সাকাশ্বর-বেগমপুর যুদ্ধ (কালিয়াকৈর, গাজীপুর)
সাকাশ্বর-বেগমপুর যুদ্ধ (কালিয়াকৈর, গাজীপুর) সংঘটিত হয় ১৪ই ডিসেম্বর। এতে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। অপরদিকে ৪ জন পাকসেনা আহত অবস্থায় বন্দি হয় এবং বাকিরা মিত্রবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে।
১৩ই ডিসেম্বর কালিয়াকৈর বাজারে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধারা লোকমুখে সংবাদ পান যে, ১৪ জন পাকসেনা বাজার থেকে ৮ কিমি উত্তরে গোবিন্দপুর গ্রামে অবস্থান করছে। কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল হাকিমের নির্দেশ পেয়ে দেওয়ান মো. সিদ্দিক হোসেন ও হায়দর আলী ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ঐদিন রাতেই গোবিন্দপুর রওনা হন। ভোর ৬টায় গোবিন্দপুর পৌঁছে মুক্তিযোদ্ধারা জানতে পারেন যে, পাকসেনাররা গোবিন্দপুর থেকে পূর্বদিকে বোয়ালীর দিকে পালিয়ে গেছে। মুক্তিসেনার দল তাদের পিছু নেয় এবং বোয়ালী পৌছায়। ইতোমধ্যে বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থানরত বিএলএফ বাহিনীর সেকশন কমান্ডার মো. হাবিবুর রহমান ২০-২৫ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ পাকসেনাদের দলটিকে আক্রমণ করেন। পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের ধাওয়া খেয়ে তুরাগ নদীর তীর ঘেঁষে ভাওয়াল, মির্জাপুর ও দুর্গাপুর হয়ে দক্ষিণে কড্ডা অভিমুখে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা দুটি দলে বিভক্ত হয়ে একদল নদীর পূর্বদিকে, অন্যদল (সিদ্দিকুর রহমান) নদীর পশ্চিম পাশ দিয়ে পাকসেনাদের পিছু নেয়। পাকসেনারা সাকাশ্বর ও বেগমপুরের মাঝামাঝি স্থানে পৌঁছলে উভয় তীর থেকে তাদের ওপর গুলি করা হয়। প্রায় ২ ঘণ্টা উভয় পক্ষে গোলাগুলি চলে। পাকসেনারা দ্রুত দক্ষিণ দিকে সরে যেতে থাকে। দক্ষিণে বাঘিয়া গ্রামে
মিত্রবাহিনীর সৈন্যরা কড্ডায় অবস্থানকারী পাকসেনাদের আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পলায়নপর পাকসেনারা মিত্রবাহিনীর নিকট সারেন্ডার করে প্রাণে বেঁচে যায়। এ-যুদ্ধে মো. আব্দুল আজিজ ও নুমেজ উদ্দিন নামে ২ জন বীর যোদ্ধা শাহাদত বরণ করেন এবং পাকবাহিনীর ৪ জন সদস্যকে আহত অবস্থায় বন্দি করা হয়। [মো. মোয়াজ্জেম হোসেন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড