You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মো. বিলাল উদ্দিন - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মো. বিলাল উদ্দিন

মো. বিলাল উদ্দিন, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৫) অনারারি ক্যাপ্টেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ১১নং সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার। তিনি ১৯৪৫ সালের ৩১শে জুলাই জামালপুরের গোপালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জাবেদ আলী সরকার এবং মাতার নাম জায়তুন নেছা। তিনি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। তখন তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের ইবিআরসি-তে কর্মরত। তাঁর পদবি ছিল নায়েক। ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে চট্টগ্রামের ইবিআরসি-তে বালুচ রেজিমেন্ট আক্রমণ করে বিশ্রামরত অনেক বাঙালি সেনাকে হত্যা করে। যে নগণ্যসংখ্যক বাঙালি সেনা তাদের হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যান, তাঁদের মধ্যে বিলাল উদ্দিন ছিলেন অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের উদ্দেশ্যে তিনি গোপনে ভারতে চলে যান এবং কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বাধীন ১১নং সেক্টরে যোগ দেন। যুদ্ধরত অবস্থায়
সেপ্টেম্বর মাসে মো. বিলাল উদ্দিন খবর পান যে, তাঁর নিজ এলাকায় পাকবাহিনী নির্বিচারে অত্যাচার ও নির্যাতন চালাচ্ছে। তখন তিনি ভারতের ঢালু থেকে ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ নিজ এলাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন। তাঁদের সঙ্গে ছিল হালকা অস্ত্র, ৩০৩ রাইফেল ও কিছু হ্যান্ড গ্রেনেড। কোনো ভারী অস্ত্র নেয়া সম্ভব হয়নি। গন্ত্যব্যে প্রবেশ করে একটি খোলা ময়দানে তাঁরা অবস্থান নেন। হঠাৎ কয়েকটি গরুর গাড়িতে কিছু মালপত্রসহ বেশ কয়েকজন পাকসেনাকে তাঁরা আসতে দেখেন। বিলাল উদ্দিনের দলের মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন স্বল্প প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। একমাত্র তিনিই ছিলেন পেশাদার সৈনিক। এমতাবস্থায় বিলাল উদ্দিন সম্মুখ যুদ্ধ এড়িয়ে গাছের আড়াল ও নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিয়ে পাকসেনাদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করেন। গুলি ও পাল্টা গুলি চলা অবস্থায় বেশ কয়েকজন পাকসেনা হতাহত হয়। তিনি ও তাঁর দল দ্রুত ঐ এলাকা থেকে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় নিরাপদ স্থানে সরে পড়েন। ঘটনাস্থল ছিল শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচ পুরানে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিলাল উদ্দিনের কৌশলী ও সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ৩ কন্যা ও ২ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মোসাম্মৎ জাবেদা খাতুন। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড