You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মকবুল আলী - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মকবুল আলী

মকবুল আলী, বীর প্রতীক (১৯৩২-১৯৯৯) বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৩২ সালে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার মীর ছত্রিশ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মন্তাই আলী এবং মাতার নাম জুবেদা খাতুন। তিনি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। ১৯৫২ সালের ১লা মার্চ তিনি পাকিস্তান পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৯ সালে তাঁকে ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস)-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর তিনি ঢাকার পিলখানা ইপিআর ক্যাম্প থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি ইপিআর-এর দিনাজপুর ১০নং উইং হেডকোয়ার্টার্সের অধীনে ঠাকুরগাঁয় নায়েব সুবেদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
২৫শে মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি নিধন শুরু করলে মকবুল আলী বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। শুরুতে তিনি ঠাকুরগাঁ এলাকার বিভিন্ন প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন। পরে ৬নং সেক্টরে এম কে বাশারের নেতৃত্বে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। জুন মাসে কিছু চৌকশ মুক্তিযোদ্ধাকে ব তৃতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মেজর শাফায়াত জামিলের তত্ত্বাবধানে মকবুল আলীকে তৃতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধীনে আনা হয়। পরে তাঁকে ভারতের তেলঢালায় উন্নততর সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ব্রিগেড হিসেবে ‘জেড’ ফোর্স গঠিত হলে তৃতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই ফোর্সের অধীনে মকবুল আলী বিভিন্ন সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি রৌমারি এলাকার কোদালকাঠির যুদ্ধএ বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার মকবুল আলীকে “বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নং ৪৩৯, খেতাবের সনদ নং ১৮৯)। এছাড়া তিনি ‘রণতারকা পদক’, ‘সমর পদক’, ‘মুক্তিতারকা পদক’, ‘জয় পদক’, সংবিধান পদক’ ইত্যাদি পদকে ভূষিত হন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস)-এ যোগদান করেন এবং ১৯৮৯ সালে সুবেদার মেজর হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি তিন কন্যা ও দুই পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম শফিকুনেছা খানম। ১৯৯৯ সালের ১৪ই জুন তিনি মীর ছত্রিশ গ্রামের নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। [জালাল আহমেদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড