হাজিপুর গণহত্যা (কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
হাজিপুর গণহত্যা (কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংঘটিত হয় ১৪ই মে। এতে ১৪ জন নিরীহ গ্রামবাসী হত্যার শিকার হয়। ঘটনার দিন পাকবাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামে হামলা চালায়। তাদর সঙ্গে কয়েকজন বিহারি ছিল। হানাদাররা হাজিপুরসহ আশপাশের এলাকার বহু লোককে ধরে নিয়ে যায়। হাজিপুর স্কুলের কাছে একত্রিত করে তারা মুসলমান কি-না তা প্রমাণের জন্য পরনের কাপড় খুলে পরীক্ষা করে। পরীক্ষার পর মুসলমাদের ছেড়ে দেয়া হয় এবং রাউথহাট গ্রামের বাসিন্দা ঋষি সম্প্রদায়ের ১৪ জনকে আলাদা করে ঘটনাস্থলেই হত্যা করা হয়। এখানে যারা হত্যার শিকার হন, তারা হলেন— যোগেশ চন্দ্র দাস (৫০) (পিতা তিতামনি দাস), রজক ঋষি (৪৫) (পিতা রুহিদাস ঋষি), বিপিন ঋষি (৪৫) (পিতা তিতামনি ঋষি), রমানাথ ঋষি (৫৫) (পিতা শ্রীদাস ঋষি), শুক্রদাস ঋষি (৪৫) (পিতা অবঙ্গদাস ঋষি), মন্টু ঋষি (২৫) (পিতা দেবেন্দ্র ঋষি), রাশমন ঋষি (২০) (পিতা দেবেন্দ্র ঋষি), মঙ্গল ঋষি (৪০) (পিতা রবি ঋষি), চক্র ঋষি (৪৫) (পিতা আবু ঋষি), হরিলাল ঋষি (৩৫) (পিতা বিধুরাম ঋষি), ইন্দ্ৰমোহন ঋষি (৪০) (পিতা গঙ্গাধর ঋষি), যতীন্দ্ৰ ঋষি (৪২) (পিতা বজ্ৰমোহন ঋষি), রাজকিশোর ঋষি (৪০) (পিতা চন্দ্ৰমোহন ঋষি) এবং রবি ঋষি (৬০) (পিতা চূড়ামণি ঋষি)।
হাজিপুর স্কুলের পাশে হত্যা করে তাদের লাশ ফেলে রেখে যায়। পাকিস্তানি বাহিনী চলে যাবার পর এলাকাবাসী রাউথহাট গ্রামের এক পাশে নিহতদের লাশ সমাহিত করে। পরবর্তীতে পাকিস্তানি বাহিনীর নিক্ষিপ্ত কামানের গোলার আঘাতে হাজিপুর গ্রামের ফুল মিয়ার পুত্র সুরুজ মিয়া (২৮), তার স্ত্রী সাহেরা খাতুন (২০) ও আবুল হোসেনের পুত্র শাহ আলম (২০) নিহত হয়। [জয়দুল হোসেন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড