হাসনাবাদ গণহত্যা (নবাবগঞ্জ, ঢাকা)
হাসনাবাদ গণহত্যা (নবাবগঞ্জ, ঢাকা) ৩০শে সেপ্টেম্বর সংঘটিত হয়। হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় ১২ জন গ্রামবাসী শহীদ হন।
ঘটনার দিন নবাবগঞ্জ উপজেলার পার্শ্ববর্তী দোহার থানা হেডকোয়ার্টার্স থেকে পাকিস্তানি সৈন্যরা মার্চ করে কয়েকটি এলাকা ও গ্রাম অতিক্রম করে দোহার থানার পশ্চিম-উত্তর জনপদ ও ইছামতি বিধৌত ফারী ইক্রাশী ও কাঁচারীঘাট বাজারে অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ করে ইক্রাশী ও কাঁচারীঘাট হিন্দু ও খ্রিস্টান পল্লীতে হামলা চালায়। তারা এলাকার রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সহযোগিতায় উত্তর দিকে আরো কিছুদূর অগ্রসর হয়ে নবাবগঞ্জ থানার হাসনাবাদ হিন্দু পালপাড়া ও খ্রিস্টান পল্লীতে হানা দেয়। পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের দোসরদের সহযোগিতায় উল্লিখিত দুই সম্প্রদায়ের সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরের আসবাবপত্রে গানপাউডার দিয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। তারা এ সময় কয়েকজন নারী ও শিশুর ওপর নির্যাতন চালায়। আক্রমণের এক পর্যায়ে তারা হাসনাবাদ গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের ১২ জনকে কাঁচারীঘাটে নদীবক্ষে নামিয়ে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। এ অবস্থায় পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন প্রাণভয়ে পালিয়ে জীবন রক্ষা করে। এ গণহত্যায় শহীদদের সমাহিত করার মতো কোনো মানুষজন আশেপাশে ছিল না। ফলে তাদের লাশগুলো পানিতেই নিমজ্জিত থাকে এবং ২-১ দিন পর নদী প্রবাহে ভেসে যায়। হাসনাবাদ গণহত্যায় শহীদ ১১ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- হাসনাবাদ গ্রামের ব্রজেন পাল (পিতা বৃন্দাবন পাল), গৌরাঙ্গ পাল (পিতা কালিচরণ পাল), ধীরেন পাল (পিতা সাধু পাল), শংকর পাল (পিতা নরেশ পাল), মাধব সূত্রধর (পিতা যতীন্দ্র সূত্রধর), দিলীপ সূত্রধর (পিতা ত্রৈলক্ষ্য সূত্রধর), মনোরঞ্জন পাল, পুলহাত পাল (পিতা সতীশ পাল), সুদর্শন পাল, গোবিন্দ সাহা (নতুন বান্দুরা) ও অনীল গমেজ (পিতা পিটার গমেজ, মোলাশীকান্দা)। [মো. আনোয়ার হোসেন ও আব্দুল মালেক সিকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড