You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক সৈয়দ গোলাম মোস্তফা - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক সৈয়দ গোলাম মোস্তফা

সৈয়দ গোলাম মোস্তফা, বীর প্রতীক (১৯৪৪-১৯৭৭) বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কাদেরিয়া বাহিনীর অন্যতম কোম্পানি কমান্ডার। তিনি ১৯৪৪ সালের ১লা জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার পাইকরা ইউনিয়নের গোলড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ ইউনুছ আলী এবং মাতার নাম সৈয়দা সেতারা বানু। সৈয়দ গোলাম মোস্তফা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন সৈনিক ছিলেন। তিনি ১৯৬৫ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে তিনি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ঢাকা সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ তাঁকে মুক্তিযুদ্ধে যোগদানে অনুপ্রাণিত করে। তিনি কাদেরিয়া বাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যোগ দেন এবং একটি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন স্থানে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এর মধ্যে বল্লার যুদ্ধ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। ১২ই জুন কালিহাতীর বল্লা বাজারের নিকট নদীর তীরে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এ-যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন কাদের সিদ্দিকী স্বয়ং। তাঁর সঙ্গে থেকে সৈয়দ গোলাম মোস্তফা এ যুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রাখেন। যুদ্ধে পাকসেনারা অনেক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাদের অনেক সেনাসদস্য হতাহত হয়। এক বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে তারা কালিহাতীর দিকে পালিয়ে যায়। মহান মুক্তিযুদ্ধে সৈয়দ গোলাম মোস্তফার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। স্বাধীনতার পর সৈয়দ গোলাম মোস্তফা রক্ষী বাহিনীতে যোগ দেন। এরপর সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি চাকরি ছেড়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। ১৯৭৭ সালে ৩১শে ডিসেম্বর একদল দুষ্কৃতিকারী বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে তাঁকে হত্যা করে। তিনি ৪ কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম সৈয়দা সুফিয়া বেগম। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড