মালাম বিল যুদ্ধ (বড়লেখা, মৌলভীবাজার)
মালাম বিল যুদ্ধ (বড়লেখা, মৌলভীবাজার) সংঘটিত হয় অক্টোবর মাসে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন হতাহত হয়।
অক্টোবর মাসের এক সকালে একটি গেরিলা দলের মুক্তিযোদ্ধারা মালাম বিলে অবস্থান নেন। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন সৎপুর গ্রামের রফিকউদ্দিন, আব্দুল জলিল, ভাদেশ্বরের নিমার বিএসসি ও অন্য কয়েকজন। স্থানীয় দালাল আব্দুল ওয়াহাব মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের খবর পাকবাহিনীকে জানিয়ে দেয়। এরপর পাকহানাদার বাহিনী এবং রাজাকাররা একযোগে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ করলে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ শুরু হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটানা গুলি বিনিময় চলে। এক সময় মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটেন।
এ-যুদ্ধের এক শিকার সৎপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল খালিক। জহির আলীর পুত্র খালিকের বয়স তখন মাত্র ১২ বছর। ক্রসফায়ারিং-এর সময় বাড়ির আঙিনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে সে মারা যায়। যুদ্ধের দুদিন পর মাইন বিস্ফোরণে সৎপুর নলজোয়ার গ্রামের সিকন্দর আলীর ৮ বছরের একটি ছেলে মারা যায়।
মালাম বিল যুদ্ধের পর পাকবাহিনী আশেপাশের গ্রামগুলোতে চড়াও হয়। সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন ও তাণ্ডব চালায়। তারা বহু নারীর সম্ভ্রমহানি করে। সৎপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হকের বাড়িতে আক্রমণ চালিয়ে বাড়িঘর তছনছ করে দেয়। তার মা-বাবার ওপর নির্যাতন চালায়। পাকসেনারা অনেকের বাড়ি থেকে গবাদি পশু নিয়ে যায়। [মোস্তফা সেলিম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড