You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালি সুনীল দাশগুপ্ত - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালি সুনীল দাশগুপ্ত

সুনীল দাশগুপ্ত (১৯২৮-২০১৫) প্রবাসী বাঙালি, জার্মানিতে স্থায়ী বসবাস, সমাজসেবী, প্রবাসে থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা পালন ও ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা লাভকারী সুনীল দাশগুপ্ত (রামুদা বা সুনীলদা নামে জনপ্রিয়) ১৯২৮ সালের ২৭শে ডিসেম্বর অবিভক্ত ভারতের পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঝালকাঠি জেলার বেলদাখান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৯ সালে তিনি পরিবারের সঙ্গে কলকাতায় গমন করেন। তিনি মাত্র ১৩ বছর বয়সে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআই) একজন সমর্থক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি সিপিআই-তে যোগদান করেন এবং সংগঠক ও ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৬১ সালের প্রথম দিকে তিনি জার্মানির বার্লিন শহরে গমন করেন। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তিনি বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী হিসেবে সেখানে কাজ শুরু করেন। তিনি জার্মানির সমাজতান্ত্রিক ঐক্য পার্টির (এসইডি) সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন। জার্মানিতে অবস্থান করেও তিনি সিপিআই-এর বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখেন। ১৯৬৯ সালে তিনি বৈদ্যুতিক পণ্যের একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালের ৮ই জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে পূর্ব জার্মানির বার্লিনে বসবাসকারী সুনীল দাশগুপ্ত ও তাঁর স্ত্রী বারবারা দাশগুপ্ত মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের শরণার্থীদের সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করে কলকাতায় প্রেরণ করেন। ৭১-এর জুন মাসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য অর্থসংগ্রহ করেন। বাংলাদেশের পক্ষে পূর্ব জার্মানির ক্ষমতাসীন এসইপি-র সমর্থন আদায়ে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি ও তাঁর স্ত্রী জার্মানিতে গমনকারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০১২ সালের ২৭শে মার্চ সুনীল দাশগুপ্ত-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড