বীর প্রতীক মোস্তফা কামাল
মোস্তফা কামাল, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৮) নায়েক সুবেদার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৮ সালের ১লা এপ্রিল বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার চাকুলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কফিল উদ্দিন শিকারী এবং মাতার নাম আমেনা বেগম। তিনি খুলনা মডেল হাইস্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। ১৯৬৯ সালের মার্চ মাসে তিনি ইস্ট পাকিস্তান রাইলেফস্-এ যোগদান করেন।
মোস্তফা কামাল ১৯৭১ সালে ইপিআর বাহিনীর চুয়াডাঙ্গার ৪ নম্বর উইং-এ বর্ণী ক্যাম্পে কর্মরত অবস্থায় বিদ্রোহ করে ২৬শে মার্চ মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তাঁর সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন কে এন হুদা। মোস্তফা কামাল নিজে গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি যশোরের কোটচাঁদপুর, কালিগঞ্জ, চৌগাছা, মাসলিয়া, গরীবপুর, গোয়ালহাটি, বেলতা, বনানী, যাদবপুর, ঝিকরগাছা, বেনাপোল, কুষ্টিয়া জেলার দর্শনা, জীবননগর, মোল্লারহাট, ফরিদপুরের ভাটিয়াপাড়া প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় দেন। ১৫ই জুলাই ক্যাপ্টেন কে এন হুদার নেতৃত্বে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বেলতায় পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে এক সম্মুখ যুদ্ধে তিনি আহত হন। ঐ যুদ্ধে ইপিআর-এর সুবেদার মনিরুজ্জমান শহীদ এবং ৩০-৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। যুদ্ধে ৪০-৫০ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নায়েক সুবেদার মোস্তফা কামালকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তাঁর স্ত্রীর নাম লতিফা কামাল মোস্তফা। এ দম্পতি ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক-জননী। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড