বীর প্রতীক রশিদ আলী
রশিদ আলী, বীর প্রতীক (১৯৩২-১৯৭১) শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৩২ সালে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার নুরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মুন্সি মনসুর এবং মাতার নাম করিবুননেসা। রশিদ আলী চণ্ডিপ্রসাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি এবং কাছিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। রশিদ আলী ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস)-এ যোগদানের মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ইপিআর-এর নায়েক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালে রশিদ আলী যশোর হেডকোয়ার্টার্সের ৪ নম্বর উইং- এ কর্মরত ছিলেন। ২৬শে মার্চ . তিনি পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন এবং ৮ নং সেক্টরের অধীনে প্রথমে বেনাপোল এবং পরে বানপুর সাব- সেক্টরে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ক্যাপ্টেন এ আর আজম চৌধুরী ও মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। রশিদ আলী একজন গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে যশোর, বেনাপোল, বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার ধূপাখালিসহ বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ ও সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদ আলী ১৯৭১ সালের ১৪ই আগস্ট কুষ্টিয়া জেলার জীবননগর থানার ধূপাখালি সীমান্তে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। ধূপাখালিতে অন্য কয়েকজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গ ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার শহীদ রশিদ আলীকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নম্বর ৪৭৪, খেতাবের সনদ নম্বর ২২৪)।
রশিদ আলী যখন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তখন তাঁর ৪ পুত্র সন্তান ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর ১ ছেলে নিখোঁজ হয়। পরবর্তীকালে অপর ১ ছেলে মারা যায়। বর্তমানে তাঁর স্ত্রী হাওয়ারুন নেছা ২ ছেলেকে নিয়ে সিলেট শহরের ইসলামপুর (জাহানপুর)-এ বসবাস করছেন। [জালাল আহমেদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৯ম খণ্ড