ভবানীপুর অপারেশন (মাধবপুর, হবিগঞ্জ)
ভবানীপুর অপারেশন (মাধবপুর, হবিগঞ্জ) পরিচালিত হয় মে মাসের মাঝামাঝি। এতে ৫ জন পাকসেনা নিহত হয়।
তেলিয়াপাড়া থেকে ধর্মঘর পর্যন্ত একটি রাস্তা আছে। রাস্তাটি তৎকালীন ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের অধীনে নির্মিত হয়েছিল বলে স্থানীয়ভাবে এটিকে ডিসি রোড বলা হতো। উক্ত রাস্তার পাশে চৌমুহনী ইউনিয়নের অধীন একটি গ্রামের নাম ভবানীপুর। স্থানটি ভারতীয় সীমান্তের একেবারে কাছে অবস্থিত। দূরত্ব মাত্র দুই কিমি। তেলিয়াপাড়া থেকে এ সড়কে পাকিস্তানি বাহিনী ধর্মঘর ক্যাম্পে যাতায়াত করত। মে মাসের মাঝামাঝি এ সড়কে পাকিস্তানি শত্রুদের প্রতিরোধ ও আক্রমণ করার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল প্রেরণ করা হয়। উক্ত দলের নায়েক রফিক উদ্দিন, আবুল খায়ের, শাহ মোহাম্মদ মুসলিম প্রমুখ প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাতের বেলা তেলিয়াপাড়া ধর্মঘর রাস্তায় প্রবেশ করেন। এ দলটির পথপ্রদর্শক ছিলেন একজন ডিম ব্যবসায়ী। ভবানীপুরকে অপারেশন স্থান হিসেবে নির্বাচন করা হয়। সেখানকার একটি সুবিধামতো স্থানে মাইন পুঁতে মুক্তিযোদ্ধারা পাশের একটি গোপন স্থানে ওঁৎ পেতে বসে থাকেন। সারারাত ধরে বৃষ্টি পড়তে থাকে। মুক্তিবাহিনী এই বৃষ্টির মধ্যেও সারারাত ধরে অপেক্ষা করতে থাকেন। পরদিন সকাল আটটার দিকে পাকবাহিনীর একটি জিপ এম্বুশ স্থান অতিক্রম কালে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে এবং জিপটি উড়ে যায়। জিপের নিচে চাপা পড়ে ৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। তাদের মধ্যে একজন ক্যাপ্টেন, একজন লেফটেন্যান্ট ও তিনজন সৈনিক ছিল। অপারেশন সফল হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা উৎফুল্ল হয়ে তাদের ঘাঁটিতে ফিরে যান। [মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড