You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর বিক্রম মনিরুজ্জামান - সংগ্রামের নোটবুক

বীর বিক্রম মনিরুজ্জামান

মনিরুজ্জামান, বীর বিক্রম (১৯৩০-১৯৭১) সুবেদার ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর জন্ম ১৯৩০ সালে টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলাস্থ বাকুলিসাদি গ্রামে। তাঁর পিতা আকমল খান এবং মাতা সখিনা খানম।
মনিরুজ্জামান ইপিআর বাহিনীতে সুবেদার পদে চাকরি করতেন। এর পূর্বে তিনি পুলিশ বাহিনীতে ইন্সপেক্টর পদে নিয়োজিত ছিলেন। কৃতিত্বপূর্ণ সার্ভিস রেকর্ডের জন্য তাঁকে ১৯৫৯ সালে সরাসরি ইপিআর বাহিনীর জেসিও হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনি ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় যুদ্ধ করেন। তিনি ৭১ সালে চুয়াডাঙ্গায় ইপিআর-এর ৪ নম্বর উইং হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত ছিলেন।
২৫শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গণহত্যা শুরু করলে ২৬শে মার্চ তিনি মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। ফ্রন্টলাইনে থেকে বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধযুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। অস্ত্র ও গোলাবারুদের সংকট দেখা দিলে এক পর্যায়ে তাঁর দল পিছু হটে যশোর জেলার কাশিপুর বিওপিতে অবস্থান নেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে ২৭শে মে পাকবাহিনী কাশিপুর বিওপির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। আক্রমণ প্রতিহত করতে মনিরুজ্জামান এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ডিফেন্স পজিশন নেন। উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে পাকবাহিনী ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পিছু হটে। মনিরুজ্জামান তখন পাকবাহিনীকে ধাওয়া করে কয়েক মাইল পর্যন্ত সম্মুখে অগ্রসর হলে হাতাহাতি যুদ্ধ শুরু হয়। এ-সময় গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক পাকসেনার গুলিতে মনিরুজ্জামান শহীদ হন।
মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে অসামান্য অবদান এবং জীবন উৎসর্গ করায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মনিরুজ্জামান ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত হন। তিনি ৪ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম জাহানারা খানম। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড