You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর উত্তম হাবিবুর রহমান - সংগ্রামের নোটবুক

বীর উত্তম হাবিবুর রহমান

হাবিবুর রহমান, বীর উত্তম (জন্ম ১৯৩০) বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৩০ সালের ৩রা জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার মৈন্দ পূর্বপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আজিজুর রহমান এবং মাতার নাম আমেনা খাতুন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল অন্নদা হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় ১৯৫০ সালে ইপিআর-এ যোগদান করেন। তিনি চার কন্যা ও তিন পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মেহেরুন নেসা।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে হাবিবুর রহমান নায়েক সুবেদার পদে দিনাজপুর ইপিআর সেক্টর হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত ছিলেন। ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক গণহত্যা ও নির্যাতন শুরু করলে তিনি বিদ্রোহ করে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেন। অসাধারণ বীরত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে তিনি বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য প্রতিরোধযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে তাঁকে তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। জুন মাসে তাঁর ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেজর শাফায়াত জামিল, বীর উত্তমএর সঙ্গে জলঢাকায় যান এবং নতুন রিক্রুট মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ করেন। জুলাই মাসের প্রথম দিকে ব্রিগেড আকারে ‘জেড’ ফোর্স গঠন করা হলে তিনি তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের হয়ে ‘জেড’ ফোর্সে যোগদান করেন।
হাবিবুর রহমান কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, জামালপুর জেলা সদর ও সিলেট জেলার গোয়াইনঘাটে পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ২৬শে নভেম্বর সংঘটিত সিলেটের-গোয়াইনঘাট যুদ্ধ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ-যুদ্ধে তিনি গুরুতর আহত হন। শত্রুসেনারা তাঁকে মৃত ভেবে একটি বাংকারে ফেলে চলে গেলে পার্শ্ববর্তী গ্রামের মসজিদের ইমাম তাঁকে উদ্ধার করে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে আসেন। এ-যুদ্ধে উভয় পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার নায়েক সুবেদার হাবিবুর রহমানকে ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত করে। [সাজাহান মিয়া]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড