স্থানীয় বাহিনী মতিন বাহিনী (রায়পুর, লক্ষ্মীপুর)
মতিন বাহিনী (রায়পুর, লক্ষ্মীপুর) মুক্তিযোদ্ধাদের একটি স্থানীয় বাহিনী। কমান্ডার হাবিলদার আবদুল মতিন পাটোয়ারীর নেতৃত্বে এটি গঠিত হয়।
আবদুল মতিন পাটোয়ারীর জন্ম ১৯৩৭ সালে রায়পুর উপজেলা উত্তর কেরোয়া গ্রামে। তাঁর পিতার নাম ইউনুস মিয়া পাটোয়ারী। তিনি ১৯৫৩ সালে চট্টগ্রাম ইবিআরসি-তে সৈনিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৫ সালের পাক- ভারত যুদ্ধে তিনি পশ্চিম রণাঙ্গনে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে লক্ষ্মীপুর-রায়পুর এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে প্রায় সবগুলো যুদ্ধে সফল নেতৃত্ব দেন। তাঁর অসাধারণ রণনৈপুণ্যে বৃহত্তর নোয়াখালীর মধ্যে সর্বপ্রথম রায়পুর থানা ২৬শে অক্টোবর হানাদারমুক্ত হয়। তিনি ১৯৮২ সালে ওয়ারেন্ট অফিসার হিসেবে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড রায়পুর ইউনিটের কমান্ডার হিসেবে ১৯৯৪ থেকে ২০০১ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে তিনি জেলা ইউনিটের সিনিয়র সদস্য নির্বাচিত হন।
র মুক্তিযুদ্ধকালে আবদুল মতিন পাটোয়ারী লক্ষ্মীপুর এলাকায় এসে আখতারুজ্জামান চৌধুরী ও রফিকুল হায়দার চৌধুরীর ই তত্ত্বাবধানে লক্ষ্মীপুর, রায়পুর ও রামগঞ্জ এলাকায় যুদ্ধ করেন। মীরগঞ্জ রাজাকার ক্যাম্প ও কাজীর দিঘির পাড় 3 রাজাকার ক্যাম্প দখলে তিনি নেতৃত্ব দেন। ১লা আগস্ট তাঁরা নেতৃত্বে রায়পুর রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন পরিচালিত হয়। এতে আবুল বাশার নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং দুজন রাজাকার নিহত হয়। এছাড়া ৪ঠা ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর মুক্ত হওয়ার দিন তিনি তাঁর গ্রুপ নিয়ে আক্রমণ পরিচালনা করেন। তাঁর নেতৃত্বে ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা সেদিন সন্ধ্যায় পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুরের মাদাম ঘাট এলাকায় এক দুঃসাহসিক অভিযানে অংশ নেন। সেদিনের সেই দুঃসাহসিক অভিযান এ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক স্মরণীয় ঘটনা। [গাজী গিয়াস উদ্দিন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড