মিরাপুর গণহত্যা (আত্রাই, নওগাঁ)
মিরাপুর গণহত্যা (আত্রাই, নওগাঁ) সংঘটিত হয় ১১ই জুলাই। এতে ৩০ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
আত্রাই উপজেলার মিরাপুর এবং রাণীনগর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রাম দুটি পাশাপাশি অবস্থিত। ১১ই জুলাই রাতে সৈয়দপুরের কুখ্যাত রাজাকার জান বক্স শেখ ওরফে জানা এবং মির্জাপুরের কুখ্যাত রাজাকার শুকুর পথ দেখিয়ে পাকবাহিনীকে দুটি বজরা নৌকাযোগে নিয়ে এসে গ্রামদুটি ঘেরাও করে এবং ঘুমন্ত গ্রামবাসীর ওপর আক্রমণ চালায়। যারা দ্রুত গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যেতে পেরেছিল এবং গ্রামের মধ্যে কবরস্থানে আত্মগোপন করেছিল তারা বেঁচে যায়। ঘুমের ঘোরে যারা পালাতে পারেনি তারা পাকবাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। পাকহানাদাররা পায়ে জুতা পরা অবস্থায় মসজিদে ঢুকে নামাজরত মুসল্লিদেরও আটক করে। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করার অভিযোগে আটককৃতদের মধ্যে ৩০ জনকে আত্রাই-নওগাঁ সড়কের পার্শ্বে মিরাপুর গ্রামের একটি বাঁশ বাগানে একত্রিত করে গুলি করে হত্যা করে। এ-সময় তারা কৃষ্ণপুর গ্রামের ৪- ৫ জন নারীকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে স্বজনরা এসে লাশগুলো গণকবর দেয়। স্বজন না থাকার কারণে উজির উদ্দিনের লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। শহীদ ৩০ জনের মধ্যে ২১ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- মহির উদ্দিন মন্ডল, মেহের আলী মন্ডল, জলিল, আহাদ আলী প্রামাণিক, উজির প্রামাণিক, কফিল উদ্দিন প্রামাণিক (পোল্লাদ), যতীন্দ্রনাথ, হেমেন্দ্রনাথ, মথুর ঋষি, লিলি ঋষি, নেছার আলী, মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর ও ফিরোজ, মছির খাঁ, আমজাদ হোসেন, চান্দু খাঁ, আহম্মদ আলী, কাশেম সরদার, তৈয়ব আলী, ভোলা ও আবুল হোসেন। [ফরিদুল আলম পিন্টু]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড