মহেশপুর-গুণগাতী গণহত্যা (রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ)
মহেশপুর-গুণগাতী গণহত্যা (রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ) সংঘটিত হয় ২০শে নভেম্বর। এতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে ২০ জনের অধিক নিরীহ গ্রামবাসী হত্যার শিকার হন।
রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া ইউনিয়নের দুটি গ্রাম মহেশপুর ও গুণগাতী। মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি গ্রুপ অস্ত্র সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রায়গঞ্জ থানা আক্রমণ করলে থানায় অবস্থানরত পুলিশ ও রাজাকারদের সঙ্গে তাঁদের যুদ্ধ হয়। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা আহম্মদ হোসেন (হোড়গাতী, নলকা) শহীদ এবং রফিকুল ইসলাম আহত হন। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের পজিশন ছেড়ে চলে যান। থানা আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে পরের দিন পাকিস্তানি বাহিনী তাদের স্থানীয় দোসর রাজাকার আবু বক্কার মওলানা ও মফিজ মওলানার নেতৃত্বে ধানগড়ার দিকে অগ্রসর হয়। ধানগড়া-ব্রহ্মগাছা রাস্তার উত্তর দিকে গুণগাতী মাঠে তখন ধানের ক্ষেত ছিল। সেখানে গ্রামের কিছু মানুষ লুকিয়ে ছিল। অনেকে কৌতূহলবশত মাথা তুলে দেখার চেষ্টা করছিল। পাকিস্তানি বাহিনী তাদের মুক্তিযোদ্ধা মনে করে ধানক্ষেতে খুঁজে-খুঁজে ১৯ জন মানুষকে হত্যা করে। হত্যার পাশাপাশি তারা গ্রামের বাড়িঘরসহ ধানগড়া বাজার জ্বালিয়ে দেয়। মহেশপুর- গুণগাতী গণহত্যায় শহীদদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া যায়, তাঁরা হলেন— নূর মোহাম্মদ, গুণী মিয়া, আজাহার আলী, আব্দুস সালাম, মহাদেব সাহা, নীলমণি তালুকদার, জয়নাল আবেদীন, নগেন্দ্রনাথ মোদক, আবুল কালাম, নিখিল চন্দ্ৰ পাল, বানু পাল, আকবর আলী, মোহাম্মদ আলী, আবদুল জলিল, জাবেদ আলী, আতাহার আলী, আন্ধাইরা শেখ প্রমুখ। নিহতদের মধ্যে দু-এক জন ছাড়া বাকি সবাই মহেশপুর, গুণগাতী ও ধানগড়া গ্রামের অধিবাসী ছিলেন। [সুস্মিতা রানী দাস]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড