You dont have javascript enabled! Please enable it! শাকপুরা গণহত্যা (বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম) - সংগ্রামের নোটবুক

শাকপুরা গণহত্যা (বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম)

শাকপুরা গণহত্যা (বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় এপ্রিল মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। এতে ৫ জন সাধারণ মানুষ শহীদ এবং ২৫ জন গুরুতর আহত হন। একই দিন পার্শ্ববর্তী দুটি স্থানে আরো ২৯ জনকে হত্যা করা হয়।
এপ্রিল মাসের ১৬ তারিখ পাকিস্তানি বাহিনীর বিমান আক্রমণে পটিয়ার পতন ঘটলে পরদিন ১৭ই এপ্রিল বেশকিছু পাকিস্তানি সেনা চট্টগ্রাম শহরের দিক থেকে আরাকান সড়ক ধরে বোয়ালখালী ও পটিয়ার ওপর দিয়ে চন্দনাইশ পর্যন্ত পৌঁছে রেকি করে আবার ফিরে যায়। এর কয়েকদিনের মধ্যে কতিপয় ইপিআর সদস্য ও কমান্ডার মৃণাল কান্তি বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন একদল মুক্তিযোদ্ধা চট্টগ্রাম শহরের দিক থেকে পাকিস্তানি সৈন্যদের পটিয়ায় প্রবেশ বাধাগ্রস্ত করার জন্য পটিয়া ও বোয়ালখালীর সীমানা হিসেবে চিহ্নিত কাঠের তৈরি মিলিটারি পুলের কয়েকটি পাটাতন খুলে ফেলেন। তারপর পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে পুলটির সিংহভাগ পুড়িয়ে দেন। এ ঘটনার পর এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে পাকিস্তানি বাহিনী চট্টগ্রাম শহরের দিক থেকে পটিয়ায় প্রবেশের জন্য মিলিটারি পুলে এসে বাধাগ্রস্ত হলে বোয়ালখালী উপজেলার মধ্যম শাকপুরায় রসহরি মহাজনদের পাকা বাড়িতে স্থানীয় দোসরদের সহযোগিতায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া সেখান থেকে প্রায় ৩০ জন লোককে ধরে মিলিটারি পুলে এনে পুলটি মেরামত করায়। অতঃপর তারা খালের কোমর পানিতে নামিয়ে তাদের গুলি করলে ৫ জন নিহত হয় এবং অন্যরা গুরুতর আহত হয়। এখান থেকে পূর্বদিকে বোয়ালখালী থানার নিকটবর্তী এলাকায় গিয়ে পাকিস্তানি বাহিনী আরো ৪ জনকে হত্যা করে। তাদের একজনের নাম ফয়েজ আহমদ। এরপর পার্শ্ববর্তী ইটভাটায় পৌঁছে পাকিস্তানি বাহিনী সেখানে কর্মরত বহিরাগত ২৫ জন শ্রমিককে এলোপাতাড়ি গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে। শাকপুরা গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে পশ্চিম শাকপুরা বধ্যভূমিতে নামসহ একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। [শামসুল আরেফীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড