You dont have javascript enabled! Please enable it! বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শ্রীলঙ্কার সাবেক মন্ত্রী সেনারাত গুণাবর্ধন - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শ্রীলঙ্কার সাবেক মন্ত্রী সেনারাত গুণাবর্ধন

সেনারাত গুণাবর্ধন, কেবিই (১৮৯৯-১৯৮১) শ্রীলঙ্কার সাবেক মন্ত্রী, কূটনীতিক ও মানবাধিকার কর্মী। তাঁর প্রকৃত নাম রত্নাকীর্তি সেনারাত সেরাসিংঘে গুণাবর্ধন। তিনি ১৮৯৯ সালের ৩রা নভেম্বর শ্রীলঙ্কায় জন্মগ্রহণ করেন। সিলন ন্যাশনাল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার সময় থেকে তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন এবং দলের যুগ্ম-সম্পাদক (১৯২৬-৩২) ও পরবর্তীকালে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্টেট কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন (১৯৩৬) এবং স্থানীয় সরকারের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন (নভেম্বর ১৯৩৬)। তিনি শ্রীলঙ্কার সাধারণ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ডি এস সেনানায়েক-এর মন্ত্রিসভার দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। ঐ সময়ে তিনি চিফ গভর্নমেন্ট হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ইতালি (১৯৪৯-৫৪) ও যুক্তরাষ্ট্রে (১৯৫৪) শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। শ্রীলঙ্কা জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করলে তিনি প্রথম স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন (১৯৫৬-৫৮)। পরবর্তীকালে তিনি পুনরায় স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন (১৯৬৩-৬৫)। তিনি ওয়াশিংটন ডিসি-তে জাতিসংঘের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সেখানে বুদ্ধ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন অল-সিলন বুদ্ধ কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সভাপতি। চাকরিজীবনে তাঁর দক্ষতার কৃতিত্বস্বরূপ তিনি -এ ভূষিত হন। ১৯৮১ সালের ১০ই আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে সেনারাত গুণাবর্ধন শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন ও ধর্মীয় সংস্থার প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত সিলন কমিটি ফর সলিডারিটি উইথ বাংলাদেশ সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। তাঁর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় সংগঠনটি বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে সহায়তা করে। ১৯৭১ সালের ১৭ই আগস্ট সংগঠনটি বঙ্গবন্ধুর প্রহসনমূলক বিচার বন্ধের দাবি জানিয়ে পাকিস্তান সরকারের কাছে প্রতিবাদলিপি প্রদান করে। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৫ই ডিসেম্বর ২০১২ সেনারাত গুণাবর্ধন-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড