মুক্তিযুদ্ধে মোল্লাহাট উপজেলা (বাগেরহাট)
মোল্লাহাট উপজেলা (বাগেরহাট) ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর দিক নির্দেশনামূলক ভাষণের পর ৯ই মার্চ বাগেরহাট জেলা সদরে আওয়ামী লীগ, ন্যাপ (মোজাফফর) ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ১০ই মার্চ আওয়ামী লীগ নেতা ও জাতীয় পরিষদ সদস্য এম এ খায়ের এমএনএ-এর নেতৃত্বে স ম লায়েকুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে মোল্লাহাট থানা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এ পরিষদের অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন চৌধুরী জিয়াউল ইসলাম পান্না (গাড়ফা), শেখ আবুল হোসেন (দাড়িয়ালা), শেখ মুজিবুর রহমান মিলু (গাড়ফা), শিকদার বাদশা মিয়া (গাড়ফা), আব্দুস সবুর মিয়া (কুলিয়া), ক্বারী জোনাবালী মোল্লা (কুলিয়া), এল এ লস্কর, শেখ গিয়াসউদ্দিন আহম্মদ (কুলিয়া), বদিউজ্জামান (কুলিয়া), শেখ আবুল হাসেম (কাচনা), হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা (গাড়ফা), আব্দুল মতলেব মিয়া (কুলিয়া), শেখ আসহাব উদ্দিন (গাড়ফা), শেখ জিল্লুর রহিম (কাচনা), মোল্লা জহিরুল হক (দাড়িয়ালা), হরিপদ সমাদ্দার (মুনিজিলা), ডা. আব্দুল লতিফ (গাওলা), হেমায়েত ফকির (গাওলা), এস এম এ রশিদ (গাড়ফা), মোসলেম উদ্দিন এমএ, এলএলবি (কাচনা), বিজয়কৃষ্ণ রায় (গাওলা) প্রমুখ। এরপর মোল্লাহাট থানার বড়বাড়িয়া ও কুলিয়া ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়। কুলিয়া ইউনিয়নে সংগ্রাম কমিটির সদস্য ছিলেন মোল্লা ওহাব আলী, মোল্লা মোকলেছুর রহমান, মোল্লা বজলার রহমান, মো. আব্দুর রাজ্জাক, চাঁদ মিয়া, বাদশা মিয়া, সেকেন্দার, ইউনুছ, আব্দুল মাজেদ মিয়া, আইয়ুব আলী, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
২৩শে মার্চ পাকিস্তান দিবসে বঙ্গবন্ধু সারাদেশে প্রতিরোধ দিবস পালনের ডাক দেন। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ পাকিস্তান দিবসের পরিবর্তে ‘প্রতিবাদ দিবস’ পালনের ঘোষণা দেয় এবং দেশবাসীকে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের আহ্বান জানায়। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে মোল্লাহাট থানার সর্বত্র স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। স ম লায়েকুজ্জামানের নেতৃত্বে মোল্লাহাট থানা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে পাকিস্তানি পতাকা পুড়িয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। মোল্লাহাট থানার সকল দোকানপাটেও স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলিত হয়। ২৬শে মার্চের পর থেকে মোল্লাহাট থানা সংগ্রাম কমিটির নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হয়। মোল্লাহাট বাজারের পাশে মধুমতি নদীর তীরে একটি ফাঁকা জায়গায় প্রাথমিক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এলাকার আনসার বাহিনীর সদস্য এবং অবসরপ্রাপ্ত ও ছুটিতে থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যরা প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন কে. এম হেমায়েত উদ্দিন শিকদার (হিমু মিয়া) এবং আসাদুজ্জামান মুকু মিয়া। তখনকার মোল্লাহাট থানার ওসি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন। তাঁর সহযোগিতায় এক পর্যায়ে থানা থেকে প্রশিক্ষণের জন্য রাইফেল সরবরাহ করা হয়। নাশুয়াখালি স্কুলের মাঠেও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। দারিয়ালা গ্রামের আবুল হোসেন, চরকুলিয়া গ্রামের শাহাবুদ্দিন শেখ, গাড়ফা গ্রামের ডা. আব্দুল লতিফ ও নাশুয়াখালীর শৈলেন ডাক্তার মোল্লাহাটে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ থানায় মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডারদের মধ্যে ছিলেন শরীফ আবু তালেব, সেকেল উদ্দিন গাজী, সামসুর রহমান মোল্লা, আশরাফুল ইসলাম আশা, নীহার রঞ্জন কাপালী প্রমুখ।
২৬শে মার্চের পর মোল্লাহাট থানায় গঠিত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে মুক্তিবাহিনীতে রূপান্তরিত করা হয়। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটির সদস্য ছিলেন শেখ আসহাব উদ্দিন, শেখ কায়েম আলী (শিবপুর), সামসুদ্দিন আহমদ (বড়বাড়িয়া), শেখ আবুল হোসেন এবং শেখ জিল্লুর রহিম। মার্চের শেষদিকে খুলনা ট্রেজারি লুটের পর প্রাপ্ত কিছু অস্ত্র মোল্লাহাট এলাকায় এসে পৌঁছে। মোল্লাহাট সংগ্রাম কমিটি নৃসিংহপুর গ্রাম থেকে শেখ আবুল হোসেনের মাধ্যমে ৩টি রাইফেল সংগ্রহ করে। স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে লাইসেন্স করা পাঁচটি বন্দুক এবং মোল্লাহাট থানা থেকে পাঁচটি রাইফেল নেয়া হয়। এভাবে সংগৃহীত মোট ১৩টি অস্ত্র নিয়ে মোল্লাহাট থানার প্রথম মুক্তিবাহিনী গঠিত হয়। এ বাহিনীর প্রধান ছিলেন শেখ আবুল হোসেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দাড়িয়ালা বাজারে ক্যাম্প স্থাপিত হয়। মোল্লাহাট থানা এলাকায় যাতে কোনো লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে না পারে, সেজন্য মোল্লাহাট সংগ্রাম কমিটির নেতৃত্বে ৩রা এপ্রিল দাড়িয়ালা বাজারে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
২৪শে এপ্রিল পাকহানাদার বাহিনী বাগেরহাট মহকুমা শহরে অনুপ্রবেশ করে এবং ওয়াপদা রেস্ট হাউজে ক্যাম্প স্থাপন করে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সর্বপ্রথম গোপালগঞ্জ থেকে এক লঞ্চ ভর্তি পাকসেনা পাটগাতীর নুরু মিয়ার নেতৃত্বে মোল্লাহাট থানা সদরে অনুপ্রবেশ করে। কিন্তু তারা কোনো ক্যাম্প স্থাপন না করে সারাদিন ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সন্ধ্যার আগে গোপালগঞ্জ ফিরে যায়।
জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে খুলনা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৩০ জন রাজাকার লঞ্চযোগে মোল্লাহাট থানায় এসে সিও অফিসে ক্যাম্প স্থাপন করে। পরে রাজাকার বাহিনী চরকুলিয়া গ্রামের ফজলু মোক্তারের বাড়িতে এবং দত্তডাঙ্গা গ্রামের ভবানী বাবুর বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ভবনে কয়েক দিনের জন্য ক্যাম্প স্থাপন করে। রাজাকাররা মোল্লাহাট থানা ভবন, সার্কেল অফিসারের অফিস এবং ইরিগেশন ভবনের দোতলায় ক্যাম্প স্থাপন করে। তাদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য কিছু পাঞ্জাবি পুলিশ থানায় এসে যোগ দেয়। অক্টোবর মাসে গোপালগঞ্জ থেকে ক্যাপ্টেন সেলিমের নেতৃত্বে এক প্লাটুন পাকসেনা মোল্লাহাট থানায় আসে। কিন্তু এখানে তারা ক্যাম্প করে স্থায়ীভাবে অবস্থান করেনি।
উপজেলায় স্বাধীনতা বিরোধীরা শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী গঠন করে পাকসেনাদের সঙ্গে মিলে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষদের বিরুদ্ধে নানারকম অপকর্ম ও অত্যাচার- নির্যাতন চালায়। ৭ই আগস্ট ৩০-৩৫ জন রাজাকার মোল্লাহাট থানায় প্রবেশ করে। তাদের কমান্ডার ছিল মওলানা ওলিউল্লাহ। এ বাহিনীর সদস্য ছিল মওলানা কাসেম, ফকরুদ্দিন ওরফে সরু মিয়া, ফজলুল করিম ওরফে সুফি, আব্দুল বাকি প্রমুখ।
কোদালিয়া ইউনিয়নের শান্তি কমিটির সভাপতি ছিল ইউনিয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিল থানা জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম লীগ-এর আব্দুল হাই, মোল্লা লায়েক আলী, রোকন উদ্দিন শেখ, মাওলানা আব্দুল হাকিম, ক্বারী সাইদুল্লাহ, নাছির উদ্দিন, পাচু সরদার, এস এম ফজলুর রহমান মোক্তার, এডভোকেট জিল্লুর রহমান-সহ আরো অনেকে।
৮ই আগস্ট রাজাকাররা চুনকোলা গ্রামে অভিযান চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী মেকানিক বাসু মালাকারকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। রাজাকাররা দত্তডাঙ্গা গ্রামের ক্যাম্প থেকে গিয়ে স্থানীয় লোকদের ওপর চরম অত্যাচার করত। তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নওয়াব আলী মিয়ার বাড়িতে লুণ্ঠন শেষে অগ্নিসংযোগ করে।
পাকিস্তানি সেনারা গাড়ফা গ্রামের বাসিন্দা গোপালগঞ্জ মহকুমার আওয়ামী লীগ নেতা ডা. ফরিদ আহমেদ, ডা. শেখ লতিফুর রহমান, আহসাব উদ্দিন, গনি জমাদ্দার ও আমিরউদ্দিন জমাদ্দারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। গাড়ফা গ্রামের নরেন সরকারের বিশাল মুদির দোকানটি তারা পুড়িয়ে দেয়।
১০ই সেপ্টেম্বর মোল্লাহাটের উত্তরে উদয়পুর গরুর হাটের পাশে একটি ফাঁকা স্থানে প্রতুল কর্মকার, অহীন্দ্র কর্মকার, পঙ্কজ কর্মকার, সুশীল কর্মকার, কার্তিক কর্মকার এবং কেশব কর্মকার –এই ৬ জনকে রাজাকার কমান্ডার মওলানা ওলিউল্লাহর নির্দেশে জবাই করে হত্যা করা হয়। এদিন সতীন্দ্রনাথ নামে আরেকজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এটি উদয়পুর গণহত্যা নামে পরিচিত। রাজাকাররা চরকুলিয়ার মোল্লাবাড়ি, গিরিশনগর, কামারগাঁ, ভান্ডারখোলা, আটজুরি, দাশুড়িয়া, ভৈরবনগর ও দত্তডাঙ্গা গ্রামে হিন্দু- মুসলমান নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক লুটপাট চালায়।
মোল্লাহাট থানায় রাজাকারদের ক্যাম্প স্থাপনের কয়েকদিনের মধ্যে স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল সামান্য কিছু দেশীয় বন্দুক ও রাইফেল নিয়ে সিও অফিসের রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমণ করে। লোকবল ও হাতিয়ারের অপ্রতুলতার কারণে এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি। যুদ্ধে কলাবাড়িয়া গ্রামের আবুবকর শেখ নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
৩০শে সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা দত্তডাঙ্গা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন পরিচালনা করেন। রাজাকাররাও পাল্টা আক্রমণ করে। তিনদিন তীব্র যুদ্ধের পর এক রাতের আধারে রাজাকার বাহিনী পালিয়ে যায়। এ যুদ্ধে মোল্লাহাটের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে চিতলমারী ক্যাম্পে কমান্ডার লেফটেন্যান্ট সামসু মল্লিকের নেতৃত্বে এক দল এবং সন্তোষপুর স্কুল ক্যাম্পের তাজুল বাহিনীর কমান্ডার আনোয়ার হোসেন শিকদারের নেতৃত্বে আরেক দল মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহণ করে।
পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর ৮ই অক্টোবর শুক্রবার চরকুলিয়া গ্রামের হাড়িদহ ব্রিজে একটি যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন সেলিমসহ ১০ জন পাকসেনা ও কয়েকজন রাজাকার নিহত হয়। হাড়িদহ ব্রিজ যুদ্ধ-এ বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সেকেল উদ্দিন গাজী, আশরাফুল ইসলাম আশা, সোহরাব, নুরু, মো. হানিফ, হাসান, মোহর আলী, গোলাম মাওলা, কৃষ্ণ, ওদুদ, আজমির, প্রফুল্ল ঢালী, মৃধা আলী রেজা ও মোশারফ মান্নান অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনা ও রাজাকারদের আরেকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয় ২৬শে অক্টোবর ওলিমদ্দি ব্রিজে। ক্যাপ্টেন সেলিম হত্যার প্রতিশোধ নিতে ৫টি গানবোটে খুলনা থেকে প্রায় ৪০০ পাকসেনা ও রাজাকার মোল্লাহাট ও বাসুড়িয়া লঞ্চঘাটে নেমে দুই দলে বিভক্ত হয়ে ওলিমুদ্দি ব্রিজের কাছে আসে। এখানে আগে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের এম্বুশ ছিল। পাকসেনারা নাগালের কাছে এলে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করেন। পাকবাহিনী পাল্টা আক্রমণ করলে দুদিন ও দুরাত এ-যুদ্ধ চলে। যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দেন কমান্ডার শরীফ আবু তালেব, সামসুর রহমান মোল্লা, সেকেল উদ্দিন গাজী, আশরাফুল ইসলাম আশা ও তেরখাদা ক্যাম্পের বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ক্যাপ্টেন ফহম উদ্দিন। ওলিমদ্দি ব্রিজ যুদ্ধ-এ শতাধিক পাকসেনা হতাহত হয়।
৯ই ডিসেম্বর রাতে মোল্লাহাট থানায় অবস্থানরত পাঞ্জাবি পুলিশ লঞ্চযোগে পালিয়ে খুলনা যাবার চেষ্টা করে। লঞ্চটি উদয়পুর গরুরহাটের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের ফলে তারা গতিপথ পরিবর্তন করে বরিশালের দিকে চলে যায়। ১০ই ডিসেম্বর বেলা ১২টার দিকে মোল্লাহাট কলেজ মাঠে রাজাকাররা অস্ত্র সমর্পণ করে। এর মধ্যদিয়ে এদিন মোল্লাহাট থানা সম্পূর্ণভাবে হানাদারমুক্ত হয়।
উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- এনামুল হক, বীর প্রতীক (পিতা আ. হাকিম গাজী, বাসাবাড়ি) ও মো. আবুল হোসেন, বীর প্রতীক (পিতা এছাহাক গাজী, চরকুলিয়া)।
মোল্লাহাটের শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- এনামুল হক, বীর প্রতীক (যশোর জেলার কাশীপুর যুদ্ধে শহীদ), শেখ তৈয়াবুর রহমান (পিতা আদিল উদ্দিন শেখ, রঘাষপাড়া), প্রভাষ চন্দ্ৰ সাহা (পিতা গণেশ চন্দ্র সাহা, নগরকান্দি), সরদার লিয়াকত আলী (পিতা মোশাররেফ হোসেন, চরমুলিয়া), আব্দুল ওহাব শেখ (মারজান আলী শেখ, কুলিয়া), মো. জালাল উদ্দিন মোল্লা (পিতা আব্দুল হাকিম, মোল্লাকুলিয়া), রতন মোল্লা (পিতা বাবন মোল্লা, কুলিয়া), মো. শেখ বেলায়েত হোসেন (পিতা আব্দুল হক শেখ, দাড়িয়ালা), মো. আব্দুল মুকিত (পিতা মোসলেম শেখ, কামারগ্রাম), অমিতোষ কুমার মণ্ডল (পিতা ক্ষিতীশ চন্দ্র মণ্ডল, মেহেরপুর), ইদ্রিস আলী তরফদার (পিতা আব্দুল ফায়েক তরফদার, রাজপাট), মফজেল শেখ (পিতা আকমান উদ্দিন শেখ, ভাণ্ডারখোলা), এ বি এম জাহেদুল হাবিব (পিতা মমতাজ উদ্দিন মোল্লা, নগরকান্দি), মোকছেদুল হক (পিতা সিরাজউদ্দিন মোল্লা, কাচনা), আসাদুজ্জামান (পিতা আব্দুল হামিদ বিশ্বাস, নগরকান্দি), আতিয়ার রহমান (পিতা মো. সৈয়দ আলী মোল্লা, চরকান্দি), গাউছুল হক খান (পিতা শরীফ উল্লাহ খান, সরসপুর), হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা (পিতা হাকিম মোল্লা, গাড়ফা), শেখ হাবিবুর রহমান (পিতা এদোন শেখ, সরসপুর), এ কে এম মোমিন উদ্দিন (পিতা নেছার উদ্দিন ফরাজী, রাজপাট), ইসহাক ফকির (পিতা হোসেন ফকির, নতুন ঘোষগাতী), শেখ রত্তন আলী (পিতা কাবিল উদ্দিন শেখ, নগরকান্দি), ছলেমান কাজী (পিতা ইমান উদ্দিন কাজী, হাড়িদহ), নীরদ সরকার (পিতা নারায়ণ সরকার, আস্তাইল) এবং আবুবকর শেখ (গ্রাম কলাবাড়িয়া)। [বেনজীর আহম্মদ টিপু]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড