You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর বিক্রম ভুলু মিয়া - সংগ্রামের নোটবুক

বীর বিক্রম ভুলু মিয়া

ভুলু মিয়া, বীর বিক্রম (১৯২১-২০০৮) নায়েক সুবেদার ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯২১ সালের ১৫ই জুলাই ফেনী জেলার অন্তর্গত দাগনভূঁইয়া উপজেলার বৈরাগী হাট ইউনিয়নের পূর্ব চন্দ্রপুরহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা বসু মিয়া এবং তাঁর মাতা সরবতের নেছা। তিনি স্থানীয় বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন।
ভুলু মিয়া ইপিআর বাহিনীতে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালে তিনি দিনাজপুর উইং হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত ছিলেন। দিনাজপুরে ইপিআর অফিসার পদমর্যাদায় তিনিই ছিলেন একমাত্র বাঙালি। ২৮শে মার্চ পাকবাহিনীর আক্রমণ প্রতিরোধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এরপর তিনি বিভিন্ন প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন। জুন মাসে ভুলু মিয়াসহ অন্য ইপিআর সদস্যদের ৩য় বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে একীভূত করা হয় এবং মেজর শাফায়াত জামিলের নেতৃত্বে তারা ‘জেড’ ফোর্সে যোগ দেন। ৩১শে জুলাই লে. নুরুন্নবী খানের নেতৃত্বে ভুলু মিয়া ও তাঁর সঙ্গীরা পাকবাহিনীর বাহাদুরাবাদ ঘাট অবস্থানের ওপর আক্রমণ করেন। এ-যুদ্ধে তিনি অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন। এতে বেশকিছু পাকসেনা নিহত হয় এবং রেলবগি ও শান্টিঙ ইঞ্জিন ধ্বংস হয়। এক পর্যায়ে শত্রুর গুলিতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। গোহাটি হাতপাতালে চিকিৎসা শেষে তিনি পুনরায় মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি সিলেটের গোয়াইনঘাট, ছাতক ও রাধানগরসহ বিভিন্ন যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর এ অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। ভুলু মিয়া ২ কন্যা ও ৩ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম আরজাহান বেগম। ২০০৮ সালের ২৫শে মে এ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরলোক গমন করেন। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড