শেরপুর যুদ্ধ (শেরপুর সদর)
শেরপুর যুদ্ধ (শেরপুর সদর) সংঘটিত হয় ৪ঠা ডিসেম্বর। এতে ১৬০ জন পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে।
৭ই ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হওয়ার পূর্বে শেরপুর সদর থানা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি যুদ্ধ হয়। বর্তমানে জামালপুর জেলার অন্তর্গত বকশীগঞ্জ উপজেলাধীন ধানুয়া কামালপুর ছিল তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার শেরপুর থানার অন্তর্গত। এ ধানুয়া কামালপুরে ছিল দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। নভেম্বরের শেষভাগে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী-র যৌথ আক্রমণে পাকিস্তানি হানাদাররা দিশেহারা হয়ে পড়ে। মুক্তিবাহিনী এবং মিত্রবাহিনীর বেষ্টনীতে ১১ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর ৪ঠা ডিসেম্বর দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর ১৬০ জন সেনা আত্মসমর্পণ করে। ৩রা ডিসেম্বর শ্রীবদী, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী সীমান্ত ঘাঁটিতে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ চলছিল। কামালপুর ক্যাম্পের পতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে পাকিস্তানি হানাদাররা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। তারা তাদের ঘাঁটিগুলোতে রাজাকারআলবদরদের রেখে দ্রুত জামালপুরের দিকে পশ্চাদপসরণ করে। ফলে ৪ঠা ডিসেম্বর ঝিনাইগাতী এবং ৬ই ডিসেম্বর শ্রীবদী মুক্ত হয়।
৭ই ডিসেম্বর বিনা বাধায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ীর বেশে শেরপুরে প্রবেশ করেন। এদিন শহরের শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্কে হেলিকপ্টার যোগে অবতরণ করেন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জগজিৎ সিং অরোরা। এখানে দাঁড়িয়ে তিনি বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা, আকাশবাণী সহ বিভিন্ন বেতারের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ৭ দিনের মধ্যে ঢাকা মুক্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। [রবিন পারভেজ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড