মজুমদারপাড়া গণহত্যা (শিবগঞ্জ, বগুড়া)
মজুমদারপাড়া গণহত্যা (শিবগঞ্জ, বগুড়া) সংঘটিত হয় ৪ঠা ও ৫ই এপ্রিল দুদিনব্যাপী। এতে ১৮ জন গ্রামবাসী শহীদ হন।
শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত একটি গ্রাম মজুমদারপাড়া। উপজেলা শহর থেকে ২০ কিমি পশ্চিমে এ গ্রামের অবস্থান। এ গ্রামে বামাচরণ মজুমদারের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্রতিরক্ষাব্যূহ ছিল। এখান থেকে তাঁরা বিভিন্ন অপারেশন পরিচালনা করতেন। রাজাকার আবুল হোসেন এ খবর পাকিস্তানি সৈন্যদের কাছে পৌঁছে দেয়। এ খবর পেয়ে ৪ঠা এপ্রিল গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি ব্রিজের কাছ থেকে শতাধিক পাকিস্তানি হানাদার সদস্য ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বগুড়া শহর আক্রমণের পূর্বে মজুমদারপাড়ায় গণহত্যা শুরু করে। আবুল হোসেন পাকিস্তানি বাহিনীকে বামাচরণ মজুমদাদের বাড়ি চিনিয়ে দেয়। মজুমদারপাড়ায় যাওয়ার সময় পাকিস্তানি বাহিনী বিভিন্ন এলাকা থেকে নিরীহ মানুষজনকে ধরে আনে এবং সকলকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এ-সময় হানাদার বাহিনী অত্র এলাকার ধনাঢ্য বামাচরণের গরু-ছাগল ও অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করে নেয়। চলে যাওয়ার সময় তারা বামাচরণের ধানের গোলা ও বাড়িতে আগুন দেয়।
মজুমদারপাড়া গণহত্যায় শহীদরা হলেন- আব্দুস ছাত্তার (কমান্ডার), তুষার কান্তি মজুমদার (২৪), অরুণ কান্তি (২২), পাঁচকড়ি (২২), সুরেশ (৫০), দিপু ঘোষ (২০), চেরু ঘোষ (২৮), রমেনা (৪৫), বরুণ কান্তি (২৭), বনবাহাদুর (২৮), কালিপদ (৪০), ললিত সোনার (৩০), নরেশ (৩৫), কফিল (১৮), মোস্তফা (২৮), আ. জোব্বার (৩০), আ. বারী (২০) ও পরেশ (৩০)। এদের কাচারি ঘরের পাশে ধানের জমিতে এবং নিশির বাড়ির পাশে সমাহিত করা হয়। [আহম্মেদ শরীফ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড