You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মো. গোলাম ইয়াকুব - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মো. গোলাম ইয়াকুব

মো. গোলাম ইয়াকুব, বীর প্রতীক আনসার বাহিনীর সদস্য, মুক্তিযুদ্ধকালে গ্রুপ কমান্ডার ও অসীম সাহসী এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর থানার ন’হাটা ইউনিয়নের অন্তর্গত নারানদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জমির উদ্দিন মোল্লা ও মাতার নাম সাজু বিবি|
মো. গোলাম ইয়াকুব
মো. গোলাম ইয়াকুব আনসার বাহিনীতে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তিনি এ বাহিনীতে কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিল। ২৫শে মার্চ পাকবাহিনী গণহত্যা শুরু করলে তাদের প্রতিহত করার জন্য তিনি প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন। চৌকস আনসার কমান্ডার মোহাম্মদপুর থানা আক্রমণ করে ১২টি রাইফেল হস্তগত করেন। যশোর সেনানিবাস আক্রমণের জন্য তিনি ঝুমঝুমপুরে অবস্থান নেন। প্রতিরোধযুদ্ধে অংশগ্রহণ শেষে তিনি উচ্চতর সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে যান। ইতোমধ্যে যোগ্যতাবলে গোলাম ইয়াকুব গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনি পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের দোসর রাজাকারদের বিরুদ্ধে সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন স্থানে সফলতার সঙ্গে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। গ্রুপ কমান্ডার গোলাম ইয়াকুব ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে নিজ এলাকায় এসে আগস্টের ২১ তারিখ ন’হাটা নামক স্থানে পাকবাহিনীর টহলদারদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে ৩০-৩৫ জন পাকসেনা ও রাজাকারকে হত্যা এবং বেশ কিছু গোলাবারুদ উদ্ধার করেন। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা মোহাম্মদপুর, ন’হাটা, বোয়ালমারী, জয়রামপুর ও বিনোদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকহানাদার বাহিনীর ব্যাপক ক্ষতিসাধনে সক্ষম হন।
জয়রামপুর যুদ্ধে তিনি অসামান্য প্রতিভা ও যুদ্ধ কৌশলের পরিচয় দেন। তাৎক্ষণিক প্রস্তুতি ও পাকসেনাদের ব্যূহ ভেদ করে সহযোদ্ধাদের নিয়ে তিনি নিরাপদ স্থানে চলে যেতে সক্ষম হন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মো. গোলাম ইয়াকুবকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ৫ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম শামসুন্নাহার। ২০০১ সালের ২৮শে মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন। [মো. ওসমান গনী]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড