You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মো. শামসুল আলম - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মো. শামসুল আলম

মো. শামসুল আলম, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৯) মুক্তিযুদ্ধকালে প্রথম বেঙ্গল ওয়ার কোর্স সম্পন্নকারী, লেফটেন্যান্ট ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর জন্ম ১৯৪৯ সালে। পৈতৃক নিবাস ভারতে। তাঁর মাতা সালেহা খাতুন এবং পিতা আলমাস উদ্দিন মণ্ডল। মো. শামসুল আলম শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২৫শে মার্চ কালরাতে পাকবাহিনী এদেশের সাধারণ মানুষের ওপর বর্বরোচিত হামলা শুরু করলে ২৭শে মার্চ তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। রাজশাহী সেনানিবাস, আড়ানি, বনপাড়া ও ঝলমলিতে প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নিয়ে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। ২রা এপ্রিল সহযোদ্ধাদের নিয়ে তিনি ভারতে যান এবং সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নিয়ে গেরিলা হামলা পরিচালনা করেন। সহকর্মী রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের শিক্ষক শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন আবু বকর সিদ্দিকের পরিবারকে পাকবাহিনীর বন্দি অবস্থা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে তিনি অভিযান পরিচালনা করেন এবং এক পর্যায়ে তাদের মুক্ত করতে সক্ষম হন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মো. শামসুল আলম বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সে মনোনীত হয়ে কমিশনপ্রাপ্ত হন এবং ১১ নম্বর সেক্টরে পদায়ন পান। তাঁকে শেরপুর ও জামালপুর জেলার একাংশ নিয়ে গঠিত পুরখাসিয়া সাব-সেক্টরে দায়িত্ব দেয়া হয়। দেওয়ানগঞ্জ, বাহাদুরাবাদ ও আশপাশের এলাকায় সেনা ও নৌকমান্ডোদের যৌথ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি সাহসিকতার পরিচয় দেন এবং কোনোরকম ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া উক্ত এলাকা মুক্ত করতে সক্ষম হন। এছাড়া অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী নলিতাবাড়ি উপজেলার চান্দুভূঁই বিওপি আক্রমণ করে পাকবাহিনীর ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম হন।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতার পরিচয়সহ অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা মো. শামসুল আলমকে বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৩ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতা পেশায় ফিরে যান। দীর্ঘদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে শিক্ষকতা করার পর অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যান। তিনি ২ কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম হোসনে আরা আলম। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড