সুতারচাপর গণহত্যা (গফরগাঁও, ময়মনসিংহ)
সুতারচাপর গণহত্যা (গফরগাঁও, ময়মনসিংহ) এপ্রিল মাসের শেষ দিকে সংঘটিত হয়। হানাদার বাহিনীর এ নৃশংস গণহত্যায় ২৭ জন মানুষ শহীদ হন।
এপ্রিল মাসের শেষদিকে রাজাকারদের দেখানো পথে একদিন বাদ আসর দুটি লঞ্চযোগে পাকিস্তানি বাহিনী সুতারচাপর বাজারের ঘাটে নামে। একদল হানাদার সেখান থেকে তললী গ্রামের দিকে যাত্রা করে। অপর গ্রুপটি লঞ্চযোগে বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা বাজারের কাছে এসে ভেড়ে। তারা একটি কিশোরকে পানি এনে দিতে বলে। কিশোরটি প্রাণভয়ে পালিয়ে যায়। এতে তারা প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়। এরপর জনৈক আ. হালিম ও আব্দুর রহমান তাদের পানি এনে দেয়। পানি পান করেই তারা এ দুজনকে হত্যা করে। তললীর দিকে যাত্রাপথে হানাদার বাহিনী যাকে পায় তাকেই হত্যা করে। বেশ কয়েকজনকে ধরে লঞ্চের ছাদে বেঁধে রাখে, তাঁদের ব্রাশফায়ারে হত্যা করে। লঞ্চের ছাদে বন্দি নাজিম উদ্দিন ও ইমাম উদ্দিন বহু চেষ্টায় নিজেদের হাতের বাঁধন খুলে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হন। আ. আউয়াল গুলিবিদ্ধ হয়েও ঘটনাক্রমে বেঁচে যান। সুতারচাপর গ্রামের আখতার হোসাইন মণ্ডল এ গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী। এ গণহত্যায় সুতারচাপর গ্রামের ৯ জন সহ মোট ২৭ জন মানুষ শহীদ হন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় জানা যায়। তারা হলেন— সুতারচাপর গ্রামের আব্দুল হালিম, আব্দুর রহমান, আব্দুল ওয়াহেদ, আব্দুল গফুর, আব্দুল হামিদ, মো. খোকা, তললী গ্রামের আবউদল মুনসুর, শেখ তৈয়বুদ্দিন, আব্দুল হাই খান, আবুল হোসেন, উছমান ও সুলতান আহমেদ। [নিপা জাহান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড