You dont have javascript enabled! Please enable it! রূপদিয়া বাজার নদীতীর বধ্যভূমি (যশোর সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

রূপদিয়া বাজার নদীতীর বধ্যভূমি (যশোর সদর)

রূপদিয়া বাজার নদীতীর বধ্যভূমি (যশোর সদর) যশোর সদর উপজেলায় অবস্থিত। যশোর সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে রূপদিয়া বাজার অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনীর দালাল বিহারি ও রাজাকাররা এই বাজার-সংলগ্ন নদীতীরে অসংখ্য সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে।
ব্রিটিশ আমলে রূপদিয়া বাজারের সন্নিকটে ছিল একটি নীলকুঠি। মুক্তিযুদ্ধের সময় নীলকুঠির ছিল ভগ্নদশা। এই নীলকুঠি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ডাক্তার রোস্তম আলীর বাড়ি দখল করে রাজাকাররা তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে। রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে এ ক্যাম্পে নির্যাতন করত। এরপর তাদের নদীতীরে নিয়ে কখনো জবাই করে, কখনো বা গুলি করে হত্যা করা হতো। দেশত্যাগী শরণার্থীদেরও এ ক্যাম্পে ধরে এনে অত্যাচার করা হতো এবং পরে নদীতীরে নিয়ে হত্যা করা হতো। প্রায় প্রতিরাতেই এ ঘটনা ঘটত। হত্যার পর লাশগুলো ফেলে দেয়া হতো নীলকুঠির চৌবাচ্চাগুলোতে।
মুক্তিযুদ্ধের নয়মাসে এখানে কত লোককে হত্যা করা হয়েছে, তার সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব নয়। যাদের নাম জানা গেছে, তারা হলেন মুক্তিযোদ্ধা মাফুজুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা, ওজিয়ার রহমান, গফুর আলি মৃধা, কচুয়ার শানাল, বনগার গহর আলি, ইস্পাহানি কোম্পানির নুরুল হুদা এবং গমতিতলার আবদুল জলিল।
এ বধ্যভূমিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত ছিল, তারা হলো নরেন্দ্রপুর গ্রামের আফছার জল্লাদ, কচুয়া গ্রামের রাজাকার কমান্ডার গোলাম হোসেন, চাউলিয়া গ্রামের মোজাহার আলী, লুৎফর আলী ও ওয়াজেদ আলী। এরা সবাই রাজাকার বাহিনীর কুখ্যাত সদস্য ছিল। [মহসিন হোসাইন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড