You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.12 | বিড়ালদহ প্রতিরোধযুদ্ধ (পুঠিয়া, রাজশাহী) - সংগ্রামের নোটবুক

বিড়ালদহ প্রতিরোধযুদ্ধ (পুঠিয়া, রাজশাহী)

বিড়ালদহ প্রতিরোধযুদ্ধ (পুঠিয়া, রাজশাহী) সংঘটিত হয় ১২ই এপ্রিল। এখানকার প্রতিরোধযুদ্ধে ১১৮ জন শহীদ হন। এক পর্যায়ে বাকি প্রতিরোধযোদ্ধারা পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হন।
১২ই এপ্রিল রাজশাহী অভিমুখে অগ্রসরমাণ পাকিস্তানি বাহিনীর ঝলমলিয়া বাজার পর্যন্ত আসার সংবাদে মুক্তিযোদ্ধারা বিড়ালদহের লোহারপুল, পোলাপুকুর, সমসাদিপুর, বেলপুকুর রেললাইন ও তালাইমারিতে প্রতিরক্ষাব্যূহ তৈরি করে তাদের প্রতিরোধের প্রস্তুতি নেন। এ-সময় ইপিআর বাহিনীর সুবেদার সিরাজউদ্দিন লস্কর, সুবেদার মোবাশ্বের আলী প্রমুখের নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা পাবনা থেকে পাকিস্তান সেনাদের বাধা দিতে দিতে পিছু হটে বিড়ালদহ বাজার সংলগ্ন মাইপাড়া লোহারপুলে এসে পৌঁছান। একই দিন সকাল ৯টার দিকে ক্যাপ্টেন রশীদের নেতৃত্বে ৪০ জন ইপিআর সদস্য, সারদা পুলিশ একাডেমির প্রশিক্ষণার্থী ক্যাডেট এএসপি আনোয়ার, এসআই রব এবং আনসার ও ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনী বিড়ালদহ বাজারে আসে। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম, নজরুল ইসলাম, হায়দার আলী, নূরুল হক, শাহজাহান প্রমুখ। তাঁরা লোহারপুলে অবস্থান নিয়ে প্রতিরক্ষাব্যূহ তৈরি করেন। অন্যদিকে এ এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আউয়ালের নেতৃত্বে ঘেতু শাহ, আবদুল মজিদ, আবদুর রহমান, মোয়াজ্জেম হোসেন, অশ্বিনী কুমার ভূঁইয়া, আজাহার, আবুল কাশেম, শমসের দেওয়ান, কোরবান সরকার, ডা. আবদুল আজিজ প্রমুখ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ স্থানীয় যুবক ও সাধারণ জনগণের সহায়তায় রাস্তার দুপাশের গাছ কেটে বিড়ালদহ থেকে কালু শাহের পুকুর পর্যন্ত শক্ত প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন, যাতে পাকিস্তানি সেনারা তাদের গাড়ির বহর নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হতে না পারে। বিড়ালদহ এলাকার শতশত সাধারণ মানুষ প্রতিরোধযোদ্ধাদের জন্য পরিখা খনন করে। এখানকার প্রতিরোধ যুদ্ধে ১১৮ জন বীর যোদ্ধা শহীদ হন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাকবাহিনীর সঙ্গে না পেরে অন্যরা পশ্চাদপসরণ করেন। রাস্তার পাশে প্রতিরোধ যুদ্ধে শহীদদের তালিকাসহ ফলক রয়েছে। [মো. ইলিয়াছ উদ্দিন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড