বীর প্রতীক সাহেব মিঞা
সাহেব মিঞা, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৭) সুবেদার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার লেশিয়ারায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আলতাফ আলী ও মাতার নাম জজের মারনেছা।
তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তাঁর অবস্থান ছিল যশোর ক্যান্টনমেন্টে। ৩০শে মার্চ পাকিস্তানের বালুচ বাহিনী যশোর সেনানিবাসে বাঙালি সেনাদের ওপর আকস্মিক আক্রমণ চালালে বহু বাঙালি সেনা শহীদ হন। অনেকে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। সুবেদার সাহেব মিঞা তাঁদেরই একজন। এক পর্যায়ে তিনি সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের আগরতলায় পৌঁছেন। সেখানে প্রথমে তিনি মুক্তিসেনাদের প্রশিক্ষণদানে নিয়োজিত হন। এরপর ২নং সেক্টরে মেজর খালেদ মোশাররফ, বীর উত্তমএর নেতৃত্বে তিনি সম্মুখ ও গেরিলা যুদ্ধে যোগ দেন। তাঁর সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন লে. দিদারুল আলম। ২নং সেক্টরের কিছু সেনা এবং ইপিআর সদস্যের একটি কোম্পানি কুমিল্লার গোমতীর উত্তর বাঁধ থেকে কোম্পানীগঞ্জ পর্যন্ত অপারেশন চালায়। মতিনগরের এলাকায় বিভিন্ন আক্রমণ, এম্বুশ ও গেরিলা অপারেশনে সুবেদার সাহেব মিঞা সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তিনি নরসিংদী এলাকার পাঁচরুখীতে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সুবেদার সাহেব মিঞার বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। তাঁর স্ত্রীর নাম আলেয়া বেগম। এ দম্পতি ৫ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক-জননী। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড