বীর প্রতীক সিরাজুল হক
সিরাজুল হক, বীর প্রতীক (১৯৪৫-১৯৭১) নায়েক ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৫ সালে চট্টগ্রামের মিরেশ্বরাই উপজেলার মধ্যম ওয়াহিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতার নাম ছামছুল হক ভূঁইয়া এবং এবং মাতার নাম ঝিরাধন। ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ৮ম বেঙ্গলে কর্মরত ছিলেন। ৭০-এর নির্বাচনের রায় অনুযায়ী বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিবর্তে ঐ রায় বাঞ্চাল করতে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার ষড়যন্ত্রের আশ্রয় গ্রহণ, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে আসন্ন মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণে বাঙালিদের প্রতি আহ্বান, মার্চ মাসব্যাপী পূর্ব বাংলায় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন- ইত্যাদি নায়েক সিরাজুল হককে মুক্তিযুদ্ধে যোগদানে উদ্বুদ্ধ করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ ত্যাগ করে ভারতের হরিনা ক্যাম্পে গিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১নং সেক্টরে ক্যাপ্টেন রফিকের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম এলাকায় বিভিন্ন প্রতিরোধযুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। জুন মাসে ক্যাপ্টেন আমিন আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে মেজর জিয়ার নেতৃত্বাধীন ‘জেড’ ফোর্সে যোগ দিয়ে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেন। সেগুলোর মধ্যে ৪ঠা আগস্ট মাসে সংঘটিত জামালপুরের ঝিনাইঘাতির নকশী বিওপি-র যুদ্ধ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এখানে ছিল পাকহানাদারদের একটি শক্ত প্রতিরক্ষাব্যূহ। ক্যাপ্টেন আমিন আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে এখানকার যুদ্ধে সিরাজুল হক শহীদ হন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা ও জীবন উৎসর্গ করায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নায়েক সিরাজুল হককে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড