মাধবপুর থানা সদর অপারেশন (মাধবপুর, হবিগঞ্জ)
মাধবপুর থানা সদর অপারেশন (মাধবপুর, হবিগঞ্জ) পরিচালিত হয় এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। এতে মুক্তিযোদ্ধারা কৌশলগত কারণে পিছু হটতে বাধ্য হন।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট আশুগঞ্জে একটি প্রতিরক্ষাব্যূহ তৈরি করে। উদ্দেশ্য ছিল ঢাকা থেকে অগ্রসরমাণ পাকিস্তানি বাহিনীকে বাধা দেয়া। কিন্তু তখন পাকিস্তানিরা তাদের আর্টিলারি ও মর্টার, জলপথে গানবোট এবং আকাশপথে বিমান হামলা চালাতে শুরু করে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এ আক্রমণ প্রতিরোধ করতে না পেরে কৌশলগত কারণে পিছু হটে মাধবপুরে গিয়ে অবস্থান নেয়। লেফটেন্যান্ট হেলাল মোরশেদ তখন মাধবপুর এসে পৌঁছান। মেজর সফিউল্লাহও তেলিয়াপাড়া থেকে মাধবপুরে এসে পৌঁছান। কিন্তু ততক্ষণে পাকিস্তানি সৈন্যরা শাহবাজপুর থেকে মাধবপুর পৌঁছে মুক্তিবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়। মেজর সফিউল্লাহ লে. হেলাল মোরশেদকে পাকসেনাদের বাঁদিক থেকে আক্রমণ করার নির্দেশ দেন। লে. মোরশেদ তাঁর প্লাটুন নিয়ে আক্রমণের জন্য সেদিকে অগ্রসর হন। কিন্তু তিনি তাঁর চতুর্দিক দিয়ে শরণার্থীদের যাতায়তের কারণে আক্রমণের সুযোগ করে উঠতে পারছিলেন না। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা কিছুতেই পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারছিলেন না। বিকেল ৬টা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। পাকিস্তানিদের প্রচণ্ড আক্রমণে টিকতে না পেরে অবশেষে মুক্তিবাহিনীর আলফা কোম্পানি মাধবপুর থেকে সৈন্য তুলে নিয়ে মনতলায় নতুন করে ডিফেন্স তৈরি করে। লে. হেলাল পরে মনতলায় গিয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগদান করেন। [মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড