বীর প্রতীক মো. নূরুল হক ভূঁইয়া
মো. নূরুল হক ভূঁইয়া, বীর প্রতীক (১৯২৭-১৯৯২) মুক্তিযুদ্ধকালে সুবেদার মেজর, একজন বীর সৈনিক, পরবর্তীতে অনারারি ক্যাপ্টেন। তাঁর জন্ম ১৯২৭ সালে চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলাস্থ ভরদ্বাজহাট ইউনিয়নের অন্তর্গত দুর্গাপুর গ্রামে। তাঁর মাতা নূর বানু এবং পিতা সিরাজুল হক ভূঁইয়া।
মো. নূরুল হক ভূঁইয়া ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরি করতেন। ১৯৪৯ সালের ১০ই মে তিনি এ রেজিমেন্টে যোগদান করেন। এর পূর্বে ১৯৪৪ সালে তিনি রয়াল ইন্ডিয়ান আর্মি সার্ভিস কোরে প্রথমে ক্লার্ক হিসেবে যোগ দিয়ে পরে ১৯৪৬ সালে একই সার্ভিসে পদাতিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পূর্বে তিনি ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে জয়দেবপুর ক্যান্টমেন্টে সুবেদার মেজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাঙালিদের ওপর নির্যাতন ও গণহত্যা শুরু হলে তিনি অন্যান্য বাঙালি সৈনিকদের নিয়ে বিদ্রোহ করে জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কিশেরাগঞ্জ, ভৈরববাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সাতছড়ি হয়ে তেলিয়াপাড়া পৌঁছে সেখানে ঘাঁটি স্থাপন করেন। তিনি ৩ নম্বর সেক্টরে সুবেদার মেজরের দায়িত্ব পালন করেন এবং এ সেক্টরের অধীন বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম হন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মো. নূরুল হক ভূঁইয়াকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। পর্যায়ক্রমিক পদোন্নতির মাধ্যমে চাকরি জীবনে তিনি অনারারি ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি ৩ কন্যা ও ৩ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম সকিনা বেগম। ১৯৯২ সালের ১৫ই অক্টোবর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নূরুল হক ভূঁইয়া মৃত্যুবরণ করেন। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড