ভূঁইয়াগাতী গণহত্যা (রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ)
ভূঁইয়াগাতী গণহত্যা (রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ) সংঘটিত হয় ২৬শে এপ্রিল। এতে রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে ২০ জন গ্রামবাসী নির্মম হত্যার শিকার হন। হানাদাররা বহু ঘরবাড়িতে লুটপাট চালায়। সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ঘড়কা ইউনিয়নের একটি গ্রাম ভূঁইয়াগাতী। সিরাজগঞ্জ থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার এবং রায়গঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার পশ্চিমে এ গ্রামটি অবস্থিত। তাছাড়া সিরাজগঞ্জ-বগুড়া পাকা সড়কের দুপাশে ভূঁইয়াগাতী পুরনো বাজার। ১৯৭১ সালের ২৬শে এপ্রিল বগুড়া থেকে গাড়িবহরযোগে পাকবাহিনীর একটি গ্রুপ এসে প্রথমে ভূঁইয়াগাতী খেয়াঘাটে নেমে ৬ জনকে বেঁধে গুলি করে হত্যা করে। তারপর তারা গ্রামে প্রবেশ করে বাড়িবাড়ি তল্লাশি চালিয়ে আরো ১৪ জনকে ধরে গুলি করে হত্যা করে। এ গণহত্যায় পাকবাহিনীকে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করে আক্রার কুখ্যাত রাজাকার মওলানা মফিজ মাদানী ও রয়হাটির অপর কুখ্যাত রাজাকার মওলানা আবু বকর (আবু বক্কর মৌলভী নামে পরিচিত)। ভূঁইয়াগাতী গণহত্যায় শহীদরা হলেন— পুণ্যচন্দ্র শীল (পিতা গৌর চন্দ্র শীল), রবীন্দ্র চন্দ্র শীল (পিতা কান্দুনাথ শীল), গৌর চন্দ্র শীল (পিতা ফকির চাঁন শীল), ফুরকি বালা দাস (স্বামী গোপিনাথ দাস), আবদুল গণি শেখ (পিতা মনো শেখ), কালু শেখ (পিতা জোনাব আলী শেখ), জহির উদ্দিন শেখ (পিতা জোনাব আলী শেখ), হারান আলী শেখ (পিতা আবদুল করিম শেখ), মুজাহার আলী শেখ (পিতা পাচু শেখ), জিন্নত আলী শেখ (পিতা যাদু শেখ), নাগেন উল্লাহ (পিতা এনায়েত উল্লাহ), জাবেল হক (পিতা মজিবর রহমান), কলিম উদ্দিন শেখ (পিতা পণ্ডিত আলী শেখ), মীর বখস প্রামাণিক (পিতা পোড়া বখস প্রামাণিক), মনমোহন রায় (পিতা মদন মোহন রায়), মদন মোহন রায়, দীনেশ চন্দ্র রায়, রাধাকান্ত রায়, মোংলা বৈরাগী ও সুরেন মোদক। এছাড়াও গোপাল চন্দ্র সূত্রধর (পিতা মাধব চন্দ্র সূত্রধর, ভূঁইয়াগাতী) সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে পরবর্তীতে মারা যান। বুকে ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে এখনো বেঁচে আছে শচীন্দ্রনাথ তালুকদার (ভূঁইয়াগাতী)। এদিন রাজাকারদের নেতৃত্বে সমগ্র গ্রামে লুটপাট চালানো হয়। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড