You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মো. হাবিবুর রহমান তালুকদার - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মো. হাবিবুর রহমান তালুকদার

মো. হাবিবুর রহমান তালুকদার, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৫০) যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার। তিনি ১৯৫০ সালে টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার টেংগুরিয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ডা. মোবারক আলী তালুকদার এবং মাতার নাম মাসুদা বেগম।
মো. হাবিবুর রহমান তালুকদার ১৯৭১ সালে টাঙ্গাইলের করটিয়া সা’দত কলেজের স্নাতক পরীক্ষার্থী ছিলেন। একজন সচেতন তরুণ হিসেবে ৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-এর বিজয়ের পর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ইয়াহিয়ার সামরিক জান্তার ষড়যন্ত্রের আশ্রয় গ্রহণ তাঁকে দেশের পরিস্থিতি সম্বন্ধে উদ্বিগ্ন করে তোলে। ২৫শে মার্চ রাতে নিরস্ত্র-নিরীহ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পৈশাচিক হামলা ও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা তাঁকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করে। তিনি কাদের সিদ্দিকী, বীর উত্তম-এর নেতৃত্বাধীন বাহিনীতে যোগদান করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি এ বাহিনীর একজন কোম্পানি কমান্ডার নিযুক্ত হন। টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় তিনি যুদ্ধ করেন।
হাবিবুর রহমান তালুকদার তাঁর কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে বাসাইল থানা দখল (১৪ই জুন), কামুটিয়া (১৭ই জুন), বাথুলি (২১শে নভেম্বর) প্রভৃতি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে সাহসী ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর থানার সিরাজকান্দি নামক স্থানে ধলেশ্বর নদীতে ৭টি পাকিস্তানি জাহাজে আক্রমণ চালিয়ে অস্ত্রশস্ত্র ভর্তি ২টি জাহাজ দখল ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, যা ‘সিরাজকান্দির জাহাজমারা যুদ্ধ’ নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত। এটি ঘটে ১১ই আগস্ট। বাথুলির যুদ্ধে তিনি শত্রুর নিক্ষিপ্ত গোলায় পায়ে আঘাত পান। চিকিৎসার জন্য তাঁকে কাদেরিয়া বাহিনীর হেডকোয়ার্টার্স সখিপুরে পাঠানো হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হাবিবুর রহমান তালুকদার-কে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। তিনি ১ কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম সেলিনা বেগম। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড