সমেশপুর যুদ্ধ (বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ)
সমেশপুর যুদ্ধ (বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ) সংঘটিত হয় ৫ই ডিসেম্বর। সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের সমেশপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের এ-যুদ্ধে কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দলের কমান্ডার হাবিবুর রহমান এখানে শহীদ হন।
সমেশপুর যুদ্ধে এম শামিম পান্না ও হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের দুটি দল অংশ নেয়। পাকবাহিনীর একটি দল সমেশপুর বাজারে আসার খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পূর্ব থেকে সমেশপুর ওয়াপদা বাঁধের পূর্ব দিকে কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার হাবিবুর রহমান (সিংগুলী, কালিহাতী, টাঙ্গাইল) ও তাঁর সহযোদ্ধারা অবস্থান নেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ ও কামারখন্দ থেকে ২ প্লাটুন পাকসেনা এখানে এলে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। তাঁরা প্রথম পাকসেনাদের ওপর গুলিবর্ষণ করেন। গুলিতে কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। বাকিরা ট্রাক থেকে নেমে পজিশন নিয়ে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। গুলি ছুড়তে-ছুড়তে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ করলে দুপক্ষের মধ্যে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে যুদ্ধ চলে। এক পর্যায়ে কমান্ডার হাবিবুর রহমান ওয়াপদা বাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে পাকবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকেন। ঠিক সে মুহূর্তে পাকবাহিনীর ছোড়া গুলি তাঁর মাথায় বিদ্ধ হলে তিনি শহীদ হন। এ-সময় শাহজাদপুর থেকে আরো পাকসেনা আসার খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটেন। সমেশপুরে আরো একাধিকবার মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের যুদ্ধ হয়। কমান্ডার হাবিবুর রহমান শহীদ হওয়ার স্থানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। [মাহফুজা হিলালী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ১০ম খণ্ড