বীর প্রতীক রাসিব আলী
রাসিব আলী, বীর প্রতীক (১৯২৭-১৯৯৬) নায়েব সুবেদার, পরবর্তীতে সুবেদার মেজর, একজন নির্ভীক সৈনিক ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। ১৯২৭ সালে সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বাদেদেউলি গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা হোসেন আলী এবং মাতা খুরশেদা বিবি। ৭১ সালে রাসিব আলী নায়েক সুবেদার পদে ইপিআর বাহিনীতে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল ঢাকার গভর্নর হাউস। ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অন্যান্য স্থানের মতো গভর্নর হাউসে বাঙালি সৈনিকদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ কালে তিনি কৌশলে সেখান থেকে বেরিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি ৪নং সেক্টরের বড়পুন্ডি সাব-সেক্টরে যুদ্ধ করেন। তাঁর সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন আব্দুর রব। তিনি একটি কোম্পানির কমান্ডার নিযুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি সিলেট জেলার আটগ্রাম, রতনগঞ্জ, লাতু বিওপি, মনিপুর টিলা, শুভাছড়া, কানাইঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন। ৪ঠা ডিসেম্বর তিনি সিলেটের কানাইঘাটে পাকিস্তানি সৈন্যের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে আহত হন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পদোন্নতি পেয়ে তিনি সুবেদার মেজর হন।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসী অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ৩ কন্যা ও ২ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম ময়নু বেগম। ১৯৯৬ সালের ৩রা মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড