়াছে যে, তাহার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ সমূহের ক্ষতি সাধনের অদ্ভুত মিথ্যা প্রচারণা চালাইতেছে। আমরা এই ভিত্তিহীন ও কাফনিক অপপ্রচারের কঠোর নিশা করিতেছি এবং অপরিক্ষার্থীপে পরিস্কারভাণে। জানাইয়া দিতে চাই যে, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই সম্পূৰ্ণৰূপে অক্ষত রহিয়াছে। পাকিস্তান। শিক্ষকগণ আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর লােকদের নিকট হইতে সৌজন্য। ও বিবেচনা সম্মত আচরণই লাভ করিয়াছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সম্পূর্ণ শাস্ত রহিয়াছে এবং শিক্ষকগণ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নির্বাহ করিতেছেন। আমরা পাকিস্তানের আস্তরীণ ব্যাপারে ভারতের নয় হস্তক্ষেপের ঘর্থহীন ভাষায় নিন্দা করিতেছি ইহা অত্যন্ত আশ্চর্যজনক এই যে, যে দেশে বিনা বাধায় অসংখ্য মােছলেম বিরোধী দাঙ্গা সংঘটিত হইতেছে সেই দেশের কর্তাগণ কি নয়া পূর্ব পাকিস্তানের মুছলমানদের ভাগ্য সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করিতে পারেন। ভাৱত রাষ্ট্রদ্রোহীদের কেবল অস্ত্র সরবরাহ করে নাই। পক্ষান্তরে আমাদের দেশের অভ্যন্তরে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীও প্রেরণ করিয়াছে। ভারতীয় পালাল ও অনুপ্রবেশকারীগণ অত্যন্ত বর্বরোজিহাবে হাজার হাজার নিরপ|খ মুছলমানকে। হত্য করিয়াছে। ভারতীয় প্রধান উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণবপে। ধ্বংস করিয়া দেওয়া। কারণ তাহারা এই উদ্দেশ্যেই কোটি কোটি টাকার সরকারী ও বেসরকারী সল লুট করিয়াছে এ প্রচুর পত্রিমাণ খাদ্যশস্য সীমান্তের ওপারে লইয়া। গিয়াছে ও প্রদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বানচাল কৰিীয়া দিয়াছে। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে আমাদের বীর সন্ত্র বাহিনীর সময়োচিত হস্তক্ষেপের ফলে ভারতের অশুভ চক্রান্ত নস্যাৎ হইয়া গিয়াছে।
আমরা ইহা পরিষ্কারভাবে ঘােষণা করিতে চাই যে, সংহতি বিরােধী আন্দোলনের প্রতি কোন জনসমর্থন ছিল না। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবীর ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়। সুতরাং বেআইনী ঘােষিত আওয়ামী লীগেৱ চরমপন্থদের স্বাধীনতার দাবী উহা হইতে সম্পূর্ণ পৃথক। | অধিকাংশ পূর্ব পাকিস্তানীই দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে উক্ত চরমপন্থীদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করিয়াছে। পূর্ব পাকিস্তানীগণ পাকিস্তানের সংহতি রক্ষা করিতে প্রতিজ্ঞ। ভারতের তথা কথিত মুসলমান দরগীদের উপদেশ ছাড়াই পূর্ব পাকিস্তানীগণ নিজেরাই নিজেদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করিতে সক্ষম হইবে।”১৭
জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে লে. জেনারেল টিক্কা খানের সঙ্গে ৮ সদস্য বিশিষ্ট এক শ্রমিক-ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেন। পত্রিকায় বলা হলাে : | ‘গত বুধবার মহিলা শিল্পপতি বেগম লায়লা খানের নেতৃত্বে আটজন বিশিষ্ট শিল্পপতির একটি প্রতিনিধি দল এক সাক্ষাৎকারে গবর্ণর লে: জেনারেল টিক্ষাখানের সহিত শিল্প ও শ্রম সংক্রান্ত যাবতীয় সমসাবলী সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করিয়াছেন বলিয়া। জানা গিয়াছে।
গৱৰ্ণর ধৈর্য-সহকারে উক্ত প্রতিনিধি দলের যাবতীয় সুপারিশ শ্রবণ করেন। তিনি শিল্প ও শ্রম সংক্রান্ত সমস্যাবলীর প্রতি দৃষ্টি প্রদানের ও কলকারখানা সমূহে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালানাের জন্য প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন বলিয়াও আস্থাস দেন। বেগম
________________________________________
লায়লা খান জনসাধারণের মনে আস্থা ফিরাইয়া আনার ব্যাপারে সামরিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থবীর জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই সকল ব্যবস্থা শিল্পের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আনিতে সহ্য করিবে বলিয়াও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
শ্রমিক শ্রেণীর প্রতিনিধি হিসাবে পূর্ব পাকিস্তন এমিক ফেডারেশনের সভাপতি জনাব সাইফুর রহমান প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য হিসাবে ছিলেন। শ্রমিকদের কতিপয় সমস্যা সম্পর্কে বর্ণকে অবহিত করিয়া তাহারে মধ্যে পূর্ণ আস্থা ফিরাইয়া আমার জন্য কতিপয় সুপারিশ পেশ করেন। খবর সরকারের পক্ষ হইতে সাহায্য ও সহযােগিতার আশ্বাস দেন এবং গােলযােগের জন্য যে ক্ষতি হইয়াছে উহা পূরণের জন্য কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারীরা সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাইয়া যাইবেন বলিয়া আশা প্রকাশ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩ জন শিক্ষকের বিবৃতিকে কে করে একটি
। সম্পাদকীয়ও প্রকাশিত হলে ৪ জুন। সশসয়তে বলা হলাে :
‘পূর্ব পাকিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজসমূহ স্বংস করে দেয়া হয়েছে বলে হিন্দুস্থান সারা দুনিয়ার সামনে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে পাকিস্তানের দুর্নাম করার যে দূরভিসন্ধি লেছিল ইতিপূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের বিবৃতি তাদের মুখে চুনকালি মেখে দিয়েছে। গতকাল পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩ জন শিক্ষকের বিবৃতি হিন্দুস্থানের কলুষিত চেহারাটি আবার দুনিয়ার সামনে নগ্নভাবে তুলে ধরেছে। বিশ্বজিল্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হিন্দুস্থানে প্রচারণকে জঘন্যতম মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করে বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে এসৰ ভিত্তিহীন ও উদ্ভট কাহিনীর বিরােধিতা করছি। আমরা এও দৃঢ়ভাবে বলছি যে, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অক্ষত রয়েছে। দেশপ্রেমিক পাকিস্তানী শিক্ষকরা আমাদের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে অস্ত্র ও ভাল ব্যবহারই পেয়েছেন।
বাহী স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মন শান্ত রয়েছে এবং শিক্ষকরা তাদের শিক্ষকবৃন্দ পাকিস্তানের মত স্তরীণ ব্যাপারে ভারতের নয় হস্তক্ষেপের কার ভাষায় নিশা করে পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে তাদের প্রচারিত দরদের স্বরুপও তুলে ধরেছেন। ভাৱা বলেছেন, যে দেশে অবাধে অসহঙ্গা মুসলিম বিরােধী দাঙ্গা সংঘটিত হচ্ছে, সে দেশ পূর্ব পাকিস্তানে মুসলমানদের জন্য এত উখি হওয়াটা অতিভক্তিরই লক্ষণ।
হিন্দুস্তানের মিথ্যা প্রচারণা ও পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের নিন্দা। ছাড়াও শিক্ষকবৃন্দ হিন্দুস্থান ভানের অনুপ্রবেশকারী ও দালালনে ব্যরা কিরূপ নৃশংস ও বর্বরভাবে নারী-শিশুসহ হাজার হাজার মুসলমানকে হত্যা করিয়েছে সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন। হিন্দুস্তান পাকিস্তানকে বিশ্বে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য ফেসব ভয়াবহ কাহিনী প্রচার করে চলেছে এটা মূলত তার অনুপ্রবেশকারী ও দাললদের ব্যাপক নরহত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়াৰ নাই করছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এ বিষয়টি তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করে ৰাষ্ট্ৰস্রাহীদের যে পশবিকতার দিকে ইঙ্গিত করেছেন, তার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশিত হলে দুনিয়া হতবাক হয়ে যাবে। হিন্দুস্তানের লেলিয়ে দেওয়া দুস্কৃতিকারীদের হাতে মুসলিম নারী-পুরুষ ও শিশুদের নৃশংস হত্যার মর্মান্তিক কাহিনী সমূহ বিশ্বের সামনে এ মুহূর্তেই প্রকাশিত হওয়া উচিত। এতে একদিকে যেমন হিসুষ্ঠানের ধরবাজিমূলক প্রচারণার স্বরূপ
________________________________________
দুনিয়াবাসীর কাছে আরও প্রকাশ পাবে তেমনি তার অনুচরদের পাশবিকতার বীভৎস রূপও সকলে দেখতে পাবে।
নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগার ও হিন্দুস্তানী ‘অনুপ্রবেশকারীরা অরাজকতা সৃষ্টির দ্বারা পূর্ণ পাকিস্তানে হাজার হাজার মুসলমানকে হত্যা ও বিপুল ধনসম্পদের ক্ষতি করে দেশের এ থাকে হিন্দুস্তানের হাতে তুলে নিতে চেয়েছিল। অথচ দেশবাসী তাদেরকে কখনও সে অধিকার দেয়নি। শিক্ষকবৃন্দ এদেশের জনমনেরই প্রতিধ্বনি করে বলেছেন, আমরা এটা পরিষ্কারভাবেই বলতে চাই যে, বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের পেছনে কোনাে গণসমর্থন ছিল না। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তিতেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের চরমপন্থী মহল কর্তৃক উত্থাপিত তথাকথিত স্বাধীনতার দাবীর সাথে এর কোনই সম্পর্ক নেই। সমপন্থীদের এ কাজ সংখ্যাগরিষ্ঠ শুনগণের কাছে একটি বেদনাদায়ক বিষয় হয়ে দেখা দিয়েছে। দেশের সংহতি রক্ষা করতে তারা লুঢ়
একটি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ । রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে বুদ্ধিজীবী মহলের মতামতের ভিতর দিয়েই সে দেশের মানুষের বাস্তব ধ্যান-ধারণার প্রকাশ ঘটে। পাক সেনাবাহিনী কর্তৃক হিন্দুস্তানী অনুপ্রবেশকারী ও দুস্কৃদ্ধিকারীদের দমন অভিযানের পর থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবী মহল কর্তৃক প্রদত্ত বিবৃতি থেকে এটাই সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, আসলে দেশবাসী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কি চেয়েছিল এবং চরম রাজনীতিকরা তাদের আশাআকাক্ষার সাথে কিভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এমনকি যারা নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন তাদের ও অনেকে দলের চরমপন্থী নেতাদের কার্যকলাপে হতবাক হয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের কয়েক জনের বিবৃতি থেকে তা পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। তাদের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দের বিবৃতিতে যেমন একশ্রেণীর বিভ্রান্ত মানুষের চিন্তার যথেষ্ট খােরাক রয়েছে তেমনিভাবে বহির্বিশ্বেও এ থেকে এ দেশের মানুষের ধ্যান-ধারণা ও আশা-আকাংখার সঠিক উপলব্ধি সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি ।১৯। | এলিকে জুন মাসে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অফিসাররা পাকিস্তানি সামৱিকজান্তাকে সমর্থন করে এক বিবৃতি প্রচার করেন। তারা এক সভায় মিলিত হয়ে বললেন : ‘আমাদের ভালােবাসার দেশ, পাকিস্তানকে কোনাে শক্তিই বিভক্ত করতে পারবে।
। তারা স্বাধীনতার আন্দোলনকে রাজনৈতিক হৱমপন্থদের হটকারী কাজ বলে অভিহিত করেন। ২০
এ সম্পর্কে “দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় বলা হলাে :
“মােমেনশাহীর পূর্ব পাকিস্তান কষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকমণ্ডলী ও অন্যান্য কর্মচারী সম্প্রতি এক সভায় পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে ভাৰতীয় অভিসন্ধির নিন্দা করেছেন। গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এপিপি পরিবেশিত এক খবরে একথা বলা হয়েছে। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয় দুষ্কৃতিকারীদের হাতে বহু মূল্যবান জীবন নষ্ট হয়েছে। রাষ্ট্রবিরােধী। লােকদের সৃষ্ট গোলযোগের দরুন হাজার হাজার নির্দোষ লােক দুর্দশায় পতিত হয়েছে।
________________________________________
প্রস্তাবের পূর্ণ বিবরণ নীচে দেয়া হলাে :
মােমেনশাহীর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অফিসারবৃন্দের সভায় আমাদের পবিত্র ও প্রিয় ভূমি পাকিস্তানকে খণ্ড-বিখণ্ড করার ভারতীয় অভিসন্ধির তীব্র নিন্দা করা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়। পাকিস্তানের ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটের কালে ভারত প্রত্যক্ষ অথবা পরােক্ষভাবে পাকিস্তানকে খণ্ডিত করার জন্য কাজ করছে।
এই সভা মনে করে যে বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে বৃটিশ ভারতের মুসলিম অধিবাসীদের পৃথক আবাসভূমি পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। আমাদের প্রিয়ভূমি পাকিস্তানকে বঞ্চিত করার প্রয়াসকে বানচাল করতে হবে। আমাদের অভাব অভিযােগ রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুীবনে আমাদের যথার্থ প্রাপ্য না পাওয়ায় আমার অসুখী। একটি রাইট কাঠামাের আওতায় থেকে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য ব্যাপক স্বায়ত্তশাসন এদায়ের স্বপক্ষে ভােট দিয়ে আমরা আমাদের অসন্তোষকে প্রকাশ করেছি। ব্রাজনৈতিক চরমপন্থীরা এ সহজ সৱল দাবীকে একতরফা স্বাধীনতা ঘােষণার দাবীতে রূপান্তরিত করায় আমরা ব্যথিত হয়েছি।
আমরা কখনাে এটা চাইনি। তাই যা ঘটেছে তাতে আমরা গভীর দুঃখ পেয়েছি ত হতাশ হয়েছি। বাঙ্গালী হিন্দু বিশেষকরে কোলকাতার মাড়োয়াৱীদের আধিপত্য ও শােষণের কবল থেকে মুক্তির জন্য আমরা বাংগালী মুসলমানরা বৃটিশ রাজত্বকালে ১৯০৫ সালে প্রথম পূর্ব বাংলায় একটি পৃথক দেশ গঠনের সিদ্ধান্ত নেই। আবার ১৯৪৭ সালে ভােট নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অন্যান্য মুসলিম ভাইদের সাথে একত্রে থাকার সচেতন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এই সিদ্ধান্তের না আমাদের অনুভাল করার কিছুই নেই। পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু প্রদেশ হিসেবে পাকিস্তানকে শাসন করার অধিকার আমাদের আছে। যখন সেই অধিকার আমাদের হাতের মুঠোয় এসে গেছে ঠিক তখনই চরমপন্থীদের লাগামহীন উচ্চাশায় পেয়ে বসলো এবং জাতীয় অস্তিত্বই বিপ্ন হলাে।
সামাজিক ন্যায়বিচার এবং গণতান্ত্রিক আদশভিওিক পাকিস্তান কায়েমের জন্য দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার কাজে প্রত্যেকটি নারিকের যথাযথ কাজ করা কর্তব্য। আভির পিতা কায়েদে আজম এটাই চেয়েছিলেন এবং তার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এর ভাল কাজ করে গেছেন।’
ঢাকাবাসীকে এভোকেট তাজউদ্দিন আহমবাস্তুস্রাহীদের আটকের ব্যাপারে সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার আহবান জানান। আজদ’ জানালাে : * “আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এডভােকেট তাজউদিন আহমদ শান্তি বজায় আখি এবং পাকিস্তান বিরােধী ও সমাজ বিরােধী লােকদের আটক করার ব্যাপারে সামরিক আইন কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করার জন্য চাকা শহরবাসীদের প্রতি আবেদন জানাইয়াছেন। তিনি আরও বলেন যে, উপরিউক্ত সমাজ বিরােধী ও রাষ্ট্রদ্রোহীগণ পূর্ব পাকিস্তানে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করিয়াছিল।
| আমাৰ আজমল তাহার আবেদনে আরও বলেন যে, দেশপ্রেমিক ও শান্তিপ্রিয় নাগরিকগণ স্বেপ্রণােদিত হই সাহায্য না করা পর্যন্ত কোন সরকারই রাষ্ট্রদ্রোহী ও সমাজ নিয়ে ব্যক্তিত্বে উৎপাত নিয়ন্ত্রণ এবং তাহাদের উৎখাত করিতে পারেন না।
________________________________________
জনাব আহমদ দেশবাসী, আলীগড়ের প্রাক্তন ছাত্র বিশেষ করিয়া ঢাকাবাসী শ্রাতা-ভগ্নীদের প্রতি আবেদন জানাইয়া বলেন যে, বর্তমানে পাকিস্তানী জাতি অত্যন্ত সংকটজনক মুহুর্তে অতিক্রম করিতেছে এবং বর্তমানে প্রিয় মাতৃভূমি ভারতীয় অনুপ্রবেশকাৰী ও হিন্দুস্থানী নেতাদের প্রকাশ্য হুমকি সম্মুখীন হইয়াছে। ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী চর এবং তাহাদের দালালদের নিমূলকল্পে সশস্ত্র বাহিনীর সহিত পূর্ণ সহযােগিতা পানের জন্য তিনি ঢাকার প্রতিবৃন্দের প্রতি আকুল আবেদন জানান। জনাব আহমদ আরও বলেন যে, উপরোক্ত সুশমনেরা বিভিন্ন ধরনের মুখোশ পরিয়া আমাদের মধ্যেই রহিয়াছে এবং দেশের এই সব জন্য দুশমনের গুজব, দারয় বিজয়ের বানােয়াট কাহিনী এবং তথাকথিত আকাশবাণীর। অদ্ভুত খবর জনসাধারণের মধ্যে প্রচার করিয়া বেড়াইতেছে।
জনাব আহমাদ আরও বলেন যে, আলীগড় মােছলেম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রগণ এখনও আবিত রহিয়াছেন এবং প্রয়োজন হইলে শেষ রক্তবিন্দু দিয়া পাকিস্তানকে মুক্ষার জন্য দুশমনদের উপর ঝাপাইয়া পড়িবে। তিনি সময়ােচিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান, প্রাদেশিক পর্ণৱ ও সত্যিকার মুছলমান জনাৰ টিক্কা খান এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি মােবারকবাদ জ্ঞাপন করেন।
| তিনি ঐতিহাসিক সংকটে সাহস, শক্তি এবং ধৈর্য্য প্রদর্শনের জন্য দেশবাসীর প্রতিও মােবারকবাল [পন করেন এবং বলেন, তাহাদের এই কীর্তিগাথা বিশ্ব ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। পাকিস্তান জিন্দাবাদ, পাকিস্তান অনন্তকাল টিকিয়া থাকার জন্য কায়েম হইয়াছে বলিয়া তিনি ঘােষণা করেন।’ | দৈনিক সংগ্রাম’ পত্রিকার ৫ জুন সংখ্যায় দশজন আলেমেৰ এক যুক্ত বিবৃতি প্রকাশিত হয়। তারা বিবৃতিতে দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদের সামরিক ট্রেনিং এলান কন্যার আহবান জানান। পত্রিকায় বলা হলাে :
‘পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন জেলার দশজন বিশিষ্ট আলেম পাকিস্তানের ওপর যে কোন ধরনের সাব্য ভারতীয় হামলা প্রতিরোধের উদ্দেশে। পাকিস্তানের এবং বিশেষ করে পূর্ণ। পাকিস্তানের ইসলামপ্রিয় দেশপ্রেমিকদের সামরিক ট্রেনিং প্রদানের ব্যবস্থা করার জন্য। সরকারের প্রতি আবেদন জানান।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এপিপি ও পিপিআই পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, উক্ত আলেমগণ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, সম্ভাব্য সব রকম ভারতীয় হামলা প্রতিরোধের জন্য সরকারের ৪চিত অনুগত নাগরিকদের মু’হিপ হিসেবে গড়ে তোলা। আলেমগণ তাদের বিরতিতে এরজের আক্রমণাত্মক দুরভিসন্ধি ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য পূর্ব ও পশ্চিম পাকিন্তানের জনগণের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। তারা বলেন, মুসলমানরা। বিশেষ করে ওলামায়ে কেরাম একথা বিশেষাবেই নেন যে, ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারত বার। বার পাক ভারত উপমহাদেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে আসছে।
তারা বলেন যে, লাখ লাঘ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত পাকিস্তানকে ফাংশ করার এবং মুসলমানদের স্বার্থহানি করার জন্য মুসলিম বিরোধী শক্তিগুলাে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছে। তারা বলেন, লাখ লাখ প্রাণ অমানুষিক দুঃখ-কষ্ট ও বিরাট আত্মত্যাগের বিনিময়ে এবং মুসলমানদের অক্লান্ত ও অতুলণীয়। প্রাচষ্টার ফলে পাকিস্তান একটা সুস্পষ্ট রাজনৈতিক সত্তা। হিসেবে মাথা উঁচু করতে পেরেছে। কিন্তু মুসলিম বিরােধী শক্তিগুলাে তাদের ষড়যন্ত্র
________________________________________
ত্যাগ করেন। তারা বলেন যে, গণতান্ত্রিক সমামের ইয়াকরণে পর্ব পাকিনের সাতকতাবাশ বালও ছিল পাককে কংস করার অন্য একটি ভারতীয়
| তারা বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী কেন সাফল্যজনক ভাবে ভারতীয় দূরভিসন্ধি ব্যর্থ করছিল তখনই ভারতের ব্রাক্ষণ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের জনা কুঞ্জিরা বর্ষণ করতে শুরু করল। ভারতীয় বেতারের ধারাবাহিক মিথ্যা প্রচারণা, পাকিস্তানে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী পাঠানাে এবং পাকিস্তানকে ধ্বংস করার অন্যান্য হীন ষড়যন্ত্র সজাগ পাকিস্তানীদের দৃষ্টি খুলে দিয়েছে। মুসলমানদের মাতৃভূমি পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার হীন খড়যন্ত্র ও ইসলামকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চক্রান্তে ব্যর্থ হয়ে ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে আক্রমণ করার হুমকি দিয়েছে। পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্য হিন্দু ভারতের এ জন্য যড়যন্ত্রের নিন্দা করার ভাষা আমাদের নেই। ভারতীয় ষড়যন্ত্র এবং যুদ্ধের হুমকির বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদের গভীরতা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তারা আরাে বলেন, এ মুহুর্তে মুলমানদের অলস হয়ে বসে থাকা, চোখ বন্ধ করে থাকা ৰা নৱব হয়ে থাকা উচিত হবে না। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মুসলমানদের এই দুর্তে এক তীয় সম্প্রসারণবাদকে সে করে দেবার জন্য একাজ হওয়া বিশেষ প্রয়োজন।
তারা বলেন, ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী যদি কখনাে মুসলমানদের আবাসভূমি আক্রান্ত হয় তবে পনর বছরের উঞ্চে সকলেরই তার বিরুদ্ধে জেহালে অবতীর্ণ হওয়া ফরজ। আমরা আমাদের দেশের সচেতন মুসলমান ভাইদের এই জেহাদের জন্য প্রাপ্ত হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। দেশপ্রেমিক জনগণকে বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তানী জনগণকে সামরিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তােলার জন্য সরকারের নিকট আমরা আবেদন জানাচ্ছি। মাতৃভূমির দুঃসময়ে মুজাহিদ হিসেবে কর্তব্য পালনের প্রনা উপযােগী করে গড়ে তােলা সরকারেরই দায়িত্ব। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, মহান আল্লাহর রহমতে মুসলমানরা পুনরা ভারতকে সমুচিত শিক্ষা দিতে পারবে। নাছরুম মিনাল্লাহে ওয়া ফাতহুন কারীন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ১, মওলানা মুফতী দীন মােহাম্মদ খান, সেক্রেটারী জামেয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া, ঢাকা ২. মওলানা মােহাম্মদ উল্লাহ (হাফেজঙ্গী হুজুর), সভাপতি, পূর্ব পাকিস্তান দাওয়াতুল হক, ঢাকা ৩, মওলানা সিদ্দীক আহমদ, সভাপতি, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পূর্ব পাকিস্তান ৪, মওলানা মােহাম্মদ ইউনুস প্রিন্সিপাল কাসেমুল উলুম, পটিয়া, চট্টগ্রাম ৫. মওলানা মােস্তাক আল মাদানী, সহ-সভাপতি জমিয়তুল ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পূর্ব পাকিস্তান ৬, মওলানা আজীজুর রহমান, সেক্রেটারী, হিজবুল্লাহ, শর্ষিনা, বরিশাল ৭, আলহাজ্ব আবদুল ওয়াহাৰ কোষাধ্যক্ষ জামেয়াতে কোরআনিয়া আরাবিয়া, ঢাকা ৮, মওলানা আশরাফ আলী, সেক্রেটারী জেনারেল, জমিয়তুল ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পূর্ব পাকিস্তান, মওলানা আজিজুল হক মােহাদ্দেস, লালবাগ জামে কোরআনিয়া আরাবিয়া, ঢাকা ও ১০, মওলানা নুর আহমদ, সেক্রেটারী, দাওয়াতুল হক, পূর্ব পাকিস্তান।”২০
“দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রকৃত সত্যকে তুলিয়া ধরা সাংবাদিকদের কর্তব্য বলে মত প্রকাশ করলেন সাংবাদিক এম, এ, বৰ। পত্রিকায় বলা হয়;
‘পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক সমিতির সহকারী সম্পাদক জনাব এম. এ. রব এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের বীর সেনাবাহিনী ভারতের জন্য ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করিয়া দেওয়ার
________________________________________
পর দেশে বিরাজমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সাংবাদিক সমিতির প্রত্যেক সদস্যকেই প্রকৃত সত্যকে তুলিয়া ধরা উচিত। তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী সমিতির প্রত্যেক সদস্যকেই ভারতের প্রচারিত ভিত্তিহীন, বিকৃত ও আজগুবী খবরের অসাৱাত প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে স্থানীয় ঘটনাবলী সম্পর্কে জনসংযােগে উদ্যোগী হওয়া উচিত। তিনি বলেন, এই সংৰশক দলই দেশের নিরাপত্য, এক ও সংহ, বায়রার খালারে জাতির সর্বাধিক সেবা করিতে পারে।
তিনি প্রসঙ্গত; বলেন, প্রশাসন ও শিক্ষক্ষেত্রসহ জীবনের সর্বক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরাইয়া আর ব্যাপারে সমিতির প্রত্যেক সদস্যই কর্তব্য হইল তাহার কলমের মাধ্যমে যথাসাধ্য সহায়তা করা। পরিশেষে তিনি বলেন, এক কথায় আমরা ভারতকে স্মরণ করাইয়া দিতে চাহি যে, পাকিস্তান টিকিয়া থাকার জন্য আসিয়াছে এবং, ইনশাহ ইহা বিশ্বে একটি আদর্শ মােছলেম রাষ্ট্র হিসাবে চিরদিন টিকিয়া থাকিবে, আমরা আমাদের কলমের মাধ্যমে আমাদের জাতীয় ঐক্য ও সংহতি অক্ষুন্ন রাখিব ।২৪
‘পাকিস্তানের শক্ররা অবশ্যই নির্মূল হবে বলে মত প্রকাশ করলেন মানিকগঞ্জের শিক্ষক সমাজ। ‘সাম’ -এর নিজস্ব সংবাদদাতা জানান ;
‘পাকিস্তানের শত্রুতা অবশ্যই নির্মূল হবে’ বলে মত প্রকাশ করলেন মানিকগঞ্জের শিক্ষক সমাজ। সংগ্রাম’-এর নিজস্ব সংবাদদাতা এ সম্পর্কে জানান :
মানিকগঞ্জ, ১৮ জুন।-স্থানীয় দেবেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মােহাম্মদ রাজী উদ্দিনের সভাপতিত্বে উক্ত কলেজ মিলনায়তনে মহকুমা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক মণ্ডলীর এক সকা হয়। পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষায় সম্বােধ প্রকাশ করে এবং প্রতিবেশী বার ভারতের হীনমন্যতার নিলে করে সভায় বক্তৃতা করেন মানিকগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির আহবায়ক এজেকে আফতাবুদ্দিন আহমাল, মহকুমা শিক্ষা অফিসার জনাব মােহাম্মদ নওজেশ আলী এবং সভাপতি।
শিক্ষা অফিসার স্টার ভাষণে বলেন যে, দীর্ঘদিন স্কুল কলেজগুলাে বন্ধ থাকার ফলে ছাত্রীদের লেখাপড়ার প্রভূত ক্ষতি হওয়ায় এখন দ্রুত ক্ষতিপূরণের জন্য ছাত্র-শিক্ষক সকলকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
শান্তি কমিটির আহবায়ক এভোকেট জনাব আফতাবুদ্দিন আহম্মদ শিক্ষকমণ্ডলীকে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রকৃত শিক্ষাদানের আহবান জানান । হুজুগে চলার জন্যই পাকিস্তানের অবস্থা অত্যন্ত সংকটময় মুহূর্তে পৌঁছেছে বলে তিনি উল্লেখ কৱেন। সেনাবাহিনীর সময়মত হস্তক্ষেপে পাকিস্তান রক্ষা পাওয়ায় এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হওয়ায়
সভাপতির ভাষণে অধ্যক্ষ মােহাম্মদ রাজী উদ্দিন বলেন যে, উপমহাদেশে মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র আবাস ভূমি সৃষ্টি মুসলমানদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক জীবনে নতুন আলােড়নের সৃষ্টি করেছে। মুসলমানরা জাতি হিসেবে নিজেদেরকে পরিচিত করাতে পেরেছে এই পাকিস্তানের মাধ্যমে।
তিনি অত্যন্ত জোৱেৱ সাথে ঘােষণা করে যে, অসংখ্য রাজনীতিক চিন্তাবিদ, কবিসাহিত্যিক দার্শনিক এবং আওলিয়া-দরবেশদের ধারণার সৃষ্ট পাকিস্তান কখনাে ধ্বংস হতে পারেনা। তিনি আরাে বলেন যে, বিৱািৰাণীও যন্ত্রকারী পাকিস্তানের শাংস হচ্ছে এবং অবশ্যই নির্মূল হবে। ইসলাম, মুসলমান এবং পাকিস্তান অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত এবং বিভিন্নভাবে কোনটাই টিকতে পারেন। আল্লাহর ইচ্ছায় সৃষ্ট পাকিস্থান অবশ্যই বেছে থাকবে।
দিতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে তিনি বলেন যে, দেশপ্রেমিক পূর্ব পাকিস্তানীরা কোনদিন তাদেরকে ক্ষমা করবে না। তিনি ভারতের নিজ হানা এবং ষড়যন্ত্রের কঠোর নিন্দে করেন। তিনি দুঃখ করে বলেন যে, মুসলিম বিশ্ব যখন বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের দিকে চেয়ে আছে তখন কতিপয় বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং যড়যন্ত্রকারীরা সেই পবিত্র স্বাধীন পাকিস্তানকে পৃথিবীর মানচিত্র হতে মুছে দিতে চাচ্ছে।
| শিক্ষকমণ্ডলীকে ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন যে, জাতির দুর্যোগের পিনে ভবিষ্যত বংশধনাদেরকে সুশিক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রায় তিন হাজার শিক্ষকের সমাবেশে তিনি শক্তিশালী পাকিস্তান গড়ার
সময় খুলনা জেলায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে বলে প্রকাশ করলেন খুলনার ডেপুটি কমিশনার নুরুল ইসলাম খান। ‘আজাদ’ পত্রিকায় বলা হলাে :
‘খুলনার ডেপুটি কমিশনার জনাব নুরুল ইসলাম খান, জেলার পুলিশ সুপার ও কেডায় শান্তি কমিটির সদস্যরা সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন পন্থী এলাকা সফর করেন। তাহারা বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং সেখিতে পান যে, সারা গলার স্বাধিক অবস্থা ফিরিয়া আসিয়াছে।। | ডেপুটি কমিশনার বিভিন্ন স্থানে আয়ােজি সৰায় বক্তৃতা করেন এবং জনগণকে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে আত্মনিয়ােগের উপদেশ দেন। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় যyNঞ্জ বানচাল করিয়া দেওয়ার উদেশ্যে সংঘবদ্ধ হওয়ার জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
ইতিমধ্যে জেলার সকল অফিস আদালতে নিয়মিত কাজকর্ম শুরু হইয়াছে, জনসাধারণও তাহাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করিয়াছে, প্রাইমারী ও হাইস্কুল সমূহও চালু হইয়াছে। ছাত্র ও শিক্ষকরা গত ১৫ এপ্রিল হইতে ক্লাশে যােগদান করিতেছেন। সকল মিল ও কারখানা চালু হইয়াছে এবং দিন দিন উহার উৎপাদন বৃদ্ধি পাইতেছে। এক সপ্তাহ যাবত চাউল ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্যের মূল্য অপরিবর্তিত রহিয়াছে। সাতক্ষীরা ও উহার মফস্বল অঞ্চল সমূহেও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়া আসিয়াছে। তথায় বিভিন্ন শ্রেণীর জনগণ তাহাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম পুনরায় শুরু করিয়াছেন। সাতক্ষীরায়ও অফিল আদালতে স্বাভাবিক কাজকর্ম চলিতেছে।
সাবেক ডেপুটি স্পীকার এটি, এম, আবদুল মতিন এক বিবৃতিতে বললেনপাকিস্তান সার্বভৌমত্ব বিকাইয়া দিবেন ‘আজাদ’ জনালাে :
পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সাবেক ডেপুটি শকৰ জনৰ এ, টি এম আব্দুল মতিন গতকল্য এক বিবৃতিতে সাহায্যদানকারী দেশসমূহের ইব্র সমালােচনা করিয়া বলেন যে,
________________________________________
এই সৰ দেশ বৈদেশিক সাহায্যাদানকে কোন একটি সার্বভৌম দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ ও চাপ প্রদানের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করিতেছে। তিনি বলেন, একটি আত্মসম্মানবােধ সম্পন্ন ও শান্তিকামী দেশ হিসাবে পাকিস্তান এইসব মতলববাজ মহলের সাহায্য ছাড়াই উহার অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় আত্মনিবেশ করিবে।।
তিনি বলেন, সাহায্যদানকারী দেশসমূহের এ ধরনের মনােভাব তাহাদের সাহায্য প্রদানের লক্ষ্যের হয়তাে উপযােগী হইতে পারে, কিন্তু ইহাতে উপমহাদেশে শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রগতি সম্ভব হইবেনা। তিনি বলেন, পাকিস্তান সাহায্যের জন্য উত্ৰাৱ সার্বভৌমত্বকে বিক্রয় করিতে পারেন। ভারতীয় প্রচারণা ও আমাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের অহেতুক হস্তক্ষেপের স্বরূপ উপলব্ধি করার ইহাই উপযুক্ত সময় বলিয়া তিনি তাহার বিবৃতিতে উল্লেখ করেন।
তিনি ৰালেন, সাহায্যদানের জন্ম আবরণে আমাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপে বিরুদ্ধে জাতি অবশ্যই সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হইৰে। জনাব মতিন বলেন, পাকিস্তান কোন ষড়যন্ত্রের ফসল নহে অথবা শুকতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় নাই।।
সাবেক পুটি শীকার তাহার বিবৃতিতে আরও বলেন যে, লক্ষ লক্ষ মুছলমানের বন ও রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তান কিসের জন্য প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। পাকিস্তান আন্তর্জাতিক ক্ষমতার রাজনীতির ষড়যন্ত্রের লীলাভূমি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। এছলামী আদর্শ ও মূল্যায়নের প্রতি লইয়া মােছলেম জাতীয়তার ৩৫% পাকিস্তান সৃষ্টি হইয়াছিল।
জুন মাসে চমমি বিশ্ববিন্যালয়ের ৩৩ জন অধ্যাপক এক বিবৃতি বিশ্ববিদ্যালয় *ংসের ভারতীয় প্রচারণার প্রতিবাদ জানান। পত্রিকায় প্রকাশিত এ বিবৃতি সম্পর্কে বলা
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ]aTম বিশ্ববিদ্যায় এফন হল Iজ শশিয়া তার গল্প বেতারের প্রচারণাকে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে তার প্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলরসহ ৩৩ জন অধ্যাপক নির্লজ্জ মিথ্যা বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন। তঁাহারা এক বিবৃতিতে বলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সকল অন অঞ্চ রহিয়াছে এবং কোন প্রবনোই কোন ক্ষতি সাধন করা হয় লাই।
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকগণ আমাদের প্রিয় স্বদেশ ভূমির সংহতি ও অথতা রক্ষায় আমাদের সেনাবাহিনীর সময়ােচিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গভীর প্রশংসা করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা নিজআক্ষরকারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ পাকিস্তানের সাম্প্রতিক অটিনায় গভীর বেদনাবােধ করিতেছি। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে, ভারতীয় যুদ্ধবাজ যাৱা মুছলমানদের স্বতন্ত্র আবাসভূমি হিসাবে পাকিস্তান সৃষ্টিকে কখনও গ্রহণ করে নাই। প্রধানতঃ তাহাদের চক্রান্ত্রের ফলেই ইহা হইয়াছে।
আমরা আমাদের দেশভূমির মাহত ও আজহা (ক্ষ জন্য আমাদের সেনাবাহিনীর সময়ােচিত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশংসা করিতেছি। আমরা আমাদের প্রিয় স্বদেশভূমির সংহতি ও অবণ্ডতা রক্ষার জন্য আমাদের সেনাবাহিনীর সময়ােচিত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশংসা করিতেছি।
আমরা দেশের সংহতি ও অখণ্ডতা বিপন্ন করার জন্য চরম হাসের অ সের তত্র নিন্দা করিতেছি। বহির্বিশ্বের দৃষ্টিতে পাকিস্তানের মর্যাদা প্লাস ও পাকিস্তানকে রাজনৈতিক অবক বাংলাদেশ ১৭।
________________________________________
এবং অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করার অপচেষ্টা এবং সীমান্তে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী পাঠাইয়া আমাদের শ্রেয়া ব্যাপারে ভারতীয় হস্তক্ষেপের আমরা নিন্দা করিতেছি। আমরা ভাত্রের ভিত্তিহীন ও দূরভিসন্ধিমূলক প্রচারণার নিন্দা করিতেছি।
ভাৱতীয় বেতারে প্রচারিত একটি খবরের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকষ্ট হইয়াছে। উক্ত খবরে অযােগ করা হইয়াছে যে, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ধ্বংস করিয়া দিয়াছে । আমরা স্বার্থহীনভাবে ঘােষণা করিতেছি যে, ইহা নির্লজ্জ মিথ্যা প্রচাৰহা। হইম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের সকল ভবন অক্ষত রহিয়াছে। আমরা স্বার্থহীনভাবে ঘােষণা করিতেছি যে, ইহা নির্লজ্জ মিথ্যা প্রচারণা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের সকল ভবন অক্ষত রহিয়াছে এবং কোন ভবনেই কোনরূপ ক্ষতি সাধন করা হয়। নাই।
| অামরা ভাবে বিশ্বাস করি যে, বর্তমান মুহুর্তে সাপেক্ষা বেশী প্রয়োজন আমাদের সকলের মধ্যে ঐক্য ও শৃখলা। আর প্রতি বিশ্বাস রাখিয়া আমরা বর্তমান সঙ্কট হইতে মুক্ত হইতে সক্ষম হবে। | বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন : ভারপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর ও আইন ফ্যাকাল্টিরন জনাব ইউ, এন, সিদ্দিকী, ইতিহাস বিভাগের অধ্যক্ষ ও প্রফেসর ৪, আবদুল করিম, সমাজ বিজ্ঞানের বিজ্ঞান ও অধ্যক্ষ এম. বদরুন্দোঝা, এছলামী ইতিহাসের লেকচারার জনাব মােহাম্মদ ইনামুল হক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যক্ষ ও প্রফেসর ড: রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, বিভাগের রিভার জনাব মােহাম্মল আনিসুজামান, ইংৱেঞ্জার সিনিয়র লেকচায়না কােম্পকার রেজাউর রহমান, রাষ্ট্রবিনের লেকচারার জনাব সৈয়দ কামাল মোস্তফা, কবিজ্ঞানের লেকচারার জনাব এম, এ, জিন্নাহ, ইতিহাসের সিনিয়র লেকচারার জনাব রফিউদ্দিন, সায়নের প্রফেসর ঔ অধ্যক্ষ নাৰ , কে, এম আহমদ, সমাজ বিজ্ঞানের সিনিয় লেকচাবার জনাব রুহুল আমিন, বাণিজ্যের অধ্যক্ষ মােহাম্মদ আলী ইমদাদুল ইন, ইতিহাসের সিনিয়র লেকচাৱাৱ নাৰ হোসেন মোঃ ফজলে পাইয়ান, বাংলার সিনিয়র লেকচারার জনাব মােঃ দেলওয়ার হােসেন, সংখ্যাতত্ত্বের সিনিয়র কৈচারার জনাব আবদুর রশিল, ইতিহাসের রিডার জনাব মুকাদ্দাসুর রহমান, ইতিহাসের লেকাৱাৰ জনাৰ আহসানুর কবির, অর্থনীতির লেকচারার সুনাব শাহ মােঃ হুজ্জাতুল ইসলাম, ইংরেজীৱ অধ্যক্ষ জনাব মােহাম্মদ আলী, পদার্থবিদ্যার বিজ্ঞাৱ জনাৰ এজাজ আহমল, গণিতের রিডার জনাব জেড, এইচ চৌধুরী, সংখ্যাতত্ত্বের লেকচারার নাৰ হাতিম আলী হাওলাদার, বাংলায় ভার : মোঃ আবদুল আওয়াল, বাংলার সিনিফার লেকচারার জনাব মােঃ মনিরুজ্জামান, বাংলার সিনিয়র ফেকচারার জনাব মােঃ মনিরুজ্জামান হয়, ইঞিহাসের গবেষণা সহকারী জনাব আবদুস সায়ীদ, অনিীতিন লেকচারার জনাব মােঃ মুস্তফা, ইতিহাসের লেকচারার মিসেস সুলতানা নিজাম, ইতিহাসের বিড়ার ডঃ জাকিউদ্দীন আহমদ ও ফাইন আর্টসের লেকচারার জনাব আবদুল রশীদ হায়দার।’24
‘শাহজালালের পবিত্রভূমি হইতে সমাজ বিরােধীদের উৎখাতেব শপথ গ্রহণ করলাে সিলেটের শিক্ষক রাজনীতিকগণ। সংবাদে বলা হয় ।
| ‘সিলেট, ২৮ জুন গতকাল এখানে অনুষ্ঠিত এক জনমঙ্গায় হযরত শাহজালালের পবিত্র ভূমি হইতে সমাজ বিরােধীদের সম্পূর্ণরূপে উৎখাতের জন্য শপথ গ্রহণ করা হয়।
________________________________________
সরকারী কলেজসমূহে অধ্যাপকবৃন্দ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্মগজ, সমাজের বিভিন্ন স্তরের জনসাধারণ অংশগ্ৰহণ করেন।
| সচ্ছায় ভাষণদান করেন পাকিথন কাউন্সিল মোসলেম লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিলেট শান্তি কমিটির আহবায়ক এডভোকেট সহিদ আলী, পিডিপি নেতা এডভোকেট গােলাম জিলানী, জনাৰ জসিম উদ্দিন আহমদ, জামাতে ছিলামীৱ জনাৰ হাফিজ ক্ষর রহমান, সিলেট সরকারী কলেজের অধ্যাপক আবু মুসা, সকাৱী মাধ্যমিক কলেজের অধ্যাপক ইউসুফ, জনাৰ আজিমল আলী চৌধুরী, সাবেক কেন্দ্রীয় উদির জানাৰ গোলাম
জনাব চৌধুরী অধুনাপ্ত আওয়ামী লীগের দালালদের দ্বারা পূর্ব পাকিস্তানকে কুক্ষিগত করার ভারতীয় চক্রান্ত সম্পর্কে জনসাধারণকে হুশিয়ার করিয়া দেন। পাকিস্তানকে ধ্বংসের হাত হইতে রক্ষা করার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পা ও মােবারকবাদ |পন করেন। | জনাব আজমল আলী চৌধুরী জঙ্গী হিন্দুবাদের দর্শন ব্যাখ্যা করিয়া বলেন যে, হিন্দুবাদ সকল সময়েই ইছলামকে ফাংশ করিতে চাহিয়াছে। ভারতীয় সস্তা শ্লোগানে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য তিনি তরুণ সমাজের প্রতি আহবান জানান।
জুলাই মাসে পূর্ব পাকিস্তানে বাঙ্গালীদের জীবনের নিরাপত্তা নেই- একথা ভিত্তিহীন বলে মত প্রকাশ করলেন উপাচার্য : সাজ্জাদ হােসেন। এ সম্পর্কে দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় করা হলাে :
গুন, ৮ জুলাই (রহাটার)। -পূর্ব পাকিস্তানের শহর ও গ্রামে বাঙালীদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই বলে যে কথা বলা হয়েছে, পূর্ব পাকিস্তানে ২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গতকাল তা অস্বীকার করেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডঃ এস, সাজ্জা হােসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের বীভাৱ ভঃ এম, মােহর আলী টাইমস পত্রিকায় লিখিত এক দীর্ঘ চিঠিতে তঁাদের এই অস্বীকৃতির কথা জানান।
‘বিদেশে প্রচারিত নৃশংসতার কাহিনী’ উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এতে বিশ্রিত হবার কিছু নেই যে এ ধরনের কাহিনী প্রচার অব্যাহষ্ক থাকার ফলেই এ রকম সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে যে পূর্ব পাকিস্তানে শহর ও গ্রামে বাঙালীদের বিশেষ করে শিক্ষিত বাঙালীদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই।
বুদ্ধিজীবীদের পাইকারী হত্যা করা হয়েছে বলে যে কাহিনী প্রচারিত হয়েছে, অধ্যাপকম্বয়া তাও অস্বীকার করেছেন। চিঠিতে বলা হয় যে, মার্চের ২৫/২৬ তারিখে গুন্নী ও ইকবাল হলের আশেপাশের এলাকায় যুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয় যে, আমাদের ৩ জন সহযোগী প্রাণ হারাতেন না, যদি না তারা যে চকনগুলোতে বাস করতেন, সেগুলােকে আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের তৎপরতাৰ আঁটি হিসেবে ব্যবহার করতাে।
আগস্ট মাসে ঢাকায় পাকিস্তান কাউন্সিল আয়ােজিত আলােচনা সভায় বক্তাগণ “বিশ্ব মুসলিমের আবাসভূমি রূপেই পাকিস্তানের সৃষ্টি বলে মত প্রকাশ করেন। দৈনিক গ্রাম জানালো ।
________________________________________
* পাকিস্তানের ২৪ তম আজামী বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে পাকিস্তান কাউন্সিলের চাষ কেন্দ্র কর্তৃক আয়ােজিত এক মনােজ্ঞ আলােচনা সভায় সুধীমণ্ডলী এই মর্মে অভিমত প্রকাশ করেন যে, পাকিস্তান সৃষ্টির এটাই উদ্দেশ্য ছিল যে, পাকিস্তান হবে প্রথমত; পাকভারত উপমহাদেশের সমস্ত মুসলমানদের আবাসভূমি, দ্বিতীয়ত: সারা বিশ্বের মুসলমানগণ এনে তাদের আবাসস্কুল খুজে পাৰে।
প্রিন্সিপাল দেওয়ান মােহাম্মদ আজরফ সভাপতির অভিভাষণে বলেন যে, ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে পাকিস্তান সৃষ্টি একটি অবধারিত পরিণাম। তিনি আরও বলেন যে, ভ্রাতৃত্বের অনুভূতি এবং ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গী সব সময়ই আমাদের সব রকম সমস্যার সমাধান করতে পারে। উক্ত সভায় অধ্যাপক উ; এস, এস, সাকির ও জনাব শাহ নজমুল
অধ্যাপক ড: সৈয়দ আবদুর রহমান স্বরচিত প্রবন্ধে ভারতীয় মুসলমানদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিবৃন্দ্র বর্ণনা করেন। আলোচনা সভা শেষে আয়ােজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কাজী সালাউদ্দীন প্রমুখ তরুণ কবি স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন এবং বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী শেখ লুঙ্কৰ বহমান ও বের উদ্দীন আহমদ দেশাত্মবােধক সঙ্গীত পরিবেশন করেন।”৩০
এদিকে পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পাকিস্তান কাউন্সিলের মায়মনসিংহ শাখা এক আলােচনা সভার আয়ােজন করে। এ সম্পর্কে “দৈনিক সংগ্রাম’- এর প্রতিবেদন :
‘আজাদী দিবস উপলক্ষে পাকিস্তান কাউন্সিলের মােমেনশাহী কেন্দ্র একটি আলােচনা। সভার আয়োজন করে। প্রাক্তন প্রাদেশিক মন্ত্রী জনাব হাশিমুদ্দীন আহমদ এতে সভাপতিত্ব করেন। মঙ্গয় প্রবন্ধ পাঠ করেন মহাখালী গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষত্রিী মিসেস রওশন আজাদ এবং থানীয় সাংবাদিক ও কভাকেট জনাৰ এ, ই, বি, রেজা। আলােচনায় অংWহণ করে প্রাক্তন প্ৰপেশি খী উনার ফখরুদ্দীন আহমদ, এক্টিভোকেট হাতেমা আলী তালুকদার ও স্থানীয় ন্যাশনাল ব্যাংকের ম্যানেজার জনাব এম, আঞ্জীজুল হক।
সভাপতির ভাষণে জনাব হাশিমুদ্দীন আহমদ বলেন যে, ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ একটি বাতিল মতবাদ। অতীতে কংগ্রেস দু’বার এই মতবাদের বিরুদ্ধে কাজ করেছে অথচ বর্তমানে তারা এই জাতীয়তাবাদেরই ধূয়া তুলেছে। তিনি আরও বলেন যে, বিচ্ছিন্নভাবে পূর্ব পাকিস্তান একদিনও টিকতে পারবে না এটা জেনেই ভারত পাকিস্তানের আভাস্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে। তিনি সবাইকে শত্রুর হীন চক্রান্তের মর্ম উপলব্ধি করতে আবেদন জানান। ৩১
এদিকে দেশরক্ষা দিবস উপলক্ষে পাকিস্তান ইয়ােগ কালচারাল এসােসিয়েশন জাকার কম হলে এক আলােছনা সভার আয়ােজন করে। এ মূলকে দৈনিক আজাদ পত্রিশ সাংস্কৃতিক অনুপ্রবেশ রুখিয়া দাড়াইকর আহবন’ শিরােনামে লিখলাে :
ভারতের চান্তের ফলে সাড়ে তের কোটি শান্তিকামী মানুষের আবাসভূমি পাকিস্তান আজ একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে আসর হইতেছে। কিন্তু আমি স্পষ্ট ভাষায় বলিয়া মতে চাই, যে ওর মধ্যে মেজর তােফায়েল, মেজর আজিজ এবং শখ মিজর মত দেশের জন্য আত্মােৎসর্গ করার লােকের অভাব নাই সে জাতি কোন দিন কাংস হয়
________________________________________
দেশরক্ষা দিবস উপলক্ষে গতকাল সকালে স্থানীয় কান হলে পাকিস্তান ইয়ােথ। কালচারাল এসােসিয়েশনের উদ্যোগে আয়ােজিত এক আলােচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে পাকিস্তানের বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান ও সাবেক উজীয় জনাব খান এ সবুর উপরােক্ত মন্তব্য করেন।
পবিত্র কোরান তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। উ: হাসান জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলােচনা সভায় ভাষণ দেন অধ্যাপক মােহাম্মদ আফসার উদ্দীন, অধ্যাপক ড: মােহর আলী এবং প্রাক্তন পার্লামেন্টারিয়ান শাহ আজিজুর রহমান।
ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার ও ‘খ’ এলাকার সামরিক আইন প্রশাসক লে: জেনারেল এ, এ, কে, নিয়াজীরও উক্ত আলােচনাসভায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণবশত: তিনি উপস্থিত হইতে না পারিয়া কর্নেল বশীর আহমল মালিককে তাঁহার প্রতিনিধি হিসাবে প্রেরণ করেন।
জনৰ সবুর তাহার ভাষণে বলেন যে, ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারত কোনদিন পাকিস্তানের অস্তিত্ব মানিয়া লইতে পারে নাই। পাকিস্তানকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ছয় বৎসর পূর্বে ভারত এমনি দিনে রাতের আঁধারে পাকিস্তানের উপর ঘূণ্য আক্রমণ চালাইয়াছিল। কিন্তু পাকিস্তানের বীর সেনাবাহিনীর নিকট নির্মমভাবে পর্যদস্ত হইয়া ভারত উপলব্ধি করিয়াছিল যে সম্মুখ যুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাজিত করা সম্ভব নহে। তাই গত ছয় বৎসরে কৌশল পরিবর্তন করিয়া ভারত নূতন রণক্ষেত্র পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরে পঞ্চম বাহিনী ও দেশদ্রোহী সৃষ্টি করিয়া পাকিস্তানকে মংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হইয়াছে।
তিনি আরও বলেন যে, বিভিন্ন দেশের সহিত অস্ত্র চুক্তির মাধ্যমে ইতিমধ্যে ভারত বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করিয়াছে। জেনারেল নিয়াজীর উদ্ধৃতি দিয়া তিনি বলেন যে, ভারতের হদি উক্ত সংগৃহীত অধের বার পরীক্ষা করার জন্য পাকিস্তানের সহিত যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার বাসনা জাগে তবে সে খুদ্ধ ভারতের মাটিতেই অনুষ্ঠিত হইবে। এ প্রসঙ্গে বৃহৎ শক্তিবর্গ বিশেষত: রাশিয়ার প্রতি সতর্কবাণী উচ্চারণ করিয়া তিনি বলেন যে, দূরপ্রাচ্য এবং মধ্যপ্রাচ্যে আজ আগুন জ্বলিতেছে। আজ যদি নিকটপ্রাচ্যেও আহন জ্বলে তবে সে আগুন
তো সারা বিশ্বে পৱিৰখ হইৰে। ভারত-সোভিয়েট মৈত্র চুক্তিকে তিনি সমর চুক্তিতে পরিণত না করিয়া মৈত্রী চুক্তিতেই আবন্ধ রাখার জন্য রাশিয়ার প্রতি অনুরােধ জানান।
তথাকথিত মুক্তিবাহিনী ও মুক্তি সংগ্রাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, মুক্তি সংগ্রাম পরিচালিত হয় পরাধীন দেশে। কিন্তু পাকিস্তান একটি স্বাধীন দেশ। স্বাধীন দেশে আবার মুক্তি সংগ্রাম কিসের? মুক্তিবাহিনীকে ভারতীয় দালালরূপে অভিহিত করিয়া তিনি বলেন যে, আওয়ামী লীগের চ্যালা চামুগুরা আজ পূর্ব পাকিস্তানকে শশানে পরিণত করিতে চায় বলিয়াই এই তথাকথিত মুক্তি সংগ্রাম চালাইয়া যাইতেছে।
যে সকল উদ্বাস্তু পূর্ব পাকিস্তানে ফিরিয়া না আসিয়া স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরিয়া আসিতে চায় তাহাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন যে, তাহাদের ভারতের মাটিতেই পাকাপাকি ব্যবস্থা করিয়া নেওয়া উচিত; কারণ নােজ কেয়ামত পর্যন্ত তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হওয়ার কোন
তিনি দুঃখ করিয়া বলেন যে, ১৯৬৫ সনের যুদ্ধে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইপিআরএর সৈন্যরা সেদিন সকলের সহিত কাধে ধ মিলাইয়া দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যুদ্ধ
________________________________________
করিয়াছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়। আজ তাহাদের অনেকেই দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হইয়াছে। উর্ধতন কর্মচারীদের প্রশ্রয়েই ইহা হইয়াছে বলিয়া তিনি অভিযােগ করেন।
সেনাবাহিনীর প্রতি পাকিস্তানের জনসাধারণের সমর্থন নাই বলিয়া ভারত যে প্রচারণা চালাইতেছে, উহাকে তিনি মিথ্যা বলিয়া অভিহিত করেন। পাকিস্তানের প্রতিটি মানুষ সেনাবাহিনীর সমর্থক বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান যে, দেশে বর্তমানে আরও দুই লক্ষ রাজাকার ট্রেনিং গ্রহণ করিতেছে। শাহ আজিজুর রহমান। প্রাক্তন পার্লামেন্টারিয়ান শাহ আজিজুর রহমান তাহার ভাষণে বলেন, মুসলমান ব্যতীত অতীতে যে সকল বিদেশী সংস্কৃতি ভারতের সংস্পর্শে আসিয়াছে তাহারা সকলেই ভারতের সহিত একাত্ম হইয়া গিয়াছে। কিন্তু মুসলমানের বেলায় উহা ঘটে নাই বলিয়াই মুসলমাসের বিরুদ্ধে ভারতের এত ক্ষোভ। এই ভারত পাকিস্তানের অঝি, মানিয়া অনুইতে পারে নাই বলিয়া তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশের নিকট হইতে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র পাওয়ার ফলেই আজ ভারতের ঔদ্ধত্ব এত বাড়িয়া গিয়াছে।
দেশের বর্তমান সঙ্কটের কথা উল্লেখ করিয়া তিনি বলেন যে, জাতিরা এই সঙ্কটশয়ে দেশবাসীর উ’৮৩ সকল তা পরিত্যাগ কৱিষ্যা আত্মনির্ভরশীল হইয়া উঠা। এ প্রসঙ্গে শর্তযুক্ত সাহায্য প্রত্যাখ্যান করিয়া তিনি চীনের আপশে দেশকে সর্বাত্মক অগ্রগতির দিকে আগাইয়া নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। ভঃ হাসান জামান। সভাপতির ভাষণে উঃ হাসান জামা বলেন যে, ” আজ যে সঙ্কটের সমান হইয়াছে, সে সফটই জাহিকে আরও শক্তিশালী করিয়া তুলিবে। কারণ সঞ্চই মুসলমানদেরকে বড় করিয়া তোলে—এ রকম দৃষ্টান্ত হাতিহাসে প্রচুর নাজিয়াছে।
তিনি আরও বলেন, প্রচুর ভারতীয় বই, মার্কিন নাজ না এবং কমুনিষ্ট পুস্তকপুস্তিকা নর্তমানে বাজার ছাইয়া ফেলিয়াছে। এই সকল বিজাতীয় সংস্কৃতির মোকাবেলা এবং মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধকে আরও জোরদার রায় অন্য তিনি পাকিস্তানের আদর্শ ও ঐতিহ্যের পরিচয়বাহী পত্র-পুস্তিকা ব্যাপকহারে প্রকাশ করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। ড: মােহর আলী অধ্যাপক ডঃ মােহর আলী তাহার ভাষণে বলেন যে, ৬ সেপ্টেম্বর আমাদের জাতীয় জীবনের ইতিহাসে কেবল একটি মাত্র দিন নহে। সৰ দিনই ৬ সেপ্টেম্বর। এই দিনই প্রয়োজনের সময় সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করার জন্য প্রত্যুষ্ট থাকার কথা স্মরণ করাইয়া দেয়। তিনি আরও বলেন যে, পাকিস্তানের সৃষ্টি হইয়াছে একটি মূল্যবােধের ভিত্তিতে । সে মূল্যবোধ হইতেছে এইলাম। যতদিন পর্যন্ত আমাদের ঈমান এবং আল্লাহর প্রতি আমাদের বিশ্বাস অটুট থাকিবে এবং যতদিন পর্যন্ত আমরা সত্যিকারভাবে মুছলমান খাকিব, ততদিন পাস্থি কোন শক্তি আমাদের লক্ষ্য-পাকিস্তান এছলামিক রিপাবলিকের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে পারিবে না।”
________________________________________
২৭ সেপ্টেম্বর মওলানা আবদুল মান্নান-এর নেতৃত্বে মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির একটি প্রতিনিধি দল লে. জেনারেল এ.এ.কে, নিয়াজীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেনা শাসকের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করেন। এপিপি-কে উদ্ধৃত করে দৈনিক পাকিস্তান’ এ সম্পর্কে
মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির ২৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল গতকাল সোমবার ২’। এলাকার মামলায় আইম প্রশাসক ও ইস্টান করে মাত্রার লেঃ জেনারেল এ, এ, কে, নিয়াজীর সাথে সাক্ষাৎ করেন।
এপিপি’র খবরে প্রকাশ, প্রতিনিধিদল সামরিক আইন প্রশাসককে ২৫০০০ মাদ্রাসা শিক্ষকের পর্ণ সহযােগিতার আশ্বাস দেন। প্রতিনিধিদল বলেন, তারা পাকিস্তান সশস্ত্র । বাহিনীর সাথে পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও ইসলামের গৌরবের জন্যে কাজ করতে প্রস্তুত।
প্রতিনিধিদল কেনাৱেল নিয়াজীকে এক কপি পবিত্র কোৱান উপহার দেন। ইসলামকে বৃক্ষা ও সম্প্রসারণ করেছেন বলে জেনারেল নিয়াজী আলেমদের প্রশংসা করেন। জেনারেল নিয়াজি প্রতিনিধিললকে বলেন যে পাকিস্তানের ভবিষ্যতের সাথে এ. উপমহাদেশের ইসলামের ভবিষ্যত ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। বিপথগামী তরুণদের সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য তিনি আলেম সমাজ ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের উপদেশ দেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, তরুণদের এ কথাও অনুধাবন করতে হবে মেয় দাসত্বে চেয়ে বড় অ৬ি|প আর কিছু নেই, আর তাই চেয়েও খারাপ হলো হিমু শাসকলের লাস। বিষয়টি ভালােভাবে বুঝবার উদ্দেশ্যে তিনি আজাদ-পূর্ব আমলের মুসলমানদের দুঃখ-দুর্দশার কথা উল্লেখ করেন।
| এিনি প্রতিশিথিলকে আস্থাশ দেন যে গণগ্রবাহিনী দেশের সংহতি রক্ষার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং সেই শক্তিও তাদের রয়েছে। তবে আলেম সমাজ, মাদ্রাসা শিক্ষক ও অন্যান্য দেশপ্রেমিক নাগরিকগণ যােগাযোগ ব্যবস্থা রক্ষা এবং বিরােধীদের নির্মূল করার কাজে সাহায্য-সহযােগিতা করতে পারেন।
স্ব স্ব এলাকায় ভারতীয় চরদের মােকাবিলা করার জন্যে এম্য রক্ষা কমিটি ধরনের হো সংস্থা গঠনে সব রকম সুযোগ-সুবিধা পান করবেন বলে জেনারেল নিয়াজী প্রতিনিধি দলকে প্রতিশ্রুতি দেন। ৩৩
এদিকে পাকিস্তানি সেনাশাসকদের দোসর বুদ্ধিজীবীরা ডাকাতে লিয়াকত আলী খানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করলাে। পাকিস্তান কাটলি সাকা কেন্দ্র আয়োজিত এ আলােচনা সভা সম্পর্কে পত্রিকায় বলা হলাে :
| ‘গতকাল শনিবার ঢাকায় কায়েদে মিল্লাত লিয়াকত আলী খানের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। এ উপলক্ষে গতকাল বিকেলে পাকিস্তান কাউন্সিল আয়োজিত এক আলােচনা সস্তায় দৈনিক পয়গাম সম্পাপক জনাব মুজিবর রহমান খ বলে যে কায়েদে মিল্লান্ত ছিলেন প্রকৃত মানবিকতার একজন অক্লান্ত সৈনিক। পাকিস্তানের জনগণের
________________________________________
সত্যিকারের কল্যাণের উদ্দেশ্যে তিনি এই মানবিকতা প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে
জনাব মুজিবর রহমান বা অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, কায়েদে মিল্লাত মরহুম লিয়াকত আলী খান ছিলেন সর্বহারা ও নিপীড়িতদের একজন কল্যাণকামী নেতা। তিনি ছিলেন কর্মে একজন অক্লান্ত সৈনিক। জাতির জনক ছিলেন কায়েদে আজম মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ আর তার নির্মাতা বা স্থপতি ছিলেন কায়েদে আজম মােহাম্মদ আলী জিন্নাহ আর তার নির্মাতা বা স্থপতি ছিলেন কায়েদে মিল্লাত। জনাব মুজিবর রহমান খী তার ভাষণে কায়েদে আজম ও কায়েদে মিল্লাতকে রবি ও শশী হিসেবে অভিহিত করে নলেন যে আমরা গৌরবের এই রবি ও শশীর কথা ভুলতে পারি না। যদি এই রবি শশী না থাকতাে তাহলে হয়তাে পাকিস্তানের অনেক গৌৱৰ জ্ঞান হয়ে যেতাে।
আলােচনা সভায় বিশিষ্ট সাংবাদিক জনাৰ সানাউল্লাহ নূরী একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন। তিনি বলেন যে লিয়াকত আলী খান সম্পর্কে সবচেয়ে বড় কথা হলে তিনি ছিলেন আজ গণতন্ত্রবাদী। একমাত্র গণতন্ত্রের পথেই যে দেশে শান্তি, সমৃদ্ধি, সামাজিক সমতা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব একথা তিনি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন।
জনাব নুরী উল্লেখ করেন, কায়েনে মিল্লাত বলেছিলেন যে জাতীয় পতাকা উড়ানাে বা জাতীয় সঙ্গীত গাইবার জন্যেই আমরা স্বাধীনতা সঙ্গমে অবশ হইনি। আমরা স্বাধীনতা চেয়েছিলাম জনগণকে দারিদ্র্য ও নিপীড়ন থেকে মুক্ত করার জন্যে এবং দেশের প্রাকৃতিক, নৈতিক ও মানসিক অশাশকে কাজে লাগানাের সুযোগ গ্রহণের জন্য। অতএব আমরা স্বাধীনতা ও শান্তি দুই-ই রক্ষার জন্যে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
জনাব নূরী বলেন যে লিয়াকত আলী খান আমাদের ইতিহাসের অন্যতম মুখ্য চরিত্র। কাজেই তাকে অামাদের ইতিহাসের প্রদীপ্ত আলােকেই বিচার করতে হবে। জনাব নূরী বলেন যে কায়েদে মিল্লাত শাস্তি, মৈত্রী, স্বাধীনতা, সহযােগিতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবােধকে বিশ্বশান্তির একমাত্র রক্ষাকবচ বলে অভিহিত করেছিলেন। ক্ষুদ্র দেশগুলাের মর্যাদা ও আখনিয়ন্ত্রণ অধিকার নিশ্চিত করার সংগ্রামে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি একথাও বিশ্বাস করতেন যে নবজগত এশিয়াই অনাগত ভবিষ্যতে বিশ্বকে নেতৃত্ব লেৰে। ইনাব নূরী বলেন যে এই বিশ্বাস এবং প্রত্যয়ের মধ্যেই আমাদের জায়গায় সামের নায়ক হিসেবে লিয়াকত আলী খানের পরিচয় বিস্তৃত।
আলােচনা সভায় ঢাকা কলেজের শিক্ষক নাৰ সফির ফিরােয়ও বক্তৃতা দেন। তিনি বলেন যে, পাকিস্তানের সকল সংকট উত্তরণের নিয়মানের জন্যে আজ দেশে কায়েলে মিরাতের মতাে প্রাপ্ত ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রয়ােজন রয়েছে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে কায়েদে মিল্লাত দেশ ও জনগণের কল্যাণের জন্যে ছিলেন একটি নিবেদিত প্রাণসত্তা।
ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ এক সভায় মিলিত হয়ে পাকিস্তানের পবিত্র ভূমির বিরুদ্ধে ভারতের নিয়াজি ও বর্বর আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানান। তারা জাতির এই দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে শক্তিদানের জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। ৩৫।
________________________________________
তথ্য নির্দেশ
১. সৈনিক হল, ৫ এপ্রিল ১৯৭১ ২. দৈনিক আজাদ, ৭ এপ্রিল ১৯৭১ ৩. দৈনিক খান, ৯ এপ্রিল ১৯৭১ ৪. দৈনিক মাস, ১০ এপ্রিল ১৯৭১ এ, ডি, ৬, দৈনিক মলে, ১৮ এপ্রিল ১৯৭১ ৭, দৈনিক আজাদ, ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ ৮, দৈনিক মজন, ২০ এপ্রিল ১৯৭১ ৯, দৈনিক আজান, ২০ এপ্রিল ১৯৭১ ১০, দৈনিক আজাদ, ১৯ মে ১৯৭১ ১১. লৈনিক আজাদ,১৯ মে ১৯৭১ ১৯. দৈনিক আজল, ১৩ মে ১৯৭১। ১৩, দৈনিক আঙ্গলি, ১৭ মে ১৯৭১ ১৪. লৈনিক আজাল, ১৭ মে ১৯৭১ ১৫. দৈনিক আজল, ৩ মে ১৯৭১ ১৬, সৈনিক অক্সিল, ৩০ মে ১৯৭১ ১৫. দৈনিক আজাল,৩ জুন ১৯৭১ ১৮, দৈনিক আজাদ, ৪ জুন ১৯৭১ ১৯. দৈনিক সংগ্রাম, ৪ জুন ১৯৭১ ২০. লি মর্নিং নিউজ ৪ জুন ১৯৭১ ২১. দৈনিক নয়াম, ঐ জুন ১৯৭১ ২২. দৈনিক আজাল, ৫ জুন ১৯৭১ ২৩. দৈনিক সংগ্রাম, ৫ জুন ১৯৭১ 26. দৈনিক সল্পম, ১৯ জুন ১৯৭১ ২৫, দৈনিক আদাল, ২২ জুন ১৯৭১ ২৬, দৈনিক আজশি, ২৮ জুন ১৯৭১ ২৭ দৈনিক আজলে, ২৮ জুন ১৯৭১ ২৮, দৈনিক আজাদ, ৩০ জুন ১৯৭১ ২৯, দৈনিক পাকিস্তান, ৯ জুলাই ১৯৭১
৯, দৈনিক সংগ্রাম, ২২ আগস্ট ১৯৭১ ৩১. দৈনিক সংগ্রাম, ২২ আগস্ট ১৯৭১ ৩৯, দৈনিক আজাদ, ৭,৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ৩৩, দৈনিক পাকিস্তান, ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ ৩৪. দৈনিক পাকিস্তান, ১৭ অক্টোবর ১৯৭১ ৩৫. দি মনিং নিউজ ৮ ডিসেম্বর ১৯৭১।
________________________________________
ডা: মালিক মন্ত্রীসভা : গঠন ও তৎপরতা
‘খ’ অঞ্চলের বা অধিকৃত বাংলাদেশের সামরিক আইন প্রশাসক পরবর্তীতে গভীর লে: জেনারেল টিক্কা খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে সংঘটিত ব্যাপক গণহত্যা সারা বিশ্বের প্রচার মাধ্যমগুলাে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরায় পাকিস্তান সামরিক স্তা ব্যাপক সমালােচনার সম্মুখীন হয়। বস্তুত বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য পাক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া সামরিক পােশাকের ওপর বেসামরিক লেবাস লাগিয়ে বিশ্ববাসীকে ধােকা দেয়ার ব্যানা লে: জেনারেল টিক্কা খানকে সরিয়ে সেপ্টেম্বর মাসে পাকিস্তানি দোসর ডা: আবদুল মােতাজিৰ মালিকের নেতৃত্বে তথাকথিত বেসামরিক সরকার গঠন করেন। এই পুতুল সরকার সমস্যার মূল অনুসন্ধানের চেষ্টা না করে, গণহত্যার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে সেনাবাহিনীর গৃহীত কার্যক্রমকেই কেবল সমর্থন করলেন না। বরং দেশে এবং বিদেশে সেনা সরকারের পক্ষে জনমত গঠনে প্রয়াসী হলেন।
ডা: এ, এম, মালিক গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বেই অবরুদ্ধ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা সফর করে সেনা সকারের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন এমন তথ্য আমাদের হাতে রয়েছে। কেবল তাই নয়-পাক প্রেসিডেন্টেৰ সহকাৰী হিসাবে সেনা কমাক্তারদের সঙ্গে বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছেন, বক্তব্য রেখেছেন।
| ডা: এ, এম, মালিক জুন মাসে দশদিনব্যাপী যশাের, কুষ্টিয়া ও খুলনা জেলা সফর শেষে ঢাকা ফিরে জানালেন, ‘স্তি কমিটিগুলি চমৎকার কাজ করতেছে’। এ প্রসঙ্গে দৈনিক আজাপ’ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি স্মরণ করা যেতে পারে। পত্রিকায় বলা হলাে :
ঢাকা, ২৩ জুন=সাবেক কেন্দ্রীয় উজিরা ও পূর্বপাকিস্তান শ্রমিক ফেডারেশন এবং নিখিল পাকিস্তান শ্রমিক ফেডারেশনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ড: এ, এম, মালিক দশদিনব্যাপী যশাের, কুষ্টিয়া ও খুলনা জেলা সফরান্তে ঢাকা প্রত্যাবর্তন করিয়াছেন। আজ এখানে সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে : এ, এম, মালিক বলেন, সমাজ জীবনের সর্বস্তরে পূর্ণ স্বাভাবিকতা ফিরাইয়া আনা ও শান্তি অক্ষুন্ন রাখার উদ্দেশ্যে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও সশস্ত্র বাহিনীর সহযােগ্ধিতায় এতদঞ্চলের শান্তি কমিটিগুলি সন্তোষজনকভাবে কাজ করিয়া যাইতেছে।।
________________________________________
উ: মালিক তাহার বিবৃতিতে বলেন, দশনা ও গেমের মধ্যে বিচ্ছিন্ন রেললাইন সমাজবিরােধী ব্যক্তিরা ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সহায়তায় স্থাপন করিয়া ২০০টি রেলওয়ে ওয়াগন ও বেশ কিছুসংখ্যক ইঞ্জিন ভারতে লইয়া গিয়াছে। এখতীত ধান, লট ও হলসহ ৰল পরিমাণ খাদ্যশস্য করতে পার করে।
ভা: এ, এম, মালিক গভর্নর হিসাবে শপথ গ্রহণ করলেন ৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার। বিচারপতি বি, এ, সিদ্দিকী এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ সম্পর্কে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়।
এপিপি পরিবেশিত খবরে বলা হইয়াছে; জ্ঞা: আবদুল মােতালিব মালিক গতকাল। (শুক্রবার) বৈকালে পূর্ব পাকিস্তানের ১৯তম গভর্নর হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। গভর্নর ভবনের দরবার হলে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জনাৰ ৰি, এ. সিদ্দিকী শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। পরিচালনা করেন। ত; , এম, মালিক লে: জেনারেল টিক্কা খানের স্থলাভিষিক্ত হইয়াছে।
প্রেসিডেন্ট কর্তৃক গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আশ্বাস এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের অন্যতম। পদক্ষেপ হিসাবে জা; মালিককে গনির নিয়ােগ করা হইয়াছে। ৬িনি যথাসম্ভব শীঘ্র প্রেসিডেন্টের নিকট তাহার মন্ত্রিপরিদ্বপের সদসালের নামের তালিকা পেশ করিবেন বলিয়া আশা করা যাইতেছে।
‘খ’ অঞ্চন্তে সামরিক আইন পরিচালক লে: জেনারেল এ. এ, কে, নিয়া জাতীয় পরিষদের সাবেক স্পীকার আবদুল জব্বার খান, সাবেক ওমর নাৰ আবদুল মোনেম। খান ও জনাব সুলতান উদ্দিন আহমদ, জনাব ফজলুল কাদের চৌধুরী, খান এ সবুর, অর্থ পরিসেবা সপশ |ণ জহিরুদ্দিন, অধ্যাপক গোলাম আজম, পীনা মােহসিন। উদ্দিন, জনাব ইউসুফ আলী চৌধুরী, সৈয়দ আজিজুল হক, জনাব এ, এস, এম, সােলায়মান, ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতি, কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিবর্গ, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক অফিসারবৃন্দ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পবিত্র কোরান তেলাওয়াতের মাধ্যমে শপথ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
শপথ অনুষ্ঠান শেষে দরবার হলের পার্শ্ববর্তী ময়দানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন | হয়। ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন শরিচালক লে: জেনারেল , এ, কে, নিয়াজীসহ গভরি সেখানে যান এবং পাঞ্জাব রেজিমেন্ট প্রদত্ত ‘গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন।’
গভর্নর এ, এম, মালিক ১২ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার এক জনসভায় বলেন, সরকার পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতা, স্বস্তি এবং সমাজ থেকে শ্রাতার দূর করতে সা প্রতিজ্ঞ। গজল বলেন, ইয়াহিয়া সরকার জনগণের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সাধারণ ক্ষমা ঘােষণাসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন। কিন্তু বহি:শরুর আক্রমণ সফলভাবে প্রতিহত করতে দেশের সংহতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে জনগণকে একত্রে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, এই সংকটময় মুহূর্তে দেশপ্রেম এবং নিজেদেরকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকা জরুরি। বন্যা উপদত এলাকা দেখতে গভর্নর ঢাকা থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে কুষ্টিয়া আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন চীফ সেক্রেটারী মােজাফফর হােসেন।
________________________________________
২৬৮ অবরুদ্ধ বাংলাদেশে পাকিস্তানি সামরিকজান্ধা ও তার দোসরদের তৎপরতা
সামরিক সরকারের বেসামরিক গশ্রয় , এম, মালিক ঢাকা বেতারে ভাষণ দিলেন ১৪ সেপ্টেম্বর। তিনি তার ভাষণে বললেন: আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে উদ্যোগ শুরু করার উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট আমাকে এই প্রদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিযুক্ত করেছেন। গভর্নর হিসেবে আমার একটি মন্ত্রীপরিষদ থাকবে। আল্লাহতায়ালা আমাদের কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করেছেন। প্রদেশের অভ্যন্তর ও বহি:শত্রু থেকে ব্যাংক কার্যকলাপ ও হুমকি প্রদেশের শাস্তির বিন্ন ঘটিয়েছে এবং অর্থনীতির ক্ষতি সাধন করেছে। আমার জীবনের সায়াহ্নে এই গুরুদায়িত্ব আমি শুধু এই জন্যই তুলে নিয়েছি যাতে যে দেশে প্রতিষ্টা ও সংহতির জন্য আমার ক্ষুদ্র অবদান ছিল, সেই দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পুনর্গঠনের কাজে যথাসাধ্য শক্তি নিয়োগ করতে আমি যেন পিছপা না হই।
প্রিয়া দেশবাসীগণ, আমি আপনাদের সাহায্য সহযােগিতা কামনা করছি এইজন্য যাতে প্রদেশের শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়, যাতে করে আমরা এমন এক মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে পারি যেখানে বিভিন্ন সমস্যা আলাপ আলােচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে, শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নয়; যেখানে জনসাধারণ ও দলসমূহ প”পরের সঙ্গে মতানৈক্য থাকা সত্ত্বেও একই প্রদেশের শান্তিপ্রিয় নাগরিক হিসেবে একত্রে বসবাস করতে পারবেন । যে অন্ধবিয়ে আমাদের বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী, আসুন আমরা তা পেছনে ফেলে রেখে নূতন যাত্রা শুরু করি। এই যাত্রাপথকে সহজ ও সুগম করার উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। এর পূর্ণ সুযোগ এখন আমাদের গ্রহণ করতে হবে। স তি , সন্দেহ ও তিক্ততা দূর করে পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলার দায়িত্ব আমাদেরই।
| ‘আমার প্রিয় ভাই-বােনোৱা, প্রদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনঠিনে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আমি আপনাদের সনির্বন্ধ অনুরােধ নচ্ছি। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এটা প্রয়োজন। আমি আবারও বলছি আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এটা প্রয়োজন। এ সময় পরস্পরকে দােষারােপ করা, কারাে ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়া কিংবা মনে ক্ষোভ পােষণ করার সময় নয়। এখন অতীতের সমস্ত দোষ ও অভিযোগ বিস্মৃত হয়ে পুনর্গঠনের কাজে সবাইকে সামিল হতে হবে যাতে জাতি আত্মার শান্তি ও উন্নতির পথে অগ্রসর হতে পারে।
আজকের যুবক শ্রেণীতে আনে না যে, নতুন এক জাণি বাসভূমি আমাদের এই পাকিস্তানকে বাস্তবে রূপায়িত করার জন্য আমাদের কত পরিশ্রম করতে হয়েছে, কত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। যখন অবিভক্ত ভারতে আমরা বুঝতে পারলাম যে, আমাদের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পছে তখন আমরা একটা পৃথক আবাসভূমি দাবী করতে ব্যাধ্য হলাম। এই কাজ সহজসাধ্য ছিল না। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদেরকে পদানত করে রাখাই শোষকদের অটু অভিসন্ধি ছিল। আমাদের শকরা আমাদের চেয়ে অনেক বেশী সম্বন্ধ ছিল। এমনকি নুতন ও প্রাণবন্ত এই রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার পরও তারা আমাদের উন্নতির পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করার প্রাণপণ চেষ্টা করেছে। সবচেয়ে মৌলিক কথা হচ্ছে এই যে, আমাদের শত্রুরা পাকিস্তানের অস্তিত্বই স্বীকার করতে চায়নি। যা হােক আমরা কিছুতেই মাতৃভূমিকে আন্তর্জাতিক ক্ষমতার দ্বন্দ্বে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেব না। আবার যারা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে আমাদেরকে
________________________________________
ব্যবহার করতে চায়, তাদের কাছে আমাদের অস্তিত্বকে বিকিয়ে দিতে অথবা অর্থনীতিকে বন্ধক দিতে আমরা রাজী নই। শক্রর হাতে আমরা ক্রীড়নক হতে চাই না তাই আমরা এমন কি করবাে না যা কিনা জাতীয় আত্মহত্যার সামিল হবে। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের যে সৰ খুৰক সীমান্তের ওপারে চলে গিয়েছেন, তাদের এখন ফিরে আসা
চত। এটা তাদেরই, দেশ এবং একে পুনর্গঠন করার দায়িত্ব তাদেরই। আমি তাদের ফিরে আসার জন্য আহবান জানাচ্ছি। আমি তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, সাধারণ ক্ষমা ঘােষণা করা হয়েছে, তাই জ্বদেশে প্রত্যাবর্তন করলে তাদের কোন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তাদের প্রত্যাবর্তনে বাধাদানের উদ্দেশ্যে যে সকল মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণােলিত মিথ্যা গুজব রটনা করা হচ্ছে তাতে যেন তারা পাত না করেন। এটা অত্যন্ত দুঃখের কথা যে, আমাদের ব্যাগীদের প্রতি সহ শহর ও সমকােলন| প্রকাশ না করে, বিদেশ থেকে অর্থ সাহায্য লাভের উদ্দেশে তাদের ব্যবহার করা হয় এবং ক্ষুদ্র স্বার্থসিদ্ধির তাগিদে তাদের সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। সর্বোপরি যারা পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে চায় তাদের রাজনৈতিক গুটি হিসেবে বা গীদের ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পথে তাই নানাবিধ বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে।
আপনারা জানেন যে, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা ছাড়াও প্রেসিভেন সমস্ত ধ্বত। নাগরিকদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের আহবান জানিয়েছেন এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য। সকল প্রকার সুয়োগ-সুবিধা পাশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য। পাকিস্তান সরকার জাতিসমের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। এই প্রস্তাব অনুসারে মীমান্তের ক) পারে এবং ভারতে অবস্থিত বাতাগ। শিবিরলত গঠন ইত্যাদি উKেখযােগ্য। পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পিকিক ও আইডিবি ও পাকিস্তানে অবস্থিত অভ্যর্থনা। শিৰিৱলিতে জাতিসঙ্ঘের পর্যবেক্ষক মােতায়েন করার কথা। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, ভাৱ এই প্রস্তাব প্র্যাখ্যান করেছেন। ভারতের অসম্মতি পান সত্ত্বেও প্রত্যাবর্তনকারীদের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে আমরা সীমান্তের এপারে জাতিসঙ্গের পর্যবেক্ষক মােতায়েনে সম্মত হয়েছি, আমি আপনাদের কাছে অঙ্গীকার ছি, যে, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণৱ পদের দায়িত্ব পালনকালে আমি জনগণের মনে আস্থা সৃষ্টির জন্য সকল প্রচেষ্টা চালাবে। যারা স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন তাদের পুনর্বাসনের জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং সীমান্ত পার হয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে গমনের জন্য কারও বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না। যাদের বাসগৃহ, দোকান-পাট ও অধিকার উপায়। বিনষ্ট হয়েছে তাদের পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে পুন:প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে সর্বপ্রকার আথিক ও প্রশাসনিক সাহায্য করা হবে। যাদের সম্পত্তি বেআইনীভাবে বেদখল হয়েছে কিংবা খামে সম্পত্তি সাময়িকভানে অন্যদের মধ্যে বন্টন করা হয়েছে, সেগুলি প্রকৃত মালিককে দেয়া হবে। এই কাখে বাধাদানের কোন প্রকার চেষ্টা হলে তাকে কঠিন হস্তে দমন করা হবে। জাতিসংণে পর্যবেক্ষকদের র সমুখেই আমাদের পুনর্বাসন রূপাষাণ করা হচ্ছে এবং এই কাজ যাতে দ্রুত ও সুষ্ঠভাবে সম্পালিত হয় সেলিকে আমি কড়া নজর রাখবাে।
এই গৈ আমি সংখ্যা এলাকে এই মসশিত চাই যে, পকিস্তানের অন্যান্য নাগরিকদের মত তারও নাগরিকত্বের সমঅধিকারে অধিকারী। স্বদেশে
________________________________________
পাকিস্তানের বিশ্বস্ত নাগরিক হিসেবে শান্তিপূর্ণভাবে জীবন যাপনের জন্য প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই তাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তাদের বাড়ী র ও অন্যান্য সম্পত্তি তাদের ফিরিয়ে দেয়া হবে। ১৯৫০ সালের লিয়াকৎ নেহেরু চুক্তি মােতাবেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিষয়ক মন্ত্রীপদ আমি গ্রহণ করেছিলাম। আমি তাদের সমস্যা সম্পর্কে অবগত আছি। কাজেই যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোন ব্যক্তির প্রতি কোন প্রকার অচার না করা হয়, সেদিকে আমি বিশেষাবে লক্ষ্য রাখবাে। লিয়াক নেহেরু চুক্তি মোতাবেক ভারত সরকারের মন্ত্রী মি: সি সি বিশ্বাস ও পাকিস্তান সরকারের উরি হিসেবে আমি মিশরে কাজ করেছি যাতে উভয় দেশের উঞ্চত অধলে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়। এখন পূনরায় অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ কেন সম্ভবপর হবেনা তার কোন কারণ আমি দেখতে পাইনা। এই নিরাটি মানবিক সমস্যা সমাধানের জন্য মাত্র ব্যবস্থাপি আলোচনা করার উদ্দেশে আমি এই বিষয়ক ভারতীয় মন্ত্রীর সঙ্গে ধত শীঘ্র সম্বৰ বৈঠকে মিলিত হতে রাজী আছি। প্রকৃত সাদা ও মানবিক চুক্তির প্রতি সত্যিকারের সহানুভূতি থাকলে এই সমস্যা সমাধানে আমাসের অপারগ হওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠেনা।
অত:পর, আমি আমাদের ছাত্র সম্প্রদায়কে এটা উপলকি করতে বলবাে যে তারা হলেন পাকিস্তানের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। তারাই হলেন জাতির ভবিষ্যত স্থপতি। সুতরাং তারা যাতে ভবিষ্যতে নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারেন তার জন্য তাদের প্রস্তুত হতে হবে এবং তাদের শিক্ষা জীবন যাতে বাধাপ্রাপ্ত বা বানচাল না হয়, সেদিকে তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। তাদের শিক্ষা কেন পুনরায় শুরু করার জন্য যত শীথ সম্বৰ তাদের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যােগদান করা উচিত। কোন ভয়, ভীতি বা কোন প্রান্ত ধারনা তাদের শিক্ষা জীবন ব্যাহত করুক তা কারুর কাম্য নয়। কারণ এ মনােভাব কোন জাতির পক্ষেই মঙ্গলজনক না। অপরপক্ষে এর ফলে সমাজ দুঃখ-দুর্দশার সম্মুখীন হয়। আমার যৌবনের প্রাক্কালে কিছু সময়ের জন্য আমিও বাঙ্গালীর সন্ত্রাসবানী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। কিন্তু শীঘ্ৰেই আমি উপলব্ধি করলাম যে সন্ত্রাসবাদের অর্থই হোল আমার দেশবাসীর জন্য ধ্বংস ও মৃত্যু এবং এই না অনুসরণ করলে আমরা কোন লক্ষ্যেই উপনীত হতে পারব না। তাই আমি সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন থেকে নিজেকে মুক্ত করে স্বজাতির অধিকার অর্জনের উদ্দেশ্যে নিয়মতান্ত্রিক ও অহিংসামূলক পথ বেছে নিলাম। এবং আমি নিজেও দেখেছি যে নিয়মতান্ত্রিক ও অহিংসামূলক আন্দোলন খুবই ফলপ্রসূ। সেকালের অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী নেতৃবৃন্দও অনুরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। অসহযােগ আন্দোলন ফলপ্রসূ না হওয়ায় জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যেও সি, আর দাস ও মলিল নেহেরুর মত বড় বড় নােহাৱা স্বরাজ পার্টি গঠন করেন এবং আইন পরিষদে যােগদানের সিদ্ধান্ত নেন। আমি সাধারণভাবে ফুলকদের এবং বিশেষ করে হার সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যেন তারা পাকিস্তানের পুনঠিন ও উন্নতির ক্ষেত্রে তাদের ভবিষ্যত দায়িত্ব স্বাণ রাখেন এবং নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সে দায়িত্ব পালনের জন্য গত
এমিক ও মজুরদের এক আজীবন সেবক হিসেবে আমি শ্রমিক ও মালিক উভয় সম্প্রদায়ের নিকট অনুরোধ করবাে যেন তা দেশের অর্থনীতিকে পুন:প্রতিষ্ঠিত করার
না একযােগে কাজ করেন। শ্রমিকদের এটা বুঝতে হবে যে কলকারখানা বন্ধ হলে প্রকারান্তরে তাদেরই সমূহ ক্ষতি। এবং এর ফল জনসাধারণকেই ভোগ করতে হয়।
________________________________________
মজুররা যাতে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে উৎপাদন কার্য ফুপাদন করতে পারেন এবং যাতে তাদের ওপর কোন প্রকার জুলুম বা হয়রানী, ভীতি প্রদর্শন অথবা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা। গ্রহণ করা না হয়, সেদিকেও আমি লক্ষ্য রাখবাে। এ ব্যাপারে আমি আপনাদের আমার ব্যক্তিগত আশ্বাস দিচ্ছি। আপনাদের প্রতি আমার আবেদন এই যে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনারা কাজে যােগদান করুন। মালিকদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই যে, সামাজিক ন্যায় বিচার ও সুখী শ্রমশক্তি ছাড়া কোন শিল্পেরই উন্নতি বা অর্থনীতির বিকাশ সাধিত হতে
বর্তমানে প্রধান সমস্যা হােল প্রদেশের প্রতিটি লােকের কাছে প্রয়ােজনীয় খাদাদ্রেব্য সরবরাহ করা। দুঃখের বিষয় হলো যে, উপযুপরি বেশ কিছু বছর ধরে এই প্রদেশ খাদ্য ঘাটতি অঞ্চল হয়ে পড়েছে। এ বৎসর এই খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে। কারণ উৎপাদন ভুলের আশঙ্কা রয়েছে। তাই বর্তমান আর্থিক বছরে আমরা পশ্চিম পাকিস্তান ও বিদেশ থেকে ১৩ লক্ষ টন প্যশস্য আমদানীর ব্যাবস্থা করেছি। প্রদেশব্যাপী। সৱৰৱাহ, কেন্দ্রসমূহ মারফত খাদ্যশস্য চলাচল ও বণ্টন ব্যবস্থা করা হয়েছে, এবং এই উদ্দেশ্যে একটি বিশেষ স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রদেশের প্রত্যেক অঞ্চলের খাদ্যশস্য সরবরাহ পরিস্থিতির ওপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। উপকূলীয় জাহাজ ও অভ্যন্তরীণ নৌযানের সংখ্যা বৃদ্ধি করে নদী পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থা অনুসারে আমন ধান ওঠার আগ পর্যন্ত, আগামী ৪ মাসে, মাস প্রতি দেড় পক্ষ থেকে দু’লক্ষ টন খাদ্যসাশ্রী বন্দর থেকে বন্টন কেন্দ্রসমূহে নিয়ে আবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মােট কথা নিয়মিত খাদ্যশস্য সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করার ফলে, যে কোন বিশেষ সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের খাদ্য চাহিদা মেটানোর পূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতির মূল কারণ এটা নয় যে খাদ্যদ্রব্যের অনটন রয়েছে। আসল সমস্যা হোল, যােগাযােগ ব্যবস্থায় অসুবিধা, আর তার কারণ হােল প্রদেশে সাম্প্রতিক গােলযােগের ফলে রেলগাড়ী ও সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অসুবিধা । নন্দ থেকে খাদ্যসামগ্রী প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিতরণ কেন্দ্রে প্রেরণ করতে হবে। গোলযোগের আগে শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশী খালাণ দৌলগাড়ীর সাহায্য পাঠানো হোক। যেহেতু পূর্বের তুলনায় বর্তমানে রেল ও সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার অপ্রতুলতা রয়েছে সেইহেতু বেশীর ভাগ খাদ্যসামগ্রী নৌযানের সাহায্যে পাঠানাে হচ্ছে। এই ব্যাপারে বন্ধুরা সমূহের মধ্যে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছু উপকূলবর্তী জাহাজ সৱৰৱাহ করে আমাদের খাদ্যশস্য বন্টনের কাজে বিশেষ সহায়তা করেছেন। খাদ্য সরবরাহের কাজে এই অতিরিক্ত ব্যবস্থার ফল হবে এই যে, চট্টগ্রাম থেকে অভ্যন্তরীণ নৌবন্দরগুলিতে সরবরাহের পরিমাণ ৩ গুণ বেড়ে যাবে। এর ফলে চট্টগ্রাম থেকে চলাচলের প্রয়ােজনীয় চাহিদা মেটানাে সম্ভবপর হবে ।
সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা আরও উন্নত করবার উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই বিদেশ থেকে ট্রাক আমদানীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ১০০ থেকে ১৫০টি ট্রাক পাঠানাের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এটা বলা হচ্ছে যে, আলশমার সরবরাহ থাকলেও অনেকের পক্ষে ক্রয় করার ক্ষমতা থাকবে না। সরকার এই সমস্যা সম্পর্কেও সচেতন হয়েছে। এবং, ইতিমধ্যেই
________________________________________
গ্রামাঞ্চলে টেরিলিফের কাজ শুরু করা হয়েছে যার ফলে সহকাকি এমকে কাজে লাগানাে হচ্ছে। উক্ত অঞ্চলে কই তুষ্টি করে লােকজনের আশার পথ সুগম করে দেওয়া হয় যাতে তাদের কষ্ট লাঘব করা সম্ভব হয়। মাথা এই কাজের খাত কেন্দ্রীয় সরকার প্রাদেশিক সরকারকে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন এবং প্রয়োজনবােলে আরাে টাকা দেওয়া হবে। বর্ষার শেষে গ্রামাঞ্চলে ওয়ার্কস লেয়ামের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় এবং যার জন্য বাটে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়, এই টে রিলিফের কাজ তার অতিরিক্ত
গত কয়েক মাসের ঘটনাবলীর ফলে আমাদের অর্থনীতিতে বা কম ক্ষতি সাধন হয়েছে। মার্চ মাসে সকল প্রকার অনৈতিক কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল এবং তারপরে ব্যক্তিগত ও জাতীয় সম্পদের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে।
অথনৈতিক কার্যকলাপ পুণোদমে চালু করার জন্য সরকার ইতিমধ্যে বহু পন্থা অবাধন করেছে এবং এর ফলে অনেকটা উন্নতিও দেখা দিয়েছে। বড় বড় কারখানাগুলির উৎপাদন ক্ষমতাও বলি হচ্ছে। বরগুলি স্বাভাবিকভাবে কাজ করে যাঙ্গে। জুন ও জুলাই মাসে চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর থেকে মোট ১৮ কোটি ৭২ লক্ষ টাকার মাল রফতানী করা হয়েছে। গত বৎসর এই সময়ে মােট ২৪ কোটি ৫২ লক্ষ টাকার মাল রফতানী করা। হয়েছিল। সুতরাং তুলনামূলকভাবে দেখতে গেলে এই বৎসরের রফতানীর পরিমাণ। নেহহি, খারাপ নয়। ব্যাংকগুলি পূর্ণোদ্যমে কাজ করে যাচ্ছে এবং ব্যবসা বাণিজ্ঞ্যও ভালভাবেই চলছে। সুতরাং দেশের অর্থনীতি ক্রমে ক্রমে তাদের পর্যায়ে ফিরে আসবে। এ প্রসঙ্গে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে জনসাধারণের সার্বিক কল্যাণের জন্যে প্রদেশের অর্থনীতিকে পুনর্গঠন এবং উন্নয়নমূলক কর্মসূচীর পুনরুজ্জীবন আমার সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। সরকারের এই প্রচেষ্টায় আমি প্রদেশের সকল শ্রেণীর নাগরিকের সক্রিয় সহযোগীতা কামনা করছি।
উকি মেরাম ও পুনর্বাসন কাযের জন্য যা কিছু প্রয়োজন সরকার ইতিমধ্যেই তা নিগ্ধারণ করার চেষ্টা করেছে। এই কাজের জন্য এই বছরের কাজেট ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দেশের উৎপালি শক্তিকে নাড়ানাের জন্য উন্নয়ন খাত্রে যে ২৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, এই ১৫ কোটি টাকা তার অতিরিক্ত বরাদ্দ। ঢাকায় অবস্থিত উচ্চ ক্ষমতাবিশিষ্ট একটি বাের্ডের অধীনে সৃষ্টি তহবিল পুণর্গঠনে জন্য বরাদ্দকৃত এই অর্থ দেওয়া হয়েছে। আত মেরামত পুণর্গঠন ও পুনর্বাসনের সকল প্রস্তাব অনুমােদনের সম্পূর্ণ ক্ষমতা এই বাের্ডের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। | ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কারখানাগুলিতে সত্বর স্বাভাবিক কাজ আবার শুরু করার জন্যে কারখানাগুলিকে সর্বপ্রকার সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। কাঁচামাল আমদানীর জন্য আমদানী নীতিতে সুবিধা দান, ব্যবসা ও বাণিজ্যের সম্প্রসারণের জন্য স্টেট ব্যাঙ্ক ও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কসমূহ কর্তৃক ঋণ দানের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যুক্তভাবে সাহায্যের প্রয়ােজনে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক এক জোট হয়ে কনসর্টিয়াম গঠন ইত্যাদি উল্লেখযােগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পিকিক ও আইভিপিকে দেয় পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন কারখানাগুলির ঋণ পরিশােধের সময় বাড়িয়ে দেওয়া ছাড়াও নগদ পুঁজিদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গােলযােগকালে যে সকল ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের বীমার টাকা দিয়ে দেবার নাতিও গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে ব্যক্তিগত ব্যবসায়ে রত লােকদের পক্ষে তাদের ব্যবসাকে পুনর্গঠনের সুযােগ নেওয়া হবে।
________________________________________
প্রদেশের অর্থনীতির প্রধান অবলম্বন কৃষি ক্ষেত্রে ঋণ দানের বিশেষ ব্যবস্থা করবার জন্য এ-ডি-বি-পিকে বিশেষ খাতে অর্থ ব্রাব্দ করা হয়েছে। এই বসরের পাটনীতিতে পাটের সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণকালে মণ প্রতি ২ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে পাট ভাষীদের আয়ের পথ সুগম হবে। পাটের এই বর্ধিত মূল্যকে টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে কাঁচা পাট রফতানীর ক্ষেত্রে বােনাসের সুযােগও শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত জুট মার্কেটিং করপােরেশন এবং জুট ট্রেডিং করপােরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তারা যেন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সর্বনিম্ন মূল্যে বহুল পরিমাণ পাট ক্রয় করে। এ কারা যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে তার জন্য এই সংস্থাগুলােকে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এই দুই সংস্থার কাজে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে সরকার আরও একটি সংস্থার সৃষ্টি করার সিদ্ধান্ত করেছেন। তার নাম হবে জুট প্রাইস ষ্টেবিলাইজেশন করপােৱেশন। এই প্রতিষ্ঠানের কাজ হবে যে, প্রদেশের সমস্ত বিকল্প পাটের বাজার থেকে পাট ক্রয় করা।
অবশ্য আমি একথা বলতে পারি না যে, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ সন্তোষজনক। এখনও এমন অনেক অর্থনৈতিক ক্ষেত্র রয়ে গেছে যা সরকারের পক্ষে উদ্ধেগের কারণ। যাহােক একথা অনস্বীকার্য যে, আমরা মােড় ফিরাতে সক্ষম হয়েছি এবং অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পথে দ্রুত অগ্রসর হজি। আমি আমার দেশবাসীগণের নিকট আবেদন জানাচ্ছি যে, তারা যেন আমাদের অর্থনৈতিক পুণর্গঠনের ক্ষেত্রে সরকারকে সর্বতােভাবে সাহায্য করেন। এই বিরাট কাজে যে শুধু প্রদেশের জনগণ ও প্রদেশের সরকারের কর্মতৎপর হতে হবে ভাই নয়, বরং এতে সময় জাতির সাপল ও সহায়তার প্রয়োজন হবে। আমি এ সম্বন্ধে একেবারে নিশ্চিত যে, সামলিত শক্তিশালী ও আত্মপ্রত্যয়ী জাতি হিসেবে পাকিস্তান যাতে উন্নতির পথে অগ্রসর হতে পারে তার জন্য এই মহান দেশের আপামর জনসাধারণ একই সঙ্গে হাত মিলিয়ে পূর্ব পাকিস্তানকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। | এবার আমি দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে দু একটি কথা বলব। আমাদের চারিদিকে এখন যা ঘটছে তাতে জনসাধারণের মনে দারুণ উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। আমি জানি যে, এই অস্বাভাবিক অবঞ্জার দরুন সমাজের প্রায় সকল স্তরের লােক কথাই হয়েছেন। তাদের এই দুঃখদুর্দশায় আমি গভীরভাবে দু:খিত। তাদেরকে আমি আমার আন্তরিক সহানুভূতি জানাচ্ছি। কাজেই সামাজিক পুনর্বাসন অপেক্ষা মানসিক পুনর্বাসন আজ অনেক বেশী জরুরী। কার্য-কারণ অনুসন্ধান করলে আমরা দেখতে পাব যে প্রত্যেকের মনেই ভয় ও ভীতির সঞ্চার হয়েছে এই অবস্থার অবসান এবং জনগণের মনে সম্পূর্ণ আস্থা ও শান্তি ফিরিয়ে আনা আমার সরকারের প্রধান দায়িত্ব। এই গুরুদায়িত্ব পালনে আপনাদের আন্তরিক সহযােগিতা একান্ত কাম্য।
আমার বিশ্বাস যে এই ব্যাপারে বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সাম্প্রতিক গােলযােগে শাসন ব্যবস্থারও প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। আমি আশা করি সেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারী কর্মচারীরা সততা, নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে তাদের কর্তব্য পালন করে যাবেন। আমি তাদের এই আশ্বাস দিতে চাই যে তারা যাতে সুচারুরূপে তাদের কর্তব্য সম্পাদন করতে পারেন সেজন্য সকল ব্যবস্থা এহণ করা হবে।