বীর বিক্রম মো. তমিজউদ্দিন
মো. তমিজউদ্দিন, বীর বিক্রম (শহীদ ১৯৭১) অনারারি ক্যাপ্টেন, একজন সাহসী সৈনিক এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। তিনি লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলাধীন তুষভাণ্ডার ইউনিয়নের সন্দ্রহবী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছয়ফুল্লাহ প্রামাণিক এবং মাতার নাম তমিজন নেছা। তমিজউদ্দিন মুজাহিদ বাহিনীতে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালে তিনি গাইবান্ধার মুজাহিদ ব্যাটালিয়নে কর্মরত ছিলেন। মার্চ মাসের শুরুতে ছুটি নিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতে যান। ছুটিতে থাকাকালে তিনি চাকরিতে যোগদান না করে দেশমাতৃকার টানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ইপিআর ও ছাত্র-যুবকদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিরোধ বাহিনীতে যোগ দেন এবং এপ্রিল-মে মাসে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারীসহ কয়েকটি স্থানে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তমিজউদ্দিন ৬ নম্বর সেক্টরের উইং কমান্ডার এম কে বাশারের অধীনে সাব- সেক্টর কমান্ডার সুবেদার বোরহান উদ্দিনের নেতৃত্বে বিভিন্ন যুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় দেন। ২৭শে মে ডিফেন্স নেয়ার জন্য ১০০ মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে তিনি পাটেশ্বরীর উদ্দেশে রওনা হলে পথিমধ্যে পাকিস্তানি সৈন্যরা তাঁদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। এতে মুক্তিযোদ্ধারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান এবং বিচ্ছিন্নভাবে আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। এ অবস্থায় তমিজউদ্দিন যুদ্ধস্থলে থেকে একাই দৃঢ় মনোবল ও সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যান এবং কয়েকজন পাকসেনাকে হত্যা করতে সক্ষম হন। যুদ্ধরত অবস্থায় এক পর্যায়ে শত্রুপক্ষের গুলিতে তিনি শহীদ হন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান এবং আত্মোৎসর্গের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তিনি ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত হন। তিনি ১ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম রিজিয়া খাতুন। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড